ঢাকায় বসে ছোট ভাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে এখন নাকি ভূমিকম্পের দোলাতে আর ভয় লাগেনা, গত কয়েকদিন ধরে এত বেশি দোলা খাচ্ছে ঢাকা শহর ভয় যেন কেটে গেছে। তার এই স্ট্যাটাসে কোন লাইক দিতে বা কমেন্ট করতে পারিনি। খুবই ভয় লাগে যদি ভাবি ঢাকা শহরে ভূমিকম্পের কথা। আমার ধারনা যে কোন মাঝারি মানের ভূমিকম্পের জন্য ঢাকার চেয়ে অন্য কোন ঝুঁকিপূর্ন শহর পৃথিবীর অন্য একটি নেই। এখন সেই ঢাকাই হচ্ছে অন্যতম একটি ভূমিকম্পপ্রবণ শহর। আমি ভূমিকম্প বিশারদ নই, ভূমিকম্প নিয়ে আমার জ্ঞান অন্য দশ জনের মতই। কিন্তু আমি তথ্য (big data) নিয়ে কাজ করি, তাই খুব আগ্রহ জাগল ভূমিকম্পের তথ্যগুলো একটু খুঁজে দেখার, ভূমিকম্পের সার্বিক চিত্রটা কেমন একটু ধারনা নিতে ইচ্ছা করল। কাজটা প্রথমে শখের বশে করলেও, লিখে ফেললাম যদি কারো কোন আগ্রহ থাকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল, বিস্তৃতি বা ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে।
বাংলাদেশ ও তার আশেপাশের অঞ্চলের ভূমিকম্পের তথ্য গুগলে খুঁজতেই চমৎকার সব গুছানো তথ্য পাওয়া গেল বিভিন্ন database এ। তথ্যগুলোতে ভূমিকম্পগুলো কখন, কোথায়, কত মাত্রায় ও ভূমির কত গভীর থেকে উৎপত্তি হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ননা রয়েছে। শুনলে অবাক হবেন একটা database এ ৪,০০০ এরও বেশি সময়ের ভূমিকম্পের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা আছে। অনেক উৎস থেকে অনেক রকমের তথ্য পাওয়া গেল। এখন কিভাবে এই তথ্যগুলোকে উপস্থাপন ও অনুধাবন করা যা তার জন্য বিভিন্ন চিত্র তৈরি করার (visualization) কিছু সফটওয়্যার খুঁজতে লাগলাম; সহজেই গুগল খুঁজে পাওয়া গেল দারুন কিছু open source সফটওয়্যার।
এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভূমিকম্পের তথ্যগুলো দিয়ে বিভিন্নভাবে তৈরি করলাম কিছু ছবি ও ভিডিও যাতে ভূমিকম্পের ধরন কিছুটা হলেও বুঝতে পারি। আরেকটু কাজ করতে না পারায় একটু আক্ষেপও থেকে গেল মনে। অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য দেখে Machine learning এর কোন একটা পদ্ধতি ব্যবহার করে পরবর্তি ভূমিকম্পটি পৃথিবীর কোথায়, কত মাত্রায় ও ভূপৃষ্ঠের কত গভীর থেকে উৎপত্তি হবে গনিত ব্যবহার করে তার সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে ভূমিকম্পের একটা ঘটনা আরেকটা ঘটনার উপর নির্ভরশীল নয় বলে, পরিসংখ্যানের পদ্ধতি ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। হয়ত খুব শীঘ্রই কোন বিজ্ঞানী ভূমিকম্প ভবিষ্যৎবানী করার খুব সহজ সমাধান বের করবেন, এটা আশা করাই যায় এই শতাব্দীতে।
বিভিন্ন database এর তথ্যগুলো থেকে কোন নির্দিষ্ট এলাকা বা গোটা পৃথিবীর কোথায়, কবে, কত মাত্রার ভূমিকম্প, কি পরিমান সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, কতজন মানুষ মারা গেছে বা কতটি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ইত্যাদি। এসব তথ্যের মধ্যে আমার প্রধান আগ্রাহ বাংলাদেশের ভূমিকম্প সম্পর্কে একটা ধারনা নিতে। তাই শুরুতেই বাংলাদেশের সীমানা প্রচীরের মধ্যে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পগুলো সম্পর্কে একটু দেখে নেয়া যেতে পারে। ১৭৬২ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই ২৪৮ বছরে দেশের সীমানায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে ১৭ টি। ছবি-১ এ সাদা ও হলুদ গোলকে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বড়ধরনের ভূমিকম্পগুলো দেখানো হয়েছে। সাদা গোলক বোঝায় ঐ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা জানা যায়নি ও হলুদ গোলক বোঝায় মৃতের সংখ্যা ১০০ জনের বেশি। আর নীল রঙের রেখাটি দেখাচ্ছে INDUS-TSANGPO SUTURE, INDIA জোনের টেকটনিক প্লেটের সীমানা।
ছবি-১: বাংলাদেশ ও তার আশেপাশের এলাকার গত ২৪৮ বছরে উৎপত্তি হওয়া বিভিন্ন মাত্রার ভূমিকম্প।
ছক-১ এ দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের সীমানায় উৎপত্তি হওয়া সবচেয়ে পুরনো ভূমিকম্পের তথ্যটি পাওয়া গেছে ১৭৬২ সালে। ওই ভূমিকম্পে ১০০ জনের অধিক লোক মারা যায় এবং সাংঘাতিক ক্ষয়ক্ষতির প্রমান পাওয়া গেলেও ভূমিকম্পের মাত্রা জানা যায়নি। এই ২৪৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয় ৭.৬ (রিখটার স্কেলে) ১৯১৮ সালে। ১৯৩০ সাল ও তার আগে রিখটার স্কেলে ৭.০ বা তার উপর ভূমিকম্প হয় ৩ বার। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয় ২০০৩ সালে ৫.৭ মাত্রার। ১৯৩০-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত, এই ৫৮ বছর বাংলাদেশের সীমানায় কোন বড়ধরনের ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়নি। এছাড়াও বাংলাদেশে অনেক ছোটবড় কয়েকশত ভূমিকম্প হয়েছে এই সময় জুড়ে, কিন্তু তার উৎপত্তিস্থল ছিল অন্য দেশে, তাই এই ছকে দেখানো হয়নি।
ছক-১: গত ২৪৮ বছরে বাংলাদেশের সীমানায় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প।
তথ্যসূত্রঃ ছবি-১ ও ছক-১: Natural hazard viewer, National Centers for Environmental Information. [http://maps.ngdc.noaa.gov/]
এখন বিশ্বের সামগ্রিক ভূমিকম্পের চিত্রটি একটু দেখে নেয়া যাক। সমগ্র বিশ্বের ভূমিকম্পের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ১৯০০ সালের জানুয়ারী ০১ থেকে ২০১৫ সালে মে ১২ তারিখ পর্যন্ত (১১৫ বছর) ঘটে যাওয়া রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫.০ বা এর অধিক ভূমিকম্পগুলো নিয়ে। এসময় জুড়ে সর্বমোট ৮২,১৩৩ টি ভূমিকম্প হয়েছে সারা বিশ্বে। তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে North California Earth Quake Data Center থেকে, যা Berkeley, University of California রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে [http://quake.geo.berkeley.edu/]। ছবি-২ থেকে ছবি-৫ এবং ভিডিও-১ থেকে ভিডিও-৩ তৈরি করা হয়েছে সমগ্র বিশ্বের এই তথ্যগুলো দিয়ে। আর ছবি ও ভিডিওগুলো তৈরি করা হয়েছে “ShowEarthModel” সফটওয়্যার দিয়ে যা বিশেষভাবে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জন্য নির্মিত যাতে তারা ভূমিকম্পের তথ্যগুলোর ত্রিমাত্রিক ছবি দেখতে পান ও তার থেকে ভূমিকম্পের রূপকে যথাযথ ও পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুধাবন করতে পারেন [http://doc-ok.org/]। ছবি ও ভিডিওগুলোতে বাংলাদেশের তথ্য ও ছবি কাছ থেকে বিস্তারিত দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আর সেইসাথে বাংলাদেশের আশেপাশের এলাকাসহ সারা বিশ্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলগুলো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সহকারে দেখানো হয়েছে। ছবি ও ভিডিওগুলোতে ভূমিকম্পের তথ্যের তিমাত্রিক ছবিগুলো ভূপৃষ্ঠের কত গভীর থেকে ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়েছে তা দেখানো হয়েছে। এগুলোতে সবুজ গোলাকার বিন্দু দিয়ে ৫-৭ মাত্রার ভূমিকম্প, নীল বিন্দু দিয়ে ৭-৮ মাত্রার ও লাল বিন্দু দিয়ে ৮-৯ মাত্রার ভূমিকম্প বোঝানো হয়েছে।
ছবি-২ এ বাংলাদেশের অবস্থান দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর মানচিত্রে। এটি পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের ছবি। ছবিতে জ্বলজ্বল করা বর্নবিন্দুগুলো গত ১১৫ বছরে ওই অঞ্চলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ভূমকম্পের উৎপত্তিস্থল।
ছবি-২: ভূপৃষ্ঠের থেকে ভূমকম্পের উৎপত্তিস্থলের চিত্র।
ছবি-৩ এ ভূপৃষ্ঠকে দেখানো হয়েছে আরো দূর থেকে (zoom out) যেখানে ভূমকম্পের উৎপত্তিস্থলের আরো পরিষ্কার ছবি বোঝা যায়। ভূমকম্পের উৎপত্তিস্থলগুলো যেন একসাথে সারি বেধে আছে মনে হয়, যা বিভিন্ন টেকটনিক প্লেটের সংযোগের পরিষ্কার চিত্র। টেকটনিক প্লেটের সংযোগ থেকেই যে ভূমকম্পের উৎপত্তি হয় সেটা এই চিত্রগুলো থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে; যার জন্য আসলে রকেট সায়েন্টিস্ট হবার প্রয়োজন পড়েনা।
ছবি-৩: ভূপৃষ্ঠে টেকটনিক প্লেট ও ভূমিকম্পের উৎস।
বেশিরভাগ ভূমকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন গভীরতায়। তাই চিত্র-২ ও চিত্র-৩ থেকে ভূমকম্পের আসল রূপ বোঝা যাবেনা। তাহলে এবার দেখে নেয়া যাক ভূপৃষ্ঠের গভীরে ভূমকম্পের তিমাত্রিক চিত্র। ছবি-৪ এ বাংলাদেশ ও তার আশেপাশের এলাকার তিমাত্রিক ছবি দেখানো হয়েছে, যেখানে ভূপৃষ্ঠকে স্বচ্ছ করে দেখানো হয়েছে। ভূগোলকের কেন্দ্র ও মধ্যগোলককে হালকা গোলাপী গোলকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ছবি-৪: স্বচ্ছ ভূগোলকে বাংলাদেশ ও তার আশেপাশের এলাকা।
ছবি-৫ এ স্বচ্ছ ভূগোলকে আরো বিস্তারিতভাবে দেখানো হয়েছে একটু দূরে থেকে।
ছবি-৫: স্বচ্ছ ভূগোলকে পৃথিবী।
ছবি দিয়ে আসলে তিমাত্রিক তথ্যগুলো খুব ভালভাবে উপস্থাপন করা যায়না। তাই এছবিগুলোর পাশাপাশি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের পৃথিবীর উপরিভাগের ও স্বচ্ছ ভূগোলকের ভিডিও ৩৬০ ডিগ্রী কোনে ভিডিও দেখানো হয়েছে। আগ্রহীরা দেখে নিতে পারেন।
ভিডিও-১: ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ৩৬০ ডিগ্রী কোনে পৃথিবীর উপরিভাগ।
https://www.youtube.com/watch?v=kcE7Na3NO_4
ভিডিও-২: ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ৩৬০ ডিগ্রী কোনে স্বচ্ছ পৃথিবীর।
https://www.youtube.com/watch?v=3BKN_i2TdPE
ভিডিও-৩: ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ৩৬০ ডিগ্রী কোনে ভূগোলকের কেন্দ্র ও মধ্যগোলকসহ।
https://www.youtube.com/watch?v=XOAczxaRsmk
এই ছবি ও ভিডিও গুলো থেকে ভূমিকম্প সম্পর্কে কোন ধরনের পূর্বাভাস পাওয়া না গেলেও কিছু জিনিস খেয়াল করা যাচ্ছে (আমার ভুলও হতে পারে)। বাংলাদেশের সীমানায় চোখে পড়ার মত কোন বড় টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থল নেই বা বাংলাদেশে খুব ঘনঘন ভূমিকম্পের উৎপত্তি হচ্ছেনা। যার জন্যই হয়তো ছক-১ এ খুব বেশি সংখ্যক ও অতি মাত্রার ভূমিকম্প দেখা যায়নি। কিন্তু আমাদের দেশের সীমানার খুব কাছেই রয়েছে সাংঘাতিক ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা (ছবি-২,৩,৪), যেখান থেকে উৎপন্ন হওয়া ভূমিকম্প হয়তো ধ্বংস করে দিতে পারে সবকিছু। চিত্র-৫ দেখা যাচ্ছে ভারত মহাসাগরের ইতিহাস রয়েছে অসংখ্য বড় মাপের ভূমিকম্প তৈরি করার যা হয়ত ভবিষ্যতে নিয়ে আসতে পারে ২০০৪ সালের মত শক্তিশালী কোন সুনামী। তথ্যগুলো নিয়ে আরো ঘটাঘাটি করলে হয়তো আরো অনেক অজানা বিষয় বের হয়ে আসতে পারে। আমি এবিষয়ের লোক নই, তাই ফলাফল ব্যাখ্যা করা এখানেই শেষ করলাম।
রাশেদুল রনি
১৪ মে, ২০১৫
ভেঙ্কুভার, কানাডা।
মন্তব্য
দারুণ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালো এবং সময়োপযোগী লেখা।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক মানচিত্রের খুব কাছাকাছি এরিয়া আলাদা রঙে ফুটে উঠেছে। এর কারণ কী?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ অনিন্দ্য রহমান আপনার প্রশ্নের জন্য।
ভূষ্ঠের উপরিভাগ দেখানোর জন্য তারা কোন ম্যাপের টেমপ্লেট ব্যবহার করেছে, আমি এব্যাপারে নিশ্চিত না। তাদের সফটওয়্যারের দলিলগুলো একনজর দেখে তেমন কোন সোজাসোজি উত্তর চোখে পড়লনা। তবে আমার ধারনা এই যে, এর সাথে ভূমিকম্পের কোন সম্পর্ক নেই।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা। এটা থেকে ভূমিকম্পের ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া গেলো প্লাস কিছু আশার বাণীও পাওয়া গেলো। আমি ব্যাক্তিগতভাবে যে ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা পেয়েছি, উপরের তালিকার সবচেয়ে বড়টিও তার ধারেকাছের না। ২৮ মার্চ ২০০৫-এ সুমাত্রায় থাকাকালীন সময়ে ১০-১২ মিনিট স্থায়ী ৮ দশমিক ৬ মাত্রার সেই ভূকম্পন জীবনেও ভুলবো না। নেপাল বাংলাদেশের মতো (বিশেষ করে ঢাকার তুলনায় নগণ্য) ঘনবসতিপূর্ণ নয়। তার পরও সিন্ধুপালচক, গোর্খা, ধাধিং ও নুয়াকোট এলাকায় যে পরিমান ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, শিউরে উঠছি ঢাকার কথা ভেবে। অনেক আগেই অনেক বড়কর্তাদের বলেছিলাম যে জায়গাগুলো সম্ভাব্য ঝুঁকিতে আছে সেই সব জায়গায় ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ততপরতার পাশাপাশি অস্থায়ী আবাসনের জন্য (বিশেষতঃ গর্ভবতী নারী, শিশু, প্রবীন, শারিরিকভাবে চ্যালেঞ্জড, আহত, এদের জন্য) স্টকপাইল প্রিপজিশনিং করতে, এই কাঙ্গালের কথা তখন কেউ আমলে নেয়নি। এখন সবাই কোমর বেঁধে নেমেছে সেই পরিকল্পনা করতে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়!
আপনার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা পৃথিবীর খুব কম মানুষেরই আছে, এটা আসলেও কোনদিন ভোলা যাবেনা। শুনে ভাল লাগল যে, আপনি দেশের কথা বিবেচনা করে কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমার মনে হয় আরও কিছু কাজ করা যেতে পারে। যেমন, স্কুল, কলেজ বা যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সকল অফিস, আদালতের সকলকে কিভাবে ভূমিকম্প, আগুন ইত্যাদি থেকে নিজেকে কিভাবে রক্ষা করা যায় তার প্রশিক্ষণ দেয়া, পুরো বিল্ডিং এর ম্যাপ জায়গায় জায়গায় ঝুলিয়ে রাখা, কিভানে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ করতে হয় ইত্যাদি। তাহলে হয়তো কিছু ক্ষতি কমানো যাবে সহজেই।
বাংলাদেশ যদিও একটি বড় ফাটলের কাছাকাছি কিন্তু সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া আর কোন অংশ পাথর বা রকের উপর নেই। ঢাকা ও দক্ষিনাঞ্চল বেলে বা আঠালো মাটির ওপর বলে খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা দেখিনা। দুর্বল কাঠামো পড়ে গুড়িয়ে যাবে । তলাবিহিন উচু দালান এলিয়ে পড়বে। মার্কিন ভূতত্ত্ববিদ এক চীনা মহিলা আমাদের সাথে চিনের ইংরেজি ফোরামে ব্লগিং করতেন। হটাত তিনি পোস্ট দিলেন প্যাসিফিকের সাথে ইউরেশিয়া প্লেটের ঘর্ষণ হচ্ছে । উপস্থিত উদগ্রীব সবাই ছেকে ধরল তাকড়। সে বলল আমার গ্রাফ কাটা বেশ দ্রুত সিগনাল দিচ্ছে। পরিচয় নিশ্চিত হলাম এবং অনেক বিষয় জানলাম। এর ঠিক চার মাস বাদে সিচুয়ানে ভয়াবহ ভুমিকম্পে ৮৫০০০ লোক মারা গিয়েছিল। ইনার মঙ্গোলিয়ায় ওদের একটি ভুকম্প ডিটেক্টইং সেন্তার আছে। বালুতে বোরিং সহজ বলে তারা কয়েক কিলোমিটার নিচে প্লেট পর্যন্ত বোর করে তারের মাথায় একটি সিম সাইজের ডিভাইস ও ক্ষুদ্র আল এবং ততধিক ক্ষুদ্র ক্যামেরা নামিয়ে দিল। উপরে আছে ট্রান্সমিশন অফিস যা সরাসরি সিগ্নাল দিচ্ছে ইউ এস জি এস কে। ওরাও লাইট জালিয়ে ক্যাম ওপেন করে দু ফাটলের সর্বশেষ অবস্থান দেখে নিচ্ছে। কিন্তু লেখক যেমন বলেছেন ওই কথাই সত্য যে আগাম ভুকম্পনের স্থান নির্ধারণের কোন পদ্ধতি নেই। তবে লাইন বলা সম্ভব। কিন্তু সেই লাইনের মানুষের জীবনযাত্রা স্তব্ধ হবে যদি চার বা ছ মাস তাবুতে থাকতে হয় । কাঠমুন্ডুকে মার্কিন প্রতিষ্ঠান বছর আগেই জানিয়েছিল সম্ভাবনার কথা কিন্তু কাঠমুন্ডু খুব গা করেনি। তিন ফুট উঠে যাওয়া কাঠমুন্ডু আবার নামবে এবং প্রচুর বিপর্যয় অপেক্ষা করছে নেপাল ।ভারত, ভুটান , তিব্বত ও বাংলাদেশের জন্য। ভাল থাকুন সবাই ।
নতুন মন্তব্য করুন