আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় যেই ত্রূটি টি রয়ে গেছে তাহল আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রমে অফিসিয়ালি এথিক্স তথা নৈতিকতার শিক্ষা দেয়া হয় না। যদিও একজন সন্তানকে নৈতিকতার প্রাথমিক - প্রতিনিয়ত এবং সর্বোচ্চ শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব যদিও পরিবারের উপর বর্তায়; বোধকরি সেই দিক থেকে বর্তমান বাংলাদেশের পরিবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যার্থ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়ঃ যদি পরিবারের অভিভাবক দের নূন্যতম নীতিবোধ থেকে থাকত, তাহলে তারা তাদের সন্তানদের কখনই পরীক্ষার আগে ফাস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়ার জন্য সচেষ্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন না। সেই যাই হোক পরিবার নৈতিকতাকে অনেক আগেই গলা টিপে হত্যা করে ফেলছে, আর বিভিন্ন ধর্মও যদি আমাদের জাগতিক ক্ষেত্রে নীতিবান-সত্যবাদী হওয়ার উপদেশ দেয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ এখন ধর্ম বলতে বছরের দুই ঈদ, পুজা অর্চনা, বড়দিনের উৎসব ইত্যাদিই বোঝে। সুতরাং নীতিজ্ঞান এর পাঠশালা এখন আর নেই বললেই চলে। "স্বদেশের বান্দর বিদেশে সুন্দর" - ভিসা রক্ষার্থে বলুন, আর আইনের সুশাসনের প্রতিফল হিসেবেই বলুন - বিদেশে এসেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বদেশের মানুষের চেহারা গুলা পালটে যায়। যিনি দেশে লাল বাতিতেও গাড়ি চৌরাস্তার মোড় দিয়ে চালিয়ে যেতেন, তিনিই বিদেশে এসে হলুদ বাতিতেই ব্রেক চাপেন। আমাদের দেশের সার্টিফিকেট ধারী প্রজন্মের একটা বড় অংশ আসে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার নিমিত্তার্থে। মাস্টার্স কিংবা পি এইচ ডি যেইটাই হোক একাডেমিক লাইফটা শেষ করে যে যার মত ক্যারিয়ার গড়ে নেন। কিন্তু এই একাডেমিয়া তে এসে আমরা এমন সময় এমন অনেক কাজ করে বসি যেইটা আমাদের নিজেদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, এবং ফলশ্রুতিতে পুরো বাংলাদেশী কমিউনিটির বদনাম হয়। ফলস্বরূপ ওই নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এ বাংলাদেশীদের আসার দরজা একরকম বন্ধ হয়ে যায়।
উচ্চশিক্ষার জন্য বর্তমানে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে ফান্ড পাওয়া এখন অনেকটাই দূরহ। আর সেই সাথে প্রতিবছরই আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েই চলে। যার ফলশ্রুতিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্ধারিত বাজেট এ মাঝে মাঝে বেশি ছাত্র নেয়ার জন্য ফান্ড এর পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে দেয়। যেমন হাফ টাইম টি এ এর বদলে কোয়ার্টার টাইম টি এ, কোন ক্ষেত্রে শুধু টিউশন ওয়েভার কিংবা ইন স্টেট টিউশন ফি ওয়েভ এর অফার তারা দেয়। যিনি বা যারা আসেন তারা যেনেই আসেন কে কী পরিমাণ ফান্ডিং পাচ্ছেন। মাস্টার্স এর স্টুডেন্টদের কিছুটা ফ্লেক্সিবিলিটি থাকে তাদের এডাভাইজর সিলেকশন এর ব্যাপারে, কিন্তু যিনি পি এইচ ডি এর জন্য আসছেন কম ফান্ড নিয়ে তিনি একজন সুনির্দিষ্ট এডভাইজার এর আন্ডারেই আসছেন। যিনি আপনাকে নিচ্ছেন তিনি ভাল করেই জানেন যে তিনি আপনাকে পি এইচ ডি স্টুডেন্ট হিসেবে সুপারভাইজ করবেন বলে কিংবা তার রিসার্চ এর প্রয়োজনেই নিচ্ছেন। আপনার যদি সেই ফান্ডিং না পোষায় আপনার আসার কোন দরকার নেই, কিন্তু ডিপার্টমেন্ট এ এসেই ফান্ডিং (যদি কোথাও একটু বেশি ফান্ড পাওয়া যায়) এর জন্য অন্য প্রফেসর এর কাছে দৌড়াদৌড়ি করা এটা নিতান্তই অশোভনীয় কাজ। আপনি যদি মনে করেন আপনার এডভাইজার কিছুই জানবে না তাহলে আপনি ভূল ভাবলেন। আপনি যার সাথেই কথা বলছেন না কেন, তিনি সবার আগে আপনার এডভাইজার কেই ইনফরম করবেন।
দুই, নিজের দোষ অন্যকে দেখিয়ে জাস্টিফাই করা। আমার মাস্টার্স এ পুরা ফান্ডই আসত টি এ এর জব থেকে। দ্বিতীয় সেমিস্টার থেকে যেহেতু রিসার্চ এর প্রেশার বেড়ে যায়, সেহেতু তাল মিলানোর জন্য আমি টি এ এর গ্রেডিং এ টাইম কমিয়ে দিতাম। প্রথম দুই তিন সেট হোমওয়ার্ক ঠিক ঠাক মত দেখে শর্ট আউট করে নিতাম কে ভাল কে খারাপ। এরপর সময় পেলে বাকী হোমওয়ার্ক গুলার গ্রেডিং ঠিকমত করতাম নাহয় এভারেজ মার্ক দিয়ে যেতাম। দুই বছরের আমার কোন সমস্যা হয় নাই। বাংলাদেশ থেকে নতুন কোন ছাত্র আসলেই তারা টি এ এর খাতা দেখার সময় এমন ভাবে দেখে মনে হয় কান্ধের উপর একটা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে, আর তা প্রফেসর এর কাছে লাইভ দেখানো হচ্ছে যে সে কিভাবে গ্রেডিং করে। তাই আমি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমার গ্রেডিং
পলিসি নতুনদের কাছে শেয়ার করতাম এবং তাকে বলে দিতাম সে যাতে কাউকে না বলে। কিছুদিন আগে জানতে পারলাম যে, আমার পলিসি ডিপার্টমেন্ট এ কোন এক বাংলাদেশী ছাত্র এক্সপোজ করে দিয়েছে। সে নিজে গ্রেডিং এ গন্ডোগল করাতে নিজের দোষ জাস্টিফাই করার জন্য আমার নাম নিয়েছে। আমার এক ইথিওপিয়ান বন্ধু ছিল যে আমাদের সবসময় বলত, যদি তোমার ভূল ধরা পড়ে তাহলে সরাসরি স্বীকার করবে, সরি বলবে। কিন্তু অন্যকে দেখিয়ে নিজের ভূলকে জাস্টিফাই কখনও করতে যেও না। এইটা তারা পছন্দ করে না।
তিন, ল্যাবমেটদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় না রাখা। একটা কথা আছে, বিদেশী চোর স্বদেশে এসে হয় প্রভু। আর বাঙ্গালী বিদেশে গেলে ডিপার্টমেনেটের জ্যানিটর এর সাথেও হাই-হ্যালো বলে সুন্দরভাবে কথা বলবে, কিন্তু নিজের স্বদেশী ল্যাব মেটদের সাথে সে বাজে ব্যাবহার করবে। কেউ যদি মনে করেন আপনার স্বদেশী ল্যাবমেটদের সাথে আপনি বাজে ব্যবহার করবেন, কিংবা তাদের পিছে তাদের নামে কথা বলবেন আপনার সুপারভাইজর এর কাছে - সেইটা আপনার সুপারভাইজর কখনই ভাল চোখে দেখেন না। আপনি কাজ কম পারুন কোন সমস্যা নেই, আপনাকে আপনার লেভেল এর কাজ দেয়া হবে, দরকার হলে শিখিয়ে দেয়া হবে, কিন্তু সব প্রফেসর ই চায় তার রিসার্চ টীম একটা পরিবার এর মত থাকুক। সুতরাং ল্যাব মেটদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে অত্যাবশ্যক।
চার, বস ইজ অলওয়েজ রাইট- এইটা কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড এ যেমন প্রযোজ্য ঠিক তেমনি আপনার একাডেমিয়াতেও প্রযোজ্য। আপনার সুপারভাইজার যদি বলে আপনাকে অমুক সেমিস্টার এ তমুক কোর্স নিতে হবে তাহলে আপনার সেইটাই করা উচিত। বিশেষত কনফারেন্সগুলাতে গেলে সব সুপারভাইজর ই চান আপনি ম্যাক্সিমাম সেশনগুলা এটেন্ড করুন। আর অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আপনি যদি শুরুতে আপনার পরিবার নিয়ে না আসেন, এবং যদি পরে আনতে চান তাহলে ক্ষেত্রভেদে কোন সুপারভাইজর যদি আপনাকে বলে আপনার পি এইচ ডি এর কোয়ালিফাইয়িং এর পর পরিবার আনতে তাহলে আপনিই তাই করুন। কোনভাবেই আপনার প্রফেসর কে পিসড অফ করা যাবেনা। তিনি চাইলেই আপনার ফান্ড ক্যান্সেল করে দিতে পারেন। একজন সুপারভাইজার চাইলেই আপনাকে ভালভাবে রাখতে পারেন, আর তিনি যদি কোন কারণে আপনার ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন তাহলে আপনার জীবন তামা তামা করে দেয়ার জন্য তিনি একাই যথেষ্ট।
শেষটা একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করি, আমার আগের স্কুলে এক ইরানী ছাত্রকে এক প্রফেসর বলেছিল পরের ফল কিংবা স্প্রিং এ আসতে। কিন্তু সেই ছেলে সেই প্রফেসর এর কথা না শুনে সামার এ চলে আসে। সামার এ ক্রেডিট নিতে হয় না, তাই বাইরে কাজ করেই সে পার পেয়ে যায়। যথারীতি সে ফল এ দশ ঘন্টার টি এ এবং টিউশন ওয়েভার পায়। তার প্রফেসর তাকে টি এ এর পাশাপাশি রিসার্চ এর কিছু কাজ করতে বলে (উইথআউট পে) কিন্তু সে তা ঠিক মত না করে, একটি রিসার্চ সেন্টারে দশ ঘন্টার কাজ নেয়। এবং এর জন্য সে তার রিসার্চ এর কাজ ঠিকমত করত না। ততদিনে সে তার স্ত্রীকেও নিয়ে আসে। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে ফান্ড শর্টেজ জানিয়ে নেক্সট স্প্রিং এ তার টিউশন ওয়েভার এবং ফান্ড দুইটাই কেড়ে নেয়া হয়।
লেখাটা সম্প্রতি কোন এক স্কুলে একজন বাংলাদেশী ছাত্র এর কিছু কৃতকর্মের পরিপ্রেক্ষিতে লিখা; গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থে মূল ঘটনার কেবল সামান্য হিন্ট দেয়া হয়েছে কিন্তু পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয় নি। মূলত তার কর্মকান্ডের জন্য এখন সেই স্কুলে এখন বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের মান সম্মান আপাতত আকাশ থেকে নেমে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বোধকরি তিনি যেই ডিপার্টমেন্ট এ আছেন সামনের দিনগুলাতে সেই ডিপার্টমেন্ট এ বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী নেয়া একরকম বন্ধ হয়ে যাবে।
লেখাটা নতুনদের জন্য। যারা দেশে নৈতিকতার মা-বাপ এক করে দিয়ে হাওয়া ম্যা উড়তা যায়ে এই স্টাইলে ঘুরে বেড়াতেন তাদের জন্য। কারণ আমার মা একটা কথা সবসময় বলে মানুষ যা করতে প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত সে তা সহজে কখনও ছাড়তে পারে না। বিদেশে আপনার কৃতকর্মের জন্য আপনি শুধু একা না, পুরা বাংলাদেশী কমিউনিটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য
এই অংশের ব্যাপারে নীতিগত সমর্থন জানাতে পারলাম না, দুঃখিত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এইটা ডিপেন্ড করে যার যার পলিসির উপর; সে গ্রেডিং কিভাবে করবে। এই জন্য বেশিরভাগ কোর্সে যেইগুলাতে টি এ থাকে গ্রেডার হিসাবে সেইখানে ফ্যাকাল্টিরা হোমওয়ার্ক এর ওয়েট পার্সেন্টেজ ১০% রাখেন। যাতে খুব বেশি ইফেক্ট না হয়। যাই হোক এইটা যার যার পলিসির উপর।
মানে "পলিসি" দিয়ে "নৈতিকতা" নামের জিনিসটাকে ওভাররাইড করা যেতে পারে?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখক এখানে নিজেই 'অনৈতিক' প্রাক্টিস করেছেন। সেটা আবার অন্যদের শিখিয়েছেন। এবং সেই শেখানোর কথা 'ফাস' হয়ে যাওয়াটাকে তার কাছে অনৈতিক মনে হচ্ছে। এমন নৈতিক শিক্ষা লইয়া আমরা কী করিব!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এইটা ডিপেন্ড করে যার যার পলিসির উপর
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি নৈতিকতা নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন, ব্যপারটা বেশ হাস্যকর।
একবার বলছেন আন্দাজে মার্কিং করছেন। আবার জুনিয়রদের শর্টকাট বিলাচ্ছেন। আর বিলাচ্ছেনও এমন গর্ধভদের যারা ধরা খেয়ে গুষ্টিশুদ্ধ বাঙালিদের মুখে চুনকালি মাখাচ্ছে।
সে করলে গন্ডগোল, আর আপনি করলে পলিসি?
"খাটা সর্ট করে, ভাল খারাপ দেখে নিয়ে, এভারেজ মার্ক দেওয়া" -- এই ব্যপারটা আমার কাছে ঠিক পরিষ্কার হলো না। আমার পরিচিত এক বড়ভাই মফস্বলের ছোট্ট একটা সরকারী কলেজের প্রভাষক, মেসে আমার রুমমেট, উনাকেও এভাবে খাতা দেখতে দেখি নাই। তবে আমি নিশ্চিত উনি আপনার চাইতে অনেক কম বেতন পান। আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে যে এখন বাংলাদেশী ছাত্র নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে তাতে কোন দোষ দেখতে পাচ্ছিনা।
হেডিঙের সাথে একমত যে নৈতিকতা দরকার উচ্চশিক্ষায়। পোস্ট পড়ে সেটা আরো পোক্ত হয়েছে।
আর একজন দুইজনের জন্য যদি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গোটা একটি দেশ বা একটি জনগোষ্ঠিকে স্টেরিওটাইপের মধ্যে ফেলে তাহলে মনে হয় এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দরকার আছে। বস ইজ অলওয়েজ রাইট বলে পরিবার বা নিজের ওপর ওগুলোর প্রভাব টেনে এনে ফেলা কাজের কথা না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মনে হচ্ছে লেখার শিরোনামের সাথে আপনার নিজের কাজকর্মই মিলছে না। নৈতিকতার বাণী বিলানোর আগে নিজে সেটা প্র্যাকটিস করা উচিৎ না?
____________________________
নৈতিক শিক্ষার যে আসলেই দরকার সেটা আপনার পোস্টের দুই নম্বর পয়েন্ট দেখেই আরও বেশি করে মনে হলো। আপনি একটা অনৈতিক কাজকে হালাল করছেন এই লাইন দিয়ে
"দুই বছরে আমার কোন সমস্যা হয় নাই"
অর্থাৎ চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা নৈতিকতা শিখাচ্ছেন আপনি। মন্তব্যে আবার কিসব পলিসি ফলিসি টেনে এনে তালগাছ এর দখল রাখতে চাইছেন।
আপনাকে বলি, আপনাকে যে পরিমাণই হোক একটা অর্থ দেয়া হয় একটা কাজ করার জন্য, আপনার দায়িত্ব সততার সাথে কাজটুকু ঠিকঠাকভাবে করা। ফাঁকিঝুকি দিয়ে না। আপনাকে সুন্দর কাগজে মুড়ে মাটির ঢেলা চকলেট এর দামে বিক্রি করলে কি আপনি বিক্রেতাকে ঠগ জোচ্চর বলতে কসুর করতেন? আপনার "গ্রেডিং শেষ করে জমা দেয়া" হচ্ছে মোড়ক আর গ্রেডিং পদ্ধতি হচ্ছে চকলেট এর জায়গায় মাটির ঢেলা সম। দুইটাই জোচ্চুরি।
বরং যে আপনার কূটবুদ্ধি ফাঁস করে দিয়েছে, সেই খানিকটা বাহবা পাওয়ার যোগ্য। যদিও অন্যকে ফাঁসিয়ে দেয়া প্রশংসনীয় কাজ না, এইরকম বেলায় সেটা ঠিক আছে।
আর নিজের টি এ র অভিজ্ঞতা থেকে বলি, গ্রেডিং শুধু নাম্বার দেয়ার জন্য না, বরং ছাত্ররা যে ভুল করে সেগুলো পয়েন্ট আউট করে তাদের শিখতে সাহায্য করার জন্যও। কোন ছাত্র সেমিস্টারের শুরুতে হাবুডুবু খেলেও যারা লেগে থাকে তারা পরে ভালো করে, এক্ষেত্রে টি এ র সাহায্য অন্যতম প্রভাবক। আবার অনেক ভালো ছাত্র উৎসাহ নিয়ে শুরু করলেও পরে হাল ছেড়ে দেয়, এখানেও টি এ ভূমিকা ফল পরিবর্তন করতে পারে। টি এ শুধু প্রফেসরের কামলা না, নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সমন্ধে সচেতন হবার পরামর্শ দেব।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
এই খবরে [সূত্র] বলা হয়েছে,
আপনার লেখার অংশবিশেষ পড়ে কেন যেন এটা মনে পড়ে গেলো।
মোস্তাফিজুরের পলিসি ঠিক নাই, অভিভাবকেরটা মনে হয় ঠিকাছে। কারণ, ২ কেন ১০-১২ বছরেও উনাদের কোন সমস্যা হয় নাই। তয়, র্যাবের পলিসি ঠিক বুঝলাম না।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দেখুন, আপনার কিছু কিছু জেনেরেলাইজড বক্তব্য সবক্ষেত্রে খাটবে না। অনেক সময়ই এমন কিছু সুপারভাইজর থাকেন যারা অমানুষের মত ব্যবহার করেন ছাত্রদের সাথে। মানসিক টর্চারের পরিমাণ কি পরিমাণ হতে পারে সেটা আমি বেশ কাছ থেকেই দেখেছি। এক বছর আগে এক প্রফেসরের ৯ জন ছাত্রের মাঝে ৮ জন কে একই মাসে গ্রুপ ছেড়ে চলে যেতে দেখেছি।
অনেক সময়ই কিছু কিছু (সবাই না) সুপারভাইজারের সাথে কাজ করাটা মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আর, সুপারভাইজর পরিবর্তন করাটাকে আপনি যেভাবের ট্যাবু হিসেবে দেখাচ্ছেন, সেটারও যথাযথ প্রসিডিউর আছে।
"আর বাঙ্গালী বিদেশে গেলে ডিপার্টমেনেটের জ্যানিটর এর সাথেও হাই-হ্যালো বলে সুন্দরভাবে কথা বলবে, কিন্তু নিজের স্বদেশী ল্যাব মেটদের সাথে সে বাজে ব্যাবহার করবে।"
-এখানে আপনার বাঙালি শব্দটার ব্যবহারে আমার আপত্তি আছে। এরকম কেউ কেউ হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি বেশিরভাগই এরকম না।
আপনি ইরানি ছাত্রের যে উদাহরণ দিলেন, সে প্রসঙ্গেও কিছু কথা বলি। ছাত্রটি যেমন সুপারভাইজরের কথা শোনেনি; সুপারভাইজর কি ভেবে দেখেছেন ১০ ঘন্টার ফান্ডিংএ ঐ ছাত্রের বেঁচে থাকা সম্ভব কিনা? ২০ ঘন্টা কাজের পর রিসার্চে সময় দিতে না পারাটা ঐ ছাত্রের ব্যর্থতা হতে পারে কিন্তু ১০ ঘন্টার ফান্ড দিয়ে আর কোথাও কাজ করা যাবে না -এমনটা বলাও ঠিক না।
আপনি একই সাথে 'ভূল' এবং 'ত্রূটি' বানান অশুদ্ধ লিখেছেন।
শুভেচ্ছা
মাইনাসে মাইনাসে প্লাস, এই পলিসিতে লেখা বোধহয়
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এইভাবে অতিথি কে সম্মান দেখানোর পলিসি আপনি কই শিখছেন?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
দুই বছর দেখি আগে, কোনও সমস্যা না হলে কমু কই শিখছি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন