ইয়োরোপের অন্যান্য দেশগুলো সিরিয়া থেকে আসা লক্ষ লক্ষ শরনার্থীর দায়িত্ব নিলেও ব্রিটেন হাজার খানেকের বেশি নেয় নি । বাঙ্গালী প্যালেস্টাইন, সিরিয়ার রিফিউজিদের জন্য কাঁদিয়ে বুক ভাসিয়ে, ফেসবুকে হাজারে হাজারে পোস্ট, লাখো লাখো লাইক দেয় কিন্তু ব্রিটেনের রাস্তায় সিরিয়া থেকে আরো বেশি শরনার্থী নেয়ার ব্যপারে কোন আন্দোলন করতে নামে নি । ব্রিটেনের শেতাঙ্গ লোকজন কোটি কোটি টাকার ত্রান পাঠালেও, ব্রিটেনের বাঙ্গালীরা আইসিসের জন্য শ খানেক জিহাদী পাঠানো ছাড়া আর তেমন কিছুই দিতে পারেনি । বাঙ্গালী যেটা ভুল করছে তা হলো বর্নবাদের ভুত কেবল ইয়োরোপীয়ান খেদানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না । এখন তারা নাইজেল ফারাজের মত লোক এবং তার বর্ণবাদী সমর্থক গোষ্ঠিকে সমর্থন নিয়ে তাদের পেশী শক্তিশালী করে তুলছে । ইয়োরোপীয়ান খেদানোর পর সেই বর্ণবাদী পেশী তাদের দিকে নজর ঘোরাবে ।
দেশের বাইরে থাকা লোকজনের দেশ প্রেমটা নাকি একটু “বেশি বেশি” । বেশি বেশি টার্মটা কিন্তু কোটের মধ্যে । খেয়াল কইরেন । দেশের বন্ধুদের কাছে এই “বেশি বেশি” দেশ প্রেমের খোঁচাটা প্রায়ই শুনতে হয় । ভালো কোন অর্থে না কিন্তু । প্রবাসী বাঙ্গালীর দেশপ্রেম সম্পর্কে আমার বেশ কয়েক বন্ধুর ধ্যানধারনা অনেকটা এই রকম , “ তোরা সারাদিন আরামের চাকরীবাকরি করে, দিন শেষে পাকা পায়খানায় বসে দেশের ভাবার বিলাসীতা করিস, জ্ঞান গম্ভীর মতামত দেস আর ঝামেলা বাধাস । তোরা দেশের সমস্যার কি বুঝবি !! দেশের সমস্যা বুঝতে চাইলে আমাদের মত বাসে, রিকশায় ঘামে ভিজে একাকার হয়ে কাজ করে দেখ ” । বাসে বা রিকশায় চড়ে ঘামে ভিজে দেশ প্রেম করার সুযোগ আপাতত আমার হইতেছে না । বিদেশের মাটিতে নিজের আরামের চেয়ারে বসে ভাবনা তাই এইবার একটু বিদেশ নিয়েই ভাবনা বিলাস করি ।
ভাবনার টপিক ব্রিটেনের ইউ ইন অর আউট রেফারেন্ডাম । সহজ ভাষায় বিষয়টা আগে ব্যখ্যা করি ঃ ইউনাইটেড কিংডম ( ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং নর্দান আয়ারল্যান্ড ) বর্তমানে ইয়োরোপীয়ান ইউনিয়নের (ইউ) সদস্য । গত কয়েকবছর ধরেই ইউকের ( মুলতঃ ইংল্যান্ডের ) গোঁড়া জাতীয়তাবাদী একটা অংশ ইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে । আগামী ২৩শে জুন ইউকের ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ভবিষ্যতের ইউকে ইউ এর সাথে থাকবে, না আলাদা পথে এগোবে ?
বিলাত নিয়ে ভাববো বললেও যথারীতি ভাবনার গাড়ি দেশীয় ট্র্যাকের বাইরে যেতে পারে না । ব্রিটেনে বাঙ্গালীর সংখ্যা কম না । প্রায় ৭ লক্ষ ( ব্রিটিশ নাগরিক এবং বাংলাদেশী ইমিগ্রেন্ট ) বাঙ্গালী বসবাস করে । মজার বিষয় হচ্ছে এই রেফারেন্ডেমে ইয়োরোপের নাগরিকরা এবং দেশের বাইরে থাকা অনেক ব্রিটিশ নাগরিক* ভোট দিতে না পারলেও ৫ লক্ষ ব্রিটিশ (নাগরিক) বাঙ্গালীর পাশাপাশি, কমনওয়েলথ দেশের নাগরিক হবার সুবাদে ২ লক্ষ ইমিগ্রেন্ট বাঙ্গালীও ভোট দেয়ার অধিকার পাচ্ছে । কেউ কেউ ব্রিটেনে কমনওয়েলথ নাগরিকদের পাওয়া অনাকাংক্ষিত এই ভোটের অধিকারকে ব্রিটিশ ইম্পেরিয়ালিজম হ্যাংওভারের হিসেবে অভিহিত করলেও আপাতত সেই আলাপে যাচ্ছি না । এই লেখার মুল বিষয় ইউ রেফারেন্ডামের ব্যপারে বাঙ্গালী পাড়ার ভাবনা নিয়ে ।
বাঙ্গালী পাড়ার ভাবনার বিষয়ে বিশদ আলোচনার আগে এই রেফারেন্ডামের একটা ওভারভিউ দেয়ার চেষ্টা করি । ক্যাম্পেইনের শুরু থেকেই ব্রিটিশ সোসাইটি মুলত দুই ভাগে বিভক্ত ।
অর্থনীতি এই আলোচনা থেকে বাদ রাখছি কারন ইউকে এবং বিশ্বের বিভিন্ন গবেষেনা সংস্থা বেশ পরিষ্কার ভাবেই আশংকার কথা জানিয়ে দিয়েছে [3,4,5] । আইএমএফ এর ফোরকাস্ট বলছে ইউ ছেড়ে বেরিয়ে এলে আগামী কয়েক বছরে ব্রিটেনের অর্থনীতি ৫% পর্যন্ত সংকুচিত হয়ে আসতে পারে।
আঈন প্রনয়নের স্বার্বভৌমত্বের যুক্তিটিও মুলত উগ্র জাতীয়তাবাদী ইংলিশদের ক্ষয়ে যাওয়া সাম্রাজ্যবাদের অনুভূতিতে নাড়া দিয়ে ভোট ক্যাশ করার চেষ্টা। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সুর্য ডুবেছে মেলা বছর। তবু এদেশের পঞ্চাশোর্ধ অনেক নাগরিকই সেই সাম্রাজ্যের অতীতের স্মৃতি রোমমন্থনে বুদ। ইউ এর পাশ করা বিভিন্ন আঈন পরিবেশ রক্ষায় ( গ্রীন এবং ক্লীন এনার্জি পলিসি) এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। পুঁজিবাদী দেশ ব্রিটেনে শ্রমিকের অনেক অধিকারও ( সবেতনে বাতসরিক ছুটি, পিতৃত্বকালীন ছুটি) ইউ এর প্রনীত আঈনের মাধ্যমেই নিশ্চিত হয়েছে। এই আঈনগুলো না থাকলে পুঁজিবাদ বান্ধব যে কোন সরকার এই অধিকার গুলো কমিয়ে ফেলতে পারে ।
প্রথম থেকেই যেই বিষয়টি এই রেফারেন্ডামে ইউ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষের গাড়ির চাকা সচল রেখেছে সেটা হলো ইমিগ্রেন্ট বিরোধী আবেগ। আগেই বলেছি ব্রিটেনের একটা বড় জনগোষ্ঠির দাবী ইমিগ্রেন্টরা তাদের চাকরী এবং বিভিন্ন সরকারী ভাতায় ভাগ বসাচ্ছে। প্রতিদেশেই এই মানসিকতার লোক থাকে। বাংলায় এর কোন সঠিক অনুবাদ আছে কিনা জানিনা, তবে ইংরেজিতে এদের সাধারণত "বিগটস" বলা হয় । এরা নিজের অযোগ্যতা, অকর্মন্যতা এবং দুর্ভাগ্যের জন্য হয় অন্য কাউকে দায়ী করে তা সে অন্য দেশের ইমিগ্রেন্টই হোক বা নিজ দেশের অন্য অঞ্চলের লোকই হোক ।
মজার বিষয় হচ্ছে এই ইয়োরোপীয়ান খেদানোর রেফারেন্ডামে সাদা চামড়ার উগ্র জাতীয়বাদীদের পাশাপাশি প্রবাসী বাঙ্গালী গোষ্ঠির একটা বড় অংশ যোগ দিয়েছে । সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশনের কুফল নিয়ে বেশ জোর গলায় বক্তৃতা রাখছে এবং প্রচারনা চালাচ্ছে । প্রথম বা দ্বিতীয় জেনারেশন মাইগ্রেন্ট বাঙালীর হঠাৎ এমন উগ্র বর্ণবাদী ব্রিটিশ থেকেও বেশি ব্রিটিশ হয়ে ওঠাটা বেশ দৃষ্টিকটু দেখাচ্ছে [ ** বিষয়টা শুধু বাঙ্গালীতেও সীমাবদ্ধ নয় । অনেক ভারতীয় এবং পাকিস্তানি একই রাস্তার আছে ] ।
কারন খুজতে গিয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলে কয়েকটা কারণ খুজে পেলাম ঃ
ক) বিভিন্ন সরকারী ভাতার হ্রাস ঃ
ব্রিটেনে বিভিন্ন সরকারী ভাতার সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে বাঙ্গালীরা মাথাপিছু অন্য যেকোন জাতি গোষ্ঠির চেয়ে বেশ এগিয়ে । প্রায় ৭০% বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ব্রিটিশ পরিবার নিম্ন আয়ের ক্যাটাগরিতে পড়ে [6] । এদের অধিকাংশই বিভিন্ন সরকারী ভাতার উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাঙ্গালীদের মধ্যে এই ওয়েলফেয়ার সিস্টেমের অপব্যপবহার প্রবনতাটাও বেশি [7] । গত ৫ বছরে ব্রিটেনে কনজারভেটিভ সরকারের কঠোর অর্থ নীতির কারনে ওয়েলফেয়ার সিস্টেমের বিভিন্ন খাতে ( বেকার ভাতা, বয়স্ক ভাতা ) ভাতা কমে গেছে । ব্রিটেনের উগ্রবাদী সাদাদের মত বাঙ্গালীরাও এই ভাতা কমে যাওয়ার জন্য ইয়োরোপের নাগরিকদের দায়ী করছে । যদিও ব্রিটেনের কর্মসংস্থান অধিদপ্তরের ২০১৪ সালের এক পরিসংখানে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সরকারী ভাতা দাবী করা নাগরিকদের মাত্র ২% ইয়োরোপীয় [৮] ।
খ) কর্ম সংস্থান ঃ
গত কয়েক বছরে ব্রিটেনের অর্থনীতির উন্নয়ন এবং ইয়োরোপের বিভিন্ন দেশের ( গ্রীস, স্পেন ) অর্থনৈতিক মন্দার কারনে এসব দেশের প্রচুর নাগরিক কাজের সন্ধানে ব্রিটেনের এসেছে । বাংলাদেশ থেকে আসা নতুন ( এক দশকের কম সময় ধরে এখানে থাকা মাইগ্রেন্টরা ) অভিবাসীদের একটা বড় অংশ মুলত আনস্কিল্ড কাজ করেই থাকাখাওয়া এবং পড়াশোনার খরচ চালায় । শ্রম বাজারে যোগান বেশি হওয়ায় প্রতিযোগীতাও বেড়েছে । এটাও বাঙ্গালীর ইয়োরোপীয়ান বিরোধী সেন্টিমেন্টের আরেকটা কারন ।
গ) বর্ণবাদ এবং শাসকগোষ্ঠির সাময়িক বন্ধুবাৎসল্যতা ঃ
বাঙ্গালীরা ব্রিটেনের বিভিন্ন জায়গায় ইন্সটিউটিউশনাল রেসিজমের স্বীকার হলেও ২০০ বছরের ব্রিটিশ দাসত্ব আমাদের উগ্র বর্ণবাদী ব্রিটিশ দুর্ব্যবহারে অভ্যস্ত করে দিয়েছে । অবচেতন মনে আমরা ব্রিটিশদের সুপিরিওর জাতি মানতে বেশ স্বচ্ছন্দ বোধ করি । ব্রিটিশ প্রভুরা যখন আমাদের দুই এক লাইন ইংরেজী শুনে আমাদের ইংরেজীর প্রশংসা করে আমরা বেশ গদগদ হয়ে যাই । তবে অর্ধশিক্ষিত এক ব্রিটিশের কোন হুকুম মেনে নিতে শিখলেও ভাঙা ভাঙা ইংরেজী বলা অন্যান্য ইয়োরোপের নাগরিককে আমরা ইংরেজী না জানা গ্রাম্য অশিক্ষিতের চেয়ে বেশি সম্মান দিতে রাজী নই । তাছাড়া এই ইয়োরোপীয়ান খেদানোর আন্দোলনে উগ্রপন্থী ব্রিটিশরা আমাদের একই নৌকায় ঠাঁই দিয়েছে এটাও আমাদের জন্য বেশ আনন্দের বিষয় । তাই নিজেদের ব্রিটিশবান্ধব প্রমান করে আমরাও বেশ জোরেশোরে ইয়োরোপীয়ানদের গালি দিচ্ছি ।
একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা
জো কক্স ইয়র্কশায়ারের ছোট্ট একটা শহরের নবনির্বাচিত এমপি । গত বছরের সাধারন নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন লেবার পার্টির মনোনয়ন নিয়ে । সকল বর্ণ গোত্রের মানুষ নিয়ে কাজ করে এগিয়ে যাওয়াই তার লক্ষ্য । সিরিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শরনার্থীদের নিয়েও নিরলস কাজ করে গিয়েছে জো । এমপি নির্বাচিত হবার আগে চেষ্টা করেছে বিভিন্ন চ্যারিটির মাধ্যমে ত্রান সংগ্রহ করতে রিফিউজিদের জন্য । এমপি নির্বাচিত হবার পর প্রভাব খাটিয়ে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে সিরিয়ান শরনার্থীদের সাহায্য করতে । সপ্তাহের একদিন এলাকার ভোটারদের সাথে গনসংযোগের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সমস্যা শোনার চেষ্টা করে জো । গত ১৬ জুনও ছিল তেমন এ একটি দিন । গনসংযোগ শেষ করে লাইব্রেরীর বাইরে এসে দাড়ানো মাত্রই টমি মেয়ার নামের এক উগ্র শেতাংগ গুলি করে এবং কুপিয়ে আহত করে জো কে । বিকালে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে জো । অকালেই ঝরে যায় তরুন নিবেদিত প্রান একজন মানুষ । হামলার সময় টমি মেয়ারের স্লোগান ছিল, “ডেথ টু ট্রেইটরস, ফ্রিডম টু ব্রিটেন [ বিশ্বাসঘাতকদের হত্যার করে ব্রিটেনকে মুক্ত কর ] ” । আমার মত খুঁতখুতে মনের লোকজন উগ্র বর্নবাদী গোষ্ঠির ইমিগ্রেন্ট বিরোধী নোংরা প্রচারনার সাথে এই হত্যার সম্পর্ক পেলেও উগ্র শেতাংদের মত বাংলাদেশীদের অনেকেই তা পাচ্ছেন না । তারা এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন ।
শেষ কথা
বর্ণবাদের বিষাক্ত মানসিকতা ব্রিটেনে শুধু উগ্রবাদী শেতাংগ সুপ্রেমিস্ট দলগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । মুলধারার অনেকের ভদ্রতার খোলসের ঠিক নিচেই এর বাস । ঘৃনা এবং বর্নবাদ অনেকটা চেপে থাকা আগ্নেয়গীরির মত, একটু নাড়াচাড়া খেলেই বেশ জোরেসোরে বের হয়ে আসে । বাংলাদেশের জামাত যেমন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে, রুপে দেখা দেয়, ব্রিটেনে এই শেতাংগ সুপ্রেমিস্টরাও কখনো ইংলিশ ডিফেন্স লীগ (ইডিএল), কখনো ব্রিটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি ( বিএনপি ), কখনো ব্রিটেন ফার্স্ট । আরব এবং উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আইসিসের উত্থান, ইয়োরোপের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাগুলো রসদ যোগাচ্ছে এই উগ্র শেতাঙ্গ দল গুলোর উত্থানে [11] । গত কয়েক বছর ব্রিটেনে এদের অনেকেই জড়ো হয়েছে ইউকে ইন্ডেপেন্ডেন্স পার্টি ( ইউকিপ ) নামের বর্ণবাদী দলের ছায়াতলে । বিভিন্ন সময় দলের নেতৃত্বস্থানীয় লোকজনের নোংরা বর্নবাদী আচরন প্রকাশ পাবার পরেও যখন ব্রিটেনের ১০% ( ৪০ লক্ষ ) ভোটার তাদের ভোট দেয় তখন বর্ণবাদের ভুত যে বেশ ভালো ভাবেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সেটা বুঝতে রকেট সাইন্টিস্ট হবার দরকার হয় না ।
ইউকিপের নেতা নাইজেল ফারাজ [ছবি উপরে] কয়েকদিন আগেই তার ইয়োরোপীয়ান খেদানোর আন্দোলনের নতুন পোস্টার উন্মোচন করেছেন । পোস্টারটা ভয়ানক বর্নবাদী এবং জীবন নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকার কোটি কোটি শরনার্থীদের জন্য চরম অবমাননাকর ।
পোস্টারের মুল বক্তব্য অনেকটা এমন, “হাজার হাজার সিরিয়ান শরনার্থী আসছে ইয়োরোপের দিকে ধেয়ে । ব্রিটেন ইয়োরোপের সদস্য থাকলে আমাদেরও এই শরনার্থীদের দায় ভার নিতে হবে । ইউ থেকে বের হয়ে যাওয়াই তাই বুদ্ধিমানের কাজ ।”
ইয়োরোপের অন্যান্য দেশগুলো সিরিয়া থেকে আসা লক্ষ লক্ষ শরনার্থীর দায়িত্ব নিলেও ব্রিটেন হাজার খানেকের বেশি নেয় নি । ব্রিটিশ বাঙ্গালী প্যালেস্টাইন, সিরিয়ার রিফিউজিদের জন্য কাঁদিয়ে বুক ভাসিয়ে, ফেসবুকে হাজারে হাজারে পোস্ট, লাখো লাখো লাইক দেয় কিন্তু ব্রিটেনের রাস্তায় সিরিয়া থেকে আরো বেশি শরনার্থী নেয়ার ব্যপারে কোন আন্দোলন করতে নামে নি । ব্রিটেনের শেতাঙ্গ লোকজন কোটি কোটি টাকার ত্রান পাঠালেও, ব্রিটেনের বাঙ্গালীরা আইসিসের জন্য শ খানেক জিহাদী পাঠানো ছাড়া আর তেমন কিছুই দিতে পারেনি । তা এই ব্রিটিশ বাঙ্গালী এখন নাইজেল ফারাজের মত বর্নবাদী লোকের পিছনে দাড়িয়ে ইমিগ্রেন্ট বিরোধী স্লোগান দিবে এতে আশ্চর্য হবার আসলে কারন নেই । কারন তাদের মুল ভয় নতুন শরনার্থীরা তাদের সরকারী ভাতায় ভাগ বসাবে, কাজে ভাগ বসাবে ।
তবে বাঙ্গালী যেটা ভুল করছে তা হলো বর্নবাদের ভুত কেবল ইয়োরোপীয়ান খেদানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না । এখন তারা নাইজেল ফারাজের মত লোক এবং তার বর্ণবাদী সমর্থক গোষ্ঠিকে সমর্থন নিয়ে তাদের পেশী শক্তিশালী করে তুলছে । ইয়োরোপীয়ান খেদানোর পর সেই বর্ণবাদী পেশী তাদের দিকে নজর ঘোরাবে ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
তথ্যসুত্র ঃ
1. https://en.wikipedia.org/wiki/British_Bangladeshi
2. http://www.migrationobservatory.ox.ac.uk/briefings/migrants-uk-overview
3. http://www.bbc.co.uk/news/uk-politics-eu-referendum-36371700
4. http://www.bbc.co.uk/news/business-36561720
5. http://tinyurl.com/gvnujcx
6. http://www.poverty.org.uk/06/index.shtml
7. http://www.express.co.uk/news/uk/579780/Police-raids-benefit-scheme-migrants
8. http://www.telegraph.co.uk/news/uknews/immigration/11255425/How-much-do-immigrants-really-claim-in-benefits.html
9. http://tinyurl.com/h6dfx4c
10. http://www.theguardian.com/politics/2016/jun/16/nigel-farage-defends-ukip-breaking-point-poster-queue-of-migrants
11. http://www.huffingtonpost.co.uk/2014/05/26/far-right-europe-election_n_5391873.html
মন্তব্য
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হাসিব ভাই, জো কক্স ঘটনার মত ট্র্যাজেডি সচরাচর ইউকেতে ঘটে না। তবে আমেরিকাতে দুদিন পরপর মানুষ ম্যাস শুটিং দেখার 'সৌভাগ্য' এক দশকের বেশী ধরে আছে। তার সাথে মানুষের রিয়াকশন, যদি খুনি সাদা হয়ে থাকে (সে মানসিক রোগী ছিল, আহারে)। আমি ভাবতাম এই সিলেক্টিভ মায়াদয়া (মুসলিম খুনি হলে সন্ত্রাসী, সাদা হলে মানসিক রোগী) খালি আমেরিকাতে সীমাবদ্ধ। মিস কক্স খুন হবার পরে বুঝলাম যে না, এই এটিচিউড ইউকেতেও আছে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
টেররিজমের জন্য শুধু মুসলিমরাই দায়ী এই ছাগুপনার কারণ আছে। কাঠালপাতার লালচ ইতিহাস ধামাচাপা দেয় সুবিধামতো। এইটা সব দেশের ক্ষেত্রে সত্য। আইআরএ খুব বেশি দিন আগের কথা না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মামুন ভাই, ভালো লিখেছেন। দুটো প্রশ্ন ছিলঃ
১) ব্রিটিশ প্রবাসী বাঙ্গালীরা ব্রেক্সিট সমর্থন করছে শুনে অবাক হলাম। অন্তত আমার পরিচিত ব্রিটিশ বাঙ্গালীদের মধ্যে এই জিনিসটা দেখি নাই, আমার পরিচিত সবাই ব্রেক্সিটের বিপক্ষে, তাই আপনার লেখার এই অংশ পড়ে অবাক লাগলো। আচ্ছা, বাঙ্গালী বংশদ্ভত যেসব ব্রিটিশ রাজনিতিকরা আছেন (টিউলিপ সিদ্দিকি, রওশনআরা আলী, রুপা হক), এনারা কি ব্রেক্সিটের পক্ষে না বিপক্ষে?
২) জো কক্সের হত্যা কি এই রেফেরান্ডামের উপর কোন প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন? এই ঘটনার আগে মনে হচ্ছিল ব্রেক্সিট মুভমেন্টই রেফেরান্ডাম জিতে যাবে। কিন্তু জো কক্স মারা যাবার পর কি মানুষের মাইন্ডসেটে কোন প্রকার চেইঞ্জ এসেছে?
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
আমাদের দুইজনের ব্যক্তিগত ভিউগুলা অ্যানেকডোটের মত । মনে হয় না কমপ্লিট চিত্র । কয়েকটা নিউজের সোর্স দেই । সেখানেও দেখবেন কনফ্লিক্টিং নিউজ ।
http://tinyurl.com/zgmrcdn
http://tinyurl.com/zgmrcdn
http://tinyurl.com/hqszxtd
এর মুল কারন রেস্ট অব ব্রিটেনের মত এথনিক মাইনরিটি কমিউনিটিও বিভক্ত । শিক্ষা, চাকরীক্ষেত্র এবং সামাজিক অবস্থান দিয়ে এই বিভক্তিটাকে বেশ পরিষ্কার ভাবে ডিফাইন করা যায় । শিক্ষিত চাকুরীজীবি লোকজন ইইউ তে থাকার পক্ষে । কম শিক্ষিত, নিম্ন-মধ্যম আয়ের লোকজনের একটা বড় অংশ ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে । ব্যপারটা অনেকটা অ্যান্টি ইনকাম্বেন্সী ( ক্ষমতাশীনদের বিপক্ষের ) সেন্টিমেন্ট এর মত । নতুন কিছুর আশায় রিস্ক নেয়া ।
উচ্চ শিক্ষিত বাঙ্গলীরা ইইউ তে থাকার সুবিধা ( চাকরী, মাল্টি কালচারিজম ) ভোগ করছে । তাই রিস্ক নেয়ার দরকার দেখছে না । এই কারনে লেবারের বাঙ্গালী বংশদ্ভুত নেতা নেত্রীদের প্রায় সবাই ইইউতে থাকার পক্ষে । কিন্তু আবার বাঙালী কমিউনিটির সল্প বা নিম্ন আয়ের একটা বড় অংশ বছরের পর বছর ব্রিটেনে থেকেও বা বাঙ্গালী ঘেটোর মধ্যে বাস করে যাচ্ছে । মাল্টিকালচারিজম থেকে তারা হাজার মাইল দুরে । বরং ইইউ মাইগ্রেন্ট দের সাথে পাল্লা দিতে হচ্ছে চাকরীর বাজারে । এই কারনেই তারা ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে । আর ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের অভিযোগটা মুলত সরকারী ভাতার হ্রাসের কারনে । সরকারী ভাতা বা বিভিন্ন পাবলিক সার্ভিসে ( স্কুল, হাসপাতাল ) ফান্ডিং কমিয়েছে সরকার কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই দোষটা পড়ছে নতুন ইমিগ্রেন্টদের উপর । এই একই কারনে উগ্রবাদী সাদারাও ইমিগ্রেশনের বিপক্ষে ।
কিন্তু সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে নাইজেল ফারাজের মত উগ্রবাদী শেতাঙ্গ নেতার পিছনে দাড়ানোটা ভয়ানক বিপজ্জনক । কারন তার দলের অস্তিতই ( মুল উদ্দেশ্য এবং আদর্শ ) ইয়োরোপীয়ান খেদানোকে ঘিরে । সেই লক্ষে্য সফল হওয়া মাত্র পার্লামেন্ট পর্যায়ে তাদের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে । তখন কিন্তু তারা খেদানোর জন্য নতুন ইমিগ্রেন্ট টার্গেট খুজবে ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
বিষয়টা বুঝিয়ে বলার জন্য ধন্যবাদ। অবাক লাগছে যে স্বল্প আয়ের বাঙ্গালী অভিবাসীরা এটা বুঝতে পারছে না যে ফারাজের মত মানুষরা শুধু এন্টি-ইউ না, সেই সাথে বর্নবাদী এবং এন্টি-ইমিগ্রেন্টও। এদের সমর্থনে পুষ্ট হয়ে যদি ব্রেক্সিট সফল হয়ে যায়, এরপর ফারাজ এবং তার ঘরানার লোকজন যে এইসব অভিবাসীদেরকেই বিতাড়িত করতে মুভমেন্ট শুরু করবে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
দিন শেষে টেকাটুকাই মূল বিষয়। যেখানে মেধা লাগে না তেমন সেসব জায়গায় ব্রেক্সিট সাপোর্ট করা লোকেরা বেশি হবে এতে অবাক হবার কিছু নাই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
''কম শিক্ষিত, নিম্ন-মধ্যম আয়ের লোকজনের একটা বড় অংশ ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে''
আমার মনে হয় এই বের হয়ে যাবার মানসিকতা আসছে পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর। আপনি যাদের কথা বিশেষভাবে বললেন (কম শিক্ষিত, নিম্ন-মধ্যম আয়ের লোকজনের একটা বড় অংশ) দেখা যাবে যে তারা দেখছে ইটালি থেকে আসা এক পরিবার ঘরে বসে থেকে কোন কাজ না করে ঢেড় ভালো আছে(সোশ্যাল সব বেনিফিট)। তাই তাদের অভিবাসীদের প্রতি বিরূপ মনোভাব থাকতেই পারে। এতে শিক্ষার ভূমিকা আছে বৈকি।
উচ্চশিক্ষিত বাঙালীরা ইইউতে থাকার সুবিধা ঠিক কিভাবে ভোগ করছে তা বুঝলাম না। বাঙালী যখন বললেন তাহলে বলাই যায় সিংহভাগ সিলেটি। এখানে মাল্টিকালচারিজম ঠিক যায় না মনে হয়! হোক সল্পআয়ী বা উচ্চশিক্ষিত। আর এমন না যে ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে ইউরোপের দেশগুলোতে গিয়ে চাকরী করা যাবে না। স্কিলের দাম সবখানেই আছে।
ইমিগ্রেশন যে আসলেই একটা সমস্যা এটা অস্বীকার করার তো কোন অবকাশ নেই। এক বছরে নিউক্যাসেলের সমান জনগোষ্ঠী সাপোর্ট করার মতন অবস্থা মনে হয় না ব্রিটেনের এই মুহূর্তে আছে। আর এমনও না যে সব স্কিল্ড সব অভিবাসী আসছে ওপেন এক্সেস সুবিধায়। জনসংখ্যা সমস্যা না হয়ে শক্তি হলে তো আর কারো সমস্যাই ছিল না।
চাকরীর বাজারে অভিবাসীদের সাথে মনে হয় না কোন প্রতিযোগিতা আছে। এদের তো কাজ করার সদিচ্ছাই নেই। ঘরে বসে থেকে যদি নিজ দেশের চে ভালো থাকা যায় তবে কাজে তারা যাবে কোন দুঃখে।
তবে নাইজেল ফারাজের ব্যাপারে আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আশংকাজনকভাবে ৩ মিলিওন ভোটার ইউকিপ কে ভোট দিল! অভিবাসীদের ঘুম হারাম না করার মত হলেও অন্তত দুয়েকবার দুঃস্বপ্নে হানা দেবার মতন ঘটনা এটা।
শিক্ষা আসলে তেমন ভূমিকা রাখে না অপিনিওন কনসট্রাকশনে। শিক্ষিতরা সমান হারে (আমার মনে হয় কিছুটা বেশিই) কঞ্জারভেটিভপনা করে।
এখনও কি এই আন্দাজটা ভ্যালিড?
এই দুটো বাক্য পড়ে কী বুঝবো? বিশেষ করে বাঙ্গালি সিলেটীরা মাল্টিকার্ড না?
এই বক্তব্যের সমর্থনে কোন কন্সিডারেবল একাডেমিক এভিডেন্স আছে যে ইমিগ্রেশন সমস্যা? জার্মানিতেও এই কথা প্রচলিত। তবে গবেষণা ভিন্ন কথা বলে।
এটা একটা ইউকিপ মার্কা স্টেটমেন্ট হলো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এথনিসিটি বিবেচনায় হ্যাঁ সিলেটীই বেশি; এটা খুবই স্বাভাবিক। এই কমিউনিটি এক দশকে গড়ে উঠেনি। বক্তব্যের স্বপক্ষে রেফারেন্স দিতে পারছি না; এত বিস্তারিত পরিসংখ্যান পাইনি।
মাল্টিকালচার্ড কিনা তা শুধুই বলা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে। আমার মনে হয়েছে যে ওনাদের কমিউনিটি বন্ডেজ অনেক দৃঢ়। ইইউ ন্যাশনাল অন্য কথা আমাদের ঢাকার লোকজনই সেখানে ঠিক স্থান পায় না। এ নিতান্তই ব্যক্তিগত মতামত।
শেষ স্টেটমেন্ট টা আসলে ঠিক হলো না। মনে হয় যেন অন্ধ বিতৃষ্ণা! ঘটনা তা না, শুধুই অনুপযুক্ত বাক্যচয়ন। ইমিগ্রেশন সমস্যা সামনে আসে পাবলিক সেক্টরগুলোর দিকে নজর দিলে। এনএইচএস এমনিতেই চাপে আছে আর কন্ট্রোলড বর্ডার না থাকায় সমস্যা বাড়ে বৈ কমবে না। পাবলিক সার্ভিস গুলো জাস্ট এব্যাপার পরিচালনায় ইকুইপড না। তবে ইইউ ইমিগ্রেশন কে সব দোষ দেয়াটা অন্যায়। তাই সামগ্রিক বিবেচনায় ইমিগ্রেশন আমার দৃষ্টিতে ইইইউ থেকে বের হবার যুক্তিতে বড় কোন প্রভাবক না।
আপনি যদি ব্রিটিশ পঞ্চাশোর্ধ একশ জন লোকের সাথে কথা বলেন তার মধ্যে ৬০-৭০ ভাগ লোক ইমিগ্রেশনের দিকেই আংগুল তুলবে । আমি কেম্ব্রিজের আশেপাশের গ্রাম গুলাতে ক্যাম্পেইন করেছি। এখানে অধিকাংশ লোক শিক্ষিত। তাও অবস্থাটা সেইম। উত্তর ইংল্যান্ডের কর্মসংস্থান কম এমন এলাকাগুলার দিকে গেলে অবস্থা আরো খারাপ।
লিভ কেম্পেইনের মুল মন্ত্রও টেক আওয়ার কান্ট্রি অ্যান্ড বর্ডার ব্যাক।
হা হা হা! কথাটা যে কতভাবে সত্য ভাবলেই গা ঘুলিয়ে উঠে!!!
****************************************
দেশ থেকে শেফ আনতে না পারা নিয়ে যে কান্নাকাটি করে এরা, এইটা পুরা ভুয়া। আরে ভাই, দেশে ধানক্ষেতে শেফ চাষ হয় নাকি, যে টুপ করে পেড়ে এনে এখানে কাজে লাগিয়ে দেবে!
এখানকার রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় ধ্বস নামার পয়লা কারণ হলো মান্ধাতার আমলের খানাদানা, ব্যবস্থাপনা। আরেকটা হলো অশিক্ষা। যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে চরম খারাপ ব্যবহার করা হয় স্টাফদের সাথে। এজন্য নতুন প্রজন্মের ছেলেপিলে পারতপক্ষে এসব কাজে আসেনা।
দেশ থেকে কতো হাজার কর্মী আনবেন উনারা সংকট মোকাবেলায়?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এখানে পয়েন্ট হল ন্যায্য হোক অন্যায্য হোক, ইউরোপের ইমিগ্রান্টদের জন্য ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন বাকিদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে এই জিনিসটা পপুলার পারসেপশনে ঢুকে গেছে। এই পপুলার পারসেপশন্টাই ভোট দেয়ায়।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
" এজন্য নতুন প্রজন্মের ছেলেপিলে পারতপক্ষে এসব কাজে আসেনা।"
একসময় দেশ থেকে জমিজমা বেচে আসা গরীব পোলাপাইনগুলা কাজ না পেয়ে এই কাজ গুলা করতো। অ্যাবিউজড হইতো।
এখন সেই ছেলেপেলের সাপ্লাই কমে গেছে, ব্যবসায় ধ্বস নামছে।
মামুনুর রশীদ
এইটার সাথে একটু দ্বিমত করি । ইইউ মাইগ্রেন্টের সাথে শেফ আনার পথ বন্ধ হবার কোন সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না । ইউকের স্কিল শর্টেজ লিস্টে এখনো কয়েক টাইপের শেফের ক্যাটাগরি আছে ।
https://www.gov.uk/government/uploads/system/uploads/attachment_data/file/308513/shortageoccupationlistapril14.pdf
কারি হাউজ গুলার সমস্যাটা অন্য জায়গায় -
এদের ব্যবসা মুলত সস্তা শ্রম নির্ভর । প্রফিট মার্জিন কম রেখে বাঙ্গালী ছাত্র, পরিবারের সদস্য দিয়ে কাজ করায়ে যা তা মানের খাবার সার্ভ করে ব্যবসা করে গেছে তারা । [ অ্যানেকডোট ঃ সপ্তাহে ৬ দিন, দৈনিক গড়ে ১২ ঘন্টা কাজ করার পর রেস্টুরেন্টে কাজ করা ছেলেপেলের বেতন ভাতা ছিল সপ্তাহে ৫০-১০০ পাউন্ড + থাকা খাওয়া ; মানে ঘন্টায় ১.৫ - ২.৫ পাউন্ড যা ব্রিটেনের নুন্যতম বেতনের এক চতুর্থাংশ ] ২০০৯ এর পর থেকে নন-ইইউ ইমিগ্রেশন পলিসিতে পরিবর্তন আসার পর এই সস্থা অবৈধ শ্রম অনেকটা কমে গেছে । কমেছে প্রফিট মার্জিনও । পাশাপাশি গত এক দশকে ইন্টারনেট ফুড ইন্ডাস্ট্রির ব্যপারে লোকজনের দৃষ্টি ভংগী পরিবর্তনে করে দিছে । লোকজন ভালো রিভিউ না দেখলে খেতে যাওয়া তো দুরে থাক, টেক-অ্যাওয়েও নেয় না । কম্পিটিশন বেড়েছে , রেস্টুরেন্ট গুলো নিত্যনতুন ছাড়, খাবারের ভেরিয়েশন এনে টিকে থাকার চেষ্টা করছে । ব্রিটেনের এই মাথা থেকে ঐ মাথা ঘুরলে কারির সর্বোচ্ছ দশটা ভেরিয়েশন পাবেন । একই বেস সস দিয়ে সব কারি রান্না করা । ইয়োরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় ব্রিটিশরা কালিনারী সেকশনে খুব দীর্ন । তাই তারা এতোদিন সস্তার কারী খেয়ে গেছে । ইয়োরোপের বিভিন্ন স্টাইলের ফুডের রেস্টুরেন্টর সাথে পাল্লা দিয়ে টিকতে পারছে না কারী ইন্ডাস্ট্রি ।
আর শেফ হিসেবে কারি রেস্টুরেন্ট গুলোতে যারা কাজ করে এদের কারোই রান্নাবান্নায় তেমন হাত জশ নেই । একই ফরমুলা শিখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর । ইনোভেটিভ কিছু করার ইচ্ছা বা বুদ্ধি দুইটারই যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে এদের ।
আমার ধারণাটার বেসিস কিছু প্রকাশিত খবর। কিছু রেফারেন্স দেই,
সস কালচার থেকে বের হতে হবে। একটু ইনভেটিভ হতে হবে এতে কোন ভুল নাই। তবে ভিসা পাবার হার অনেক কমেছে, ইমিগ্রেশন আরও কঠিন হয়েছে এটাও সত্য। একটা ক্রাইসিস যে আছে এবং এটার একটা পার্ট ইমিগ্রেশন এটা অন্তত একটা পপুলার অপিনিওন। মানুষ আসলে নিজের দোষ থেকে ওপরের দোষ দেখতে ইচ্ছুক। একারণে ইমিগ্রেশনের উপর সবাই সব দোষ চাপিয়ে ব্রেক্সিট সাপোর্ট করছে হয়তো এরা।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ইমিগ্রেশন অনেক টাফ হয়ে গেছে যাতে করে লেখাপড়া না জানা লোকজনের পক্ষে বিয়ে করে যাওয়ার যে সিস্টেম ছিল, সেটা বড় হুমকির মুখে পড়েছে। এখন ১৮,০০০ পাউন্ড ইনকাম দেখাতে হয় স্পনসর বর/কনেকে যেটা বেনিফিট খাওয়া মানুষরা দেখাতে পারে না সহজে। তারপর যে যাবে তাঁকে বেসিক ইংরেজির পরীক্ষা দিতে হয়-সেটাও চ্যালেঞ্জিং।
কারি ব্যবসায় শেফ না পাওয়ার আরেকটা বড় কারন বাঙালিদের পেশা এখন ডাইভার্সিফাই। তরুনরা এখন অন্যান্য সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিতেও ঢুকছে। ২০ বছর আগেও টেসকোর সেলসম্যান হিসেবে কোনো গড়পড়তা ইমিগ্রেন্ট বাঙালিকে দেখা ছিল খুবই কঠিন, কিন্তু এখন ট্যাক্সি ড্রাইভারি সহ অনেক পেশায় লোকজন ঢুকে পড়ছে। কারি ব্যবসার মালিকরা অধিকাংশই বাংলাদেশের গার্মেন্ট মালিকদের মতোই-
'সস্তা' ছাড়া কোনো মার্কেট ভ্যালু নাই তাদের।
পাশাপাশি ইন্টারনেটের কল্যানে গত দশ বছরে ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে একটা রেভোলুশনাইজিং পরিবর্তন আসছে ।
- লোকজন দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গার খাবার সম্পর্কে জানতে পারছে এবং সেইগুলো খাবার জন্য অথেনটিক রেস্টুরেন্ট খুজছে ।
- ভালো রিভিউ দেখে নিশ্চিত না হয়ে লোকজন সাধারনত এখন খেতে যেতে চায় না ।
- চেইন রেস্টুরেন্টগুলা এখন প্রায়ই অনলাইনে বিভিন্ন ছাড় বা স্পেশাল অফার দেয় । মাসে মাসে মেনু চেঞ্জ করে । অধিকাংশ কারী রেস্টুরেন্টগুলো এখনো দশ বছরের আগের মেনু দিয়েই চালাচ্ছে । ট্রেইন্ড শেফ না থাকাতে মেনুতে কোন নতুনত্ব আনতে পারছে না ।
কাছাকাছি দামে নিত্যনতুন নতুন খাবার ট্রাই করতে পারলে কিন্তু পয়সা দিয়ে এক ঘেয়ে খাবার কেউ খাবার কথা না ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
আপনার অবজারভেশন গুলো সব গুলাই ঠিক । সমস্যাটার মুলে আসলে একটা লুকানো হিপোক্রেসি আছে । দুই পক্ষের তরফ থেকেই ।
সরকার সাইড থেকে ঃ তারা দাবী করে ইইউ এর বাইরের ইমিগ্রেন্ট ওয়ার্কার আনতে হলে একটা নুন্যতম বেতন দিইয়ে আনতে হবে যাতে সে ট্যাক্স বাব্দ ইউকের অর্থনীতিতে কন্ট্রিবিউট করে । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের নিজ দেশেই ঐ স্কিলের লোক ঐ বেতন পায় না । কোন রেস্টুরেন্টই তাই আসলে বাইরে থেকে বেশি বেতন দিয়ে শেফ আনার চেষ্টা করে না । কারন তাদের পোষাবে না ।
রেস্টুরেন্ট মালিক পক্ষের হিপোক্রেসি ঃ এরা আসলে ট্রেইন্ড শেফ আনতে চায় । জীবনে আনে নাই । নিয়ম সহজ করে দিলেও আনবে না । শেফ পরিচয় দিয়ে তারা আজীবন আনছে আত্মীয় স্বজন বা এলাকার লোক ( টাকার বিনিময়ে ) । এনে পাসপোর্ট আটকায়ে রেখে বছরের পর বছর বিনা বেতনে বা নাম মাত্র বেতনে কাজ করাইছে । তাই তারা আসলে শেফ চায় না । তাদের বেগার খাটার দাস দরকার ।
তাদের এই মানসিকতা সরকার বুঝে এবং এই ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে লোকজনরে এক্সপ্লয়েট করছে সেটাও জানে । সরকার তাই আহাউহু করবে কিন্তু নিয়ম শীথিল করর চান্স কম ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
========================
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
বাংগালীরা ইউকে, কানাডায় ওয়েলফেয়ার সিস্টেম এবিউজ করে এটা জানা কথা। কিন্তু ইইউ ইমিগ্র্যান্টরা এবিউজ করে - এই অভিযোগের কি একদমই ভিত্তি নেই?
ফ্রান্সে বড় হওয়া এক বাঙ্গালীর কাছে শুনেছি ফ্রান্সে ওয়েলফেয়ারের টাকা মেরে কেউ কেউ বাংলাদেশে বিশাল বাড়ি তুলে। প্রচুর বাঙ্গালী ফ্রান্সে ওয়েলফেয়ার এবিউজ করছে। উদার ওয়েলফেয়ার সিস্টেম থাকলে সেটা এবিউজ করার মতো মানুষও থাকবে। কেউ যদি দাবি করে যারা কষ্ট করে উপার্জনের একটা বিশাল অংশ ট্যাক্স দিচ্ছে কেবল তারাই ওয়েলফেয়ার ভোগ করার অধিকার রাখে - সেটা কি অযৌক্তিক বা অনৈতিক হবে?
আমার প্রশ্নটা নির্দিষ্ট করে ব্রেক্সিটের সাথে সম্পর্কিত না, কথা প্রসঙ্গে তুললাম। আমি আজ পর্যন্ত্য গণহারে ওয়েলফেয়ার সুবিধা প্রদান করার পক্ষে যুক্তি পাইনি। নন-ট্যাক্সপেয়ারদের ফ্রি স্কুল কিংবা ফ্রি চিকিৎসা প্রদান করা যায়, কিন্তু চাইল্ড সাপোর্ট - বেকারভাতা একটু বেশিই মনে হয়।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
এই পুরো আলোচনায় বর্ণ একটা বড় ইস্যু। কাকারা এইটা মুখে আনবে না কখনই। তাদের রেটরিক অনুসরণ করলে এইসব জাতিভিত্তিক ঘৃণা বের হয়ে আসে।
ওয়েলফেয়ার স্টেটএর মূল দর্শন হল সকল নাগরিক বেড়ে ওঠার পর্যাপ্ত সুযোগ পাবে এবং কেউ একটা নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে জীবনযাত্রার মানের নিচে থাকবে। এ ধরণের রাষ্ট্র ব্যবস্থা অধিকতর কল্যাণমুখী। পুরো পৃথিবী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে যায় নাই এটা মানবজাতির একটা বড় কপাল।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
চিকিৎসাভাতা চাইল্ড সাপোর্ট বেকারভাতা এগুলি হল পিলার। এই পিলারগুলা দিয়ে একটা পভার্টি ফ্লোর মেন্টেন করে রাখা হয়। মানুষ পিলারের অ্যাবিউজ করে দেখে পিলার সরিয়ে ফেলাটা সমাধান না। দারিদ্র্যের সাথে অশিক্ষা, সহিংসতা, সামাজিক পরিবেশের সরাসরি সম্পর্ক। দারিদ্র্য ঠেকিয়ে রাখা দরকার আছে।
ধরি পিতা ক এবং পিতা খ। ক এর ছেলে চ এবং খ এর ছেলে ছ দুর্দান্ত স্কুল ফুটবলার। ক করদাতা কিন্তু খ নয়। চ এবং ছ খেলতে গিয়ে পা ভাঙল, কিন্তু চ এর মত ছ হাসপাতালে চিকিৎসা পেলনা কেননা ছ এর পিতা খ করদাতা নয়। চ সেরে উঠে জাতীয় ফুটবল দলে যোগ দিল আর ছ হুইলচেয়ারে বসে খেলা দেখল।
অতি সরলিকরণ কিন্তু পয়েন্ট পরিষ্কার। চিকিৎসা বেকারভাতা শিক্ষা এসব সমাজের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের কাজ অর্থ খরচ করে দরিদ্র খ এবং ছ পরিবারের জন্য একটা পথ বাৎলে দেয়া যেন সে লং রানে বাটে পড়ে নিজে পিছিয়ে না পড়ে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
..................................................................
#Banshibir.
হাইপোথেটিক্যাল আলোচনা করি। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাষ্ট্র তার প্রতিটি সুস্থ, সবল, সমর্থ নাগরিকের কর্মসংস্থানের জন্য বাধ্য থাকা উচিত। রাষ্ট্র যতদিন পর্যন্ত তার কর্মসংস্থান করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত তাকে ভাতা দেয়াটা আবশ্যিক হয়। এখন কর্মসংস্থান কথাটার মধ্যে ফাঁক আছে। নাগরিক যদি মনে করে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত কর্মটি তার উপযুক্ত নয় বা তার জন্য যথার্থ নয় তাহলে সে কাজটি গ্রহন না করতে পারে। এমন অবস্থায় তাকে ভাতা দেয়ার পাশাপাশি তাকে কমিউনিটি সার্ভিসের মতো কাজে লাগানো যেতে পারে। এতে রাষ্ট্র যেমন তার ক্ষতি হ্রাস করতে পারে তেমন যে কোন কাজকে প্রত্যাখ্যান করার প্রবণতাকে হ্রাস করবে। একই ব্যাপার অযোগ্যতা, নিষ্পৃহতা, দুর্নীতি বা দুষ্কর্মের জন্য কর্মচ্যুত ব্যক্তির জন্যও প্রযোজ্য হয়। সকল অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, অবসরপ্রাপ্ত, অসুস্থ, শারিরীক বা মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জড ব্যক্তি বাই ডিফল্ট ভাতা পাবে। শিক্ষা, চিকিৎসা, বেসিক বাসস্থান সকল নাগরিকের জন্য বিনা মূল্যে হওয়া উচিত। কারণ, রাষ্ট্রের উচিত তার প্রতিটি নাগরিকের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য সমঅধিকারের ও সমসুযোগের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
এটা তো গেলো নেয়ার ব্যাপার। আর দেয়ার ক্ষেত্রে নাগরিকগণ শুধু যে কর পরিশোধ করবেন তা নয়, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যে কোন সময়, যে কোন কাজ করতে নাগরিকগণ বাধ্য থাকবেন। এর জন্য প্রত্যেকটি নাগরিককে তার পছন্দের পেশার বাইরে আরও দুই/তিনটি ট্রেডে বেসিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এতে অন্তত রাষ্ট্রীয় সেক্টরগুলোতে কখনো কর্মীর অভাব হবে না। কনস্ক্রিপশনের আদলে জীবনের কোন পর্যায়ে কয়েক বছরের বাধ্যতামূলক বেগার দেবার ব্যাপার থাকা উচিত। দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদেরকে বেকার বসিয়ে না রেখে যোগ্যতা নির্বিশেষে তাদের সকলকে শারিরীক পরিশ্রমে নিয়োজিত করা উচিত।
দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক বা আঞ্চলিক কোন চুক্তির আওতায় একাধিক রাষ্ট্র কোন ইউনিয়ন গঠন করলে ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত এক রাষ্ট্রের নাগরিক অন্য রাষ্ট্রে গেলে তাকে ঐ রাষ্ট্রের নাগরিকের সব সুবিধা না দিলে (এখানে ভোটাধিকার জরুরী নয়) ইউনিয়ন অর্থবহ থাকে না।
ভাল লেখা! অনেক কিছু বোঝা গেল।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
যেই ভাবে অ্যান্টি ইমিগ্রেন্ট বিষাক্ত মানসিকতা সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই ব্রেক্সিট প্রচরনা, তার রেশ বেশ সুদুর প্রসারী হবার সম্ভবনা আছে । এরা সফল হলে দলে বলে আরো বেড়ে ওঠার সম্ভবনা আছে । পাশাপাশি ইইয়োরোপের অন্যান্য দেশের উগ্রবাদী দলগুলোও একই ছুতোয় সিমিলার আন্দোলন শুরু করবে ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
বাঙালিরা ব্রেক্সিটে সমর্থন দেয়নি বোঝা গেল,
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বড়ই হৃদয়বিদারক ঘটনা।
অ্যানেকডোটাল ভিউ । কিন্তু আমি এক সপ্তাহে পুর্ব লন্ডনে ১৬ জন বাংলাদেশীর সাথে কথা বলেছি যার মধ্যে ১১ জন লিভে ভোট দিয়েছে । ৩ জন রিমেইনে ভোট দিয়েছে । ২ জন ভোট দেয় নাই । যারা লিভে ভোট দিয়েছে তাদের কারন গুলা ভিন্ন ভিন্ন । চাকরীক্ষেত্রে ইয়োরোপীয়দের সাথে কম্পিটিশন, বাড়ির দাম কমার আশায়, ইয়োরোপীয়ানরা চলে গেলে সরকারী ভাতা বেশি পাওয়া যাবে এই আশায় ।
বাঙ্গালীর একটা বড় অংশ আজীবন ১০০-২০০ টাকায় ভোট বিক্রি করে দিছে । সুতরাং ব্যক্তিগত গন্ডির বাইরে ভাবা তাদের পক্ষে সম্ভব না । তাদের দোষও দেই না । উন্নত দেশেও অনেকেই এই কাজ করে । তবে বাঙ্গালীর জন্য বিষয়টা নিজের পায়ে কুড়াল মারা মত হয়ে গেছে । এই ভোটের রায়ে বর্নবাদীরা ভাবছে ৫২% লোক তাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে মানে বর্ণবাদীতা জায়েজ হয়ে গিয়েছে । তাই তারা প্রকাশ্যে বর্ণবাদী আচরন শুরু করেছে । বাঙ্গলী, ভারতীয়, পাকিস্তানি কেউ নিস্তার পাচ্ছে না । পাবেও না ।
মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
========================
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
নতুন মন্তব্য করুন