খুব ছোটবেলায় আব্বার মুখে শোনা গল্প:
বহুকাল আগে এই বঙ্গভূমে বাস করতেন এক সত্যবাদী পুরোহিত। কঠোর তার নীতিবোধ। জীবনে কখনো মিথ্যা বলেননি। স্বর্গের দিকে চোখ। একরাতে মন্দিরে বসে প্রার্থনা করছেন পুরোহিত। হঠাৎ সেখানে ছোট একটি শিশু কোলে হাজির হলো ভয়ে উদভ্রান্ত এক নারী। দেখে মনে হয় যেন প্রচণ্ড বিপদ তাড়া করেছে তাকে।
বললো "বাবা, তোমার মন্দিরে আমাদের আশ্রয় দাও। আমার বাচ্চাটিকে মেরে ফেলবে ওরা, বাঁচাও আমাদের"। পুরোহিত বললেন "কার কী দোষ সে তো আমি জানি না কিন্তু মন্দির তো দেবতার ঘর। সেখানে লুকিয়ে যদি থাকতে চাও থাকো। আমি বাধা দেবার কে?" ছুটে গেলো মা তার শিশু সহ মন্দিরের ভিতর।
কিছু পর সেখানে হাজির হলো ধারালো অস্ত্র হাতে কিছু লোক। পুরোহিতের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো - "পুরোহিত, এই পথে একটি মেয়ে ছুটে এসেছে, পাপিষ্ঠা, নষ্টা মেয়েছেলে। কোথায় সে? মন্দিরে?"
কিছুক্ষণ ভাবলেন পুরোহিত। জীবনের তার বাকি আছে অল্পই। সারা জীবনের ত্যাগ, সাধনা আর ন্যায় নিষ্ঠা সব কি বিসর্জন দেবেন এই নারীর জন্য? ঈশ্বরের কৃপা বঞ্চিত হবেন, মিথ্যে বলবেন? কেন? কে জানে হয়তো সত্যি মেয়েটারই দোষ। তারপর আস্তে আস্তে আঙ্গুল তুললেন- দেখিয়ে দিলেন মেয়েটি আছে মন্দিরের ভিতর। "মানুষ"গুলো ঢুকে গেলো ভিতরে। টেনে হিঁচড়ে বের করে আনলো মেয়েটিকে। জবাই করলো তাকে। এরপর মায়ের "পাপের" চিহ্ন শিশুটিকে প্রচণ্ড জোরে মাটিতে আছড়ে দিলো পুরোহিতের সামনেই। স্তব্ধ পুরোহিত। প্রার্থনা করছেন কান চোখ মুখ বন্ধ করে, কোন এক বিচিত্র ঈশ্বরের কাছে - যেনো সেই প্রার্থনা ঢেকে দেবে নারীটির, শিশুটির ভয়ার্ত অন্তিম চিৎকার।
নববর্ষের দিন যখন নারীরা নির্যাতিত হয়েছিলেন তখন একদিন ছোট বোনটির সাথে এই বিষয়টি নিয়ে ফোনে আলাপ হচ্ছিলো। ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সে। দু:খ করে বললো - "আপু, আমার মনে হয় মেয়েরাই মেয়েদের বড় শত্রু। আমার ইউনিভার্সিটির কয়েকজন মহিলা কলিগ বলছিলেন মেয়েগুলোরই নাকি দোষ। আজকালকার মেয়েদের নাকি কাপড় চোপড় ঠিক থাকে না। ছেলেরা তো এরকম করবেই। আর তাছাড়া এইসব ভীড়ের মধ্যে যাওয়ারই বা কি দরকার?"
শুনে আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেও অবাক হলাম না। কারণ এ জাতীয় যুক্তি আমি নিজেও বহুবার বহু মহিলার মুখে শুনেছি। ছোট বোনটির কথা ভাবলাম, আসলেই কি নারীরাই নারীদের সবচেয়ে বড় শত্রু? এদেশে যৌতুকের জন্য যতগুলো নারী নির্যাতন হয়, লক্ষ্য করে দেখবেন তার প্রায় প্রতিটির পেছনেই পুরুষটির পাশাপাশি আছে কোন এক শ্বাশুড়ির সক্রিয় হাত।
কেন? এর জবাব পেতে যদি নির্যাতকের দুই পায়ের ফাঁকে কী আছে বা নেই সেই খোঁজে যান, তবে উত্তর মিলবে না। পুরুষতন্ত্র বলে আমরা যা জানি সেটি কিন্তু আসলে একটি প্রক্রিয়া। নারী বা পুরুষ দুইই এই প্রক্রিয়ার ফলাফল ধারণ করতে পারে সমান ভাবে। সিমন দ্যা বুভুয়াঁ ১ এজন্যেই বলেছিলেন - "কেউ নারী হয়ে জন্মায় না, ধীরে ধীরে নারী হয়ে ওঠে"।
আমাদের সমাজে এই নারী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি কি রকম? "ভালো" মেয়ে প্রশ্ন করে না, জোরে হাসে না, জোরে কথা বলে না, তর্ক করে না, প্রতিবাদ করে না, নিজের চাহিদার কথা মুখ ফুটে বলে না। সে জটিলতা বোঝে না, রাজনীতি তো নয়ই। তার শরীর তার লজ্জার বস্তু তাই নিজেকে আবৃত রাখে সে। পা ঢাকে, মাথা ঢাকে, তাতেও যখন হয় না তখন মুখ ঢাকে। একসময় নিজের মনুষ্যত্বটুকুও ঢাকে প্রাণপণে। হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এণ্ডারসনের "লিটল মারমেইড" গল্পটির কথা মনে আছে কারো? সেই যে ছোট্ট জলপরী, রাজপুত্রের কাছে এবং তার সমাজের কাছে গ্রহনীয় হওয়ার জন্য ধীরে ধীরে একটি একটি করে স্বকীয়তা হারায় সে? সবশেষে হারায় তার কণ্ঠস্বর। ২
সমাজের চোখে "ভালো" মেয়েরা আসলে দু'পায়ে হেঁটে বেড়ানো চোখ মুখহীন এক আবৃত মাংসপিণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়। অনেকদিন আগে তসলিমা নাসরিন যেমন বলেছিলেন- 'ফলমুল মাছ মাংস নষ্ট হয়, সেই সঙ্গে মেয়েও নষ্ট হয়।' আর "ভালো" পুরুষেরা বড়জোর সেই বকধার্মিক পুরোহিতের মতো "ন'মানুষ"। কখনো কখনো সে রক্ষকও বটে কিন্তু বেশীর ভাগ সময়েই তা হয় সমাজের চোখে চুলবুল পাণ্ডে হয়ে ওঠার বাসনা থেকে, চাপিয়ে দেওয়া "ভক্ষক" সত্ত্বাটিকে অস্বীকার করে - এর বিরুদ্ধে লড়াই করে নয়।
এর ব্যতিক্রম কি নেই? আছে নিশ্চয়ই। কখনো কখনো এই দুর্ভাগা দেশে সৌভাগ্যক্রমে দু'একটি লিটন, সুমন, অমিতের দেখা মেলে কিন্তু অযুত সহস্র ন'মানুষের দেশে শেষ পর্যন্ত তারা বন্দী থাকেন ব্যতিক্রমের খাতাতেই। এ প্রসঙ্গে ধন্যবাদ জানাই সেই ব্যতিক্রমী নারীদেরও, শত বাধা-বিপত্তি আর চোখ রাঙানী উপেক্ষা করে যারা নববর্ষে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, এমনকি আরেক বৈশাখের আয়োজন করেছেন নিজেরা মিলে।
এই সমাজে ভক্ষক পুরুষ। রক্ষকও সে। কারণ আমরা ধরে নিয়েছি "হিরো" মানেই পুরুষ। প্রীতিলতা, জাহানারা ইমাম, মতিয়া, হাসিনা, তারামন বিবি আর শত সহস্র বীরাঙ্গনার দেশে নারীরা আজও নির্যাতনের প্রতীক হয়েই থাকেন, প্রতিবাদী নায়িকার ভুমিকায় তাদের স্বকীয় বিচরণ নেই বললেই চলে। এদেশে নারী শরীর ধারণ করা দুইবারের প্রধানমন্ত্রী কোন এক খালেদা বেগম দিনে দুপুরে পুড়িয়ে মারেন শিশুদের, খালি করেন শতসহস্র মায়ের বুক। শশ্রুমন্ডিত তেঁতুল শফীদের বিকৃত লালা গায়ে মেখে গণতন্ত্রের সবক দেন আর আমরা সুশীল নরনারীরা তা মুখ বুজে শুনি। বেলী ফুল আর পরচুলো নিয়ে কেটে যায় আমাদের গন্ধময় বিকেল। ৩
ক্রোধ হয়না, ঘৃণা হয়না আমাদের কারণ ভালো মেয়েদের ওকথা ভাবতে নেই। পুরুষ এসে পাঞ্জাবীতে মুড়ে দিলে তবে আমরা রক্ষা পাই, কখনো সখনো বোন বলে ভাবলে, মা ডেকে একটু সন্মান করলে বর্তে যাই। নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শেষমেষ পুরুষদের ডাকা প্রতিবাদী কর্মসুচীতে একটুখানি পাশে দাঁড়াতে পারলেই বেশ একটা মুক্তি মুক্তি ভাব বোধ করি। এই দেশটির জন্মযুদ্ধে সবচেয়ে বেশী ত্যাগ স্বীকার করেছি আমরা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরটি একসময় ছিলো এক নারীর, অথচ আজ এই আন্দোলনের পুরোভাগে, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংগঠনিক নেতৃত্বে নারী আছেন কয়জন? এমনকি এই দেশে সমাজবদলের রাজনীতির কথা যারা বলেন সেই দলগুলোতেও নারীর কার্যকর নেতৃত্ব কোথায়?
এ যেনো কোন এক অজানা স্বর্গের খোঁজে ছুটে চলেছেন পুরোহিত আর কোন এক সমাজের চোখে ভালো হবার বাসনায় নিরন্তন 'অসংগ্রামে' লিপ্ত নারীরা। যে সত্যটি তারা জানেন না সেটি হলো, হাজার বার জন্ম নিলেও, শতবার অগ্নি পরীক্ষা দিলেও, পাঁচশো গজ কাপড়ে নিজেকে মুড়ে রাখলেও, সুবিশাল একটা গর্ত খুঁড়ে নিজেরা তার মধ্যে বসে থেকে নিজেদের মাটি চাপা দিলেও সমাজ নিরাপদ বোধ করবে না তাতে। এবং অবধারিত ভাবেই সমাজ নির্ধারিত শেয়াল এবং মাংসপিণ্ড ঠিকই খুঁজে নেবে পরস্পরকে।
আমি একজন মা, তিন বছরের একটি পুত্র সন্তানের জননী। ক'দিন আগে জ্বরে ভুগছিলাম। চুপচাপ শুয়ে আছি বিছানায়। হঠাৎ টুপটাপ পায়ের শব্দ- তারপর গালে ছোট ছোট হাতের ছোয়া, কপালে চুমু। পুত্র আমার বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে। সে জানে না তাকে ধারণ করা তার জীবনদায়ীনির এই শরীর সমাজের চোখে নিয়তই কতখানি লজ্জার বস্তু - বারো হাত কাপড়ে আচ্ছাদিত করে রাখা সহস্র বছরের কলঙ্কের, পাপের আধার।
পুত্র জানে বাবা কাজে যায়, মা'ও। প্রয়োজনীয় কিছু লাগলে চাইতে হয় মায়ের কাছে, বাবার কাছে নয়। আমার ছেলে এখনো বোঝে না বাংলাদেশ শুনলেই মার চোখ কেন ভিজে ওঠে বার বার। সে জানেনা ১৫ আগস্ট এলেই মা কেন বাঘের মতো দেখতে মানুষটির ছবিতে হাত বোলায় পরম মমতায়। সে জানে না অভিজিৎ, বন্যা নামের মানুষদের কথা শুনলেই বাবা কেন মন খারাপ করে। সে জানে না কেনো সে মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে 'জয় বাংলা' বললেই মা চুমু দেয় কপালে। কিন্তু একদিন সে নিশ্চয়ই জানবে।
আমার পুত্র জানেনা তার প্রিয় বন্ধু "ববিন", বিস্ময় কিংবা মৌনের ধর্ম পরিচয় কি। সে জানেনা তার প্রতিদিনের খেলার সাথী ইসাবেলা একজন সামান্য নারীমাত্র। ইসাবেলা বর্ণ পরিচয় শিখেছে তার আগে, স্কুটার চালানোতেও দক্ষতা তারই বেশী। কাল যখন একটি দুষ্ট ছেলে তার নরম কোকড়ানো চুলগুলো ধরে টেনেছিলো, বাঘিনীর মতো তেড়ে এসে তাকে বাঁচিয়েছে ইসাবেলাই। আমার ছেলে জানে না সে হিন্দু, মুসলমান না খ্রীষ্টান। আমি আর তার বাবা আমাদের জীবনের সবটুকু অর্জন বাজী রেখে চেষ্টা করে যাবো এই "সত্য" গুলো যেনো সে কখনো না জানে।
স্বীকার করতে লজ্জা নেই আমি একজন অক্ষম, ব্যর্থ মা। শিক্ষক হিসাবে, নারী হিসাবে "মানুষ" তৈরীর চেষ্টাই করে যেতে পারি কেবল। ক্ষমা করবেন, সমাজের চোখে সফল এবং ভালো "পুরুষ" কিংবা "নারী" তৈরীর বিদ্যা আমার জানা নেই।
নওরীন তামান্না
মন্তব্য
চমৎকার বলেছেন! লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
কিন্তু আপনার ফ্রাস্ট্রেশনের পাশাপাশি এর থেকে উত্তরণের উপায়টিও আলোচনা করলে লেখাটি পূর্ণতা পেতো। উদাহরন স্বরুপ আপনার শিশু সন্তানকে কিভাবে শিক্ষা দিবেন চিন্তা করছেন সেটিও আলোচনা করতে পারতেন বলে আমার মনে হয়েছে।
ধন্যবাদ। সনাতনী নারী বা পুরুষের ধারণা বা এটি হয়ে ওটার যে প্রক্রিয়া, তা ভাঙ্গার উপায়গুলো নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার সুযোগ তো আছেই। তবে যে কোনো পরিবর্তন ঘর থেকে শুরু হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, তাই বলতে চেয়েছি পুত্রের উদাহরণ টেনে।
আপনার শিশু যেন বেড়ে ওঠে আমাদের চেয়ে কম কদর্য এক পৃথিবীতে -
facebook
ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব ভাল লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে, আবার খুব লজ্জ্বিতও বোধ করলাম কারণ পুরুষ হিসেবে এই সমাজে আমিও যে বাস করি; যেহেতু পুরুষের তৈরী নৈতিকতা, বিধান, বিধি ইত্যাদি মেনে চলতে গিয়ে প্রতিদিন প্রতি মুহুর্তে নারী হারাচ্ছে তার মানুষের সম্মান, সেহেতু নিজেকে প্রত্যহ লজ্জ্বা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না। আপনার সন্তান একজন আগামীর মানুষ হোক, সত্যিকারের মানুষ হোক এই কামনা করি। ভাল থাকবেন।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ধন্যবাদ, আগামীর মানুষেরা একটা ভিন্ন পৃথিবী পাক।
মূল বিষয়টা পুরুষতন্ত্রেই। আসলে বলতে পারছি না। একটা ভয়ঙ্কর চাপ তৈরি হয়েছে, হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভালো থাকবেন। আগামীর মনন যেন এতোটা কলুষ না ধরে। যেন বেড়ে ওঠে মানুষ অর্থের অনুগামী হয়ে।
স্বয়ম
ধন্যবাদ।
স্বর্গের লোভ বা নরকের ভয় যদি মানুষকে অন্যায় করা থেকে বিরত রাখতে পারতো তাহলে দুই/তিন হাজার বছর আগেই দুনিয়াটা স্বর্গখণ্ড আর লোকজন দেবতুল্য হয়ে যেতো। কিন্তু সেটা হয়নি, কারণ ধর্ম নৈতিকতার ভিত্তি নয়। নৈতিকতার ভিত্তি মানবিকতা - যেটা আপনার উপসংহারেও স্পষ্ট। আমরা সবাই নিজে 'মানুষ' হলে আর আমাদের সন্তানদেরকে 'মানুষ' বানাতে পারলে অনেক অন্যায় এমনিতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই উপলদ্ধি আমাদের মুক্তি আনুক।
এই লেখাটি পড়ে আমি খুবই খুশি কারণ আমি ২/৩ পড়েই প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলাম এটা কার লেখা হতে পারে পরে নাম দেখা ধারনা মিলে যাবার আনন্দে আটখানা হয়ে গিয়েছি!
আমি আপনার যত লেখা পারি পড়ে ফেলি। আমার ভালো লাগে। এই লেখাটাও তাই। ভালো লেগেছে।
আমার মনে হয় তাত্বিকতা থেকে বেড়িয়ে এসে আমার দরকার বাটবটা নিয়ে লেখা। কি হয়েছে, কি ভাবে হয়েছে, এবং সেটা জেনে, কি করে এই অবিশাপ থেকে বের হওয়া যায়, সেসব নিয়ে কথা বলাটা খুব দরকার।
প্রিয় "Rain Soaked Poet ", কষ্ট করে পড়বার জন্য মেলা ধন্যবাদ। এই উৎসাহ টুকুর জন্য আরো একটু বেশী ধন্যবাদ।
আমার কলিগ ছিলো একজন, একসঙ্গে একই দিনে জয়েন করেছিলাম। 'ভদ্র'লোক চবি থেকে এমবিএ করা, তার ওয়াইফ তখন ফেনীর সহকারী জজ। মেয়েদের বলতেন 'মাল'। ডেইলি একবার তার সঙ্গে খুনোখুনি লেগে যেতো আমার, ঐ টাইপের রসিকতার চোটে। এরপর সিটপ্ল্যান বদলে নিয়েছিলাম। এই হলো অ্যাভারেজ 'শিক্ষিত' বাঙালি পুরুষের মানসিক অবস্থা।
নিয়মিত লিখুন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথীডোর, "এই হলো অ্যাভারেজ 'শিক্ষিত' বাঙালি পুরুষের মানসিক অবস্থা।" এই কথাটি খুব ঠিক বলেছেন। ঐ ভদ্র(!)লোকের
স্ত্রী এবং কন্যার জন্য বড় দু:খ হলো।
সচলায়তনে নিবন্ধন করে ফেলুন।
আচ্ছা।
দারুণ লেখা নওরীন আপু। আপনার লেখা ফেসবুকে পড়ি বেশিরভাগ সময়েই। সচলে আপনাকে নিয়মিত দেখতে পেলে খুবই ভালো লাগবে।
আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের প্রথম ধাপ হলো সমস্যাটাকে স্বীকার করে নেয়া। ধর্ম আর সমাজের নিয়মকে কারণ দেখিয়ে যে অপরাধগুলো হয় সেইসব অপরাধের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো এসব ক্ষেত্রে সমস্যাটাকেই স্বীকার করা হয় না। মেয়েদের বেশিরভাগ সমস্যার মূল কারণ ধর্ম আর সমাজ। ধর্মে তো আইনতই মেয়েরা অর্ধেক মানুষ, আর সমাজে আইনত নারীপুরুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমান বলা হলেও মনে মনে কেউই বিশ্বাস করে না আসলে।
তাই প্রথম কাজ হলো সমস্যাগুলোর কথা বলতে শুরু করা। হাজার বছরের সমস্যা একদিনে সমাধান হবে না এটা সত্যি। সমস্যার কথা বলতে শুরু করলে সমাধানের পথও নিশ্চয়ই ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার সাথে পুরোপুরি একমত যে সমস্যাগুলোর কথা বলতে শুরু করা খুবই জরুরী। সেই বলতে পারার পরিবেশ তৈরীও জরুরী। আমার পরিচিত অনেক মেয়ে আছেন যে নিকট আত্মীয়ের কাছে এবিউজড হয়ে সে কথা নিজের মা'কে পর্যন্ত বলতে পারেনি ভয়ে কারণ তার মা বিশ্বাস করবেনা। আমার পরিচিত এক মেয়ে ছিলো, প্রাইভেট টিউটরের কাছে এবিউজড হয়ে মাকে বলায় মা মেয়েকে দুটো থাপপড় দিয়ে সেই শিক্ষকের কাছেই আবার পড়তে পাঠিয়ে ছিলো।
আপনার লেখা ফেসবুকে পড়েছি অনেক। এখানে দেখে ভালো লাগল। আশা করি আপনাদের পরিচর্যায় বড় হয়ে ওঠা পরবর্তী প্রজন্ম একটা সুস্থ সমাজ পাবে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ। আমি আপনার লেখাটা শুধু শেয়ার না, কাছের সবাইকে ধরে ধরে পড়াবো। নিয়মিত লিখুন, সচলায়তনে নিবন্ধন করে ফেলুন।
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এই অসাধারণ লেখাটা পড়ে ফেলেছি শেয়ার করা লিংক ধরে।
আপনাকে সচলে পেতে চাই আপু। শুভেচ্ছা
আশৈশব পরিচত একটা গল্পের এমন ইন্টারপ্রেটশনে মাথা ঝিম ঝিম করছে। যদি আমি জানিই এধরণের বেশিরভাগ ফেইরী টেইলগুলোতে মেয়েদের সুন্দর লাগা এবং প্রেমে পতিত হওয়া ছাড়া তেমন কোনো কাজ নাই, তারপরও ধাক্কা খেয়েছি। ‘Judicial Diversity, the Woman Judge and Fairy Tale Endings’ বইটা পড়তে চাই। অন্তর্জালে পেলাম না। কোথায় পাবো বলতে পারেন?
নাবিলা
সবাইতো সবকিছু বলে দিয়েছেন।
আপনার ব্যস্ততা কমলে একটা মানুষের নারী হবার প্রক্রিয়া নিয়ে একটা বিশদ লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
(অপূর্ব লেখা)
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আপনার পুত্রটি মানুষ হিসেবেই বেড়ে উঠছে। শুভ কামনা পুত্রের জন্য।
আপনার লেখা বরাবরই ধারালো। ভালো লাগে।
আপনার লেখার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত, তাই নতুন করে মুগ্ধতা জানানোর কিছু নেই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কী মন্তব্য করবো বুঝে ওঠতে পারছি না বলে আপাতত
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন