• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

সিনেমার জন্ম

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০২/০২/২০১৬ - ১১:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটি সিনেমা কখন জন্ম নেয়?

ঠিক কোন মুহূর্তটিতে? কখন? যখন আপনি, জীবনের কোন এক র‍্যান্ডম মুহূর্তের মুখে, হঠাৎ করেই, আগেই দেখেছেন এমন একটি সিনেমা, সেটির কোন অংশ ‘ধরতে’ পারেন? এ্যন্ড স্লোলি, ইয়্যু গো লাইক, নাও আই গেট ইট!? যখন একটি সিনেমা দেখছেন, তেমন মনে ধরছে না, কিন্তু হঠাৎ একটি মুহূর্তে সব বদলে যায়, আর আপনার আশেপাশের দুনিয়া অদৃশ্য হয়ে যায়, কেবল সিনেমাটি ছাড়া, যেটি আপনি, ততক্ষণে বুঝে যান, দেখে শেষ করবেনই!? কিংবা যখন এক বন্ধু জিজ্ঞেস করে, কিরে এই সিনেমাটা দেখেছিস? দেখিস নি? কি বলিস! মাস্ট, মাস্ট দেখবি! আর তার মুখে কাহিনীর একটি-দুটি বাক্য শুনে আপনার মনে হয়, হ্যাঁ, দেখতে হবে। হয়ত যখন, ইন্টারনেটে ঘুরতে ঘুরতে কোন একটি পোস্টারে, একটি লগ লাইনে আপনার দৃষ্টি আটকে যায় কিংবা ডিভিডির দোকানের ডিসপ্লের একটি ডিভিডির কভার আপনাকে চুম্বকের মত টানে, আপনি মানিব্যাগ বের করে দেখেন কত টাকা আছে। কিংবা, টিভিতে চ্যানেলে চ্যানেলে ঘুরতে গিয়ে হঠাৎ একটি দৃশ্যে এসে থামেন, আর চ্যানেল বদলানো হয় না।

একজন সাধারণ দর্শকের কাছে হয়ত এভাবেই জন্ম নেয় সিনেমা। সেটি দু’মাস আগের রিলিজই হোক কিংবা পঞ্চাশ বছরের পুরনোই।

আরেকটু ইনভলব্‌ড দর্শক, কেবল সিনেমা দেখেই সন্তুষ্ট হয়না হয়ত। ইন্টারনেটে ঘোরে। এই পরিচালকের আর কি সিনেমা আছে? কি চমৎকার সিনেমাটোগ্রাফি! ও আর কি করেছে? কি অপূর্ব স্কোর! তার করা অন্য সিনেমাগুলো কেমন হবে? কে লিখেছে এর চিত্রনাট্য? কি আশ্চর্যরকম গল্প বলা। ইত্যাদি। পুরনো সিনেমা নতুন করে জন্ম নেয় দর্শকের কাছে। হারিয়ে যাওয়া সিনেমা নতুন জীবন পায়। অনাগত ভ্রূণ-সিনেমাও বিশেষ মনোযোগ দাবী করে।

অনেকে নিয়মিত দৃষ্টি রাখার চেষ্টা করে সিনেমার জগতে। কোন সিনেমা হয়ত পোস্ট প্রোডাকশানে আছে। কোনটির প্রিন্সিপ্যাল ফটোগ্রাফি শুরু হবে আগামী মাসে। কোন নামী অভিনেতা যুক্ত হয়েছে মাত্রই কোন সিনেমার সাথে। কোন সিনেমার চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়েছে, পরিচালক খোঁজা হচ্ছে। কিংবা কোন চিত্রনাট্যকার কেবল একটি আইডিয়ার উপরে কাজ করা শুরু করেছে, দেখা যাক। কোন কোন সিনেমা আবার নীরবে আসে, হঠাৎ কোন চলচ্চিত্র উৎসবে বিস্ফোরণ ঘটায়। কোন কোনটি আবার জনপ্রিয় অ-প্রযোজিত চিত্রনাট্যের বাৎসরিক-ভাবে প্রকাশিত তালিকা ‘দ্যা ব্ল্যাক লিস্টে’ দেখা যায়, যেটি এক বছর পরেই দেখা যায় নির্মিত হয়ে মুক্তির প্রহর গুনছে।

এই মুদ্রার আরেকটি পিঠও আছে। সেটি নির্মাতার গল্প। তার কাছে সিনেমার জন্ম-

প্রিমিয়ারে? কোন চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম শোতে? কিংবা যখন প্রথম ট্রেইলার অথবা পোস্টারটি ইন্টারনেটে বিলিয়ে দিলেন? যখন প্রথম ডিসিপিটি প্রস্তুত হল? পোস্ট-প্রোডাকশান শেষ? নাকি যেদিন শেষ দৃশ্যটি ধারণ হয়ে গেলে নির্মাতা ‘কাট’ বললেন আর হাততালিতে ফেটে পড়লো সবাই? হয়ত, শুটিং এর প্রথম দিন, তিনি ভাবছেন দিস ইজ ইট! যেদিন, প্রযোজকেরা সবুজ সংকেত দিলেন, সেদিন? কিংবা যেদিন প্রথম একজন প্রযোজক ফোন দিলেন, আপনি কি ইনি? আমি অমুক। আমরা সিনেমাটি করছি। হোয়েন ক্যান উই মিট? তারও আগে কোন একদিন, চিত্রনাট্যকার তার স্ক্রিনপ্লেটি নিয়ে মাস-খানেক ধরে ঘুরছেন, কারও হাতে গছাতে পারেননি কাগজের বান্ডিলটি, কিন্তু সেদিন, সেদিন প্রথমবার হাতবদল হল, একজন এজেন্ট হাতে নিলেন, পাতা উল্টিয়ে পড়লেন। আর চিত্রনাট্যকারের মনে পড়ে গেল ‘দ্যা এন্ড’ টাইপ করবার মুহূর্তটি। নাকি যখন প্রথম বাক্যটি লিখছেন? এক্সট. অত্র স্থান. সকাল? তিনি হয়ত কোন বার-এ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন, হঠাৎ থমকে গিয়ে, গিভ মি আ সেকেন্ড বলে চুপ মেরে এক মুহূর্ত বসে রইলেন, আর কাগজ না পেয়ে হাত বাড়িয়ে একটি টিস্যু নিয়ে তাতেই লিখতে লাগলেন তার আইডিয়া, যেটির প্রথম ড্রাফট হয়ত পরবর্তী কয়েক রাতেই, নির্ঘুম, লিখে শেষ করবেন।

পাঠক, তালিকাটি অনেক দীর্ঘ। এ্যন্ড ইট ক্যান গো ওয়েএ ব্যাক টু হোয়েন আ ফিল্মমেইকার, স্টিল আ কিড, এক্সপেরিয়েন্সড দ্যা মুভিং পিকচারস ফর দ্যা ফার্স্ট টাইম এ্যান্ড, ওয়াজ মুভ্ড।

একটি সিনেমার সৌন্দর্য এখানেই, যে আপাতদৃষ্টিতে সে বারবার জন্ম নেয়, কিন্তু আদতে হয়ত সে উপলক্ষ-মাত্র। সিনেমা নয়, বার বার জন্ম নিই আমরা।
*

একটি গল্প আমার খুব প্রিয়। জন্ম, মৃত্যু, পুনর্জন্মের গল্প। যার গল্প, তিনিও খুবই প্রিয় একজন নির্মাতা, ‘মার্জিন কল’, ‘অল ইজ লস্ট’ খ্যাত জে সি শ্যান্ডর।


( জে সি শ্যান্ডর, ডানে )

২০১১ তে মার্জিন কল এর আগে পনের বছর ধরে, তার আর্লি টোয়েন্টিজ থেকেই শ্যান্ডর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন সিনেমা নির্মাণের। কমার্শিয়াল পরিচালনা, ডকুমেন্টারি প্রযোজনা থেকে শুরু করে অর্থ উপার্জনের জন্য যে কোন কিছু করছিলেন। পাঠক, এখানে মনোযোগ দিন।

২০০৬ এ একটি সিনেমা নির্মাণের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। সিনেমাটির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন সাত বছর ধরে। ঘরে স্ত্রী আর পাঁচ মাসের কন্যা রেখে, ছয় মাস ধরে সকল অর্থ উপার্জন বন্ধ রেখে, সিনেমাটির প্রিন্সিপ্যাল ফটোগ্রাফি কিংবা শুটিংয়ের সময়ে যখন পৌঁছালেন, শুটিং শুরু হবার পাঁচ দিন আগে, প্রযোজক পিছিয়ে গেলেন। তার আর সিনেমাটি নির্মাণ করা হল না।

সেই ধাক্কা সামলাতে গিয়ে নতুন চিত্রনাট্য রচনা করতে বসলেন। একটি সিনেমা মরে গিয়ে আরেকটির জন্ম দিল। আরও পাঁচ বছর পরে, নির্মাণ করলেন ‘অপূর্ব’ মার্জিন কল। কেভিন স্পেইসি, স্ট্যানলি টুচ্চি, জেরেমি আয়রনস, ডেমি মুউর, পঅল বেটানি, জ্যাকারি কিন্টো দের সাথে।

এই গল্পটি আমার কাছে চমৎকার লাগে। গল্পটিতে একটি পৌরাণিক আবহ আছে। তবে কেবল ‘মার্জিন কল’ মার্জিন কল হয়েছে বলেই। এমন হাজার-লক্ষ গল্প ছড়িয়ে আছে সিনেমার ইতিহাস জুড়ে যেগুলো জানা যায় না। যেসব গল্পের শেষে হয়ত, কারও বার্লিনে গোল্ডেন বিয়ারের জন্য লড়া, সেরা চিত্রনাট্যের জন্য অস্কার মনোনয়ন পাওয়া হয়ে ওঠে না।

সংক্ষিপ্ত এই গল্পটিতে আসলে শ্যান্ডর কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন তার, এমনকি আঁচও পাওয়া, সম্ভব হয়ে ওঠে না। কোন ‘গল্প’ ই কি আমাদেরকে আসলে কখনও গল্পের চরিত্রটির জগত বোঝাতে পারে? সে চেষ্টায় আমাদের সম্বল কেবল আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা প্রসূত প্রভাবিত সহানুভূতি, আমাদের জীবন ঘেঁষা উপলব্ধি। এবং কল্পনা। আমরা কেবল নিজেদের মত করে অনুপ্রাণিত হতে পারি।

আরেকটি গল্প বলি।

গল্প আসলে তিনটি। দে আর কানেক্টেড। দ্যা ইয়্যুনিভার্স টুক সাম কনভিন্সিং। বাট ইট অল ওয়ার্কড আউট ইন দ্যা এন্ড। এন্ড হাও!
*

১৯৯২ এ তার মৃত্যুর এক মাস আগে, ‘ডালাস বায়ারস ক্লাব’ এর প্রতিষ্ঠাতা রন উডরুফের সাক্ষাতকার নেন একজন ক্রেইগ বোর্টেন। বোর্টেনের ইচ্ছে ছিল সিনেমা জগতে প্রবেশের এবং উডরফের সাক্ষাতকার নিয়ে, তার ব্যক্তিগত জার্নালগুলো হাতে পেয়ে সবমিলিয়ে একটি চিত্রনাট্য রচনার চেষ্টার মাধ্যমে তিনি সে পথেই এগোচ্ছিলেন।


( ক্রেইগ বোর্টেন, ডানে )

তো, তিনি লিখলেন। এবং অনেক চেষ্টা করে শেষে ’৯৬ এ একটি প্রযোজনা সংস্থার কাছে চিত্রনাট্যটি বিক্রি করলেন। ‘ইজি রাইডার’ এর পরিচালক ডেনিস হপার পরিচালক হিশেবে জড়িত হলেন, সিদ্ধান্ত হল উডি হ্যারেলসন রন উডরফের চরিত্রটি করবেন।

শাআলার প্রোডাকশান কোম্পানিটিই ভেঙ্গেচুরে গেল! সিনেমাটি আর হল না!

২০০১ এ। পাঁচ বছরের মধ্যে বোর্টন আরেক নবাগত চিত্রনাট্যকার মেলিসা ওয়াল্যাক এর সাথে যৌথ উদ্যোগে চিত্রনাট্যটি পুনরায় ঘষেমেজে লিখে এক প্রযোজক রঅবি ব্রেনারের কাছে সেটি আবার বিক্রি করে দিয়েছেন।

জনৈক ট্যালেন্ট এজেন্ট, সিনেমা প্রযোজক, ক্যাসিয়ান এলওয়েস। মার্ক ফস্টার ‘মনস্টারস বল’ মাত্র শেষ করেছেন বোধহয়, তিনি এলওয়েস কে বললেন, দ্যা ডালাস বায়ারস ক্লাব নামে একটি চমৎকার স্ক্রিপ্ট পেয়েছেন যেটা তিনি বানাতে চান। এলওয়েসের খুবই চমৎকার লাগলো উডরফের গল্পটি। ব্র্যাড পিটও জড়িত হয়ে গেলেন আর শেষে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল ‘ইয়্যুনিভার্সাল স্টুডিয়োস’ও প্রযোজনা করবে। কিন্তু কয়েক বছরেও হল না। ঝুলে থাকল। এলওয়েস চিত্রনাট্যটির প্রতি তার ভালবাসা থেকে রঅবি ব্রেনারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে খোঁজ রাখতে থাকলেন।


( ক্যাসিয়ান এলওয়েস )

‘বহু’ বছর পরে ২০১১তে, একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন সময়ে এলওয়েস আড্ডা দিতে গিয়ে ম্যাথু ম্যাকঅনঅই’র ট্রেইলারে বসে তার পরবর্তী প্রজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, একটি চমৎকার প্রজেক্টে কাজ করছেন, খুবই এক্সাইটেড তিনি, নাম দ্যা ডালাস বায়ারস ক্লাব! হতভম্ব এলওয়েস দৌড়ে গিয়ে রঅবি ব্রেনারকে ফোন দিলেন। হ্যাঁ, কষ্টেসৃষ্টে আট মিলিয়ান জোগাড় হয়েছে, সিনেমাটি হচ্ছে। এলওয়েস এর মন খারাপ হল। তিনি খুব করে করতে চেয়েছিলেন সিনেমাটি। বাট দ্যা ইয়্যুনিভার্স!

এক বছর পরে ম্যাকঅনঅই’র এজেন্ট হঠাৎ তাকে ফোন দিয়ে বলছেন, বিশ্বাস করবেন না কি হল! ডালাস বায়ারস ক্লাবের টাকাটা আসছে না, সিনেমা আটকে গেছে। ম্যাথু এর মধ্যেই পঁয়ত্রিশ পাউন্ড ওজন কমিয়েছে। কয়দিন পরেই ওর ‘ট্রু ডিটেকটিভ’ এর শুট আছে। এত কম সময়ের মধ্যে বারবার ওজন বাড়ানো কমানো ওর জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়াবে। কি করি বলুন তো!

কিছুক্ষণ পরেই রঅবি ব্রেনার ফোন করলেন, ক্যাসিয়ান, মুভিটাকে বাঁচাও, প্লিইজ। তুমি সবসময় এটা করতে চেয়েছ। এখনই তোমার সুযোগ, এটা কর।

জানা গেল, যদি করতে হয়, কয়েকদিনের মধ্যেই অবশ্যই প্রি-প্রডাকশান শুরু করতে হবে। যদি করতেই হয়, টাকা জোগাড় করতে হবে, তিন দিনে। এলওয়েস অফিসের সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বসে রইলেন বিশ মিনিট। ভাবতে লাগলেন, সিনেমা লাইনে, কে আসলেই আসলেই তার কাছে ঋণী?

সিলিং থেকে দৃষ্টি নামিয়ে ডায়াল করলেন। নিকোলাস শ্যাতিয়ে, প্রযোজক, সেইলস এজেন্ট।

‘নিক, ডালাস বায়ারস ক্লাবটা বানাবে?’

‘আরে! ওটার কথা বোল না! আমি ফোন পাচ্ছি গত তিন দিন ধরে। আমি ওটা করবো না। ওটা বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাবে। ক্যাসিয়ান প্লিজ শোন, ওটার মার্কেট নেই।’

‘নিক, অনেক বছর আগে, কান ওর ওই রাতটার কথা তোমার মনে আছে? আমাদের প্রথম সাক্ষাত?’

‘অবশ্যই।’

‘সেই দিন থেকে এই এত বছরে তোমার কাছে আমি কিছু চেয়েছি?’

‘না।’

‘আমি তোমার কাছে একবার চাইব কেবল- আমি চাই তুমি ডালাস বায়ারস ক্লাবের জন্য তিন মিলিয়ান দাও। আমি তোমার কাছে আর কখনই কিছু চাইব না। কেবল এটাই।’

‘অবশ্যই, আমি দিচ্ছি।’
*

আঠারো বছর আগে, ’৯৪ এ এক মধ্যরাতে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মাঝে কার্লটন হোটেলের বার-এ ক্যাসিয়ান এলওয়েস আর নিকোলাস শ্যাতিয়ের সাক্ষাতকারটি হল তিন নম্বর গল্প।

বিশ বছরের তরুণ শ্যাতিয়েও সিনেমায় ঢুকতে চেয়েছিল। সেই স্বপ্ন। সিনেমায় ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে পেল ইউরো-ডিজনিতে বাথরুম পরিষ্কারের কাজ।


( নিকোলাস শ্যাতিয়ে )

তার একটি চিত্রনাট্য ছিল। কান চলচ্চিত্র উৎসবের সময় সে বাথরুমের কাজ ফাঁকি দিয়ে উইকেন্ডে চলে এলো উৎসবে, সাথে চিত্রনাট্যের চল্লিশটি কপি। প্রযোজক আর এজেন্টদের নামের তালিকা জোগাড় করে আর হোটেলের কনসিয়ের্জদের কাছে কাকুতি মিনতি করে তাদের মাধ্যমে হোটেলের বাসিন্দা সব প্রযোজক এজেন্টদের রুমে রুমে পাঠিয়ে দিল চল্লিশ কপি চিত্রনাট্য। কাজ শেষ করে গিয়ে স্লিপিং ব্যাগ নিয়ে শুয়ে পড়লো হোটেলের সামনের সৈকতে, একটি পে-ফোনের পাশে, যেটির নাম্বার সে স্ক্রিপ্টে তার ফোন নাম্বার হিশেবে দিয়েছে। দু’দিন ধরে রাতে ঘুমালো আর দিনে ফোনের পাশে বসে থাকলো।

ওদিকে ক্যাসিয়ান এলওয়েস কান’এ এসেছেন ট্যালেন্ট এজেন্সি উইলিয়াম মরিসের হয়ে। এক রাতে তিনটা বাজে কার্লটনে তার কক্ষে জেগে শুয়ে আছেন। ঘুম আসছে না। কিছু পড়তে পড়তে ঘুমাবেন বলে টিভির পাশে রাখা বইপত্র ঘাটতে গিয়ে দেখলেন একটি চিত্রনাট্য, সাথে একটি চিঠি, দেখে মনে হল যেন চল্লিশবার কেউ কপি করেছে সেগুলো। চিঠিতে লেখা, প্রিয় মি. এলওয়েস, অনুগ্রহ করে আমার চিত্রনাট্যটি পড়ুন এবং পছন্দ হলে নিচের নাম্বারে ফোন দিন।

পরদিন সকালে ব্রেকফাস্টেই তিনি চিত্রনাট্যটি বেচে দিলেন। রুমে গিয়ে ফোন দিলেন চিঠিতে দেয়া ‘নাম্বার’ টিতে। এক তরুণ ফরাসির সাথে তার কথা হল। তাকে দেখা করতে বললেন মধ্যরাতে, কার্লটনের লবিতে।

এলওয়েস হান্ড্রেড থাউজেন্ডে চিত্রনাট্যটি বেচে দিয়েছিলেন। তাদের সাক্ষাত শেষ হয়েছিল শ্যাতিয়ে’র অঝোর কান্না দিয়ে। সিনেমাটি পরে আর হয়নি। তবে জীবনের নানা পথে হেঁটে শেষে, ২০১০ এ শ্যাতিয়ে ‘দ্যা হার্ট লকার’ এর প্রযোজক হিশেবে অস্কার জেতেন।

আর দশ বছর ধরে পৃথিবীর পথে পথে ঘোরার পরে, চিত্রনাট্যকার ক্রেইগ বোর্টেন এর ডালাস বায়ারস ক্লাব না বানাতে পারার দুঃখে মদ আর ড্রাগের নেশায় হারিয়ে যাওয়া আর রিহ্যাব থেকে ঘুরে আসার পরে, ক্যাসিয়ান এলওয়েস এর ভালবাসা আর নিকোলাস শ্যাতিয়ে’র কৃতজ্ঞতা-বোধের জোরে, ১৯৯২ এ কনসেপশানের পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে শেষে ২০১২ তে অপূর্ব অপূর্ব ‘ডালাস বায়ারস ক্লাব’ নির্মিত হয়।


( ডালাস বায়ারস ক্লাব, ২০১৩ )

ছয়টি অস্কারের জন্য মনোনীত হয়, তিনটি জেতে। আরও বিভিন্ন ৭৪টি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়, আরও ৭৯টি পুরস্কার জেতে। কিন্তু সেসব গুরুত্বপূর্ণ নয়। সিনেমাটি ধারণ করেছে মানুষের গল্প, ভালবাসার, সংগ্রামের, ধারণ করেছে মানুষের ইতিহাস, পেয়েছে অগণিত মানুষের, সিনেমার প্রেমিকদের ভালবাসা।

সিনেমা, জন্ম নেবেই।
*

এতসব গল্প বলার জন্য লিখছিলাম না আসলে, গল্প করতে করতে বলে ফেললাম। শেয়ার করতে চেয়েছিলাম একটি সদ্যজাত সিনেমার কথা। আসিতেছে। নেইট পার্কারের ‘দ্যা বার্থ অফ আ নেশান’।


( ন্যাট টার্নারের চরিত্রে নেইট পার্কার )

মাত্রই শেষ হওয়া সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে এ্যামেরিকান ড্র্যামাটিক সিনেমার জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ পুরস্কার দু’টি জিতেছে এই সিনেমাটি।

অভিনেতা নেইট পার্কার ঠিক তেমন হাই-প্রোফাইল চরিত্র নন। ‘দ্যা গ্রেট ডিবেইট’ যারা দেখেছেন, হয়ত তার মুখটি চিনতে পারবেন। এগারো বছরের ক্যারিয়ারে তিনি খুব একটা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি।

ইয়্যুনিভার্সিটি অফ ওকলাহোমায় আফ্রিকান-এ্যামেরিকান স্টাডিজের কোর্স করার সময় ‘ন্যাট টার্নার’ এর কথা তার, ১৮৩১ এর অগাস্ট এ তার নেতৃত্বে সংঘটিত কৃতদাস বিদ্রোহের কথা জানতে পারেন পার্কার। যে কোন মূল্যে এই বিদ্রোহের, বিশেষ করে ন্যাট টার্নার এর গল্প বলতে সংকল্পবদ্ধ পার্কার ২০০৯ এ কাহিনীটির উপরে একটি চিত্রনাট্য রচনা করেন। কিন্তু তিনিও ডালাস বায়ারস ক্লাব এর মতই সমস্যায় পড়েন। সিনেমাটির কন্ট্রোভার্শিয়াল বিষয়বস্তুর কারণে, যেখানে ন্যাট টার্নারের নেতৃত্বে একদল কৃতদাস ১৮৩১ এর অগাস্ট এর দুই দিনে প্রায় ৬৫জন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করেন টার্নারের বক্তব্য অনুযায়ী শ্বেতাঙ্গদের মাঝে ‘আতঙ্ক এবং ভয়ধ্বনি’ ছড়িয়ে দেবার লক্ষ্যে, এবং এর মার্কেট ভ্যালু’র ‘আপাত’ অভাবের কারণে প্রযোজকেরা সেটি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না।

পার্কারও ছাড়ার পাত্র নন। নিজের এজেন্টদেরকে জানিয়ে দিলেন, ন্যাট টার্নারের চরিত্রে অভিনয় করার আগ পর্যন্ত আর কোন সিনেমায় অভিনয় করবেন না তিনি। সেইসাথে নিজে একশ হাজার ডলার বিনিয়োগ করলেন একজন প্রোডাকশান ডিজাইনার ভাড়া করার এবং লোকেশান স্কাউট করার জন্য। পরবর্তীতে বিন্দু বিন্দু করে অর্থ জোগাড় করলেন। শেষে প্রযোজক, সহ-প্রযোজক, নির্বাহী প্রযোজক আর সহ-নির্বাহী প্রযোজক সব মিলিয়ে দাঁড়াল ২৪ জন, যাদের একজন নেইট পার্কার নিজেও। দশ মিলিয়ান ডলার বাজেটের সিনেমাটির শুটিং চলে ২০১৫ এর মে মাসে, ২৭ দিনের জন্য। নেইট পার্কারের চিত্রনাট্যে, তার অভিনয়ে, তার পরিচালনায় এবং তার প্রযোজনায় নির্মিত হয় দ্যা বার্থ অফ আ নেশান।

এবছরের জানুয়ারির ২৫ তারিখে সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে, দু’বার স্ট্যান্ডিং ওভেশান পায় সিনেমাটি। প্রথমবার সিনেমা শুরুর আগে পার্কারের বক্তৃতার পরে এবং আরেকবার সিনেমাটির প্রদর্শন শেষ হবার পরে। পরবর্তীতে রেকর্ড ১৭.৫ মিলিয়ান ডলারে এর বিশ্বব্যাপী পরিবেশন স্বত্ব কিনে নেয় ফক্স সার্চলাইট পিকচারস। সকল প্রধান প্রকাশনার সমালোচকদের ভূয়সী প্রশংসার মাঝে একমাত্র ব্যতিক্রম গার্ডিয়ানের সমালোচকের ‘মিক্সড রিভিউ’ যেটিও পাঁচ তারায় তিন তারা দাগিয়েছে! সিনেমাটির ‘দুর্দান্ত’ চিত্রনাট্য, সিনেমাটোগ্র্যাফির কথা ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে।
*

দ্যা বার্থ অফ আ নেশান কি আদতেই চমৎকার সিনেমা নাকি তা বুঝতে হলে অবশ্যই আগে সিনেমাটি দেখতে হবে।

তবে ভালবাসা এবং সিরিয়াস ভাবনা থেকে একটি সিনেমার জন্মের গল্প, ভাল লাগে। নেইট পার্কারের গত এক সপ্তাহের সাক্ষাতকারগুলো বিভিন্ন প্রকাশনায় পড়ে, গল্পটির প্রতি তার ভালবাসা, গল্পটিকে বর্তমান সময়ের সাথে প্রাসঙ্গিক বলে তার মনে হওয়া এবং সিনেমাটির মাধ্যমে গণ-মানুষের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উসকে দেয়ার তার ইচ্ছেটুকু স্পষ্ট বোঝা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি বোঝা যায়, সেটি হল, তরুণ নেইট পার্কার সিরিয়াস ভাবনা-চিন্তার যোগ্যতা রাখেন। আগ্রহী পাঠক/দর্শকেরা কয়েকটি পড়ে দেখতে পারেন। যেমন, এটি

দীর্ঘদিনের প্যাশন প্রজেক্টের সমাপ্তির(?) পরে এই নতুন পরিচালক কি করবেন, পরিচালনায় থাকবেন, নাকি কেবল অভিনয়ে ফিরে যাবেন, কে জানে। তবে আপাতত, সিনেমাটির যাত্রা কেবল শুরু হল।

এ্যামেরিকায় আওয়াজ তোলার পরে পরিচালক ইউরোপেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইবেন। বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রোগ্রাম ঘোষণা হয়ে গেছে, সিনেমাটি সেখানে যাচ্ছে না। ধারণা করা যায়, মে তে কানে অংশ নিতে চাইবেন। টরন্টোতে যাবেন, সেটি নিশ্চিত। তবে শেষে অবশ্যই-

এ বছরের অস্কার সো হোয়াইট বিতর্কের পরে এবং ফক্স সার্চলাইটের ‘টুয়েলভ ইয়ারস আ স্লেইভ’ সামলানোর ইতিহাস মাথায় রেখে, বছর ঘুরে অবধারিতভাবে ‘দ্যা বার্থ অফ আ নেশান’ যে ২০১৭ এর অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের মনোনয়ন জিতে নেয়ার দৌড়ে অগ্রভাগেই থাকবে, তা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়, এখনই।


( দ্যা বার্থ অফ আ নেশান, ২০১৬ )

একটি সিনেমার জন্ম হল।
*

সিনেমা দেরীতে


মন্তব্য

সোহেল ইমাম এর ছবি

ভালো লাগলো

অতিথি লেখক এর ছবি

:)
*

সিনেমা দেরীতে

হিমু এর ছবি

কৃতদাস নয়, ক্রীতদাস হবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

রাইট! :S এবং আরও কয়োকটি ভুল আছে। আফসোস, শুধরানোর আর সুযোগ নেই। :-?
*

সিনেমা দেরীতে

অতিথি লেখক এর ছবি

সাধারণ দর্শকের কাছে সিনেমা জন্ম নেয়ার বর্ণনাটুকু অসাধারণ। কাকতালীয়ভাবে কালকেই ‘মার্জিন কল’দেখলাম। ভাল লেগেছে, তবে শুরুর দিকে একটা যায়গায় খটকা লাগলো। যখন এরিক ডেলকে নাটকীয়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হল এবং বলা হল এই মুহূর্ত থেকে কোম্পানীতে তার সব ধরনের প্রবেশাধিকার রহিত তারপরও সে তার সর্বশেষ কাজটুকু পেনড্রাইভে কপি করে তার জুনিয়র কলিগকে সিকিউরিটির উপস্থিতিতে কি ভাবে দিতে পারল, এই ব্যাপারটা।

নেইট পার্কার অভিনীত সিনেমাটির নাম মনে হয় ‘দ্যা গ্রেট ডিবেইটার্স’ হবে। এই সিনেমাটিও দেখেছি, খুবই সুন্দর একটি সিনেমা। আপনার লেখা সিনেমার পিছনের গল্পগুলি মন ছুয়ে গেল, এই গল্পগুলি নিয়েও মনে হয় চমৎকার সিনেমা হতে পারে। ভাল থাকবেন, আর লিখবেন।

-আতোকেন

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক, দ্যা গ্রেট ডিবেইটার্স, ধন্যবাদ। আশ্চর্য, এই লেখাটিতে এত ভুল কেন!? :S
*

‘মার্জিন কল’ এর দৃশ্যটির ব্যাপারে, কয়েকটি ‘সংকেত’ এর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করবো-

‘সব ধরনের প্রবেশাধিকার রহিত’ প্রসঙ্গে, হিউম্যান রিসোসর্সেস এর মহিলাটি জানায় মিটিংয়ের পরপরই, প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলে, সার্ভারে এবং ভবনে ডেল এর প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে এবং ফোন সার্ভিস কেটে দেয়া হবে। একটি ব্যাপার লক্ষণীয় যে, প্রতিষ্ঠানটিতে সবাই পরিস্থিতি সম্পর্কে ঠিক পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নয়, যেমন, পরে একটি দৃশ্যে স্যাম সিইও ট্যুল্ডকে বলে, ইয়্যু আর ওভিয়াসলি অপারেটিং উইথ মোওর ইনফরমেশান দ্যান আই হ্যাভ। একজন কেবল তার দায়িত্ব প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলোই জানে, এবং কেবল তার উপরে অর্পিত দায়িত্বটি সঠিকভাবে পালন করাই তার প্রধান মাথাব্যথা। যে কারণে, যখন ডেল হিউম্যান রিসোর্সেস এর মহিলাটিকে জানায়, সে একটি কাজের মাঝখানে আছে, মহিলাটি নূন্যতম আগ্রহ দেখায় না, কারণ তাকে কেবল নির্বাচিত কর্মীদের চাকরীচ্যুত করার এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও পরিস্থিতিটি একটু ‘প্যানিকি’, সঠিকভাবে চিন্তাভাবনা করেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না, যেটি বোঝা যায়, রিস্ক ম্যানেজমেন্টের প্রধানকে চাকরিচ্যুত করাতে এবং তার উপরে আবার, তার ফোন সার্ভিস কেটে প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার পথটি জটিল করে ফেলাতে, যেটি দেখা যায় পরে সমস্যা সৃষ্টি করে।

এরিক ডেল, আমরা পরে একটি ব্রিজ নির্মাণের গল্পে যার অত্যন্ত গঠনমূলক মানসিকতার পরিচয় পাই, চাকরি চলে যাবার পরও যে সে তার ‘কাজ’ টির গুরুত্ব বুঝতে পেরে সেটি চালিয়ে যাবার জন্য পেনড্রাইভে নিয়ে যাবে, তা অস্বাভাবিক নয়। ধারণা করা যায় সে নিশ্চয়ই আগেও কাজ বাসায় নিয়ে যেত।

সিকিউরিটির উপস্থিতি প্রসঙ্গেও আগের কথাটিই বলবো। সিকিউরিটির লোকটি, যে ঠিক ‘প্রপার’ সিকিউরিটিও নয় ট্যুল্ড এর লোক কারমেলো’র মত, হি ইজ আ মেয়ার বিল্ডিং সিকিউরিটি গাই ইন আ ওয়াল স্ট্রিট ফার্ম, তার-ও দায়িত্ব কেবল ডেল কে এসকর্ট করা, চাকরিচ্যুত হয়ে বের হয়ে যাবার আগে ও কোন সিন ক্রিয়েইট করলে তা সামলানো, অন্য কিছু নিয়ে মাথা ঘামানোর এখতিয়ার ওর আছে বলে ও মনে করে না।

হ্যাঁ, সংকেতগুলো ঠিক লিনিয়ার-ভাবে দেয়া হয়নি, কাহিনীটিকে অরগ্যানিকালি এগোতে দেয়া হয়েছে। দর্শককে শুরু থেকেই পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করবার জন্য তথ্য দিতে গেলে ‘এক্সপোজিশান’ এর উপর নির্ভর করতে হতো, তখন চিত্রনাট্যটি দুর্বল হয়ে পড়তো। ধারণা করছি, পরিচালক আশা করেছেন দর্শক একাধিকবার সিনেমাটি দেখবেন এবং দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বারে আসতে আসতে, সকল সংকেতগুলো অবচেতনভাবেই তারা শুষে নেবেন।

উল্লেখ্য, ডেল কিন্তু পেনড্রাইভটি নিজেই নিয়ে যেত, তাই না? দৃশ্যটিতে ডেল এবং পিটার, যারা দুজনেই তুলনামূলক ‘শিক্ষিত’ ‘মানবিক’ চরিত্র, তাদের মধ্যকার প্রফেশানাল/পারসোনাল সম্মানের, বিশ্বাসের উপস্থিতিটি খুবই চমৎকার সাট্ল ওয়েতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, এবং কত অল্প সময়ের মধ্যেই!

এই ধরণের অত্যন্ত সুনির্মিত ‘বিষয়’ ভিত্তিক সিনেমাগুলো খুবই চমৎকার লাগে, যেগুলোতে ‘বিষয়’ এর ঊর্ধ্বে একটি মানবিক গল্পও বহমান থাকে।
*

অবশ্যই! নির্মাণের পেছনের এইসব গল্পগুলো নিয়ে খুবই চমৎকার সিনেমা হতেই পারে! দ্যাট উড বি আ বিউটিফুল লাভ লেটার টু সিনেমা! :)

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। :)
*

সিনেমা দেরীতে

এক লহমা এর ছবি

চমৎকার পোস্ট।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, দেরীতে! :)
*

সিনেমা দেরীতে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।