নিউইয়র্ক টাইমসে পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক সিডনি শনবার্গ লিখেছিলেন: হিন্দুদের মধ্যে কেউ কেউ জীবন বাঁচানোর জন্য ধর্মান্তরিত হতে চেয়েছিল। লাভ হয়নি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গুলিতে ওদের মৃত্যু হয়েছে। শুনতে পেলাম এপ্রিল মাসে ফরিদপুরে দুজনের গলা কাটার পর তাদের শরীর কেরোসিন তেলে ডুবিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। দুইজনই হিন্দু সম্প্রদায়ের।...১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ফরিদপুরের বদিডাঙ্গিতে ৩০০ হিন্দুকে হত্যা করে। এদের মধ্যে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধার অলংকার ছিনিয়ে নেবার পর তাঁর ঘাড়ে গুলি করা হয়। সে একটা কুঁড়ে ঘরে ৮৪ বছরের বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে থাকত। ঘরটায় এখন ময়লা মেঝে ছাড়া আর কিছুই নাই। মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে আসা এ বৃদ্ধা ভীতকন্ঠে বলছিল "এটা আমার বাড়ি। আমরা সোনার বাংলায় থাকতে চাই।"
নিচের ছবিগুলো খেয়াল করে দেখুন। নয়-দশ বছরের কচি ছেলেমেয়েদের কাঁচা হাতের সাদাসিধে কাজ। মনে হয় স্বাধীনতা অথবা বিজয় দিবসে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ছবি, তাই না? আপনার অনুমান পুরোপুরি ভুল! ছবির আঁকিয়েরা বন্দুকের নলের সামনে থেকে বেঁচে ফিরে এসেছে। তাঁরা একাত্তরে খালি পায়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। মেরিলিন সিলভারস্টোন ট্রমায় আক্রান্ত তপু মিত্র, শুধীর বিশ্বাস, অর্চনা অথবা বেলা রানীদের আঁকা ছবিগুলো ক্যামেরায় তুলে রেখেছিলেন।
একাত্তর আমি দেখি নাই। এখন যা দেখেছি তা নিয়ে লিখব।
নব্বই দশকের শুরুতে ভারতের ধর্মোন্মাদরা বাবরী মসজিদে হামলা চালায়। বাংলাদেশে শুরু হয় ভয়ংকর তান্ডব। শহর এবং গ্রামের হিন্দু এবং তাদের বসতি ও প্রার্থনালয় মেরে ভেঙে পুড়িয়ে ধ্বংসের এক উৎসব শুরু হয়। সারা দেশে কারফিউ ঘোষণা করা হয়। রাস্তার পাশের জানালায় লুকিয়ে দেখছিলাম লম্বা নলের কামান নিয়ে মিলিটারি টহল দিচ্ছে। মাঝে মাঝে মিছিল বের হত, শ্লোগান ছিল "দুই একটা ডান্ডি ধর, সকাল বিকাল ধোলাই কর"। অনেক কম বয়সের সীমাহীন আতঙ্কে কাটানো সেই দিন-রাতের কথা আমার এখনো মনে আছে। গ্রাম থেকে আত্মীয়রা বাসায় আসছিল। তাদের সাথে আসছিল অচেনা লোকজন। সবাই আতঙ্কিত। তাদের ভয়াবহ সব অভিজ্ঞতার কথা শুনলে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যেত। বিপদের সময় অচেনা অজানা মানুষও খুব সহজে আপন হয়ে যায়। বাসায় কড়া নাড়ার শব্দ হলে ছোটরা মিলে খাটের নিচে লুকিয়ে যেতাম। কে যেন বলল গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করলে সব বিপদ চলে যায়। খাটের নিচে আমরা গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলাম "অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যুর্মা অমৃতম গময়"। কি হাস্যকর ব্যাপার! অজানা ভয়ে আক্রান্ত একদল শিশু বলছে "আমাকে অসত্য থেকে সত্যে, অন্ধকার থেকে আলোতে ও মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে যাও" !
ও আচ্ছা, চট্টগ্রামে অনেকেই হিন্দুদের 'ডান্ডি' নামে ডাকে। মাঝখানে কোন একটা সিনেমাতে 'ডান্ডি ফটাশ' নামে একটা লাইন এসে ব্যাপারটাকে আরো জমিয়ে দিল। কেউ কেউ দূর থেকে হিন্দু কোন মহিলা দেখলে ডাক দিত 'ডান্ডি ফটাশ'। ইভ টিজিংয়ের মত 'মাইনরিটি টিজিং' নামেও কি কোন শব্দ আছে!
২৯ এপ্রিল ১৯৯১। ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম শহর সমগ্র বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। দুঃস্বপ্নের মত ছিল দিনগুলো। পানি, ইলেক্ট্রিসিটি কিছুই নাই। বাসার পাশেই মসজিদ। দুদিন পরেই হাঁটু পানিতে একটা বালতি নিয়ে মসজিদে গিয়েছিলাম। সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিচ্ছিল অজুখানা থেকে। আমিও ছোট এক বালতি ভর্তি পানি নিয়ে থেকে বিজয়ীর বেশে বের হচ্ছিলাম। মসজিদের ইমাম আমাকে দেখে হুংকার দিয়ে বলল "মালাউনের বাচ্চাকে পানি দিল কে?" তখনই কেউ একজন এসে আমার কাছ থেকে পানি কেড়ে নিল। "মালাউন" শব্দটার সাথে আমার পূর্বপরিচয় ছিল না। খারাপ কোন গালি হবে ভেবে কারো কাছে শব্দটার অর্থ জানতে চাইলাম না।
বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতায় ট্রেনে পরিচিত একজনের সাথে গল্প করছিলাম। পাশে দাঁড়ানো এক লোক প্রশ্ন করল "আপনি কি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন?" পরিচয়ের পর জানা গেল ভদ্রলোক বেশ ভালো একটা চাকরি করতেন বাংলাদেশে। স্ত্রী চট্টগ্রামের এক স্কুলে পড়াতেন। ২০০১ এর নির্বাচনের পর 'হিন্দু খেদাও' অভিযানের কারণে স্ত্রী আর দুই কন্যাসহ নিজের জীবন নিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে আসেন। জানতে চাইলাম "এখন ভালো আছেন?" তিনি অদ্ভুত একটা কথা শোনালেন। "মনে করেছিলাম এখানে এসে মাটি খেয়ে হলেও বেঁচে থাকতে পারব। কামড় দিয়ে বুঝলাম এখানকার মাটি দেশের মাটির মত নরম না। পাথরের মত শক্ত। খাওয়া যায় না।" কথাটা বলার পর ভদ্রলোকের চোখে মুখে রাজ্যের সমস্ত অন্ধকার নেমে এসেছিল।
আমার এই ঘ্যানঘ্যানানি পড়ে অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছেন। ক্ষতিপূরন হিসাবে তিনটা জোকস বলি...
এক.
বেশ কয়েকমাস ছিলাম ফার্মগেটে। একদিন দুপুরে কড়া নাড়ার শব্দ শুনে দরজা খুলতেই বিচিত্র এক ঘটনা ঘটল। পাঞ্জাবী পড়া বেশ কিছু লোক মসজিদ বানানোর জন্য চাঁদা তুলতে এসেছে। তখন আমার গালভর্তি দাঁড়ি গোঁফের জঙ্গল। একজন তা দেখে বলে উঠলেন "আলহামদুল্লিলাহ! অনেক বাসা ঘুরার পর এই প্রথম একজন দাঁড়িওয়ালা মানুষ দেখলাম। আসেন ভাই কোলাকুলি করি।" কথাটা বলেই তিনি কোলাকুলি শুরু করলেন। উনার দেখাদেখি বাকিরাও সেই কোলাকুলিতে যোগ দিলেন।
দুই.
বাজার নামক ব্যাপারটার প্রতি আমার দূর্বলতা সীমাহীন। প্রতি শুক্রবার মাছ অথবা সবজি বাজারের কারো সাহায্য নিয়ে তিন ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে বাসায় আসতাম। এ সুবাদে মাছ এবং মুরগী মামাদের সাথে ভালো পরিচয় হয়ে গিয়েছিল। প্রায় গরুর মাংসের দোকানদারেরা আমাকে তাদের আফসোসের কথা শোনাত। "স্যার, আপনি মুরগি কিনেন মাছ কিনেন কিন্তু আমাদের থেকে কোনদিন মাংস কিনলেন না।" কথাটা শুনেই হাসতাম। একদিন আমাদের বাসায় এক দোকানদার গরুর মাংস নিয়ে হাজির! মহা সর্বনাশের কথা! বলে কিনা "স্যার টাকা দিতে হবে না। গোশত খেয়ে বাসার সবাই ভালো বললে টাকা দিয়েন"। সেদিন বাধ্য হয়ে বেচারাকে আসল কথাটা বলতে হল।
তিন.
গত বছর আন্ডারগ্র্যাড কোর্সে সৌদি আরব থেকে আসা এক স্টুডেন্ট ছিল। বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে সে আমাকে দেখা হতেই "আসসালামু আলাইকুম" বলত। আমিও উত্তরে বলতাম "ওয়ালাইকুম আসসালাম"। একদিন বলল আমার মত ভাল মুসলমান নাকি সে জীবনে খুব কম দেখেছে। তার বাড়ী মক্কা নামক শহরটায়। একটা কাগজে ঠিকানা লিখে সে অনুরোধ করল হজ্ব করতে গেলে অবশ্যই তার বাড়িতে যেতে হবে। আমি হাসিমুখে সে আমন্ত্রন গ্রহন করলাম!
জোকসের ক্যাটাগরি থাকে। এগুলোকে ক্যাটাগরি হিসাবে "মালাউন কৌতুক" অথবা চট্টগ্রামের ভাষায় "ডান্ডি কৌতুক" বলা যায়। তাই না?
_____________
সৌমিত্র পালিত
মন্তব্য
মন খারাপ করে দিলেন!ওই ইমাম সাহেব আপনাকে যে দু:খ দিয়েছিলেন,আশা করি অন্য কেউ পরম মমতায় তা মুছে দেবে কোন্ দিন।এর বেশি আর কি চাইতে পারি,লজ্জিত হওয়া ছাড়া?
আমিও উত্তরে কি বলব ভেবে পাচ্ছি না।
________________
সৌমিত্র পালিত
কিছু মন খারাপ জোকস শুনেও ভালো হয়না, আরো তীব্র দহন দেয়। কিন্তু এই দহন থেকে পালাতে চাইনা।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ, সোহেল ভাই।
________________
সৌমিত্র পালিত
চট্টগ্রামে জীবনের অনেক বড় একটা অংশ কেটেছে। 'ডাণ্ডি' শব্দটার সাথে তাই বেশ পরিচিত। একই সাথে 'ডাণ্ডি ফটাশ'ও। লেখাটা পড়ে অনেকদিন পর শব্দটা মনে পড়ল।
তবে সাম্প্রদায়িকতার পরিচয় চট্টগ্রামে থাকতে যতটা না পেয়েছি, খোদ রাজধানী ঢাকায় সে তুলনায় বেশি-ই পেয়েছি বলা যায়। ব্যাপারটা আমাকে অবাক করেছিল।
লেখকের এখন কোথায় থাকা হয় জানতে পারি?
☼ মানুষিক সৈনিক ☼
হীরক রাজার দেশে! পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
________________
সৌমিত্র পালিত
অনেকদিন পর ঘাস-লতা-পাতা নিয়ে ব্লগ লিখতে বসেছিলাম। তিন লাইন খসড়া লিখে আপনার মন খারাপ করা ব্লগটা পড়লাম, কিছু লিখার ইচ্ছেটা মিইয়ে গেল। টিভি স্ক্রলে চাপাতির কারবারি আর সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের শিরোনাম দেখে আজকাল আর লগইন করতেও ইচ্ছে হয় না।
একজন সংখ্যালঘুর আসল কষ্টটা কি একজন সংখ্যাগুরু আসলেই বুঝতে পারে?
------------------------------------------------------------------------------
জিপসিরা ঘর বাঁধে না,
ভালবাসে নীল আকাশ
ঘাস-লতা-পাতা নিয়ে লিখবেন। প্রতিদিন পৃথিবীর এত অসুন্দরের মাঝে সুন্দর তো খুঁজে বের করতে হবে।
আসলে সংখ্যালঘু শব্দটাই সীমাহীন কষ্টের।
________________
সৌমিত্র পালিত
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
________________
সৌমিত্র পালিত
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
________________
সৌমিত্র পালিত
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
পড়ার জন্য ।
________________
সৌমিত্র পালিত
সংখ্যালঘু সবার জীবনই বোধহয় এমন অনেক ঘটনায় পূর্ণ। স্কুলজীবনেই সহপাঠী থেকে শুরু করে নানা মানুষের কাছে এতো অপমানজনক কথা শুনেছি যে তার সব এখন মনেও নেই। শুধু একটা ঘটনা কেন জানি মনে রয়ে গেছে- ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় জুয়েল নামে আমার এক সহপাঠীর সাথে তুমুল ঝগড়ার সময় ও আমাকে বলেছিলো, মালাউনদের তো শালা জন্মের ঠিক নাই। এরকম সপাট চড় খেয়ে আমি আর কিছু বলতে পারিনি। সংখ্যালঘু হিসাবে আমার জীবন এরকম অসংখ্য চড়ের সমষ্টিমাত্র।
অলমিতি বিস্তারেণ
"সংখ্যালঘু হিসাবে আমার জীবন এরকম অসংখ্য চড়ের সমষ্টিমাত্র।"
এখন মালাউন কথাটাকে তো খুব অনাপত্তিকর মনে হয়! একবার ক্লাসের সবাই মিলে পিকনিকের মেন্যু ঠিক করছিলাম। সে সময় ইফতার পার্টি হতে শুরু করে কোরবানির মাংস বিতরণের কাজে ছিলাম বলে আমাকে সচেতনভাবে সংখ্যাগুরুরা 'মালাউন' মনে করত না! একজন মেন্যুতে গরুর মাংসের প্রস্তাব করে বসল। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাটা বলে উঠল "তাহলে মালুদের জন্য কি ব্যবস্থা থাকবে?"
________________
সৌমিত্র পালিত
হাহ!
আমি ব্যক্তিগতভাবে এখনো আক্রান্ত না। কিন্তু চারদিকে যা দেখি তাতে নিজেকে নিরাপদ ভাবা সত্যি কঠিন। খুব সম্প্রতি আমার বাসার দরজায় পেন্সিল দিয়ে ‘হিন্দু’ শব্দটা লিখে রেখেছিলো কে বা কারা। ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। তখন আমার বাসায় আমার ছোটবোনের বান্ধবী ছিলো- যে মুসলমান। ঘটনাটা শুনে সে খুবই কষ্ট পেল। কেন এমন হয়? এই প্রশ্নটা করে সে ভীষণ অপরাধবোধে ভুগতে থাকলো। কারণ, আমাদের কাছ থেকে এ ধরনের কোন ব্যবহার সে কখনো পায়নি। সবসময় সে আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থেকেছে বোনদের কাছে, আমার কাছে। তবে হ্যাঁ, ছাত্রজীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে আমি ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখেছিলাম। যার কারণে আমার এক ম্যাডাম আমার এমফিলের নিরীক্ষক হয়ে আমাকে পিএইচডিতে উঠতে দেননি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শর্ত পুরণ করার পরেও। এতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকগণ কোন প্রতিবাদ করেননি। তবে আমি কষ্ট পাইনি। কারণ বিষয়টা সাধারণ, অতি সাধারণ!
ইদানীং অনেককিছু হেসে উড়িয়ে দেবার অভ্যাস করছি।
----------------------------------------------------------------
অনার্য তাপস
এখনো পর্যন্ত আমি এবং আপনি যা হারিয়েছি তা হয়ত সামান্যই! কলকাতার ট্রেনে দেখা ঐ ভদ্রলোকটার মত তো লজ্জা আর অপমান নিয়ে আমাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়নি! গ্রাম থেকে সদ্য শহরে আসা এক ভিখারির কথা মনে পড়ে গেল। ভিক্ষা করতে হলে তো আল্লাহ খোদার নাম নিতে হয়। "আল্লার ওয়াস্তে দুইটা ভিক্ষা চায় গো আম্মা" বলতে হয়। ওই ভিখারি ছিল হিন্দু। সে কোন এক বাসায় ভিক্ষা চাইতে গিয়ে হিন্দুয়ানী শব্দ ব্যবহার করে গালি আর হাসাহাসির পাত্র হয়েছিল। অনভ্যস্ততার কারণে সে অন্য কিছুও বলতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত কেউ একজন তাকে এক হিন্দুর বাসা চিনিয়ে দিল। এভাবে ঘুরে ঘুরে আমাদের বাসায়ও এসেছিল। বেচারা এভাবে কতদিন ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে গিয়েছিল কে জানে!
________________
সৌমিত্র পালিত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাক্ষী'দা, এটাই সত্য!
________________
সৌমিত্র পালিত
হ। কিছু কিছু তো নিজের চোখেও দেখছি...
এখন সব গা-সওয়া হয়ে গেছে!
________________
সৌমিত্র পালিত
পড়ার জন্য ধন্যবাদ লীলেন' দা।
________________
সৌমিত্র পালিত
কালো পিপড়া আর লাল পিপড়াকে যথাক্রমে মুসলমান পিপড়া আর হিন্দু পিপড়া বলে বেড়ানোর কথা এখনও মনে আছে। এখন পরিস্থিতি কতটা চেঞ্জ হয়েছে জানি না, কিন্তু জিনিসগুলা মনে পড়লে এখনও মাথাটা অনেক নিচু হয়ে আসে - আমি সেই ছেলে
আমিও শুনেছি। আপনার নামটা জানি না। শুধুমাত্র এই স্মৃতিটার কথা মনে করিয়ে দেবার জন্য সারাজীবন আপনাকে মনে রাখব। লাল পিঁপড়া ভয়াবহ, কামড় দিলে জায়গাটা ফুলে যেত। অন্যদিকে কালোগুলো একেবারে নিরীহ! আচ্ছা যারা আমাদের এ কথাটা বলত, তাঁরা বয়স তো আমাদের মতই ছিল। ৬ থেকে ১০ বছর। ওদের এ কথাগুলো শিখিয়েছে কে! কোন বইতে তো এ উদাহরণ দেয়া ছিল না। হিন্দুদেরকে ঘৃণা করাটা মনে হয় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া একটা ব্যাপার! আমার খুব খুব খারাপ লাগছে লাইনগুলো লিখে।
________________
সৌমিত্র পালিত
লজ্জিত। খুবই লজ্জিত।
এ অপমান আর ক্ষতের কি উপশম হয়, তারিক ভাই!
________________
সৌমিত্র পালিত
নতুন মন্তব্য করুন