• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

আচার আছে, বিচার নাই

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০২/২০১৬ - ১২:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গুরু এবং শিষ্য এসেছে ‘একতা রাষ্ট্র’ ঘুরে দেখতে। এই রাজ্য নিয়ে গরীবের বন্ধু, সাম্রাজ্যবাদ বি্রোধী, তেল-গ্যাস রক্ষার বড় বড় নেতারা অনেক রাজনীতি করলেও বেড়াতে আসার সুযোগ কেউ হাতছাড়া করেন না। গুরু শিষ্যেরও অনেক দিনের সখ এই দেশটা দেখার। কী আশ্চর্য! এতো দেখি আসলেই এক অদ্ভুত জায়গা! ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াই গাড়ি থামে, পথচারী রাস্তা পাড় হয়ে যায়, এখানে বেটা-ছেলেদের “গাই” বলে ডাকে, রাস্তায় কোন মেয়ের চোখে চোখ পড়তেই বলে “হাই”, সাথে মধুর হাসি! আত্মাটা যেন ফুশ্ করে বের হয়ে রাস্তায় নেমে ঐ মেয়ের পেছন ধরতে চায়! ভড়কে গিয়ে শিষ্য গুরুর ডিকে তাকায়, গুরু অভয় দিয়ে বলে, “আরে, এইটা এইখানকার আচার”। নতুন ইয়র্কের জ্যাকপুত হাইটসে বাঙ্গালীদের মেলা, টুপিয়ালা হুজুর ফুটপাতে হকার। তসবিহ, জায়নামাজ, কায়দা, আমপারা, সুরমা, আঁতড়, আযান দেওয়া ঘড়ি, কি নেই তার কাছে! খাবারের দোকানে পাওয়া যায় আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, কচুর লতি, করলা, ঝিঙ্গা, রুই, মৃগেল, মেনি, ফাইস্যা, গুত্তুম, টেংরা, পুটি, মলা, কাচকী, তপসী, বিমানে আসা ফ্রেশ আইড়, মাছের রাজা ইলিশ, ইলিশের ইয়া বড় ডিম, ওহ্। দেশে থাকতে সক্কাল বেলা আটা রুটি আর ভাজি দিয়ে নাস্তা খেতে হোত, এখানে করা হয় ব্রেড-বাটার-জেলী দিয়ে ব্রেকফাস্ট। নাস্তা ‘খাওয়া’ আর ব্রেকফাস্ট ‘করা’র তফাৎ ব্যাপক! খেয়ে দেয়ে, ঘুরে ফিরে গুরু-শিষ্যের দিনকাল ভালই যাচ্ছিল। একদিন ঘোরাঘুরি করে দুজনেই ক্লান্ত ও তৃষ্ণার্ত। কাছাকাছি একটা ফিলিং স্টেশন দেখে সেখানেই ঢুকে গেল পানি কিনতে। অধিকাংশ ফিলিং স্টেশনেই কনভেনিয়েন্ট স্টোর থাকে। সেখানে পানি থেকে শুরু করে চা-কফি, কোমল পানীয়, শক্তি বর্ধক পানীয়, জন্মনিরোধক সরঞ্জামাদি সহ আরো অনেক কিছুই পাওয়া যায়। আধা লিটারের এক বোতল পানির দাম ১.৫ ডলার। কেইস কিনলে কিছু কম পড়বে, ২৪ বোতল ১৪.৮ ডলার। ২৪ বোতল মানে ১২ লিটার, অর্থাৎ ৩.২ গ্যালনের দাম ১৪.৮ ডলার। প্রতি লিটার পানির দাম ৪.৬৩ ডলার! তেলের আরেক নাম নাকি তরল সোনা। শাস্ত্রমতে কলিকালে পানির দাম আর সোনার দাম সমান হয়ে যায়। চিন্তা ভাবনা করে গুরু শিষ্যকে বলে, “চলরে, এইবার বাড়ি যাই, এই দেশে কলিকাল বর্তমান”।
- “কেন গুরু? এখানে তো ভালোই আছি। রুটি, মাখন, ঘি-তে ভাজা ইলিশের ডিম, আম কাঁঠাল! খাবার-দাবার তো সস্তা। তুমি যাইতে চাও ক্যান?”
- “বৎস, যেই দেশে তেলের দাম আর পানির দাম সমান, সেই দেশে আচার আছে অনেক বটে, কিন্তু দরকারের সময় বিচার পাবি না।“
- “গুরু, তুমি যাও, আমি আরো কয়দিন বেড়াই।”
শিষ্যকে রেখে গুরু দেশে ফিরে যায়। গুরুর অবর্তমানে শিষ্যের কদর বাড়ে, নানা আচার অনুষ্ঠানে তার ডাক পড়ে। বিদেশ-বিভূঁইয়ে মানুষের ধর্ম ভক্তি দেখে শিষ্য অভিভূত। সৃষ্টিকর্তার নাম খানিক জপে দিলেই সেইরকম খানা দানা, ফেরার পথে আবার সাথে করে দিয়েও দেয়। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সিদ্ধ ডিম গোঁজা সিন্ধী বিরিয়ানী, বিহারী কাবাব আর আলাউদ্দীনের দই-মিষ্টি খেয়ে মাস না ঘুরতেই শিষ্য বেশ নাদুস নুদুস হয়ে ওঠে। নধর দেহ খানির তেল চুকচুকে ত্বকও জানান দেয় ঘি-মাখনের অস্তিত্ব।

এদিকে একতা রষ্ট্রে নির্বাচনী হাওয়া। কালো রাজার মেয়াদ শেষ, নতুন রাজা বাছাইয়ের ভোট হবে। দুই দল, একজন করে প্রার্থী বাছাই করবে, তারপর ভোট। এই প্রার্থী বাছাইয়েও কত আচার! একদল দেখা গেল পয়সা দিয়ে টস্ করে, মানে দ্বৈব চয়ন পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই করছে, আরেক দল গালাগালিতে পারদর্শী প্রার্থীকে বেছে নিচ্ছে।

টসে জেতা পার্বতী দেবী যদি জিতে যায় তবে একতা রাষ্ট্র পাবে প্রথম রাণী। অন্যদিকে গালাগালিতে পারদর্শী ডোনাল্ড ডাক জিতে গেলে সে হবে রাজ্যের প্রথম বদ্ধ উন্মাদ রাজা।
অবশেষে সব কল্পনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ডোনাল্ড ডাক নির্বাচনে জিতে ইতিহাস গড়লেন। এ এক অদ্ভুত দেশ, অদ্ভুত তার ভোটার!

ডোনাল্ড ডাক রাজা হয়েই জারি করতে লাগলেন আরো অদ্ভুত সব আইন কানুন। ভিন্ন বর্ণের ও ভিন্ন ধর্মের মানুষদের সদা সর্বদা পরিচয় পত্র ব্যাবহার করতে হবে। কোন এলাকায় কোন রকমের অপরাধ বা অঘটন ঘটলে ভিন্ন বর্ণের ও ভিন্ন ধর্মের মানুষদের রিমান্ডে নিয়ে জল থেরাপী দেয়া হবে। অপরাধী সাব্যস্ত হলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শুলে চড়ানো হবে। লোকমুখে এসব শুনে শিষ্য একটু ভড়কেই গেল। ডিম থেরাপীর কথা সে জানে বটে কিন্তু জল থেরাপী আবার কী? এক ব্রাদারকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, পশ্চাৎদ্বেশ দিয়ে জল প্রবেশ করিয়ে সম্মুখদ্বেশ দিয়ে বের করাই হল জল থেরাপী। ওদিকে অত্বাধুনিক শুলও রাজার আদেশে তৈরি করে ফেলেছেন একতা রষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। শুলের নাম রাখা হয়েছে “শক্ এন্ড অ”, সেকেন্ডেরও ভগ্ণাংশে এই শুল শাস্তি কার্যকর করে ফেলে। একতা রষ্ট্রে আচারের কোন অভাব নেই, এখানে নখ কাটার নরুনেরও কোয়ালিটি কন্ট্রোল ও কোয়ালিটি এশিওরেন্স দেয়া হয়, আর এতো হলো শুল। রাজা নিজে এই “শক্ এন্ড অ” শুলের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ও কোয়ালিটি এশিওরেন্সের প্রমাণ দেখতে চান। কিন্তু শুলের কোয়ালিটি এশিওরেন্স কিভাবে করা যায়? সে উপায়ও উন্মাদ রাজা ডোনাল্ড ডাকের কাছে আছে। রাজা আদেশ দিলেন একতা রাষ্ট্রের সবচেয়ে নাদুস নুদুস ভীনদেশীটাকে ধরে নিয়ে আসতে, তাকেই করা হবে নতুন শুলের গিনিপিগ। শিষ্যের তেল চুকচুকে চেহারা লুকিয়ে রাখার উপায় নেই। পাইক বরকন্দাজের কোন অসুবিধাই হল না সবচেয়ে নাদুস নুদুস ভীনদেশীটাকে খুঁজে পেতে। শিষ্যের মনে পড়ে গেল তার গুরুর কথা। গুরু বলতেন,

যদিও তুমি নিজেকে অনেক বড় মনে কর, তবুও গুরুজনের অবাধ্য হয়ো না
যদিও তুমি ধবংস হয়ে যাও, তবুও যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করো না

পাইক বরকন্দাজদের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করে গুরুকে একবার ফোন করার অনুমতি সে পেল। সবশুনে গুরু বললেন, “বৎস তোমাকে তো বলেছিলাম, যেই দেশে তেলের দাম আর পানির দাম সমান, সেই দেশে আচার আছে অনেক, কিন্তু বিচার নাই। তবে দেখি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলে, তিনি যদি ওখানকার বিদেশ মন্ত্রীকে ফোন করে মানবাধিকারের দৃষ্টিকোন থেকে তোমার প্রাণটি বাঁচিয়ে এই এঁদো কাঁদার মাটিতে ফিরিয়ে আনতে পারেন!”

- অপু


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

:)

সোহেল ইমাম

মেঘলা মানুষ এর ছবি

লেখা মজার হয়েছে। লেখার হিউমারটা ভালো লেগেছে, বিশেষ করে "জ্যাকপুত হাইটস" =))

তবে, কিছু বিষয়ে (কু)তর্ক করতে মন চাইছে। যেমন, পানির দাম। পানির দাম কিন্তু বোতলে ভরলেই বাড়ে। আবার সেটারও কোন ঠিক ঠিকানা নাই। একই দোকানে গ‌্যালন পানির দাম ৮৮ পয়সা, আবার হাফলিটার পানি ফ্রিজের মধ্যে বসে আছে বলে সেটা দেড় ডলার, দোকানেরই ভেতরের ফাউন্টেন থেকে খেলে মাগনা। দুই লিটার কোক/পেপসি ১ ডলারে যাচ্ছে, আবার ফ্রিজের ভেতরে ঢান্ডা পানি/কোক দেড় ডলার। কাজেই 'ইঞ্চাপ' কোথায় পাওয়া যাবে? সুইডেনের অনেক নাগরিকের চাইতে নাইজেরিয়ার সবচেয়ে ধনী লোকটা অনেক ধনী।

স্বাভাবিকভাবে তেলের গ্যালন যদি চার ডলারও হয় (লিটার প্রতি ১ ডলারের মত), তখন কিন্তু দোকানে পেরিয়ার পানির চেয়ে কম দাম হবে। যেমন, অ্যামাজনে ১৭ আউন্সের ২৪ বোতল পেরিয়ার পানির কেস কিনলে আপনি ৩.১৭ গ্যালন পানি পাবেন, যার মোট দাম হবে ২৯ ডলার, গ্যালন প্রতি ৯.১৫ ডলার করে! কাজেই, তেলের দাম যখন বেশিই ছিল তখনও সেটা পানির চেয়ে কম ছিল। এই পানির কাছে তেলের কোন পাত্তাই নাই!

এত কষ্ট করে অংক করলাম কি জন্যে? (১) এখন কাজের অনেক চাপ, কাজেই অন্য 'কাজ' করতে বেশি ভালো লাগে, (২) যদি সবার মনে দয়ার উদ্রেক হয়ে, চাঁদা তুলে আমাকে এক বোতল পেরিয়ার পানি কিনে দেয়। (এটা এখন পর্যন্ত চেখে দেখার ভাগ্য হয় নাই; প্রতিবার এই বোতলে দেখলেই ভাবি, কোন পাগলে কিনে এইটা?)

আশা করছি এই (কু)তর্ককে হলকাভাবে (মানে 'স্পোর্টিংলি' আরকি) নেবেন।

শুভেচ্ছা :)

অতিথি লেখক এর ছবি

ঢাকাতে পেরিয়ার খাওয়া মানুষ আমার আশেপাশে আছে। সেই সুবাদে পেরিয়ার চাখার সুযোগ হয়েছে। আমার অতিদরিদ্র জিহ্বা তার স্বাদের পার্থক্য করতে পারেনি। আপনি বলায় দামী পানির একটু খোঁজ করলাম। তারপর যা পেলাম সেটা দেখে আমার অজ্ঞান হবার দশা। এই ন্যান, দামী পানি কারে কয় দেখেন!

মেঘলা মানুষ এর ছবি

যাক পেরিয়ার খাওয়া একজন মানুষের সাথে আলাপ হল :p

এই দামী পানিগুলো খায় কারা? একটা পর্যায়ে গিয়ে মানুষের সম্ভবত টাকা দিয়ে কি করা যায় সেটার ধারণা চলে যায়। এই এক বোতল পানির উপযোগ কতটা? অথচ, ঐ এক বোতল Acqua di Cristallo Tributo a Modigliani এর টাকা দিয়ে কতগুলো মানুষের পানির ব্যবস্থা করা যায়!

শুভেচ্ছা :)

অতিথি লেখক এর ছবি

[quoteনাস্তা ‘খাওয়া’ আর ব্রেকফাস্ট ‘করা’র তফাৎ ব্যাপক!]

সত্যিই তাই। হান্টার ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।