১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল। সেদিন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হেনরি কিসিঞ্জার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম পাকিস্তান সংক্রান্ত পলিসির ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে একটা মেমোরেন্ডাম পাঠিয়েছিলেন। মেমোরেন্ডামে তিনটি অপশনের কথা লেখা ছিল।
প্রথম অপশন ছিল যে কোন রাজনৈতিক আর সামরিক কর্মসুচীতে ইয়াহিয়া খানের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা। কিসিঞ্জারের মন্তব্য ছিল এতে ইয়াহিয়ার সাথে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। তবে তার মতে এটাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর পশ্চিম পাকিস্তান দুদেশেরই রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।
অপশন নাম্বার টু' তে নিরপেক্ষ অবস্থানের কথা বলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে পূর্ব আর পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সম্পদের সমান বণ্টন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সকল রকম অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ রাখতে হত। পাকিস্তানকে অস্ত্র আর গোলাবারুদ সরববাহ স্থগিত রাখার ব্যাপারটাও ছিল এই অপশনটাতে। ব্যাপারটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারন মানুষের সমর্থন পাওয়া যাবে। তবে কিসিঞ্জারের মতে এতে শুধু পূর্ব পাকিস্তানেরই সুবিধা হবে।
তিন নম্বর অপশনটা আসলে লাঠি না ভেঙ্গে সাপ মারার পুরানো নীতি। এই পলিসিতে ইয়াহিয়াকে অর্থনৈতিক সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। তবে কংগ্রেসের আপত্তির আশংকায় পাকিস্তানে অস্ত্র গোলাবারুদ পাঠানোর ব্যাপারে সর্তক অবস্থানের কথা বলা হয়েছে। এ কৌশল বিষয়ে কিসিঞ্জার বলেছে এতে ইয়াহিয়া খানের প্রতি সম্পর্ক ভালো থাকবে আর দুদেশের নিজেদের স্বার্থের জন্য এটা কম ক্ষতিকর হবে। এই পলিসির প্রতি তার নিজের সমর্থনের কথা সে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে লিখেছিল।
মে মাসের ২ তারিখ নিক্সন মেমোরেন্ডামে কিসিঞ্জারের পছন্দকে অনুমোদন দিয়েছিল। স্বাক্ষরের নিচে প্রেসিডেন্টের হাতে লেখা কমেন্টটা বেশ আলোচিতঃ "টু অল হ্যান্ডস, ডোন্ট স্কুইজ ইয়াহিয়া এট দিজ টাইম"। "ডোন্ট" শব্দটার নিচে তিনটা আন্ডারলাইন ছিল!!
তথ্যসূত্রঃ ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ।
সদস্যনাম: সৌমিত্র
মন্তব্য
মাত্র একটা চিঠি নিয়ে পোস্ট না করে আরও কিছু যোগ করতে পারতেন। লেখাটার কলেবরের সাথে গুরুত্বও বাড়তো এতে। তারপরও যতটুকু হলো, তারজন্য
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমারও সেটা মনে হচ্ছে। এ জাতীয় সব ডকুমেন্ট নিয়ে একটা কমপ্লিট লেখা লিখতে হবে।
নীড়পাতা থেকে আপনার এ পোস্টটি সরার পর পরবর্তী পোস্টটি দিন। সচলায়তনে এক লেখকের একাধিক পোস্ট নীড়পাতায় একই সাথে দৃশ্যমান রাখা হয় না। ধন্যবাদ।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে অবগত হলাম। পোস্টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সদস্য নামঃ ব্লগারাতিদ্য
নিক্সনের হাতে লেখা নোটটা আরেকটা কারনে খুবই ইন্টারেস্টিং, ইয়াহিয়া নামটির বানান। নিক্সন এভাবে লিখেছেন-
ডোন্ট স্কুইজ "ইয়াইয়া" এট দিজ টাইম।
বিদেশিরা তো নামের বানানের ক্ষেত্রে খুব কেয়ারফুল হয়। নিক্সন ভুলভাবে লিখল কেন কে জানে!
নতুন মন্তব্য করুন