‘চিন্তা’ করে রেডিও মেরামত!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৫/০৭/২০১৫ - ২:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার বয়স যখন বারো, তখন আমার বাড়িতে একটা ছোটখাটো ল্যাব বানিয়েছিলাম। জিনিসপত্র রাখার জন্য ছিলো একটা পুরনো কাঠের প্যাকিং বাক্স। একটা হিটার ছিলো (সেটাতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বানানোর কাজেই লাগতো সবসময়)। আরও ছিলো একটা স্টোরেজ ব্যাটারি, আর একটা ল্যাম্প ব্যাঙ্ক (সিরিজ/প্যারালেল সমন্বয়ে সাজানো কতগুলো বাল্ব)।

ল্যাম্প ব্যাঙ্কটা বানিয়েছিলাম আমি নিজেই, দোকান থেকে কেনা কয়েকটা সকেট এক টুকরো কাঠের উপরে বসিয়ে তার দিয়ে জুড়ে। সুইচগুলোর মাঝে সিরিজ-প্যারালেলের কেরামতিতে নানা রকম ভোল্টেজ পাওয়া যায় জানতাম, কিন্তু বাল্বের তাপমাত্রারও যে একটা ভূমিকা আছে সেটা জানতাম না বলে আমার হিসেবগুলো সবসময় মিলতো না। অবশ্য তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। সবগুলো বাল্ব সিরিজে জুড়ে দিয়ে যখন জ্বালাতাম, কোনোটাই পুরোপুরি জ্বলতো না, কিন্তু একটা হালকা আভা ছড়াতো - বেশ লাগতো দেখতে।

শর্ট সার্কিটে যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেইজন্য একটা ফিউজ লাগিয়ে নিয়েছিলাম। আমার দরকার বাসার ফিউজের চেয়েও দুর্বল ফিউজ, তাই একটা পুরনো পোড়া ফিউজের উপর টিনের ফয়েল পেঁচিয়ে নিজেই বানিয়ে নিতাম। ফিউজের সাথে লাগানো থাকতো একটা পাঁচ ওয়াটের বাল্ব। যখনই ফিউজ পুড়তো, আমার স্টোরেজ ব্যাটারির বিদ্যুতে ওটা জ্বলে উঠতো (ব্যাটারিটা চার্জারের সাথে লাগানোই থাকতো সবসময়)। বাল্বটা বাদামি কাগজে মুড়ে দিয়েছিলাম, জ্বললে সেটা লাল দেখাতো। যখনই কোনোকিছু অফ হয়ে যেতো, সোজা তাকাতাম সুইচবোর্ডের দিকে - আর দেখতাম আক্ষরিক অর্থেই লালবাতি জ্বলে গেছে ওখানে।

রেডিও জিনিসটা দারুণ লাগতো আমার। আমার প্রথম রেডিও ছিলো একটা ক্রিস্টাল সেট, রাতের বেলা একজোড়া ইয়ারফোন কানে লাগিয়ে ওটা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতাম। মা-বাবা যখন দেরিতে বাড়ি ফিরতেন, আমার ঘরে এসে ঘুমন্ত আমার কান থেকে ইয়ারফোন খুলে দিয়ে যেতেন (আর তার সাথে একটু দুশ্চিন্তাও করতেন হয়তো, ঘুমের মধ্যে কান দিয়ে আমার মাথায় কী না কী ঢুকে পড়ছে এই নিয়ে)।

সেসময় একটা চোরের অ্যালার্ম বানিয়েছিলাম। জটিল কিছু না, শুধু একটা ব্যাটারি আর তার সাথে তার দিয়ে জোড়া একটা ঘণ্টা। ঘরের দরজা খুললেই সেটা একটা তারকে ঠেলে আরেকটার সাথে লাগিয়ে দিতো, আর সাথে সাথে বেজে উঠতো ঘণ্টাটা। এক রাতে মা-বাবা এসে খুব সাবধানে, পা টিপে টিপে আমার ঘরে ঢুকলেন যাতে আমার ঘুম না ভাঙে, কিন্তু ঘরে ঢুকতেই শুরু হয়ে গেলো তারস্বরে ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং, ওদিকে আমি ততক্ষণে উঠে সাফল্যের আনন্দে ঘরময় চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছি!

আমার একটা ফোর্ড গাড়ির স্পার্ক-কয়েল ছিলো। ওটার সাথে একটা আর্গন গ্যাস ভরা রেডিওর টিউব লাগিয়ে রাখতাম - স্পার্ক করলে হালকা বেগুনি আলো ছড়াতো। একদিন ঐ কয়েলের স্পার্ক দিয়ে একটা কাগজ ফুটো করছিলাম, এমন সময় কাগজে ধরলো আগুন। আগুনে কাগজ-ধরা আঙুল প্রায় পুড়ে যাচ্ছিলো, তাই তাড়াতাড়ি ওটা ফেলে দিলাম ময়লা ফেলার বাস্কেটে। বাস্কেটটা ধাতব, আর ভিতরে ছিলো একগাদা পুরনো খবরের কাগজ। কাজেই যা হবার তাই হলো, আগুন ধরে গেলো কাগজে। আমার ছোট্ট ঘরে ঐ আগুনটাকেই মনে হচ্ছিলো বিশাল। প্রথমেই আমি যা করলাম তা হলো, ছুটে গিয়ে দরজা বন্ধ করা - যাতে নিচতলায় মা কিছু টের না পায়। তারপর হাতের কাছে পাওয়া একটা ম্যাগাজিন দিয়ে ঢেকে দিলাম বাস্কেটটা।

আগুন নিভে গেলে ম্যাগাজিনটা সরিয়ে নিলাম। কিন্তু শুরু হলো আরেক ঝামেলা - ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে ঘর। এদিকে বাস্কেটও গরম, তাই একটা প্লায়ার্স দিয়ে ধরে বাস্কেটটা ধরলাম জানালার বাইরে। কী বিপদ - সেখানে বাতাস পেয়ে নিভু নিভু আগুন জ্বলে উঠলো আবার। ম্যাগাজিনটাও নেই নাগালের মধ্যে। কোনোমতে জানালার পর্দা বাঁচিয়ে বাস্কেটটা ভিতরে এনে ম্যাগাজিন চাপা দিলাম আবার।

যা হোক, আবার আগুন নিভলে ম্যাগাজিনটা হাতে রেখেই জানালা দিয়ে পোড়া কয়লাগুলো ফেলে দিলাম সোজা নিচে রাস্তায়। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে, দরজা বন্ধ করে নিচে এসে মাকে “বাইরে খেলতে যাচ্ছি” বলেই বেরিয়ে পড়লাম। বাতাসে ঘর থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে যাবে যথাসময়ে।

মাঝে মাঝে ইলেক্ট্রিক মোটর নিয়েও নাড়াচাড়া করতাম। আর একবার একটা ফটোসেলের অ্যামপ্লিফায়ার বানিয়েছিলাম, যেটার সামনে হাত ধরলে একটা ঘণ্টা বাজতো। এসব নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করতে পারতাম না, কারণ মা চাইতেন আমি বাইরে খেলাধুলা করি। তবু আমার বেশিরভাগ সময় কাটতো বাড়িতেই, আমার ল্যাবে এটাসেটা গুঁতোগুঁতি করে।

আমি ভাঙারির দোকান থেকে রেডিও কিনতাম। টাকাপয়সা বিশেষ থাকতো না আমার কাছে, তবে এইসব পুরনো ভাঙাচোরা রেডিওর দাম আর কতই বা হয়। কিনে এনে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করতাম। বেশিরভাগ রেডিওতেই সমস্যাটা হত খুব সহজ-সরল, হয়তো একটা তার ছুটে গেছে, অথবা একটা কয়েলের প্যাঁচ খুলে গেছে অল্প একটু - সেসব সহজেই ঠিক করে ফেলতাম আমি। একদিন এমন একটা রেডিওতে টেক্সাসের ওয়েকো নামের একটা স্টেশন ধরে ফেললাম - কী যে আনন্দ হলো তখন আমার!

সেই রেডিওতেই একদিন স্কিনেক্টাডির একটা স্টেশন শুনতে পেলাম, নাম ডব্লিউজিএন। তখনকার বাচ্চারা - মানে আমি, আমার বোন, দুই কাজিন, আশপাশের বাড়ির বাচ্চারা - সবাই একটা অনুষ্ঠান খুব শুনতো, নাম ছিলো “ইনো ক্রাইম ক্লাব”। তো আমি একদিন আবিষ্কার করলাম, ডব্লিউজিএন থেকে সেটা প্রচারিত হয় নিউ ইয়র্কেরও এক ঘণ্টা আগে। আর আমাকে পায় কে! সবাই যখন নিচতলায় বসে একসাথে অনুষ্ঠানটা শুনতো, ততক্ষণে আমি কখন কী হবে সব জানি! হুটহাট করে বলে বসতাম, “অনেকক্ষণ ‘অমুকের’ কোনো সাড়াশব্দ নেই, দেখো এক্ষুণি এসে হাজির হবে।” আর হতও তাই। প্রথম প্রথম সবাই খুব অবাক হত, তবে সন্দেহ করতেও সময় লাগেনি। কাজেই একসময় স্বীকার করতেই হলো। ফলাফল যা হওয়ার তাই - এখন আর কেউ নিউ ইয়র্কের অনুষ্ঠান শুনবে না, সবাই এক ঘণ্টা আগেই আমার ল্যাবে বসে ঐ ভাঙাচোরা রেডিওতে স্কিনেক্টাডির অনুষ্ঠান শুনতে চায়!

আমরা একটা বড় বাড়িতে থাকতাম। আমার দাদা তাঁর সন্তানদের জন্য রেখে গেছিলেন সেটা, যদিও টাকাপয়সা রেখে যাননি খুব বেশি। বাড়িটা ছিলো কাঠের। সব ঘরেই তার টেনে প্লাগের ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম আমি, তাই যেকোন ঘর থেকেই রেডিও শুনতে পারতাম, যদিও রেডিও ছিলো দোতলায়। একটা লাউডস্পিকারও ছিলো - পুরোটা না - সামনের চোঙের মত জিনিসটা ছাড়া বাকিটুকু। একদিন ইয়ারফোন কানে থাকা অবস্থাতেই সেটা জুড়ে দিলাম লাউডস্পিকারের সাথে, আর দেখলাম আমি হাত দিয়ে স্পিকারটা স্পর্শ করতেই সে শব্দ শুনতে পেলাম ইয়ারফোনে। স্পিকারের পর্দাটা একটু আঙুল দিয়ে ঘষে দেখলাম সেটাও শোনা যায়। বুঝলাম স্পিকারকে মাইক্রোফোন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়, আর সেজন্য ব্যাটারিও লাগে না। সেসময় স্কুলে আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল এর কথা পড়ানো হচ্ছিলো, তাই আমিও স্পিকার আর মাইক্রোফোনের ব্যাপারটা দেখালাম। ঠিক জানতাম না, তবে আমার ধারণা বেলের প্রাথমিক পর্যায়ের টেলিফোনও এরকমই ছিলো।

মাইক্রোফোনের ব্যবস্থা হয়ে ভালোই হলো - এখন আমি বাড়ির ভিতরেই এক জায়গায় বসে অন্য জায়গায় কথা বলতে পারি। আমার বোন জোয়ানের বয়স তখন দুই কি তিন বছর, আমার চেয়ে নয় বছরের ছোট। রেডিওতে তখন কোনো একটা অনুষ্ঠানে ‘আঙ্কেল ডন’ নামে একজন কথা বলতেন, জোয়ানের বেশ পছন্দ ছিলো সেটা। আঙ্কেল ডনের কাজ ছিলো ‘লক্ষ্মী বাচ্চা’দের জন্য দু-চার লাইন গান গাওয়া, আর বাবা-মায়ের পাঠানো কার্ড দেখে বাচ্চাদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো।

একদিন আমি আর আমার কাজিন ফ্রান্সিস জোয়ানকে ঘরে বসিয়ে বললাম আজ একটা বিশেষ পর্ব আছে, ও যেন ভালো করে শোনে। বলেই দৌড়ে গেলাম দোতলায়, আর আমার মাইক্রোফোনে বলতে শুরু করলাম, “আঙ্কেল ডন বলছি। নিউ ব্রডওয়ের ছোট্ট মেয়ে জোয়ানের জন্মদিন আর ক’দিন পরেই, মেয়েটা ভারি মিষ্টি!” তারপর একটা গানও গাইলাম - সাথে মুখ দিয়েই বাজনার আওয়াজ। সব শেষ করে নিচে নেমে জোয়ানকে বললাম, “কেমন হলো অনুষ্ঠান?”

ও বলল, “ভালো, কিন্তু তোমরা মুখে বাজনার আওয়াজ করছিলে কেন?”

একদিন একটা ফোনকল পেলাম, “তুমিই কি রিচার্ড ফাইনম্যান?”

“হ্যাঁ।”

“আমরা একটা হোটেল থেকে বলছি। আমাদের একটা রেডিওতে কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে, তুমি এসে একটু দেখবে?”

“দেখুন আমি তো ছোট”, আমি বললাম, “এখনো ঠিক জানি না কীভাবে -”

“হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা জানি সেটা। তবু তুমি একটু এসে রেডিওটা দেখলে ভালো হয়।”

দেখা গেলো হোটেলটা চালান আমার এক খালা, আমি জানতাম না সেটা। ওরা হয়তো এখনো গল্প করে আমার প্যান্টের পিছনের পকেটে বড়সড় একটা স্ক্রু-ড্রাইভার গুঁজে ওখানে যাওয়ার কথা। আসলে আমিই তো ছোট ছিলাম তখন, যেকোনো স্ক্রু-ড্রাইভারই আমার পকেটে বড়সড় দেখানোর কথা।

রেডিওটা দেখলাম। ওখানে আরো একজন লোক ছিলো, সে-ই দেখতে পেলো না আমি সেটা মনে নেই, ভলিউম বাড়ানো-কমানোর নবটা একটু ঢিলা, তাই ঠিকমতো ঘুরছে না। লোকটা কোথায় যেন কী একটা একটু ঘষে দিতেই ঠিক হয়ে গেলো ওটা।

এরপর যে রেডিওটা ঠিক করতে গেছিলাম সেটা একেবারেই কাজ করছিলো না। সমাধানটা অবশ্য খুব সহজেই হয়েছিলো - যখন দেখলাম প্লাগটা ঠিক মতো লাগানো হয়নি। এরপরে আরো অনেক রেডিও দেখেছি, সহজ-কঠিন মিলিয়ে বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধান করতে করতে আমার দক্ষতাও বেড়েছিলো অনেকখানি। নিউ ইয়র্ক থেকে একটা মিলিঅ্যামিটার কিনেছিলাম, সেটার সাথে হিসেব করা বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের সরু তামার তার লাগিয়ে ওটাকে ভোল্টমিটার হিসাবেও ব্যবহার করতাম। একদম ঠিকঠাক মান না দিলেও কাজ চলে যেতো ওটা দিয়ে।

রেডিও ঠিক করতে লোকজন যে আমাকে ডাকতো, এর মূল কারণটা ছিলো তখনকার অর্থনৈতিক মন্দা। মানুষের কাছে টাকাপয়সা খুব বেশি থাকতো না, আর আমাকে খুব বেশি কিছু দিতেও হত না। অনেক কিছু শিখেছিলাম এই কাজগুলো করতে গিয়ে। একবার একটা এসি রেডিওকে ডিসি রেডিওতে রূপান্তর করার কাজও পেয়েছিলাম, তবে ঠিকমত করতে পারিনি সেটা। আগে থেকে জানলে হয়তো কাজটা নিতামই না আমি।

একটা কাজের কথা না বললেই নয়। একবার একটা প্রিন্টারে কী যেন করতে গেছি, সেখানে একজন আমাকে তার রেডিওটা ঠিক করে দিতে বলল। লোকটা নিশ্চয়ই গরিবই হবে - তার গাড়িটা দেখলাম একেবারে লক্কড়-মার্কা, আর সে থাকেও শহরের একটা সস্তা এলাকায়।

জানতে চাইলাম, “কী সমস্যা রেডিওতে?”

লোকটা বলল, “রেডিওটা চালু করলে প্রথমে একটু শব্দ করে, তারপর কিছুক্ষণ পর সেটা বন্ধ হয়ে যায়। রেডিও ঠিকমতই চলে, কিন্তু শুরুতে ওই শব্দটা আমার ভালো লাগে না।”

মনে মনে বললাম, “বাঃ! টাকাপয়সা নেই পকেটে, কিন্তু শব্দটুকু সহ্য করবে না!”

তার বাড়িতে যাওয়ার পুরো পথটাতেই তার মুখে একই কথা, “আচ্ছা, তুমি রেডিওর ব্যাপারগুলো জানো?”, “আসলেই জানো?”, “কীভাবে জানো?”, “এত কম বয়সেই -”। সব কথাতেই কেমন একটা অবজ্ঞার ছাপ।

ওখানে গিয়ে রেডিওটা চালু করতেই বুঝতে পারলাম কেন সে শব্দ হওয়াটা পছন্দ করে না। ‘একটু’ শব্দ? একটা বিকট ভোঁ ভোঁ শব্দে কান-মাথা উড়ে যাবার মত অবস্থা! একটু পরেই থেমে গেলো সেটা, রেডিও চলছে ঠিকমতই। আমি ভাবতে শুরু করলাম, কারণটা কী হতে পারে।

ভাবতে ভাবতেই ঘরের ভিতর পায়চারি শুরু করলাম। একটা কারণ হতে পারে ভিতরের টিউবগুলো যেদিক থেকে গরম হওয়ার কথা ছিলো, সেদিক দিয়ে হচ্ছে না। অ্যামপ্লিফায়ার ঠিক আছে, টিউবও ঠিক আছে - কিন্তু সার্কিটে বিদ্যুৎ প্রবাহ নেই। শুরুতে যে সার্কিটটা কাজ শুরু করে সেটাতেই সমস্যা - তাই শব্দ হচ্ছে, কিন্তু পরের সার্কিটটা চালু হতেই আবার ঠিকঠাক হয়ে যাচ্ছে সব।

লোকটা বলে উঠলো, “ব্যাপার কী? সেই তখন থেকে দেখছি হেঁটেই বেড়াচ্ছো? পারবে না এটা ঠিক করতে?”

বললাম, “আমি ভাবছি!”। তারপর নিজেকেই বললাম, “বুঝেছি। টিউবগুলো বের করে উলটো করে লাগিয়ে দিলেই কাজ হয়ে যাবে।” করে ফেললাম। রেডিও চালু করলাম - কোনো শব্দ নেই। শুধু টিউবগুলোর গরম হওয়ার অপেক্ষা - তারপর রেডিও চলতে লাগলো একদম ঠিকঠাক!

একটা ব্যাপার নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন - কেউ যখন আপনার সম্পর্কে কোনো খারাপ ধারণা নিয়ে বসে থাকে, আর আপনি সেই ধারণার ঠিক উলটো কাজটা করে ফেলেন, তখন তার আচরণটাও একদম উলটে যায় - হয়তো আগের আচরণের ক্ষতিপূরণ করতেই। এই লোকটার মাধ্যমেই আমি পরে আরো কিছু কাজ পাই, আর প্রতিটার সাথেই পাই তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা - “ও কিন্তু দারুণ মেধাবী!” কিংবা “আরে ও তো শুধু চিন্তা করেই রেডিও মেরামত করে ফেলতে পারে!”। আসলে একটা ছোট ছেলে কিছুক্ষণ চিন্তা করেই একটা রেডিওর সমস্যা ধরে ফেললো - এই ব্যাপারটাই তার কাছে ছিলো অবিশ্বাস্য।

তখনকার রেডিওগুলো ছিলো একেবারে সহজ-সরল, খুললেই ভিতরের সবকিছু বেরিয়ে পড়তো, প্রত্যেকটা জিনিস লেবেল-আঁটা। সমস্যা খুঁজে পেতেও বেশি সময় লাগতো না। কনডেনসার থেকে মোম গলে পড়ছে? তার মানে কনডেনসার পুড়ে গেছে। একটা রোধের উপর কালি পড়েছে? তার মানে সমস্যা ওটাতেই। আর চোখে দেখে যদি সমস্যা না পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আমার ভোল্টমিটারটা তো আছেই। সার্কিটের বিভিন্ন জায়গায় ভোল্টমিটার লাগিয়ে দেখতাম ভোল্টেজ ঠিক আছে কি না। সার্কিটগুলোও জটিল হতো না - গ্রিডে থাকতো দেড় থেকে দুই ভোল্ট, আর প্লেটগুলোতে একশো বা দুশো। সমস্যা খুঁজে পাওয়া যেতো সহজেই, সমাধানও হতো সহজে।

মাঝে মাঝে বেশি সময়ও লাগতো। একটা রেডিওর কথা মনে পড়ে, সেটাতে একটা পুড়ে যাওয়া রোধ দেখে বুঝতে পারিনি - সেটা খুঁজে বের করতেই একটা পুরো বিকেল লেগে গেছিলো। ঘটনাস্থল ছিলো আমার মায়ের এক বন্ধুর বাসা, তাই একটু পরপর “কী করছো?”, “পারবে না?” এসবের বদলে শুনতে পাচ্ছিলাম “দুধ খাবে?” কিংবা “কেক খাবে?”। শেষ পর্যন্ত যেটার কারণে সমস্যাটা সমাধান করতে পেরেছিলাম - আজও যেমন পারি - সেটা হলো লেগে থাকা। মায়ের বন্ধুটি যদি বলতেন “থাক বাদ দাও, কষ্ট হচ্ছে তোমার”, আমার মাথায় স্রেফ আগুন ধরে যেতো। এতদূর এসে আমি কোনোভাবেই হেরে যাবো না। এত সময় দিয়ে, সমস্যাটার এতকিছু জেনে আমি মাঝপথে হাল ছেড়ে দিতে পারি না। সমস্যাটা আমি খুঁজে বের করেই ছাড়বো, যেভাবেই হোক।

প্রশ্নের উত্তর খোঁজার এই ঝোঁকটা আমার মধ্যে ছিলো প্রথম থেকেই। এই ঝোঁকের বশেই অনেক কিছু করেছি জীবনে - প্রাচীন মায়া সভ্যতার হায়ারোগ্লিফিক্সের মানে খুঁজে বের করা থেকে শুরু করে মানুষের সিন্দুকের কম্বিনেশন লক খোলা পর্যন্ত। মনে পড়ে হাইস্কুলে পড়ার সময় একদিন প্রথম পিরিয়ডে এক ছেলে আমাকে একটা জ্যামিতির সমস্যা ধরিয়ে দিল - মনে হয় উচ্চতর গণিত ক্লাসের কিছু একটা। সেটা পেয়েই আমি লেগে গেলাম সমাধান করতে - প্রায় পনের-বিশ মিনিট মাথায় চিন্তার ঝড় বইয়ে তবে পারলাম। সেদিনই, পরে যখন আরো কয়েকজন এসে আমাকে সেই একই সমস্যাটা দেখালো, তাদের সামনে আমি চোখের পলকে সমাধান করে দিলাম সেটা। তাতে যে ফল হল সেটা এমন - যেখানে একজন দেখলো আমি বিশ মিনিট ধরে অঙ্কটা করেছি, সেখানে পাঁচজন দেখলো আমি একটা সুপার-জিনিয়াস!

এভাবে আমি মোটামুটি বিখ্যাতই হয়ে গেলাম। হাইস্কুলে থাকতেই মানুষের জানা সবগুলো ধাঁধাই বোধহয় আমি জানতাম - একেবারে উদ্ভটতম ধাঁধাটাও। পরে যখন আমি এমআইটিতে পড়তে গেলাম, একবার এক নাচের অনুষ্ঠানে এক বড়ভাই আর তার বান্ধবীর সাথে দেখা হল। মেয়েটিও অনেক ধাঁধা জানত, বড়ভাইটির কাছে আমার কথা শুনে কথা বলতে এল। “শুনলাম তোমার নাকি অনেক বুদ্ধি, তাহলে বল তো, একটা লোককে আটটা গাছের গুঁড়ি কাটতে হবে…”। ধাঁধাটা বলে শেষ করার আগেই বললাম, “গুঁড়িগুলো কাটতে হবে একটা বাদে একটা, আর প্রত্যেকটা তিন টুকরো করে।” - প্রশ্ন-উত্তর দুটোই জানা ছিলো।

এভাবে চলতেই থাকলো, একটু পরপর মেয়েটি নতুন একটা ধাঁধা নিয়ে হাজির হয়, আর আমি উত্তর দিতেই থাকি। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে মেয়েটি এলো তার ভাণ্ডারের কঠিনতম ধাঁধাটা নিয়ে - “এক মা তার মেয়েকে নিয়ে ইউরোপ যাচ্ছে…”।

“মেয়েটার বিউবনিক প্লেগ হয়েছিলো।” - মেয়েটি ততক্ষণে ধরাশায়ী! ধাঁধাটা বেশ লম্বা - এক মা তার মেয়েকে নিয়ে ইউরোপ যাচ্ছে, এর মধ্যে এক রাতে তারা একটা হোটেলে উঠল, দু’জন দুটো ঘরে। পরদিন সকালে উঠে মা তার মেয়ের ঘরে গিয়ে দেখে কেউ নেই। যার কাছেই মেয়ের কথা জানতে চায় সে-ই যেন আকাশ থেকে পড়ে - যেন মেয়েটা ছিলোই না। মেয়ে কোথাও নেই - এমনক হোটেলের খাতায় তার নাম পর্যন্ত নেই। যাহোক উত্তরটা হল এই - মেয়েটার হয়েছিল বিউবনিক প্লেগ, ভয়ানক ছোঁয়াচে রোগ। জানতে পেরেই হোটেলের লোকেরা ব্যাপারটা ধামাচাপা দিতে মেয়েটিকে সরিয়ে ফেলে, আর তার উপস্থিতির সমস্ত প্রমাণ মুছে ফেলে। ধাঁধাটা জানা ছিলো, আর “এক মা তার মেয়েকে নিয়ে ইউরোপ যাচ্ছে” - এটুকু শুনে এই ধাঁধাটার কথাই মনে পড়ল, আন্দাজে উত্তর দিলাম, আর সেটাই লেগে গেল।

হাইস্কুলে পড়ার সময় আমাদের পাঁচজনের একটা দল ছিলো, গণিত দল। এই দলের কাজ ছিলো বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে তাদের দলের সাথে অঙ্কের প্রতিযোগিতা করা। একটা ক্লাসরুমে দুই দিকে দুটো দলকে বসিয়ে অঙ্ক করতে দেওয়া হত। প্রতিযোগিতা পরিচালনায় থাকতেন একজন শিক্ষক। একটা খামের গায়ে লেখা থাকত “পঁয়তাল্লিশ সেকেন্ড”। খামটা খুলে সেখান থেকে একটা অঙ্কের সমস্যা নিয়ে বোর্ডে লিখে তিনি বলতেন “শুরু করো”, আর সাথে সাথে আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়তাম কাগজ-কলম নিয়ে। আসলে সময় পাওয়া যেতো পঁয়তাল্লিশ সেকেন্ডেরও একটু বেশি, সমস্যাটা লিখতে যেটুকু সময় লাগতো সেটুকুও কাজে লাগাতে হত। প্রত্যেকের কাছে থাকত একটুকরো কাগজ। সেখানে যা খুশি লেখা যাবে, শুধু উত্তরটার চারপাশে একটা গোল দাগ দিতে হবে জমা দেওয়ার আগে। গোল্লার ভিতরের সংখ্যাটা ঠিক হলে জিত, ভুল হলে হেরে যাবে দল।

অঙ্কগুলো করার জন্য যে সময় দেওয়া হত তাতে পরীক্ষায় যেভাবে অঙ্ক করি সেভাবে করতে গেলে হারা নিশ্চিত। এভাবে যে অঙ্কটা পঞ্চাশ সেকেন্ডে করা যেত সেটাতে সময় পাওয়া যেত পঁয়তাল্লিশ সেকেন্ড। কাজেই অঙ্কটা পেয়ে প্রথম কাজ ছিলো কোনোভাবে দ্রুত উত্তরটা পাওয়া যায় কিনা দেখা। মাঝেমাঝে সেটা প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে উঠত, মাঝেমাঝে একটু খুঁজে বের করতে হত, আর সেটাও না পারলে প্রাণপণে হিসাবগুলো করে ফেলতে হত। পুরো ব্যাপারটা ছিলো দারুণ। নিয়মিত চর্চা করতে করতে আমার দক্ষতাও অনেক বেড়ে গেলো, এক সময় আমি আমাদের গণিত দলের নেতা হয়ে গেলাম। এই দ্রুত অঙ্ক করার অভ্যাসটা পরে আমার খুব কাজে লেগেছিলো, কলেজে পড়ার সময়। ক্যালকুলাস করার সময় খুব দ্রুত বুঝে যেতাম কী করতে হবে, আর তাড়াতাড়ি হিসাব করার অভ্যাস তো আমার ছিলোই।

হাইস্কুলে থাকতে আমার নিজে অঙ্কের সমস্যা বানিয়ে সমাধান করার একটা অভ্যাস ছিলো। কোনো নতুন সূত্র শিখলে সেটা কোথায় কাজে লাগতে পারে সেটা ভাবতাম। সমকোণী ত্রিভুজ নিয়ে বেশ অনেকগুলো অঙ্ক বানিয়েছিলাম। তার একটাতে ত্রিভুজের দুই বাহুর সমষ্টি না দিয়ে পার্থক্যটা দেওয়া ছিলো। বাস্তবে সেটার উদাহরণ হিসেবে চিন্তা করতাম একটা ওড়ানোর লাঠি আর সেটার মাথায় লাগানো একটা দড়ির কথা। দড়িটা টানটান করে ধরলে তার শেষ মাথাটা লাঠির গোড়া থেকে পাঁচ ফুট দূরে থাকে, আর সোজা নিচে টেনে ধরলে লাঠির চেয়ে তিন ফুট লম্বা হয় - তাহলে লাঠিটা কত লম্বা?

এসব অঙ্ক করতে করতে আমি কয়েকটা সূত্রও বানিয়ে ফেলেছিলাম। বুঝতে পারতাম ত্রিকোণমিতির সাথে এগুলোর কোথায় যেন মিল আছে। এর কয়েক বছর আগে, এগারো কি বারো বছর বয়সে লাইব্রেরি থেকে একটা ত্রিকোণমিতির বই এনে একটু পড়েছিলাম, পরে আবার ভুলেও গেছি সেসব। শুধু সাইন আর কোসাইনের কথাটা একটু মনে ছিলো। কাজেই ত্রিকোণমিতির সূত্রগুলো আমাকে আবার ত্রিভুজ এঁকে এঁকে ‘আবিষ্কার’ করতে হয়েছিলো। পাঁচ ডিগ্রি কোণের সাইনের মান থেকে হিসেব করে করে প্রতি পাঁচ ডিগ্রি অন্তর অন্তর কোণের সাইন, কোসাইন আর ট্যানজেন্টের মানও বের করেছিলাম। এগুলো বের করতে যে সূত্রগুলো দরকার ছিলো সেগুলো আগেই বের করে রেখেছিলাম আমি।

এর কয়েক বছর পর যখন স্কুলে ত্রিকোণমিতি পড়ানো শুরু হলো, তখনও আমি মাঝে মধ্যে সেগুলো আমার পুরনো খাতার লেখার সাথে মিলিয়ে দেখতাম। বেশির ভাগ সময়ই আমার কাজের ধরন বইয়ের সাথে মিলত না। অনেক সময় সহজ একটা জিনিস বুঝতে আমাকে পুরো খাতা খুঁজতে হত, আবার কখনো বইয়ের চেয়ে আমার পদ্ধতিই মনে হত সহজ।

ত্রিকোণমিতিতে লেখার প্রচলিত ধরনটা আমার ভালো লাগত না। “sin f” লেখা দেখলে মনে হত কেউ s, i, n আর f কে একসাথে গুণ করে রেখেছে। আমি আমার মত কিছু চিহ্ন বানিয়ে নিয়েছিলাম। আমার বানানো সাইনের চিহ্নটা ছিলো অনেকটা সিগ্মা অক্ষরের মত, যার নিচের দাগটা দরকারমতো লম্বা করে নিতাম - বর্গমূল চিহ্নের বেলায় আমরা যেটা করি। ট্যানজেন্টের জন্য গ্রিক টাউ আর কোসাইনের জন্য গামা অক্ষরটা ব্যবহার করতাম। সাইনের জন্য আমি যে সিগমা চিহ্নটা ব্যবহার করতাম, সাইন ইনভার্সের জন্য একই চিহ্ন ব্যবহার করতাম উলটো করে, মানে ডান থেকে বামে। বইয়ের sin^-1 দেখলে আমার সেটাকে 1/sin মনে হত। বইয়ের f(x) দেখলেও আমার মনে হত f এর সাথে x গুণ করা হচ্ছে। ক্যালকুলাসের dy/dx দেখলেই উপরের আর নিচের d কাটাকাটি করে দিতে ইচ্ছা হত। তাই সেই চিহ্নটাও বানিয়ে নিয়েছিলাম আমার মত করে, অনেকটা & চিহ্নের মত দেখতে। লগারিদমের জন্য L লিখে নিচের দাগটা দরকারমতো লম্বা করে নিতাম।

আমার ধারণা ছিলো বইয়ের চেয়ে আমার চিহ্নগুলো ব্যবহার অনেক সহজ, তাছাড়া চিহ্নে কী আসে যায়? কিন্তু পরে দেখলাম আসলেই আসে যায়। হাইস্কুলে থাকতে একটা ছেলেকে কী একটা অঙ্ক বোঝাতে গিয়ে এসব চিহ্ন দিয়ে লিখছিলাম। বেচারার হতভম্ব চেহারা দেখে বুঝতে পারলাম, এসব চিহ্ন খালি আমিই বুঝব, অন্য কারো সাথে কথা বলতে গেলে আমাকে প্রচলিত চিহ্নই ব্যবহার করতে হবে। তারপর থেকে নিজের বানানো চিহ্ন ব্যবহার করা ছেড়ে দিলাম।

টাইপরাইটারের জন্যও আমি কিছু চিহ্ন বানিয়েছিলাম, সমীকরণ লিখতে কাজে লাগতো সেসব। টাইপরাইটার মেরামতও করতাম মাঝেমধ্যে, হাতের কাছে পাওয়া কাগজের ক্লিপ আর রাবার ব্যান্ড দিয়ে (তখনকার রাবার ব্যান্ডগুলো বেশ মজবুত ছিলো, এখনকারগুলো বারবার ছিঁড়ে যায়)। তবে তখন মেরামত করতাম শুধু কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য, ছোটবেলার মত জিনিসটাকে ‘পেশা’ বানিয়ে ফেলিনি। কিন্তু এ কাজের ভিতরের যে মজাটুকু - সমস্যা কোথায় সেটা খুঁজে বের করা আর কোনোভাবে সেটা ঠিক করা - সেটা আগের মতোই ছিলো, কমে নি একটুও।

- উদ্দেশ্যহীন


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানের বিখ্যাত আত্মজীবনী "Surely You're Joking, Mr. Feynman!" বইটা প্রথম পড়ি ২০১২ সালে। অদ্ভুত এক মুগ্ধতা পেয়ে বসেছিলো তখন। মুগ্ধতা কাটার পর এলো ঈর্ষা। ঠিক যেমন একটা জীবন আমি কাটাতে চাই, সেটাই কাটিয়ে গেছেন এই ভদ্রলোক। গণিত ও বিজ্ঞানে আগ্রহী হওয়ার কারণে বইটা খুব বেশি ভালো লেগে যায়। তখন থেকেই মনে হয় এত চমৎকার একটা বই অনুবাদ করতে পারলে হত। কিন্তু ঐ পর্যন্তই। আলসেমি করে আর কিছুই করা হয় নি।

২০১৪ তে আবার বইটা পড়লাম, আবার মুগ্ধ হলাম, আবার ঠিক করলাম অনুবাদ করব। শেষমেশ আলসেমি কাটিয়ে একদিন সচলে উদ্দেশ্যহীন নামটা নিবন্ধন করে অনুবাদ শুরু করলাম। সেও প্রায় মাস ছয়েক আগের কথা। আস্তে আস্তে এগোতে এগোতে আজ প্রথম অধ্যায়টা অনুবাদ শেষ হল।

সচলে এটাই আমার প্রথম লেখা (যদি প্রকাশিত হয়)। যদিও সচলায়তন পড়ি ২০০৮ থেকে, কখনো কিছু লিখতে ইচ্ছা হয়নি, লেখার কিছু পাইনি। এতদিন পর একটা কিছু লিখলাম। আগে কখনো কোনো কিছু লিখিনি, অনুবাদও করিনি, তাই এই লেখায় একটা আড়ষ্টতা আছে। চেষ্টা করব এখানে নিয়মিত হওয়ার, লেখায় আর মন্তব্যে। আশা করছি ভবিষ্যতের লেখায় দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব। লেখায় পাঠকের মতামত কামনা করি। ধন্যবাদ।

- উদ্দেশ্যহীন

শিশিরকণা এর ছবি

এই বইটি আমি বাংলা অনুবাদেই পড়েছি। এবং অনুবাদ বেশ ঝরঝরে মনে হয়েছে।
ফাইনমানের অন্তরঙ কাহিনী
এটা ছাড়াও আরেকটা অনুবাদ দেখছি একই বই এর

ফাইনম্যান, তুমি নিশ্চয় মজা করছো

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম, প্রথমটা আমার কাছে আছে, দ্বিতীয়টা কবে বেরুল? জানতাম না তো!

পুনশ্চঃ রকমারি.কম নামের এই ছাগু ওয়েবসাইটের লিংক না দিলে হয় না?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

শিশিরকণা এর ছবি

দ্বিতীয়টার খবর আমিও জানতাম না। খুঁজতে গিয়ে পেলাম। রকমারির লিংক পারতপক্ষে দেই না। কিন্তু বাংলা বই এর সম্ভার খুঁজে পাবার সহজ কোন ডাটাবেইজ নেই ওয়েবে। অন্যান্য অনলাইন বই দোকান গুলোর সার্চ এঞ্জিন শক্তিশালী না, নয়ত তাদের সংগ্রহ সীমিত।
ব্যাক্তিগতভাবে রকমারিকে মেরুদন্ডহীন মনে করি, যত্রতত্র ছাগু ট্যাগ বিলিয়ে ছাগুর ওজন হালকা করতে চাই না। ছাগু is a formidable enemy in my book.

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সত্যপীর এর ছবি

রকমারি ছাগুবান্ধব। তফাৎ সামান্যই। এদের গদামে ছাড় দেবার কোন কারণ নাই।

ডাটাবেজের অভাবে ছাগুমারির লিঙ্ক দেবার বদলে বই এর নাম লেখক পাব্লিশার এর নাম দিয়ে দেয়াই যথেষ্ট নয় কি?

..................................................................
#Banshibir.

শিশিরকণা এর ছবি

ছাগুবান্ধব ঠিক আছে। এদের থেকে বই কেনা বন্ধ করেছি। ডিজিটাল গদাম দিয়ে কি লাভ হয় জানি না। কেমনে দেয় তাও ঠিক বুঝে উঠি না।
বই এর সন্ধান যেহেতু পেয়ে গেছি কমেন্ট এডিট করে লিংক সরিয়ে দিতাম। কিন্তু আপনারা প্রতিমন্তব্য করে ফেলেছেন, তাই এখন আর সম্পাদনার অপশন নেই ঐ কমেন্টে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আরেক কাজ করা যায়, গুডরিডস এন্ট্রিকে লিঙ্কানো যায়। তবে আমারও মনে হয় পীরবাবার কথামত লেখক/প্রকাশকের নাম জানানোই যথেষ্ট।

প্রচারণাটাও একরকমের গদাম। উল্টো কাজ করলে মুশকিল হল এটা রেফারেন্স হয়ে যেতে পারে- "ঐ দ্যাখ, সচলরাও রকমারির লিংক দেয়" এই টাইপ আরকি।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

ডিজিটাল গদাম দিয়ে কি লাভ হয় জানি না। কেমনে দেয় তাও ঠিক বুঝে উঠি না।

কেমনে দেয় তার উদাহরনঃ

"রকমারি ছাগুবান্ধব। আমি এদের বই কিনিনা। আমি এদের লিঙ্কও শেয়ার করিনা। হারামজাদারা মরুক।"

গদাম দিয়ে কি লাভ হয় সেই কথায় আসি।

আজকে থেকে একশ বছর পরে একটি কিশোর জানবে রকমারির নাম (কিম্বা শিরোনামহীনের নাম, বা আল মাহমুদের নাম। আপাতত রকমারিতে থাকি)। বাংলাদেশের পুরোনো কিতাব পুঁথি অনলাইন লেখালিখি ঘেঁটে সে পাবে রকমারি ছিল একটি হ্যান এবং রকমারি ছিল একটি ত্যান। এই হ্যানত্যানের মাঝে রকমারি যে ছাগুবান্ধব এই তথ্য ভালোমত গুঁজে দেয়া চাই। সে যখন দেখবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষ শিশিরকণা টুইট করে ছাগুবধে লিপ্ত কিন্তু রকমারির লিঙ্ক শেয়ার করছেন, তখন তার মনে কনফিউশন আসতে পারে। তাই আমি আপনার রিপ্লাইতে লিখে দিলাম রকমারি ছাগুবান্ধব এবং হারামজাদাদের মরণ হোক। একশো বছর পরের কিশোরটি দেখতে পেল আপনি তাতে সায় দিয়ে বলছেন আপনি তাদের বই কেনেন না।

এইটাই লাভ। ছাগু এবং ছাগুবান্ধবের সকল দলিল স্পষ্টভাবে থাকুক। কিশোরটি আমার উত্তরাধিকার, তার কনফিউশন কাটাব আমরাই।

..................................................................
#Banshibir.

কল্যাণ এর ছবি

ভাল ব্যাখ্যা করেছেন পীরসাব চলুক

একটু অপ্রাসঙ্গিক হলেও অনলাইনে ঘাটাঘাটির ব্যাপারে একটা জিনিস মনে পড়ে গেলো। কয়দিন আগে উপুর্যুপরি (ঠিক হল?) বানান দরকার পড়েছিল। বাসায় বাংলা অভিধান না থাকায় গেলাম গুগলে, ভাবলাম সার্চ করে দেখি কোন বানাটা লেখালিখিতে ব্যাবহার হয়েছে। প্রথমে লিখলাম উপুর্যুপুরি - আছে; উপুর্যপুরি - আছে, উপুর্যুপুরী - আছে, এমনকি উপর্যপরিও আছে। পুরাই কনফিউসড হয়ে গেলাম, তাইলে কোনটা ঠিক? শেষে গুগলকে শালা বলে কেটে পড়লাম ওখান থেকে মন খারাপ

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সত্যপীর এর ছবি

উপর্যুপরি

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ছাগু এবং ছাগুবান্ধবের সকল দলিল স্পষ্টভাবে থাকুক। কিশোরটি আমার উত্তরাধিকার, তার কনফিউশন কাটাব আমরাই।

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার বলেছেন! চলুক

- উদ্দেশ্যহীন

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ব্যাখ্যাটা খুব পছন্দ হয়েছে। "আমারি মনের কথা ব্যাটা পারিল কেমনে জানিতে"!! যাই হোক, ভবিষ্যতে ছাগু প্যাঁদানোয় বা এই রকম সদুদ্দেশে আপনার কথাগুলো ব্যবহার করার অনুমতি চাচ্ছি।

____________________________

সত্যপীর এর ছবি

প্রতিবার ব্যবহারে দুইটাকা রয়্যালটি নিয়া থাকি।

পেপ্যাল গ্রহণ করা হয়।

..................................................................
#Banshibir.

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"সদুদ্দেশে" কথাটা তো এজন্যেই রেখেছিলাম যে মহৎ কাজে ব্যবহৃত হবে জানলে কেউ (পড়ুন পীরবাবা) আর টাকা পয়সার মত নিতান্তই দুনিয়াদারী ও তুচ্ছ বস্তুর কথা তুলে আনবে না - কিন্তু এ যে দেখছি জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিকই আছে!! রয়্যালটি হিসেবে রয়্যাল টি খেতে চাইলেও না হয় ভেবে দেখা যেত!!

____________________________

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

এ কী করলেন ভাই মন খারাপ

আমি জানতাম না এই বইয়ের অনুবাদ আছে, অবশ্য বোঝা উচিত ছিলো। বইটা এতো বিখ্যাত, অনুবাদ তো থাকতেই হবে। আমি এইটা অনুবাদ করছি বইটার প্রতি ভালোলাগা থেকে, অন্য কোনো কারণ নেই। তবে শেষ করতে পারবো কিনা জানি না।

- উদ্দেশ্যহীন

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভালো লেগেছে।

মন্তব্যের ঘরে অনুবাদ বিষয়ক নিজের কথা না বলে, সেটা পোস্টের সাথে দিলেই ভালো হতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

লেখাটা পোস্ট করার পরই মনে হল, প্রথমবার লিখছি, ধুপ করে লেখাটা ছেড়ে না দিয়ে দুটো কথা তো বলা উচিত। তাই একরকম ঝোঁকের মাথায়ই মন্তব্যটা লেখা।

লেখা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আহ, আমার অন্যতম প্রিয় পদার্থবিদের গপ্প। আগেও পড়েছি, আবার পড়লাম। লেখা চলুক। হাততালি

সচলায়তনে স্বাগতম, উদ্দেশ্যহীন। দেঁতো হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

জানি ফাইনম্যান আপনারও প্রিয় পদার্থবিদ। এই বইয়ের একটা অধ্যায় আপনিও না অনুবাদ করেছিলেন - ফাইনম্যান একবার স্প্যানিশ ভাষা শিখতে গিয়ে পর্তুগিজ কোর্সে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন, সেই অধ্যায়টা? ঝরঝরে অনুবাদ ছিলো, আর লিখলেন না কেন?

পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

না রে ভাই, আমি করিনি। তবে সচলেই কেউ করেছিলেন। (স্পর্শ ভাই নাকি?)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

পেয়েছি, এইটাঃ http://www.sachalayatan.com/guest_writer/35728

চতুর্বর্গ নিকে কেউ লিখেছেন, সেই ২০১০ এ।

- উদ্দেশ্যহীন

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল্লগসে। মূল বইটি পড়তে ইচ্ছা করতেসে।
চলুক আপনার লেখা।

অনন্যা

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ হাসি

মূল বইটি গুগল করলেই পাবেন - পিডিএফ, ইপাব সব ফরম্যাটে।

- উদ্দেশ্যহীন

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো। এই ধরনের লেখার ধারাটা আজকাল কমে আসছে। ওনার কাজকর্ম নিয়েও অল্প অল্প করে লিখতে থাকুন।
--------------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

পদার্থবিজ্ঞানে দখল খুব ভালো নেই, আর যা ছিলো দিন দিন কমে যাচ্ছে। সাথে সময়েরও অভাব। তাই আপাতত এই বইটাই অনুবাদ করার ইচ্ছা রাখি।

এক লহমা এর ছবি

সত্যিই বলতে ইচ্ছে করছে, "এতদিন কোথায় ছিলেন!" অসাধারণ অনুবাদে অসাধারণ লেখা। পরের পর্বের জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা নিঃসন্দেহে অসাধারণ, অনুবাদ নিতান্তই সাধারণ। পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

আমি যে মাপের অলস, তাতে পরের পর্ব মাস ছয়েকের মধ্যে আসবে আশা করি। অনুবাদ শুরু করব শিগগিরই।

- উদ্দেশ্যহীন

সো এর ছবি

বইটা আগে পড়েছিলাম, কিন্তু বেশ কিছু কারণে ভাল্লাগেনি। পড়ে মনে হয়েছে প্রবল আমিত্ব বোধে ভরা একজন মানুষের আত্মজীবনী (যদিও তাঁর মত সাক্সেসফুল মানুষ হলে আমিত্ববোধ না থাকাটাই হয়ত অস্বাভাবিক হবে)।

প্রচন্ড মেধাবী একজন মানুষ; কিন্তু একজন মেধাবী মানুষের জীবনেও নানা বাধা বিপত্তি দুঃখ থাকে, সাধারণ মানুষের চেয়ে কম না। বিশেষ কোনো প্রতিবন্ধকতার কথা নেই বইটাতে। স্রেফ বিভিন্ন সিচুয়েশনে তাঁর ধারালো বুদ্ধি, মেধা, আর প্রতিভা দিয়ে কিভাবে উনি উপরে উঠে এসেছেন তার ওপর লেখা - এমআইটির রয়াগিং হোক, ক্যাসিনোতে জুয়া খেলা হোক, কোনো বারবনিতাকে সিডিউস করা হোক, বা কোনো এটম বোমা বানানো হোক। পরিশ্রমের অংশটা উনি সযত্নে এড়িয়ে গেছেন, অথবা হয়ত তাঁর কাছে পদার্থবিজ্ঞানের এই পাহাড় ঠেলা সমান কাজগুলোও ছিল একটা বারে গিয়ে মেয়ে পটানোর মতই এফর্টলেস। তাই গল্পে কোনো ওঠানামা নেই, স্রেফ ওঠা।
পড়ে লোভ লাগে, এমন হতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সে অনেকটা অবাস্তব ইচ্ছা। শিক্ষনীয় কিছু পাইনি। সুপারম্যান হয়ে জন্মাতে হয়, পরিশ্রম করে হওয়া যায়না।

কয়েকটা অংশ মজার ছিল - ক্যাসিনোর লোকের সাথে অঙ্কের খেলার অংশ, আর দরজা লুকিয়ে রাখার অংশটা।

অনুবাদ চমত্কার হয়েছে। শেষ পর্যন্ত করবেন আশা করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার কথাগুলোর সাথে আমি একমত। এই বইয়ে ফাইনম্যানের পরিশ্রমের কথা পাওয়া যায় না, শুধু সাফল্যগুলোই দেখা যায়। বইটা ফাইনম্যানের জবানিতে লেখা হলেও আসলে তাঁর লেখা নয়। তাঁর সাত বছরের সহকর্মী র‍্যালফ লেইটন বিভিন্ন সময়ে তাঁর জীবনের নানান ঘটনা শুনে পরে সেটা বইতে লিখেছেন। বইয়ের শুরুতেই লেইটন তাঁর মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। হয়তো সেজন্যই মুগ্ধ হওয়ার মত ঘটনাগুলোই উঠে এসেছে, পরিশ্রমটা আসেনি। নিজে লিখলে হয়তো বইটা অন্যরকম হত।

আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে তাঁর লস আলামোসের কাহিনী, যেখানে তিনি সবার সিন্দুকের কম্বিনেশন হ্যাক করে বেড়াতেন।

পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হাসি

কল্যাণ এর ছবি

ভাল লাগল, মূল বইটা পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে আমারও। চালিয়ে যান। পর্ব গুলো তাড়াতাড়ি দিয়েন কিন্তু।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

মূল বই পড়তে চাইলে পড়ে ফেলুন - অনুবাদে কি আর আসল লেখার মজা পাওয়া যায়? গুগল করলেই পাবেন।

পরের পর্ব কবে আসবে জানি না, আমি এমনই অলস, এই পর্বটাই লেখা শুরু করেছিলাম ৬-৭ মাস আগে। চেষ্টা করব তাড়াতাড়ি লেখার।

কল্যাণ এর ছবি

অ্যাঁ ৬/৭ মাস! কস্কি মমিন!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে শুরু করেছিলাম ৬-৭ মাস আগে, সত্যিকার অর্থে লিখতে বসেছি বড়জোর ৬-৭ দিন। হঠাৎ সেদিন মনে হল আর কতদিন ঝুলিয়ে রাখবো? যাহোক লিখে শেষ করে দিই। তাই দ্রুত শেষ করে পোস্ট করে দিলাম।

- উদ্দেশ্যহীন

রানা মেহের এর ছবি

আপনার অনুবাদ খুব ভালো লাগলো। আপনার লেখার হাত ভালো।

অস্বস্তির জায়গাটা বলি। ওপরে দেখুন শিশিরকনা বলছেন এই বইয়ের আরো দুটো অনুবাদ আছে এবং সেগুলো পড়তেও ভালো। এই একই বইয়ের আরেকটা অনুবাদ হয়ে কী লাভ তাহলে? আপনি কী অনুবাদ করবেন সেটা একান্ত আপনার ব্যাপার। তবে অনুরোধ করবো, পরিশ্রম ও মেধা এমন কিছুতে ব্যাবহার করার যেটা আপনার আগে অন্য কেউ করেন নি।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি

আমি এইটা অনুবাদ করেছি বইটার প্রতি ভালো লাগা থেকে, আর কিছু না। বইটার আর কোনো অনুবাদ আছে কি না জানতামও না, খুঁজেও দেখিনি। তবে আছে জানতে পেরে একটুখানি ধাক্কা খেলাম। পরের অধ্যায়টার অনুবাদ শুরু করেছি, ওটা শেষ করবো। তবে হয়তো অনিয়মিত হয়ে যাবে এই সিরিজ, জানি না এখনও।

- উদ্দেশ্যহীন

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আপনার অনুবাদের মান দুর্দান্ত! বিজ্ঞান নিয়ে পছন্দসই কোন লেখা অনুবাদ শুরু করে দিন না। ভালো বিজ্ঞানলেখক যত আসে, ততই তো ভাল!

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

দুর্দান্ত?! হয়তো একটু বাড়িয়েই বললেন, তবু ধন্যবাদ হাসি

আপনাদের মন্তব্যে বেশ উৎসাহ পাচ্ছি, দেখি অন্য কোনো লেখা ভালো লাগলে অনুবাদ শুরু করে দেবো।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মূল বইটা পড়েছি। আমিত্বে ভরা হলেও বইটা পড়ে মজা লেগেছিল খুবই। সচলে একটা নিম্নমানের রিভিউও লিখেছিলাম বইটা নিয়ে। আপনার অনুবাদ দারুণ হয়েছে। আরও অনুবাদ বা মৌলিক লেখা আসুক। সচলে স্বাগতম।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আমিত্বের কারণ বোধহয় লেখক, ফাইনম্যান নন ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কল্যাণ এর ছবি

উপরে দেখেন লেখক আগে ভাগে টাইম লাইনের একটা ধারনা দিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং আপনি ফাইনম্যান নিয়ে গুতাগুতি না করে ভ্যাংকুভার ভয়ঙ্করঃ কানাডায় কান্দায় 'তে মনোনিবেশ করেন দেঁতো হাসি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে আর স্পর্শদারে দেখলেই মনে পড়ে যে-

চণ্ডীশিরা প্রসঙ্গে হিম্ভাইকে গুঁতানো অনুচিত।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কল্যাণ এর ছবি

আমি কি আর তখন জানি যে হিমু ভাইএর চা'র গাছ নোরগে পর্বতের উপত্যকায় লাগাতে নিউ হরাইজন্স কেবল রাস্তায়?

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কল্যাণ এর ছবি

খাইছে

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নিয়মিত এইরকম মন্তব্য পাইলে পোস্ট মাফ করা যায়! খাইছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

কল্যাণ এর ছবি

আহা কি চমতকার কথা। দুয়া করেন যেন কাল সক্কাল সক্কাল ইনবক্স খুলেই দেখি সেইইই ইমেইল। মডু ব্যাটারাও যে কি, কিছুতেই যেন আমাকে দেখতে পায়ই না পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি

আপনাদের উৎসাহ পেয়ে ভালও লাগছে, আরও লিখবো আশা করি।

- উদ্দেশ্যহীন

অতিথি লেখক এর ছবি

একটু ভয়ে ছিলাম, লেখাটা নীড়পাতায় আসে কি না সেটা নিয়ে। অথচ সেটা তো আসলোই, সাথে পাঠকদের কাছ থেকে যে পরিমাণ প্রশংসা পেলাম তাতে আমি অভিভূত! দেঁতো হাসি

নিতান্তই শখের বশে অনুবাদটা করা। অনুবাদ চালিয়ে যাবো এমন কোনো পরিকল্পনাও ছিলো না। কিন্তু সকলের প্রশংসা ও উৎসাহ পেয়ে মনে হচ্ছে লেখা চালু রাখা উচিত। এমনিতে লেখালেখি আমার তেমন আসে না, তাই নিজে কিছু না লিখে পছন্দের একটা বই অনুবাদ শুরু করলাম।

সকল পাঠককে অশেষ ধন্যবাদ হাসি

- উদ্দেশ্যহীন

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চালু রাখা উচিত মানে?
চালু না রাখলে খবর আছে শয়তানী হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

জি ভাই, জি ভাই, লিখতে যাচ্ছি পরের পর্ব ইয়ে, মানে...

- উদ্দেশ্যহীন

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

- উদ্দেশ্যহীন

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

- উদ্দেশ্যহীন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।