স্বল্প পরিচিত বা প্রায় অপরিচিত কেউ যখন কার্ড দিয়ে বা না দিয়ে বলেন, “ভাই, আসবেন কিন্তু”, তখন একটু ভাবনায় পড়ে যেতে হয় — আদৌ কি যেতে হবে? অমন নিমন্ত্রণে গেলে কখনো দেখা যায় সেখানে যাবার কোন দরকারই ছিল না। আবার কখনো অমন নিমন্ত্রণকে বিবেচনায় না নেবার পর দেখা গেছে নিমন্ত্রণকারী অভিমানের সুরে বলেন, “ভাই, আসলেন না কেন”? তখন আবার মনে হয় — আসলেই তো, গেলাম না কেন? অনায়াসে যেতে পারতাম!
স্বল্প পরিচিতদের কথা ছাড়ুন, অতি পরিচিত বা অতি নিকটজনের নিমন্ত্রণে ধেই ধেই করে গেলেই যে সব সময় আনন্দের অভিজ্ঞতা হবে তা নয়। অন্তত দুইবার দুইজন অতি নিকটজনের নিমন্ত্রণে সপরিবারে গিয়ে এই ধাক্কা খেয়েছি। প্রথমবার, এক নিকটজন তার নিজের বিয়েতে সপরিবারে যাবার জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। তার সাথে সম্পর্কের মাত্রা বিবেচনায় আমি ভাবলাম, অতি অবশ্যই সপরিবারে যেতে হবে এবং ভালো উপহার দিতে হবে। আমার স্ত্রী ঐ নিমন্ত্রণটিতে যেতে একেবারেই আগ্রহী ছিলেন না, আমি তাকে জোরজার করে নিয়ে গেলাম সাথে নিলাম সাধ্যাতীত দামে কেনা উপহার। সেখানে গিয়ে দেখি নিমন্ত্রণকর্তা (মানে বর নিজে) এবং তার পরিবারের লোকজন অন্য কাদেরকে নিয়ে এত ব্যস্ত যে বাকি অতিথিদের দিকে তাদের ফিরে তাকাবার সময় নেই। একটা পর্যায়ে তারা এইসব অচ্ছ্যুত অতিথিদের সাথে দুর্ব্যবহার পর্যন্ত করা শুরু করলেন। আমি মানে মানে তাড়াতাড়ি খেয়ে বউ-বাচ্চা নিয়ে ফিরে আসলাম। বাসায় ফেরার পর আমার কপালে কী জুটেছিল সেটা আর বলার প্রয়োজন নেই। আমিও মনে মনে কানে ধরলাম। এরপর অনেক দিন আর কোথাও সপরিবারে অমন নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাইনি।
প্রথম ঘটনার বেশ কয়েক বছর পরের কথা, আরেক নিকটজন তার ভাইয়ের বিয়েতে সপরিবারে যাবার জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। পূর্বাভিজ্ঞতায় আমি ভাবলাম, আমি একাই যাবো, বউ-বাচ্চাকে আর কষ্ট দেবো না। কিন্তু নিমন্ত্রণকর্তা বারে বারে বউ-বাচ্চাসহ যাবার জন্য বলে কয়ে আমাকে রাজী করিয়ে ফেললেন। অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি নিমন্ত্রণকর্তার নিজের স্ত্রী, বোন এবং মা (যিনি বরেরও মা) অনুপস্থিত। কানাঘুষায় শুনতে পেলাম এই বিয়েতে তাঁদের মত নেই। এদিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যাও খুব বেশি নয়, এবং সেখানে নারীদের সংখ্যা অতি নগণ্য। আমি আমার স্ত্রী’র মুখের দিকে তাকিয়ে প্রমাদ গুণলাম। নিমন্ত্রণকর্তা তাঁদের অনুষ্ঠানের পরিণতি সম্পর্কে জানতেন, তবু তিনি আমাকে অহেতুক এই বিড়ম্বনাতে ফেললেন।
উপরে বলা দুটো ঘটনার পরে ঐ ব্যক্তিদের সাথে আমার বহু বার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে; কিন্তু তারা কখনো এমন ব্যবহারের জন্য নূন্যতম দুঃখ প্রকাশ করেননি। সম্ভবত এমন ব্যবহার যে কারো পক্ষে অবমাননাকর সেটা তারা বুঝতে পারেননি; অথবা তারা আদৌ ভাবেননি এর জন্য আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। কারণটা অজ্ঞতা বা অশ্রদ্ধা যাই হোক, এই ঘটনাগুলোর পরে আমি তাদের ব্যাপারে তো বটেই অন্য নিকটজনদের নিমন্ত্রণের ব্যাপারেও সতর্ক হয়ে গেছি।
বিশেষ কোন উপলক্ষে আয়োজিত নিমন্ত্রণগুলো কোন না কোন ভাবে এড়ানো যায়। সেখানে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা বেশি থাকে বলে চোখ এড়িয়ে যায়, অথবা কিছু ‘বিকল্প সত্য’ (এই বাগধারার কপিরাইট কার সেটা সবাই জানেন) গল্প বলে পার পাওয়া যায়। কিন্তু নিমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা যেখানে খুবই কম সেখানে এড়ানোটা একটু কঠিন। তবু প্রাণের দায়ে প্রতি বার কোন না কোন অজুহাত অথবা বিকল্প সত্য বের করতে হয়। বলতে পারেন, কেন এই প্রকার নিমন্ত্রণগুলো আমি এড়িয়ে চলতে চাই? উত্তর হচ্ছে এখানে কিছু কিছু বিষয়ে আমার সুস্পষ্ট আপত্তি আছে।
নিমন্ত্রণকারী যদি বলেন, “ভাই, ভাবী আর বাচ্চাদের নিয়ে আসবেন”, তাহলে তার মানে এই না যে আমি সেখানে বউ-বাচ্চা নিয়ে যেতে বাধ্য। তাছাড়া নিমন্ত্রণটিতে আমার স্ত্রী বা সন্তানেরা যেতে রাজী কিনা সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে আমার জোর খাটানো চলে না। কিন্তু লোকে সেটা বিবেচনায় নিতে চান না। ফলে, নিমন্ত্রণে পৌঁছানো মাত্র জিজ্ঞেস করে বসেন, “ভাবী-বাচ্চাদের আনলেন না কেন”? এটা কখনোই কাউকে বলা সম্ভব না যে, আমার স্ত্রী/সন্তানেরা আপনার এখানে আসতে আগ্রহী নন্; যদিও বেশিরভাগ সময়ে সত্য কথাটা ওটাই। আমরা যেটা বিবেচনা করি না, যাকে নিমন্ত্রণ করলাম তিনি আমার নিকটজন হতে পারেন কিন্তু তার স্ত্রী বা সন্তানেরা আমাকে অমন আপন না-ই ভাবতে পারেন। এমনকি তারা আমাকে অপছন্দও করতে পারেন। আমার স্ত্রীর সাথে তার স্ত্রীর অথবা আমার সন্তানদের সাথে তার সন্তানদের কোন প্রকার মনোমালিন্য হয়ে থাকতে পারে। তাই তাদেরকে কেন আনা হলো না এই প্রশ্নটা এড়িয়ে যাওয়াটাই সঙ্গত; বড়জোর তাদের কুশল জিজ্ঞেস করা যেতে পারে। যে নিমন্ত্রণগুলোতে ঠিক এই প্রশ্নটার মুখোমুখি হতে হবে সেই নিমন্ত্রণগুলোতে আজকাল আর যাই না।
তবু কিছু কিছু অমন নিমন্ত্রণে যাওয়া হয়েই যায়, একা অথবা সপরিবারে। সেখানে গেলে বেশিরভাগ সময়ে যে গল্পগুলো শুনতে হয় সেগুলো মূলত বিদেশের গল্প। খুব ব্যতিক্রম ছাড়া একজন এদেশীয় মানুষ সারা বছরের ১০% সময়ও দেশের বাইরে থাকেন না; কিন্তু তাদের গল্পের ৯০%-এরও বেশির ভাগ জুড়ে থাকে বিদেশের গল্প। যেখানে নিজের বিদেশ ভ্রমণের গল্প দিয়ে কুলানো যায় না, সেখানে প্রবাসী আত্মীয়দের গল্প টেনে আনা হয়। আমার কাছে খুব অবাক লাগে এই ভেবে যে, আমাদের আলোচনার বিষয় কি এতোই কম? অথবা এই দেশে কি এমন কিছু নেই যা নিয়ে গল্প করা যায়? অথবা এই লোকগুলো বছরের বাকি ৯০%-এরও বেশি সময়ে কি এমন কিছু করে না যা নিয়ে গল্প করা যায়?
এই লোকগুলো যে দেশের গল্প একেবারে করে না তা নয়। যেটুকু করে সেখানে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্যভাবে দেশের বিষয়াবলী নিয়ে সুস্পষ্ট অবজ্ঞা ও ঘৃণা আছে। কিন্তু তাদেরকে যদি সরাসরি দেশপ্রেমের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাহলে তারা প্রমান করে দেবেন তারা কতো বড় দেশপ্রেমিক। এই মানুষগুলোর ব্যবহার্য দ্রব্যাদি মূলত বিদেশি, তাদের সন্তানেরা বিদেশে পড়ে অথবা পড়তে যাবে, তারা নিজেরাও এক সময় বিদেশ চলে যাবেন অথবা এর মধ্যে অন্য দেশের পিআর নিয়ে রেখেছেন। এই ব্যাপারগুলোর কোনটাতেই আমার আপত্তি নেই। কেউ যদি অমনটা পছন্দ করে থাকেন তাহলে সেটা তার অভিরুচি, কিন্তু তার মানে এই না যে তিনি এই দেশ বা এই দেশের বিষয়গুলো নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে যাবেন। এই মানুষগুলোর নিমন্ত্রণে যদি না যাই তাহলে সেটা অযৌক্তিক কিছু হয় না।
এবং যাদের আলোচনার বিষয় থাকে আগামী গ্রীষ্মকালটা ইউরোপে কাটানো ঠিক হবে নাকি উত্তর আমেরিকায়, অথবা যারা আলোচনা করেন আগামী শীতিকালীন অলিম্পিক দেখতে পিয়ংচাং যাবেন নাকি ইন্টারন্যাশনাল বেসবল কাপ দেখতে মায়ামী যাবেন, অথবা যাদের আলোচনার বিষয় মার্সিডিজ বেঞ্জ-বিএমডব্লিউ-হ্যামার শ্রেণীর গাড়ির পারফর্ম্যান্সের তুলনামূলক বিশ্লেষণে তাদের আড্ডার ভীড়ে না যাওয়াটাই আমার পক্ষে উচিত। তবু কখনো মনে হয়, আচ্ছা যাই, আমার তো পাবার বা হারাবার কিছু নেই, আফসোস করারও কিছু নেই। তাছাড়া দুয়েকটা আমার মতো হতদরিদ্র অনুষ্ঠানে না গেলে ওরা কার সামনে ফুটানি ঝাড়বে!
ফুটানি দেখার জন্য একবার এক মন্ত্রীপুত্রের বিয়ের নিমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। আমাকে নিমন্ত্রণকারী হচ্ছেন বরের বোন। যাবার পর দেখি নিমন্ত্রণকারী আমাকে একটু কষ্ট করে চিনলেন। সম্ভবত তিনি ভাবেননি বলামাত্র আমি নিমন্ত্রণে চলে যাবো। আমি ভাবলাম আগে পেটপূজো করে নেই, তারপর অন্য রগড় দেখা যাবে। ও হরি! খেতে গিয়ে দেখি সে এক লঙ্কাকাণ্ড! টেবিলের পর টেবিল লোকজন খালি প্লেট নিয়ে বসে আছেন, কেউ কেউ অধৈর্য্য হয়ে হুঙ্কার দিচ্ছেন। কখনো কোন টেবিলে খাবার দিলেও দেখা গেলো কেউ শুধু পোলাও পেয়েছেন, কেউ শুধু রোষ্টের ভগ্নাংশ, কেউ শুধু সালাদ। হাত ধোবার জায়গায় দেখা গেলো জল সরবরাহ অনেক আগে বন্ধ হয়ে গেছে। শেষে খালি পেটে নিকটস্থ এক রেস্টুরেন্টে গিয়ে মোরগ-পোলাও খেয়ে বাসায় ফিরলাম।
এই নিমন্ত্রণটার অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছিল পরে যখন এক ছাত্রনেতার বিয়ের নিমন্ত্রণ পাই। সেই নিমন্ত্রণে রাত আটটার মধ্যে গিয়ে হাজির হয়ে প্রথম ব্যাচে খেয়ে নিয়ে রগড় দেখতে নেই। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা গেলো বর যেই শিক্ষায়তণের নেতা সেখানকার শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের সাত-আটটা বাসভরে চলে এসেছেন। জানা গেলো বাসগুলো খুব দ্রুতই ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়ে আরও কয়েক দফায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসবে। শিক্ষার্থীরা দেখলাম বেশ জোর গলায় বলছেন, “......... ভাই ব্যস্ত মানুষ তাই তার বিয়েতে আমাদের নিমন্ত্রণ করতে পারেননি, তাই বলে কি আমরা বিয়েতে আসবো না”! যুক্তি অকাট্য। অচিরেই খাবার না পেয়ে চেয়ার ভাঙাভাঙি শুরু হবার আগে আমি সেখান থেকে কেটে পড়ি।
নিমন্ত্রণকারীদের ত্রুটিবশত হোক আর না-ই হোক, নিমন্ত্রণ থেকে না খেয়ে আসার ঘটনা এতবার ঘটেছে যে সবগুলোর কথা আর মনেও নেই। তবে একটা ঠিক মনে আছে যে, কোন ঘটনাতেই পরবর্তীতে নিমন্ত্রণকারী অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেননি।
আমি যে নিমন্ত্রণে যেতে চাই না তা নয়। আমার খুব ইচ্ছে করে নিমন্ত্রণে যা কিছুই খাই না কেন প্রাণ ভরে যেন গল্প করতে পারি। সেই সৌভাগ্য প্রতি লিপ্ইয়ারে একবার আসে কিনা সন্দেহ। কখনো মনে হয় থাক, ওরা না হয় একটু ফুটানি দেখালোই তবু কিছু গল্প করা তো হবে। কিন্তু চাইলেই নিমন্ত্রণে যেতে পারি না। উপযুক্ত উপহার কেনাটা একটা বিরাট ঝামেলার ব্যাপার। আমি বহু ভেবেও এর কূলকিনারা করতে পারি না। বই উপহার দিলে ৯৯.৯৯% লোকে বিরক্ত হয়। একই কথা ফুলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাছাড়া উপহার কিনতে গেলে প্রতিনিয়ত ঘাটতি বাজেটে চলা এই মানুষটিকে আরেকটু ধারদেনায় ডুবতে হয়। তাছাড়া ক্রমাগত নিমন্ত্রণ খেয়ে গেলেই তো চলবেনা, ফিরতি নিমন্ত্রণ করতেও হয়। সেটার ধাক্কা এতো বড় যে তা সামাল দেয়া আরও কঠিন। এটা তো আর মাবাবাভাইবোনদের ব্যাপার না যে কিছু একটা আয়োজন করলেই চলবে। এছাড়া যে দশ ফুট বাই দশ ফুটে থাকতে হয় সেখানে দশ জন মানুষকে নিমন্ত্রণ করলে ঘ্যাষাঘ্যাষি আর ঠ্যাসাঠ্যাসি করে গায়ে গায়ে লেগে কুট্কুট্ করবে। তাই ইচ্ছে থাকলেও নিমন্ত্রণ করা যায় না।
অথচ আমার খুব ইচ্ছে করে যাদেরকে আপন ভাবি তাদেরকে নিমন্ত্রণ করে তাদের পছন্দের খাবার খাওয়াই, তাদের সাথে দিনভর গল্প করি। খুব ইচ্ছে করে বিয়েবাড়িতে ধোঁয়াওঠা ভেজা ভেজা কাচ্চি বিরিয়ানী, খাসীর রেজালা আর মিষ্টি-ক্রীম-বাদাম দেয়া জর্দা কব্জি ডুবিয়ে খাই। নিজ ধর্মের অনুষ্ঠানে সব ধর্মের মানুষকে বাসায় এনে খাওয়াই, অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে সেই ধর্মানুসারী বন্ধুর বাসায় নিমন্ত্রণ খাই। ইচ্ছে করে নিমন্ত্রণের ছলে হোক আর যেভাবেই হোক প্রাণের মানুষদের সাথে প্রাণের কথা বলি, প্রাণের কথা শুনি। কিন্তু তার কিছুই হয় না। আরও একটা প্রাণহীন নিমন্ত্রণ উপেক্ষায় চলে যায় অথবা সামনে উপেক্ষার জন্য অপেক্ষা করে।
মন্তব্য
জেনারেলাইজ করা খুব কঠিন, তবুও কেউ কেউ করেন। তাঁরা নমস্য, তাঁদের জীবনের পাঁচ সাতটি (নাহয় হাজারটিই হোলো) অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে রচিত হয় একটি জাতির চরিতাভিধান। লিখিত হয় অমর কাব্য, "বাঙালীর সামাজিকতার বড় অংশ সামনাসামনি বা ফোনে কুশলাদি জিজ্ঞেস করার সাথে অন্য দশজনের নামে কূটকচালি করা, এবং নিমন্ত্রণের নামে ঐ প্রকার কূটকচালি সহযোগে ভুড়িভোজে সীমাবদ্ধ।"
--মোখলেস হোসেন।
অভিধানে লেখা আছে, Generalization = A general statement or concept obtained by inference from specific cases. The process of formulating general concepts by abstracting common properties of instances. তার মানে দাঁড়ায় বিশেষ ঘটনাবলী থেকে লব্ধ যৌক্তিক উপসংহারমূলক বিবৃতি হচ্ছে সাধারণীকরণ। বিশেষ ঘটনাবলীর সংখ্যা পাঁচ/সাত নাকি হাজার সেটা অভিধান লেখকরা বলেননি। একটা বিষয় নূন্যতম জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ জানেন যে, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ অনন্য। তারপরেও একটি নৃতাত্ত্বিক বা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মানুষের কিছু সাধারণ trait থাকে (ব্যতিক্রম বিবেচনায় রেখেই)। সেক্ষেত্রে কিছু পর্যবেক্ষণ থেকে একটি সাধারণ অভিমত (সবার কথা নয়, একটি অংশের কথা) দিলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় না, বিশেষত খোদ মন্তব্যকারীও যখন ঐ গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত।
একটা বিষয়ে একটু আলোকদান করুন। এই পর্যন্ত কোন কোন জাতির চরিতাভিধান লেখা হয়েছে। দুয়েকটা রেফারেন্স দেন না প্লিজ, পড়ে দেখতাম।
কেস স্টাডি কেন করা যাবেনা! তবে তার একটা পদ্ধতি রয়েছে। জীবনের অভিজ্ঞতা মানেই কেইস স্টাডি নয়। আপনি বাঙালিদের একটি অংশের কথা বলেননি। আপনি বাঙালিদের সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করেছেন। এই যে আপনি বললেন, "বাঙালীর সামাজিকতার বড় অংশ......"। আচ্ছা আপনি নিজে কি এমনটি করেন? আপনার স্ত্রী, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি......?
আরেকটা কথা, চরিতাভিধান সংক্রান্ত কথাটা কেন বলেছি সেটা অভিধান ঘাঁটলে পেলেও পেতে পারেন।
------মোখলেস হোসেন
“জীবনের অভিজ্ঞতা মানেই কেইস স্টাডি নয়” – তাহলে জীবনের কোন্ কোন্ অভিজ্ঞতা কেস স্টাডি হবে আর কোনটা হবে না সেটা একটু বুঝিয়ে বলুন। শেখার ব্যাপারে আমার কোন সঙ্কোচ বা দ্বিধা নেই।
আমি একটি গোষ্ঠীর মানুষের কিছু সাধারণ trait থেকে কিছু পর্যবেক্ষণজাত একটি সাধারণ অভিমত প্রকাশ করেছি। আপনি সেটাকে ঢালাও মন্তব্য বলতে চাইলে বলতে পারেন। আমি যা বলেছি সেটা আমার অভিমত, সেটা মানার দায় কারো নেই।
আমি আপনার কাছে ‘জাতির চরিতাভিধান’-এর উদাহরণ চেয়েছিলাম, অর্থ বা সংজ্ঞার্থ নয়। উদাহরণ জানা থাকলে উদাহরণ দিন, আর না জানা থাকলে সোজাসাপ্টা ‘না’ বলুন। দয়া করে উদাহরণ পাবার জন্য অভিধান ঘাঁটার উপদেশ খয়রাত করবেন না।
দেখুন সমস্ত বাঙালিকে নিজের কল্পিত আলোয় রাঙিয়ে দিয়ে যিনি বসে আছেন তাঁকে আলোকদান করার অভিপ্রায় আমার নেই। এই ছেলেমানুষি "আপনি জানেন?" এর লুপে প্রবেশ করার খায়েশ আমার নেই। থাকলে জেনেরেলাইজেশনের অভিধান ঘাঁটা একটা সংজ্ঞা দিয়েই হয়তো আমার প্রথম মন্তব্যটি শুরু করতাম। আপনি কী জানেন সেটা আপনার ভাবনা, আমি বরং জানতে চাই, খুব স্পষ্ট করেই জানতে চাই "বাঙালীর সামাজিকতার বড় অংশ......" এই বাক্যটিকে আমি কেন ঢালাও মন্তব্য হিসেবে দেখবো না? আমি বাঙালি, আমার অনেক বন্ধু-স্বজন-পরিচিত জন রয়েছেন যারা বাঙালি। আমরা সবাই আপনার দৃষ্টিতে ওইরকম! আপনি নিজে কি এমনটি করেন? আপনার স্ত্রী, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি......? আপনি যদি বলতেন আপনার দেখা কিছু বাঙালি অমন করেন তাহলে এই প্রশ্ন আমি করতাম না। আপনি বলেছেন "বাঙালীর সামাজিকতার বড় অংশ......"।
একবার এক আড্ডায় একজন দুম করে বলে ফেলেছিলেন বাঙালির স্বভাব হচ্ছে চুরি করা। ভদ্রলোক নিজেও বাঙালি। আমি জিগ্যেস করলাম, "ভাই আপনার বাবার চুরির স্বভাব নিয়ে একটু যদি বলতেন"। তিনি খুব অপ্রস্তুত হয়ে বললেন "আমার বাবা চোর হতে যাবেন কেন?"। আমি বললাম, "তবে কি আমার বাবা চোর?" তিনি আরও অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, আমি কি তাই বলেছি নাকি? আমি দারুণ অবাক হয়ে ভাবলাম, তাহলে এই মানুষটা আসলে বললেন কী!
আমি আপনার জানা না জানার পরীক্ষা নিতে আসিনি! শুধু বুঝতে চাইছি যা লিখেছেন সেটাই আপনার বক্তব্য কিনা!
---মোখলেস হোসেন।
আমার আশঙ্কা ছিল 'কেইস স্টাডি' আর 'জাতির চরিতাভিধান' সংক্রান্ত প্রসঙ্গ দুটো আপনি এড়িয়ে যাবেন। দেখা যাচ্ছে আপনি তাই করেছেন, যদিও প্রসঙ্গ দুটো আপনিই উত্থাপন করেছিলেন।
আমি আমার অভিমত জানিয়েছিলাম, সেটার দায়ও নিয়েছিলাম। এবং এটাও বলেছিলাম সেটার দায় অন্য কারো নয়। তারপরও আপনি আপনার উত্থাপিত প্রসঙ্গে করা সুস্পষ্ট প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে একই কথা বলে যাচ্ছেন। কেন?
আমি আপনার প্রশ্ন এড়িয়ে যাইনি। খুব স্পষ্ট করে বলেছি এই "আপনি জানেন?" এর মতো বালকোচিত বাহাসে যাবার অভিপ্রায় আমার নেই। কেইস স্টাডি কী এবং কীভাবে করতে হয় সেটা জেনে নেওয়াটা দুষ্কর নয়। চরিতাভিধান প্রসঙ্গে আমার মন্তব্যটি ছিল সার্কাস্টিক। নাকি আপনি সত্যি সত্যি ভেবে বসে আছেন আমি আপনার এই লেখাটিকে অমর কাব্য হিসেবে নিয়েছি!!! 'সার্কাস্টিক' শব্দের বাংলা আমার জানা নেই, অভিধান ঘাঁটলে পাওয়া যাবে। অভিধান তো আপনার আছে।
আচ্ছা, দায় নিয়েছিলাম মানে কী? চূড়ান্ত স্পর্ধা দেখিয়ে একটা গোটা জাতির নামে যা খুশি তাই লিখে দিলাম আর বললাম দায় আমার, হয়ে গেলো? আপনি তো আপনার বক্তব্য সংশোধন করেন নি! বলেন নি, " আমার মতে বাঙালীদের একটা অংশের স্বভাব হচ্ছে সামনাসামনি বা ফোনে কুশলাদি জিজ্ঞেস করার সাথে অন্য দশজনের নামে কূটকচালি করা, এবং নিমন্ত্রণের নামে ঐ প্রকার কূটকচালি সহযোগে ভুড়িভোজে ...।"
---মোখলেস হোসেন।
ভাই, আপনারা তিলকে তাল করছেন। তালকে আবার চুইংগাম বানাচ্ছেন। এবার একটু ক্ষ্যামা দ্যান প্লিজ। ম্যাচিউরড মানুষদের থেকে এরকমটা অপ্রত্যাশিত!
****************************************
ধন্যবাদ মন মাঝি। আপনি ঠিকই বলেছেন। এই প্রকার আলোচনাটাই অর্থহীন ও অদরকারী। যেমন, একজন বলেছিলেন "রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করোনি", আরেকজন বলেছিলেন, "আত্মঘাতী বাঙালী", আরও একজন বলেছিলেন, "তর্কপ্রিয় ভারতীয়"। সেগুলো নিয়ে কেউ তর্ক করেননি। কেউ ঐ লোককে গিয়ে জিজ্ঞেস করেননি, "তাহলে কি আপনার বাবা অমানুষ"? অথবা, "তাহলে কি আপনার শ্বশুর আত্মহত্যা করেছিল"? এগুলো কি ঢালাও মন্তব্য? সেটা কেউ ভাবতেই পারেন। এই জন্য "আমি কেন এটাকে ঢালাও মন্তব্য বলবো না" এমন প্রশ্নও কেউ তুলবেন না। আমরা জানি এতে বাঙালী জাতির সম্মান ক্ষুণ্ন হয় না। কারণ, কোন জাতির সম্মান এতো ঠুনকো নয়।
প্রিয় মোখলেস হোসেন, এই থ্রেডে আপনার প্রতি এটা আমার শেষ মন্তব্য। তর্ক বা আলোচনা করতে গেলে নিজে যা বলবেন, প্রশ্ন উঠলে দয়া করে সেটাকে ডিফেন্ড করার সাহস রাখবেন। 'বালোকোচিত বাহাস', 'অভিধান দেখুন' জাতীয় কথা বলে এড়িয়ে যাবেন না। জাতির চরিতাভিধান সংক্রান্ত আপনার মন্তব্য যদি সারকাস্টিক হতো তাহলে আমি যখন উদাহরণ চাইলাম তখন আমাকে পালটা অভিধান দেখার পরামর্শ দিতেন না। আমার বক্তব্যকে আপনার ঢালাও মন্তব্য মনে হলে আপনি সেটা অবশ্যই বলতে পারেন। সেটা আমি আগেও বলেছি। ভালো থাকবেন।
ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইলো।
--মোখলেস হোসেন
লেখা উপাদেয় , বিয়ের কাচ্চির মত
খালি একটা বিষয়ে একটু মন্তব্য করি।
ধরি আমার মোটামুটি পরিচিত কেউ একজন নিজের বিয়ের দাওয়াত করলেন। বিয়েতে গিয়ে দেখলাম যে, বিয়েতে মত না থাকায় বরের মা-বোন কেউ আসেন নি। তখন, আমি যদি আসা করি বর আমাকে আগেই বলবেন, "ভাই, পরিবারের অমতে বিয়ে করছি। মা-বোনকে সাধাসাধি করছি, বিয়ের দিন তারা আসতে রাজি হবেন কিনা জানা নেই। আমার মা-বোন আসলে আপনাকে মোবাইলে কল দেব তখন আসবেন, আর মোবাইলে কল না পেলে আসবেন না "
আমার মনে হয়, আমি হলে, "আহা বেচারা" বলে দাওয়াতে চলে যেতাম। অনেকেই আসছে না, আমিও যদি না যাই তাহলে, ক্যামনে হবে?
কষ্ট করে যত্ন নিয়ে লিখেছেন, আরও আসুক। লেখকের একটা নিক থাকলে ভালো হত।
শুভেচ্ছা
যে বিষয়টা নিয়ে আপনি বললেন সেটা নিয়ে আমার অভিজ্ঞতার কথাটা আরেকটু ব্যাখ্যা করি।
ঐ বিয়েটাতে নিমন্ত্রণকর্তারা ঠিক জানতেন কী হতে যাচ্ছে। সেখানে বর পক্ষের কিছু পুরুষ উপস্থিত ছিলেন, নারীরা আগেই ঘোষণা দিয়ে বয়কট করেছিলেন। বিয়েটাতে আমার একার যাওয়াটা কোন ব্যাপার ছিল না, আমার আপত্তিও ছিল না। কিন্তু জোরজার করে আমাকে সপরিবারে নিয়ে গিয়ে 'হংস মাঝে বক যথা' পরিস্থিতিতে ফেলার কোন দরকার ছিল না।
আপনার দৃষ্টিভঙ্গির পূর্ণ প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি।
আমি অন্যদিক থেকে বিষয়টা দেখি:
বরের পরিবারের নারীরা না হয় বয়কট করেছিলেন, দুনিয়ার সকল নারী বয়কট করেন নি। তাই নিমন্ত্রণকারীর মনে হয়ত আশা ছিল, যে দাওয়াতীদের মধ্যে কিছু নারী সদস্য থাকলে সেটা হয়ত কনের জন্য একটু ভালো লাগার কারণ হত। এরকম "অমতের বিয়ে" -র আসরে কনে হিসেবে বসাটা ঐ মেয়ের জন্য কতটা স্ট্রেসের ব্যাপার সেটা ছেলেদের পক্ষে, এমনকি জাঁকজমক করে বিয়ে করা বেশিরভাগ মেয়ের পক্ষেও, বোঝা কঠিন।
- এই দাওয়াতটা হয়ত আপনার পরিবারের কাছে মানসিক পীড়ন হিসেবেই স্মৃতিতে থাকবে এবং আপনাদের এই মনোভাবটাকেও আমি সম্মান করি।
তবে, আমার কাছে মনে হয়েছে আমি হলে অন্য দিক থেকেই ভাবতাম। সত্যি বলতে, ওদের জন্য আমার সহানুভূতি আছে। (আহা, বেচারারা!)
শুভেচ্ছা
আমি আপনার অবস্থান বুঝতে পারছি, এবং সেটাও যৌক্তিক বলে মনে করি। ঘটনাটা আমাদের আগে জানা থাকলে হয়তো আমরা অমন মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে যেতাম। সেটা না করায় ব্যাপারটা বিড়ম্বনার হয়ে গেছে। একজন মানুষ যত ভালো পারফরমার হোন না কেন তাকে বিনা প্রস্তুতিতে ঠেলেঠুলে মঞ্চে তুলে দিলে ব্যাপারটা তার কাছে বিড়ম্বনার হয়ে যায়।
আমি ফর্মাল দাওয়াতে যাওয়ার আগে ফোনে চার্জ দিয়া যাই। কাজে লাগে। (বন্ধুবান্ধবের বাসায় গেলে অবশা আলাদা কথা কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধব নিতান্তই স্বল্প)
..................................................................
#Banshibir.
সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক (যেটা থেকে তার দিয়ে ফোনকে চার্জ দেয়া যায়) নিয়ে যাবেন। দাওয়াতে কতক্ষণ বসতে হয় কে জানে!
শুভেচ্ছা
ফর্মাল দাওয়াতে সাধারণত খুব বেশি সময় ব্যয় করতে হয় না। তবে কোন কারনে লম্বা সময় লেগে গেলে একটা কাজ করতে পারেন। ঘুরে ঘুরে ছোট-বড় গ্রুপগুলোতে নিরব শ্রোতা হিসেবে ঢুকে পড়তে পারেন। তাহলে এতো বিচিত্র সব গল্প শুনতে পাবেন যার তুলনা নেই। এটা যদি করতে না পারেন তাহলে এক কোনে দাঁড়িয়ে বা বসে আসরের সবচে' ব্যস্ত মানুষটাকে খেয়াল করতে থাকুন। তার কর্মকাণ্ড দেখলে একসময় আপনার কাছে থ্রি স্টুজেসের মুভি দেখার আনন্দ অনুভূত হবে।
এত চার্জওয়ালা ফোন দিয়া কী করেন? কথা বলেন, সেলফি তোলেন, অন্যের কথাবার্তা রেকর্ড করেন, নাকি আমাদের অজানা অন্য কোন নিষিদ্ধ কর্মে লিপ্ত থাকেন?
দ্বিতীয় দাওয়াতের সমস্যাটা বুঝি নি!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
খুব সম্ভবত আপনি এখনো অকৃতদার। নারীবিরল পার্টিতে নিজের সঙ্গিনীকে নিয়ে গেলে তিনি একটু অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। আর খোদ হোস্টের পরিবারের নারীরা সেখানে না থাকলে তার অস্বস্তি বিড়ম্বনাতে পরিণত হতে পারে।
প্রথমটায় কি বুঝলেন?
দাওয়াতের এত সব হ্যাপা সামাল দেবার সবচে' ভালো বুদ্ধি হলো দাওয়াতে না যাওয়া।
এই ভালো বুদ্ধিটাই বেশিরভাগ সময়ে মেনে চলি। যখন সেটা মানার উপায় থাকে না ঝামেলাটা বাঁধে তখনই।
আমি বলা চলে মোটা চামড়ার মানুষ। তাই বিয়ের দাওয়াতে আমার তেমন সেন্সিটিভিটি নাই। এদেশে বিবাহের বিষয়টাতে সামগ্রিকভাবে যে পরিমান জটিলতা, সেখানে একটি সর্বাঙ্গসুন্দর পরিপাটি আয়োজনের আশা ব্যাতিরেকেই গিয়ে খেয়েদেয়ে চলে আসি। পাত্রপাত্রী কিংবা তাদের পিতামাতা স্থানীয় কেউ আমার মোটামুটি ক্লোজ হলে আমি সাধারণতঃ একটা পরামর্শ দেই- দেখ, বিয়েতে দুই পক্ষ মিলে খরচ হবে দশ-পনের-বিশ......লাখ টাকা। এর বিনিময়ে কিছু লোকজন গাপুস-গুপুস করে হাড্ডি চিবাবে, লাভের মধ্যে এই তো! তার চেয়ে এই টাকায় একটা ফার্স্ট ক্লাশ একটা হানিমুন ট্যুর প্যাকেজ করে বেরিয়ে পড়, ঘুরে বেড়াও যতটা পার। জীবনে সেটাই হবে সত্যিকারের প্রাপ্তি।
আমার পরামর্শ আবশ্য এখন পর্যন্ত কেউ কানে তোলে নি।
আপনার পরামর্শটা আসলেই আকর্ষণীয়। সেটা লোকে মানতে চায় না বা মানতে পারে না কিছুটা অন্যদের তীর্যক মন্তব্যের ভয়ে, কিছুটা নিজেরাও একটু উৎসব চান বলে।
নিমন্ত্রণকারী কি কারণে নিমন্ত্রণ করলেন সেটা বিবেচনায় নেয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিমন্ত্রণে সাড়া দেবার সম্ভাব্যতা। নিমন্ত্রণকারীর দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
প্রাচ্য পলাশ
নিমন্ত্রণকারীর দৃষ্টিভঙ্গী বা তিনি কী কারণে আপনাকে নিমন্ত্রণ করলেন সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেটা দিয়ে আপনি বুঝতে পারবেন তিনি আপনাকে কতটুকু শ্রদ্ধার/ভালোবাসার/স্নেহের দৃষ্টিতে দেখেন। আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি আনন্দের সাথে নিমন্ত্রণটি উপভোগ করতে পারবেন নাকি অপমানিত হবার গ্লানি বইতে হবে। যদি দেখেন আপনাকে যথাযথ শ্রদ্ধার/ভালোবাসার/স্নেহের সাথে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে এবং আপনি নিমন্ত্রণটি উপভোগ করতে পারবেন তাহলে নিজের কোন কাজে একটু পরিবর্তন করে বা একটু ক্ষতি স্বীকার করেও আপনি নিমন্ত্রণটি রক্ষা করতে পারেন। এতে নিমন্ত্রণকারীর প্রতিও আপনার যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শিত হয়। আর ব্যাপারটি যদি উলটো হবার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সম্ভব হলে পূর্বেই নিমন্ত্রণকারীর কাছে ক্ষমা চেয়ে অনুষ্ঠানটি থেকে দূরে থাকা ভালো।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে......
নতুন মন্তব্য করুন