খুন,ধর্ষণ সহ নানান সামাজিক অপরাধে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যখন শঙ্কিত, লেখক ও ব্লগার হত্যার প্রতিবাদে সুশীল সমাজ চুপ করে থাকলেও যখন কথা বলছেন একমাত্র জাফর ইকবাল স্যার, ঠিক তখনই আবারও তাঁর বিরোধীতা করে মাঠে নামলো "সচেতন সিলেটবাসী" নামের একটি স্বার্থান্বেষী মহল। 'আবারও' শব্দটা ব্যবহার করছি কারণ এর আগেও ২০১৩ সালে এই ব্যানার নিয়েই স্যারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল তারা। তখন তারা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি করেছিল এবং শাবিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতা করেছিল। স্মারক ভাস্কর্যকে তারা "মূর্তি" উল্লেখ করে বলেছিল,শাহজালালের নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন মূর্তি পূজা করা যাবে না। তখন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সিলেটি ছাত্রদের জন্য আলাদা কৌটা রাখা এবং জাফর ইকবালকে 'সিলেট বিদ্বেষী' উল্লেখ করে সিলেট ছেড়ে চলে যাবার দাবি জানায়। দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেয় তারা। ২৭ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে রাতের অন্ধকারে স্যারের বাসার সামনে ককটেল হামলা করে তারা বুঝিয়ে দেয় প্রয়োজনে তারা স্যারকে হত্যাও করতে পারে। পরবর্তিতে তারা সিলেট মহানগরীতে হরতালের ডাক দেয়। (যদিও সাধারণ মানুষ ঐ হরতালে সারা দেয় নি।)
২০১৫ তে এসে জাফর ইকবাল স্যারের বিরোধীতায় নেমেছেন স্বয়ং সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস। গত ৯ মে তারিখে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে হাজী সাজ্জাদ আলী কল্যাণ ট্রাস্টের মেধা বৃত্তি বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্যারকে চাবুক মারার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন "আমি ছিলাম শাহজালাল ইউনিভার্সিটিতে, সেখানে সিলেটি ছেলেদের ওরা ভর্তি করানোর জন্য ১৪ আইন কালো কানুন দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এই যে আপনার কি এটার নাম জাফর ইকবাল সে হল ১ লক্ষ পারসেন্ট গৌড়গোবিন্দ, সে চায়না সিলেটের মানুষ শাহজালাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হোক। এখানে যে ভিসি ছিল তাকেও দিয়েছে তাড়িয়ে। আর এই সিলেটের মানুষ তাকে ফুলচন্দন নিয়ে সুন্দর সুন্দর ফুল নিয়ে প্রত্যেক দিন মূর্তিপূজা করতে যায়। আমি যদি বড় কিছু হতাম তাকে ধরে চাবুক মারতাম কোর্ট পয়েন্টে এনে ...জাফর ইকবাল তাকে আমি চাবুক মারতাম। এই লেফইষ্টরা আমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে"।
তাঁর দলীয় অনুসারী নেতা কর্মীরা স্যারের বিরুদ্ধে মিছিল ও সমাবেশ করে স্যারকে সিলেট ছেড়ে চলে যাবার দাবি জানিয়েছে। স্যারকে নাস্তিক,ব্লগার,সিলেট বিদ্বেষী উল্লেখ করে তারা বিভিন্ন শ্লোগান ও কটুক্তি করে ঐ মিছিল এবং সমাবেশে। এতে অংশ নেন মহানগর আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন সহ আরো অনেক আওয়ামিলীগের নেতা কর্মী।
সাংসদের এই বক্তব্য এবং প্রকাশ্যে জাফর ইকবাল বিরোধী অবস্থানের সুযোগ নিয়েছে সেই পুরাতন "সচেতন সিলেটবাসী" নামক মহলটি। দীর্ঘদিন চুপ থাকার পরে সেই মহল আবারও স্যারের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা আবারও স্যারকে সিলেট বিদ্বেষী উল্লেখ করে স্বপরিবারে সিলেট ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এই "সচেতন সিলেটবাসী" কারা ? জাফর ইকবালের বিরুদ্ধেই কেন তাদের অবস্থান ? এতো ক্ষোভ কেন তাদের উনার প্রতি ? চলুন একটু জেনে এই ব্যানারের নেপথ্যে থাকা নেতাদের পরিচয়।
১) সিলেট সিটি কর্পোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সবাই তাকে বিএনপি নেতা হিসেবেই চেনে এবং জানে। বর্তমানে তিনি শাহ এস এম কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামী হিসাবে জেলে আছেন।
২) সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তিনিও বিএনপি নেতা। ২২ ফেব্রুয়ারী সিলেটে শহীদ মিনার ভাঙ্গা মামলার অন্যতম আসামী তিনি। আদালতে উনার পক্ষের উকিল স্বীকার করেছেন তিনি ঐ মিছিলে ছিলেন।(সূত্র-সিলেটের ডাক ১৬-০৪-১৩)। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন এবং মামলাটি চলমান আছে।
৩) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবঃ যুবায়ের সিদ্দিকী (প্রিন্সিপাল স্কলার্স হোম)। জামাতপন্থী নেতা।
৪) মদন মোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ লেঃ কর্ণেল (অবঃ) এম আতাউর রহমান পীর। তিনিও বিএনপি পন্থী মানুষ। সাংগঠনিক পরিচয় না থাকলেও বিএনপি'র বিভিন্ন কর্মসূচীতে উনার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মেয়র নির্বাচনে তিনি আরিফুল হক সাহেবের হয়ে প্রকাশ্যেই কাজ করেছেন। কলেজ থেকে অবসরে যাওয়ার আগে উনার উপর দূর্নীতির অভিযোগও উঠেছিল।
৫) এডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি। চিহ্নিত জামাত কর্মী। শিবিরের বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকান্ডে তার প্রকাশ্য অংশগ্রহণ আছে।
এরকম আরো অনেকেই আছেন যারা জামাত-বিএনপি'র সাথে প্রকাশ্যে বা গোপনে জড়িত। ২০১৩ সালে প্রথম দিকে অনেক বামপন্থী নেতা এই ব্যানারের পিছনে থাকলেও এদের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন।
হয়তো ভাবছেন সরকার দলীয় সাংসদ যেখানে স্যারের বিরোধীতা করছেন সেখানে বিএনপি জামাত পন্থী এইসব নেতাদের বিরোধীতা করাটাকে কেন প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে ! সেই উত্তরটা জানার আগে চলুন একটু জেনে আসি কে এই সাংসদ,কি তাঁর পরিচয়।
সাংসদ মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস আওয়ামিলীগ সমর্থিত সংসদ সদস্য। সিলেট-৩ আসন থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর পিতার নাম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী। ডাক নাম শিরু মিয়া। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি (শিরু মিয়া) নিজ এলাকায় পাকিস্তানীদের হয়ে দালালী করেছেন। শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। যদিও তাঁর রাজাকার হবার কোন দলিল নেই কোথাও বা ঐ এলাকার কেউ প্রকাশ্যে এই কথা বলতে চায় না। তবুও আড়ালে সবাই কথাটি জানে এবং স্বীকার করে। তবে সাংসদ কয়েস কোনদিন উনার বাবার রাজাকার হবার কথার কোন প্রতিবাদও করেন নি। তাই রাজাকার পুত্র হিসাবেই তিনি তাঁর এলাকায় বেশ পরিচিত।
জাফর ইকবালের প্রতি উনার ক্ষোভ থাকার কারণ কি ?
কথায় আছে শত্রুর শত্রু মিত্র। জাফর ইকবালের শত্রু জামাত,মৌলবাদী গোষ্ঠী। বিএনপিও জামাতের মিত্র। সেই হিসাবে তারাও স্যারের বিরোধী শক্তি। আর সরকার দলের সাথে বিএনপি'র যতোই শত্রুতা থাকুক না কেন এই সাংসদের ব্যাক্তি পরিচয়ই বলে দেয় কেন তাঁর জামাত প্রীতি। আর তখন নিশ্চই বুঝতে বাকি থাকে না কেন শত্রুর শত্রু মিত্র। একটু খেয়াল করে দেখবেন বিএনপি জামাত পন্থী নেতাদের দাবিগুলো। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধীতা করেছে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি করেছে। এই দুইটি কাজই জাফর ইকবাল স্যারের আগ্রহে করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তাই স্যার শাবিতে থাকলে এগুলো বাস্তবায়ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। জামাত এবং মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে জাফর ইকবাল বরাবরই এক প্রতিবাদী চরিত্রের নাম। তাঁর কথায় এবং লেখনীতে নতুন প্রজন্ম রাজাকার,মৌলবাদী,জামাত বিরোধী আন্দোলনের প্রেরণা পায়। সব সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা সকল তরুণদের সাহস দিয়েছেন,দিয়েছেন মুক্ত চিন্তার প্রকাশ ঘটানোর উৎসাহ। উনার কারণেই জামাত তথা মৌলবাদি চক্র সিলেটে পদে পদে সমস্যার সম্মুখিন হয়েছে,হচ্ছে। তাই উনাকে তাড়ানোটা তাদের মূল টার্গেট হবে এটাই স্বাভাবিক। অপর দিকে আওয়ামিলীগ সমর্থিত সাংসদ যেহেতু রাজাকার পুত্র এবং জাফর ইকবাল রাজাকার বিরোধী আন্দোলনের এক বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর তাই উনার বিরুদ্ধে এই সাংসদের গাত্রদাহ হবার কারণ বুঝতে পারার সমস্যা হবার কথা না। লক্ষ্য করলে দেখবেন উনি বলেছেন "সিলেটি ছেলেদের ওরা ভর্তি করানোর জন্য ১৪ আইন কালো কানুন দাঁড় করিয়ে রেখেছে।" ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে যারা টিকবে তারাই তো ভর্তি হবে। সেটা সিলেটি-নন সিলেটি কোন বিষয় হবার কথা না। তাহলে কেন এই উক্তি ? আমার ধারণা উনার সুপারিশে কোন অযোগ্য ছাত্রকে হয়তো ভর্তি করা হয় নি এবং এর জন্য প্রধান বাঁধা ছিলেন জাফর ইকবাল। তাই এই ক্ষোভ। এই সাংসদ কতোটা মৌলবাদী মানসিকতার মানুষ তা তাঁর বক্তব্যে সুস্পষ্ট। তিনি বলেছেন "জাফর ইকবাল সে হল ১ লক্ষ পারসেন্ট গৌড়গোবিন্দ","সিলেটের মানুষ তাকে ফুলচন্দন নিয়ে সুন্দর সুন্দর ফুল নিয়ে প্রত্যেক দিন মূর্তিপূজা করতে যায়"। সিলেটের মানুষ জাফর ইকবালকে মূর্তি বানিয়ে পূজা করে। খেয়াল করে দেখবেন,মৌলবাদী সচেতন সিলেটবাসীর নেতারাও কিন্তু স্বাধীনতার স্মারক ভাস্কর্যকে মূর্তি পূজা বলে আখ্যায়িত করেছিল। তিনিও জাফর ইকবালকে সেই শব্দেই আখ্যায়িত করলেন। মূর্তি পূজায় তাঁরও এলার্জি আছে। এতে তাঁর মূর্তি পূজার প্রতি ক্ষোভ কি প্রকাশ পায় না ? দল যতই অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলুক,তিনি যে কত বড় মৌলবাদী চেতনা বুকের মাঝে ধারণ করেন সেটা বুঝতে আর বাকি থাকার কথা না। সুরের সাথে সুরের মিল কি কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন ?
২১ মে ২০১৫ তারিখে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় "আনসারুলাহ বাংলা টিম ১৩" বিভিন্ন লেখক,ব্লগার,বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে ১০ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে এবং তাঁদের হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁদের বাসায় চিঠি পাঠিয়েছে। জাফর ইকবাল স্যারও এই ১০ জনের মধ্যে একজন। বুঝতে বাকি থাকে না স্যারকে কেন জঙ্গীরা টার্গেট করেছে। ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম ৮৪ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে এবং বলে এরা নাস্তিক। এদের শাস্তি দেয়ার দাবি জানায় সরকারের কাছে। পরবর্তিতে বিভিন্ন জামাতি পেইজ থেকে এদের হত্যা করা জায়েজ বলেও প্রকাশ করা হয়। "সচেতন সিলেটবাসী" নামক ঐ দালালদের সাথে এই হেফাজতীদের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়। হেফাজতের বিভিন্ন কর্মসূচীতে ঐ ব্যানারের পিছনে থাকা বিভিন্ন নেতাকে যেমন দেখা যায় তেমনি ঐ সচেতন সিলেটবাসীর বিভিন্ন কর্মসূচীতেও হেফাজত নেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মুক্তমনা,প্রগতিশীল বিভিন্ন ব্যাক্তি বা সংগঠন বিরোধী আন্দোলনে এইসব নেতাদের অবদান অগ্রগন্য। হেফাজতের নাস্তিকদের তালিকা প্রকাশ,জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে আন্দোলন,শাবিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য স্থাপনে বিরোধীতা করা,এই দাবিতে হরতাল ডেকে সহিংসতা করা,সেই ৮৪ জনের তালিকা থেকে এখন পর্যন্ত ৪ জন ব্লগার হত্যা এবং তাদের নাস্তিক ট্যাগ লাগিয়ে হত্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা,স্যারকে নাস্তিক,ব্লগার,সিলেট বিদ্বেষী উল্লেখ করে সাংসদের এবং তাঁর কর্মীদের কটুক্তি করা, অনন্ত বিজয় হত্যার পরপরই এই সচেতন সিলেটবাসীর হঠাৎ করে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে আবারও মাঠে নামা,সবই এক সূত্রে গাঁথা। এই সব কিছুর পিছনে জামাত,হেফাজত সহ সকল মৌলবাদী সংগঠনের ইন্ধন কাজ করছে। তাই জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে আবার সোচ্চার হওয়া শুধু উনাকে ভয় দেখানো বা সিলেট থেকে তাড়িয়ে দেয়া নয়। বরং এটি স্যারকে হত্যা এবং হত্যা পরবর্তি সময়ে এই হত্যাকে জায়েজ করার একটি নীল নকশা বলেই আমি মনে করি।
- মিষ্টার জিরো
মন্তব্য
ব্রিগেডিয়ার জুবায়ের সিদ্দিকী পাকিস্তান ফেরত সেনা কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। বাংলাদেশ বেতার পাহারায় ছিলেন।
এই সচেতনদের আরেক নেতা লে কর্ণেল আলী যে কোনভাবেই মুক্তিযোদ্ধের চেতনা পরিপন্থী দলে অবস্থান করেন। সেটা জাপা হোক, বিএনপি হোক কিংবা জামায়াত।
এই দুই হাটুভাঙার নামের আগেই শিক্ষাবিদ তকমা লাগানো! চাকরি শেষ করে প্রাইভেট স্কুল কলেজের প্রিন্সিপাল/ হেডমাস্টার হলেই শিক্ষাবিদ হবার শর্টকার্ট সিস্টেম এরা আবিস্কার করেছেন। মারহাবা।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
উনি যে পাকিস্তানী সেটা জানতাম ভাই। কিন্তু কোন প্রোপার সোর্স ছিল না হাতে। তাই বিষয়টা উল্লেখ করি নি। তবে নতুন করে অনেক তথ্য জানলাম ভাই। ধন্যবাদ।
শিক্ষা,ডাক্তারী সহ নানান সেবামূলক কাজে জামাতের লোকেরা এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে তাদের মুখোশ খুলে দেয়া এখন অনেকটাই অসম্ভবের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ভাবছে,জামাতের লোক তো কি হয়েছে ! সেবা তো পাচ্ছি।
ঠিক আছে।
..................................................................
#Banshibir.
ধন্যযোগ
'সচেতন' শব্দটা দেখে মনে পড়লো দুর্দিনের সময় শিবিরের পোলাপান সচেতন ছাত্রসমাজের ব্যানারে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে নিয়ে প্রগতিশীলদের বিরুদ্ধে মাঠে নামতো। সিলেটে যেসব আওয়ামী লীগের লোক এই হুজুগে মেতেছে তারা একসময় কঠিন মূল্য দেবে। জাফর ইকবাল কাদের শত্রু কাদের মিত্র এই জিনিস বোঝার মতো সাবালকত্ব এই সরকারের আছে বলে আমার ধারণা। সেই কারণে সচেতন সিলেটবাসীর আন্দোলন বেইল পাওয়ার কথা না। আর শিরু মিয়া রাজাকারের কাহিনীটা জেনে বোঝা যাচ্ছে ঘটনা কোন দিক থেকে কোন দিকে গড়িয়েছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
জাফর ইকবাল কি জিনিস সেটা আওয়ামিলীগ হয়তো বুঝে। কিন্তু এই সচেতন সিলেটবাসীর আন্দোলনের সফলতা সত্যিই এই বিষয়ে অনেকটাই ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ এখন পর্যন্ত ওদের দুইটি দাবিই সরকার মেনে নিয়েছে। ভাস্কর্য স্থাপন করতে দেয় নি,সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষাও বাতিল করেছে। যদিও ভর্তি পরীক্ষা বাতিল শাবি'র নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে এতে সরকার হাত নেই সেটা বলা যাবে না।
বর্তমানে সরকার যেভাবে হেফাজতকে তোষামোদ করছে তাতে এই মৌলবাদী জামাত চক্র খুব ভালই সুবিধা পাবে বলেই মনে হচ্ছে। আর এখনতো তাদের সাথে যোগ হয়েছে সরকার দলীয় সাংসদ। একদম সোনায় সোহাগা।
হুমমমম.........
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যযোগ
সব বিএনপি জামাত করলে আওয়ামী লীগের নান্নামুন্না বড় নেতারা সবার চেয়ে সামনে, সবার চেয়ে জোরে চিল্লাইতেছে কেন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নান্নামুন্না বড় নেতারা কিন্তু ২০১৩ সালে ছিল না। এসেছে এখন। তাও সবাই না। মুষ্টিমেয় কয়েকজন। যার ছত্রছায়ায় তারা লাফাচ্ছে সে কিন্তু রাজাকার পুত্র। কথাটা মনে রাখতে হবে। আর বর্তমানে জামাত আর হেফাজতের সাথে আওয়ামিলীগের যেভাবে দহরম মহরম চলছে তাতে করে আশংকায় আছি,জাফর ইকবাল স্যারকে সরানোর পিছনে শেষ পর্যন্ত না লীগই মূল অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। হেফাজতের সাথে অলিখিত যে চুক্তি আছে হেফাজতের সেই হিসাবে হেফাজত চায় না গণজাগরণ মঞ্চ থাকুক। এতে তাদের চুলকানি কোথায় জানেন তো ? জাফর ইকবালও সেই কারণেই তাদের শত্রু। বর্তমানে জামাত হেফাজতের শত্রু মানে লীগের আন অফিসিয়াল শত্রু।
লেখা ভাল হয়েছে ভাইয়া। ওয়েল ডান।
একটু পরামর্শ -
১) লেখায় সম্পুরক কোন লিংক নেই। লিংক থাকলে এই সংক্রান্ত খবরগুলোও পড়া যেত।
২)মাঝে মাঝে প্যারা বেশি বড় হয়ে গেছে। প্যারা ছোট হলে পড়তে আরাম হয়।
৩) স্যারকে তাড়ানোর পরিকল্পনার পেছনে সাস্টের ভূমিকা আসা উচিত ছিল। এতবড় প্ল্যান শুধু 'সচেতন সিলেটবাসী' দের দিয় সম্ভব না।
যাই হোক। নিয়মিত লিখ। ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালানো সফল হোক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
মূল্যবান পরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। ভবিষ্যতে বিষয়গুলো মাথায় রাখবো।
শাবি'র দু'এক জন জামাত পন্থী শিক্ষক ছাড়া তেমন কেউ প্রকাশ্যে ছিলেন না। তবে যারা ছিলেন তাদের সরাসরি জামাত পন্থী হবার কোন শক্ত প্রমাণ নেই। তাই নাম ব্যবহার করি নি। ঐ সময়ে শাবি'র অনেকেই ঐ শিক্ষকদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
গোলাম আলী হায়দার।শাবি'র গণিত বিভাগের অধ্যাপক ও একাডেমিক কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্য। সচেতন সিলেটবাসী নামক সংগঠনটি ১ডিসেম্বর ১৩ তারিখে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অবরোধ,হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে যে সমাবেশ করেছিল সেখানে তিনি বক্তব্য রেখেছেন।
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যযোগ
সচেতন,সুশীল, আদর্শ এই শব্দগুলো তার স্বকীয়তা হারিয়েছে। দুর্ভাগ্য।
আসলে এই শব্দগুলো ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের নাকের ডগায় মূলা ঝুলানোটা অধিক সহজতর হয়। তাই এই মুখোশের ব্যবহার।
লেখাটা গুরুত্বপূর্ণ বেশ। লেখককে 'ধন্যযোগ'।
রাসিক রেজা নাহিয়েন
আমিও একজন সিলেটী। কিন্তু এদের মানসিকতা দেখলে নিজেকেও ঘৃণা্ হয় মাঝে মাঝে। যেখানে সিলেটের বেশিরভাগ মানুষ বাংলাদেশি পরিচয় না দিয়ে নিজেদেরকে সিলেটী পরিচয় দেয় এবং এটা নিয়ে গর্ব করে, "যারা দেশে থাকে তারা ঘাস খায়" এই মনোভাব যারা পোষণ তাদের কাছে কি আশা করা যায়? মুক্তমন আর জাফর স্যারকে পেতে অনেক ভাগ্য নিয়ে জন্মাতে হয় এটা এরা বুঝবে না কোনদিন...
দোষটা যদি আপনি ঢালাও ভাবে সিলেটবাসীর উপরে দিয়ে দেন তাহলে কিন্তু ভুল হবে। কারণ সিলেটবাসী যদি স্যারের বিরোধীতা করতো তাহলে তারা ঐসব মালখোরদের সাথে থাকতো এবং তাদের আন্দোলন আরো জোরালো হত। সিলেটবাসীর সায় পায় নি বলেই কিন্তু তাদের আন্দোলনের নামে ধাপ্পাবাজি বেশিদিন টিকতে পারে নি।
আর যারা নিজেকে বাংলাদেশী না বলে সিলেটি বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে,দয়া করে তাদের অতিত ইতিহাস একটু জেনে নিবেন। কারণ মুরগিও কিন্তু পেখম লাগিয়ে ময়ূর সাজতে চায়।
পরিচিতি পাবার জন্য বিখ্যাত কিম্বা অখ্যাত হও এইটা পরিবর্তিত হয়ে এখন হয়েছে পরিচিতির জন্য বিখ্যাতদের গালাগালি করো । ওই খাবিস কয়েস না খয়েস কে কজন চিনতো তার দম্ভক্তির আগ পযন্ত ।
masum007
নতুন মন্তব্য করুন