মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানেরা চিরকালই মানসিকভাবে পরাধীন। খুব ছোটবেলা থেকেই বাপ-মা-জ্ঞাতি-গোষ্ঠী তাদের মাথায় খুব ভালোমত ঢুকিয়ে দেয় যে “বাপরে/মাগো , চব্বিশটা ঘন্টা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনরাত মুখে রক্ত তুলে শুধু খাটছি তোকে লেখাপড়া করাব বলে। তুই-ই আমাদের একমাত্র আশা, ভরসা। তোর মুখের দিকে চেয়ে সব কষ্ট সহ্য করছি সোনা । আর কোন দিকে মন দিস না। আমাদের আর কোন ক্ষমতাই নাইরে বাপধন, একটা বিপদে পড়ে গেলে কেউ বাঁচাতে আসবে না। তুই আমাদের একমাত্র স্বপ্ন । "
ক্লাস থ্রিতে পড়া মেয়েটা সেই থেকে বার্বি হাতে দাঁড়ানো প্রতিবেশী আন্টির মেয়েকে দেখে শুধু , মুখ ফুটে কোনদিন বাপমা কে বলেনা ঐ পুতুলটা তারও কত ভালো লাগে। সেও কত খুশি হত ঐ সব রঙ্গীণ প্রজাপতি-ক্লিপ দিয়ে চুল বাঁধতে পেলে। দক্ষ ক্যাশিয়ারের মত বাচ্চাগুলো তখন থেকেই সুন্দর কিছু দেখলেই দামের হিসেব করে আর ভাবে, থাক, আমার এসব দেখতে হবেনা। আমার আব্বু-আম্মু দিনরাত খাটছে, আমি কোন হিসেবে এইসব চাইব।
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা শিশুকাল থেকেই বয়স্ক, দায়িত্ববোধসম্পন্ন। সপ্তম শ্রেনীর বালক কখনো স্কুলের পিকনিকে যেতে চায়না, বাড়তি ফী দিতে হবে বলে। তার মাথায় ভাসতে থাকে মায়ের ছবি, যে মা সব সময় বাবার ছেড়া শার্ট বারবার সেলাই করে দেয় । টিনটিনের ছবি আঁকা লাল রঙ এর টিশার্ট পরে বন্ধু যখন বিকেলবেলা ফুটবল খেলতে আসে, লোভীর মত সেই টিশার্টের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে তার আর আঁশ মেটেনা।
চতুর্থ শ্রেনীর আট বছরের মেয়েটা টিভিতে কেবলই নাচের অনুষ্ঠান খোঁজে আর একাএকা নূপুর পায়ে নাচে। অন্যদের সামনে লজ্জা পায়, বাসায় তো বাড়তি খালি জায়গাও নাই যে লুকিয়ে প্রাক্টিস করবে। একদিন মায়ের চোখে পড়ে। মা সন্ধ্যাবেলা অফিস ফেরতা বাবাকে চা আর মুড়িমাখানো খেতে দিয়ে নরম সুরে বলতে থাকে, আমাদের রুনকির না খুব নাচ ভালো লাগে।দাও না মেয়েটাকে নাচের স্কুলে ভর্তি করে। সারাদিন হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পরে এইসব বাড়তি খরচের কথা বাবার ভাল লাগেনা। এক নিঃশ্বাসে চাটুকু গিলে নিয়ে বলেন, “ কি হবে ঐসব নাচ-ফাচ করে? মেলা টাকার ব্যাপার, নাচের টিচার, নানা রকম ড্রেস, শাড়ি, চুড়ী ইত্যাদি ফ্যাচাং—আমরা কিভাবে পারব ঐসব বলো ? বাদ দাও, রুনকিকে জ্যামিতিতে মন দিতে বল। কইরে, মা, তোর অঙ্ক বইটা নিয়ে এদিকে আয়তো দেখি। "
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়ের জীবনে বাড়তি কোন সুখ-সুবিধা-আগ্রহ থাকা পাপ। মেয়েটার খুব ইচ্ছে করে, ছবি তুলতে, সে যেই চোখে পৃথিবীর সৌন্দর্যগুলো দেখে তা অন্যদের দেখতে দিতে কিন্তু একটা ক্যামেরা কেনার কথা বলার জন্য বছরের পর বছর সাহস সঞ্চয় করতে হয় তার । হ্যা, তারাও মোবাইল ফোন, ক্যামেরা , ল্যাপটপ এইসব ব্যবহার করে বটে , যখন প্রয়োজনটা একদম ভয়াবহ চূড়ান্ত হয়ে যায় তখন। যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যেয়ে দেয়াল দিয়ে পিঠ প্রায় বের হয়ে যায় তখন। বাপের হাজার-হাজার কর্মঘন্টার ফলাফলে এসব কিনতে হয় বলে এগুলোর প্রতি তাদের মমতা থাকে অসীম, জানে এটা হারালে / নষ্ট হলে কী ভীষণ কষ্ট হবে বাবা-মায়ের আরেকটা কিনে দিতে। প্রাণ দিয়ে যত্ন করে যন্ত্রগুলোর তবুও একদিন ভার্সিটি ফার্স্ট ইয়ারে পড়া ছেলেটার মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়ে যায়। অপরাধীর চেহারা নিয়ে বাপ-মায়ের সামনে এসে দাঁড়ায় সে। মনটা এত ছোট হয়ে যায় ! এত ছোট হয়ে যায়! জীবনে আর কখনো কোন দামী ফোন ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
এত কষ্ট তাদের, এত সীমাবদ্ধতা, কেউ নেই এই এত্ত বড় দুনিয়ায় তাদের, তার উপরেই সব ভরসা বাপমায়ের-- এই কষ্টের দিন সে দূর করবে, পরিবারের মানুষদের চাওয়াপাওয়া পূরণের জন্য রক্ত দিয়ে চেষ্টা করবে। এমন আত্মপ্রতিজ্ঞা থেকেই লেখাপড়া করতে থাকে তারা, দিনরাত খেটে খেটে ভালো রেজাল্ট করার চেষ্টা করে। এস এস সি, ইন্টারে এত্ত ভালো রেজাল্ট করার পরেও যখন কোথাও চান্স হয়না মেধাবী ছেলেটার, কিভাবে কি করবে ভেবে পায়না সে, ছোট্ট হৃদয়টা তার এত চাপ নিতে পারেনা। যখন দিনরাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে লেখাপড়া করার পরেও গণহারে ফাঁস হয় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন, কিচ্ছু করার থাকেনা রাত জেগে পড়তে পড়তে চোখের কোণে কালি ফেলা মেয়েটার।অন্য কাউকে না, নিজেদেরই দোষ দেয় তারা। নিশ্চয় আরো বেশি পরিশ্রম করা উচিত ছিল। বাবা মা বলতে থাকে, “মানলাম , প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। কিন্তু একজনও কি ছিলনা যে অনেস্টলি চান্স পেয়েছে? সেই একজনই তোমার হতে হবে মা। সেই একজনই তুমি হও, এছাড়া আমাদের উপায় নেই মা, আমাদের কিচ্ছু নেই।“
ছোটবেলা থেকে এই নেই-নেই-নেই শুনতে শুনতে তাদের আত্মবিশ্বাস থাকে শূণ্যের কোঠায়। ভয়ে কারো সাথে বিবাদে জড়ায় না, নিজের স্বত্তাকেই উপলব্ধি করতে পারেনা তারা। সেও যে দেখতে ফুটফুটে সুন্দর, দারুন সুন্দর করে কথা বলে, কী অসাধারণ ভাবে চিন্তা করে, তাকায় —এসব কখনো জানা থাকেনা তাদের। যারা তাদের জীবনে এসব প্রথমে জানাতে আসে তাদের প্রেমে পড়ে যায় তারা। কিন্তু কখনো ভাবতে পারেনা এও সফল হতে পারে। তাদের যে আর কোন কিছুতে মন দেয়া পাপ। তাদের জীবনের উদ্দেশ্য একটাই, মা-বাবার স্বপ্ন সফল করা। সেইজন্য মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েদের সহজে প্রেম হয়না, যদিবা হয়, সেই প্রেম সহজে ভাঙ্গেনা।
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা তাই খুব অবাক হয়, যখন দেখে তাদেরই কোন সহপাঠী স্রেফ চুলের রঙ চেইঞ্জ করতে খরচ করে ফেলল এক কাঁড়ি টাকা । কিংবা নিত্য নতুন মডেলের দামী সব ফোন ব্যবহার করছে তারই কোন বন্ধু। ছুটি কাটাতে জার্মানি-ফ্রান্স ঘুরতে যায় তাদের কোন বান্ধবী। তাদেরও ইচ্ছে হয়, সারা পৃথিবী ঘুরে দেখবে, জুল ভার্নের গল্পগুলোতে যেসব জায়গার বর্ননা আছে সেসব জায়গায় যাবে কিন্তু তারা তো তবু ইউনিভার্সিটির শিক্ষা সফরের কল্যাণে অন্তত কক্সবাজার-বান্দরবান-রাঙ্গামাটি গেছে। উদয়াস্ত পরিশ্রম করে চলা তাদের বাবা-মায়েরা কখনো সেসবও দেখেনি। ছেলে-মেয়ের মুখে গল্প শুনেই পরিতৃপ্তির হাসি মুখে এনে ঘুমাতে যান তারা।
এইভাবেই ধুঁকেধুঁকে লেখাপড়া শেষে দিনের পর দিন চাকরির খোঁজে হা-পিত্যেশ করে তারা। নিজেদের অপরাধী ভাবতে থাকে, কেন এখনো জীবিকার কোন ব্যবস্থা করতে পারছে না, এই অপরাধে কুঁকড়ে থাকে, কোথাও বেড়াতে যায়না, কারো সাথে দেখা করেনা। কোন রঙ তাদের মন রঙ্গীন করেনা। তাদের কোন ঈদ,আনন্দ, গেট টুগেদার নেই। লজ্জায় কোন আত্মীয় বা বন্ধুর সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে চায়না। উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে থাকে একটা চাকরির জন্য, সেটা না জোগাড় হওয়া পর্যন্ত পারলে তারা যেন নিঃশ্বাস নেয়াটাও বন্ধ রাখত। হতাশার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে যদিবা একদিন চাকরি পায় , সাগর সমান পারিবারিক দায়িত্বগুলো জ্বলোচ্ছাসের গতিতে ছুটে আসে তাদের দিকে , সেগুলো সামলাতে সামলাতে ঠিক তাদের বাবামায়ের মত করে বুড়ো হতে থাকে তারা।
____________________________________________________________________________________________
শ্যামলী মৃন্ময়ী
মন্তব্য
না এই কথাটা মানতে পারলাম না। কারন এই শ্রেণীর ছেলেমেয়েরা জানে কিভাবে ঝড়ের সাথে লড়তে হয়। আমার দেখা বেশির ভাগই জীবনে ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছে এই শ্রেণীর ছেলে মেয়েরা। কারণ না পেতে পেতে তাদের মধ্যে একটা জেদ কাজ করে, আর সেটাই তাকে নিয়ে যায় অন্য এক উচ্চতায়।
হ্যাঁ মনে অনেক কষ্ট থাকে অনেক কিছু না পাওয়ার কিন্তু এক সময় এই সব কষ্ট কে জয় করে প্রাপ্তির আনন্দটা থাকে দেখার মত নজরকাড়া
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
সম্পূর্ণ একমত। লড়তে লড়তে , পুড়তে পুড়তে একসময় তারা যে আত্মবিশ্বাস অর্জন করে তা অনন্যসাধারণ। কিন্তু বিজয়ের ঝান্ডা ওড়ানোর আগে পর্যন্ত , পদে পদে বাঁধাময় যে পথ তাদের অতিক্রম করতে হয়, সেই যাত্রাপথের শুরুর পাথেয় হিসেবে তাদের আত্মবিশ্বাসটা থাকে দ্বিধাময়, সন্দেহমুখর। নিজের উপরে প্রথম থেকেই প্রবল আত্মবিশ্বাসটা থাকেনা তাদের। ধীরে ধীরে, অভিজ্ঞতা ও পোড় খাওয়া শিক্ষা থেকে অবশেষে একসময় তারা অর্জন করে আত্মবিশ্বাসটুকু। এবং হিসেব করে দেখে, শুধুমাত্র এই আত্মবিশ্বাসের অভাবে অনেক সহজ কাজ তাদের কাছে অনেক কঠিন মনে হয়েছে ধন্যবাদ পড়ার জন্য
লেখাটা ভালো লাগে নি। এ লেখা ভালো লাগার নয়। শুধু এটুকু জানাতে মন্তব্য করলাম যে আমি জানি আপনি কী দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন। এ লেখার প্রতিটি লাইন মোটা দাগে আমার জীবনের বিবরণ।।
জানি না আপনি মধ্যবিত্ত কি না। যদি উপলব্ধিগুলো জীবন থেকে নেয়া হয় তাহলে বলবো 'আমাদের ভুবনে স্বাগতম'। ১ দেখে ধরে নিলাম আরো আসছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু মনের কথা, আত্মার গল্প যখন কেউ বুঝতে পারে তার চেয়ে আনন্দের আর কি আছে! এতো আমার সৌভাগ্য
লেখা ভালো লেগেছে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
অনেক ধন্যবাদ ।
মধ্যবিত্ত পুরাণের বেশিরভাগ কথার সাথেই সহমত কিন্তু আরিফিনসন্ধির মতোই আপত্তি জানাই আত্মবিশ্বাসের কথাটায়। অবশ্য আপনি যদি বন্ধুর বিয়েতে নিজের দেয়া উপহার কিংবা একসাথে সবাই বেড়াতে গিয়ে নিজের জামাকাপড় নিয়ে আত্মবিশ্বাসের কথা বুঝিয়ে থাকেন তাহলে কিছুটা ঠিক আছে।
মধ্যবিত্ত ছেলে/মেয়েটার কিন্তু চাকুরির পর আরও ভয়াবহ জীবন শুরু হয়। ফেসবুকে আজকাল একটা ছবি দেখি প্রায়ই-ঐ যে বেতন নিয়ে বন্ধু আর আত্মীয়রা কী ভাবে; ঠিক সেইটার মতো।
দেবদ্যুতি
আত্মবিশ্বাসের বিষয়টা ভবিষ্যতে আরো বেশি খোলাসা করার ইচ্ছে রইল আপাতত আবারো বলি, লড়তে লড়তে , পুড়তে পুড়তে একসময় তারা যে আত্মবিশ্বাস অর্জন করে তা অনন্যসাধারণ। কিন্তু বিজয়ের ঝান্ডা ওড়ানোর আগে পর্যন্ত , পদে পদে বাঁধাময় যে পথ তাদের অতিক্রম করতে হয়, সেই যাত্রাপথের শুরুর পাথেয় হিসেবে তাদের আত্মবিশ্বাসটা থাকে দ্বিধাময়, সন্দেহমুখর। নিজের উপরে প্রথম থেকেই প্রবল আত্মবিশ্বাসটা থাকেনা তাদের। ধীরে ধীরে, অভিজ্ঞতা ও পোড় খাওয়া শিক্ষা থেকে অবশেষে একসময় তারা অর্জন করে আত্মবিশ্বাসটুকু। এবং হিসেব করে দেখে, শুধুমাত্র এই আত্মবিশ্বাসের অভাবে অনেক সহজ কাজ তাদের কাছে অনেক কঠিন মনে হয়েছে।
অবশ্যই , চাকুরির পরে দায়িত্বের ঘানিতে নিজেদের সবকিছু বিসর্জন দেয়া লাগে তাদের। বুঝতে পারছি , কোন ছবিটার কথা বলছেন অনেক ধন্যবাদ আপু, পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য
কিছু জায়গা বাদে এ লেখার প্রতিটা লাইন কতটা সত্যি, তা যারা 'মধ্যবিত্ত' ট্যাবুতে বড় হয়েছেন, তারাই জানেন! কিছু কোট না করে পারছি নাঃ
শ্রেয়তর সামাজিক মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা সবাই চায়, উচ্চবিত্ত আরো উচ্চতর মর্যাদা ও সুখ কামনা করে, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তও তেমনি চায় তার শ্রেণী থেকে বেরিয়ে আরও স্বাচ্ছন্দ্যের শ্রেণীতে ঢুকতে!
কিন্তু মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েদের মত এত মানসিক যন্ত্রনা নিয়ে বড় হতে হয় না উচ্চ বা নিম্নবিত্ত শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের! নিম্নবিত্ত একটি ছেলের টাকা নেই, তাই সে একটি দামী স্মার্ট ফোন কেনার কথা মাথাতেই আনে না। অন্যদিকে, মধ্যবিত্ত একটি ছেলেরও যথেষ্ট টাকা থাকে না, কিন্তু তাতে কি, তার মাথায় সারাক্ষনই একটি দামী স্মার্ট ফোনের স্বপ্ন ও সেই স্বপ্ন ভঙ্গের যুগপত কষ্ট হাতুড়ির ন্যয় আঘাত করতে থাকে!
মধ্যবিত্তের দ্বন্দ্ব নিয়ে লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। মধ্যবিত্ত পুরানের কোন পর্ব মিস করব না, এইটুকু জানি।
।।।।।।।।।
অনিত্র
অজস্র ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আপনার সাথে একমত , মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য মানসিক যন্ত্রনা খুবই প্রকট। আপনার মন্তব্যে দারুনভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
আপনার লেখাটার বক্তব্য/উদ্দেশ্য ঠিক ধরতে পারলাম না।
অনেক বিষয় নিয়েই মন্তব্য করতে পারতাম, শুধু এইটুকু জানাবেন কি, বাবা-মার আর বিকল্প কি করার ছিল?
মধ্যবিত্ত বাবা-মাও তো মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের মতই পরাধীণ বাবামা সন্তানের জন্য তাদের পক্ষে সর্বোচ্চটুকুই করেন সব সময়। তাদের বিকল্প কিছু করার ছিল, অথচ করেননি , এমন কথা বলা আমার উদেশ্য না কিংবা কোনভাবে সেটা বলেছি তাও আমার কাছে মনে হচ্ছেনা। আসলে, বাবামা এবং সন্তান, সবারই এইসব সীমাবদ্ধতা, এই চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্ব এগুলো নিয়েই আবর্তিত হয় মধ্যবিত্ত জীবন।আপনার না করা মন্তব্যগুলো জানতে পারলে প্রীত হতাম । পড়ার জন্য ধন্যবাদ
টেবিলের এক পাশে বসে থেকে সব দেখলে তো হয় না! টেবিলের অন্য পাশে বসে একই জিনিস আবার দেখুন। দেখবেন অনেক কিছুর অর্থ পালটে গেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য। হ্যা, সবকিছুই ভিন্নভাবে দেখা যায় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়। অনেক যন্ত্রণার পরেও, এই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতেই পারিবারিক বন্ধনগুলো দৃঢ় হয় এবং অটুট থাকে। চেষ্টা করব সম্ভাব্য সব রকমভাবে দেখার ও চিন্তা করার জন্য
অত হতাশ হইয়া লাভ নাই। আগে মাইনসের থাকত ৮-১০টা পোলাপান। প্রকৃতির পানি বাতাস খাইয়া বড়ো হইয়া এর মাঝেও বহুত কেউকেটা হইয়া যাইত কেউ কেউ
এখন তো আবার ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া পোলাপান বড়ো করা সম্ভব না। মধ্যবিত্তগো থাকে যে মাত্র এক দুইটা ছেলেমেয়ে তাগো উপর পুরা ক্যাপিটাল ইনভেস্ট কইরা ফালানোর পর ঠিকঠাকমতো রিটার্ন/প্রফিট চাইলে তাদের কেমনে দোষ দেয়া যয়?
না, আসলেই দোষ দেয়া যায়না বাবা-মাকে। এটা আসলে অনেকটা দুষ্টচক্রের মত, বাবামা চায় তাদের জীবনের অপূর্ণ স্বপ্ন-আকাংক্ষাগুলো ছেলেমেয়ের মাধ্যমে পূরণ করবেন কিন্তু সেই ছেলেমেয়ের উপরে যে সেই বাড়তি চাপ অনেক সময় কত প্রচন্ড হয়ে ওঠে তার খোঁজ কে রাখে।সেই ছেলেমেয়েরা যখন ভবিষ্যতে বাবা-মা হয়, তখন তারা বুঝে বাবা-মায়েরা ঠিক কতোটা কষ্ট তাদের জন্য করেছেন।মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মা, সন্তান সবাই আসলে নানা রকম সীমাবদ্ধতা, হতাশার নিগড়ে বন্দী। তার মানে এই না যে, তাদের জীবনে কোন আনন্দ নেই। অনেক সুখময় স্মৃতিও থাকে তাদের। পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সমঝোতা , ভাই-বোনদের জন্য আত্মত্যাগ, খুনসুটি -- বলার মত অনেক কিছুই আছে।পারিবারিক বন্ধনটাও অচ্ছেদ্যই বলা যায় সমাজের এই শ্রেণিতে।
পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
একদম নিজের বর্ণনা পেলাম। খুব ভালো লাগলো লেখা।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম । অনেক ধন্যবাদ
নতুন মন্তব্য করুন