হরিপূর্ণ ত্রিপুরা
সম্প্রতি রঙ্গভরা বঙ্গদেশে বোধহয় কাসেম বিন আবু বাকার নামক লেখককে নিয়ে ফেসবুক ও ব্লগ দুনিয়ায় ঝড় ওঠেছে ৷ তবে স্বীকার করতে দ্বীধা নেই যে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আমার কোন আগ্রহ না থাকার কারণে ঐ তর্ক বির্তকের বিষয় আসলে কি সেটা আমার জানার বাইরে ছিলো ৷ কথিত ঐ লেখক সম্পর্কে আমি মোটেই জানিনা তা নয়, কিন্তু ইন্টারনেট দুনিয়ার তার সম্পর্কে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে কিছু কিছু লেখা দেখে যা মনে হয়েছিলো তা হলো - ডাস্টবিনের ময়লা ঘাটাঘাটি করে মানুষগুলো যেন দুগর্ন্ধকে সুভাসিত করার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছে ৷
বিবিসিতেও মনে হয় কাসেম বিন আবু বাকার কে নিয়ে নিউজ হয়েছিলো কয়েকদিন আগে ৷ হেডিংটা দেখেছি পড়া হয়নি ৷ কিন্তু আজকে আসিফ নজরুলের মতো লোক যখন প্রথম আলোর মতো পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে নিবন্ধ লিখলেন - একটু পড়ে দেখলাম ৷ সেখান থেকে জানলাম আসিফ নজরুল নাকি কাসেম বিন আবু বাকারের নাম শুনেছিলেন একযুগ আগে ৷ কিন্তু তার উপন্যাস বা লেখা নিয়মিত পড়েন কিনা, না আদৌ না পড়ে কাসেম বিন আবু বাকার হয়ে লিখতে গেলেন বোঝা গেল না নিবন্ধ পড়েও ৷ কারন কাসেম বিন আবু বাকারের কোন বইয়ের বা বই সমগ্রের কোন ভাষা-শিল্পগত আলোচনা সেখানে নেই, তার লেখার 'কনটেন্ট' আর 'জনপ্রিয়তা' বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়া ৷
সময়ের হিসেবে ধরলে অাসিফ নজরুলের চেয়ে এক যুগ আগের থেকে আমি কাসেম বিন আবু বাকারকে চিনি । তার লেখার মাধ্যমে ৷ মানে কাসেম বিন আবু বাকারের লেখার সাথে আমার পরিচয় দুই যুগেরও বেশি সময়ের আগে ৷ খাগড়াছড়ির একটি উপজেলার প্রত্যন্ত এক স্কুলে পড়তাম আমি তখন, যেটি কিনা আশির দশকে সরকারের বাঙালি পুনর্বাসনের নীতির কারণে পুরো উপজেলাসহ ঐ প্রত্যন্ত স্কুলকে ঘিরে থাকা জনপদগুলো সব বাঙালিতে সয়লাব হয়ে গিয়েছিলো ৷ সেখানে একদিন স্কুলে হতে ফেরার পথে আমার স্কুলের দফতরির সাথে আরো বেশ কিছু ছাত্র/লোকের আলোচনাতে শুনি 'বিদায় বেলায়' নামক খুবই বিয়োগাত্মক উপন্যাসের কথা ৷ আমি তখন বোধহয় ক্লাস সেভেনে পড়ি ৷ কৈশোর মনে আর তর সইনি ৷ পাঁচটি টাকা দিয়ে সিরাজি বিতান নামক গ্রাম্যডাক্তারের চেম্বার কাম লাইব্রেরি ও স্টেশনারী দোকান থেকে সেদিনই বইটি ধার নিয়ে গ্রোগ্রাসে পড়ে শেষ করি ৷ কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলাম কয়েকদিন ৷ সেটার লেখক ছিলো , যতদূর মনে পড়ে আবদুস সালাম মিতুল ৷ কাসেম বিন আবু বাকার ঘরানার লেখক এবং খুব সম্ভবত একই রকম জনপ্রিয় গ্রাম-মফস্কলের স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্রদের কাছে ৷
তো স্কুলে পড়াকালীন সময়ে প্রতিবার কৃতিত্বের সাথে প্রথম স্থান অর্জন করার কারণে আমি মাঝে মধ্যে টুকটাক পুরস্কার পেতাম ৷ আমার প্রতি বছরই একই রকম অপরিবর্তিত কৃতিত্ব থাকার কারণ ছিলো -'যে বনে বাঘ নেই, সেই শিয়ালই রাজা ' এই রকম আর কি ৷ ফুটন্ত গোলাপ (সেটা নিশ্চয় কাসেম বিন আবু বাকারের) নামক উপন্যাস একবার এই রকম কৃতিত্ব অর্জনের জন্য পেয়েছিলাম ৷ এরপরেতো সিরাজী বিতান হতে তাদের দুজনের বিভিন্ন বই যেমন বোরকা পরা সে মেয়েটি, একটি ভ্রমর তিনটি (নাকি পাঁচটি মনে নেই ) ফুল এরকম যত ধরণের বই পেতাম সবই বাসায় নিয়ে পড়তাম ৷
তখনকার গ্রাম্য কিশোরের বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন বই পত্র পড়ার সুযোগ না থাকা এবং কাসেম বিন আবু বাকারদের সহজলভ্যতার কারনে একদা যে আমি কাসেম বিন আবু বাকারদের বই পড়তাম, চমৎকার মজে যেতে পারতাম পরবর্তীতে 'গল্পগুচ্ছ','শেষের কবিতা', 'দৃষ্টিপাত', 'শ্রীকান্ত', 'দেবদাস', 'মা', 'পৃথিবীর পাঠশালা' সহ বাংলা-বিশ্ব সাহিত্যের অনেক বিখ্যাত বইগুলোর সাথে যখন পরিচয় ঘটছে তখন মানসিকভাবে আমি কাসেম আবু বাকার ঘরানার জনপ্রিয় লেখা থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছিলাম ৷ পিজিক্যালিভাবেও আমি তখন স্কুল পেরিয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিচ্ছিলাম এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভালো বই পত্র না পাওয়ার সীমাবদ্ধতাকে ক্রমশ অতিক্রম করছিলাম ৷ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় আঙ্গিনায় কিছুটা বন্ধুবান্ধবদের থেকে বই ধার নিয়ে কিছুটা লাইব্রেরীতে গিয়ে বই পড়া শুরু করে দিই ৷ যার ফলশ্রুতিতে, হুমায়ন আহমেদের ক্ষেত্রেও নন্দিত নরকে ছাড়া আর কোন বই পড়ছি বা পড়ার পরে মনে দাগ কেটেছে এরকম বইয়ের নাম আমার জানা নেই ৷ আমি আমার বাল্যকালের বই পড়তে না পারার সীমাবদ্ধতাকে তখন কিঞ্চিৎ হলেও পুষিয়ে নিতে পেরেছিলাম বোধহয় ৷ এখন যদি কাসেম বিন আবু বাকারের ঘরানার বই পড়ার প্রসঙ্গ আমার চলে আসে তাহলে আমাকে বলতে হবে যে, সাহিত্যের মূল্যায়নে আমার কোন নির্দিষ্ট মানদন্ড নেই , আমি সাহিত্যের ছাত্র বা বিশারদ কেউ নই কিন্তু আমার জীবনের বই পড়ার যাত্রা হতে, বিভিন্ন ভাল খারাপ বই পড়ে মগজে একটা অলিখিত মানদন্ড দাঁড়িয়ে গেছে ৷ সে মানদন্ডে কাসেম বিন আবু বাকার হচ্ছে - 'না' ৷
ডঃ আসিফ নজরুলের মতে, ‘সাহিত্যের উপজীব্য যদি হয় সাধারণ মানুষের জীবন, তাহলে এতে নামাজ পড়া, ইসলামি সম্বোধন ব্যবহার করা, কথাবার্তায় ইসলামি অনুশাসনের বিষয় আনা অস্বাভাবিক কি(আসিফ নজরুল ২০১৭)? ' আসিফ নজরুল তার নিবন্ধে কাসেম বিন আবু বাকারকে ব্লগার তরুণদের একটা অংশের আক্রমনের কারণ হিসেবে উপন্যাসে ধর্মীয় বিষয় তুলে ধরাকেই উল্লেখ করেছেন ৷ হ্যাঁ সাধারন মানুষের জীবনের বিষয় গল্প-উপন্যাসের থাকবে, তাদের ধর্ম চর্চা ও থাকবে সে বিষয়ে আমার মনে হয় কোন দ্বিমত থাকা উচিত না ৷ কিন্তু অজস্র সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের অজস্র ধর্ম- দর্শন- হাসিকান্না বিষয়ের মধ্যে লেখক কোন জিনিসকে তুলে ধরতে চায়, কি উদেশ্য এটার পিছনে, এবং লেখকের উপস্থাপনা, লেখার শৈলি ও চিন্তাগত গভীরতা অবশ্য বিচার্য বিষয় ৷ বঙ্কিম চন্দ্র, মীর মোশারক হোসেন সহ অনেক হিন্দু বা মুসলিম ধর্ম-জাতীয়তাবাদী লেখক ছিলেন ৷ তাদের অনেকের লেখার কনটেন্ট নিশ্চয় কাসেম বিন আবু বাকারের মতো; নিজস্ব ধর্ম -জাতির বিষয় নিয়ে এবং সেগুলোর প্রসারের উদেশ্যে ৷ কিন্তু চিন্তাগত গভীরতায় ও সাহিত্যশৈলিতে সেগুলো কি কাসেম বিন আবু বাকার মানের ?
আবদুস সালাম মিতুল এবং কাসেম বিন আবু বাকারের লেখার প্লটগুলো মোটামুটি প্রায় একই; নায়ক বা নায়িকা কোন এক সময় ধর্ম কর্মে ধার ধারতো না কিন্তু কাহিনীর শেষে করুল পরিনতির মধ্যে দুজনে ধর্মে আশ্রয় নেয়, সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে ধনী আর গরিবের বিভাজন , অনেক নায়ক আফগানিস্তানেও পাড়ি জমায় জিহাদী করার জন্য ৷ তো আসিফ নজরুল যদি পড়ে বা না পড়ে যদি বলেন যে কাসেম বিন লেখায় শহুরে বা কথিত উচ্চ বর্গীয় লেখকদের বিপরীতে বাংলার গ্রামীন সমাজ ও সেখানকার লোকদের কাহিনীই তুলে ধরেছেন এবং সেখানে ক্ষতিকর রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারের কোন প্রচেষ্টা নেই - সেটা হচ্ছে তার ঠিক বিপরীত ৷
কাসেম বিন আবু বাকারের লেখার কনটেন্ট বাদ দিয়ে তার লেখার জনপ্রিয়তা এবং এটি নিয়ে একটু বিতর্ক বা আলোচনা আসুন একটু দেখি ৷ আসিফ নজরুলের ভাষায় কাসেম বিন আবু বাকারকে ইন্টারনেট জগতে তরুণদের একটা অংশের আক্রমনের কারন নাকি তার জয়প্রিয়তা এবং সাহিত্য বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট মানদন্ডগত চিন্তা ৷ তার ভাষায় ' জনপ্রিয়তা মানেই সস্তা আর চটুল কিছু—এটা আসলে বলে জনবিচ্ছিন্ন এক উন্নাসিক শ্রেণি। এই শ্রেণির মানুষ বাংলাদেশের বৃহত্তর সমাজ আর সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতি বুঝতে তো চানই না, তা মেনে নিতেও প্রস্তুত না। তাঁরা জনগণ বলতে কেবল নিজেকে বোঝেন, মানুষ মানেও তাঁরাই (আসিফ নজরুল ২০১৭) ।' যতটুকু বুঝি, আধুনিক যুগে মানুষের মতামত-যুক্তি, অন্যের পছন্দ অপছন্দকে শ্রদ্ধা করা -একটা গনতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদীয় সমাজের সার্বজনীন রীতিনীতির অংশ ৷ তাই কারোর প্রতি সমাজের ( ক্ষুদ্র বৃহৎ যাই হোক) পছন্দ বা জনপ্রিয়তাকেও এটার নিরিখেই বিচার হওয়ার কথা ৷ কিন্তু জনতার স্রোত যেদিকে যায় সেটা যে সবসময় ভালো হবে, নির্ভুল হবে, পৃথিবীকে কোন কিছুকে বিচার করার জন্য কোন রূপ মানদন্ড থাকতে নেই এবং জনতার পছন্দকে শ্রদ্ধা জানাতে হবে- সে ধরণের জেনারেইলাজেশন হচ্ছে বড় ধরণের ভুল ৷ এটা হয়তো নির্ভর করবে কনটেক্সের উপর ৷ যেমন ধরেন জনপ্রিয়তা মানে যদি ভালো হয়, ক্ষতিকর না হয় এবং শ্রদ্ধা জানানোর বিষয় চলে আসে তাহলে বাংলাদেশে নারী মহলের হিন্দি সিরিয়ালের জনপ্রিয়তা এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব কেনো এত উচ্চবাচ্য ? তেমনি সানি লিওনের জনপ্রিয়তার কথাই ধরুন- google সার্চে সে হচ্ছে কয়েক বৎসর ধরে সম্ভবত ইন্ডিয়ার যে কোনো অভিনেতা অভিনেত্রীর চেয়ে সবচেয়ে বেশি খোঁজা ব্যক্তি । অন্য কথায় সবচেয়ে কাংখিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তি ৷ সে নিরিখে আমরা কি বলতে পারবো সানি লিওনের অভিনয় বলিউড - হলিউডের সমসাময়িক যে কোন অভিনেতা অভিনেত্রীর চেয়ে ভালো ? তেমনি পাঠকের মধ্যে জয়প্রিয়তার বিচার করলে দেখা যাবে সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল হয়ে হাল আমল পর্যন্ত পৃথিবীর বড় বড় অনেক দার্শনিক, চিন্তাবিদ, কবি, লেখকের বই কাসেম বিন আবু বাকারের, হুমায়ন আহমেদের পাঠকের সংখ্যার চেয়ে কম হবে ৷ তাই বলে কি তাদের বইয়ের শৈল্পিক-দর্শনগত মূল্যমান হুমায়ন আহমেদ বা কাসেম বিন আবু বাকারের চেয়ে কম? মানুষের কোন কিছুকে পছন্দ করা বা করতে পারার ক্ষমতাটুকু সে মানুষের একার বুদ্ধিবিবেচনা ও সিন্ধান্তের উপর নিশ্চয় নির্ভর করেনা ৷ যে পারিবারিক- সামাজিক -অর্থনৈতিক- রাজনৈতিক - ঐতিহাসিক বলয়ে ব্যক্তির অবস্থান, সেগুলো মিলেই তার পছন্দ বা অপন্দের বিষয় তৈরি করতে পারে ৷ কোন জিনিসের জন্য তৈরি করতে পারে সহজ লভ্যতা এবং সে জিনিসের প্রতি আগ্রহ ৷ অন্যদিকে অন্য কোন জিনিসের জন্য একই সময়ে তৈরি হতে পারে হাজারো প্রতিবন্ধকতা ৷
হে আবু বাকারের ভক্ত, আপনি সানি লিওনের জনপ্রিয়তায় ভয় পান সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে বলে ৷ বাংলাদেশের হিন্দি সিরিয়ালে জনপ্রিয়তাকে হয়তো দেখেন- মেয়েলিপনার মাধ্যমে জাতি -সাংস্কৃতিকগত আগ্রাসনের ফাঁদে পড়েছে বলে ৷ আবার সেই আপনি কাসেম বিন আবু বাকারের জনপ্রিয়তাকে গ্লোরিফাই করাতে চান প্রান্তীয়জনের লেখক বলে, তার -ভাষা চিন্তা ও কাহিনীর প্লটকে বাংলাদের আপামর জনসাধারনের ভাষা- দর্শন আর চিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে ৷ 'জয়প্রিয়তা' নামক ডিসকোর্সে এসে যদি উপরে বর্ণিত আলোচনার মতো আপনার চিন্তাগত সংঘর্ষ দেখা দেয় তাহলে আপন আয়নায় নিজেকে দেখুন ৷ খোঁজে পাবেন আপনার চিন্তাগত দৈন্যতার জায়গা কোথায় ৷ মুখোশের আড়ালে আসল চেহারারটার সাথেও সেদিন আপনার মোলাকাত ঘটবে যদি ইতিপূর্বে না ঘটে থাকে ৷
১। আসিফ নজরুল ২০১৭, কাশেম বিন আবু বাকার ও আমাদের মনস্তত্ত্ব, প্রথম আলো, ০৬ মে ২০১৭,http://www.prothom-alo.com/opinion/article/1171271/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0...
মন্তব্য
কাশেম সাহেব একটু ইংরেজি পড়ালেখা জানা ও বিদেশী "বাংলাদেশ এক্সপার্ট"দের সাথে পরিচিত থাকলে বিষয়টা অন্যরকম হতে পারতো। কোন বিদেশী "বাংলাদেশি এক্সপার্ট" যদি এটাকে একটা গবেষণা প্রবন্ধ, বাজফিড টাইপের সাইটে ফোকলোর হিসাবে ব্র্যান্ডিং করে দিতেন তাহলে কাশেম সাহেবের লেখা নিয়ে এতো হুজ্জত হতো না। তখন রিকসা পয়েন্টিঙের মতো কাশেম টেক্সট নিয়ে আলিয়াস ফ্রসেইজে আলোচনা হতো।
সাইড টপিক,
আপনার তখনকার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা সিরিজ শুরু করুন। এই সময়টা জানতে আগ্রহী।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ধন্যবাদ ভাই, আপনার মন্তব্য ও পরবর্তীতে যে নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর পড়তে আগ্রহী হওয়ার জন্য ৷ আপনার আইডিয়াটা আসলে চমৎকার ৷ তবে আমার জীবনে কোন এক সময় তাদের সংস্পর্শে আসার কাহিনী নিয়ে লেখার কোন ইচ্ছা আর নেই , ময়লা ঘাটাঘাটি করলে নাকি দুর্গন্ধই বাড়ে ৷ তাতে হিতে বিপরীতও হতে পারে, ঐ ময়লার পাবলিসিটির কারনে ৷ অনেক সময় খারাপ জিনিসও পাবলিসিটির কারনে মানুষ গিলে খায় ৷
তবে মানুষের জীবনীর সাথে কিভাবে সে সময়কার ইতিহাস, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা ইন্টারসেক্ট করে সেটা নিয়ে আমার আগ্রহ আছে ৷ সে হিসেবে ভবিষ্যতে অনেকটা আপনার আইডিয়ার মতো বিষয় নিয়ে কিছু লেখাজোকা করার ইচ্ছা আমার আছে ৷ আপনাকে আবারও ধন্যবাদ ৷
হরি পূর্ণ ত্রিপুরা
পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী সেটেলার বসানো, সেখানকার অ-বাঙালী জাতিসমূহের মানুষদের প্রান্তিকীকরণ, জমি-বাড়ী ও সম্পদ দখল, লুটপাট, গণহত্যা, ধর্ষণ, দলন-নিপীড়ন, গুচ্ছগ্রাম বসানো ইত্যাদি নিয়ে কোন ইতিহাসের বই প্রায় নেই বললেই চলে। ভুক্তভোগীদের মধ্য থেকে ফার্স্টহ্যান্ড অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখলে এগুলোর কিছু কিছু চিত্র সবার কাছে স্পষ্ট হবে। বিশ্লেষণ আসলে ভালো, তবে বিশ্লেষণ ছাড়া ঘটনা-পরিপার্শ্ব-কার্যকারণ ইত্যাদি নিয়ে লেখাটাও দরকার। সত্য একদিন প্রকাশিত হবেই, তবে সেটা এখনই নয় কেন!
আপনার অবজার্ভেশন একেবারে ঠিক যে এই ধরনের ফার্স্ট হ্যান্ড অভিজ্ঞতায় লেখা কোন বই নেই ৷ আমার ক্ষেত্রে কিছু ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারনে সহসা শুরু করা সম্ভব না ৷ তবে আপনার মতো আমিও আশাবাদী যে, একদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের সত্তর- আশির দশক হতে বর্তমান পর্যন্ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা বই আকারে বেরিয়ে আসবে ঐ ঘটনার প্রত্যক্ষ চাক্ষুষকারীদের সাক্ষাৎকারে বা ঐ ঘটনায় সাফারারদের লেখায় ৷ ধন্যবাদ আপনাকে ৷
আপনারা যদি কমেন্টে নাম না লেখেন তাহলে কে কী বলছে সেটা ফলো করার উপায় থাকে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সহমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এই ফটোকপির যুগে যদি কাসেম বিন আবু বকর "বেস্ট সেলার" হতে পারে, তাহলে বুঝা যাচ্ছে "সাইমুম সিরিজ" আবার নতুন করে ছাপা হলে হু হু করে বিক্রি হবে, এক সময় ছাত্র শিবিরের গুটিকয় গেলমান ছাড়া এই সাইমুম সিরিজের নামই কেউ জানতো না, আর সেই একই ফটোকপির দৌরাত্ম্যে কিনা সেবা প্রকাশনী প্রায় বন্ধ। শুনলাম সৌদি সরকার দেশে নাকি আরও ৫০০ মাদ্রাসা বানানোর টাকা দিচ্ছে, এদিকে আবার কওমি মাদ্রাসার উচ্চতর ডিগ্রী ছাড়া ভবিষ্যতে দেশে চাকরি পাওয়াই নাকি কঠিন হয়ে যাবে, এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও মুর্তি টুর্তি আর ইদানীং পছন্দ হচ্ছে না, ফাকির নায়েক, চৌমেন আলি খান, গামছা তরতিজের ভিডিওর জ্বালায় পেজ এতই ভারী হয়ে যায় যে এখন ফেসবুক খুলাই মুশকিল, হুজুররা এখন ওয়াজে জেনা আর শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচানোর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখলের কথা বলে, কিছুদিন পর দেখা যাবে জেনেটিক্স বিভাগের বদলে জ্বীন-এটিক্স বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীরা ভর্তি পরীক্ষা দিবে, আর আসিফ নজরুলরাতো আছেনই, শেষে গিয়ে মনে হচ্ছে বাংলা ভাইয়ের স্বপ্নই সত্যি হতে চলল।
নতুন মন্তব্য করুন