পশ্চাদানন্দ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৪/১১/২০১৫ - ১:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যে দেশে বসবাস করেন সে দেশের আইন, সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যবোধ, ভালবাসা-খারাপবাসাকে গুরুত্ব দেবেন না, তা কি হয়? জার্মানিতে বসে হেইল হিটলার আপনি বলতে পারেননা। ভুল বললাম, পারবেন না কেন? নিশ্চয়ই পারবেন, কেবল মনে রাখতে হবে যে মুখটা যেমন আপনার, পশ্চাতটিও আপনারই। পশ্চাতাতঙ্কের কারণে বেশির ভাগ মানুষই মুখ সামলে চলেন। তারপরও কথা হয়, অনেকেই কথা বলেন। ডাক দেন সমাজ পরিবর্তনের। কিছু মানুষ বরাবরই থাকেন বিদ্যমান ব্যাবস্থায় যাদের আপত্তি নেই। আবার সমাজ পরিবর্তনের কথা যারা বলছেন তাদেরও রয়েছে নানান মত। কেউ সেকুলার সমাজের স্বপ্ন দেখেন, কেউ সাম্যবাদের, কেউ মুসলিম বাংলার। সেটিই স্বাভাবিক, সব সমাজ ব্যাবস্থা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন তো কোনও কথা নেই।

একদল রয়েছেন যারা একটু অন্যরকম, এরা মুখ ফুটে বলেননা ঠিক কী চান অথচ প্রতিনিয়ত উদ্বেলিত পশ্চাদোন্মাদনায়। এরা পশ্চাদানন্দ। কী করে চিনব এদের? পশ্চাদানন্দদের দারুণ পছন্দের শব্দ হচ্ছে ‘বিভক্তি’। এরা চান সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে। এদের রাতে ঘুম হয়না দেশের কী হবে সেই চিন্তায়। এরা অন্যদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, দেশ সে কেমন জিনিস? দেশ যদি একটা ভূখন্ড হয় তাহলে আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ। আর দেশ যদি হয় একটা স্বপ্নের নাম?

আমি যখন বলি আমি বাংলাদেশ কে ভালবাসি তখন কেবল একটি মানচিত্রের কথা ভাবিনা। আমার চিত্রকল্পে প্রতিফলিত হয় সাড়ে সাত কোটি মানুষের স্বপ্ন আর তিরিশ লক্ষ শহীদের স্মৃতি। যদি আমাদের স্বপ্ন হয় বিপরীত, স্মৃতি হয় সাংঘর্ষিক তাহলে আমি আর আপনি একই দেশকে ভালবাসিনা।

বিভক্তিতে আপনার আপত্তি জনাব? কই, খালেদা জিয়ার কাছে যখন শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যার চাইতে আলবদর পুত্রের বক্তব্য বেশি গ্রহণ যোগ্য হয় তখন তো আপনি বিভক্তির কথা বলেন না! সিংহ সন্তানের অশ্রু মাড়িয়ে খট খট করে লাফিয়ে চলা মারখোর শাবক কে কোনও দিন বলেছেন কি “তফাৎ যাও’? আপনার হৃদয়, যদি এই রকম কিছু আপনার থেকেই থাকে, রাজাকার জায়ার দুঃখে হুহু করে কাঁদে। আপনি হেঁচকি তুলতে তুলতে বলেন, আর কত অশ্রুপাত? আমি জাহানারা ইমামের কথা বললেই আপনি সব বিভক্তি ভুলে নতুন স্বপ্ন নির্মানের কথা বলেন। আপনার অধিকার রয়েছে বলার, বলে যান। কেবল মনে রাখবেন, মুখটা যেমন আপনার, পশ্চাতটিও আপনারই।

-----মোখলেস হোসেন


মন্তব্য

তানিম এহসান এর ছবি

বাঙালী পশ্চাতে কানা!

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার অধিকার রয়েছে বলার, বলে যান। কেবল মনে রাখবেন, মুখটা যেমন আপনার, পশ্চাতটিও আপনারই।

@জিল্লুর রহমান সোহাগ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পশ্চাদানুভূতিতে আঘাত পাওয়া উচিৎ, নাকি নন্দানুভূতিতে? বুঝতাছিনা! চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।