রাজিব মাহমুদ
ঢাকার একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে পিওনের চাকরি করে দিদার। বৌ চামেলী থাকে দেশের বাড়িতে দিদারের মা’র সাথে। বিয়ে করেছে বছর দেড়েক হয়ে গেলো। এখনো ছেলে-মেয়ে হয়নি। আর চামেলির বয়সও খুব-ই কম। নিজের থাকা-খাওয়ার খরচের পর দিদারকে মা-বৌয়ের জন্য দেশে টাকা পাঠাতে হয়। তাই মাসের শুরুতেই তার বেতন অর্ধেকেরও বেশ নীচে চলে যায়। এজন্য মাসের প্রথম সপ্তাহে দিদারের মেজাজ থাকে সপ্তমে। এদিকে চামেলি একটু আহ্লাদি টাইপ; বৈষয়িক ব্যাপার-স্যাপার বুঝতে চায় না। প্রায় প্রতি রাতেই দিদারকে ফোন করে এটা-ওটা কিনে দেবার জন্য বায়না ধরে। ইদানিং খুব করে বায়না ধরেছে দিদার যাতে তাকে ঢাকা নিয়ে আসে বেড়াতে। তবে ঢাকা’র প্রসঙ্গটা চামেলী সরাসরি তোলে না। মাসের প্রথম সপ্তাহের তিন তারিখে (দিদার ততদিনে টাকা পাঠিয়ে ফতুর) তাদের কথোপকথন নিম্নরুপঃ
চামেলীঃ হুনসি ঢাকার হোটেলে সুগন্ধি চাইলের চাইলের ভিতরে বড় গোস্ত দেওয়া পুলাউয়ের লাহান খাওন পাওয়া যায়।
দিদারঃ গ্যালে কী?
চামেলীঃ না, কিসু না। আপনে ঐ পুলাউ খাইসেন?
দিদারঃ খাইলে কী?
বৌঃ কী আর! কিসুই না...।
দিদারঃ তাইলে হুদাহুদি জিগাস্ ক্যান?
বৌঃ জিগাইলেও দোষ? খাইতে তো আর চাই নাই।
দিদারঃ এহ্ বিরানি খাইবো হ্যায়! আমি খাই ডাইল আর শাক আর নবাবজাদি আইসে বিরানি খাইতে!
বৌঃ চ্যাতেন ক্যান? আমি খাওনের কথা কইসি?
দিদারঃ আমি কি চদু? তোমার রং-ঢং কইর্যা ইশারা দেওন বুঝি না আমি?
বৌঃ আইচ্ছা যান্ খাওয়াইতে হইবো না। একবার খালি ঢাকার একটা হোটেলের সামনে লইয়া যায়েন। খারাইয়া বিরানির চেহারা দেখ্মু আর বাস নিমু।
দিদারঃ দ্যাখ্ মেজাজ খারাপ করবি না কইলাম...।
দিদার ফোন কেটে দেয় রাগ করে। একটু পরে আবার ফোন দেয় চামেলিকে। চামেলি ধরে না। ৩-৪ বার বাজার পরে ধরে বলে, “কি হইসে? এতবার ফোন দ্যান্ ক্যান?”
“খাইসস্ তুই?”
“খাইলে কী?”
“কি আর! এম্তেই জিগাই”
“কিসু না অইলে হুদাহুদি জিগান ক্যান?”
মেজাজ ভালো থাক্লে চামেলীর জন্য একটু একটু মায়া হয় তার। এইটুক একটা মেয়ে মা-বাবা-ভাই-বোন ছেড়ে ওর সাথে থাক্তে আসছে। আবার এটাও ভাবে ছেমড়ির শখ এট্টু বেশি-ই।
কিছুদিন পর চামেলীকে ঢাকায় নিয়ে আসে দিদার। কয়েকদিন আগে অফিসের বড় সাহেবের মেয়ের বিয়েতে রান্নার দেখাশোনার কাজ করে ওর পনেরো দিনের বেতনের সমান বখশিস পেয়েছে ও। তাই মনটা দারুণ ফুরফুরা। ওর মেসে চামেলির জিনিষপত্র রেখেই ওকে নিয়ে যায় একটা বড় বিরানীর দোকানে। একটা টেবিলে বসার পর চামেলী চোখ বড় বড় করে চারপাশে তাকায়। তার মুখভর্তি উজ্জ্বল হাসি। এদিকে দিদার বেশ সাহেবি ভঙ্গিতে চেয়ারের উপরে পা তুলে বসে হোটেলের বেয়ারাকে ডেকে ১ প্লেট কাচ্চি বিরানী দিতে বলে। বিরানী এসে গেলে দিদার চামেলীর দিকে প্লেট এগিয়ে দিয়ে হাসিমুখে বলে, “নেও খাও”। তার মেজাজ ভালো থাক্লে সে বৌ’কে মাঝে মাঝে ‘তুমি’ বলে। আর তাছাড়া ঢাকা শহরে সাহেবেরা বৌ’দের ‘তুমি’ বলে এটা সে দেখেছে। তবে বৌগুলাও যখন নির্লজ্জের মত স্বামীদের ‘তুমি’ বলে দিদারের ব্রহ্মতালু পুড়ে যায়। চামেলী অবাক হয়ে বলে, “খাও মাইনে? আপ্নেরটা কই”। দিদারের হাতে ২ জনের খাওয়ার যথেষ্ট টাকা থাক্লেও সে এত টাকা খরচ করতে নারাজ। মুখে বলে, “আরে আমি তো এডি খাই-ই যহন- তহন। তুমি খাও”
“আপনে কইলেন আর আমি হুন্লাম্” চামেলী ঝম ঝম করে ওঠে।
“আরে খাও না…আইচ্ছা আমি এট্টু খামুনে তুমার লগে” দিদার একটা সমাধান দেবার চেষ্টা করে। ভাতের ভেতর থেকে বড় মাংসের টুকরাটা বের করে চামেলী প্রথমেই দিদারের মুখে তুলে দেয়। দিদার চারপাশে তাকিয়ে লজ্জা পায় কেননা আশেপাশের সবাই আলাদা আলাদা প্লেটে বিরানী খাচ্ছে। মুখে বলে, “আরে করো কী…আহা…”
দু’জনের মুখেই স্বর্গ জয়ের হাসি। চামেলি মুখের চারপাশে ভাত নিয়ে বোকার মত হাসতে থাকে। এইরকম সুগন্ধি বাসনাই চালের পোলাও কোনদিন খায়নি সে। একটাই টুকরা মাংসের। সেটাই ছিঁড়ে ছিঁড়ে একে অন্যের দিকে এগিয়ে দিচ্ছে। ওরা দু’জনেই ভাবে, “জীবন কী সুন্দর।”
যেটা ওরা জানে না সেটা হলো এর-ই মধ্যে ওদের দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে লেগে যাওয়া মাংসের শিরা-উপশিরাগুলোর ভেতরে যে প্রাণীটার গর গর চীৎকার মিশে আছে সেটা একটা বড়সড় নেড়ি কুকুর। কাল রাতেই অত্যন্ত গোপনে জবাই করা হয়েছে কুকুরটাকে। এরকম কুকুর মাঝে মধ্যেই হোটেলের মালিক নিজেই সরবরাহ করে থাকে। তিনি এই বছর বছর হজ্ব পালন করে আসার পর থেকে ভাবছেন এই কাজ আর করবেন না। কিন্তু কুকুরের বিরানী বেচা টাকায় যখন ক্যাশ ড্রয়ার ভরে যায় তখন চকচকে চোখে উপরের দিকে চেয়ে বলেন, “আল্লাহ মালিক। তওফিক দাও মা’বুদ যাতে এই কাম আর না করি। আমিন।”
মন্তব্য
বিরিয়ানির কথা শুনে যে লোভটা ছুকছুকিয়ে উঠেছিল ভেতরে, শেষ প্যারায় এসে সে পড়িমরি করে পালিয়ে বাঁচলো।
আমার মনের কথাটা লিখেছেন।
গল্প ভাল লেগেছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ছোট গল্পের ক্ষেত্রে শেষে ট্যুইস্ট দেবার একটা প্রচলন আছে বটে, তবে সেটা আবশ্যিক নয়। যুতসই ট্যুইস্ট দিতে না পারলে ভালো সম্ভাবনার একটি গল্প মাঠে মারা যেতে পারে। এই গল্পটা তার একটা উদাহরণ। লেখক দাবি করতে পারেন অনেকের কাছে এই গল্প ভালো লেগেছে; কিন্তু তাতেও গল্পটির সম্ভাবনা মার খাওয়ার ব্যাপারটি মিথ্যে হয়ে যায় না।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনি কিছুটা পরস্পর-বিরোধী কথা বলেছেন বলে মনে হলো। একবার বল্লেন ট্যুইস্ট আবশ্যক নয় আবার বল্লেন ট্যুইস্ট না থাকায় গল্পটা মাঠে মারা গেছে। আরকটু গুছিয়ে মন্তব্য করার অনুরোধ রইলো। আর তাছাড়া ট্যুইস্ট অনেক ধরণের হয়। ট্যুইস্ট যে সবসময় একটা নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে থেকেই খুব অভাবিত কোন ধাক্কা হবে এমনটা মনে করি না। প্র সঙ্গাতরের মাধ্যমেও টুইস্ট হতে পারে। যাই হোক, এই গল্পে এক ধরণের ট্যুইস্ট কিন্তু আছে যেটা হয়ত আপনার ট্যুইস্টের সংজ্ঞার সাথে হয়ত যায়নি বা গেলেও আপনার পছন্দ হয়নি। সেটা কোন সমস্যা নয়; পছন্দ না হতেই পারে। আপনি পাঠক হিসেবে আপনার যে কোন মত দিতেই পারেন। তবে ট্যুইস্ট ব্যাপারটাকে বোধহয় খুব সরলরৈখিক ভাবে দেখার সুযোগ নেই। এটা আমার মত। সময় করে পড়া ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভ কামনা।
রাজিব মাহমুদ
"যুতসই ট্যুইস্ট দিতে না পারলে ভালো সম্ভাবনার একটি গল্প মাঠে মারা যেতে পারে" - এই কথাটার মানে হচ্ছে ট্যুইস্ট যদি লাগসই না হয় তাহলে গল্পটি মার খায়।
এই গল্পের ট্যুইস্ট আমার কাছে লাগসই মনে হয়নি সেটা স্পষ্ট করেই জানিয়েছি। এবং তাতেও গল্পটা যে অনেকের কাছে ভালো লাগতে পারে সেটাও স্বীকার করেছি। গল্পটা আপনার, সেটাকে আপনি কী পরিণতি দেবেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমি শুধু আমার মতামত জানিয়েছি।
বুঝেছি ভাই। আমিও তো বল্লাম আপনি আপনার জায়গা থেকে অবশ্যই মত দিতে পারেন। আমিও আমার মতটা দিলাম আর কি! লেখক-পাঠক এই মত বিনিময় খুব উপভোগ করি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার দুইটা অনুভূতি-ই মারাত্মক তীব্র দেখা যাচ্ছে। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা। শুভ কামনা।
স্বপ্নবড়ি গল্পটার কথা এখনও মনে আছে।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ধন্যবাদ,ভাই মনে রাখার জন্য। ওরকম গল্প অনেকদিন লিখতে পারছি না
রাজিব মাহমুদ
গল্পটি ভালো লেগেছে রাজিব মাহমুদ। গল্পের চেয়েও বেশি ভালো লেগেছে বলার ধরন এবং সাবলীল সংলাপ। মনে হচ্ছিলো সারেং বউ এর ফারুক আর কবরীর কথা। আরও অনেকের মতোই শেষটা আমার মনমতো হয়নি, তবে মনমতো যে হতেই হবে এমন কোন কথা নেই।
----মোখলেস হোসেন
ধন্যবাদ মোখলেস হোসেন। শেষটায় আসলে একটা নিরীক্ষার চেষ্টা আছে। ট্র্যাডিশনাল ধাক্কা থেকে বের হতে চেয়েছিলাম। মনে হচ্ছে খুব একটা সুবিধের হয়নি ব্যাপারটা।
রাজিব মাহমুদ
সুবিধের হবেনা কেন! আমার ভালো লাগেনি দুটো সহজ সরল সুন্দর মানুষকে প্রতারিত হতে দেখে। কিন্তু এমন ঘটনা তো ঘটছে।
---মোখলেস হোসেন
গল্প এগিয়েছে চমৎকার - শেষ প্যারাগ্রাফ-টার আগে পর্যন্ত। শেষ প্যারাগ্রাফ-টা বাকি অংশের সাথে ঠিকমত মিশ খেয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
হ্যাঁ, সেটাই সবাই বলছে। তবে আমার দিক থেকে বলতে চাই যে এই "মিশ" না খাওয়ার মধ্যে ট্র্যাডিশনের একটু বাইরে গিয়ে একটা ধাক্কা-চেষ্টা আছে। ট্র্যাডিশনাল ন্যারেটিভের আরও ট্র্যাডিশনাল স্টাইলের ধাক্কা দিতে চাইনি ইছে করেই। যাই হোক, মনে হচ্ছে চেষ্টা সফল হয় নি। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ এক লহমা।
আপনি যেটা করতে চেষ্টা করেছেন বলে আমার মনে হয়েছে, সেটাতে আপনি একেবারে সফল হননি, এইটা আমার মনে হয়নি। আমার মনে হয়েছে আপনার গল্পের গতিপথ ঠিক আছে; শুধু শেষ প্যারাগ্রাফটা তার আগে পর্যন্ত চলে আশা নৈর্ব্যক্তিকতা থেকে সরে গেছে। শেষ প্যারাগ্রাফটার বিষয়টা নিয়ে বলছিনা, তার উপস্থাপনা নিয়ে বলছি। পুরো গল্প চলছে আপন মনে, কোন বিশেষ ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা না করে, সেই একই সুরে যদি ধাক্কাটা আসে, যেন একটা নিয়তির মত, যেন একটা এরকমটাই হওয়ার ছিল, এরকম ছাড়া আর কিই বা হতে পারে, এইরকম ভাবে তখন ধাক্কাটা আসে মোক্ষম ভাবে। ধরুন, বিরিয়ানির বিক্রেতা আসলে দুরকম বিরিয়ানি বেচে, একটা তার নিয়মিত এবং সাজগোজে রইস দেখনেওয়ালাদের জন্য, আর একটা এই চামেলী-দিদারদের মত মানুষদের জন্য। আর এই দ্বিতীয় মানুষদের এইরকম নিম্নস্তরের খাবার দেওয়ার জন্য তার কোন অনুশোচনাও নেই। তার পাপবোধ অশুচি প্রাণিটিকে তার নিজের ঘাঁটাঘাঁটি নিয়ে এবং সেখানে তার একটা বড় ভরসা রয়েছে বছর বছর তীর্থ করে আসার প্রবল পুণ্যের কাজটি সম্পন্ন করতে পারার জন্য। আমার ত মনে হয়, সারা পৃথিবীর সকল সমাজে সব যুগে এটাই চলতি নিয়ম। আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে যাঁর কথা প্রবলভাবে মনে হচ্ছিল, সেই মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় এই কোন ছাড়ান-কাটান-নেই ধাক্কাটা পাওয়া যেত। আপনার লেখাটা এত ভাল চলছিল যে এইরকম একটা ধাক্কার জন্য প্রত্যাশা তৈরী হয়ে গিয়েছিল। (না পেয়ে বরং একটা ধাক্কা খেয়ে গেছি! না, না, অতটা নয়, খুনসুটি করলাম একটু।)
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দারূন বলেছেন। তবে অণুগল্পের পরিসরে সেটা ঠিক কীভাবে দেখাব সেটাই বুঝতে পারিনি। সেক্ষেত্রে আমার হোটেল মালিকের ব্যবসা নিয়ে আরও কমপক্ষে ১ টা প্যারা লিখতে হতো। হয়ত শেষমেষ তাই করবো। আপনার উৎসাহ ও পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা
গল্প বলার ধরণটা ভালো হলেও কাচ্চি বিরিয়ানীর উপর ভক্তি কমে গেল অনেকখানি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এটা কিন্তু অদ্ভুত। সচলের বাইরেও আমাকে বেশ কয়েকজন বলেছেন যে তাদের এটা পড়ে তারা আর বিরিয়ানী খেতে পারছেন না। হা হা হা। আমি কিন্তু বিরিয়ানি খাচ্ছি খুব আরামসে। আজকেও খাব একটা দাওয়াত-এ
আমাদের দৈনন্দিন জীবন যেনো জীবন নয়। চারপাশ কেমন যেন বিষাক্ত হয়ে ওঠছে। ‘প্রেম ও মাংস’ আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি। যা আমরা উপেক্ষা করতে পারি না কোনভাবেই।
“আল্লাহ মালিক। তওফিক দাও মা’বুদ যাতে এই কাম আর না করি। আমিন।”
আল্লাহ কি তওফিক দেয়নি?
- প্রাচ্য পলাশ
হোটেলের মালিক তো আসলে 'তওফিক' চায় না। সে তার নিজের লোভের কাছে পরাজিত হয়ে আরও বেশি লাভ করতেই উন্মুখ। প্রতিবারে একই কাজ করে।
চমৎকার গল্প!
তবে বেয়াদব গদ্যের চ্যাম্পিওনের হাত থেকে বেরুনো গল্পটার ভাষা মোটেই বেয়াদব লাগলো না, বরং পুরোদস্তুর আদবতমিজ মানা গুডি গুডি ভদ্রসভ্যগদ্যই মনে হলো!
****************************************
"কেননা প্রতিটি বাক্যে তো আর নিরীক্ষা চলে না; তৈরি ভাষার উপর আমাদের কিছুটা হলেও নির্ভরকরতে হয়।কিন্তু পুরো লেখাটাই যখন পুরনো স্টাইল-নির্ভর হয় এবং শব্দ-বাক্যের ব্যবহারে কোনরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা-ই থাকে না তখন পাঠক হিসেবে হতাশ লাগে।
পাঠ-প্রতিক্রিয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। "বেয়াদব গদ্য চাই" এর উপরের অংশটা আবার পড়ুন ও দেখুন যে ওখানে পুরো লেখা জুড়ে বেয়াদবি বিতরণের কথা বলা হয়নি। বরং স্বীকার করা হয়েছে যে এটা অসম্ভব ও অপ্রয়োজনীয়। আদব বাক্য থাকবে এবং এর পাশাপাশি বা ফাঁকে ফাঁকে বেয়াদব বাক্যও (সেটা শুধুই ১টা বাক্য হতে পারে) থাকবে। সব বেয়াদব বাক্য দিয়ে গল্প লেখা সম্ভব না কারণ তৈরি ভাষার উপর আমাদের কিছুটা হলেও নির্ভর করতে হয়। ইন ফ্যাক্ট, সেটা যদি করতাম, তাহলে আপনি এই লেখাকে "চমৎলার গল্প" বল্তেন না মোটেই। অতএব, এখানে পরিমিতি'র ব্যাপারটা বুঝতে হবে অর্থাৎ আদবি-বেয়াদবির অনুপাত। আমার এই লেখায় বেয়াদব বাক্য অবশ্যই আছে আর সেটা পাঠক-ই খুঁজে বের করুক। একেকজনের বেয়াদবির সংজ্ঞা একেক রকম কি-না। :)
নতুন মন্তব্য করুন