ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর বাদ্যযন্ত্র

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০১/২০১৬ - ৮:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছুদিন আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক অবসরে গেছেন। তিনি ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনাতে সস্ত্রীক এসেছিলেন। স্ত্রীকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন "ও এমন একটা দেশ থেকে এসেছে যেখানে পৃথিবীর অনেক বড় বড় মিউজিশিয়ান জন্মেছে"। আমার এই অধ্যাপকের অনেক বয়স হয়েছে। এখন ভাঙ্গা ভাঙ্গা উচ্চারণে কথা বলেন। ভেবেছিলাম বয়সের কারণে হয়ত সব ভুলেটুলে গেছেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন বিদেশির এরকম ধারনা আছে নাকি! প্রতিদিন একটু একটু করে তিনি অফিস থেকে বইপত্রের পাহাড় সরিয়ে নিচ্ছিলেন। একদিন ভিতরে ডাকলেন। অনেক পুরানো কিছু গ্রামাফোন রেকর্ড বের করে দেখালেন। তার একটা ছিল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর! নাহ, আমার বৃদ্ধ অধ্যাপক ভুল করেন নাই। আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জন্ম নেয়া সুর সম্রাটকে ভুলে গিয়েছি। আমি দুষ্প্রাপ্য সে রেকর্ডের ছবি তুলে রেখেছিলাম।

বিশ্ববিখ্যাত সেতার বাদক পণ্ডিত রবিশঙ্কর ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর শিষ্য। অন্যান্য শিষ্যদের মত রবিশংকর উনাকে বাবা ডাকতেন। প্রিয় গুরুকে নিয়ে তিনি লিখেছিলেন ‘‘শেখবার সময় কয়েক বার দেখেছি তাড়াতাড়ি তুলে ফেলতাম বলে উনি খুব খুশি মেজাজই আমাকে শেখাতেন। যে দিন হয়তো ওঁর মেজাজটা আগে থেকেই খিঁচড়ে থাকত, ওঁর মুখটা মেঘাচ্ছন্ন দেখতাম, সে দিন আমারও মাথাটা কী জানি কীরকম ভোঁতা হয়ে যেত। ওঁর শেখানো জিনিসগুলো তুলতে অযথা দেরি হয়ে যেত। মারধর বা গালি না জুটলেও বুঝতাম বাবার মেজাজ আরও বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এবং তা প্রকাশ পেত তাঁর গলার কর্কশতায় এবং আওয়াজের ভলিউমের তারতম্যে। এ রকম অবস্থায় প্রায়ই দেখতাম বেশ কড়া সুরে বলছেন, তুমি বাজাও। বলেই উঠে যেতেন। আমার তো তখন বাজনা মাথায় চড়েছে। অভিমানে চোখ ফেটে জল আসত। ভাবতাম মাথায় থাক বাজনা, আজকের বিকেলের ট্রেনেই এখান থেকে বিদেয় হব। যা হোক, এরকম পরিস্থিতি প্রায়ই দেখতাম। কিছু পরে উনি ফিরে এসে ঠান্ডা মাথায় আবার শেখাতে শুরু করতেন। অথবা বলতেন, যাও বাড়ি গিয়ে রেওয়াজ করো। পরে জানতে পেরেছিলাম— এখন ভাবলে হাসি পায়— যে উনি আমার ওপরে রাগ পুরোপুরি প্রকাশ করতে না পেরে, ফ্রাসট্রেটেড হয় একেবারে বাইরে চলে যেতেন। যাকে পেতেন তার ওপরই চেঁচামেচি করে রাগটা খালাস করে দিতেন, আর তার বেশি হলে অন্য কোনও ছাত্রকে দু’ঘা মেরে অথবা কোনও পাড়ার কুকুরকে লাঠির বাড়ি মেরে নিজের রাগটুকু ঝরিয়ে দিতেন। এবং সে রকম কাথারসিস হয়ে গেলে আমাকে শেখাবার জন্য আবার ফিরে আসতেন"।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ছেলেরা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ভাংচুর করে উনার স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে একজন মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর কারণে এ হামলা চালানো হয়েছে। খবরে লেখা হয়েছে সংগীতাঙ্গনে ঘণ্টাখানেক ধরে জ্বলতে থাকা আগুন নিভে গেলে তারা ওই এলাকা ছাড়ে। জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া-বি বাড়িয়ার ফেসবুক পেজ থেকে লেখা হয়েছে "ব্রেকিং নিউজঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এ,এস, পি তাপস রঞ্জন ঘোষ ও ওসি আকুল বিশ্বাস ( দুই মালুয়ান) কে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং চট্টগ্রাম থেকে মাহবুবুর রহমানকে এ,এস,পি পদে নিয়োগ করা হয়েছে"।

এই ঘটনার যথার্থ বিচার চাই বলে লোক হাসাতে চাই না। বাদ্যযন্ত্র পোড়ানোর আবার বিচার আছে নাকি!

_________________
সৌমিত্র পালিত


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

পত্রিকার পাতায় মাদ্রাসার হুজুরদের বিশাল কর্মযজ্ঞের ছবি দেখেছিলাম সে বহু বছর আগে। এয়ারপোর্টের সামনে বাউল ভাস্কর্যের মাথায় দড়ি বাঁধা হয়েছে। টেনে নামানো হচ্ছে। এত সংবেদনশীল একটা জায়গার সামনে এমন বিশাল কর্মযজ্ঞে বাঁধা দেওয়ার কেউ ছিল না। পরে আর কারও সাহসই হয়নি সেই ভাস্কর্য পূনঃস্থাপন করার।

আর এতো সামান্য বাদ্যযন্ত্র। সারারাত আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহালেও কেউ তাদের থামাতে আসতো কিনা সন্দেহ।

--
ঘুমকুমার

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম। "খাঁচার ভিতর অচিন পাখি" নাম ছিল ভাস্কর্যটির।
____________
সৌমিত্র পালিত

অনার্য তাপস এর ছবি

এভাবেই ক্রমশ আমরা দেউলিয়া হয়ে পরছি। বাংলাদেশের সামাজিক ইতিহাসের প্রামাণ্য উপাদানের প্রায় কিছুই পাওয়া যায় না। দুটি ঐতিহাসিক ঘটনা আমাদের সামাজিক ইতিহাসের প্রামাণ্য উপাদান বিনষ্ট করেছে। এর একটি হলো দেশ ভাগ অন্যটি মুক্তিযুদ্ধ। দেশভাগের সময় যা বেঁচেছিলো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে সেটা ধ্বংস হয়েছে। আর বলতে কুণ্ঠা হয়- বাকি যাও ছিলো সেটা এখন বিনষ্ট হচ্ছে। তারপর আর কিছুই থাকবে না। সম্ভবত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ এর স্মৃতিবিজড়িত ওই বাদ্যযন্ত্রগুলো ছাড়া আর কিছুই বাংলাদেশে ছিলো না। এখন সেগুলোও শেষ হলো। এখন থেকে আমাদের বলতে হবে- তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাদ্যযন্ত্রগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো!

অতিথি লেখক এর ছবি

"এখন থেকে আমাদের বলতে হবে- তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাদ্যযন্ত্রগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো!" লাইনটা পড়ার পর বুকটা কেমন যেন হু হু করে উঠল।
___________
সৌমিত্র পালিত

দেবদ্যুতি এর ছবি

আগাগোড়া ভুল বানানে ভরা ওই মাদ্রাসার পেইজটা ঘুরে এলাম। ‍কিছু মানুষকে কী অসীম ঘৃণা করতে শেখানো হচ্ছে, ওরা শিখছে, হিংস্র হচ্ছে, হয়েই চলেছে। তারপর আমরাই ওদের ভয় করতে শিখে যাচ্ছি, ভয় করছি। নিজের কিংবা খুব বেশি হলে নিজের খুব আপনজনের কোনো ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই আমাদের ভাবাচ্ছেও না। আমরা শিকড় হারিয়ে আক্ষরিক অর্থেই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি ক্রমশ। তাই ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর বাদ্যযন্ত্রগুলোর পুড়ে যাওয়ায় মানুষের কিচ্ছু এসে যায়নি, যাবেও না। ওরাই জিতে যাবে, প্রশাসন ওদের কথা মেনে নেবে রোজ...

...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”

অতিথি লেখক এর ছবি

ওরাই জিতে যায়, প্রশাসনের সাথে ওদের সফল আলোচনা হয়। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জিপিওর পুরানো ডাকটিকেটের আর্কাইভে ছবিই হয়ে থাকবেন।

"মানুষের কিচ্ছু এসে যায়নি, যাবেও না"।
___________
সৌমিত্র পালিত

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ।
___________
সৌমিত্র পালিত

অতিথি লেখক এর ছবি

মাদ্রাসা “ছাত্র”দের কথা বাদ দেন, আমাদের বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের মধ্যে কতজন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ আর পণ্ডিত রবিশঙ্করের বিষয়ে জানে বা আগ্রহী বলে মনে হয়?

-পিয়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশে এখন ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল হয়। বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতরা সেখানে শুনতে যান। কোনদিন ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক না শোনা অনেকে প্রোগ্রামে যাওয়ার পর মুগ্ধ হয়ে ফেরেন। আর দোষটা তো বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতদের না। এত এত টিভি চ্যানেলের মধ্যে কারা এই কিংবদন্তীদের প্রচার করে, বলেন! যদি বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতরা "কনসার্ট ফর বাংলাদেশ" এর কথা না জানে, তার দায় ওদের কতটুকু আর অন্যদের কতটুকু! ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র শিষ্যরাই তো এর আয়োজক ছিলেন। তবে মাদ্রাসার ছেলেরা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'কে চেনে! তাই তারা আগুণ লাগায়, বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়।

বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি ছিল বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ২০০১ সালে তালিবান নেতা মোল্লা ওমরের নির্দেশে পাহাড়ের গায়ে ডিনামাইট বিস্ফোরণে বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি ধ্বংস করা হয়। পৃথিবী থেকে একটা ঐতিহ্য চিরতরে হারিয়ে গেল। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ আমাদের ঐতিহ্য। এটা আমরা ভুলে গেলেও হামলাকারীরা কিন্তু ভুলে যায় নাই। কারণ ওরাও কিন্তু মোল্লা ওমরের মত কারো কাছ থেকে শিক্ষা পাচ্ছে।

অনার্য তাপস উপরের মন্তব্যে পড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয়। তিনি লিখেছেন "সম্ভবত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ এর স্মৃতিবিজড়িত ওই বাদ্যযন্ত্রগুলো ছাড়া আর কিছুই বাংলাদেশে ছিলো না। এখন সেগুলোও শেষ হলো। এখন থেকে আমাদের বলতে হবে- তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাদ্যযন্ত্রগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো!"
___________
সৌমিত্র পালিত

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাস্তান হতে আর কত দেরী পাঞ্জেরি?

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

এক লহমা এর ছবি

মন খারাপ

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

দুই মালুয়ান কে প্রত্যাহার করা হয়েছে

এইটা তাহলে আসল ব্যাপার!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের দেশটার শ্লোগান ছিল "বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রীষ্টান, বাংলার মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালী"। এখন হয়ে যাচ্ছে "বাংলার 'মালুয়ান', বাংলার মুসলমান..."!
___________
সৌমিত্র পালিত

ফাই সিদ্ধি এর ছবি

লালনের ভাষ্কর্যের জায়গায় এখন 'আল্লাহু' স্তম্ভ।ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতি সংগ্রহশালায়েএখন হয়ত গেড়ে উঠবে কোন মসজিদ বা মাদ্রাসা।শফি হুজুরের মত ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বড় হুজুরাও হয়ত জমি পাওয়ার ব্লাকমেইলিং তত্ত্ব শিখে ফেলেছেন। এদেশে মাদ্রসার ছাত্রদের মত মাদ্রাসার বাহিরের কোটি কোটি মানুষ লালনের গান শুনে তৃপ্তি নেয়, রাত জেগে শীতে হাজার হাজার মানুষ শ্রাষ্্রীয় সংগীতে অংশ নিয়ে প্রীত হয় আবার লালন ভাষ্কর্য ভেঙ্গে, সুর সম্রাটের বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে স্বর্গ-পূণ্য লাভে শুকরিয়া আদায়ও করে--কি অদ্ভুদ ভন্ডামি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।।।যাহোক কষ্ট হলে ও এটাই মেনে নিতে হবে-

এঝটনার যথার্থ বিচার চাই বলে লোক হাসাতে চাইনা।বাদ্য যন্ত্র পোড়ানোর আবার বিচার আছে নাকি!

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু আলাউদ্দিন খাঁর প্রতি পণ্ডিত রবিশংকরের ভালবাসার কিছুটা এ তিন মিনিটের ভিডিওতে আছে। দেখেন, আমরা নিজেদের হাতে কি ধ্বংস করে যাচ্ছি।
___________
সৌমিত্র পালিত

মেঘলা মানুষ এর ছবি

রেগে টং

গৌতম হালদার এর ছবি

পৃথিবী এমনই।
বন্ধুত্বের ছদ্মাবরণে যেমন ঘাতক লুকিয়ে থাকে- সময়ে জিঘাংসা চরিতার্থ করার মানসে, ঠিক তেমনি সেক্যুলারিজমের ভেতরেও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে স্বীযস্বার্থ উদ্ধারে তত্পর এজেন্ডাবাহক ভাড়ায়খাটা স্বঘোষিত "বুদ্ধিGB" । এদের মাথায় যে কয় GB ঘিলু , তার সবটাই ব্যবহার করে নির্দেশক প্রভুর মনোরঞ্জনের নিমিত্তে।
ব্রাহ্মনবাড়িয়া সহিংসতায় যারা মৌলবাদকে, মৌলবাদী নগ্ন থাবাকে "নর্তকীর সুনিপুণ নৃত্যকলা" বলে আড়াল করার প্রচারে লিপ্ত তারা মূলত মৌলবাদেরই ধারক-বাহক কিংবা সুবিধাভোগী।

অতিথি লেখক এর ছবি

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গনে হামলার প্রতিবাদে আমাদের সংগীতশিল্পীসহ বিশিষ্টজনেরা বিবৃতি দিয়েছেন। "সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে ধর্মের নেই কোনো বিরোধ। সুতরাং আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, একজন মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যুসংবাদকে পুঁজি করে এ দেশের সংস্কৃতিবিনাশী শক্তি উপমহাদেশের উচ্চাঙ্গসংগীতের কিংবদন্তি সুরসাধককে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে"। এরপর ইতিপূর্বে এক কোটিবারের উপরে বলা সেই ঐতিহাসিক বাক্যটার পুনরাবৃত্তি ঘটল "আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি"। বাউল ভাস্কর্য টেনে নামানো হতে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গায় বাউল উৎসবের প্রধান আয়োজককে গলা কেটে হত্যার পরও মিনমিনে গলায় বাজতে থাকা বিবৃতির এই ক্যাসেট বেজেই যাচ্ছে।
___________
সৌমিত্র পালিত

শেহাব এর ছবি

ঋত্বিক ঘটকের তৈরি প্রামাণ্যচিত্র
https://www.youtube.com/watch?v=1alFUQfe1Dw&feature=share

অতিথি লেখক এর ছবি

সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞদের মধ্যে একজন হয়েও কি সাধারণ জীবনযাপন!! কি হাসিখুশি একজন মানুষ। স্ত্রী রাগ করে বসে আছেন, তিনি বেহালার সুরে রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছেন। পরে দুজনেই হেসে কুটিকুটি। খুব সুন্দর। ধন্যবাদ।
___________
সৌমিত্র পালিত

অতিথি লেখক এর ছবি

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ'র নাতি সরোদ শিল্পী ওস্তাদ আশীষ খান বলেছেন "ঘটনাটা খুব লজ্জাজনক। বাংলাদেশ আমার দাদুকে কখনো প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয় নাই। একজন জমিদার এই বাড়িটা উনাকে উপহার দিয়েছিল। উনার ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রগুলো নিয়ে সেখানে একটা মিউজিয়াম হয়েছিল। এখন সব পুড়ে গেছে। আমি কষ্ট পেয়েছি। এদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।"
http://timesofindia.indiatimes.com/city/kolkata/Ustad-Rashid-Khan-Attack-on-Ustad-Allauddin-KhanSangitangan-is-shocking/articleshow/50597035.cms

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ঘটনার নিন্দা করে পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া বলেছেন , ‘এটা মানবতার মৃত্যু৷ এই ধরনের ঘটনা সামাজিক কাঠামোকেই বিপর্যস্ত করে৷ কাল তো জনতা উত্তেজিত হয়ে সঙ্গীতশিল্পীদেরও আক্রমণ করতে পারে৷ ওরা আমাকেও মেরে ফেলতে পারে৷ ’
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=20599&boxid=142217291


___________
সৌমিত্র পালিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।