বেশ ভাল হত যদি বাকী জীবনটা একটা ঘরে বসে কাটিয়ে দিতে পারতাম।
কেউ যদি প্রতিদিন সামান্য খাবার দিয়ে যেত। আর বই। বই পড়ে পড়ে কাটিয়ে দিতাম। টু হেল উইথ হিউম্যানকাইন্ড এন্ড অল দেয়ার শিট! মানবজাতি থাকতো পড়ে তাদের আটারলি ইনকম্প্রিহেনসিব্ল এন্ড . . . এন্ড ইনেভিটেব্ল কাপ-ঝাপ নিয়ে। ওসব আর গায়ে লাগানো লাগতো না। কেবল পড়তাম আর পড়তাম। এটারনাল সন্তুষ্টির ইনফিনিট ভাণ্ডার। কিন্তু-
না কেউ আমাকে মাগনা খাওয়াবে বাকী জীবন, না-ই কেউ মাগনা বই কিনে দেবে (ঘর পাওয়া যাবে, সেটা সমস্যা না)।
অন্তত পেটের দায়ে ‘কাজ’ তো করতেই হবে। ঘরের বাইরে যেতে হবে। নিজেকে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষের সাথে চলতে হবে, উঠতে হবে, বসতে হবে। মানুষকে সহ্য করতে হবে। মানুষকে সহ্য করতে পারতে হবে। সহ্য করার কথা আসছে কেন? সেখানেই ভেজাল।
সর্বত্র, যেকোনো কর্মক্ষেত্রেই, সবখানেই এখন অনেক অনেক মানুষজন এক একটা আস্ত ফাদারমাকার হয়ে বসে আছে।
তারা কষ্ট করবে না, শ্রম দেবে না, সময় দেবে না, কাজ করবে না কিন্তু তাদের মিথ্যামিথ্যি হলেও অর্জন চাই, ভণ্ডামি করে হলেও সম্মান চাই, বিশেষ কোন অর্জন ছাড়াই প্রশংসা চাই। ফলে তারা প্রতিনিয়ত প্রতিমুহূর্ত রেলেন্টলেসলি অতিরঞ্জন মিথ্যাবাদিতা ভণ্ডামি ফাদারমাকারগিরিতে ব্যস্ত।
তাতে ‘কাজ’ এর লোকের কি সমস্যা? সমস্যা হচ্ছে কাজের লোক, যাদের কাছে কাজটা মুখ্য, যারা সময় দিয়ে শ্রম দিয়ে কষ্ট করে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন লাভে ইচ্ছুক প্রস্তুত, তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে এইসব মোফোদের জঞ্জালের মধ্য দিয়েই যেতে হয়, কখনও কখনও এই মোফোরা ঝামেলা বাধা সৃষ্টিকারী সহকর্মী, কখনওবা বস, কখনও একেবারে মালিক। এদেরকে সহ্য করতে করতে সামালাতে সামলাতে কাজ নিয়ে এগোনো অপ্রয়োজনীয়-রকম কঠিন হয়ে পড়ে, কাজই হুমকির মুখে পড়ে যায়। এদেরকে সহ্য করার প্রক্রিয়াটি জীবনে অপ্রয়োজনীয় ক্লান্তি অবসাদ এনে দেয়, মূল কাজে বাঁধা দেয়। জীবনীশক্তির দুঃখজনক অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাহলে কি করা?
সহ্য না করে রিট্যালিয়েট করা প্রয়োজন। এদের মিথ্যবাদীতা ভণ্ডামি এক্সপোজ করে এদের দিকে প্রতিনিয়ত আঙ্গুল তাক করে রাখা প্রয়োজন। এদেরকে প্রতি পদে পদে হিউমিলিয়েইট করে করে করে এদের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া প্রয়োজন যে সৎ কর্ম ব্যতীত অর্জন সম্ভব হবে না, প্রশংসা সম্মান পাওয়া হবে না। কাজ করো, অর্জন করো, বাহবা সম্মান সবই দেবো (আনুপাতিক ভাবে)।
রিট্যালিয়েট করা? তা কেন? হোয়াই? কারণ, এদেরকে সর্বদা পার পেয়ে যেতে দিতে থাকলে, অন্য যারা সম্ভাব্য সৎ পরিশ্রমী ‘কাজ’ এর লোক তারা একইসাথে নিরুৎসাহিত এবং উৎসাহিত হতে থাকবেন। নিরুৎসাহিত হবেন সৎ কঠোর শ্রমদানে, যখন দেখতে থাকবেন যে তাদের কঠিন চেষ্টার বিশেষ ফল দাঁড়াচ্ছে না, বরং খুব সততার সাথে কর্ম না করেও, খুব বেশী কষ্ট না করেও অর্থ-প্রশংসা-সম্মান অর্জন সম্ভব হচ্ছে। উৎসাহিত হবেন ‘ওদের’ মত হয়ে উঠতে, মিথ্যাবাদিতা আর ভণ্ডামির আশ্রয় নিতে, বান্দীগিরি করতে, বিকজ দ্যাট ওয়ার্কস, ইজ ওয়ার্কিং। ব্যাপারটা অনেকটাই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মত।
তো-
আমি সিনেমা নিয়ে লিখি, এই লেখাটি দেশের সিনেমা প্রসঙ্গে আমার একটি ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা, রিট্যালিয়েশানের।
একজন দর্শক হিশেবে ভবিষ্যত নির্মাতাদের প্রতি- যারা সৎভাবে চেষ্টা করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ উচ্চাকাঙ্খা ধারণ করেন- তাদের প্রতি এটি একটি বার্তাও। বার্তাটি এই যে, সৎ চেষ্টা, কঠোর শ্রমদান অব্যাহত রাখুন, আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলো সঠিক মাত্রায় রেকোগনাইজ করার এপ্রিশিয়েইট করার মত মানুষ আছে, আপনাদের অর্জন যখন আসবে, তখন প্রচলিত গোবরের তালের সাথে তা গুলিয়ে ফেলা হবে না। আশাহত হবেন না।
*
খবরে প্রকাশ,
কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হবে তৌকিরের ‘অজ্ঞাতনামা’র’!
৬৯তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্কসে দু’ফিল্মে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের ছবি হিসেবে প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘অজ্ঞাতনামা’র। ছবিটি পরিচালনা করেছেন তৌকির আহমেদ। চলচ্চিত্রটি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রধান ভবন প্যালেস দু’ফেস্টিভ্যাল এর প্যালেস- আইতে আগামী ১৭ মে সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শিত হবে। উল্লেখ্য, কান চলচ্চিত্র উৎসবে সারা বিশ্ব থেকে আমন্ত্রিত প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয় শিল্পী এবং সাংবাদিকরাই এই প্রিমিয়ার শোটি দেখার সুযোগ পাবেন।
ইতিমধ্যে ওয়ারনার ব্রাদার্স, এরস, এম কে ২ সহ বিশ্বের খ্যাতনামা ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানিগুলো কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি দেখার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। কান চলচ্চিত্র উৎসব কর্তৃপক্ষ থেকে উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক বিক্রয় ও বিপনন ইবনে হাসান খান ও ছবিটির পরিচালক তৌকির আহমেদ।
*
পাঠক, বিশ্বাস করবেন না কেমন টোটাল বোকাচোদা হয়ে গিয়েছিলাম শিরোনামটি পড়ে! অনেকটা তৌকিরের মতই, এইরকম-
প্রথমে ভাবলাম, এ কি! কানের অফিশিয়াল সিলেকশান ঘোষণার প্রেস কনফারেন্সের লাইভ স্ট্রিমিং দেখলাম পুরোটা, নির্বাচিত সিনেমাগুলোর নাম পড়তে পড়তে আর প্রাসঙ্গিক সার্চ করতে করতে নাম মুখস্থ হয়ে গেল সবগুলোর, নিয়মিত খোঁজ রাখছি আপডেইটেড থাকছি, আর এইখানে কি বলে এরা? আজব!
ভাবলাম, কোন ধরণের সাইকটিক ক্লিক বেইট নাকি? পড়ে দেখি। পড়ে দেখলাম। এবং
বিরক্তিতে চোখ-মুখ কুঁচকে এলো।
লেখাটিতে প্রদত্ত তথ্যগুলো সিনেমাটির সাথে জড়িত লোকজনের ফেইসবুক পোস্ট থেকে সরাসরি কপি পেস্ট করা (পরে জানতে পেরেছি। এও এক চমৎকার ধরণের জার্নালিজম চলছে আজকাল। রিপোর্টারদের আর খবর খুঁজতে যাওয়া লাগে না, ফেইসবুক খুলে বসে থাকলেই হয়। যাই হোক।) লেখাটিতে সিনেমাটির সাথে জড়িত অমুক-তমুকদের একেবারে ফইন্নির মতো কাঙালের মতো ‘জাতে ওঠার’ একটি ভয়াবহ ডেসপারেট চেষ্টা এতটাই প্রকট যে তা পর্দা থেকে বের হয়ে এসে বাড়ি দেয়, একটা ধাক্কা অনুভব করি, নিজেরই কেমন বিব্রত লাগতে থাকে।
এদের কি কোন আত্মসম্মানবোধ নেই? এক বিন্দুও কি অবশিষ্ট নেই? উত্তরটা সম্ভবত ‘না’।
একের পর এক মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে খবরটিতে।
‘৬৯তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্কসে দু’ফিল্মে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের ছবি হিসেবে প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘অজ্ঞাতনামা’র।’ ডাহা মিথ্যে কথা। প্রথমেই বলি, কানের ফিল্ম মার্কেটটির নাম মার্শ দু ফিল্ম, মার্কসে দু নয়- অশিক্ষা কুশিক্ষার আরেকটি সামান্য নমুনা। ২০১৩ সালে অনন্ত জলিলও তার 'নিঃস্বার্থ ভালোবাসা' নিয়ে এই ফিল্ম মার্কেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুতরাং অজ্ঞাতনামা নিশ্চিতভাবেই মার্শ দু ফিল্মে অংশ নেয়া ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি সিনেমা নয়। এটি অজ্ঞাতনামা টিমের নাম কামানোর, পাবলিসিটির একটি করুণ অপচেষ্টা-মাত্র।
‘চলচ্চিত্রটি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রধান ভবন প্যালেস দু’ফেস্টিভ্যাল এর প্যালেস- আইতে আগামী ১৭ মে সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শিত হবে।’ যেটিকে ‘প্যালেস দু’ফেস্টিভ্যাল’ বলছে সেটি আসলে ‘পালে দে ফেস্তিভাস এ দে কোঙঘ্রে’ – একটি কনভেনশন সেন্টার, কান উৎসবের ভেন্যু। আর ‘প্যালেস-আই’ হল পালে আই, আই এখানে ইংরেজি এ্যালফাবেট ‘আই’। ফিল্ম মার্কেটে অর্থের বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন করে প্রদর্শনীর জন্য অংশ নেয়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থের বিনিময়ে কিছু ‘রুম’ ভাড়া পায় তাদের সিনেমা প্রদর্শনের জন্য। এর মধ্যে পালে দে ফেস্তিভাসে বরাদ্দ থাকে দশটি রুম। ইংরেজি অক্ষরে ‘বি’ থেকে ‘কে’ পর্যন্ত। ‘আই’টি ভাড়া নিয়েছে অজ্ঞাতনামার প্রযোজনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। অর্থ ব্যয় হয়েছে ৯৭৯ ইউরো। ভাল কথা। এখানে বলে নিই, ‘আই’ রুমটির আসন সংখ্যা ৭৩। ঠা ঠা(হাসি)।
‘উল্লেখ্য, কান চলচ্চিত্র উৎসবে সারা বিশ্ব থেকে আমন্ত্রিত প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয় শিল্পী এবং সাংবাদিকরাই এই প্রিমিয়ার শোটি দেখার সুযোগ পাবেন।’ হাসবো না কানবো বুঝতে পারি না! একজন নির্মাতা তৌকির আহমেদ, যার কোন চলচ্চিত্র কখনও কোন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে নি, কোন আন্তর্জাতিক পুরস্কার পায়নি, যার কোন সিনেমা নিয়ে কোন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রকাশনায় নূন্যতম একটি লেখাও নেই, কোন আন্তর্জাতিক সমালোচক যার কোন চলচ্চিত্রের কোন সমালোচনামূলক লেখা কখনও লেখেনি, কোন আন্তর্জাতিক পরিবেশক যার কোন চলচ্চিত্র কোনদিন কিনে নেয় নি, মোদ্দাকথা যার পরিচালক হিশেবে নূন্যতম আন্তর্জাতিক পরিচিতি নেই- তার চলচ্চিত্র দেখার জন্য যেন সারা বিশ্বের প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয় শিল্পী এবং সাংবাদিকেরা মুখিয়ে আছে, তারা পাগল হয়ে আছে কখন দেখবে কখন দেখবে! সারা বিশ্বের অমুক তমুকেরা এসে ৭৩টি আসন দখল করে বসে শো হাউজ-ফুল করে দেবে! কেবল অমুক তমুকেরাই প্রিমিয়ার শো টি দেখার ‘সুযোগ’ পাবেন। যেন সুযোগ পাবার জন্য সারা বিশ্বের মানুষের ঢল নেমেছে।
‘ইতিমধ্যে ওয়ারনার ব্রাদার্স, এরস, এম কে ২ সহ বিশ্বের খ্যাতনামা ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানিগুলো কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি দেখার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।’ আবার ঠা-ঠা হাসি। মানেএএএ . . কি বলবো! ভাষা হারিয়ে ফেলছি! এইধরনের নিখাদ নির্লজ্জ মিথ্যা কথা মনে কি অনুভূতির জন্ম দিতে পারে? ওয়ারনার ব্রাদার্স বসে আছে অজ্ঞাতনামা দেখার জন্যে? আগের প্যারার কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি না করি।
‘কান চলচ্চিত্র উৎসব কর্তৃপক্ষ থেকে উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।’ নিজেদের ইমেজে সম্মানিতের কাপড় চড়াতে আরও একটি নির্লজ্জ করুণ মিথ্যে কথা। ফিল্ম মার্কেটে অংশগ্রহণের জন্য কোন আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানোর প্রশ্নই ওঠে না! প্রযোজক ওয়েবসাইটে অর্থ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন, স্ক্রিনিং রুম বুকিং দেবেন, কনফার্মেশন পাবেন, ফেল কড়ি মাখ তেল। এইখানে আমন্ত্রণ আবার কি?
*
তৌকিরের বক্তব্য,
কান ফিল্ম ফেস্টিভাল পৃথিবীর যে কোন নির্মাতার জন্যই স্বপ্নের জায়গা। আর এমন ফেস্টিভালে নিজের ছবি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য আনন্দের। তারচেয়ে বড় কথা এমন জৌলুসময় ফেস্টিভালে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হতে পারা। এটা শুধু আমার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য সুনামের।
ভাঁওতাবাজি চলছে চলবে।
উনার চলচ্চিত্রের মান বিচার করে কেউ উনাকে ‘সুযোগ’ দেয়নি উনার চলচ্চিত্র নিয়ে কানে অংশ নেয়ার। উনার প্রযোজক অর্থ ব্যয় করে সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। যার অর্থ আছে সে-ই পারবে, সোজা কথা। আর যে মার্কেটে গত বছর ৩৩৫০টি সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে, এবছর হয়তো আরও বেশী হবে, তেমন মার্কেটে নিজে অর্থ ব্যয় করে ৭৩ সিটের একটি রুম ভাড়া করে নিজের সিনেমা চালিয়ে নিজে নিজে দেখা-ই যদি দেশের চলচ্চিত্রের জন্য সুনামের হয়, তাহলে চলচ্চিত্রের উচিৎ এখনই গলায় দড়ি দিয়ে মরা। গানে গানে বললে, মরবি তুই মরে যা।
*
আশ্চর্য!
আমি বুঝি না, এরা কি এতটা-ই এতটা-ই অশিক্ষিত মূর্খ?
কানের মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া কত সিনেমাই ঠিকঠাক মত ডিস্ট্রিবিউশন পায় না, পেতে কষ্ট হয়ে যায়! বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের বাজার দিনে দিনে পড়ছে, সাবটাইটেল দেখে দেখে মানুষ সিনেমা দেখতে চায় না, বিশেষ করে বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজার উত্তর আমেরিকায়।
একটি চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয় করার সঠিক, সবচেয়ে অভিয়াস পন্থা হল, গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবগুলোর মূল প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে অংশগ্রহণ, সঠিক পাবলিসিটি, সেইলস এজেন্ট ভাড়া করা ইত্যাদি ইত্যাদি। বিস্তারিত এই লেখায় না বলি। মূল যে বিষয়টিতে জোর দিতে চাইছি- গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ।
প্রথমত, অজ্ঞাতনামা এরই মধ্যে ইতালির কোন বালছাল চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য নির্বাচিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ আর কোন গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে এটি অংশগ্রহণ করতেই পারবে না।
এখানেই তো ঘটনা শেষ! অজ্ঞাতনামার আন্তর্জাতিক ডিস্ট্রিবিউশন পাবার প্রশ্নই ওঠে না!
দ্বিতীয়ত, একটি আউটরেজাস লেভেলের স্টুপিডিটির কথা বলব, আগে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। অজ্ঞাতনামার পোস্টারটি দেখুন-
পোস্টারে তিনটি(!) ভাষায় সিনেমাটির নাম কিংবা 'আ ফিল্ম ফ্রম বাংলাদেশ' লেখাটির শিশুতোষ স্টুপিডিটির দিকে না যাই- নিচের দিকে লক্ষ্য করুন, স্পষ্ট বলা আছে- ওয়ার্ল্ড ডিস্ট্রিবিউশন বাই ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। সিনেমাটির আইএমডিবি প্রোফাইলেও একই তথ্য, ওয়ার্ল্ডে ডিস্ট্রিবিউট করবে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। হোয়াট দ্যা ফাআক! তাহলে তারা কি করতে ফিল্ম মার্কেটে অংশ নিচ্ছেন? ইমপ্রেসই যদি সিনেমাটির বিশ্বব্যাপী পরিবেশক হয় তাহলে আর কোন পরিবেশক এটির পরিবেশন স্বত্ব কেন কিনবে? কেন আগ্রহ দেখাবে? আজগুবি কারবার!
নট রিইলি, নো। আজগুবি নয়। দে আর সিম্পলি অশিক্ষিত মূর্খ। এন্ড ধান্দাবাজ এজ ওয়েল।
আসল কথা এই যে- তারা টাকা দিয়ে রুম বুক করেছেন, খবরের কাগজে নিউজ ছাপিয়েছেন কানে যাচ্ছেন কানে যাচ্ছেন বলে, কানে যাবেন, একটু ঘোরাঘুরি করবেন, ট্যুর দেবেন, স্ক্রিনিংয়ের সময় নিজেদের সিনেমা নিজেরাই দেখবেন, আরেকটু ঘোরাঘুরি করবেন, ছবি তুলবেন, ফেইসবুকে দেবেন, একটু হাইপ হবে, আবার পড়ে যাবে, আরও একটু ট্যুর দিয়ে দেশে চলে আসবেন। এই-ই।
কিছুদিন কেবল- কানে ওয়া্র্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে আমাদের সিনেমার, সিনেমা নিয়ে কানে গিয়েছি- এই ধরণের ভণ্ডামি বলে বলে অল্পবিস্তর সম্মান কামানোর, হয়ত মুনাফাও বের করার একটা ডেসপারেট চেষ্টা চালাবেন।
শেষে, যা হয়ে আসছে সিনেমার, তা-ই হবে।
*
এই লেখাটি শেষ করে আসছি প্রায়, এমন সময় হঠাৎ ফেইসবুকে ঢুকে দেখলাম জালালের গল্পের নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন এই বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী, অমিতাভ রেজাদের মন্তব্য আছে।
অমিতাভ রেজা জানালেন তার কামিং সুন সিনেমা ‘আয়নাবাজি’ও এবার কানের ফিল্ম মার্কেটে অংশ নিচ্ছে অজ্ঞাতনামার মতই। এদের থেকে আর কি আশা করা যায়! এদের মানসিক আভিজাত্য, শিক্ষা, শিল্পীর ইমেজ সবই কৃত্রিম, চূড়ান্ত-রকম অন্তঃসার শূন্য, ফাঁপা। এদের থেকে আশা করা যায় না যে এরা জানবে আধুনিক চলচ্চিত্র বিশ্বে কিভাবে একটি চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যেতে হয়। আর মানসম্পন্ন সিনেমা, যেটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতায় লড়ার যোগ্যতা রাখবে, তেমন সিনেমা আশা করা তো আরও দূরের কথা! যাই হোক, আয়নাবাজি মুক্তি পেলে তারপর এ নিয়ে কথা হবে, এখন আর নয়। প্রসঙ্গে ফিরি।
আবু শাহেদ ইমনের স্ট্যাটাসে আর মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর মন্তব্যেও দেখলাম আরও আরও ভণ্ডামি। সয়লাব।
দুজনেরই গায়ে বেশ লেগেছে। কারণ তারা নিজেরাও নির্মাতা হিশেবে কানে অংশ নেবার স্বপ্ন দেখেন নিশ্চয়ই! আর এইখানে তাদের চোখের সামনে দিয়ে তৌকির অতিরঞ্জন আর মিথ্যায় ভর করে হিরো হয়ে যাচ্ছেন, বাংলাদেশের জন্য সুনাম নাকি বয়ে আনছেন- তা সহ্য করা যায় কিভাবে? তবু ইমপ্রেসের প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর আর নির্মাতা তৌকির দুজনই কাছের লোক হওয়াতে সরাসরি আঙ্গুলও তুলতে পারছেন না তাদের দিকে। বরং ইনিয়ে বিনিয়ে দোষ ফেলছেন সাংবাদিকদের উপরে। সাংবাদিক ভাইয়েরা কেন না বুঝে এমন করেন? একজন সাংবাদিক আবার পাল্টা মন্তব্যও করেছেন তাতে, স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন যে- ‘গণমাধ্যমকে বিভ্রান্ত করেছেন নির্মাতা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দু'পক্ষই।’
আবু শাহেদ ইমন বলছেন,
‘কান চলচ্চিত্র উৎসবে অমুক ছবি বা তমুক ছবি’ এই রকম শিশুসুলভ সংবাদ পরিবেশন ও হেডলাইন প্রদান করা থেকে বিরত থাকবার জন্য সমস্ত বিনোদন প্রতিবেদককে অনুরোধ করছি। এতে আমরা যারা বিষয়টি জানি ও বুঝি আমরা সবাই বিব্রত হই। সত্যি যেদিন একদিন বাংলাদেশের ছবি কানের অফিসিয়াল কম্পিটিশনে যাবে তখন কিন্তু বাংলায় গুগল করলে সবার জন্য হেডলাইন একই হবে। নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মতন কিংবা অজ্ঞাতনামার মতন একই রকম হেডলাইনই তো দিতে হবে। নাকি তখন আপনারা লিখবেন 'এইবার সত্যি সত্যি কানে গেলো অমুকের ছবি’!
আবু শাহেদ ইমনের এখন হেডলাইন নিয়ে সমস্যা। কিন্তু যখন তার সিনেমা নিয়ে হেডলাইনে অনলাইন সয়লাব হয়ে গিয়েছিল ‘অস্কারে যাচ্ছে জালালের গল্প’, তখন তার কাছে তা আপত্তিকর মনে হয়নি, বরং এমন হেডলাইনের সংবাদ তিনি নিজেই শেয়ার করেছিলেন। তার মেন্টর মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীও তখন তেমন মাইন্ড করেননি। ফারুকীর অতিরঞ্জন, নিজের কাজ প্রাসঙ্গিক ওভারএস্টিমেশান সবই পুরনো বিষয়, সেসব এই লেখায় নাড়াচাড়া না করি। কিন্তু নবাগত তরুণ নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন খুবই অবাক করলেন।
ইমনের প্রতি প্রশ্ন, যেদিন আসলেই কোন বাংলাদেশী সিনেমা অস্কারের মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে(হায়!), সেদিন হেডলাইন কি হবে? 'এইবার সত্যি সত্যি অস্কারে যাচ্ছে অমুক ছবি'?
এই ধরণের মানসিকতার-চরিত্রের পরিচালক-প্রযোজকেরা নির্মাণ করবে উন্নত সিনেমা?
*
কানের এবারের বিচারকদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তালিকায় আছেন লাজলো নেমেশ। গতবার তার নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘শঅল ফিয়া’ নিয়ে কানের মূল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন, পেয়েছিলেন চারটি পুরস্কার, পরে বছর জুড়ে বয়ে গিয়েছিল বহু বহু পুরস্কারের বন্যা, জয় জয়কার, শেষে অস্কারও পেলেন ফেব্রুয়ারিতে, আর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার কানে, এবার বিচারকের আসনে। কি আশ্চর্য! কি আশ্চর্য!
কিভাবে করলেন? মামা-চাচা ধরে? কিভাবে?
আর জাভিয়ে দোলান? ১৯ বছর বয়সে নিজের নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘আই কিল্ড মাই মাদার’ নিয়ে কানে গেলেন, এরপর থেকে বছর বছর যাচ্ছেন, গত বছর আবার বিচারকও ছিল কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের, কোয়েনদের সাথে, আর এই বছর আবার নিজের সিনেমা নিয়ে যোগ দিচ্ছেন মূল প্রতিযোগিতায়।
কিভাবে পারেন? মায়ের পেট থেকে নিয়ে বের হয়েছেন প্রতিভা? আকাশ থেকে পড়েছেন? নাকি জ্ঞানের ভাবনার চর্চা করেছেন, শিক্ষিত অভিজাত হয়ে উঠেছেন মানসিকতায় ভাবনায়? সস্তা ভণ্ডামি করে করে কি আত্মসম্মানবোধ পুরোপুরি খুঁইয়ে একটি অথর্ব মানুষে পরিণত হয়েছেন? নাকি নিজের কর্ম দিয়েই সকলের সম্মান আদায় করে নিয়েছেন?
পাশের দেশ ভারতের চব্বিশ-পঁচিশের ছোকরা চৈতন্য তামহানে ২০১৪ তে প্রথম সিনেমা ‘কোর্ট’ দিয়েই, গল্প দিয়ে, নির্মাণ দিয়ে মাঝারি মাত্রায় আন্তর্জাতিক অঙ্গন নাড়িয়ে দেন। কোলকাতার বাঙালি ব্যাটা কৌশিক মূখার্জি ‘গাণ্ডু’ বানান, ‘তাসের দেশ’ বানান, শেষে ‘ব্রাহমান নামান’ বানিয়ে এই বছরের জানুয়ারিতে যান সানড্যান্সের প্রতিযোগিতা বিভাগে আর সেখানে মিলিয়ন ডলারে নেটফ্লিক্সের কাছে বেঁচে দেন অনলাইন পরিবেশন স্বত্ব। কোলকাতার আরেক বাঙালী ছোকরা আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত প্রায় যেন একার চেষ্টাতেই আস্ত সিনেমা বানিয়ে ফেলেন ‘আসা যাওয়ার মাঝে’, তার প্রথম সিনেমা, ২০১৪ তে ভেনিসে পুরস্কার জেতেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব একটা এগোতে, নাম কামাতে না পারলেও, এবার প্রস্তুত ২০১৬ তে, অংশ নিচ্ছেন কানের সিনেফন্ডেশানের এ্যাটেলে তে (শেখো বাংলাদেশী লুজারেরা, শেখো) তার পরবর্তী সিনেমা-প্রজেক্ট নিয়ে, প্রডিউসার বাগাতে। এবং বাগাতে পারবার সম্ভাবনা খুবই শক্ত।
কিভাবে পারেন? কিভাবে?
আর এদেশের গুলো? এদেশের, দশ পনের বছর ধরে বহু বহু নাটক বিজ্ঞাপন নির্মাণ করা সিনেমা নির্মাণ করা, কত কত জ্ঞানী জ্ঞানী সিনেমা সমঝদার ইন্টেলেকচুয়াল রক্তের সাথে যাদের আর্ট মিশে গেছে- এক একটা প্রায় মধ্যবয়স্ক চিড়িয়াগুলো?
প্রথম সিনেমা দিয়ে দুনিয়া মাত করা তো দূরের দূরের দূরেএএএর কথা। এত এত ‘আপাত’ অভিজ্ঞতার পরও এমন কোন কাজ কি এদের আছে, যেটা দেখে মনে হয় বাজেটের সংকটের কারণে প্রোডাকশান ভ্যালু কম হয়ত, কিন্তু গল্পে ফাটিয়ে দিয়েছে, নির্মাণ হয়েছে ক্ষুরধার!?
এদের জন্য এই লেখার হেডলাইনে(!) উল্লেখিত থাম্বস আপ . . . জায়গামত।
*
পুনশ্চ: ব্যাক্তিগত কাজের চাপ বাড়তে থাকায় লেখার পরিমাণ কমে আসছে, কমতে থাকবে। এরপর হয়ত মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী ড্রামাটিক সিনেমাগুলো নিয়েই কেবল বড় লেখা লিখতে পারবো। কিন্তু প্রতিদিনই অনেক ছোটখাট বিষয় নিয়ে ভাবনা শেয়ার করতে, সিনেমা বিষয়ে আগ্রহীদের সাথে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে। অনেক ভাবনা এত ছোট হয় যে একটি পূর্ণ লেখা দাবী করে না। সেজন্য একটি ফেইসবুক পেইজ খুলেছিলাম যেখানে কমবেশী প্রতিদিনই সিনেমা প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে ছোটখাট ভাবনাগুলো শেয়ার করতে, সেগুলো নিয়ে আড্ডা দিতে পারবো। আগ্রহী পাঠক যোগ দিতে পারেন। উপরের ‘সিনেমা দেরীতে’ লোগোটিতে ক্লিক করলেই পেইজ পেয়ে যাবেন।
মন্তব্য
আমি ভাবছি এই পৃথিবীর সবাই যদি আপনার মত এরকম উচ্চ বোধ ধারন করে বসে থাকতেন, তাহলে প্রতিদিন এসে সামান্য খাবারটুকু তাদের কে দিয়ে যেত? খাবার উৎপাদন, রন্ধন, এসবই বা কে করতো।
জানার জন্য জিজ্ঞেস করছি, এই বাক্যটির শব্দগত অর্থ কি? ভাবগত অর্থই বা কি?
যদিও কথা বলার সময়েও এইরকম গুরুচণ্ডালী ভাষা ব্যবহার করা উচিৎ নয়, লেখার সময় আরও অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ।
শুরুর অংশটুকু রেটোরিকাল। পরবর্তী পয়েন্ট গুলো মেইক করবার জন্য প্রয়োজনীয় বিল্ড-আপের একটি ধাপ মাত্র। তারপরও বলি,
এই বোধটি উচ্চ কোন হিশেবে? কোন মানদণ্ডে? এটা কেবল ব্যাক্তিগত একটি চিন্তা-ই নয় কি? উচ্চ বা নিচুর প্রসঙ্গ কেন? আর,
আমার যেমন হয়ত কেবল বই পড়ে কাটিয়ে দেবার ইচ্ছে, কারও কি কেবল খাবার উৎপাদন রন্ধন করে কাটিয়ে দেবার ইচ্ছে থাকতে পারে না? সে দিয়ে যাবে!
*
‘হোয়াট দ্যা ফাক’ এর শব্দগত অর্থ? উইকশানারি বলছে এটি একটি ইন্টারোগেটিভ ফ্রেইজ, যেটি মূলত ‘হোয়াট’ তথা ‘কি’ এর একটি তীব্রতর রূপ। আমিও পরিস্থিতিতে অবাক হতবাক হয়ে ‘কি’ বলতে গিয়ে আরও তীব্র করে ‘হোয়াট দ্যা ফাক’ বললাম। ‘ফাক’টা আবার একটু টেনে ‘আ’ লাগিয়ে বললাম ‘ফাআক’, যেমনভাবে বাস্তবে এমফ্যাসিস দিয়ে বলে থাকি।
*
ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে, ‘এইরকম গুরুচণ্ডালী ভাষা ব্যবহার করা উচিৎ নয়’- উচিৎ নয়? কার মতে?
অসাবধানতা বশত লিখিনি, সচেতন ভাবেই লিখেছি, মজা করার জন্য। অনেকে মজা পেতে পারেন, অনেকে না-ও পেতে পারেন। অল ইজ ওয়েল।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
*
সিনেমা দেরীতে
আপনি ঘটনায় হতবাক হয়ে ইংরেজীতে যে ভাবে যে ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করলেন, সে ভাবে বাংলায় অনেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলে থাকেন- তর মায়েরে "চু*"। যার উদ্দেশ্যে বলা হয়, আসলে তার মায়ের প্রতি সেরকম কোন কিছু না ভেবেও কথাটা বলা হয় ভিন্ন একটি নির্দোষ অর্থ প্রকাশের জন্য। বাংলায় লেখার ক্ষেত্রেও কি আমরা তাহলে নির্দ্বিধায় চ-বর্গীয় এসব শব্দমালা এখন থেকে ব্যবহার করতে পারি?
আপনি যখন বাংলা ভাষায় লিখছেন, সেখানে একটি বাক্যের মধ্যে অকারনে অদ্ভুতভাবে কয়েকটি ইংরেজী শব্দ ঢুকিয়ে দিয়ে যদি বলেন- আমার খুশী আমি লিখবো, তাহলে কারো কিচ্ছুটি বলার নেই, বিশেষত সেটা যদি হয় মজা করার জন্য। দুঃখিত, এরকম একটি সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লেখার সময় যে আপনি এ ধরনের মজা করবেন, ভাবতে পারিনি। লেখা চালিয়ে যান, শুভেচ্ছা রইল।
ওভাররিঅ্যাকট করতেছেন ডু্যড
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ড্যুড? এইটা আবার কি বস্তু জনাব?
রাগান্বিতবস্থায় অনেক বস্তুই অচেনা লাগে জনাব।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
লেখা ভালো হইসে।.. আরো বেশি লেখেন। .. নিউসপেপার এ লিখলে ভালো হয়. সচলায়াতন এর পাঠক একটা নির্দিষ্ট শ্রেনীর আর সংখ্যার। সাধারণ মানুষ এর এই ভন্ডামি গুলা জানা দরকার।
বাংলাদেশ এর সিনেমা দেখা বহু দুঃখে বাদ দিসি। .. খুব এ কষ্ট লাগে।. পাশের দেশে এমনকি কলকাতা তে এত চমত্কার সিনেমা হয়.. (ওদের খারাপ সিনেমা ও হয়... কিন্তু সেই খারাপ এর মান ও আমাদের থেকে অনেক অনেক বেশি উপরে। ) আর আমরা কি করতেসি।. তৌকির এর মত সিনিয়র একজন ও এরকম নির্লজ্জের মত মিথ্যাচার করতে পারল?!!
যাই হোক আপনি যেদিন সিনেমা বানাবেন সেদিন আমাকে একটা চাকরি দিয়েন। এই বেপারে আমার একমাত্র যোগ্যতা হলো আমি সিনেমা ভালবাসি। ফাই ফরমাস খাটলাম ।..
এবছরটা দেখতে পারেন বাংলাদেশী সিনেমা। কারণ, ড্রামাটিক সিনেমার ফিল্ডে এদেশের সম্ভাব্য ভাল যতো পরিচিত নির্মাতা আছেন তাদের প্রায় সকলেই এবছর সিনেমা বানাচ্ছেন, তাদের প্রথম কিংবা দ্বিতীয়। এবছর সন্তুষ্ট না হলে এর পরে বাদ দিয়ে দিতে পারেন!
আপনি যদি সিনেমা ভালবাসেনই, তাহলে তো আমরা কেবল সিনেমা নিয়ে গল্প করে করেই চমৎকার সময় কাটাতে পারি। এত কষ্ট করে- এখানে আমি খাটুনির দৈহিক কষ্টটার কথা বলছি- সিনেমা বানাতে যাবই বা কেন আর আপনিই বা কেন ফাই ফরমাস খাটতে যাবেন? হাহা!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
*
সিনেমা দেরীতে
আমিও নিউজ পড়ে বিশ্বাস করে রামবলদ হলাম!
*
সিনেমা দেরীতে
তৌকিরের কাজ এঁর চেয়ে প্রচারনা বেশি। আমার মনে আছে, যখন তাঁর জয়যাত্রা মুক্তি পাওয়ার আগে, উনি কোন সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, ৭১ এঁর সময়ে ঘটনাকে আর বাস্তব দেখানোর জন্য উনি ঢাকা ম্যাচ ফ্যাক্টরিকে দিয়ে সেই সময় এর ম্যাচের মোড়ক পর্যন্ত বানিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সিনেমা দেখে পুরোই হতাশ। ক্যামেরার কোন আর্ট ওয়র্ক চোখে পড়েনি।
কথা সতি্য, পাশের দেশের কলকাতার এর অখ্যাত পরিচালকের বানানো ছবিতে এঁর চেয়ে বেশি দরদ দেখানো কাজ থাকে।
দেশের বেশীরভাগ নির্মাতারই আসলে এই অবস্থা।
তার কি করতে পারবেন তা না বুঝে,
কি করতে পারছেন তা মূল্যায়ন না করে,
কি মহান কিছু করতে চান তা প্রচার করতেই ব্যস্ত।
তাদের বড় বড় বাত এর সাথে তাদের বাস্তব যোগ্যতা যে পাল্লা দিতে পারছে না, সেই বাস্তবতা সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ উদাসীন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
*
সিনেমা দেরীতে
কান আর অস্কার নিয়ে এই ছোটোলোকামীটা প্রতিবছর হয়। সেই মাটির ময়নার অস্কারযাত্রা দিয়ে শুরু। আর ভালো লাগে না।
লেখার জন্য ধন্যবাদ। ভালো লেগেছে। আর আরো লেখেন সিনেমা নিয়ে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আসলেই, আর ভালো লাগে না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আরো লিখবো।
*
সিনেমা দেরীতে
মূলবক্তব্যে উর্ধ্বাঙ্গুলী ( ), আড়ড়ড়জে ভাষায় নিম্নাঙ্গুলী ( )
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
,
*
সিনেমা দেরীতে
অফ টপিক
তামিল সিনেমা নিয়া লেখেন না ক্যান?
দুনিয়াতে তামিলের উপর আর কোনো সিমেনা আছে? নাকি অস্কার-কানওয়ালাদের মতো তামিল ভাষা বোঝেন না দেইখা ওইসব সিনেমা নিয়া কথা কইতে পারেন না?
দ্যা ওয়ে আই সি ইট, বিদেশী ভাষার সিনেমা নিয়া আমার থেইকা অনেক জ্ঞানী সমঝদার লোকের অনেক ভালো লেখা ইন্টারনেটে ম্যালা আছে। তাই আমি বাংলাদেশী সিনেমা নিয়াই পড়লাম! এই আরকি। এছাড়াও,
তামিল সিনেমা দেখা হয় না। কত সিনেমা দেখবো? আমার আবার অভ্যাস হইলো ভাল সিনেমা বারবার বারবার দেখার। এই কারণে নতুন নতুন সিনেমা দেখি ঠিকই, তবে ঢালাওভাবে দেখা হইয়া ওঠে না, সেইটা তামিল হউক আর ইংরেজী, ফরাসী, স্প্যানিশ, কোরিয়ান যা-ই হোক।
*
অস্কার-কানওয়ালারা বুঝবো না ক্যান? সবই বোঝে। তাগো পর্যন্ত নিয়া যাইতে হইবো তো সিনেমা! সেই দায়িত্ব তো সিনেমার লোকেদের। ওরা তো আর আইসা খুঁজবো না।
এই তো, গত বছরই তো কান-ওয়ালারা তামিল ভাষার ‘ধীপান’ সিনেমা রে তাগো টপ প্রাইজ স্বর্ণপাম ধরাইয়া দিলো! বুঝলাম সেইটা জাক অদিয়ার বানাইছে, কিন্তু সিনেমাটা দেইখা আমার মনে হইছে এইডা অরিজিনাল তামিল কেউ-ও বানাইতেই পারতো।
অস্কার ওয়ালারা যদি হিন্দি বুঝতে পারে, কানের ফেস্টিভাল ডিরেক্টরের যদি ইন্ডিয়ার আপ এন্ড কামিং ডিরেক্টরদের নাম মুখস্থ থাকে, তাইলে বলা যায় তামিলগো পথেও বাঁধা নাই, তাগোরে খালি আরও একটু আগাইয়া হাত নাড়াইতে হবে। এই যেমন তামিল ডিরেক্টর ভেত্রিমারান আগাইতেছে।
*
আমারে, আপনার ভাল লাগসে এমন কয়টা তামিল সিনেমা সাজেস্ট করেন না!
*
সিনেমা দেরীতে
শক্তিশালী একটি লেখা হবার বহু উপকরণ থাকার পরেও লেখকের অযথা জ্ঞান প্রদর্শনের চেষ্টা লেখাটিকে দুর্বল করেছে। বিশেষ করে ফরাসী ভাষার বিষয়ে সীমিত জ্ঞান নিয়ে আস্ফালনের প্রবণতা খুবই দৃষ্টিকটু। প্রথমত marché du film এর ফরাসী উচ্চারণ লেখকের ভাষ্যমত মার্শ দু ফিল্ম নয়, মার(খ)শে দু ফিল্ম (https://translate.google.ca/#en/fr/film%20market)। "অশিক্ষা কুশিক্ষার আরেকটি সামান্য নমুনা"র জবাবটা ঠিক জুতসই হলো না। Palais des Festivals et des Congrès উচ্চারণে ক্ষেত্রেও আমার জানামতো ফেস্তিভাস না, ফেস্তিভাল হবার কথা। এ ধরণের শিশুসুলভ ভুল লেখকের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আমি বিশ্বাস করিনা- যে জ্ঞান, আগ্রহ এবং সময় থাকলে ইন্টারনেট ঘেঁটে যে কেউই অর্জন করতে পারে, তা প্রদর্শনের কোন ফায়দা থাকতে পারে। আমার যাবতীয় লেখাতেই নানা জ্ঞানের উপস্থিতি আছে, তবে তা বিশেষভাবে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে উপস্থাপিত নয়। আমি যা জানি তা খুবই সাধারণ তথ্যবলি, ইন্টারনেট থেকেই জানা যায়, দুনিয়াজুড়ে বহু লোক-ই জানে, এবং বেশীরভাগই আমার থেকে অনেক ভালো জানে। ‘প্রদর্শনের’ প্রশ্নই ওঠে না।
হাহা। ফরাসী ভাষার বিষয়ে আমার জ্ঞান সীমিত নয়, শূন্য।
এ প্রসঙ্গে বলবো, প্রতিটি প্রকাশিত ভাবনার পেছনের ভাবনা সবিস্তারে লেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
যেমন এখানে, উচ্চারণ প্রসঙ্গে, আমার কাছে যেটি আনএক্সেপ্টেব্ল মনে হয়েছিল, তা হলো, দেশের একটি বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের এ্যামেচারিশ কর্মকাণ্ড। ফরাসী শব্দের উচ্চারণ নেটে সার্চ দিলেই পাওয়া যায়। শতভাগ সঠিক হতে হবে না, শতভাগ সঠিকভাবে বাংলা অক্ষরে হয়তো লেখা সম্ভবও নয়, কিন্তু যতটুকু সম্ভব সঠিক উচ্চারণের কাছাকাছি লেখাটা প্রফেশানাল দেখায়। দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ নির্মাতার, একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের চলচ্চিত্র প্রাসঙ্গিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাং প্রেস কে দেয়া যে কোন বিবৃতিই, এতটা আনপ্রফেশানাল হওয়াটা দুঃখজনক। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার প্রচেষ্টার সাথে এই ধরণের কর্মকাণ্ড খাপ খায় না।
আমি যেমন আমার শূন্য জ্ঞানের ফলে ভুল করেছি, আমি নিশ্চয়ই উচ্চারণ ইন্টারনেটে শুনেই লিখেছিলাম, অন্তত ‘মার্শে’ লেখা উচিত ছিল, ভুল কেন হলো বুঝতে পারছি না, এখন মনে পড়ছে না ঠিকঠাক। কিন্তু আমি তো কোন প্রতিষ্ঠান নই, আমি স্বনামধন্য প্রযোজক নই, আমার লেখাটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া কোন প্রেস বিজ্ঞপ্তি তো নয়!
তবে হ্যাঁ, ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আরও সতর্কতার সাথে লিখবো।
উচ্চারণ-প্রসঙ্গটি লেখার একটি ক্ষুদ্র অংশমাত্র, এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশও নয় (বিরক্তি বশত লেখা, আমি সাধারণত লিখতে গিয়ে ব্যাক্তিগত আবেগ অনুভূতির লাগাম টেনে ধরি না তেমন!)। তাতেই আমার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা কি একটু ওভারবোর্ড যাওয়া নয়?
এনিওয়ে, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
*
সিনেমা দেরীতে
নতুন মন্তব্য করুন