গবেষণায় ফুকোচুরি, লুকোচুরি, জোচ্চুরি এবং দায়ভারের ধুত্তোরি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০১/১০/২০১৭ - ১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত দুইদিনের আলোচিত খবর – ঢাকা “বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান ও অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথ গবেষণা প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ এসেছে” [১]।

মিশেল ফুকোর ‘দ্যা সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ শিরোনামের লেখাটি পাতার পর পাতা চুরি করার অভিযোগ উঠেছে সামিয়া ও মারজানের বিরুদ্ধে।
বাংলাট্রিবিউন জানাচ্ছে, কেবল ফুকো নয়, এডওয়ার্ড সাঈদের লেখাও চুরি করেছেন এই জুটি [২]।

সম্ভবতঃ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় পরিচিত মুখ বলেই সামিয়ার নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সামিয়া যা বলেছেন [৩], রীতিমতো ভয়ংকর - ‘‘মারজান আমার কাছে কয়েকবছর আগে চাকরির জন্য অনুরোধ করেছিল। আমি তাকে বেসরকারি টিভিতে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তার সঙ্গে আর্টিকেল লিখতেও অনুরোধ করে আমাকে। আমি রাজি হয়েছিলাম, কিছু আইডিয়াও দিয়েছিলাম। পরে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলো। শিক্ষক হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ আসত আমার কাছে। তাদের সবার সাধারণ অভিযোগ ছিল, ‘সে একটা বেয়াদব।’ পরে আমিও অনেকদিন তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করিনি।’’

সামিয়া তার একজন সহকর্মীকে ‘বেয়াদব’ বলে দায় এড়াতে চাইলেন। আর অন্য অভিযুক্ত মারজান বলেছেন, “সামিয়া রহমান মিথ্যা বলছেন। তিনি ওই আর্টিকেলের প্রথম লেখক। আর্টিকেলটির একটি বড় অংশ তিনি লিখেছেন। আর তার লেখা অংশেই অভিযোগ এসেছে। তিনি কোন অংশটি লিখেছেন, তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। মোট কথা, তিনি তো আমার সরাসরি শিক্ষক। ফলে তিনি নিজের দায় আমার ওপর চাপাতে চাইছেন। [৩]”

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন তদন্ত কমিটি করেছে। সামিয়া কেন একটি টিভি চ্যানেলে চাকরি করছেন – সেসব অভিযোগও আসছে। আসছে প্রাসঙ্গিক রাজনীতি, সদ্য বিদায়ী ভিসি আরেফিন সংশ্লিষ্টতা, মকসুদ বনাম মেজবাহ দ্বন্দ্ব, ইত্যাদি, ইত্যাদি। এই সুযোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলু পুড়িয়ে নিচ্ছে অনেকে।

তবে, সামিয়া-মারজানের পারস্পরিক দোষারোপে যে ব্যাপারটি স্পষ্ট হলো – তা হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে গবেষণার সার্বিক অবস্থার এক ঝলক।

ঘটনার পেছনে কোনো ঘটনা আছে কিনা জানতে ফোন করেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণ শিক্ষক বন্ধুকে। হেসে উড়িয়ে বললো, এটাই বাস্তবতা, এভাবেই গবেষনা হয় সেখানে।
কী রকম?
জুনিয়ররা কিছু একটা লেখেন, সেটা কোনো এক ‘হেভিওয়েট’ সিনিয়রকে দেখান, সিনিয়র কিছু দাড়ি কমা ঠিক করে দেন। তারপর বলেন, “আমার নামটাও ঢুকায়ে দিও”।
নামটা ঢুকাতে হয়, ও তালিকার উপরেই থাকে সিনিয়রের নাম। আর এই নামের কারণেই লেখা ছাপা হয়ে যায়।
সামিয়া-মারজান কাহিনীও সম্ভবতঃ একই চর্চার ফলাফল। এখন ফেঁসে গিয়ে লুকোচুরি করছে দুই পক্ষই।

দায়ভার কার?
লেখা যেহেতু সামিয়া-মারজানের নামে। দুজনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সজ্ঞানে-অজ্ঞানে যেভাবেই হোক, যত দ্রুত তারা ক্ষমা চেয়ে লেখাটি তুলে নেবেন, দু’জনের জন্য ততোই মঙ্গল।
তবে এখানে কিছু কথা থেকে যায়। এই দুই জনের বাইরে অন্য কারো কি দায়ভার নেই?

এই জার্নালের এডিটর কি লেখাটি পড়ে ছাপিয়েছেন? পড়লে তাঁর চোখে কি পড়েনি যে লেখার বড়সড় অংশ চুরি?
এডিটরকে যদি বাদও দিই – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোস্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালটি কি পিয়ার-রিভিউড্‌? মানে কমপক্ষে দু’জন জ্ঞানীলোক যারা এই বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন, তারা কি রিভিউ করে কোনো মন্তব্য দিয়েছেন? এত বড় চুরি কি তাদের চোখও এড়িয়ে গেছে?

প্রসঙ্গতঃ কেউ চাইলে আর্টিক্যেলটির অংশ বিশেষ পড়তে পারেন [৪]। সোস্যাল সায়েন্স লাইনে অ্যাকাডেমিক গবেষণাপত্রের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ হলো – লিটারেচার রিভিউ। ঐ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক কাজগুলো বিবেচনা করা হয়েছে সেটা প্রমাণের জন্য, থিয়রেটিক্যাল আন্ডারপিনিং এবং যুক্তির ব্যাকআপ সাপোর্টের জন্য আগের অন্য গবেষকদের কাজগুলোকে বিবেচনায় আনতে হয়। সেটা রেফারেন্স দিতে হয়। না দিলেই চুরি (প্লেজিয়ারিজম) বলে বিবেচনা করা হবে। সামিয়া-মারজানের লেখাটি পড়ে দেখুন। ৮ পৃষ্ঠার কোথাও কারো লেখার ঋণ স্বীকার করা হয়েছে? কিচ্ছু নেই।

এই যে ‘কিচ্ছু’ না থাকা, এই না থাকাটা কি এডিটর বা রিভিউয়ারদের চোখে পড়লো না?

যে শিক্ষক-বন্ধুকে ফোন করেছিলাম, সে বললো – “ধুত্তোরি, পরীক্ষার খাতা দেখার সময় নাই স্যারদের, এসব রেফারেন্স চেক করবে কখন?”

এখানে আরেকটি প্রসঙ্গ এসে পড়ে কারিগরী সহায়তা। ঢা-বি’র কিছু অনুষদে শুনেছি টার্নইটইন নামের চুরিচামারি ধরার সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা হয়। এইটার কাজ খুব সহজ – কোনো ডকুমেন্ট আপলোড করে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই জানিয়ে দেবে – এই লেখার কতভার চুরি, কতভাগ জোচ্চুরি।

বাংলাদেশ থেকে বাইরে পড়ালেখা করতে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগ শুরুতেই ধাক্কা খায় এই টার্নইটইনের চেকে। নীলক্ষেতের চোথা আর ডাউনলোডেড এসাইনমেন্টের বেইল যে সচেতন বিশ্বে নাই, সেটা বুঝতে দেরি হয় না। কেবল দেরি হয় – দায়ভার এড়ানো ফুকোচোরদের। টার্নইটইনে দিলেই সামিয়া-মারজানের ফুকোচুরি ফিল্টার্ড হয়ে যেতো।

নিজের পূর্বপ্রকাশিত লেখা থেকে কপি করাও যে চুরি, একে যে ‘সেল্‌ফ প্লেজিয়ারিজম’ বলে সে জ্ঞানটুকু নেই ঢাবি’র হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, নুসরাত জাহান এবং তার স্বামী রুহুল আমিনের [১]।

এখন কী হবে?
কিছুই হবে না।
দুই দিনেই সব ফুরিয়ে যাবে। নতুন নতুন ইস্যু আসবে পত্রিকায়। সামিয়া-মারজান-বদরুজ্জামান-নুসরাত-রুহুল এরা কেউ গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির প্রথম উদাহরণ নয়। পাতা উল্টালে বহু রথী মহারথী শিক্ষকের টুকলিফাইয়িংয়ের খবর পাওয়া যাবে। সে খবর কেউ নেবে না। সাংবাদিকতা-অপরাধবিজ্ঞানের যৌথ(অপ)কর্ম কেউ ঘাটাবে না। বিশেষ করে সামিয়ার সাথে আছে নিউজটুয়েন্টিফোর, কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং ডেইলি সান। আছে, ফারুকীর মতো অনেক অনেক বন্ধু, যারা সামিয়ার সঞ্চালনায় টিভিতে এসে আলোকিত হয়। এদের আলোর ঝলকানিতে আজ পর্যন্ত ‘প্রথম আলো’ও চুপ।
চুপ হয়ে যাবে সবাই।
টাইমস হায়ার এডুকেশন বা এ জাতীয় কোনো র‍্যাংকিং প্রকাশ পেলে কেবল একটা বাৎষরিক দীর্ঘশ্বাস ফেলবে এদের অনেকে – “কেন বিশ্বের সেরা এক হাজার ভার্সিটির তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ভার্সিটি নাই...”

ফুটনোটঃ
এই ফুটনোটটা মনে হয় জরুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের গবেষণার দূরাবস্থার কথা তুললেই, অনেকে তেড়ে আসেন – "অমুক স্যার, তমুক ম্যাডাম নিরভে নিভৃতে বিশ্বের সেরা র‍্যাঙ্কড জার্ণালে ছাপাচ্ছেন, সবাই খারাপ সেটা সত্য না"। হ্যাঁ, সত্য না। তবে অমুক-তমুক স্যাররাই না হয় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গবেষণার ন্যুনতম নৈতিকতা শেখাক। জুনিয়দের লেখায় নিজের নাম ঢুকানোর অভ্যাস বাদ দিতে বলুক। রেফারেন্সিং কীভাবে করতে হয়, কোনটা চুরি, কোনটা চুরি না, টাকা পয়সা দিয়ে প্রিডেটরি জার্ণালে ছাপানো কেন উচিত না, সেটা শিক্ষকদের আগে ধরে ধরে শেখানো দরকার।

সুত্রঃ
[১] https://www.jugantor.com/online/national/2017/09/29/59228/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%B8%E0%A6%B9-%E0%A7%AB-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A6%A3%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%9A%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97

[২] http://www.banglatribune.com/others/news/247379/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%93-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%8F%E0%A6%A1%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%88%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%93

[৩] http://www.banglatribune.com/others/news/247227/%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A7%AB-%E0%A6%AA%E0%A7%83%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%A0%E0%A6%BE-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%9A%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97

[৪] https://www.jugantor.com/assets/data_files/document_files/online/2017/09/28/dhaka-journal_59113.pdf

___
মোহসেন আলী
mohsenali (at) asia.com


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

এখন কী হবে?
কিছুই হবে না।

এখানে অভিযুক্ত একজন বিখ্যাত। এইকারণে আলোড়ন। কয়েকদিন পরই নতুন ইস্যু এসে এটা ঢেকে ফেলবে।

সোহেল ইমাম এর ছবি

একটা খবরে দেখলাম সামিয়া রহমান দাবী করেছেন লেখটা তার নয় এবং তাকে না জানিয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। লেখা জমা দেবারটা নিয়মটা ঠিক বুঝিনা। যতটুকু জানি মেডিকেল জার্নালে লেখা জমা দেবার সময় অথর এবং কো-অথোরদের স্বাক্ষরও লেখার সাথেই সংযুক্ত করতে হয়। এখানে কি সে ধরনের নিয়ম আছে? থাকলে সামিয়া রহমানের কি তাতে স্বাক্ষর নেই? লেখাটা তার নয়, তাকে না জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই দাবীর পেছনে সামিয়া রহমান কি আরো কোনো প্রমাণ দেখিয়েছেন?

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

হাসিব এর ছবি

সামিয়া রহমানের দাবি সঠিক নয়। আপডেট পেলাম একটা।

মন মাঝি এর ছবি

বাংলা ট্রিবিউনের স্ক্রীনশটে সামিয়া মারজানকে সাঈদ বা ফুকোর লেখার অংশগুলি নিজেদের প্রবন্ধে হুবহু কপি করতে বা কোনো রকম ক্রেডিট / রেফারেন্স ছাড়াই ব্যবহার করতে নির্দেশ দিচ্ছেন বলে তো দেখলাম না। চোখ এড়িয়ে গেল কিনা জানি না। তবে এমনো তো হতে পারে - সামিয়া নিজেই যেমন বলেছেন - এগুলি হয়তো তিনি "আইডিয়া" হিসেবেই দিয়েছেন। হয়তো অনুবাদ করার পর এগুলি রিরাইট করে সব নিয়মনীতি মেনে রেফারেন্স সহযোগেই ব্যবহার করার কথা ছিল - পরে মারজান যে কাজগুলি আর করেননি?

****************************************

হাসিব এর ছবি

সাক্ষর লাগে না সাধারণত। মেডিকেলের জার্নালে এটা লাগে শুনে অবাক হলাম। আন্তর্জাতিক জার্নালে একজন সাবমিট করে। কো অথরদের নাম, মেইল অ্যাড্রেস দিতে হয়। সাবমিট করার পর অ্যাক্সেপ্ট্যান্স পযন্ত সব করেস্পন্ডন্স সব লেখককে মেইল করা হয়। এখানে একজন জানবেনা এরকম সুযোগ নেই। বাংলাদেশে ধারণা করি প্রিন্ট করে বা ইউএসবি স্টিকে করে দিয়ে আসলেই হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

মকসুদ বনাম মেজবাহ দ্বন্দ্ব

-টা বুঝলাম না! মকসুদ এবং মেজবাহ কারা? এদের সঙ্গে চৌর্যবৃত্তি বিতর্কের সম্পর্ক কোথায়?

Chicago Journals নামে তো কোন জার্নাল খুঁজে পেলাম না। তবে দেখতে পাচ্ছি, Critical Inquiry নামের জার্নালে মিশেল ফুকোর [i]The Subject and Power প্রকাশিত হয়েছিল। যুগান্তর পত্রিকাও ঠিকমত সাইটেশন দিতে পারেনি!

বেসরকারী টিভিতে পূর্ণকালীন চাকুরিরত থেকে সামিয়া রহমান গবেষণা এবং প্রবন্ধ লেখার সময় পান কখন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (অনুমান করে নিচ্ছি পূর্ণকালীন) চাকুরিতেই বা তিনি বহাল থাকেন কিভাবে?

Emran

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ে পড়া কোন বন্ধু/পাঠক/ব্লগারের মনে কষ্ট দিতে চাইছি না, তবে এসব জার্নাল সম্পর্কে যেটা শুনেছি তার সারমর্ম হল:
এসব জার্নালে লেখা ছাপাবার প্রধান শর্ত হল লেখককে (অথবা বেশিরভাগ লেখকদের) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হতে হয় (!), লেখার রিভিউয়ার এডিটর হন কলিগ যার সাথে হয়ত সকালে চা খেতে খেতে আলাপ হয়, লেখক জানেন রিভিউ কে কে করছেন। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা হল: এসব জার্নালের মূল ব্যব‌হার জ্ঞান স‌হভাগ নয়, বরং একে প্রোমোশনের জন্য শর্ত (এতগুলো নিবন্ধ প্রকাশিত হতে হবে) পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যব‌হার করা।

বলা বাহুল্য, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িনি, কিন্তু এই কথাগুলো আমাকে দুঃখিতই করেছে। দেশের কোন কিছু কালিমালিপ্ত হোক -সেটা আমি কখনই চাইনি।

শুভেচ্ছা হাসি

হাসিব এর ছবি

সবাই নিজ নিজ ইউনির জার্নালে ছাপানোর একটা প্রবণতা আছে। এটা নিয়ম না মনে হয়। চল বলা যেতে পারে।

তিথীডোর এর ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি মেধাবী (ডিনস এওয়ার্ড পাওয়া) এবং অতি বিখ্যাত (টিভি চ্যানেল/নিউজপেপার/ফেসবুকের বরাতে) একজন ছাত্রী বর্তমানে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তিনি দীর্ঘদিন বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় তার দেওয়া/নেওয়া সাক্ষাৎকারগুলোকে রিসার্চ পাবলিকেশন্স ক্যাটাগরির আওতায় ঐ ইউনির ফ্যাকাল্টি সাইটের প্রোফাইলপেইজে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।
এই হলো গো+ এষণার অবস্থা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবাদে দেখেছি- থিসিস বা গবেষণাপত্র লিখিয়ে দেয়ার কাজ নিয়ে থাকেন শিক্ষকেরা। সাধারনত, ছাত্রদের বা অন্যের দ্বারা এসব লিখিয়ে নেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।