ধন্যবাদ সচলায়তন কে। কত অজানা কথা, অজানা গল্প, অজানা ক্ষোভ জানতে পারছি। নারী হিসেবে আমি নিজেও যে বৈষম্যের শিকার একেবারে হইনি, তা ও না। কিন্তু সে গল্প আজ থাক।আজ বরং অন্য এক নারীর গল্প বলি।এক সাধারণ নারীর গল্প।অথবা..... অসাধারণ।
বয়স তখন মেয়েটার তের অথবা চৌদ্দ। ষষ্ঠ কি সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। প্রচণ্ড দুরন্ত। কার বাগানে আম পেকেছে, কার বাড়ীতে জামরুল ধরেছে সব তাঁর মুখস্থ। স্কুলে যাওয়া আসার পথে ক্ষান্ত পেত না তার চোয়াল দুখানা। অনবরত গাছ থেকে কিছু না কিছু পাড়ছে আর মুখে চালান দিচ্ছে। হ্যাঁ, ঢাকা শহর তখনও দালানের জঙ্গল হয়নি। টঙ্গী তখনো উত্তরা হয়নি। আমি সেই সময় এর কথা বলছি।
অবস্থা সম্পন্ন পরিবার এর বড় কন্যা সে।প্রচণ্ড আদরের।বাপ এর সাথে বাজারে যায় আর শুধু আঙ্গুল দিয়ে দেখায় কোন কোন মাছ পছন্দ। মাছ বাড়িতে চলে যায়। এমন আনন্দময় শৈশবের মাঝেই হঠাৎ করে বিয়ে ঠিক হয়ে গেল তাঁর।বেশ ধুমধাম করেই বিয়ে হোল। নিজের বড় মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে আয়োজন এর কমতি করে নাই মেয়ের পিতা। এমনকি ডেকোরেটর এর প্লেট গ্লাস পর্যন্ত কিনে এনেছিল। মেয়ের বিয়েতে ভাড়া করা থালায় আত্মীয়স্বজন খাবে, এটা কি করে হয়!
কিশোরী কন্যা বধূ হয়ে এলো যে বাড়ীতে, সেটা আসলে তাঁর ফুফু বাড়ী। তাই একেবারেই যে অচেনা পরিবেশ, সেটাও না। ধীরে ধীরে মানিয়েও নিলো। কিছুদিন পর স্বামীর সাথে পাড়ি দিল খুলনা। স্বামী তার একটি ব্যাঙ্কে চাকুরী করে।বাবার বাড়ীর মত বিলাস না থাকলেও মোটামুটি সচ্ছলই ছিল তাদের জীবন। এখানে মেয়েটির স্বামী সম্পর্কে দুই চার কথা বলতেই হয়। মানুষ হিসেবে সে ছিল অত্যন্ত সৎ, বন্ধুবৎসল এবং দয়ালু। পরিবার এবং গ্রামের মানুষদের সাহায্যের ব্যাপারে সে একটু বেশীই উদারহস্ত ছিল। এই ব্যাপারে সে তার স্ত্রীর পরামর্শও খুব একটা আমলে নিত না। এমনকি তার স্ত্রীর গহনা, যে গহনা সে তাঁর বাপের বাড়ী থেকে পেয়েছিল, তাও চলে যায় পরিবারের অন্যান্যদের সাহায্যের খাতে।স্ত্রী অভিযোগ করলে একটাই সান্ত্বনা দিত, তুমি শুধু একটু অপেক্ষা কর। এরা একবার দাঁড়িয়ে গেলে দেখ কত গহনা তুমি পরবা!বলা বাহুল্য সচ্ছল অবস্থা থাকলেও পরিবারের সঞ্চয় ছিল লবডঙ্কা।
এভাবেই দিন কাটতে লাগল। সেই কিশোরী কন্যা এখন চার সন্তানের জননী।স্বামী মফঃস্বল শহরের একটি ব্যাংকের ম্যানেজার।খবর এসেছে প্রমোশন হতে যাচ্ছে।ঢাকায় বদলী হতে যাচ্ছে কিছুদিন পরেই।মহিলাটি আবদার করল, “টাকা দাও। ঢাকায় যাওয়ার আগে শাড়ী কিনব।”ধরেই নিয়েছিল বরাবরের মত স্বামী হয়ত টালবাহানা করবে। কিন্তু কি যেন কি চলছিল তার স্বামীর মনে। বলেছিল, “আচ্ছা যাও, যতগুলো খুশী কিনে নিও।” অবাক হয়েছিল সে। কিন্তু..... কিন্তু সেই শাড়ী আর তার কেনা হল না।
ফেব্রুয়ারি মাসের এক শনিবার বিকাল। মহিলাটি তখন ডি ডি বাংলায় বাংলা সিনেমা দেখছিল।স্বামী এসেছে অফিসের পিকনিক থেকে। এসেই শুয়ে পড়ল। ড্রইংরুম থেকে স্ত্রী ডেকে বলল, “খুব অস্থির লাগছে। একটু বাতাস কর।” স্ত্রী বলল, “ফ্যান ছেড়ে দেই?” স্বামীর অনুরোধ, “না, পাখা দিয়ে বাতাস কর।” “নাহ, এসব তোমার বাহানা। নিজেও টিভি দেখ না, আমাকেও দেখতে দিতে চাও না”, এ কথা বলতে বলতেই মহিলাটি লক্ষ্য করল তাঁর স্বামীর মুখের রঙ বদলে যাচ্ছে। একটি আর্ত চিৎকার বের হয়ে আসল। পাশের বাসার ভদ্রলোক যতক্ষণে ডাক্তার ডেকে আনলেন ততক্ষণে সব শেষ।
বয়স তখন কতই বা হবে তাঁর! আনুমানিক তিরিশ।সেই চঞ্চল কিশোরী আজ এক শান্ত বিধবা, সাথে তাঁর চার সন্তান, যাদের বয়স ক্রমানুসারে পনের, চৌদ্দ, চার আর সবচেয়ে ছোটটার বয়স এক। প্রথম দুই জন ছেলে আর পরের দুই জন মেয়ে। বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল যার জীবন, সে আজ জীবনের সবচেয়ে রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি। সে ত এমনকি জানত না তার স্বামীর বেতন কত ছিল! কত কেজি চাল লাগে মাসে! কোথায় দেয় মানুষ কারেন্ট বিল! তার উপর নাই কোন গহনা, নাই কোন সঞ্চয়। স্বামীর মৃত্যুর পর ব্যাংক থেকে এককালীন কিছু টাকা পেল, সব মিলায়ে হাজার ষাট এর মত। এই তার সম্বল। সামনে পড়ে আছে পাঁচ পাঁচটি জীবন।
বাবার বাড়ির অবস্থাও তখন পড়তির দিকে। সেখান থেকে সাহায্য পাওয়ার কোন আশাই নেই।অনেকেই বলল, গ্রামের বাড়ী চলে যাও। কিন্তু ভদ্রমহিলা তখন ভাবছেন তাঁর ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা।গ্রামে গেলে ওদের পড়াশোনার কি হবে! ছেলেরা হয়ত বছর না পেরুতেই ক্ষেত এ ছুটবে। মেয়েদের হয়ত স্কুল না পেরোতেই ঠাই হবে শ্বশুরবাড়ি।
না। ভদ্রমহিলা ঠিক করলেন যে উনি গ্রামে যাবেন না। উনি ওই মফঃস্বল শহরেই থাকবেন। তাতে দুর্জনের মুখ খুলে গেল।গেল গেল... সব গেল। ঘরের বউ ঘরে না ফিরে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।কোন অভিভাবক ছাড়া একা এক শহরে! কত বড় দুঃসাহস! নিশ্চয় কোন কুমতলব আছে।অনেক তথাকথিত আপনজনের সাথে সম্পর্ক হোল ছিন্ন।কিন্তু সমাজে যেমন দুর্জন আছে, আছে ভাল মানুষও।সেই ভাল মানুষগুলোর সহায়তায় ক্ষুদ্র মূলধনকে পূঁজি করে এক অসম্ভব কে সম্ভব করার লক্ষে শুরু হোল তাঁর যাত্রা।
এতক্ষণ ধরে যার কথা বললাম, উনি হচ্ছেন আমার মা। আর এক বছরের সেই ছোট্ট সন্তানটি হচ্ছি আমি।যেহেতু আমার মা এর সংগ্রামের মূল লক্ষ্যই ছিল আমাদের মানুষ করা, আগে একটু বলে নেই আমরা ভাই বোনরা কতটুকু কি করেছি! বড় ভাইয়া একজন ডাক্তার। ছোট ভাইয়া আমাদের মাঝে আর নেই। ও চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সি এ পড়ছিল। আপু অনার্স মাস্টার্স শেষে একটা ব্যাংকে চাকুরী করছে। আমি একজন ফার্মাসিস্ট। আর এই সবটুকুই সম্ভব হয়েছে এমন এক মা এর জন্য যার স্কুল পাশ করার ও সৌভাগ্য হয়নি।
যে শাড়ী আমার বাবা কিনে দিবে বলেছিল, সে শাড়ী কিনতে বহু বছর লেগে যায়। আমি আমার মা কে কখনো রঙ্গিন শাড়ী পড়তে দেখিনি, কখনো দেখিনি ঠোটে লিপস্টিক অথবা কানে দুল।দুই হাতে এক জোড়া ইমিটেশন এর বালা, আমার চোখে এই আমার মা এর সাজ। অবশ্য সমাজ বলে বিধবার আবার সাজ কি!আমি ছোট থাকতে ঈদে আমার মা কে নতুন শাড়ী কিনতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। কেউ তাকে দিতও না। তখন অবশ্য মনে হত, মা রা মনে হয় নতুন শাড়ী পড়ে না।
আমরা ভাই বোনরা পদে পদে হোঁচট খেয়েছি। ভয় পেয়েছি, বোধহয় আর পারব না। এবার বোধহয় যাত্রা থেমে গেল। আমার মা প্রত্যেকবার আমাদের সামলে নিয়েছেন। সাহস দিয়েছেন।আমাদের জন্য সে স্বামী, এমনকি ছেলে হারানোর শোক পালনের অবসরটুকুও পায়নি। যখনই ভেঙ্গে পড়তে গিয়েছে, তখনই ভেবেছে আমি ভেঙ্গে পড়লে আমার ছেলেমেয়ের কি হবে!
আমি যখন ছোট ছিলাম আমাকে দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হত! এত স্বাধীনতা আমার! আমার মা কখনো প্রশ্ন করেনি, দেরী কেন হোল! শুধু বলত, কখনও এমন কিছু কর না যাতে আমার মাথা নিচু হয়।এমন কোন সুযোগ অথবা সুবিধার কথা বলতে পারব না যেটা আমার ভাইরা পেয়েছে কিন্তু আমি অথবা আপু পাইনি।আমার স্কুলপাশহীন মা এর কাছ থেকেই শিখেছি ছেলে বিয়ে দিলে বউ আসবে বাইরে থেকে, মেয়ে বিয়ে দিলে জামাই আসবে বাইরে থেকে। তাহলে ছেলের ঘরের সন্তান দিয়ে বংশ রক্ষা হবে, মেয়ের ঘরের সন্তান দিয়ে হবে না, এ কেমন কথা!
মাস্টার্স শেষ করার পর যখন আমার সমবয়সীদের একে একে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, সেই সময় আমি সিদ্ধান্ত নেই দেশের বাইরে আবারো মাস্টার্স করতে আসব। যথারীতি আমার মা এর কোন আপত্তি ছিল না। এমন না যে সমাজের কোন চাপ ছিল না। “আরে, মেয়ে ত অনেক পড়ল। এবার বিয়ে টিয়ে দেন।দেরী হয়ে যাচ্ছে ত।” আমার মা এর কাছ থেকেই শিখেছি মাঝে মাঝে কেন সমাজ কে থোড়াই কেয়ার করতে হয়! দেশের বাইরে আসার পর যখন মা কে বলেছিলাম, “এখানে সবাই সাইকেল চালায়।আমি এই বয়সে কিভাবে শিখব!” আমার মা বলেছিল, “আমার মেয়ে হয়ে তুমি এইটুকু পারবা না! যার মা সারাক্ষণ গাছে গাছে চড়ত।” আমার মা এর সেই কথার জোরেই তিরিশ বছর বয়সে সাইকেল চালানো শিখেছি।
একটি ঘটনা দিয়ে শেষ করতে চাই আমার মা এর গল্প। আমি আম্মার সাথে স্কাইপে কথা বলার সময় মাঝে মাঝে আমার স্বামী ( যে কিনা বিদেশী) কে যখন ডাক দেই, আমার মা ব্যস্ত হয়ে যায় তার শাড়ীর আঁচল মাথায় দেওয়ার জন্য।আমি আমার মা কে একদিন বললাম, তুমি যে মাথায় কাপড় দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যাও, যার জন্য দিচ্ছ সে কি কিছু বুঝে! তাঁর মা ত স্কার্ট পড়ে ঘুরে বেড়ায়। আমার মা আমাকে উত্তর দিল, তার সংস্কার তার কাছে, আমার সংস্কার আমার কাছে।যার যার টা সে সে পালন করবে।
আমার বৃদ্ধা মা, যার বড় বড় কোন ডিগ্রী নেই, নিজের অবস্থান ঠিক রেখে অন্যকে শ্রদ্ধা করার যে বোধটুকু তার আছে, সেই বোধটুকু আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের মাঝে আদৌ কি আছে!!!
- শান্তা বিয়রনান্দের
মন্তব্য
আপনার মা'কে প্রণাম।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আম্মাকে জানাবো। নিশ্চিত উনি আপনাকে আশীর্বাদ করবেন।
এইসব মায়েদের জন্য শ্রদ্ধা!
সচলায়তনকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম গল্পগুলো সামনে এনে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার জন্য।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর ভালবাসা। - শান্তা
আপনার মা কি মানুষ নাকি একটা পরী?
এত এত অসাধারণ মানুষ ছড়িয়ে আছেন চারপাশে। এদের দেখলে মনে সাহস আসে। মনে হয় এত সহজে আমরা হারবো না। অনেক শ্রদ্ধা থাকলো আপনার মায়ের জন্য।
পরামর্শ - লেখায় আরেকটু বিস্তৃতি আশা করেছিলাম। সেই ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আপনার মা কী করেছিলেন? ব্যবসা? কীভাবে ব্যবসা চালিয়েছেন? বাবা মারা যাবার পর থেকে একটু স্থিতি আসা পর্যন্ত একদম ইমিডিয়েট আর্থিক সমস্যাগুলো সামাল দিয়েছেন কীভাবে?
এই জিনিসগুলো জানতে পারলে আরো ভাল লাগতো। উনার অবস্থায় থাকা আরো অনেকে সাহস পেত আরো বেশি।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ধন্যবাদ রানা মেহের আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি যখন লিখি আমার মাঝে এক ধরনের তাড়াহুড়া কাজ করে। হয়ত অলস দেখে তড়াতাড়ি শেষ করতে চাই। এর পরে এই ব্যাপারে অবশ্যই যত্নশীল হব।
আপনার মন্তব্যের জবাব দিতে যেয়েই বরং কিছুটা বলে দেই। সেটাও এক ছোট খাট গল্প। যেহেতু পড়াশোনা তেমন করা হয়নি, তাই চাকুরীর সুযোগ ছিল না। আব্বার কিছু বন্ধু, মূলত ব্যাংকার, এ সময় সাহায্যে এগিয়ে আসেন। উনারা উনাদের ব্যাংকের কিছু নিয়মিত ক্লায়েন্ট এর ব্যাবসায় মূলধন খাটানোর সুযোগ করে দেন। ধরেন, একজন চাল ব্যাবসায়ীকে দেওয়া হয়েছে, বিনিময়ে সে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমান চাল বাসায় দিয়ে যাবে। এইখানেই আসলে একটা মজার ব্যাপার ঘটেছিল। আব্বার এক বন্ধু, উনি আব্বা মারা যাওয়ার পরে ওই ব্রাঞ্চের ম্যানেজার হন, আমরা কাকু বলতাম, উনি নাকি জানতে চেয়েছিলেন আপনার মাসে কত কেজি চাল লাগে ভাবী? আম্মা অবাক হয়ে বলেছিল, তা ত জানি না। সে হিসাব ত কখনো করিনি।
আবার হয়ত আর এক জন ব্যবসায়ী কে দেওয়া হয়েছিল যে মাসিক কিছু লভ্যাংশ দিবে। আমাদের বাড়ীওলা নানা নানী উপরের ছাদ এর সাথে লাগানো ফ্লাট টা খালি করে দেয়। কারন সেটা ছোট ছিল। আম্মার জন্য সুবিধা হবে। আব্বার আর এক বন্ধু, দীপক কাকু বলেছিলেন, ভাবী আমার পরিবার যদি ২ বেলা খায়, আপনার পরিবার অন্তত এক বেলা খাবে। চিন্তা করেন না। তারপরেও নানা সমস্যা হয়েছে। দাদী বাড়ির জমি গুলো একে একে বিক্রি করে দিয়েছে। ছেলেমেয়ে পড়াশোনা না শিখতে পারলে জমি দিয়ে কি করব! এই ছিল আমার মা এর কথা। সেই ইতিহাস লিখতে গেলে উপন্যাস হয়ে যাবে।
কি চমৎকার একটা গল্প। অনেক অনেক শ্রদ্ধা আর কুর্নিশ জানালাম আপনার মাকে
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার আজকের চমৎকার লেখাটার জন্য। -শান্তা
শ্রদ্ধা রইল মায়ের জন্য।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
শ্রদ্ধা রইল সকল মা এর জন্য। - শান্তা
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
এই মায়েরাই আনছেন নূতন দিন। আপনারা বয়ে চলেছেন তাঁদের জয়পতাকা। শ্রদ্ধা আর কুর্নিশ আপনার মাকে, অভিনন্দন আপনাদের ভাই-বোনদের তাঁর স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অনেক ধন্যবাদ - শান্তা
আপনার মায়ের প্রতি অজস্র শ্রদ্ধা। আমার নিজের মায়ের গল্পও টা ঠিক এমন। সন্তানের মাঝেই ভালোথাকুক পৃথিবীর সকল মায়ে’রা।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
সকল মা এর প্রতি ভালবাসা- শান্তা
লেখালেখি অব্যাহত রাখার জন্য ধন্যবাদ। আপনার গল্প পড়ে মোটেও অবাক হইনি। কারণ, আমি নিজে এর কাছাকাছি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি। আমাদের মায়েদের শক্তি-সামর্থ্য-সাহসের তুলনায় ব্যাটম্যান সুপারম্যানদেরকে নিতান্ত শিশু মনে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ষষ্ঠ পাণ্ডব দা ( কোথাও যেন দেখেছিলাম আপনাকে দাদা বলে, তাই আমিও অনুসরন করলাম), আপনার কাছাকাছি অভিজ্ঞতা যে এতটা কাছাকাছি আশা করি নাই। ইচ্ছা করছে আম্মাকে যেয়ে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু আমি যে বহু দূরে!
আমাকে দাদা বলুন বা শুধু ষষ্ঠ পাণ্ডব বলুন - কিছু যায় আসে না। লেখালেখি চালিয়ে যান। লিখলে নিজে ভালো থাকা যায়।
আপনি যত দূরেই থাকুন, মায়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন দেখবেন বুকটা ভরে যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের এই যুগে ফোন/ভাইবার/হোয়াটসঅ্যাপ/ফেসবুক/জিটক/ওগো এমন হাজারোটা উপায় আছে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার। যত দূরেই থাকুন, নিশ্চিতভাবে আপনি আপনার মায়ের বুকের ভেতরেই আছেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার মায়ের জন্য সশ্রদ্ধ সালাম। আপনি তো আপনার মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। দেখা যাক আমি পারি কি না।
শুভকামনা। নিশ্চয় পারবেন। - শান্তা
আমাদের মায়েদের গল্পগুলো দারুণ। কয়েক বছর আগে একটা বই পড়েছিলাম, নিতান্ত সাধারণ একজন মহিলার আত্মজীবনী। অতোটা শিক্ষিত ছিলেন না, স্বামী অতোটা সংসারি না, সামান্য রোজগারে বিশাল একটি পরিবারকে নিয়ে বাঁচার গল্প। অদ্ভুত সুন্দর।
আমার মায়ের আত্মজীবনীটুকু অডিওতে রেকর্ড করে রেখেছি। ইচ্ছে আছে বই করার। অসাধারণ, সফল, বিখ্যাত মানুষদের জীবনীর পাশাপাশি এই একেবারে সাধারণ গৃহবধূদের গল্পও থাকা দরকার।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইচ্ছা পূর্ণ হোক, আমরা আরো এই সাধারণের মোড়কে অসাধারণ মায়েদের গল্প জানতে পারি , এই কামনায় - শান্তা
উপন্যাস হলে হবে। মায়ের কথা যত বড় করে পারা যায়, লিখুন। এই লেখাগুলো জরুরী।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অফলাইনে পড়েছিলাম। আপনার মায়ের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা শ্রদ্ধা।
আচ্ছা ফেবুতে 'শিরোনামহীন' নামে লেখাটা আপনার?
আমি ভয়ানক চা/কফিখোর সেদিন লেখাটা পড়ে আর চা খেতে পারিনি।
আপনি খুব সাবলীলভাবে সাধারণ কথাগুলো চমৎকার করে লিখতে জানেন, এটা চালু রাখবেন প্লিজ!
শুভকামনা থাকলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আয়নামতি। শিরোনামহীন আমার ই লেখা। এই ব্যাপারে আর কি বলা উচিত বুঝতে পারছি না। চা এর কাপ হাতে নিতে বছর পার হয়ে গিয়েছিল আমার। তাও সম্ভব হত না যদি না আম্মা ডাক্তার এর কাছে গিয়ে বলত, কিছু একটা ওষুধ দেন যেন আমার মেয়ে হাসে, গল্প করে। সেদিন বুঝেছিলাম আমার কষ্ট শুধু আমার না, আরো অনেকের, যারা আমাকে ভালবাসে। আমি আবারো স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি। এতদিনে হয়ত হয়েও গিয়েছি। শুধু .......... ।
আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা। ভাল থাকবেন। - শান্তা বিয়রনান্দের
নতুন মন্তব্য করুন