সেদিন বিকাল ৫টা হবে অথবা এর একটু পর। এখন আর মনে পড়ছে না ঠিক ঠাক সময় বা মুহূর্ত। আমি পান্থপথে, ওই যে আসবাবের দোকানগুলো ছিল না, সে পাশ দিয়ে হেঁটে মোড়ের দিকে আসছিলাম অফিসে সেরে রিকশা নেব বলে। দুপুরের কিছু পরে বৃষ্টি হয়েছিল তাই এক পাশে পানি জমেছিল বলে রাস্তার কিছুটা মাঝে দিয়ে হাটছিলাম। একটু পরে উলটো দিক থেকে এক মোটর সাইকেল আসছিল। তো, মোটর সাইকেল পুরো গাঁ ঘেষে গেল, আমি সরতে গিয়ে সরতে পারিনি। সরে কোথায় বা দাঁড়াব, ঐ পানির মাঝে? আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল, “শালা,” একটা শুকনা-পাতলা মেয়ে দুম করে এক বিক্রমশালী পুরুষকে শালা বলে ফেলবে, তা কোন পৌরুষত্ব ওয়ালা ব্যাটার সহ্য হবে? ঐ লোকেরও সহ্য হয় নাই। সে বাইক পার্ক করে মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করেছিল, “কি বলছেন?” মেয়েটাও তেড়িয়া, “মানে যা বলছি বলছি, আর গায়ের ওপর দিয়ে চালিয়ে যাবেন, দেখেন না পানি, ছিল? কোথায় গিয়ে সরতাম, হুঁহ, পানির ওপরে?” নারীর এত কথা শোনার টাইম নাই ব্যস্ত পুরুষের। পুরুষ আরো কিছু বলতে চায়, নারী কলার ধরতে চায়। তবে কি ওই রকম বিশালবপু’র সঙ্গে ওমন হালকা পাতলা নারী খুব যে কূল করে উঠতে পারে তা কিন্তু না! এমন সময় পুরুষ হাতের হেলমেট দিয়ে নারীর চোখে নিচে মারে আর সে হঠাৎ ধাক্কার চোটে ছিটকে পড়ে যায় হাতের মোবাইল। মেয়েটি তাৎক্ষণিক ধাক্কা সামলে রাস্তা থেকে ফোন কুড়িয়ে, তাড়াহুড়ায় ব্যাটারী লাগিয়ে এক সহকর্মীকে ফোন দেয়!
মেয়েটি বিশ্বাসই করতে পারেনি এমনভাবে মার খাবে সে! তবে তখনো বাকি ছিল।
পুরুষ গায়ের জোর দেখিয়ে খুব ভাবে, ‘নিলাম একচোট’ এবং চলে যেতে উদ্যত হয়। কিন্তু মেয়েটা আসলেই ‘পাগল’ ছিল। অনেকে তাই বলেছে পরে, সরাসরি অথবা আড়ালে। মার খেয়ে চুপচাপ কেটে পড়াটাই তো যৌক্তিক ছিল, তাই না? মেয়েটি বাইকের পেছনের অংশ ধরে রাখে। কোনমতেই যেতে দিবে না, সহকর্মীরা এই এল বলে! তবে কে জানত, বাইকওয়ালার ভাইয়ের (পরে জেনেছিল) সেখানেই এক আসবাবের দোকান আছে তাই তার সাঙ্গপাঙ্গেরও অভাব হয় নাই সেখানে। লোক জমে গেছে। এখনো মনে আছে মেয়েটার, এক সাদা শার্ট পরিহিত তরুণ এসে জিজ্ঞাসা করছিল, “কি ভাই উনাকে মারছেন কেন?” ওই তরুণ একা ছিল, আর তাকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছিল দাপটের সঙ্গে। তাই বলে ভাবার কিছু নাই যে সেখানে লোক সমাগম একেবারেই ছিল না, কিন্তু ৮/১০ জন মারমুখী মানুষের সঙ্গে তো নিপাট ভদ্রলোকেরা খুব একটা দায় না পরলে লাগতে আসে না কখনই।
মেয়েটা ঐদিকে বাইক ছাড়বেই না, আর হাত ছোটাতে সেই মারমুখো লোকগুলো ঘুষি মারছিল যত্রতত্র। বলছিল, “এ পাগল, এ পাগল!!” ঘুষির তোড়ে মেয়েটার নাকফুল ভেঙ্গে যায়, চোখের কোনা দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। তার কিছুদিন আগে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে কতগুলো ছেলেকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। ওমন সময়েও মেয়েটির সে ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়। পরে কিছু সহৃদয়বান লোকের সঙ্গে মেয়েটি কর্মস্থলে ফেরে, বিধ্বস্ত আর ক্লান্ত এক শরীর নিয়ে।
সেদিনের মেয়েটি আমি ছিলাম। যদিও পরের ইতিহাস খুব গর্বের না, প্রতিবাদের না।
- কর্মস্থলে ফিরেই কিছু পরে আমি গিয়েছিলাম থানায় সহকর্মীদের সঙ্গে। ওসি’র তরফ থেকে আমাকে বার বার বলা হচ্ছিল আমি যেন স্লীলতাহানির কথা বলে মামলা করি, তাহলে তা স্ট্রং হবে। কিন্তু যেই ঘটনা ঘটেইনি সেইটা আমিই কেনইবা বলব? পরে তা শারীরিক নির্যাতনের মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়।
- মামলা লেখার পর (ঠিক কত সময় যে সেখানে নষ্ট হয়েছে তা আর না বলি) যাওয়া হয় ঘটনা স্থলে। ততক্ষণে রাত হয়ে গেছে। যে এসআই আমাদের সঙ্গে ছিল, সে ঘুরে ঘারে, দেখে কিন্তু তেমন নড়ে চড়ে না। পরে জেনেছিলাম, ঐ এলাকার এসআই ছিল বলে ঐ দোকানের মালিকের সঙ্গে চেনা পরিচয় আগেই ছিল। তবুও তাকে/তাদের ধরতে যায়নি, আমি একজনকে শনাক্ত করা সত্ত্বেও। পরে ঐ এসআইকে হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয় সাসপেন্ড করে তার গাফিলতির কারনে।
- এর মধ্যে অনেকেই আমাকে ফোন দিয়েছিলেন যদি কিছু আমার প্রয়োজন হয়। প্রতিবাদ হয়েছিল, ছোটখাট সভা হয়েছিল, যেখানে চাকরি করতাম সেখান থেকেও অনেক সহায়তা পেয়েছিলাম। মনে আছে আমার এক সহকর্মী সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “কিভাবে এ ধরনের গাফিলতি হয়? সাংবাদিককে হেনস্থা করে আসামীরা যদি পার পেয়ে যায় তবে আর বাকি মানুষজনের কি অবস্থা?”
- ঘটনার কিছু দিন পরে মূল অভিযুক্তকে ধরা হয়। আমি ডিবি অফিসে গিয়ে শনাক্ত করি। আমার বা হাতে তখনো কালশিটে পড়েছিল। মূল অভিযুক্ত যে ছিল তখন সে পায়ে ধরে আমাকে বলতে চেয়েছিল, “আপনি আমার ছোট বোনের মতন, ও বিদেশে পড়াশোনা করে।“ আমি বলেছিলাম, “বোনের সঙ্গে বুঝি কেউ এমন করে!“
তাই বলে অনাকাংক্ষিত মন্তব্য যে শুনতে হয়নি তা না, একেবারেই না। খুব কাছের নতুন আত্মীয় বলেছিল, “কি করেছিলাম বা বলেছিলাম যে আমাকে এমনভাবে মারতে গেল।?” এক নারী সহকর্মী বলেছিলেন, “জিনস-ফতুয়া আসলেই মেয়েদের পরা উচিত না। জামা কি বেশি টাইট ছিল তোর?”
এমনি আরো কত শত কথা।
এই ঘটনা তো সে অর্থে যৌন হয়রানি বা নিপীড়নের কাতারে পরে না। কিন্তু যে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে আমি গিয়েছিলাম ঐ দিনগুলোতে, এখন ভাবলে মনে হয়, ঠিক তো, সে ভাবে ভেঙ্গে পড়িনি। বেশ ক’দিন খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে গিয়েছে, যত না শারীরিকভাবে তার চেয়েও বহুগুণ মানসিকভাবে। সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে কত বার মনে মনে রোল প্লে করেছি, এটা না করে তো সেটা করতে পারতাম, এটা না বলে তো সেটাও বলতে পারতাম! বাড়িতে ৩/৪ দিন থেকে পরে আবার অফিসে জয়েন করি। আমার সহকর্মীরা রাতে আমাকে বাড়ি পৌছে দিত। আর নাই বা বলি সে সময়ে কি টেনশনের ভেতরে আমার পরিবারের সদস্যরা গিয়েছিল। খুব সহজ সমাধান ছিল তাদের কাছে, চাকরি ছেড়ে দাও না হয়।
হ্যাঁ, আমি সযতনে ঐ জায়গা এড়িয়ে চলেছি এর পরে যতদিন আমি আমার সেই কর্মক্ষেত্রে ছিলাম এবং এখনো চলি। ঐ এলাকার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমার ক্রোধ হয়, ক্ষোভ জাগে আর দুঃখের দলা গলা পর্যন্ত উঠে আসে। তাও জীবন বয়ে চলে।
তাই বলে কি আমি নিশ্চুপ হয়ে গেছি, ‘অ’প্রতিবাদী হয়ে পরেছি... তা হয়ত না। সব ক্যাটকলিং এর জবাব দেওয়া সম্ভব হয় না, পথচলায়, বাস যাত্রায়। কিন্তু একেবারেই যে ছেড়ে দেই তা না।
আমি একবার এক রিকশাওয়ালার বাপ-মা তুলে গালি দিয়েছি। রিকশায় বসে যাচ্ছি পেছন থেকে সে আমার রিকশায় ধাক্কা দিচ্ছিল, আর অশ্লীল সব কথা বলছিল, কিভাবে লাগাচ্ছে, গুতাচ্ছে এই সব আর কি! শুধু অফিসের তাড়া ছিল বলে, আমি ওকে আর রিকশায় বসা দুই কিশোরকে, যারা খুব হে হে হে করে হাসছিল, এমন সব গালি দিয়েছি, যে ওই রিকশা পারে না রকেটের গতিতে পালিয়ে বাঁচে!
বরের সঙ্গে অফিস করে ফিরছি। আমাদের বাসায় যাওয়ার পথে বাজার পরে একটা, পার হচ্ছিলাম সে সময় এক ২২/২৩ বছরের তরুণ আমার পাশ কাটিয়ে একেবারে গা লাগিয়ে রাস্তায় এগুলো। যখন আমি আর আমার বর ধরলাম, সে এবং ততক্ষণে তার সঙ্গীসাথী যারা জড়ো হয়ে গেছে তারা, সে ওখানেই এক দোকানে কাজ করে, উলটো আমাদের এসে বলে, এত সামান্য ঘটনাকে কেনো আমরা বাড়াচ্ছি। আর, দুঃখিত হওয়ার লেশ মাত্র তো নেই-ই। আমরা চলে এসেছিলাম ওই উদ্যত মানুষের ভিড় থেকে। পরের দিন ঐ এলাকার পুলিশ নিয়ে সেখানে গিয়ে ঐ ছেলেকে চিহ্নিত করে ওকে পুলিশের গাড়িতে উঠানোর পর পুলিশ বলল, “আপা, এই কয়টা মাইর-টাইর দিলাম, এইবার মাফ করে দেন। এই এদিকে আয়, আপার পা ধরে মাফ চা”! ঐ ছেলে এসে আমার পা ধরতে চায়, আমি বললাম, “বাদ দ্যান”। পুলিশের গাড়িতে উঠেছে এটাই তো কম না। কত অল্পতেই আমরা ‘মেয়েমানুষ’ খুশি হয়ে যাই!
খুব অবাক লাগে যখন দেখি রাস্তার সব ধরনের পুরুষের অধিকার আছে নারীকে দুইটা কটু কথা বলার, অযথাই হেনস্থা করার। সে বা তারা আপনার গায়ে হাত দেবার অধিকার রাখে, এবং যখন আমি/আপনি প্রতিবাদ করতে যাব খুব কমই আমার পক্ষে মানুষ পাব কথা বলার। বরং তেমন মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা আগে জানতে চাইবে কে কাকে কি বলেছে। ততক্ষণে হয়ত সুযোগ নিয়ে যাকে নিয়ে ওমন ঘটনা সে সটকে পরে।
আমার অভিজ্ঞতা বলে আসলে আমরা কেউ-ই এই ঘটনাগুলো একটা সময় পর আর ‘টানতে’ চাই না। ভাবি ঢের হয়েছে প্রতিবাদ, এইবেলা চুপ করি। ঘর থেকে কেউ বলে, কাছের বন্ধুরা বলে, পরিচিতজনেরা বলে। খুব কম সময়ই আমরা প্রতিবাদী মানুষ পাই আশেপাশে।
আমি চাই-ও না এমন ঘটনার পরে কাউকে ব্যাখা দিয়ে সময় নষ্ট করতে কি হয়েছে , কেনো হয়েছে। বরং আমি আগে ঐ পুরুষকে দুইটা গালি দিয়ে তারপর আশেপাশে পুলিশ থাকলে তাকে ডাকতে চাই আর বলতে চাই, এবার দেখি কত হ্যাডম! দুঃখিত, এমনটা প্রায় সময়ই হয় না। কোন মেয়ে রাস্তা ঘাটে খুব শখ করে পুরুষদের গাল দেয় না, ‘ঝামেলা’ যেচে পরে করতে চায় না, এইটুকু বোঝার বুদ্ধি কোন পুরুষের হতে আমি আমার অভিজ্ঞতায় একেবারেই দেখিনি।
আমি কারো মা-বোন হতে চাই না। দুনিয়ার তাবত পুরুষের মা-বোন হতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে। সুবিচার পেতে হলে আমাকে কেনো কোন অনাত্মীয়ের আত্মীয় পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে? আমি মনে প্রাণে এ ধরনের ট্যাগ অগ্রাহ্য করি।
আমার ক্ষুদ্র জীবনের ব্যাপক অভিজ্ঞতায় দেখেছি, নির্যাতক পুরুষের সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি যখন নির্যাতন ঘটে তার আশেপাশে চা-ওয়ালা, ফেরি ওয়ালা, রিকশা ওয়ালা, রাস্তায় পথচারী, আপুদের সবার-ও। একটা মেয়ের সঙ্গে অযাচিত ও অশালীনভাবে একজন কথা বলছে সে প্রতিবাদ শুধু মেয়েটির কাছ থেকে নয়, বরং আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে জোরালোভাবে আসুক কোন ধরনের পূর্ব ধারণা বশবর্তী বা জাজমেন্টাল না হয়েই।
এই লেখাটা যখন লিখছি ততক্ষণে এক যৌণ নিপীড়কের হাতে নরসিংদীতে এক কিশোরী মেয়ে প্রাণ হারিয়েছে। বুকটা ভেঙ্গে গেছে তা দেখে। আমরা এখানে রাজধানীতে বা বড় শহরে প্রতিবাদ করছি, আলোচনা করছি, চায়ের আপে ঝড় তুলছি কিন্তু আমরা কাকে সচেতন করার চেষ্টা করছি আসলে? ঢাকার একটু পাশেই নরসিংদীতে এক মেয়েকে প্রাণ হারাতে হলে কি বোঝা যায় না আমাদের প্রতিবাদ করার প্রক্রিয়াতে কোন গলদ রয়ে গেছে? এই ‘শহুরে’ প্রতিবাদ আসলে দেশের সবাইকে ছুঁতে পারছে না সমান ভাবে। আমরা প্রতিটা সংগঠন, সংস্থা আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিবাদ করছি, নিজেদের সংস্থা বা সংগঠনের মূল বার্তাগুলো ঠিক ঠাক মতন হাইলাইটেড হল কি না তা দেখছি! কিন্তু এই ইস্যুতে আমরা তো পারতাম সবাই একটা প্ল্যাটফর্মে এসে যৌথভাবে প্রতিবাদ করতে, পারতাম না আমরা?
সিস্টেমের অনেক দোষ, রাষ্ট্রের অনেক দোষ - মানি, দেখি এবং জানি। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকার তো আমি বা আপনিই তৈরি করি। ধরুন নারী নির্যাতনের কোন একটি ঘটনা, সে হোক পথে ঘাটে দৈনন্দিন নিপীড়ন-নির্যাতন অথবা ধর্ষনের মতন অগ্রহণযোগ্য অপরাধ, ঘটল, আমি দোষ দিলাম রাষ্ট্রযন্ত্র ও সরকারকে, ধু**, কিচ্ছু করে না এরা। বা** দেশ, চু** সরকার এই বলে ভাবলাম খুব হল প্রতিবাদ।
কিন্তু মনে কি হয় যে এইটুকুই যথেষ্ট? আমি কি আরো কিছু করতে পারি না? ব্যক্তিক পর্যায়ে আমার করণীয় কি আর কিছু নেই? আমি রাস্তা-ঘাটে নারীর প্রতি, মানুষের প্রতি যে কোন ধরনের নির্যাতনের ঘটনায় ঠিক কতখানি প্রতিবাদ করি? নাকি, এটা যার যার ব্যাপার বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাই? চিন্তা করতে হবে একটু।
এছাড়া আমার মনে হয় গণমাধ্যমের ভূমিকা আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। এই খবরগুলো ছাপানোর ক্ষেত্রে পত্রিকার ট্রিটমেন্ট আরো জোরালো হওয়া উচিত, প্রথম পাতায় উল্লেখ থাকা উচিত যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে। যৌন হয়রানি বা নারীর প্রতি অন্য যে কোন নির্যাতনের ঘটনা যেভাবে প্রথম পাতায় আসে, তেমনি এসব ঘটনায়, বিচার বা রায় হওয়ার পর সেগুলোও পত্রিকার পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছাপানো উচিত যেন মানুষ জানতে পারে এ ধরনের ঘটনা আসলেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এবং দেরিতে হলেও, অপরাধী শাস্তি পায়।
পরিশেষে, আমার নিজের ঘটনায় শেষটা অত প্রতিবাদের ছিল না। আমি এখন জানি পর্যন্ত না আমার মামলাটা এখন কোন পর্যায়ে আছে।
তবুও, রাস্তা-ঘাটে যে কোন ধরনের হয়রানি বা নির্যাতনের ধটনায় আমি চুপ থাকি না, আমি চিৎকার করি। আমি যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেয়ে গালি দিয়ে নিপীড়কদের অশ্রাব্য-অশালীন মন্তব্যের জবাব দেই, এবং দিতে চাই। #ম্যানশ্যামিং আমি শুরু করেছি এবং এটাই আমার প্রতিবাদ।
:::অস্পৃশ্যার বয়ান:::
মন্তব্য
হোক প্রতিবাদ। যেখানে যেভাবে হোক, প্রতিবাদ হোক।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
ধন্যবাদ।
আপনি একজন অসাধারণ সাহসী মানুষ।
আমি ভাবতেও পারিনা হেলমেট দিয়ে মারার পরও আমি মোটরসাইকেল ধরে থামানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
অনেক ধন্যবাদ জানবেন এই প্রতিবাদ করায়।
ম্যানশ্যামিং জারি থাক। যুদ্ধ জারি থাক সব সেক্টরে।
(আপনার নাম অস্পৃশ্যার বয়ান কেন হবে? আপনিতো অস্পৃশ্যা নন।)
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ম্যানশ্যামিং জারি থাকবে। সে সময়টায় আসলেই মাথায় জিদ ভর করেছিল। কেউ একজন গায়ে হাত তুলে চলে যাবে তা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না।
সচলের পুরোনো পাঠক। অতিথি হয়ে লেখা পড়ে যেতাম এক সময় রিলিজিয়াসলি, এখন একটু কম হয় যদিও। তো সে সময়ে এই নিক নেওয়া হয়েছিল, কয়েকটা মন্তব্যও হয়ত খুঁজলে পাওয়া যাবে এই নিকের। তাই সে নিকটাই ব্যবহার করলাম আর কি।
অসংখ্যা ধন্যবাদ জানুন।
যুক্তির যেখানে আদর হয়না চিৎকার সেখানে শেষ অস্ত্র?
এটা একটা সভ্য সমাজের নির্দিষ্ট গড়ন হয়ে দাঁড়ালে সেটা কিন্তু আশঙ্কার কথা।
আচ্ছা আপনার কী মনে হয় সাংবাদিকতায় জড়িত মানুষের সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু বেশি সুবিধা পাওয়া দরকার?
হলে এমনটা কেনো মনে হয় জানবার কৌতুহল হচ্ছে।
রাস্ট্রের কাছে তার সব জনগণের সমান অধিকার থাকে। সেখানে পেশা দিয়ে বাড়তি সুবিধা নেবার প্রক্রিয়াটাও সমস্যা তৈরিতে
ইন্ধন যোগায়। শেষটায় আপনার প্রতিবাদী মনোভাবকে অভিনন্দন জানাই।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অন্যের কথা তো বলতে পারি না, তবে আমার কাছে শেষ অস্ত্র না হলেও চিৎকার অন্যতম অস্ত্র। আরো ভাল করে বললে, আমি যখন পথ দিয়ে হেটে যাই আর কোন এক পুরুষ আমাকে নিচুস্বরে খুব বিশ্রীভাবে কিছু বলে যাও, তখন আমি চুপ না থেকে আশেপাশের আরো কিছু মানুষকে জানিয়ে দিতে চাই ঐ ব্যক্তিকে গাল দিয়ে।
"আচ্ছা আপনার কী মনে হয় সাংবাদিকতায় জড়িত মানুষের সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু বেশি সুবিধা পাওয়া দরকার?
হলে এমনটা কেনো মনে হয় জানবার কৌতুহল হচ্ছে। রাস্ট্রের কাছে তার সব জনগণের সমান অধিকার থাকে। সেখানে পেশা দিয়ে বাড়তি সুবিধা নেবার প্রক্রিয়াটাও সমস্যা তৈরিতে ইন্ধন যোগায়।"
এই জানতে চাওয়ার আগ্রহটা কি আমার লেখার এ অংশ থেকে এসেছে, "মনে আছে আমার এক সহকর্মী সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “কিভাবে এ ধরনের গাফিলতি হয়? সাংবাদিককে হেনস্থা করে আসামীরা যদি পার পেয়ে যায় তবে আর বাকি মানুষজনের কি অবস্থা?”
যদি তাই হয়, তবে বলি, প্রথমত আমিও আপনার মতই বিশ্বাস করি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সব মানুষের সমান অধিকার। আমার বেলাতেও তার ব্যতিক্রম নয়। নয়ত আজকে আমার ঘটনার শেষ পরিণতিও খুব গর্বের হতে পারত। একজন ডাক্তারের মৃত্যুতে ক্ষেত্রে বিশেষে যেমন পুরো ডাক্তার সমাজ পাশে এসে দাড়ায় ঠিক তেমনভাবে না হলেও আমার সাবেক সে সহকর্মী আপা সে সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সচিবালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ের শেষ পর্যায়ে খানিকটা আত্মিক টান থেকেই প্রশ্নটা করেছিলেন যতদূর জানি। বেশি সুবিধা বা কোন ধরনের সমস্যা তৈরিতে ইন্ধন যোগানো হয়নি বলে হলফ করে বলতে পারি।
ধন্যবাদ জানবেন।
আসলে আমি চিৎকারের ব্যাপারটা স্পষ্ট করে বোঝাতে পারিনি।
আমি একটু নিম্নস্বরে কথা বলি, কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যায় অযৌক্তিকভাবে চেঁচিয়ে,
চিৎকার করে কিছু মানুষ নিজেদের ভুলটাই ঠিক হিসেবে দাঁড় করাতে চান। এজন্যই আসলে ওরকমটা বলা। আপনি অবশ্যই চিৎকার করবেন, কারণ আপনারটা যথেষ্ট যৌক্তিক। দরকারে পিটাতে পিছুপা হবেন না।
জ্বী, স্বীকার করছি আপনার ঐ লাইন পড়েই জানতে চাওয়া, কিন্তু এরকমটা অনেক পড়েছি, শুনেছি। তাই সুযোগ পেয়ে আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনার সহৃদয় মন্তব্যের জন্য। প্রতিবাদ জারী থাকুক। শুভকামনা জানবেন।
প্রতিবাদ সর্বদা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়না। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারাটাও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথম সাফল্য। আপনার প্রতিবাদী মনোভাব-কে অভিনন্দন।
মেয়েরা অবশ্যই সমাজের নানা স্তরে পুরুষ-এর কিল খাওয়ার জন্য স্বাভাবিক বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার বলপ্রয়োগ-এর ক্ষমতার মাপকাঠিতে পিছিয়ে থাকা পুরুষ-এর হাল, অধিক শক্তিধর পুরুষ-এর হাতে একই রকম অপমানজনক ও বিপন্ন হয়ে ওঠে। সময় সময় তো ঐ অধিকতর ক্ষমতার উৎস থাকে স্রেফ দলবদ্ধ শেয়ালদের সম্মিলিত আক্রমণের আয়োজন!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সহমত।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
আপনার অসামান্য সাহসিকতা কে সম্মান জানাই। এমন প্রতিবাদ বজায় থাকুক সর্বত্র তাও চাই কিন্তু বাস্তবতা আর নিজের অভিজ্ঞতায় এমন প্রতিবাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আপনি হয়তো সাংবাদিক বলে পুলিশের কাছে কিছুটা সহযোগিতা পেয়েছেন সাধারণ মানুষরা কিন্তু উল্টো পুলিশের কাছে হয়রানির স্বীকার হয় এবং হবে।
নিজের ছোট্ট একটা প্রতিবাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ট্রেনে প্রচুর ভিড় ছিলো সেদিন, বি বাড়িয়া এসে দাঁড়ালো। ভিতরে তিলধারণের ঠাঁই নেই।এমতাবস্থায় জানালা দিয়ে একজন কিছু ব্যাগ ফেলতে চাইলো ভিতরে, জানালার পাশে বসা লোকটি সেটি নিলো না। সেটা নিয়ে হালকা কিছু কথাকাটাকাটি হয়েছিলো। তারপর ট্রেন এক হুইসেল বাজিয়ে ধীরগতিতে চলতে শুরু করলো। ঠিক সেই সময়ে লম্বা চওড়া একজন মানুষ এসে সেই জানালার পাশে বসা মানুষটিকে এসে বললো ‘তুই সেই লোক যে আমার ভাইকে মেরেছিস? দাঁড়া তোকে আজ উচিত শিক্ষা দিবো’। তারপর ফোন বের করে কয়েকজনকে খবর দিলো, আমাদের বগির ঠিকানা দিয়ে চলে আসতে বললো।ট্রেনের গতি বাড়ার অাগেই চার-পাঁচজন বিশ-বাইশ বছরের যুবক চলে আসলো। তাদের কোমরে অস্ত্র ও ছিলো। ট্রেন ভর্তি এত মানুষ সবাই চুপ। আমি গেলাম প্রথমে লম্বা মানুষটিকে বুঝাতে, কাজ হলো না। তারপর অল্পবয়স্ক তরুণদের কাছে গিয়ে বললাম ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দাও। মাফতো করেইনি বরং লোকটাকে শত মানুষের সামনে ইচ্ছেমত কিল ঘুষি দিয়ে যাচ্ছিলো। আমি ভয়ে ছিলাম যদি না গুলি করে দেয়! একজন বললো সামনের স্টেশানে তাকে নামিয়ে ফেলবে! এই কথার পরে যে ভয় আর আতংক আমি নির্যাতিত মানুষটির মুখে দেখেছি তা আমার ভেতরের অতলকে ও ছুঁয়ে গেছে। কারণ এই দুটো স্টেশানে মানুষকে মেরে বলা হয় ট্রেনে কাটা পড়ছে!
কেউ ছিলো না আমার পাশে। আমি আমার চেষ্টা করতে থাকলাম আবারও বুঝাতে লাগলাম। কাজের কাজ হলো না উল্টো ওরা আমাকেও নামিয়ে ফেলার হুমকি দিয়ে বসলো। তারপর আখাউড়া স্টেশানে ট্রেন আসার পর ওরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তাকে নামিয়ে ফেলার, কিন্তু ভীড় বেশি ছিলো বলে পারেনি। তারপর ট্রেন চলতে শুরু করেছিলো বলে লোকটি বেঁচে গেলো। আর যখনি বেঁচে গেলো তখন সাহসী সব বাঙালি এসে জিজ্ঞেস করতে থাকলো কি হয়েছিলো? এতক্ষন এরা সবাই বসে বসে নাটক উপভোগ করেছিলো।
ঘটনাটি উল্লেখ করার কারণ হলো সবাই পুলিশের সহায়তা পায় না এই দেশে, বরং নিজেই দোষী সাবস্ত হয়। অসহায়হীন হয়ে নিরাপত্তার ঝুঁকির মাঝে গিয়ে মানুষ কিভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে?
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
সেই অর্থে সুবিধা পাইনি পুলিশের কাছ থেকে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত এক মামলা লেখা নিয়ে টানা হ্যাচড়া, এসআইয়ের গড়িমসি, এই শনাক্তকরণ, ঐ শনাক্তকরণ, ফোনের পর ফোন ইত্যাদি ইত্যাদি। খুব ঝামেলার কিছু দিন গিয়েছিল সে সময়টায়। এই যে আপনি চেষ্টা করেছেন সেটাই অনেক এবং প্লিজ তা জারি রাখবেন। আশেপাশে তাকিয়ে দেখবেন প্রায় ৯০ ভাগ হয়ত এইটুকুও করে না। আমার কথা হল, রাতারাতি পুরুষের মন থেকে নারীর প্রতি সনাতনী চিন্তাভাবনা পালটে ফেলতে পারব তা মনে করি না। আমি শুধু আশা করি, পুরুষ আমার দুইটা চিৎকার বা গাল খেয়ে একটু ভাবুক বা বুঝুক, সবাই চুপ করে সয়ে যায় না। হয়ত পরবর্তীতে আরেক নারীকে কিছু বলতে গিয়ে এই পুরুষ হয়ত একটু থমকে যেতেও পারে (অতি কল্পনা করছি হয়ত কিন্তু কে জানে)।
ধন্যবাদ।
"প্রতিবাদ সর্বদা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়না। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারাটাও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথম সাফল্য।"
আপনার এই কথাটা আমার খুব ভাল লাগল আর সাহস যোগালো। ধন্যবাদ।
এই দেশে ছিঁচকে চোরের পেছনেও ধাওয়া করে শত শত মানুষ, কোথায় কে কাকে ট্যাগ করল তার প্রতিবাদে(?) হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে একটা পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়, কে কোথায় কোন ব্লগে কী লিখল[ ব্লগ কী সেটা না জেনেও] লক্ষ মানুষ পথে লাঠি-কিরিচ নিয়ে নেমে পড়ে, সেখানে একজন নারীকে কেউ অপমান করলে যখন অন্য কারও গায়ে একটু চুলকানীও হয় না তখন বোঝা যায় নারীর প্রতি এখানের সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিটা কেমন। নারীরই তো দোষ ধরবে এখানের পুরুষ, কারণ নারী তো পুরুষের জন্য তৈরী ভোগ্যবস্তু, তার চাষের জমি, তার সেবাদাসী; সে নারী যদি বাইরে নিজের খেয়াল-খুশিমত ঘুরে বেড়ায়, সর্বাঙ্গ না ঢেকে রাখে তবে পুরুষের লালা তার বেহায়া গায়ের উপর পড়বেই, এটা দোষের কিছু কেন হবে।
আপনি অন্যায়ের প্রতিবা্দে সোচ্চার হয়েছেন আর কাউকে এগিয়ে না আসতে দেখেও এটা জেনেই আপনার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে যায়। আমি জানি এদেশে নারীর নিজ সম্মান রক্ষার্থে নারীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে, পুরুষের ঢল নামবে না এই মধ্যযুগীয় সমাজব্যবস্থায়।
সচলে লিখতে থাকুন।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ওমন সাহসের কিছু না আসলে দাদা। আমি চেয়েছিলাম, সে সময়েই আসলেই মাথায় জিদ চেপে গেছিল গায়ে হাত তোলার পরে, এত সাহস কিভাবে হয় সে ভেবে আর তাই ওভাবে পড়ে পড়ে মার খেলাম আরো এক গাদা।
তবে একটা দিক কি দাদা, ঐ ঘটনার পর আসলেই আমার সাহস ভালই বেড়েছে। খুব খারাপ দেখে ফেলেছি তো একবার তাই এখন মনে হয় কিছুতেই আর কিছু এসে যায় না। অবশ্য নারীরা এই দেশে আরো খারাপ কিছুও দেখে থাকে। এ কারণে যতটুকু পারি প্রতিবাদ করার চেষ্টা করি, গাল দেই নয়ত চিৎকার করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ, দাদা।
অনেক শুভকামনা জানবেন। প্রতিবাদ জারি থাক।
স্বয়ম
আমার মনে হয় আমাদের সমাজ গোষ্ঠীতান্ত্রিক। এখানে সব সময় এক গোষ্ঠী আরেক গোষ্ঠীকে সাইজ করার তালে থাকে। নারীদেরকে এখানে দুর্বল গোষ্ঠী বানিয়ে রাখা হয়েছে - সেটা পুরুষের স্বার্থেই। আমাদের মধ্যে নৈতিকতা নেই, ন্যায়বোধ কম, সৎ সাহস আরো কম। আমাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ নেই, তাই অর্পিত দায়িত্ব পালনে আমাদের আগ্রহ নেই। এই জন্য খুনীরা যখন অভিজিৎকে কোপায় তখন পুলিশ সেটাকে দুই দলের মারামারি মনে করে হস্তক্ষেপ করে না। এক-আধজন পুলিশ হয়তো ফার্নিচার ব্যবসায়ীগুলোর কাছ থেকে তোলা খেয়ে তাদের বিরুদ্ধে নামে না, কিন্তু বাকিরা নামে না ভয়ে। তারা জানে এদের পেছনে সমিতি/অ্যাসোসিয়েশন-ফেডারেশন-পার্টি-পার্টির নেতা-কাউন্সিলর/মেয়র/এমপি/মন্ত্রী আছে। যদি তারা টের পায় ভিকটিম শক্তিশালী গোষ্ঠীর সদস্য, তখন তাদের আচরণ পালটে যায়। এমনকি অপরাধীকে তার নিজ গোষ্ঠীও অমন ক্ষেত্রে ডিজিঔন করতে পারে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
খুব সুন্দর করে বলেছেন, এক্কেবারে সহমত।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার সামনে একদিন একজনরে ধাম ধাম করে মারতে দেখেছিলাম। একটা মেয়ে এভাবে মারতে পারে সেটা তার চিন্তাতেও ছিলোনা হয়তো। মাইর খেয়ে ছেলেটার মুখটা কেমন অবিস্বাসে ভরে আছে। দুই তিনটা খেয়ে দিয়েছে ভো দৌড়। লোকজন তালি দিয়ে উঠলো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আত্মরক্ষার বেশ কিছু কৌশল আমার নিজেরও শেখবার ইচ্ছে আছে। হাঁটুতে একটা বাজে ফ্র্যাকচার এখনো ভোগাচ্ছে বলে হয়ে উঠছে না।
আমি বেট ধরে বলতে পারি, মাইর খেয়ে সেই ছেলে পরের বার কোন নারীকে হয়রানি করতে ব্যাপক সময় নিয়েছে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার সাহসী চিন্তাভাবনা এবং পদচারণাকে স্যালুট।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটি পড়বার জন্য।
আচ্ছা দুনিয়াতে পরিবর্তন এনেছে কিন্তু এক একজান আলাদা মানুষগুলোই ।সবাই মিলে নয়, সেই কবে থেকে একজন মহামানব অন্ধকারের সংস্কার করে আলো ফোটাতে শুরু করলো, তবে আপনার আমার হাত দিয়ে পরিবর্তন নয় কেন?দুনিয়াতে কিন্তু আগাছার সংখ্যাই বেশী তাই বলে ফুল ফোটা বন্ধ আছে?
-------------
রাধাকান্ত
পরিবর্তন আসবেই তা জানি। কিন্তু মাঝে মাঝে ধৈর্য্যহারা হয়ে যাই তাও ঠিক।
লেখাটি পড়বার জন্য ধন্যবাদ জানুন।
প্রতিবাদ করাটাইবা কম কিসের? প্রতিবাদ জারি থাকুক। গাল-কটুক্তি-ক্যাটকলিং শুনে ঝামেলা এড়ানোর ভয়ে ভীত পথচারী-অফিসার-ভ্রমনকারী নারীগোষ্ঠীর মুখে বুলি ফুটলে, ম্যানশেমিং শুরু হলে এই নোংরা মানুষগুলো আশেপাশের মানুষের সামনে একটু খারাপ হোক, একদিন দুইদিন করে এমন দিন আসবে যেখানে কেউ এই নোংড়ামোর সাহস পাবেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
এখন ভয় লাগে না সত্যি বরং অদ্ভুত এক রাগ হয়। ইচ্ছে করে ছিড়ে-খুড়ে ফেলি এদের। এই প্রত্যাশাতেই চিৎকার আর প্রতিবাদ করি যেন অল্প সময়ের জন্যও এরা থমকে যায় বা লজ্জ্বিত হয়।
ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।
আপনার সাহসী ভাবনা এবং আচরণকে স্যালুট!
চিৎকার থামাবেন না, নিঃশব্দ হবেন না।
আর পারলে লেখাটাও চালিয়ে যান।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
শুভকামনা জানবেন। এমন প্রতিবাদ চলতে থাকুক
দেবদ্যুতি
আপনার লেখা হোক অনেকের ভালো ভাবে বাচার ভাল হয়ে ওঠার রসদ। ঘটক না হোক অনুঘটক তো হবে। কোথাও কি চিড় ধরবেনা।কোথাও কি জারন হবে না। নিশ্চই। অশুচিতা শুচিতার বিজারণে ধ্বংস হবেই।
নতুন মন্তব্য করুন