ছাত্র হিসেবে খুব অসাধারণ ছিলেম না কখনই। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি বলতে গেলে প্রায় মনের আনন্দেই। মাধ্যমিকে বেশ কয়েকজন অসাধারণ শিক্ষকের সান্নিধ্য পাবার সুযোগ হয়েছিল। পড়াশোনাটা যে বুঝে বুঝে করতে হয় এবং তার মাঝেই যে পড়াশোনার প্রকৃত আনন্দটা নিহিত সেটা উপলব্ধি করেছিলাম সেই শিক্ষকদের সাহচর্যে। উচ্চ মাধ্যমিকে সেই শিক্ষকদের সাহচর্য না পেলেও নিজের থেকে পড়াশোনা করতে খুব অসুবিধা হয় নি। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমার পরীক্ষার ফলাফল খুব ভাল হলেও অ্যাকিলিসের গোড়ালির মত মস্ত একটা দুর্বলতা আমার রয়ে গিয়েছিল। ইংরেজী ভাষা।
একটা ভাষা পরিপূর্ণভাবে শিখতে হলে তার চারটি দিকই যে সমান ভাবে চর্চা করতে হয় সেই বিষয়টা আমি জেনেছি অনেক পরে। খুব সাধারণ ইংরেজী লেখা পড়ে তার অর্থ বুঝতে অসুবিধা না হলেও, সমস্যায় পরতাম লিখতে গেলে। ইংরেজী লিখতে গেলে অনেক বানান (বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা আমার নাম দিয়েছিল বানান প্রতিবন্ধী) আর ব্যাকরণগত ভুল হত। আমার সেইসব হাস্যকর ভুল দেখে শিক্ষকদের বকুনি আর সহপাঠীদের উপহাস ইংরেজী ভাষার প্রতি আমার মধ্যে একটা ভয় আর অনাগ্রহ তৈরি করে দিয়েছিল। তারপর যা হয়, ভুল হবে এই ভয়ে কম লিখি, কম লিখি তাই আর বেশী ভুল করি এই দুষ্টচক্রের পাকে আটকে গেলাম। ছাত্রজীবনে আমি যে দুঃস্বপ্নটা সবচেয়ে বেশী দেখতাম তা হল – আমি একটা পরীক্ষার হলে ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা দেবার জন্য বসে আছি কিন্তু কিছুই লিখতে পারছি না। সত্যি বলতে কি এই দুঃস্বপ্নটা মাঝেমধ্যে এখনও আমি দেখি। ইংরেজী ভাষা নিয়ে আমার এই বাড়াবাড়ি রকমের ভীতির পরও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজীর পুলসিরাত বেশ ভালভাবেই পার করেছিলাম গাধার মত পরিশ্রম আর আচরণ করে।
কমিউনিকেটিভ ইংলিশ নামক ব্যাকরণ বিহীন এক অদ্ভুত ইংরেজী ভাষা শিক্ষা পদ্ধতির গিনিপিগ ছিলাম আমি ও সেই সময়ের আরো অনেকে। পরে বুঝেছি ঐ শিক্ষা পদ্ধতিতে ব্যাকরণ ভাল ভাবেই ছিল কিন্তু স্যারেরা আলোচনা কম করতেন তাই আমরাও মনে করতাম প্রথাগত ব্যাকরণ না পড়েই ইংরেজী ভাষা ভালভাবে শেখা সম্ভব। কমিউনিকেটিভ পদ্ধতির আরও বড় একটা দুর্বলতা ছিল (আমার জন্য ছিল সুবিধা) খুব বেশী লেখার দরকার হত না। শূন্যস্থান পূরণ, রিঅ্যারেঞ্জ, এমসিকিউ এই ধরণের প্রশ্নের উত্তর খুব তাড়াতাড়ি লিখে অনেক নম্বর পাবার বেশ অবারিত সুযোগ ছিল। সেই সুযোগের সদব্যবহার করার জন্য পরীক্ষার কিছুদিন আগে থেকে শুরু হত আমার গাধার মত পরিশ্রম। কিছুই না বুঝে টেস্ট পেপার থেকে যতবেশী সম্ভব প্রশ্নের সমাধান দেখতে থাকতাম। স্যারদের নতুন প্রশ্ন তৈরি করে পরীক্ষা নেবার ভীষণ অনীহার কারণে মোটামুটি ৫০/৬০ টা অনন্য প্রশ্নের সমাধান মুখস্থ করে ফেলতে পারলেই চলত। কমিউনিকেটিভ পদ্ধতিতে তারপরও যতটুকু ইংরেজী লিখে শেখার সুযোগ ছিল তারও সর্বনাশ আমি করলাম আজব কিছু চোথা মুখস্থ করে। ফুটপাতে বিক্রি করা সর্বরোগের ওষুধের মত আমাদের কিছু শিক্ষক সেই চোথাগুলো বিক্রি করতেন। চোথাগুলো মুখস্থ করতে পারলে একটা কমন টেক্সট ব্যবহার করে ২০/৩০ বিষয়ের উপর রচনা/দরখাস্ত/প্যারাগ্রাফ লিখে ফেলা যেত। সেই সময় এই পদ্ধতিটাকে খুব স্মার্ট মনে হলেও এখন বুঝি ঐ সময় আমার আচরণ ছিল পুরোপুরি নাকের সামনে মুলো ঝুলানো গাধার মত। যা হোক উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পর সমস্ত ব্যাপারটাই একটা নতুন মাত্রা পেল।
ইংরেজীতে আমার এই ভয়াবহ দুর্বলতা স্বত্বেও দেশে প্রথম সারির একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে পড়ার সুযোগ পেতে আমার কোন সমস্যা হয়নি। কারণ? খুব সহজ। ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজীতে বা ইংরেজী ভাষার উপর আমাকে একটি প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর মনে হল ইংরেজী নামক যন্ত্রণাকে এবার বিদায় দেবার সময় হয়েছে। যেমন করে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তরণের পর বিদায় দিয়েছিলাম ধর্ম /সমাজ বিজ্ঞান / শারীরিক শিক্ষার মত বিষয়গুলোকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হবার পর আমার মাথায় বাজ পরল। স্যাররা ক্লাসে বাংলায় খুব সুন্দর করে লেকচার দিলেও বইগুলো সব ইংরেজী ভাষায় রচিত এবং লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে ইংরেজীতে!!! বিষয়টা আমার মধ্যে এতটাই আতঙ্ক তৈরি করল যে আমি তার থেকে মুক্তি পাবার জন্য হন্য হয়ে উঠলাম। বেশ কিছুদিন ধরে পর্যবেক্ষণের পর যে শ্রদ্ধেয় অধ্যাপককে ছাত্রদের প্রতি সবচেয়ে সহানুভূতিশীল মনে হয়েছিল, একদিন জগতের সমস্ত সঙ্কোচের ভার মাথায় নিয়ে তার কাছে জানতে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় পরীক্ষা দেয়া যায় কিনা। আমার প্রশ্ন শুনে তিনি এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন যেন আমি সরাসরি আমাজনের জঙ্গল হতে দিগম্বর অবস্থায় তার কক্ষে চলে এসেছি। খুব রাশভারী কণ্ঠে বলেছিলেন – দেয়া যায়, তবে বাংলায় পরীক্ষা দিলে আমি যতই ভালো লিখি না কেন দ্বিতীয় শ্রেণীর বেশী ফলাফল আশা না করাই ভাল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিন্তু আমি ইংরেজীতে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণীতেই উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে আমার এই সাফল্যের কারণ ছিল মূলত দুইটি। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বিষয়ের অধিকাংশ কোর্সই ছিল গাণিতিক বিশ্লেষণ ভিত্তিক, যাতে ইংরেজী লেখার ঝকমারি ছিলনা। দ্বিতীয়ত, স্যারেরা খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষায় দক্ষতার চেয়ে আলোচ্য বিষয়ে একজন ছাত্রের কতটুকু দখল আছে তাতেই বেশী গুরুত্ব দিতেন। তারপরও বেশ কিছু কোর্সে পাশ করতে আমার কালঘাম ছুটে যেত, বিশেষ করে সেইসব অ-গাণিতিক কোর্সে যে সব কোর্সের শিক্ষকদের কথা আমি কিছুই বুঝতাম না ফলশ্রুতিতে পরীক্ষার আগে আমার সামনে হাজির হত ইংরেজী ভাষায় লেখা চোথার অফুরন্ত ভাণ্ডার। অবশ্য শিক্ষকের কল্যাণে অব-আরোহী গণিত ভিত্তিক একটা কোর্সে আরও বেশী যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়েছিলাম, এবং সেই প্রথম বারের মত দেখেছিলাম আমার আশেপাশের সবাইকে গণিত মুখস্থ করতে!!! সাফল্যের সাথে (!) বিশ্ববিদ্যালয় পার করবার পর যোগ দিলাম একটা চাকরীতে। বরাবরের মত এইবারও আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন। চাকরীর পরীক্ষার প্রশ্ন ইংরেজীতে হলেও বেশীরভাগ প্রশ্নই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অধীত বিষয়ের উপর। চাকরী করতে এসে ইংরেজী ভাষা বিষয়ক আর কি কি জটিলতার সামনে পরলাম সে গল্প না হয় আরেকদিন হবে।
এখনও যখন ইংরেজীতে একটি বাক্য লেখার পর বারবার পড়ি এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগি তখন পিছন ফিরে তাকালে পরিপার্শ্বের চেয়ে নিজের দায়টাই বেশী বলে মনে হয়। অতীতে যতটুকু সময় আর প্রচেষ্টা আমি দিয়েছি একটি গাণিতিক প্রমাণ অথবা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি শেখার পেছনে তার কাছাকাছি প্রচেষ্টাও কি আমার ছিল ইংরেজী ভাষা শেখার জন্য? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে আজও মনটা একটা অপরাধবোধে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তাই এই বুড়ো বয়সে এসে আবার উদ্যোগ নিয়েছি ইংরেজী ভাষাটা ভাল করে শেখার। আগাপাশতলা আলসেমীতে ভরা এই আমার অগ্রগতি অবশ্য বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠার গল্পটার মতই।
লেখার এই পর্যায়ে এসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি সারাটাদিন মুখ গোমড়া করে রাখা আকাশটা টুপটাপ শব্দে মুক্তোর দানার মত একের পর অশ্রু বিন্দু ঝরিয়ে যাচ্ছে। এমন দিনে আমি কিনা এই রকম একটা আবজাব লেখা লিখলাম? আসলে কোথায় যেন পড়েছিলাম, যে কোন ভয়কে জয় করতে হলে প্রথমে তাকে স্বীকার করতে হয়। এই লেখাটা হয়ত আমার সেই স্বীকারোক্তি অথবা আমি আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ গল্প বলতে চাইছি। কারণ দিনশেষে সবাই চায় তাদের গল্পগুলি কেউ না কেউ শুনুক।
আমি তোমাদের কেউ নই
মন্তব্য
"কারণ দিনশেষে সবাই চায় তাদের গল্পগুলি কেউ না কেউ শুনুক।"
গল্প শোনার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমার ইংরেজী ভীতি নিয়ে এইরকম একটা ঘ্যানঘ্যানে মার্কা লেখা লিখতে গিয়ে টের পেলাম বাংলা ভাষার উপরও আমার দখলটা খুব পোক্ত নয়। বাংলা ভাষার উপর দখলটা আরেকটু সড়গড় হয়ে এলে গল্পগুলো লিখে ফেলবো। একের পর এক।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা। ভাল থাকবেন।
আমি তোমাদের কেউ নই
আমার আংরেজি লেখার মান এতো খারাপ, দেশের বাইরে যে কীভাবে পড়াশো্না করছি বা আদৌ কিছু করছি কী না
-- সেটা নিয়ে জনৈক সিনিয়র সচলবন্ধু কঠিন দুশ্চিন্তায় ভোগেন!
ভদ্রলোককে অবশ্য খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না, কথা অনেকাংশে সত্য।
আপনার গল্পগুলো বলা শুরু করুন। আমাদের কেউ নাই হন, সচলের অংশ হয়ে উঠুন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ড্রাফটিমিটিতে আপনার দেয়া ডোরা জুবায়েরের লেখার লিংক পেয়ে উনার দুটি লেখা পড়ে ফেলি। পড়ার পর মনে হল, ইংরেজীতে লেখা নিঃশ্বাস নেবার মতই সহজ কাজ। তারপর ভাবলাম, নিজের ইংরেজী ভীতি নিয়ে সারাজীবনের দুর্ভোগটুকু লিখে ফেললে মন্দ হয় না।
প্রথম যখন সাহিত্যদেবীর আরাধনায় মন দেবার অপচেষ্টা করেছিলাম, সেই সময় বেশ কিছু কোবতে লিখে ফেলেছিলাম। এখন বুঝতে পারি সাহিত্যের ঐ শাখাটায় কেবল দুর্দান্ত প্রতিভাবানদের কেই মানায়, যারা কিছুই না বলে অবলীলায় অনেক কিছু বলে ফেলতে পারে। সচলায়তনে নিবন্ধনের সময় এই নিক দিয়ে নিবন্ধন করতে চাইনি। কিন্তু নিবন্ধনের সময় দেখলাম আমার সব পছন্দের নিক গুলো আগে থেকেই বেদখল, ঠিক যেমন কোন অসাধারণ কবিতা পড়ার পর মনে হয় – এই কথাগুলোতো আমার বলার কথা ছিল। অগত্যা নিজের লেখা একটা প্রিয় কোবতের শরণাপন্ন হওয়া।
নিজেকে আমি অনেক দিন থেকেই সচলায়তনের অংশ বলে মনে করি। সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে, যখন থেকে ইন্টারনেট আর বাংলা ব্লগের সাথে প্রথম পরিচয়। এখন শুধু চেষ্টা চলছে নীরব পাঠক থেকে সরব পাঠকে উত্তরণের। সত্যি বলতে কি, আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন আর সচলে নিজের প্রথম লেখা প্রকাশিত হবার আনন্দ এই দুই মিলিয়ে বেশ আছি।
অফটপিক(না অনটপিক??) : মন্তব্যের ঘরে আপনার নাম দেখে বেশ একটা আশঙ্কা আর আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছিলাম, ৯৭৪ শব্দে লেখা আমার প্রথম লেখাটায় বানান ভুল করেছি কয়টা?
আমি তোমাদের কেউ নই
কি কি > কী কী জটিলতার সামনে পরলাম > পড়লাম।
বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠার গল্পটার মতই > মতোই।
এইরকম। চোখে পড়ার মতো কিছু না। সুতরাং অতো আশঙ্কার কিছু নেই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক । কি আর কী নিয়ে গুলিয়ে ফেলি প্রায়ই। ভুলের দায়টুকু আমার। অভ্র স্পেলচেকার একটা কাজের জিনিস ।
আমি তোমাদের কেউ নই
কোন এক বিখ্যাত লোক বলেছিলেন, সেটাই বারবার কর যেটাতে তুমি ভয় পাও। খুব ভাল লেখা। আর হোক।
--------------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/
ঠিক বলেছেন, আসলে ডরাইলেই ডর... । পাঠের জন্য , আর উৎসাহটুকু দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা।
আমি তোমাদের কেউ নই
সচলে প্রথম লেখা কি? স্বাগতম!
বাংলাতেই লিখুন না হাত খুলে।
[মানে বিলিতি ভাষার খেতা পুড়ি।]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ্যা, সচলায়তনে আমার প্রথম লেখা। এই রকম একটা কাঁচা লেখার লেখক কে উৎসাহ দেবার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা। ঐ বিলিতি ভাষার খেতাটা বড় যন্ত্রণা দেয় মাঝে মধ্যেই । আমার বড় শখ একদিন খেতাটা পুড়ে তার ছাই দিয়ে দাঁত মেজে একটা দিব।
আমি তোমাদের কেউ নই
আরো লিখুন। কিন্তু এমন একটা নিক বেছে নিন, যেটাতে আপনাকে সম্বোধন করা একটু সহজ হয়।
কৃতজ্ঞতা উৎসাহটুকুর জন্য। নিক বাছাই করার সময় সম্বোধনের ব্যাপারটা খেয়াল ছিলনা। সচলায়তনে একবার নিক নিবন্ধন করে ফেললে বদলানোর সুযোগ আছে?
আমি তোমাদের কেউ নই
"কমিউনিকেটিভ
পদ্ধতির আরও বড় একটা দুর্বলতা ছিল (আমার জন্য
ছিল সুবিধা) খুব বেশী লেখার দরকার হত না।"
যদিও ইংরেজিতেই মাষ্টার্স করেছি (কিভাবে করেছি সেটি না হয় বললাম না) তবুও আমাদের এই অল্প! লেখার কারনে বেশ অনেকটাই ভুগেছিলাম.
মুরসালিন সানি
ধন্যবাদ এই আবজাব পড়ার জন্য। মানব চরিত্রের একটা অদ্ভুত দিক হল – ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়লে একটা মানসিক তৃপ্তি চলে আসে, যদিও নৈতিকতার দিক থেকে ব্যাপারটা পুরোপুরি অনুচিত। আশা করি আপনার পথ ধরে আমিও একদিন লিখতে পারব
আমি তোমাদের কেউ নই
আমিও ভাষা প্রতিবন্ধী। ইংলিশ তো অনেক দূরের কথা। অনেক সময় বাংলা একটা বাক্য বলা শুরু করে, শেষ করবো কীভাবে খুঁজে না পেয়ে, গোঁজামিল জুড়ে দিই। লিখে ফেলা তুলনামূলক সহজ, চিন্তার একটা সময় পাওয়া যায় কী বলতে যাচ্ছি।
আমার সাথে কারো তর্ক বাঁধলে চেষ্টা তর্কটা ফেসবুক বা লেখা ভার্সনে ট্রান্সফার করে দিতে। দ্রুত বলতে গেলে আকাঙ্ক্ষা-আসত্তি-যোগ্যতা বিহীন সব বাক্য রচনা করি।
নাবিলা
লিখে ফেলা আসলেই সহজ তুলনামূলকভাবে, চিন্তার বিচ্ছিন্ন সুতোগুলোকে জোড়া দেয়া যায় একের পর এক। কথা বলার সৌন্দর্য মনে হয় অভিব্যক্তিতে, ব্যাকরণবিহীন অগোছালো সব বাক্যও অনেক সময় অভিব্যক্তির গুনে হয়ে যায় স্মৃতির সিন্দুকে জমা থাকা মনি -মাণিক্য। তবে ভাল লেখকরা তাদের লেখায় অভিব্যক্তির এই গুনটুকু কিভাবে যেন মিশিয়ে দেন, সচলায়তনেই বেশ কয়েকজনের লেখা পরলে আমার এই অনুভূতিটা হয়। ধন্যবাদ পাঠের জন্য ।
আমি তোমাদের কেউ নই
'আতোকেন' নিক হিসাবে খারাপ না বেশ একটা জাপানি ভাব আছে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
নিক বিষয়ক জটিলতা সমাধানের একটা সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে “ আতোকেন ” নামটা ভেবে রেখেছিলাম, কেবল সম্পূর্ণ অর্থহীন একটা শব্দ বলে মনটা খচখচ করছিলো। আপনার পরামর্শে ভরসা পেলাম। পাঠ এবং পরামর্শ দুটোর জন্য আরিগাতো (মানে ধন্যবাদ আরকি )।
আমি তোমাদের কেউ নই
আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে বাংলাদেশে ভাষা শিক্ষা (তা বাংলা হোক আর ইংলিশ হোক) দেবার পদ্ধতিটি ঠিক নয়। ভাষা শুনে বোঝা > বলতে পারা > পড়তে পারা > লিখতে পারা এই ক্রমানুসারে হতে হয়। কিন্তু আমাদের ভাষা শিক্ষা এই ক্রম অনুসরণ করে না। ফলে আমরা দ্বিতীয় ভাষা (ইংলিশ) দূরে থাক, মাতৃভাষাটা পর্যন্ত ঠিকমতো পারি না। অথচ এই আমরাই স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তৃতীয় একটা ভাষার দেশে গিয়ে এক বছরের মধ্যে সেই ভাষা শিখে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা পর্যন্ত করে ফেলি। সেখানে ভাষা শিক্ষার ব্যাপারটা ঠিক নিয়মে হয় বলেই এটা সম্ভব হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার অভিমতের সাথে সহমত। মাতৃভাষাটা শিখার সময় যদিও বা ধারাক্রমটির (ভাষা শুনে বোঝা > বলতে পারা > পড়তে পারা > লিখতে পারা) কিছুটা বজায় থাকে দ্বিতীয় ভাষা শেখার সময় প্রথম দুটি বাদ দিয়ে তৃতীয় আর চতুর্থ ধাপ একসাথে আরম্ভ করে দেয়া হয়। মাতৃভাষায় আমাদের দুর্বলতার আরেকটি অন্যতম কারণ মনে হয় অবহেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যে সব সহপাঠী ইংরেজী ভাষায় আমার দক্ষতা নিয়ে উপহাস করত তাদের অনেক কেই দেখেছি পুরোপুরি বাংলায় কথা বলতে গিয়ে শব্দ হাতড়ে বেড়াতে। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে বিব্রতবোধ করাতো দূরে থাক, তাদের দেখেছি ঐটাকে স্মার্টনেস বলে চালিয়ে দিতে। পাঠ আর চমৎকার মন্তব্যের জন্য
আমি তোমাদের কেউ নই
আপনার বাংলা কিন্তু ফাটাফাটি ।
। অনামী অতিথি, আপনি আসলে একটু বেশীই প্রশংসা করে ফেলেছেন আমার। বাংলায় আমার দখলটা চলনসই। আপনি এই লেখাটা একবার পড়ে দেখুন। লেখাটা যতবার পড়ি ততবারই থমকে যাই আর মনে হয়, এমন করে যদি লিখতে পারতাম।
আমি তোমাদের কেউ নই
ইংরেজি ভাষাটা আমার ভালো লাগতো, এখনো লাগে। খুব ভালো না পারলেও লাগে।
যারা ইংরেজি শিখতে চান তাদের আই সবসময় বিবিসি শুনতে বলি।
আমার খুব কাজে দিয়েছিল।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
এহ, বোরিং। আমি তো ইংরেজি শিখলাম কার্টুন দেখে দেখে।
পাঠ এবং পরামর্শের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন
ডুপ্লি ঘ্যচাং
আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন
নতুন মন্তব্য করুন