অভিযোজন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২২/০৪/২০১৫ - ৫:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যেহেতু আজ বৃষ্টি হয়নি আর অফিস থেকে বেরুতেও দেরি হয়েছে তাই অনেকটা হালকা চালেই ওঠা সম্ভব হয়েছে বন্ধু পরিবহণে। শাহজাদপুর বাস স্ট্যান্ডের টং দোকান থেকে প্রাণ ডাল ভাজার প্যাকেট কিনে নিয়ে অনেকটা আয়েশি ভঙ্গিতেই বাসে উঠা গেলো। যদিও বাসের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকার ভবিতব্যকে বদলে দেয়ার মতো বড় কোনো অঘটন শহরটাতে ঘটেনি বলে দাঁড়িয়েই থাকতে হলো। তবু যেহেতু বৃষ্টি হয়নি আর ভদ্রস্ত অফিসগুলো আগেই ছুটি হয়ে গেছে তাই এখন পর্যন্ত কেউ পা মাড়িয়ে দেয়নি। এমনকি ভীড়টা এতোটাই সহনীয় যে, আমি ডালভাজার প্যাকেটটা খুলে খাওয়া শুরু করার আশায় একটু পরপর নেড়েচেড়ে দেখছি। মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখছি চারপাশ। সবকিছুকেই ধীর মাধুর্যমণ্ডিত মনে হচ্ছে। এই মনে হওয়া অবশ্য বন্ধু পরিবহণের থেমে থাকার কারণেও হতে পারে। শাহজাদপুর থেকে উঠার পর এটি বেশিদূর আগায়নি। বাসের ড্রাইভার জানালা দিয়ে মুখ বের করে উদাস মনে বসে আছে।

কন্ডাক্টর যাত্রী ডাকতে ডাকতে বেশ খানিকটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আনমনা হয়ে। মাঝে মাঝে বাসের দিকে একটা মমতা মাখানো দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে আর তখনই একবার দুবার করে যাত্রী ডাকছে, এই গুলিস্তান, গুলিস্তান বলে। অন্য সময় হলে গুলিস্তানের সাথে পল্টন, কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাকের মতো আরো কিছু সঙ্গি-সাথি জুটে যেতো। কিন্তু আজ তার কিছুতেই যেন মন নেই। বাস স্ট্যান্ড থেকে দশগজ তফাতে বসে যে ভিক্ষুক বসে থাকে একটা বেমানান গাম্ভীর্য্য নিয়ে প্রতিদিন তাকেও এমনকি পেছন ফিরলে দেখা যায় এখনো। অর্থাৎ বাস একদমই এগোয়নি বলা যায়। কিন্তু এ নিয়ে যাত্রীদেরও কোনো ভাবন্তর দেখা যাচ্ছে না। সাধারণত এরকম ক্ষেত্রে বাসের যাত্রীরা একে একে তাদের ক্ষোভ ঝাড়তে শুরু করে। কিন্তু আজ কেউ কিছু বলছে না। একজন মাঝবয়সী যাত্রী, যার শ্যাওলাধরা চুলের নিচে টাক দেখা যাচ্ছে আর চোখদুটো সন্দেহে স্থির, সে-ই কেবল নিয়মরক্ষার জন্য মাঝে মাঝে ড্রইভারকে একটু আধটু তাগাদা দিচ্ছে। ড্রাইভারও নিয়মরক্ষা করেই তাতে কান দিচ্ছে না। কেবল প্রতিবার বলার পর সে মুখ ঘুরিয়ে তার বাম পাশের মহিলা আসনে বসে থাকা দশাশই লোকটার দিকে একবার করে আড়চোখে তাকাচ্ছে। ভাবটা এমন যেনো সে লোক যদি বলে তবেই সে বাস ছোটাবে। কিন্তু সেই দশাশই লোকটা, যাকে লোক না বলে যুবক বললেই মানায় ভালো, যার কপালের তিনটি শিলাই তার সদ্য বিগত সংঘাত ও ক্ষমতার সমীকরণে নিজের অংশীদারিত্বের প্রমাণ বহন করছে একসঙ্গে, এমন অদ্ভুত ভঙ্গিতে নির্লীপ্ত হয়ে আছে যে, তার গায়ে হাত বুলিয়ে কুশল জিজ্ঞাসার ইচ্ছা জাগে।

এইভাবে দাঁড়িয়ে ছিল বন্ধু পরিবহণ শাহজাদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে একটু এগিয়ে ফেলে আসা ঠিকানার পিছুটান নিয়ে। পাশ দিয়ে হঠাৎ হঠাৎ কোনো মানুষ গেলেও তারা কেউ যাত্রী নয়। একটা বিড়াল তার জন্মসূত্রে পাওয়া জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে ছিল আমারই দিকে জানলার ওপাশ থেকে। চারপাশের পরিবেশের এইসব জমাট সংক্রমনে অথবা নিজেরই গহীনে গোপন আকাক্সক্ষায় আমারও ইচ্ছে করছে নেমে গিয়ে সেই অহেতুক বিড়ালটাকে তুলে আনি। তুলে এনে তাকে একটু আগে কেনা ডালভাজা খেতে দেই।

এইসব যখন ভাবছি তখন একটা দুলুনিতে টের পেলাম কেউ উঠেছে বাসটাতে। তাকিয়ে দেখলাম একটু মোটা খাটো করে একজন তরুন। উঠেই ড্রাইভারকে তাগাদা দিয়ে সে বললো, ওই মিয়া এক জায়গায় আর কতক্ষণ দাঁড়াইবা? রাইত কত হইছে খবর আছে? বাড়াও বাড়াও, সামনে থেইকা তুইলো। এ কথায় সবাই সেই নিথর সংক্রমিত ধ্যান ভেঙে তার দিকে তাকালো। ড্রইভার জানলা দিয়ে মাথা বের করে চিৎকার দিয়ে বললো, ওই কোবাদ, কো-বা-দ, বাইঞ্চোত ডাকস না কেন? গলাত কি ব্যাঙ ঢুকছেনি? কোবাদও যেনো এই ঝাড়ির অপেক্ষাতেই ছিল। পূর্ণ উৎসাহ নিয়ে এবার ফাঁকা রাস্তায় কল্পিত যাত্রীদের উদ্দেশ্যে ডাকতে থাকে, এই গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, মৌচাক...। এবারে একে একে যাত্রীরা সচেতন হয়ে ওঠে যেন। তারা নানাজন নানাদিক থেকে কথা বলতে শুরু করে। একটু আগের নির্জনতা একটা রূপকথা হয়ে যায় মুহুর্তেই। কেউ বলে, এই হারামজাদাগো খাই খাই আর গেলো না। কেউ প্রায় গাড়িশূণ্য রাস্তা দেখেও বলে, গাড়ি ছাড়বি নাকি নাইম্যা যামু? কেউ গালি দেয়, কেউ ফোড়ন কাটে। এইসব দেখে-শুনে ড্রাইভার কোবাদকে আবার ডাকে, এই কোবাদ হোন, দুইটা আনবি। কোবাদ তার কিছুক্ষণ পরেই দুইটা সিগারেট এনে তার ওস্তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে খালি রাস্তায় আবারো যাত্রী ডাকতে চলে যায়। এই দেখে সেই মোটা ও খাটো তরুণ আগের চাইতে একটু অধৈর্য্য কিন্তু মোলায়েম গলায় বলে, ওই মামা কারে ডাকেন? লোক কই? এই শুনে পিছন থেকে আরেকজন বলে ওঠে, অর কুটুমরে ডাকে বুঝছেন। ডান পাশের কোনা থেকে আরেকজন ফোড়ন কাটে, লাগলে ক, আমরাও নাইমা ডাকি। ‘দেশটার হইলো কী? এতোগুলা লোক কইতেছে... বলে কেউ কেউ এর ভেতরে গণতন্ত্র টেনে আনে, এমনকি আইএস বা ওবামাও ঢুকে পড়ে একসময় আমাদের বন্ধু পরিবহণে। এইসব চলতেই থাকে। আর ড্রাইভার আরাম করে বসে সিগারেট টানে। তার এই মুহুর্তে কোনো ভাবনা নেই।

সিগারেট টানা শেষ হলে অবশেষে ড্রাইভার গাড়ি চালানো শুরু করে। বাস চলতে শুরু করলেই আবারো আমার ডালভাজার প্যাকেট আর সেই বিড়ালটার কথা মনে পড়ে। আর আমি ইচ্ছে করেই জানলা দিয়ে প্যাকেটটা ফেলে দিই। এটা আমার পক্ষ থেকে বিড়ালটার প্রতি উপহার। যদিও জানি যে, সে কখনোই এটা খুলে খেতে পারবে না। তবু আমি ফেলে দেই। কিন্তু এটা ফেলার সাথে সাথে আমি যে সিটটার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম সেই সিটের জানলার ধারের বয়ষ্ক যাত্রীটা ‘এহ পড়ে গেলো’ বলে চিৎকার দিয়ে উঠে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাস আবারো থেমে যায়। কিছুক্ষণ পর কন্ডাক্টর উঠে আমার ফেলে দেয়া প্যাকেটটাই এনে লোকটার হাতে দিতে দিতে বিরক্ত স্বরে বলে, ঠিকমতো ধইরা রাখতে পারেন না? লোকটা একটু আড়ষ্ট হয়ে চারদিকে তাকিয়ে ডালভাজার প্যাকেটটা তার ময়লা পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকায়। আমি একটা শ্বাস ফেলি কেবল। এই অনাকাক্সিক্ষত বিরতির পর আবারো চলতে শুরু করে বন্ধু পরিবহণ।

মধ্যবাড্ডায় কয়েকজন নেমে গেলে গোটাকয় সিট খালি হয়। আমার থেকে দূরে দাঁড়ানো যাত্রীরাও কেমন করে যেনো সেইসব খালি সিটে বসে পড়তে সমর্থ হয়। কিন্তু আমি পারি না। আমি এখনো বাসের সিট দখলের কৌশল পুরোপুরি আয়ত্ত্ব করে উঠতে পারিনি, কখনো পারবো বলেও মনে হয় না। এ নিয়ে একটুক্ষণ ভেবেই আমি যখন জানালা দিয়ে বাইরে আবারো মনোযোগ দিচ্ছি তখন পেছন থেকে কে একজন, ‘এই কামরুল, কামরুল..’ বলে ডাকতে থাকে। আমি ডাক শুনতে পারি কিন্তু বুঝতে পারি না। সংশয় মাখানো ডাকটা আমার ভালো লাগে। কিন্তু কিছুক্ষণের ভিতরেই আমি আমার পিঠে একটা হাতের অস্তিত্ব পাই। আমার এখন মনে পড়েছে, আমিই কামরুল। এবং আমি কিছুটা বিষ্মিত এ কারণে যে, বাসের ভিতরে কে আমাকে ডাকছে এই ভাবনায়। এ বিষ্ময় আমার ভালো লাগতে থাকে। আমি তার দিকে তাকালাম। দেখলাম সেই মোটা খাটো তরুণ, যে কিনা এই বন্ধু পরিবহণের নিস্তব্ধতা ভেঙেছিলো। আমি তার দিকে তাকিয়েই আছি দেখে সে বললো, তুই কামরুল না? আমাকে চিনিস নাই? আমি মিলন। বাড্ডার মিলন। মনে নাই? শেষ দিকে মিলনের কন্ঠে সংশয় বাড়তে থাকে। আমি এবার তাকে নিষ্কৃতি দেয়ার সীদ্ধান্ত নেই। আমি বলে উঠি, বহুদিন পর তোকে দেখলাম। কী খবর তোর? এতো মোটা হইছিস কেন? মিলন হাসে। আমাকে টেনে তার দখলিকৃত সিটটায় বসিয়ে দিতে চায়। আমি তার দিকে তাকিয়ে বলি, তুই বোস, আমার দাঁড়াতে সমস্যা হচ্ছে না। মিলন বলে, কী কস তুই? তিনবাঁক খাইয়া দাঁড়াইয়া আছস, তাও কস সমস্যা নাই। তুই এই বাসে ক্যান? তুই না এই বাসে উঠবি না কইছিলি?

আমি চুপ করে থাকি। মিলন বলে যেতে থাকে। আমি মনে করার চেষ্টা করি, আমি কেন আগে এই বাসে চড়তাম না। মিলন আমাকে সাহায্য করে। যে বাসে উঠে ঘাড় বাঁকিয়ে, মাথা নিচু করে দাঁড়াতে হয়, আমি সে বাসে উঠব না বলে বলেছিলাম আগে। মিলনের সাথে এই নিয়ে নাকি ঝগড়াও করেছিলাম। একদিন নাকি শুধু ঘাড় বাঁকিয়ে দাঁড়াতে হয় বলেই এই বাসকে প্রত্যাখ্যান করে, মিলনকে সাথে নিয়ে হেঁটেই ফিরেছিলাম। হবে হয়তো। এখনোতো সময়ের তাড়া না থাকলে হাঁটি। এখন ঘাড় বা মাথার চেয়ে সময়ের দাম বেড়ে গেছে বলেই হয়তো মাথার কথা মনে পড়ে না। মিলনের এলোমেলো ধারাভাষ্যে আমার কিছু কথা মনে পড়তে থাকে, কিছু পড়ে না। অথচ ভুলে যাওয়া উচিত না। মিলনের ভাষ্যমতে এই বয়ান বড়জোর তিন চার বছর আগের। আমার আস্তে আস্তে মনে পড়ে, আগে বন্ধু পরিবহণে উঠলে আমার মাথা বাসের ছাদে ঠেকে যেতো, ঘাড়ে একটা বিকট ব্যাথা শুরু হয়ে যেতো। আমি উপরে তাকিয়ে দেখি, কই আমার মাথাতো ছাদই ছোঁয়নি, বরং আরও এক দেড় ইঞ্চি জায়গা খালি আছে। মিলনের কথা আমার বিশ্বাস হতে চায় না। তবুও তার কথার পথ ধরেই আমার বেশ কিছু বিষয় মনে পড়তে থাকে। কী আশ্চর্য, এও হয় নাকি? আমার বিশ্বাস হতে চায় না যে, আগে কখনো এমন সময় ছিলো যখন আমি এ বাসে আঁটতাম না। আমি মিলনের দিকে তাকাই। বন্ধু পরিবহণের বাম পাশের একসারি সিটের সাথে জোড় সিটগুলোর মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা তার চেয়ে মিলনের প্রস্থ নিশ্চিত বেশি। কিন্তু কী এক জাদুবলে মিলন এইটুকু ফাঁকা জায়গাতেও ঠিকঠাক এঁটে গেছে। সে সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার সাথে কথা বলে যাচ্ছে। কন্ডাক্টর কোবাদ তার পাশ দিয়ে এই একটু আগেই পেছনে গিয়ে ভাড়া কেটে আবার দরজায় গিয়ে দাঁড়ালো। আমি আস্তে আস্তে সবার দিকেই ভালো করে লক্ষ্য করি। আমার বিষ্ময় বাড়তে থাকে। আমি নিজের ঘাড় এদিক ওদিক ঘুরিয়ে পরীক্ষা করার চেষ্টা করি, ঘাড় ব্যাথা করছে কিনা। কিন্তু কোনো ব্যাথা টের পাই না। আমার মনে হতে থাকে ঘাড় একটু ব্যাথা করলেই যেনো আমার ভালো লাগতো। কিন্তু হতাশাব্যঞ্জকভাবেই আমি তাতে কোনো ব্যথা এমনকি কোনো অস্বস্তিও টের পাই না। আমি মিলনের নানা কথা শুনতে শুনতে তারই পাশে দাঁড়িয়ে তার বলা কথার সূত্র ধরে এইসব ভাবনা ভাবতে থাকি। এমন অদ্ভুত রহস্য ও জিজ্ঞাসার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়ার জন্য আমার হঠাৎ মিলনকে খুব আপন মনে হয়। এমন আপন সম্ভবত তাকে আমার আগে কখনো মনে হয়নি।

মিলন সব কথা বলে শেষ করতে পারে না, তার আগেই মেরুল বাড্ডা চলে আসে। ফলে মিলনের নেমে যেতে হয়। তার নেমে যাওয়ার সময় আমরা পরষ্পরকে ‘অচিরেই দেখা হবে’ জাতীয় কথা বলে বিদায় জানাই, যদিও জানি সে সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। তবুও বলতে হয়। আমি এমনকি জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে ছোটবেলায় শিমুল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বাবার উদ্দেশ্যে হাত দুলিয়ে টাটা দেয়ার ভঙ্গিতে মিলনকেও টাটা দেই। ছোটবেলায় বাবা যখন বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে এই শহরে চলে আসতো তখন আমি এবং বাড়ির আরো অনেকে মিলে রাস্তার মাথার শিমুল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে হাত দুলিয়ে টাটা দিতাম। বাবার রিকশা যতক্ষণ দেখা যায় বা যায় না ততক্ষনই দাঁড়িয়ে থাকতাম আমরা, আর হাত দোলাতে থাকতাম। বাবা যে রিকশায় যেতো তার পেছনের দু চাকার মাডগার্ডের উপর দুটি টিনের হাত স্প্রিংয়ের উপর দুলেদুলে আমাদেরও টাটা দিতো। আমরা বিনিময় করতাম। কিন্তু মিলন কোনো বিনিময় করেনি। বরং সে আমাকে টাটা দিতে দেখে এতোটাই অবাক হয়েছে যে, আরেকটু হলে এই বিষ্ময় নিয়ে সামনের খোলা ম্যানহোলে সে পড়ে যেতে পারতো।

সে যাই হোক, মিলন নেমে যাওয়ার পর থেকেই আমি জানলা দিয়ে উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে আছি। কী খুঁজছি আদৌ কিছু খুঁজছি কিনা বুঝে না উঠলেও আমি টের পাই আমি যেনো উপযুক্ত কোনো দোকান খুঁজছি। কিন্তু কেনো তার উত্তর আমার কাছে নেই। এইভাবে খুঁজতে খুঁজতে আমি রামপুরা বাজারের কাছে এসে একসাথে অনেকগুলো দোকান দেখে বাস থেকে নেমে যাই, যদিও আমার গন্তব্য কাকারাইল মোড়। তবুও আমি নেমে যাই। অথবা বলা যায় অনেকটা নিয়ন্ত্রিতের মতো আমি নেমে যেতে বাধ্য হই।

বাস থেকে নেমে আমি হোঁটে একটা পানের দোকানের সামনে দাঁড়াই। দোকানি আমার দিকে তাকালেই আমি নিজের অজান্তেই জিনিসটার সন্ধান করি। দোকানি বিষ্মিত হয়ে আমার দিকে তাকায়। এবং কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে, এইডা পানের দোকান। আমি তখন ধাতস্ত হয়ে বুঝে ওঠার চেষ্টা করি, আমি কেনো এটা কিনতে চাইছি। এমন নয় যে এটা আমি অনেকদিন ধরেই খুঁজছি। এমনকি এর সাথে আমার কোনো সমন্ধও নেই। তবু আমি কেন হঠাৎ করে জিনিসটা কিনতে চাইছি তা ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। যদিও ভেতর থেকে একটা অদম্য তাড়না আমাকে জানিয়ে দেয় যে, আজ আমাকে এটা কিনতেই হবে। আমি অনেকটা বাতিকগ্রস্তের মতো বাজারের প্রতিটা দোকানে যেতে থাকি। মুদি দোকান, সেলুন, পান-তামাক, ফটোকপি ইত্যাদি বিভিন্ন দোকানের ধরন নির্বিশেষে আমি জিনিসটা খুঁজতে থাকি। এইভাবে দেখতে দেখতে আমি রামপুরা বাজারের প্রায় সব দোকান দেখা শেষ করি। কিন্তু কোথাও সেই আরাধ্য বস্তু খুঁজে পাই না।

যানবাহণের ব্যসবাক্য কী বলতো? আমার হঠাৎ গীতা ম্যাডামের কথা মনে পড়ে। আমাদের ব্যাকরণ পড়াতো। আমি যেন এখনো ক্লাসের পেছনের কোণার ব্যঞ্চটাতে বসে নিজের মাথা লুকানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ম্যাডাম আমাকে দেখে ফেলেছেন। আমি আর লুকাতে না পেরে সরল স্বীকারোক্তি করলাম, ‘পারি না ম্যাডাম’। ‘যান চালিত বাহন-মধ্যপদলোপী কর্মধারয়- মনে থাকবে?’ আমি মাথা ঝাঁকাই। এ মাথা ঝাঁকানোতেই আমার মনে পড়ে আমি স্কুলে নই, বরং ডিআইটি রোডের দুধারের রাস্তায় হেঁটে হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা একটা জিনিস খুঁজছি। কিন্তু আমার একটু আগের ভাবনাটাও ফেলে দিতে পারি না। আমার মনে হতে থাকে বিরাট একটা ফাঁকি রয়ে গেছে। গীতা ম্যাডাম ‘যানবাহনের’ সঠিক সমাস নির্ণয় করতে পারেননি। আমি নিশ্চিতির মতো বুঝে যাই, এটি কোনোভাবেই মধ্যপদলোপী নয় এমনকি কর্মধারয়ও নয়, যানবাহন আদতে ষষ্ঠী তৎপুরুষ। আমার মনে হতে থাকে, যন্ত্র চালিত নয় বরং যন্ত্রের বাহনই যানবাহন। যে যন্ত্র যুগ যুগ ধরে নির্মাণ হয়ে আসছে। যে যন্ত্র মানুষ হলেই প্রকল্প ভেঙে যায় খানখান করে। আর আমাদের বাহনগুলো সুচারুভাবে এই যন্ত্রের নির্মাণে অংশ নিচ্ছে। আমার এক ধরনের তৃপ্তি বোধ হতে থাকে। যেমন তৃপ্তি পায় স্টিয়ারিং হুইল হাতে নিজেকে নিয়ন্ত্রক ভেবে প্রতিটি ড্রাইভার। বিরাট রহস্য ভেদ করেছি এমন তুষ্টি নিয়ে আমি সামনে তাকাই। দেখি লাফানো কাতল নিয়ে বসে থাকা মাছবিক্রেতা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। আমি তার বিরক্তি কমাতেই ধাতস্ত হই এবং মুখে এক চিলতে হাসি টেনে জিজ্ঞেস করি কাক্সিক্ষত বস্তুর হদিস।

এভাবে ভাবতে ভাবতে খুঁজতে খুঁজতে আমি হাঁটতেই থাকি। পাশ দিয়ে সুপ্রভাত, বন্ধু পরিবহণ হর্ন বাজিয়ে চলে যায়। আমার তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ হয় না। আমি হেঁটে হেঁটে দোকান দেখলেই থেমে যাই। যদিও এই রাতে খোলা দোকানের সংখ্যা নিতান্তই কম। তবুও যে কটা খোলা আছে আমি তাতেই ঢুঁ মারতে থাকি। এইভাবে চৌধুরিপাড়া, মালিবাগ রেলগেট, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর হয়ে আমি এক সময় কাকরাইল পৌঁছে যাই। কিন্তু কোথাও পাই না সেই দারুন দরকারি সন্ধান। নিখোঁজ হয়ে থাকা বস্তুটি আমার কাছে এতোটাই দরকারি মনে হতে থাকে যে, খবরের কাগজে একটা নিখোঁজ সংবাদ দিয়ে দেয়ার ইচ্ছেও মাথায় উঁকি দেয়। আমি এমনকি সেই সবজি বিক্রেতার কাছেও তার খোঁজ করি যে তার পাশে বসে থাকা ভিক্ষুকের কাছে ভিক্ষাপ্রাপ্তির কারণ হিসেবে নিজেকে জাহির করছিলো ‘আমার রাশি দেখছস?’ বলে, অথচ যার টুকরির সবজিগুলো তার মতোই ছিলো অপুষ্ট ও রোগাক্রান্ত। পথে নানা লোক নানা কথা বলে আমাকে। কেউ কেউ বিশ্রী রকমের রসিকতাও করে। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মেলে না। আমি যখন প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাই যে, আমি আর এর খোঁজ পাচ্ছি না তখন দূরে আমারই বাসার গলির কাছে যে টেইলার্সের দোকানটা রয়েছে তা বন্ধ করতে দেখি। আমি কখনো এই দোকানে যাইনি। দোকানদারকে আমি চিনিও না, যদিও রোজ যাওয়া আসার পথে তাকে দেখেছি, চোখাচোখি হলে হাসি বিনিময় করেছি। আমি একরকম ছুটতে ছুটতেই দোকানটার কাছে চলে আসি। ততক্ষণে দোকানদার, যার বাঁ চোখের নিচে বড় কালসিটে দাগ, দোকানের শার্টার ফেলে দিয়েছে এবং তােেত তালা মারার চেষ্টা করছে। আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে ভূমিকা ছাড়াই এর সন্ধান চাইলাম। সে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো, হবে, কিন্তু কী করবেন? আমি শুধু বললাম, দরকার আছে, খুব। লোকটা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে, আমার কথাতেই নাকি প্রতিবেশি হওয়ার কারণে সৌজন্যতাবশত দোকানের শার্টার আবার তুললো। ভেতরের আলো জ্বালিয়ে ড্রয়ারের তালা খুলে ব্যবহারে জীর্ন অথচ লাল রঙের উজ্জ্বল বস্তুটা বের করে আমার হাতে দিলো। অনেক কোঁজাখোঁজির কারণেই, নাকি লালের প্রতি একটা বহু চর্চিত ভালোলাগার কারণেই আমার বস্তুটাকে সপ্রাণ মনে হলো। আমি সেই সপ্রাণ গজফিতাটি আবার দোকানির হাতে দিয়ে বললাম, আমার উচ্চতাটা একটু মেপে দেনতো ভাই। লোকটা নিস্পৃহের মতোই অনেকটা আমার উচ্চতা মাপলো। তারপর আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, আগে কতো ছিলো? আধ ইঞ্চ কম ছয় ফুট, আমি উত্তর দিলাম। লোকটা তখন হেসে বললো, কমে নাই। চিন্তা কইরেন না। ঠিক হইয়া যাইবো। আমি তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম।

এরপর লোকটার সাথে একসাথে দোকান বন্ধ করলাম। দুজন মিলে শার্টার বন্ধ করে তালা মেরে যে যার পথে চলে যাবো এমন সময় আমি লোকটাকে ডেকে জানতে চাইলাম, ভাই একটা কথা, আপনি কমে নাই বললেন কেন? লোকটা হেসে বললো, এরকম হয়, এই যেমন আমারো পা দুইটা ছোট হয় নাই, হাঁটু দুইটাও ঠিক আছে। সেইরকম আপনেরও কিছু হয় নাই, খালি নিজেরে মনে পইড়া গেছে। নিজেরে মনে রাখতে নাই। তেলাচোরা দেখেন না? দেখেন দেখেন.. আসলে কোনো তফাৎ নাই। এই বলে লোকটা তার পথের দিকে পা বাড়ায়। যাওয়ার আগে তার সেই লাল রংয়ের গজফিতাটা আমার হাতে দিয়ে যায়। বলে, রাখেন, অন্তত আজ রাইতে লাগবো। পরে দিয়েন। আমার কাজ চালানের মতো আছে। আমি নিজের গলির মুখে দাঁড়িয়ে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকি। ভাবি, আমার কি আসলেই নিজেকে মনে পড়েছে? কিসে মনে পড়লো? বন্ধু পরিবহণ নাকি মিলন, কে মনে করালো? নিজেকে মনে পড়া মানে কী? মনে পড়া কী খারাপ তবে? আসলেই কি কোনো পার্থক্য নাই? নাকি পার্থক্য ঘোচানোই উদ্দিষ্ট? মাথা জট পাকায়। আমি কেবল জীর্ন অথচ সপ্রাণ গজফিতাটা হাতে দাঁড়িয়ে থাকি যে আজ রাতে নির্ঘুম মেপে চলবে আমাকে।

স্বয়ম


মন্তব্য

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আহা আরাম করে লেখাটা পড়বো ভাবলাম, বিদ্যুৎ চলে গেল। পরে আসছি।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

বিদ্যুৎ আসুক। মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম।

স্বয়ম

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

পুরো বিষয়টা চোখের সামনে ঘটছিল যেন। শেষটার চমকে ভাল লাগলো। অসম্ভব ব্যস্ততায় দিন কাটছে, তাই আপাতত পুরো মনোযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না সচলে। তবু গল্প দেখলে শেষ না করে পারি না।

(আপাতত কিছু টাইপো চোখে পড়লো-গাম্ভীর্য্য, ব্যাথা, আকাক্সক্ষায়, অনাকাক্সিক্ষত, বিষ্মিত, কাক্সিক্ষত,)

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ।

আকাঙ্ক্ষা-জনিত টাইপোগুলো নজরে পড়েছে, কিন্তু দেরী হয়ে গেছে। বাকিটা দেখলেও ধরতে পারি নাই। অনেক ধন্যবাদ।

স্বয়ম

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অনেক রাত হয়েছে। বাড়িতে একাই জেগে আছি। তা, ডালভাজা আমাকেও একটু দেওয়া যায়না!

অতিথি লেখক এর ছবি

এই নেন দিলাম। --- (ইমো হবে)

দেরী হইলো যদিও।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

গজফিতা !যেই গজের ভেতর প্রবেশ করল,সেই সময় কলম তুলে নিলেন-----
এ্যানি মাসুদ

অতিথি লেখক এর ছবি

কলম কি শেষ কইরা তুলি নাই? ইয়ে, মানে...

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

আরেকটু চললে ভাল হতো।
এ‌্যানি মাসুদ

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা যদি আপনার নিজস্ব ঢং হয়ে থাকে, গল্প বলবার, তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপ্নি একজন অসাধারাণ গল্পকার। খুবই ভাল লেগেছে, লেখা চালিয়ে যাবেন আসা করি।
ওই রুট এ আমিও নিয়মিত যাতায়াত করতাম, তবে বন্ধু তে ওঠা হতনা, তবুও রাস্তার পাশে দাড়িয়ে দেখতাম ওটার চলন বলন, দু একবার হরতাল এর সময় সম্ভবত উঠেছি, আমার কাংখিত বাস টি না পেয়ে। স্মৃতি কাতর হয়ে গেলাম।

অনন্যা

অতিথি লেখক এর ছবি

ঢংটা নিজস্ব কিনা জানি না, তবে যখন লিখি তখন আঙ্গিকের চাইতে আরামটায় নজর থাকে বেশি। যখন যেভাবে আরাম পাই সেভাবে লিখি।

আপ্নি একজন অসাধারাণ গল্পকার

খাইছে, গল্পকারেরা কেউ শুনে নাইতো?
আঙ্গিক, ভাষা বা কাহিনীর দিক থেকে এর চাইতে অনেক ভালো গল্প সচলেই আছে।

এটা আমার নিয়মিত রুট না। আমি অধিকাংশ সময় এগারো নাম্বারেই (ভালো বাংলায় পদব্রজে) চলাফেরা করি, মানে শরীর ও সময় শত্রুতা না করলে আরকি।।

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

স্বয়ম

মরুদ্যান এর ছবি

খাইসে! নিয়্ণ্ডার্থাল আমলের কথা মনে পইড়া গেলে তো সমিস্যা! ইয়ে, মানে...

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারেও খাইছে, নিয়েনডার্থাল আইলো কই থিকা? চিন্তিত

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

নিয়েনডার্থাল আসলো বোধহয় ‘আধ ইঞ্চি কম ছয় ফুট’ থেকে দেঁতো হাসি

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

ঘিলু কম বুঝতারি নাই।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক নিজেকে মনে পড়া আসলেই খারাপ বোধহয় মন খারাপ

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

খারাপ কিনা নিশ্চিত না, তবে চ্যালেঞ্জিং।

স্বয়ম

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

আমিও আপনার মতো ক'মাস ধরে এই পথেরই পথিক.......তবে বিলম্বিত সন্ধ্যার কিংবা রাতের যাত্রী হলেও এত চিন্তার অবকাশ পাইনি, কেননা হয় তখন গরম ছিল খুব না হয় ঘুম পাচ্ছিল (বেশিরভাগ তাই-ই হয় চোখ টিপি ).....তবে দিন থাকতেও চিন্তার ডালা খোলার মতো ইচ্ছা সবসময় হয় না- হয়তো চিন্তারই অভাব!!! আর ড্রাইভারসহ পুরো জগতের নির্লিপ্ততা এবং হুট করে নিরবতা ভাঙা কিংবা অকারণে ড্রাইভারকে গালি দেয়া থেকে শুরু করে দেশের হালহকিকত পর্যন্ত তা টেনে নিয়ে যাওয়া- এটা একেবারে মসলাদার রোজগেরে চিত্র হো হো হো

আপনার বয়ানটা অনেক সাবলীল তবে লিখিত রূপটা আকর্ষনীয় মনে হয়নি....আরও লাইন স্পেস প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা যেত এবং সংলাপগুলো আলাদা স্পেস নিয়ে লিখতে পারতেন.....একটু যেন বড়-ও লেগেছে লেখাটা- আমার কমেন্টের মতো চোখ টিপি
লিখতে থাকুন.........

অতিথি লেখক এর ছবি

রুট আর চিন্তাতো আমার না, কামরুলের। এখন দেখা যাইতেছে ব্যাটা আমারে গিলা ফেলছে। মহা মুশকিল---

স্পেসের বিষয়টা পরে মাথায় রাখার চেষ্টা করবো।

আমি স্বভাবে একটু বোধ হয় বাচাল আছি, কমাতে পারি না। অনেককেই দেখি ছোট কথায় অনেক কিছু বলে ফেলতে দেখি, মুগ্ধ হই কিন্তু নিজে পারি না।

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারন লেখার শৈলী তথা বুনন। কিছুক্ষনের জন্য নিজেকে কামরুল সত্ত্বায় অনুভব করলাম।

আর্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল।
Md Jahangir

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

স্বয়ম

Nilkontho Manob এর ছবি

জানিনা আপনি কোন বিষয় বস্তু মাথায় নিয়ে গল্পটা লিখেছেন, তবে ঢাকা শহরে দিনদিন মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং যন্ত্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এই তত্বটিকে আপনি এই রুপক গল্প দিয়ে অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অসংখ্য ভাললাগা রইল। এরকম আরো অসাধারণ গল্পের প্রতীক্ষায়......................

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ।

স্বয়ম

এক লহমা এর ছবি

পড়তে ভাল লেগেছে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

স্বয়ম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।