(এখানে লেখা দু’টি ঘটনারই সাক্ষী আমি। তবে দ্বিতীয় ঘটনাটির একজন নীরব শ্রোতা ছিলাম মাত্র। ঘটনা দু’টি হয়ত নিতান্তই বিচ্ছিন্ন। দু’টি ঘটনার প্রেক্ষিত আলাদা। নিতান্তই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লেখা এই ঘটনাদু’টোর বিপরীতমুখিতা আমাকে ভাবায়। ব্যক্তিগত কারণেই দ্বিতীয় ঘটনাটির স্থান ও কাল উল্লেখ করছি না।)
ঘটনা ১: ও আমার জীবনের প্রথম বন্ধু ছিল। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ওর সাথেই পড়ালেখা করেছি আমি, প্রাইমারি আর হাইস্কুল মিলিয়ে পাক্কা দশ বছর। দারুণ সহজ আর বেশ গম্ভীর স্বভাবের বন্ধুটি আমার; পড়ালেখায় বেশ ভালো ছিল বলে আমার বাবা-মা খুব পছন্দ করত ওকে। বাবা ওর বাবাকে অনেকবার নিজে অনুরোধ করেছে যেন পড়ালেখাটা ধরে রাখতে দেয়। কিন্তু এসএসসি-র পর ওর বিয়েটা কোনোমতেই আটকাতে পারেনি ও কারণ একই পাড়ার পাত্রপক্ষ রাতে দেখতে এসে সে রাতেই বিয়েটা সেরে ফেলেছিল। ওর শ্বশুর স্থানীয় এক মাদ্রাসার সুপার ছিলেন। বিয়ের পর বন্ধুটি আর কলেজে পড়েনি। কয়েকবার ওর শ্বশুরবাড়িও যাওয়া হয়েছিল, কলেজে কেন পড়ল না জানতে চাইলে ও বলেছিল-বোরকা পরে মাদ্রাসায় পড়তে যাওয়া সম্ভব নয় ওর পক্ষে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, ওর বলার দৃঢ়তা দেখে। বোরকা ওকে পরতে হয়েছিল বিয়ের পর, নিতান্ত অনিচ্ছায় কিন্তু মাদ্রাসা ওর পক্ষে কোনওমতে সহ্য করা সম্ভব ছিল না। কলেজে ভর্তির সুযোগ ছিল না, মাদ্রাসা সুপারের পুত্রবধূর পক্ষে কলেজ পড়ার বিষয়টা হজম হয়নি ওর শ্বশুরবাড়ির কারও।
অনেকদিন যোগাযোগ ছিল না, মাস কয়েক আগে ব্যস্ত দুপুরে অচেনা নম্বরের ফোনকলটি রিসিভ করতেই বন্ধুর কণ্ঠস্বর, অনেকগুলো দিন বাদে। মা’র কাছ থেকে নম্বর নিয়েছে ওর বর। একথা সেকথার পর ওর ছেলের কথা উঠতে জানালো, ছেলেকে ভর্তি করিয়েছে এক কিন্ডার গার্টেনে। এক যুগ আগে ওর প্রতিবাদ দেখে যতটা না অবাক হয়েছিলাম, তারচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি এবার। বাড়ির কাছে শ্বশুরের মাদ্রাসা রেখে বেশ দূরের কিন্ডার গার্টেনে ছেলেকে পাঠাতে কম লড়াই করতে হয়নি ওর নিশ্চয়ই।
ঘটনা ২: তাঁরা দু’জনই ভদ্রলোক, শিক্ষিত, দেশ-বিদেশে আক্ষরিক অর্থেই বহুল প্রশংসিত একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বয়স আর কথাবার্তা থেকে বোঝা যায়, পদ সর্বোচ্চ না হলেও খারাপ না। একজন তাঁর সব কথায় সবসময়ই বুঝিয়ে দেন বাংলাদেশের খারাপ সবকিছুর জন্য দায়ী একমাত্র বর্তমান সরকার-অভিজিৎ রায়ের খুন বা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের হার, যাই হোক। অন্যজন প্রতিষ্ঠানসূত্রে তাঁর সহকর্মী যদিও কাজ করেন অন্য একটি উইং-এ।
ভদ্রলোকদ্বয় যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, সেই প্রতিষ্ঠানটি এখনও যে কোনো ধরনের সংখ্যালঘুদের নিয়োগের ব্যাপারে সংবেদনশীল, এক ধরনের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দেয় তাদের প্রতি। কিন্তু শুধু প্রতিষ্ঠানের খাতিরেই এই দু’জনকেও যে অন্য ধর্ম বা মতের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে তার কোনো মানে আছে? ভদ্রলোকদ্বয় তা মনে করেন না, তাই অফিস কমপ্লেক্সের বাইরে অফিসের সহকর্মীদের উপস্থিতিতেই একহাত নিয়ে নিলেন সেদিন হিন্দু সহকর্মীদের উপর। দুই ভদ্রলোকের কথায় এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে-সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প প্রতিষ্ঠানের বড় বড় পদের মানুষদের মধ্যেও কম নেই আর সুযোগ পেলেই তা মাথাচাড়া দিতে কোনো সংকোচ তো করেই না, আকাশ ফুঁড়ে উঠতে চায় রীতিমতো। তবে প্রতিষ্ঠানে সংখ্যায় খুব কম হওয়ায় হয়ত বেঁচে গেছেন অন্যান্য ধর্মের মানুষজন, ভদ্রলোক দু’জনের যাবতীয় ক্ষোভ আর বিষোদগার পড়েছে তাঁদের হিন্দু সহকর্মীদের উপর। এবং আলোচনায় হিন্দু মানে জেনারেলাইজড হিন্দু, বাদ যাবে না একটি হিন্দু কলিগ-ধরনের মনোভাব!
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জোর গলায় বকবক করতে থাকা সেই মানুষগুলোর আলোচনার মূল বিষয় ছিল তাঁদের প্রতিষ্ঠানের পরিচিত হিন্দু সহকর্মীদের খারাপত্বের সীমানা না থাকা আর প্রতিষ্ঠানের জন্য তার ঝুঁকি নিয়ে। এক ভদ্রলোক সাড়ম্বরে বলছিলেন-কোন কোন শাখা অফিসে তদন্ত করতে গিয়ে কোন কোন হিন্দু কর্মীর অপকর্মের ঘটনা উন্মোচন করেছেন তিনি। আর প্রত্যেকটা ঘটনার বেলায়, কোনও না কোনও হিন্দু উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেই অধ:স্তনের দোষ চাপা দিতে কী কী করেছেন। তাঁর নিজের ভাষায়-“ভাই, দ্যাখেন, আমরা যখন কোনো ইনভেস্টিগেশনে যাই, তখন কিন্তু আমাদের মধ্যে এই বিষয়টা কাজ করে না। কিন্তু তাঁদের কথা আলাদা-তাঁরা (হিন্দু ইনভেস্টিগেটর) নিজেদের লোকেদের (হিন্দু কর্মীদের) কোনোরকম ঝামেলায় যেতে দিতে রাজি হয় না।”
প্রশ্ন হচ্ছে-যিনি নিজে একঘণ্টারও বেশি আলোচনায় কেবল হিন্দু কর্মীদের কথা আলোচনা করে গেলেন, একজনও মুসলমান কর্মীর নয়, তাঁর এ কথা কতটা যুক্তিযুক্ত হতে পারে? তাঁর পরপরই তিনি আবার বললেন-“আমাদের এই জাতিটার (‘জাতি’-ই) এত সমস্যা কেন, জানেন…?” মুখের কথা কেড়ে নিয়ে অপর ভদ্রলোক উত্তর দিলেন, “কারণ আমাদের মধ্যে কোনও ইউনিটি নাই।” এরপর তাঁদের আলোচনা থেকেই জানা গেল, মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে এত ঝামেলার একমাত্র কারণ নাকি মুসলমানদের মধ্যে ইউনিটি না থাকা!
হিন্দু কর্মীরা যে ক্রমাগত প্রতিষ্ঠানের খারাপ করে যাচ্ছে আর প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা যে তাঁদের বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও তেমন একটা গা করছেন না, সেই চিন্তায় মনে হলো ভদ্রলোকদ্বয়ের প্রতি রাতের ঘুমই হারাম। প্রতিষ্ঠানের জন্য দিনরাত এত ভাবনা সত্ত্বেও কেন যে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের অন্তত ডিরেক্টর বানানো হচ্ছে না, এ নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হতে পারে। তাঁরা দু’জনেই এ বিষয়ে একমত যে, নিয়োগের সময় থেকেই হিন্দুদের বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ, তাহলে এসব ঝামেলা আর পোহাতে হবে না প্রতিষ্ঠানকে!
একটি কাঁচা পর্যবেক্ষণ: আমার বন্ধুটির ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা’ নিতান্তই কম, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গৃহবধূ, সংসারের কাজ সামলিয়ে বাচ্চাও মানুষ করতে হচ্ছে। রীতিমতো এক মাদ্রাসা-অনুকূল পরিবেশে থেকেও সে আজ অব্দি নিজের মনের জোর খাটিয়ে নিজের সন্তানকে মাদ্রাসায় নয়, কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করানোর কথা ভাবতে পারে। আর আমাদের উচ্চশিক্ষিত, ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত মানুষেরাও কী অবলীলায় সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়ায় ছেয়ে দিতে পারে আশপাশ। মাদ্রাসার সাথে সাম্প্রদায়িকতার বা ধর্মীয় গোঁড়ামির সম্পর্ক কী বা কতখানি, এ বিষয়ে এ আলোচনা নয় মোটেও। বলতে চাইছি মানুষের মন আর মনন বড় অদ্ভুত! মনটাকে বিষবাষ্পে ভরিয়ে তুলতে মাদ্রাসা এই দেশে একটা মাধ্যমই, কিন্তু একমাত্র অপরিহার্য মাধ্যম নয়। এ বিষের চাষ হচ্ছে অবিরাম-সমাজের সকল মহলে, সকল ক্ষেত্রে।
দেবদ্যুতি
মন্তব্য
প্রথম ঘটনার মুখোমুখি কখনও হইনি, তবে দ্বিতীয় ঘটনা নিয়মিত দেখছি আশেপাশে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দ্বিতীয় ঘটনার মানুষগুলো এত বেড়ে গেছে, এত বেড়ে গেছে চারদিকে। খুব অসহায় লাগে। আর আমার বন্ধুটির মতো মানুষ এত কম আমাদের আশেপাশে যে সেটার কারণেও খুব অসহায় লাগে। ব্যাপারটা উল্টো হতে পারত না?
সত্য। তবে কোন সিস্টেম কতোটা উন্নতি করতে পারে ও কোন সিস্টেম থেকে সর্বাধিক ঘৃণা উৎপাদিত হয় এটা গণনায় নিলে মাদ্রাসা নিশ্চিতভাবে এগিয়ে থাকবে।
বর শব্দটার বদলে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করলে ভালো হয় মনে করছি। শব্দটা নারীদের জন্য অবমাননাকর।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এটা কেবলই শব্দ এবং বহুল ব্যবহৃত শব্দ। শব্দ কখনও নারীর অবমাননা করে না। মানসিকতা করে।
প্রিয় পাঠক, নামটা লেখেননি। কিছু কিছু শব্দ তো অবশ্যই অবমাননাকর, এটাও এক অর্থে হয়তো। অবশ্য এই মুহূর্তে এর চাইতে ভালো শব্দ আমার জানা নেই, হাসিব দা’ জানাবেন নিশ্চয়ই।
পতি= স্বামী, ভর্তা(এইটা চ্রম ), প্রভু, প্রধান
বর=দেবতা, মহৎ ব্যক্তি ইত্যাদির নিকট প্রার্থিত বা লব্ধ বিষয়;
বিবাহের পাত্র, স্বামী, শ্রেষ্ঠ,উৎকৃষ্ট
স্বামী= পতি,মনিব, অধিপতি;বিদ্বান সন্ন্যাসীদের উপাধি।
হরেদরে সব শব্দেরই অর্থ এমনটাই হে! তাঁহারা উত্তম বলিয়াই না আম্রা অধম!
বাংলাভাষায় এমন অনেককক শব্দ তৈরি করা হয়েছে যা পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের পাশাপাশি
নারীর মর্যাদাকে ব্যাপকভাবে অবদমন করার চেষ্টা চোখে পড়ার মত। কাজেই শব্দের ঘায়ে নারীকে অবমাননা করা হয়না এ বক্তব্যের সাথে সহমত হতে পারলেম না।
আয়নাদিদি, ওই মন্তব্যটা আমার নয় কিন্তু, যিনি মন্তব্য করেছেন নাম লিখতে ভুলে গেছেন বোধহয় । তাঁর হয়ত এমনই মনে হয়। আমি অবমাননাকর শব্দগুলোর বিষয়ে একমত। কিন্তু বলেছি-অন্যগুলোর চেয়ে এটাই বরং একটু সহনীয় শোনায় আমার কাছে। অন্যগুলো আরও কেমন জানি ঠেকে, হাসিব দা’র কাছে জানতে চাইলাম...
সে বুঝেছি হে দেবদ্যুতি। নামহীন/হীনার প্রতি বলা ওটা।
হুমমমমমমম ... ... ... ... একটা টেবিল করে "নারী" শব্দের সমার্থক শব্দগুলা পাশে দিলে কনট্রাস্টটা (এই শব্দের বাংলা কি ভাই?) পরিষ্কার হত
উপলব্ধিঃ তাত্তারি বিয়া করা দরকার, এমন দারুণ দারুণ পদবী অপেক্ষমান, জানা ছিলনা
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
‘কনট্রাস্ট’-এর বাংলা ‘বৈপরীত্য’ হতে পারে বোধহয়। আহা রে-একটা ভালো দিন দেখে বিয়াটা সেরে নিন না! আমরাও না হয় একটু দাওয়াত খেতে যেতাম আর নারী শব্দের কিছু অর্থ বড্ড অবমাননাকর-হাতের কাছে অভিধান নেই তবু বলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সুন্দরী/গৃহে অবস্থানকারী, আরও কী কী সব জানি লেখা থাকে। ললনা, রমণী, বামা, কান্তা, অঙ্গনা-এইগুলোর অর্থ বোধহয় সবচেয়ে খারাপভাবে লেখা। আয়নাদিদি জানাতে পারেন।
উপরের গুলার টেবিল করলে অত কী হবে জানি না। তবে পতি-পত্নী/জায়া আর ভর্তা-ভর্তৃকা । ভর্তা !
বৈপরীত্য, হুমম... দৈত্য-দৈত্য লাগলেও ঠিকাছে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ করেন জলদি। 'মুখপোড়া মিনসে্' শব্দটা খুব শিঘ্রিই আপনার হস্তগত হোক আর্শিবাদ করলুম।
কনট্রাস্টের বাংলা সমন্বয় হবে কি?
আমি তো জানতাম কনট্রাস্টের মানে দা-কুমড়া টাইপের সম্পক্কো, সমন্বয় ক্যামনে? রাজনৈতিক বক্তব্য পরিহার্য
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমি নিশ্চিত হইয়া বলি নাই বাপু। নিশ্চিত হইতে চাহিয়াছিলেম
... আয়হায়
নামের "শেষাংশের" সাথে এই বক্তব্যের কোনও সম্পক্ক নাই কৈয়া বিবৃতি দিবার চান?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইহা ছহী মিথস্ক্রিয়া নহে লাইনে থাকুন কইলাম।
নাইলে কোপ? আচ্ছা, লাইনে আছি!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মাদ্রাসা যে ঘৃণা উৎপাদনে এগিয়ে থাকবে, তাতে কোনোই সন্দেহ নেই। সেটা নিয়ন্ত্রণে আমরা চরম ব্যর্থ তবে ব্যর্থতাটা আরও বেশি ভাবায় যখন মাদ্রাসার বাইরেও ঘৃণা উৎপাদন চলতেই থাকে অনবরত।
আর-‘বর’ শব্দটাকে ‘স্বামী’র চাইতে একটু সহনীয় মনে হয় আমার কাছে। অবশ্য ‘আশির্বাদ’ অর্থে ধরলে অবমাননাই। ভালো শব্দ থাকলে একটু জানাবেন দয়া করে, উপকৃত হব সত্যিই।
দেবদ্যুতি
মাদ্রাসা যে ঘৃণা উৎপাদনে এগিয়ে থাকবে, তাতে কোনোই সন্দেহ নেই। সেটা নিয়ন্ত্রণে আমরা চরম ব্যর্থ তবে ব্যর্থতাটা আরও বেশি ভাবায় যখন মাদ্রাসার বাইরেও ঘৃণা উৎপাদন চলতেই থাকে অনবরত।
আর-‘বর’ শব্দটাকে ‘স্বামী’র চাইতে একটু সহনীয় মনে হয় আমার কাছে। অবশ্য ‘আশির্বাদ’ অর্থে ধরলে অবমাননাই। ভালো শব্দ থাকলে একটু জানাবেন দয়া করে, উপকৃত হব সত্যিই।
দেবদ্যুতি
আর্শাবাদে আপত্তি কেনু?
আমরা যখন পেমে লতুপতু থাকি তখন একে অন্যকে পাইয়া জীবন আর্শিবাদের সুনামীতে
থৈথৈ ইত্যাদি ভাবে আপ্লুত হই না? তখন কী 'আপত্তি' লষ্করবাড়ির গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে মনে মনে ভাবতে থাকে, 'দেখিস একদিন আমিও...' তাই কি বিবাহ নামের ঘেরাটোপে পড়লে পেম পালায় আর আপত্তি 'পেয়েছি তুরে' বলে গ্যাঁক করে ধরে এবং 'আর্শিবাদ' অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়! অভিজ্ঞতা নাই তাই জানবার কৌতুহলে সম্পূর্ণ অফটপিকে এট্টু বকে নিলেম। পোস্টের মূল বিষয়ে ফেরা যাক এবার...
দিদি গো, কইতে চাইলাম তাহারা যদি আমাদিগের জন্য ‘আশির্বাদ’ হয় তাইলে আমরাই বা কেন তাহাদের জন্য ‘আশির্বাদ’ হই না? যেহেতু আমাদিগকে ‘আশির্বাদ’ বলা হয় নাই-সেই কারণে ‘বর’ একটা অভিশাপ হইতে পারে বটে... সেই, মূল বিষয়ে ফিরি
ভালো পোস্ট একটি। অসাম্প্রদায়িকতা ও সহনশীলতা আমাদের স্কুলের পাঠ্যক্রমে নিয়ে আসা দরকার। হয়তো কৃষি শিক্ষা আর ইস্লামিয়াত এর থেকে এই শিক্ষা আমাদের জাতিগত ভাবে এগিয়ে যেতে আরও সাহায্য করবে। এবং "শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন" ব্যক্তিবর্গ সুশিক্ষা পাবেন।
- নীল কাকাতুয়া
এখন তো ধর্ম বিষয়টার সাথে ‘নৈতিক শিক্ষা’ কথাটা জুড়ে দেয়া হয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রমে। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির ধর্ম বই বানিয়েছিলাম অন্যভাবে। একটাই বইয়ে বাংলাদেশের চারটি ধর্ম বইয়ের পাঠ্যই আলোচিত হবে যাতে শিক্ষার্থীরা একটু অন্যভাবে দেখতে শেখে। অভিভাবকদের অভিযোগের ঠেলায় কর্তৃপক্ষ আদেশ করিল-যেভাবে পড়ানো হয়, তেমনই থাক।
নামহীন অতিথি আপনি যে বিষয়টা উল্লেখ করলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত লেখুন না ভাই/বোন।
আমার মন্তব্য ছিল, নাম লিখতে ভুলে যাই আমিও ... প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় নিয়ে লিখতে ভয় করে।
দেবদ্যুতি
ভয় কি মরণে!
মরনে নাহি ভয় কিন্তু চাকুরি হারাইয়া না খাইয়া মরিতে ভয় লাগে যে!
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
গানটা ভালো হয়েছে।
১ম ঘটনাটার মতো ইতিবাচক ব্যাপার চারপাশে আরও বেশি বেশি ঘটুক, গোচরে আসুক। আন্দোলন বা পরিবর্তনের প্রথম ধাপ নিজের ঘর থেকে শুরু হলেই ভালো।
আমরা আশা করি, এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাক আর ঘটনা ২-এর মানুষগুলোর সংখ্যা কমুক দ্রুত...
একটা সমাজের জীবন আচরণ/ সমাজ সম্পর্ক যেভাবে নৈতিকতা বা মানসিকতা গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো
সেভাবে রাখেনা। সমাজ আমাদের যেভাবে ভাবতে শেখায় আমরা সেভাবেই ভাবতে ভালোবাসি। ছোটবেলায় পড়া সুকুমার রায়ের 'হিংসুটেদের ছড়া' তাই বড় হয়েও আমাদের পিছু ছাড়ে না।
একটা বিরাট জনগোষ্ঠীর জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অপরিহার্যই ভাবা হয়। তাদের সংখ্যাটা বাড়ছে বৈ কমছে না কিন্তু!
এদের প্রতি উদাসীন থাকা আর উচিৎ হবে না মোটেও। কিভাবে কেম্নে এদের প্রতি নজরদারী বাড়ানো হবে সেটা ভেবে দেখা জরুরী। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্হায় পরিবর্তন কতটা সম্ভব জানি না। কিন্তু তোতাপাখি বানানোয় দেশের কতটুকু ফায়দা হচ্ছে
সেটা না ভাবলে ক্ষতিটা আমারদেরই। মাদ্রাসার বাইরের সিস্টেমের সার্টিফিকেটধারীদের বিষয়টা হতাশার।
মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্হায় পরিবর্তন কতটা সম্ভব জানি না। কিন্তু তোতাপাখি বানানোয় দেশের কতটুকু ফায়দা হচ্ছে সেটা না ভাবলে ক্ষতিটা আমারদেরই। মাদ্রাসার বাইরের সিস্টেমের সার্টিফিকেটধারীদের বিষয়টা হতাশার।
হতাশাটা বাড়ছে রোজ, প্রতিক্ষণে...
দেবদ্যুতি
দ্যুতি, আপনি যে লাইনটুকু/বাক্যাংশ উদ্বৃতি হিসেবে দেখাতে চান সেটা কপি করে
কোট বাটন ক্লিক করে দুই কোট বক্সের মাঝখানে পেস্ট করে দিন, কাজ হবে
আমি তো দুই কোট বক্সের শেষে পেস্ট করি সাধে কি আর আমার কলিগ কয়-আমি একটা ‘প্রযুক্তি প্রতিবন্ধী’!
ভালো লিখেছেন।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এমন ভালো না লিখলেই ভালো নয় কি?
দ্বিতীয় ঘটনাটার সাথে সম্পর্কিত একটা পর্যবেক্ষণের কথা বলি। আজকাল সাধারণ শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত, ভালো চাকুরি/ব্যবসা করেন এমন অনেককে দেখি নিজেদের সন্তানদেরকে মাদ্রাসায় পড়াচ্ছেন, তাও আবার ক্বওমী মাদ্রাসায়। তারা নিশ্চিতভাবেই জানেন ক্বওমী মাদ্রাসায় পড়ে তার সন্তান কখনোই তার মতো পদে কাজ করতে বা তার মতো ব্যবসা করতে পারবে না, তবু তারা এই কাজটি করছে। ১৫/২০ বছর আগেও সমাজের এই শ্রেণীর লোকেদের কাছে চাকুরির বাজারে গ্রহনযোগ্যতা নেই বলে আলিয়া মাদ্রাসা অচ্ছ্যুৎ বিষয় ছিল, আর ক্বওমী মাদ্রাসা তো তারা চিনতোই না। এই পরিবর্তনটা খুব সতর্কতার সাথে লক্ষ রাখা দরকার।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দেবদ্যুতি
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
দেবদ্যুতি
মাদ্রাসা শিক্ষার গোঁড়ামি বা কু-প্রভাব বলতে ব্যাপক অর্থে কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক শিক্ষাকেই বুঝায় ।
কিন্তু এই কওমি মাদ্রাসায় কারা পড়ে ? যাদের অধিকাংশই এতিম বা সহায়-সম্বলহীন । তাই যতদিন এদের জন্য কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়া হবে ততদিন এই প্রবাহ জারী থাকবেই।
তবে হ্যাঁ, শিক্ষিত বর্নচোরা এই সাম্প্রদায়িক দল যতভারী হবে তার ক্ষতির মাত্রা কিন্তু ঐ কওমি গ্রুপের চেয়ে কোন অংশে কম হবে না ।
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
কওমী মাদ্রাসা তো আছেই, পাশাপাশি এইসব শিক্ষিত বর্ণচোরা মানুষের সাম্প্রদায়িক এমনকী ধর্মীয় গোঁড়ামির কথা শুনলে মাথা ঘুরে যায় রীতিমতো
দেবদ্যুতি
নতুন মন্তব্য করুন