মেয়ের ঝলমলে জামাটার দিকে তাকিয়ে মন কেমন করে ওঠে মুকুলের। খুব খুশি হয়ে উঠেছে ওর পাঁচ বছরের মেয়েটা, জামাটার মতোই ঝলমল করছে ওর মুখটা। পিঁড়ির উপর বসে মেলায় কেনা আচারটা চেটেপুটে খাচ্ছে ও। এবার পূজোয় কিছু কিনবে না কিনবে না করেও মেয়ের জন্য এই জামাটা না কিনে পারেনি মুকুল, আর কারও জন্যই কিচ্ছুটি কেনেনি।
“আরতি দেইকপার যাবু না, বা?”-আচারটা চেটেপুটে শেষ করে কাগজটা উঠোনে ছুঁড়ে দিয়ে ললিতা জিজ্ঞেস করে, ললিতা মুকুলের মেয়ের নাম।
“না, তুই যা তোর মা’র সাতে”-কথাটা বলে উপরদিকে তাকায় মুকুল, আকাশের অগুণতি তারায় কিছু খোঁজে যেন। ললিতা বাপের দিকে আরেকেবার তাকিয়ে বের হয়ে যায়। মাকে লাগবে না, এইটুকু পথ সে একাই যেতে পারে, আকাশে জোনাক আছে এখন। পাড়ার ও মাথায়ই তো পূজোর প্যান্ডেল, বাবুদের বারোয়াড়ি বড় উঠোনটায়। মুকুল চিন্তা করে না ও নিয়ে, পাড়ার এ মাথা ও মাথা ঘুরেই মেয়েটা ওর পাঁচে পড়েছে, ভাবনার কিছু নেই। পূজোমন্দির থেকে ঢাকের বাড়ি ভেসে আসে, আরতি শুরু হবে একটু পরেই, আজন্মের অভ্যস্ততায় বোঝে মুকুল।
আরতি দেখার কোনো আগ্রহ বোধ করে না মুকুল, পূজোবাড়িমুখোই হয়নি ও এবার। একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ে ওর, বড়বাবুর ছোট ছেলেটার কথাগুলো মনে পড়ে আবার-“মুকুলদা, তোমার ঠাকুরগুলা ভালো হয় না। এইবার সেইজইন্যে অইন্য মালি ডাকাইছি…” সেদিনের অপমান মুকুলকে ছাড়েনি আজ অবধি, মুকুল একবারের জন্যও দেখতে যায়নি সেই অন্য মালির বানানো প্রতিমা। আজও তাই দীর্ঘশ্বাসই সম্বল ওর, পূজোয় যাওয়া হলো না, অঞ্জলি দেওয়া হলো না এবার।
আরতি শেষ হয়ে গেছে সেই কখন। খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েছে মুকুলের পুরো বাড়িটা। চারদিক নিশুতি হয়ে গেছে, মন্দিরের ঢাকও থেমে গেছে অনেকক্ষণ। একঘেয়ে ঝিঁঝিঁগুলো ভয়ানক একঘেয়েসুরে ডাকতে থাকে কেবল। বালিশের নিচ থেকে এক ব্যাটারির টর্চটা নিয়ে আস্তে করে দরজার খিল খুলে বাইরে আসে মুকুল, দরজাটা সাবধানে ভেজিয়ে দেয়। বাড়ির পশ্চিম কোণে গোয়ালের পেছনে গরুর খড় রাখার জায়গায় আসে ও; এখানে মূলত ওরই চলাচল, বউ কালেভদ্রে আসে খড় নিতে। হাতের টর্চের আলো জ্বালিয়ে গাদার উপর রাখে, মাঝামাঝি রাখা ভারি তুষের বস্তাগুলো দুহাতে সরিয়ে দেয়। মাচানের উপর খড় থাকে আগে থেকেই, কেবল তুষের বস্তাদুটো এখানে খুব অল্পদিন রাখা হচ্ছে, মুকুলেরই আগ্রহে। কেউ সরায় না ওগুলো, কেবল এই গত কয়েকদিন বাদে তার আগে প্রায় প্রতিরাতেই মুকুল নিজে হাতে সরিয়েছে ও বস্তাগুলো। বস্তাদুটো সরে গেলে বের হয় মুর্তিটা, টর্চের আলোয় রঙহীন সাদা মুর্তিটাকে অপূর্ব লাগে দেখতে। সোনালি আলোয় দীঘল টানা চোখের লম্বাটে মেটে রঙের মুখখানি খুব মায়াময় মনে হয় এখন মুকুলের। ক্ষুদে হাত দশটায় ক্ষুদে অস্ত্রগুলো, গলার মালা হাতের বালা সব সাদা। রঙ করেনি মুকুল ইচ্ছে করেই, রঙ করলে গন্ধটা ছড়িয়ে যাবে চারপাশে, তখন? আর তাছাড়া মেটে রঙের মা কি কম সুন্দর? জীবনে এই প্রথম বাপের আমলের ছাঁচ ছাড়া মায়ের মুখ গড়েছে মুকুল, নিজেরই মন্ত্রমুগ্ধ লাগতে থাকে নিজের কাজে।
পেছনে কার পায়ের মৃদু শব্দে চমক ভাঙ্গে মুকুলের। কল্পনা, ওর বউ। মুকুলের কেমন লাগে এখন, কেমন একটা ধরা পড়বার অনুভূতি জাগে। ওর এতদিনকার কাজ; কেউ দেখেনি, কেউ জানে না আর এখন! কিন্তু কল্পনার দিকে তাকিয়ে আরও কেমন ধন্দ লাগে মুকুলের। ও চোখে রাজ্যের মুগ্ধ বিস্ময়। আরেকটু কাছে সরে এসে কেমন ঘোরলাগা চোখে কল্পনা বলে-“কী সোন্দর!” মুকুলের কি ভালো লাগে এই প্রশংসায়? কে জানে! কল্পনা কিন্তু মুকুলের চোখে তাকিয়ে আবার বলে-“বড়বাড়ির ঠাকুরখানও তো এত ভালো হয় নাই!”
দেবদ্যুতি
মন্তব্য
ঠাকুর ভালো হয় না, শোনে মুকুল অপমানবোধ করেন। সেই তিনিই যখন বাপের আমলের ছাচ বাদ দিয়ে নতুন ছাচে ঠাকুর বানান তখন বড়বাবুর ছোট ছেলের কথায় অপমানিত হবার কোন কারণ খুঁজে পাই না।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
বাপের আমলের ছাঁচটা মুকুলের কাছে যদি ঐতিহ্য বা পরম্পরা হতো তাহলে হয়তো অপমানিত লাগতো না। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে সেই ছাঁচটা মুকুলের কাছে ঐতিহ্যের চেয়ে বরং বেশি অভ্যাস। মানে ছাঁচে প্রতিমার মাথা গড়া সহজ, এই হচ্ছে আসল কথা, এই অভ্যাসটা মুকুলের রয়ে গেছে হয়তো একটু বেশিই কিন্তু যদি মুকুল কোনোদিন ছাঁচ ছাড়াই সেই মাথা, মুখ গড়তে পারে তাহলে একটা নতুন অভ্যাস হয় কেবল, একটা নতুন সৃষ্টির ধারা তৈরি হয়, তা তার বাপের আমলের ঐতিহ্যকে অসম্মান করে না।
দেবদ্যুুতি
বড়বাবুর ছোটছেলে, একঘেয়ে ছাচ বদল করবে বলেইতো নতুন ঠাকুর আনালো। এখানে অপমানবোধ আসে কেনো?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
বড়বাবুর ছেলের আপত্তিটা একঘেয়ে প্রতিমায়, নিশ্চয়ই। কিন্তু সে প্রতিমা তো কেবল বড়বাবুদেরই নয়-মুকুলেরও বটে। নিজের পাড়ার মন্দির, নিজেও সেখানেই পূজো করে, প্রতিমা তৈরিটা হয়তো অভ্যেসে অভ্যেসে অধিকারের মতো মনে হয়, সেই অধিকারটাই তা সে যতই কল্পিত হোক যখন কেউ কেড়ে নেয়, অপমান তো লাগেই, না? আপনার যুক্তিটা বুঝেছি কিন্তু ধরুন, মুকুল তো আর সেই নতুন কারিগরের মুর্তি দেখে গড়ছে না কেবল সে নিজে নতুন কিছু গড়তে পারে কি না-এটাই ছিল তার মনোভাব। লেখকের খামতি আছে অনেক, বুঝলাম আবার
দেবদ্যুতি
ইয়ে, ধারা ২ (ক) মোতাবেক পুজো-আর্চ্যা নিয়ে লেখালেখি কি অসাংবিধানিক?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইয়ে ধারা ২(ক) যেন কী? বুঝি না তো
দেবদ্যুতি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তাড়াতাড়ি কন না জিনিসটা কী। মানুষরে এমুন আন্ধারে রাখা কি ঠিক?
দেবদ্যুতি
অফ যান, মতিদি মাইর দিবে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হুদাই পেজগি লাগান কেন র্যা? না, অসাংবিধানিক না।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তুমিই আমারে কও তো, ব্যাফাট্টা কী!
দেবদ্যুতি
গল্পের বুনন ভাল লেগেছে। সবকিছু ছাপিয়ে উঠে এসেছে পারিবারিক আবেগ-অনুভূতি, আর সেই কারণেই ছুঁয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
মুকুল নিজেও জানে, ' বাপের আমলের ছাঁচ' এখন আর চলে না, তাই বড়বাবুর ছোটছেলের কথাটা তার কাছে যতটা না অপমানের, তার চেয়েও বেশী লজ্জার! ব্যাপারখানা এমন, আমি একটা জিনিস পারছি না, পিছিয়ে আছি নতুনদের থেকে, গ্লানিবোধে ছেয়ে আছে মন, এই অবস্থায় কেউ যদি আমাকে মুখের উপর দু কথা শুনিয়ে দেয়, তখন তা ভীষন কষ্টকর, ভীষন অপমানজনক হয় বৈকি! আর এই কষ্ট ও অপমানের অনুভূতিকে তখন আর আলাদা করা যায় না, একসাথে মিলেমিশে এক অবিমিশ্র অনুভূতির জন্ম হয় তখন!
এরপর সেই আমার মধ্যে তৈরী হয় তীব্র জেদ, আমিও পারি দেখিয়ে দিতে! শেষমেষ, নতুন আলোর মিছিলে পৌঁছুতে পারলে যে আনন্দ হয়, তা ছাপিয়ে যায় অতীতের সব গ্লানি-অপমান-দুঃখ-কষ্ট!
(আমি এভাবেই পড়লাম গল্পটিকে। ভুল হলে আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।)
।।।।।।।।
অনিত্র
ধন্যবাদ, অনিত্র চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশের সাথে সহমত, মুকুলের অপমানবোধটার সাথে আছে কষ্ট, গ্লানি আর দুঃখের অবিমিশ্র অনুভূতি। কী জানেন, ইচ্ছে ছিল একটা অনুগল্প লিখব তাই শব্দ যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করেছি। অনুগল্প লিখতে পারলাম না, মাস্টারি নাই মাঝখান থেকে কতগুলো কথা লেখা হলো না!
মন্তব্যের দ্বিতীয় অংশের সাথে খানিকটা দ্বিমত আছে। মুকুলের জেদটা ছিল মূলত নিজেকেই পরখ করে দেখার, একান্তে। সে নিজে আদৌ কিছু পারে না, তাই দেখতে চাওয়ার আগুনটা ছিল। এজন্যই অমন লুকিয়ে চুরিয়ে মুর্তিটা বানানো। কিন্তু বেচারা ধরা পড়ে গেল শেষমেষ!
ভালো থাকুন।
দেবদ্যুতি
ভালো হত তোমাকে বার্তা পাঠাতে পারলে। আশা করা যায় সে দিনের জন্য আর বেশী অপেক্ষা করতে হবে না।
এ গল্পটিকে আমি তোমার অন্য সময়ে অনেক ঘষামাজা করা একটা গল্পের বীজ হিসেবে মনে রাখতে চাই। একটা প্রশ্ন করে রাখি - নিজে হাতে কখনো মূর্তি বানিয়েছ কিংবা খুব কাছে থেকে দেখেছ কাউকে বানাতে দিনের পর দিন - ছাঁচের/খড়-মাটির, ছোট-বড় মুস্কিল আর তার আসানের দিনগুলিতে? এ গল্পে লেখক কিন্তু দূরে থাকা মধ্যবিত্তের চোখ দিয়ে দেখছেন না। মালির ঘরে হাজির হয়ে তার সাথে মূর্তি গড়তেও লেগে গেছেন। কিছুটাও যদি সে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে, ফিরে লেখার সময় গল্পের খড়-বাঁশের টাইট কাঠামো বানানো এবং শেষ টানের কারিকুরি - দুয়েতেই কাজে আসবে। লেখা চলুক।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এদ্দিন পর চোখে পড়ল বুঝি তবে? কী জানো, আমার বড্ড বেখেয়াল স্বভাব। আর ওই যে ঘষামাজার কথা বলেছ, জীবনে আজ পর্যন্ত কেবল চাকুরির ক্ষেত্রে ছাড়া কোনোকিছুতে ঘষামাজা করা হলো না, হলোই না। গল্পের প্লটটা মাথায় ছিল বেশকিছুদিন ধরে, অবশ্য পুরো প্লট নয়, কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ তা ঠিক করতে পারছিলাম না কিছুতেই। লিখতেও বসা হচ্ছিল না কিছুতেই, সেদিন বসে কী যে লিখলাম, নামটাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
আর দিনের পর দিন মুর্তি গড়তে দেখেছি আমি, অনেকগুলো বছর, বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কাটা থেকে, খড়ের কাঠামোতে সুতলির (পাটের চিকন দড়ি) গিঁট, তারপর একমাটি, দোমাটি, তেমাটি শেষে প্রথমে সাদা পরে অন্যান্য রঙ, সব... আমাদের বাড়িতেই পূজো হয়, এমনই এক মুকুল গড়ত প্রতিমা, তার বাপও গড়ত বেঁচে থাকতে। বছর চারেক হয় সে বাদ হয়ে গেছে। নতুন কারিগরের বানানো বাহারি মুর্তিতে আমাদের প্রতিমা রীতিমতো শহরের প্রতিমাকে টেক্কা দেয় এখন। মুকুলের কষ্ট কাউকে ছোঁয় কি না জানিনা, মুকুলকে যে খুব গভীরভাবে ছোঁয় তা বুঝি... লিখতে পারলাম না গল্পটা ঠিকমতো, তোমার কথায় আর নিজের উন্নতির জন্য নিশ্চয়ই গল্পটা নতুন করে লিখব, লিখবই। অফিসের কাজের বাইরেও না হয় ঘষামাজাটা শুরু করব এবার।
ভালো থেক। কতদিন লেখো না তুমি, দা’ভাই?!
দেবদ্যুতি
দা’ভাই, পরামর্শ দেবে না ঘষামাজা করা গল্পটার জন্য? পরামর্শ চাই
দেবদ্যুতি
একটা তথ্য চাই, কেউ দয়া করে দেবেন? অতিথি লেখক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করার পর ই-মেইলে সচলের অটোমেটেড রিপ্লাইয়ের পাসওয়ার্ডে ক্লিক করলে কি রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যায়? মানে মেইলে তো লেখা থাকে যে সচল অতিথিকে জানানোর পর পাসওয়ার্ডটা দিয়ে নিজ ব্লগে (অতিথি) লগেইন করতে হবে-নাকি?
দেবদ্যুতি
নিবন্ধনের পর যে অ্যাকাউন্টের তথ্য নিবন্ধনকারীর কাছে ই-মেইলে যায়, সে অ্যাকাউন্টটা প্রাথমিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে। সে অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করার আগে নিবন্ধনকারীকে "অতিথি লেখক" অ্যাকাউন্ট দিয়ে ঢুকে সচলে পোস্ট করতে হবে আর নিজের নিক উল্লেখ করে কমেন্ট করতে হবে। এটাও ঐ ই-মেইলে বুঝিয়ে বলা আছে। কিন্তু ঐ অংশটা কেউ পড়ে দেখেন না সচরাচর।
হিমুদা’, ঐ অংশটা আমি পড়েছি কিন্তু তার আগেই পাসওয়ার্ডটায় একবার ক্লিক করে ফেলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম যে এতে কোনো ঝামেলা হয় কি না।
দেবদ্যুতি
ললিতাকে নিয়ে একটা উটকো আশঙ্কা জেগেছিল। সেটা সত্যি হয়নি বলে বেশ স্বস্তিবোধ করছি।
নিজে লিখতে পারিনা যেহেতু সেহেতু কথা বাড়িয়ে কাজ নাই। গপটা ভালোই লেগেছে আমার।
দাদাইয়ের কথা মতো ঘষামজায় গল্প খোলতাই হবে নিশ্চয়ই। সময় সুযোগ মতো সেটা করে পড়তে দিও কিন্তু!
ভালো থেকো।
তুমি লিখতে পারো না সে কী কথা হে! তবে সচলে খুব কম লেখ বটে, কী করা যায় তোমার লেখা পাওয়ার জন্য, কও তো!
দেবদ্যুতি
আমাদের বিদ্রোহ-
অমানিশা পার হতে
আলোকের পথে---মুক্তির
যাত্রায় এ পথ আমার বুঝি
শেষ হবার নয়"
(নেলসন ম্যান্ডেলা)
:- আপনার নাম কোথায়, পাঠক?
দেবদ্যুতি
প্রথমটায় ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে। শেষটায়, কি সোন্দর! বাক্যটা যেন মুকুলের মতো বিমোহিত করলো।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অনেক শুভকামনা জেন।
দেবদ্যুতি
ছোট আকারে গুছিয়ে লেখা আমার দ্বারা রীতিমতো অসম্ভব কাজ মনে হয়; আপনি যা পেরেছেন।
গল্প পড়া শেষ করে প্রথম কমেন্ট কারীর মত আমার মনেও একই প্রশ্ন এসেছিলো। অনিত্রের পড়ার দৃষ্টি ভঙ্গী ভালো লেগেছে। সাথে সবার কমেন্টও।
নতুনত্ব বা পরিবর্তন সবসময় খারাপ নয়, সময়ে সময়ে ভালোও। তাই হয়তো মুকুলের ভালোলাগার সাথে আত্মবিশ্বাসের একটা ব্যাপারও জড়িত ছিল।
ভালো থাকবেন।
অপর্ণা মিতু
অজস্র কৃতজ্ঞতা জানবেন। নতুনত্ব বা পরিবর্তন সবসময় খারাপ তো নয়ই, কখনও কখনও নিজের জন্যই প্রয়োজন হয়, এটাই বলবার প্রয়াস ছিল ।
দেবদ্যুতি
শুরুতেই বুঝেছি এটা আপনার লেখা।
গল্প দারুন লাগলো। আর মুকুলের মানে লাগার বিষয়টাও অযৌক্তিক লাগেনি একেবারে।
তবে মাঝে ললিতা বিষয়ে একটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। মন্তব্যে জানলাম একই শঙ্কা আয়নাদিও করেছেন। এই শঙ্কা ফলেনি। ধন্যবাদ। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে শঙ্কাটা দেখা দিল। এড়াতে পারলাম না। গল্পটা মাথায় রয়ে গেল, তার সাথে রয়ে গেল আমার এই শঙ্কা। কতটা ফেরারি হয়ে গেলে গল্প-পাঠেও মানুষ এমন শঙ্কায় ভুগতে থাকে। মূলত এই প্রশ্নটা তুলতেই মন্তব্য ঘরে আসা।
অনেক শুভেচ্ছা জানবেন।
স্বয়ম
অজস্র ধন্যবাদ, স্বয়ম। অনেক বেশি দুর্বল গাঁথুনির লেখা হয়েছে এটা, এ কথা জানি এবং মানি। আর ললিতার বিষয়ে আশঙ্কা হওয়াই স্বাভাবিক আচমকা কারণ আমরা বুঝে গেছি তো মানুষের আজন্মের বেড়ে ওঠা গ্রাম এমনকী ঘরও অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপদ নেই আর। ফেরারি হয়ে গেছি হয়ত আমরা সকলেই, কেউ একভাবে, কেউ অন্যভাবে কিন্তু কিছুতেই এই চিন্তাগুলো দূরে সরানো যায় না কখনও... আপনি লেখেন না কেন, বলুন তো? শুভকামনা জানবেন।
দেবদ্যুতি
নতুন মন্তব্য করুন