• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ হলদে গোলাপ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ১২/০২/২০১৬ - ২:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

halde golap

বইপোকা নই। তবে না পড়লেও পড়ি পড়ব অনুভূতিটাও উপভোগ করি মাঝে সাঝে। আর সত্যি কথা বলতে কোন দ্বিধা নেই, কিছু বই পড়ি সেগুলোর পুরষ্কারপ্রাপ্তির পর।

যেমন, “হলদে গোলাপ”। স্বপ্নময় চক্রবর্তীর দীর্ঘ উপন্যাসটির গতবছর আনন্দ পুরষ্কারপ্রাপ্তি পাঠকসমাজকে অবাক করেনি মোটেও। এতো হবারই ছিল। আসলে স্বপ্নময় দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সংবাদপত্রের কলামে, সাময়িকপত্রের পাতায়, শারদ সংখ্যার উপন্যাসে এক আশ্চর্য জগৎ নির্মান করে চলেছেন। আমাদের চেনা পারিপার্শিক জগৎ তাঁর অনুসন্ধিৎ দৃষ্টিতে হয়ে ওঠে আরো জ্যান্ত, যা পাঠকের চেতনাকে আঘাত করে প্রায়শই।

“হলদে গোলাপ” বাঙালী পাঠককুলকে এক ধাক্কায় আনেকটা প্রাপ্তমনষ্ক করে তুলেছে। যৌনতা, সমকামীতা, রূপান্তরকামীতা, সর্বপরি এল.জে.বি.টি(লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্র্যান্সজেন্ডার) সম্প্রদায় সেমিনারে, বক্তৃতায়, দেশি বিদেশী জার্নালে আলোচিত হলেও বাংলা সাহিত্যে এত ব্যাপকভাবে এসব প্রসঙ্গ আসেনি। আসলে, “হলদে গোলাপ” আনাচ-কানাচের ফিসফিস গুলোকে কলরবে পরিণত করেছে বেশ সুচারুভাবেই। আর এখানেই স্বপ্নময়ের সার্থকতা।

প্রায় ছ’শ পৃষ্ঠা ব্যাপী এই আখ্যানের শুরু রেডিও আফিসে। সেটা ১৯৯৫ সাল। অনিকেত, যার দৃষ্টিকোন দিয়েই গল্পের জাল ছড়িয়েছে পাতার পর পাতা জুড়ে, রেডিও সেন্টারের প্রোগ্রাম একজিকিউটিভ। সে কিশোর কিশোরীদের নিজেস্ব সমস্যা, যেগুলো তারা বড়দের সামনে আলোচনা করতে কুণ্ঠিত হয়, নিয়ে একটি বেতার অনুষ্ঠান শুরু করার কথা ভাবে। স্টেশন ডিরেক্টরের প্রাথমিক বাধা আসলেও পরে শুরু হয় “সন্ধিক্ষন’’। অনিকেতের কাছে এক নতুন জগৎ উন্মোতিচ হয়।

উপন্যাস এগোনোর সাথে সাথে আমাদের সাথে পরিচয় হয় দুলাল(যে পরে নিজের লিঙ্গ পরিচয় বদলে ফেলে হয়ে যায় দুলালী) কিংবা পরিমল(যে পরে হয়ে ওঠে পরী) এর সাথে। এদের নিয়েই চলতে থাকে “হলদে গোলাপ” এর আখ্যান। নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে অসন্তোষ, নিজের ‘পুরুষ’ শরীরটাকে নিজের না মনে হওয়ার বেদনা – এসব মানসিক টানাপোড়েন পাঠকের মনোজগতে এক তীব্র আঘাত হানে। একেবারে প্রান্তিক শ্রেনীর বাসিন্দা দুলাল নিজের পরিবার-পরিজন ছেড়ে সামিল হয় হিজড়েদের যৌথজীবনযাপনে এবং সবশেষে নিজের শরীরের পুরুষ চিহ্নকে সজ্ঞানে উপড়ে ফেলে বহুচেরা দেবীকে সাক্ষী রেখে। অন্যদিকে পরিমল তার ‘মেয়েলিপনা’ নিয়ে হাজার টিটকিরি-গঞ্জনার ধুলো ঝেড়ে হয়ে ওঠে একজন সফল ফ্যাশন ডিজাইনার, কষ্ট সাপেক্ষ অপারেশন করিয়ে হয়ে ওঠে পরী। গোটা উপন্যাসটি জুড়ে বহু ঘটনার বুনন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে ওঠে অনিকেতের মাধ্যমে, যে এখানে একটি যোগসূত্রের কাজ করেছে সূচারুভাবে।

আর যে বিষয়টি উল্লেখ না করলেই নয়, এই কাহিনীতে আমরা কাহিনীচিত্র ও তথ্যচিত্রের এক আশ্চর্য সমন্বয় দেখতে পাই। এতে করে কাহিনীর সুতো আলগা হয় না মোটেই। ঔপন্যাসিকের সমকামিতা-রূপান্তরকামিতা নিয়ে নানান লোকাচার, তথ্য ও তত্ত্ব প্রবহমান ঘটনাবলীর সাথে সংপৃক্ত হয়ে যায় অতি সহজেই। যেমন, হিজড়ে সমাজের যৌথ জীবনের খুঁটিনাটি, বেঁচে থাকার গান, রোজনামচা, ‘স্বাভাবিক পুরুষ’ থেকে হিজড়ে হওয়ার প্রবল বেদনাদায়ক প্রক্রিয়া এসব যেমন পাই “হলদে গোলাপ”এ, আবার তেমনি পুরুষ পরিমল কোন জাদুবলে হয়ে ওঠে পরী – তার বর্ণণাতেও ‘ডিটেলে’র ছড়াছড়ি।

‘আকাশভরা সূর্য-তারায় যে নিয়ম অনড়, বিশ্বভরা প্রাণের ক্ষেত্রে সে-নিয়মের অত কড়াকড়ি নেই। প্রাণের ধর্মই তো তাই ... প্রানীজগতের নিয়মটা বড়ই কেমেষ্ট্রি নির্ভর... চৈতন্য- সম্পন্ন প্রাণীর কেমেসট্রি-টা বড় ভজঘট ব্যাপার, বড় গোলমেলে’। এই গোলমেলে ব্যাপারটা আর গোলমেলে থাকল কোথায়। বহু বছরের গবেষণালব্ধ এই উপন্যাস কিছু ‘গোলমেলে’ গোলাপের হলদে হবার কারন আবিষ্কার করে। এই আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ হয়ে পাঠক কোন জাদুবলে পড়ে ফেলে ৫৯১ টি পাতা।
*********************
# দীপালোক
#deepalok2011@gmail.com

প্রচ্ছদের ছবিঃ গুগুল
*********************


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, লেখককে।

পোস্ট পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো এ কোন সহজসাধ্য উপন্যাস হতেই পারে না। শুধু লেখনি এবং কল্পনার জোরে কেউ এমন উপন্যাস লিখে ফেলতে পারে না। এ রকম কাজ কেবলমাত্র শ্রমসাধ্য। পোস্টের শেষে এসে সেটা সত্যি হলো।

উপন্যাসটার সাথে পরিচিত ছিলাম না। পোস্ট শেষ করে মনে হচ্ছে এখন জোগাড় করে পড়তেই হবে। লেখককে আবারও ধন্যবাদ

- আরণ্যক নীলকণ্ঠ

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে স্বপ্নময় চক্রবর্তী দীর্ঘদিন ধরে আকাশবানীতে কর্মরত ছিলেন। পেশাগত অভিজ্ঞতা তাঁকে সমৃদ্ধ করেছে। আর এই উপন্যাস রচনার পেছনের শ্রম, গবেষণা এসব প্রসঙ্গ তোলাই থাক।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
- দীপালোক

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়া হয়নি, পড়তে আগ্রহ হচ্ছে। অনেক পড়ার ভিড়ে উপন্যাস অনেকদিন ধরেই পড়া হয়না, ভাবছি এই বইটা পড়বো। দীপালোককে ধন্যবাদ বইটার কথা লেখার জন্য।

সোহেল ইমাম

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ুন। ভালো লাগবে।
- দীপালোক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

প্রকাশকের নামটা জানতে পারলে ভাল হতো। (Y)

দেবদ্যুতি এর ছবি

কোনো এক দিন অনেকটা সময় পেয়ে গেলে বইটা পড়ব আশা করি। রিভিিউ ভালো হয়েছে :)

...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”

অতিথি লেখক এর ছবি

(ধইন্যা)
-দীপালোক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

(Y) পড়ার লিস্টি কেবলই বাড়ে, নিষ্ঠুর দুনিয়া।

[ বাই দ্য ওয়ে, গোলাপ শুনলেই ফুটন্ত গোলাপের কথা মনে পড়ে! =(( ]

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।