একটু দাঁড়াবেন, প্লিজ?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ০৬/০৫/২০১৫ - ১:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম ঘটনাটা বেশ কয়েক বছর আগের। ২০০৮/৯ এর দিকে হবে। বাসে করে ক্লাসে যাচ্ছিলাম সকাল সকাল। পুরো বাস অফিসগামী মানুষ আর ক্লাসগামী ছাত্র দিয়ে বোঝাই। কোনমতে সামনের দিকে একটু জায়গা করে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলাম মহিলা সিটে দুইজন ছেলে বসা। বাসে কোন মহিলা দাঁড়িয়ে নেই দেখে ভাবলাম থাকুক বসে। কেউ উঠলে নিশ্চয়ই সিট ছেড়ে দিবে।
ভুল ছিলাম আসলে।

নেক্সট স্টপেজেই দুজন মধ্যবয়স্ক মহিলা উঠলেন। উনারাও অনেক কষ্টে ভীড় ঠেলেঠুলে মহিলা সিট এর সামনে এসে দাঁড়ালেন। অবাক হলাম দেখে যে উনারা নিজে থেকে বললেন না ছেলেদুটোকে উঠতে। আরো অবাক হলাম যে ছেলেদুটিও দেখে না দেখার ভান করল। আশেপাশে তাকালাম, সবাই কেমন যেন কি নিয়ে ব্যস্ত। আমি বলতে যাব তখন দেখি বাসের প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি সহ্য করতে না পেরে উনাদের একজন নিজে থেকেই বললেন, "বাবা, তোমরা উঠলে আমরা একটু বসতে পারতাম।" তাজ্জব হয়ে গেলাম ছেলে দুজনের একজনের কথা শুনে। তারা এখানে আগে বসেছে, তাই এটা তাদের জায়গা এবং তারা উঠবে না! শুনে উনি বললেন "বাবা, এটা তো মহিলাদের সিট, প্রচন্ড ভীড় দেখে বললাম, নইলে বলতাম না।" এরপর ওই ছেলে যা বলল তা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সে বলল, বসতে খুব বেশি ইচ্ছা করলে তার কোলে বসলেই পারে। বলেই হাসা শুরু করল।
আমি শান্ত চোখে ওই মহিলার দিকে তাকালাম। উনার দীর্ঘশ্বাস আর ওই দৃষ্টির মধ্যে যে কি বিশাল কষ্ট ছিল তা বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। দৃষ্টি সরিয়ে আশেপাশে তাকালাম। সবাই তখনো কি নিয়ে যেন ব্যস্ত, কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব।
ছেলেটার কলার চেপে ধরে যখন ওই আন্টির কাছে মাফ চাওয়াচ্ছিলাম তখন ওই লোকেরাই কি বলছিলো জানেন? এদের নাকি গনধোলাই দেয়া উচিৎ। আমি নাকি কাজের কাজ করেছি। আর আমি তখন মনে মনে ভাবছি, আমার হাত মাত্র দুটা কেন। আরো কয়টা থাকলে এদের সবার কলার ধরে মাফ চাওয়াতাম।
সকাল সকাল টাইটা কলারের ঠিক মাঝখানে পরে আসতে ইনারা ভুলেন না, ভুলে যান শুধু মেরুদণ্ডটা আর বিবেকটা নিয়ে বের হতে।

দ্বিতীয় ঘটনা খুব বেশি হলে এক সপ্তাহ আগের হবে। আবার আমি বাসে এবং যথারীতি অনেক ভীড়। আমার স্টপেজ চলে এসেছে দেখে নামতে গিয়ে খেয়াল করলাম তড়িঘড়ি করে একজন আপু বলল উনিও নামবেন। খুব বেশি হলে কলেজে পড়েন। স্কার্ফ এবং ফুলহাতা কামিজ পড়া। উনাকে নামার জায়গা করে দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম ঠিক উনার পিছু পিছু আরেকজন ছেলে উনার আর আমার মাঝখানে দাড়িয়ে গেল নামতে। কোথায় যেন খটকা লাগল। বাস থামলে একজন আংকেল, উনার পর ওই আপু, তারপর ওই ছেলে, শেষে আমি নামবো। মনে হচ্ছিল ছেলেটাকে চোখে রাখা দরকার।
ঠিকই মনে হচ্ছিল।

বাস থেকে আপু নামতে যাবেন এমন সময় দেখলাম ছেলেটা তার বাম হাতটা আপুর সামনে নিয়ে কিছু একটা স্পর্শ করতে চাচ্ছে।
না, আমি তাকে সেটা করতে দেইনি। ওই হাতটাই তার পিছনে মুচড়ে ধরে তাকে বাস থেকে নামানো হয়। আপুর চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না তখন। আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই চেহারা। রাগ, ঘৃণা ছাপিয়ে যা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছিলো তা ছিল অসহায়ত্ব। আমি যখন ছেলেটাকে বলছিলাম উনার পায়ের সামনে পড়ে মাফ চাইতে তখন উনি বলেছিলেন, "আমার কাছে মাফ চাওয়াতে হবে না। কিন্তু ভাইয়া, আপনি এদেরকে ছেড়ে দিয়েন না"। ছেলেটাকে কান ধরে উঠবস করিয়ে আর গনধোলাই এর ব্যবস্থা করিয়ে যখন বাসায় ফিরছিলাম তখন উনার ওই কথাটাই বারবার মাথায় ঘুরছিল। উনি বলেননি যে "আপনারা" "একে" ছেড়ে দিয়েন না। উনি বলেছেন "আপনি" "এদেরকে" ছেড়ে দিয়েন না।
আমাদের সমাজে যেখানে আমাদের বহুবচন হওয়া দরকার সেখানে আমরা একা। আর যেখানে কেউ থাকার কথা না, সেখানে এখন অনেক মানুষ।

আসুন, এবার উপরের ঘটনাদুটো একটু বিশ্লেষণ করি। প্রথম ঘটনাটি ঘটে একজন মধ্যবয়স্ক মহিলার সাথে, ঘটায় তারই ছেলের বয়সী একজন। ছেলেটার কথা আমার যদ্দুর মনে পড়ে তাকে আমার খুব একটা শিক্ষিত মনে হয়নি। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি যার সাথে ঘটে উনি খুব বেশি হলে কলেজে পড়েন। কিন্তু যে ঘটায় তার কাধে আমি নাইকি'র ব্যাগ দেখেছি, চোখে ছিল রেমন্ড এর চশমা। হতে পারে কোন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পিএইচডি ডিগ্রীধারী প্রফেসরের কাছ থেকে উচ্চতর জ্ঞান নিয়ে বাসায় যাচ্ছিল সেই ছেলে।
তারমানে আমরা কিন্তু এধরনের ঘটনা যাদের সাথে ঘটে আর যারা ঘটায় তাদের কাউকেই বয়স, শিক্ষা এধরনের কোন শ্রেণীতে আলাদা করতে পারি না। ঘটনার স্থানও কিন্তু কোন নিরিবিলি জায়গা নয়। শত শত মানুষের চোখের সামনে প্রতিদিন এরকম ঘটনা ঘটছে। আমি এই লেখা লিখতে লিখতেই হয়ত কিছু নারী চোখের পানি মুছতে মুছতে মেয়ে হয়ে জন্মানোর জন্য নিজেকে অভিশাপ দিচ্ছেন, আপনার আমার খুব কাছেই কোথাও হয়ত।

এথেকে উত্তরণের পথ কি? আসলে কি হয়েছে জানেন? আমাদের সমাজের একটা বিশাল অংশ কিন্তু পচে গেছে। ওই অংশ ঠিক করার আর কোন উপায় নেই। শরীরের কোন অংশ পচে গেলে ডাক্তাররা যেমন ওটা কেটে বাদ দিয়ে দেন, তেমনি সবচেয়ে ভালো হত যদি আমরা সমাজের ওই অংশটুকু কেটে বাদ দিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু আফসোস, এই ক্রম পচনশীল এলাকাতে আমরা হাত দেয়ারই সময় পাইনা, তাই দিন দিন এর সীমানা বাড়ছে।
একটা বড় সমস্যাকে বড় করে দেখে তা সমাধান করা অনেক কঠিন। কিন্তু আসলে অনেকগুলো ছোট ছোট সমস্যা মিলেই একটা সমস্যা বড় হয়। আপনি হয়তো কোন সংঘবদ্ধ দলের প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু এরকম একটি দুটি ছেলের বিরুদ্ধে দাড়াতে কিন্তু আপনার কোন ভয় নাই। আমার বিশ্বাস ওই ছেলেদুটো এবং ঘটনার সময় তার আশেপাশে থাকা একিরকম মনমানসিকতার ছেলেগুলো এরপর থেকে এধরনের কাজ করতে একশবার চিন্তা করবে। সত্যি বলি, আমি ওদের চোখে ভয় দেখেছিলাম। প্রচন্ড ভয়।

বেশি কিছু লাগেনা কিন্তু। হাফ চামচ মেরুদণ্ড আর এক পোয়া বিবেক থাকলেই হয়ে যায়। আমরা আসলে সংখ্যায় ওদের চেয়ে বহু বহুগুণ বেশি। আজকে আমরা যারা এধরনের ঘটনা দেখে মুখ অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে ভাবি যে কি দরকার, বাসায় আমার মা, আমার স্ত্রী আমার জন্য অপেক্ষা করছে, আমার কিছু হয়ে গেলে তাদের কি হবে? একবার ভেবে দেখুন, উনাদের কিছু হয়ে গেলে আপনি কাকে দোষ দিবেন? আর আপনার আসলে কিছুই হবেনা, বিশ্বাস করুন। একজন প্রতিবাদী মানুষকে আঘাত করার মত সাহস তাদের নেই। তাদের কাপুরুষতার জন্যই তো আমরা তাদের প্রতিবাদ করছি, তাই না?
এরকম পচে যাওয়া একজন দুজন করে হাজার হাজার কাপুরুষকে যখন আমরা শিক্ষা দিতে শুরু করব তখন দেখবেন এরা ভয় পাওয়া শুরু করবে। ওরা বুঝবে এই সমাজের কোন নারী রাস্তায় একা হাটে না। তার ভাই, বাবা, ছেলে, বন্ধুরা তার আশে পাশেই আছে। সময় হলেই পাশে দাড়াবে।

আমি কথা দিলাম, আমি যদি কখনো রাস্তায় আপনার স্ত্রী, মা, বোন অথবা বন্ধুর অসন্মান হতে দেখি, আমি উনাদের পাশে দাড়াবো। উনি একজন নারী সেজন্য না, উনি আমার মতই একজন মানুষ সেজন্যই আমি আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব তার থেকেও বেশি দিয়ে প্রতিবাদ করব।

আপনি কি দাড়াবেন আমার প্রিয় মানুষদের পাশে যখন আপনাকে তাদের দরকার হবে?
একটু দাঁড়ায়েন, প্লিজ!

- নাসিফ আহমেদ


মন্তব্য

অনি এর ছবি

এই লেখাটি পড়ে মন ভাল হয়ে গেল।

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

-------
নাসিফ

রানা মেহের এর ছবি

প্রথমেই চমৎকার এই কাজগুলোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

নারীর ওপর যৌন অত্যাচারে আসলে কিছুই বাঁধা নয়।
এর ভিক্টিম যেমন যেকোন বয়সী যেকোন পেশা কিংবা বয়সধারী তেমনি এর পারপ্রিটেটরও হতে পারেন যে কেউ। এদের রুখে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। একজন দুজন করে নারী পুরুষ নির্বিশেষে দাঁড়াতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে, আপনি যেমন করেছেন।

ভাল থাকবেন। লেখা জারি রাখবেন।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনিও ভাল থাকবেন। হাসি

-------
নাসিফ

মাসুদ সজীব এর ছবি

অন্যায়ের প্রতিবাদে আপনার উল্লেখিত দুটো ঘটনার জন্যে সাধুবাদ। প্রতিবাদ জারি থাকুক সর্বত্র।

ঢাকা শহরে প্রায় প্রতিটি দিন বাসে নারীদের নিয়ে এমন বঞ্চনার ঘটনার ঘটে থাকে। সেই সব ঘটনা থেকে বাংলাদেশের মানুষদের পুরুষতান্ত্রিক মন-মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। নারীদের আসনে বসে থেকে বেশিভাগ শিক্ষিত মূর্খরা যুক্তি দেয় ‘সব খানে সম অধিকার হলে বাসে আসনেও সম অধিকার কেন নয়? এবং দেখা যায় সেই মতবাদে কমবেশি সবাই একমত পোষন করে। এই শুয়োরগুলো জানে না তাদের মত আরও অসংখ্য শুয়োর আছে যারা ভিড় হলেই নারীর শরীরে হাত দেয়, গায়ে ঢেলে পড়ে! তোরা যদি নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দিতে পারতি তাহলে না হয় তোদের কথা মানা যেত। এদের দেখলে মনে হয় এদের বাহিরটাই সজ্জিত হয়েছে রঙিন পোশাকে ভেতরে এখনো ময়লা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আসুন প্রতিটি বাসে, প্রতিটি যানবাহনে এমন শুয়োরদের প্রতিহত করি।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রতিবাদ জারি থাকুক সর্বত্র।

-------
নাসিফ

আয়নামতি এর ছবি

এভাবেই প্রতিবাদে সরব থাকবেন ভাই! অনেক অনেক ধন্যবাদ, শুভকামনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

অবশ্যই থাকবো।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। হাসি

-------
নাসিফ

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

রুখে দাঁড়ানোর মানসিকতা সবার মাঝে জেগে উঠুক।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও সেই স্বপ্নই দেখি!

-------
নাসিফ

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রতিবাদ করতে হবে পুরুষ বা নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আপনার মত মানুষের এখন বড় অভাব ভাই, অন্তত ১০% মানুষও যদি এভাবে ভাবত, কাজ করত, তবে সমাজের চেহারাই পালটে যেত।

লেখা ভাল লাগল।

-----------
ফারাবী

অতিথি লেখক এর ছবি

একদিন না একদিন আমরা পারবোই।
অনেক ধন্যবাদ। হাসি

-------
নাসিফ

শাব্দিক এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে ভাল লাগল, এই কারণে যে আপনার মত মানুষ বাংলাদেশে অন্তত একজন হলেও আছে।
ঠিক জানি না কি কারণে আমাদের দেশের ছেলেদের মানসিকতায় এটা ঢুকে গেছে যে মেয়েদের হ্যারাস করলে এদের পুরুষত্ব বাড়ে। এইরকম কাপুরুষ সমাজে বেড়েই চলেছে। শিক্ষা, জ্ঞান, প্রযুক্তি কোন কিছুই এদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে পারছে না।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি
কিছু কিছু মানসিকতা বদলায় না। এদের প্রতিরোধ করতে হয়।

-------
নাসিফ

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

শাবাশ! সোজা হয়ে দাঁড়াবার মতো সমাজের কোমরের জোরই যে কমজোরি হয়ে গেছে! হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

-------
নাসিফ

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

-------
নাসিফ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঠিক! ঠিক!! আমাদেরকেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা ঘুরে দাঁড়ালে অনেক বীরপুঙ্গবই ল্যাজ গুটিয়ে মাফ চাইতে বাধ্য হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

একদম ঠিক!

-------
নাসিফ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এরকম ঘটনা চোখের সামনে দেখলে এভাবেই প্রতিবাদ করবেন, ঠ্যাঙাবেন। পাশাপাশি মেয়েটিকেও বলবেন প্রতিবাদ করতে। সবাইকেই প্রতিবাদে সরব হতে হবে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

অবশ্যই।
আপনিও সরব থাকবেন।

-------
নাসিফ

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

দুটো ঘটনাই আমার সাথে ঘটেছে। প্রথমবার ছেলেগুলো আমাকে বলেছিল, ও সারাদিন খালি সমান অধিকার, সমান অধিকার আর বাসে উইঠা মহিলা সিট খোঁজেন! আমি বলেছিলাম, ওইসব কথা নিয়ে তর্ক করবার খায়েস নাই, উঠতেই হবে, নইলে খবর আছে! হেহেহে, ভয় পাইসে, সরেও গেছে। এদের অধিকার বোঝাতে গেলে বিপদ মনে হয়েছিল, আমি ঠিকই বুঝেছিলাম, নেংটি ইঁদুরগুলোর জন্য ঝাড়ই যথেষ্ট।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রের সম্মুখীন যতবারই হয়েছি হাত মুচড়ে ধরেছি নতুবা জামার কলার টেনে ধরে এমন শিক্ষা দিয়েছি না!

আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ভাল লাগলো। লিখুন। পাশেও থাকুন।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।
লেখার চেষ্টা করবো। আর পাশে তো আছি'ই। হাসি

-------
নাসিফ

তিথীডোর এর ছবি

যাক, অনেকগুলো গুটিয়ে যাওয়া ছবির বিপরীতে অন্তত একজনের ঘুরে দাঁড়ানোর ছবি, একগাদা ভীরু, নীরব মুখের জোয়ারে অন্তত একটা সরব মুখ।
মন ভাল হয়ে গেলো লেখাটা পড়ে।
চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

-------
নাসিফ

বৃষ্টি স্নাত কবি এর ছবি

খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে। আপনার সাহস অন্যদের কেও সাহসী করুক, এই প্রত্যাশায় ...

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও। হাসি

-------
নাসিফ

গগন শিরীষ  এর ছবি

নারী সপ্তাহ শুরু হওয়ার পর মন্তব্য করাই ছেড়ে দিয়েছিলাম।মন খারাপ হয়ে যেত,কিই বা লিখব?আপনার টা পড়ে ভাল লাগল বলে লিখলাম হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

-------
নাসিফ

নোলক এর ছবি

আপনার কথা ও অবস্থান খুব ভালো লাগলো। আমরা যদি একজন-দুজন করে এভাবে এগিয়ে আসি, রাস্তাঘাটের এসব ঝামেলা দূর হতে বেশি সময় লাগার কথা না।

বৃষ্টি স্নাত কবি এর ছবি

সহমত।

অতিথি লেখক এর ছবি

একদম ঠিক।

-------
নাসিফ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দারুণ হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

-------
নাসিফ

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি
দারুণ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।
আমি কিন্তু ফেইসবুকে আপনার ফলোয়ার। হাসি

-------
নাসিফ

শিশিরকণা এর ছবি

আর ক'জন প্রতিবাদ করেছিল? আপনি একজন, ধরেছেন দুজন বদমাইশকে। সংখ্যায় এরাই বেশি হলো না তাহলে?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অতিথি লেখক এর ছবি

সংখ্যায় আমরাই বেশি। কিন্তু আমাদের ভয়টাও বেশি।
ভয় কাটিয়ে আমরা সরব হব এই প্রত্যাশায় রইলাম।
আশা হারাবেন না, কেমন? হাসি

-------
নাসিফ

এক লহমা এর ছবি

হাততালি
সক্রিয় প্রতিরোধ ছাড়া এ সব কমে না, কমবে না।
নিজের নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখেন আশা করি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

জ্বি, আমি সবসময় নিজের বিবেকের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখি। হাসি

-------
নাসিফ

মরুদ্যান এর ছবি

গুল্লি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। এভাবে একজন দুইজন উঠে দাড়ালেই আশেপাশের " " দের মেরুদন্ড গজাতে শুরু করবে আশা করি!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।