দৈনিক প্রথম আলোর ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় সম্পাদক মতিউর রহমান লিখেছেন "প্রথম আলো সাহসের ১৯ বছর" সেখানে প্রথম আলোর ১৯ বছরের চেয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস নিয়েই তিনি আলোচনা করেছেন। ১৯৬২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ইতিহাস তুলে ধরেছেন। প্রথম আমলে তিনি নিজে ছিলেন ছাত্র রাজনীতির অংশ, বর্তমানে সম্পাদক রাজনীতির। সেই অভিজ্ঞতাই লিখেছেন। পড়ছিলাম লেখাটা। এক পর্যায়ে এসে চমকে গেলাম। তিনি লিখেছেন
এত দিন পর অর্থাৎ ২৭ বছর পরও আবার নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ২০১৪ সালে একতরফা সাধারণ নির্বাচনও আমাদের দেখতে হয়েছে। আগামী সাধারণ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। অপহরণ, গুম ও রাজনৈতিক হত্যা থামছে না। ফলে আমাদের মনে পড়ছে বাষট্টির সেই আন্দোলনের দাবিগুলোর কথা। মনে পড়ে যাচ্ছে, উনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের সময়ের কথা এবং নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষার কথা। সেই সময়ের স্লোগান আর দাবিগুলোর প্রাসঙ্গিকতা এই সময়েও যেন বারবার ফিরে ফিরে আসছে।
অর্থাৎ বর্তমান সময়কে তিনি ৬২ থেকে ৬৯ এর পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করছেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগের শাসন আমলকে তিনি তুলনা করছেন আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের সঙ্গে।
কোনো এক ঈদের পর নিশ্চয়ই ৬৯ এর মতো গণ অভ্যুত্থানেরও ডাক দেবেন!
কিন্তু এই একই প্রথম আলো যেখানে প্রথম পাতায় ১৯৬২ থেকে ২০১৭ সালের বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিশদ আলোচনা ফাঁদে, সেই প্রথম আলোই দু'পাতা পরে যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী আবদুর রহমান বিশ্বাসের মৃত্যু সংবাদ ছাপে ছবিসহ, সেখানে তার পরিচয় লেখে 'সাবেক রাষ্ট্রপতি'। এবং ১৯২৬ সালে জন্মের পর থেকে স্কুল কলেজ জীবন, পড়ালেখা, আইন পেশায় যোগদানের কথা লেখা হয় সেখানে। সেই ১৯৬২ সালেই যে আব্দু বিশ্বাস পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলো সেকথাও লিখতে ভুল হয় না প্রথম আলোর। কিন্তু ৬৫ সালের পর থেকে পরবর্তী ১০ বছরের ইতিহাস বেমালুম ভুলে যায় বা চেপে যায়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হয়ে দালালী করা আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে প্রথম আলো ভুলে যায়। সেই বিস্মৃতির পর আবার তার ইতিহাস শুরু হয় ১৯৭৪ সাল থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়া পর্যন্ত!
আবার প্রথম আলোরই অনলাইন সংস্করণে লেখে “মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি স্বাধীনতার বিরোধী ছিলেন। তাঁর আনুগত্য ছিল পাকিস্তান সরকারের প্রতি।” [স্ক্রিনশট ১]
ছাপা সংস্করণে এই স্বাধীনতা বিরোধীতার কথা তারা বেমালুম চেপে যায়। [স্ক্রিনশট ২, স্ক্রিনশট ৩]
একই ব্যক্তির পরিচয় ছাপা হরফে আর অনলাইনে ভিন্নরকম কেন? কেন এই বিভ্রান্তি? অনলাইনের নিউজটা কদিন পরেই এডিট করে ফেলা যাবে বা ডিলিট করে দেওয়া যাবে বলে? ইতিহাস মুছে ফেলা যাবে বলে?
প্রথম আলোরই হিসেব মোতাবেক প্রতিদিন প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণের ৫৩ লাখ পাঠক, বিশ্বের ২০০টির অধিক দেশ ও অঞ্চলের বাংলাভাষী ১২ লাখ পাঠক এবং ফেসবুক পেইজের ১ কোটি ৩০ লাখ অনুসারীর কাছে এরকম বিভ্রান্ত ও মনগড়া ইতিহাস তুলে ধরছে প্রথম আলো। প্রথম আলোর ১৯ বছর পূর্তিতে তাই ফূর্তি হয়না একটুও।
প্রথম আলো তাদের এবারের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর স্লোগান ধরেছে সাহসী ১৯ বছর। কিন্তু একজন স্বাধীনতাবিরোধীকে স্পষ্ট করে স্বাধীনতাবিরোধী বলবার সাহস তারা এই ১৯ বছরেও অর্জন করতে পারেনি।
যুদ্ধাপরাধীকে স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধী বলতে পারবে, রাজাকারকে রাজাকার বলতে পারবে এরকম সাহসী পত্রিকা এখন আমাদের খুব দরকার।
মন্তব্য
ঊনসত্তরে এক কিশোর মতিউরের শাহাদাতের বিনিময়ে আমরা আইয়ুবশাহী থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম। দুই হাজার সতারো সালে এক প্রৌড় মতিউরের শাহাদাতের বিনিময়ে যদি আমরা বাকশালশাহী থেকে নাজাত লাভ করতে পারি, খারাপ কি?
আমি শ্রদ্ধেয় মতিউর রহমানের প্রতি আহবান জানাই, আপনি ও আপনার স্বাস্থবান পুত্র সাশা ভাই খালি গায়ে বুকে পিঠে "বাকশাল নিপাত যাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক" লিখে রাস্তায় মিছিল করুন। যদি পুলিশ আপনাদের গুলি করে, গুলি খান। শহীদ হন। আপনাদের আত্তত্যাগ বৃথা যাবে না। দেরী করবেন না মতিউর সাহেব।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এখন এই মুহুর্তে বাংলা ভাষায় সবচাইতে বড় অনলাইন ঠেকের নাম বাঁশেরকেল্লা। আলু পেপার সবচাইতে বেশি পাঠক নিয়ে ব্যবসা করলেও করতে পারে। এগুলোর কোনটাই এদের পাপস্খলনে সাহায্য করবে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মনে করিয়ে দিচ্ছি, ইতোমধ্যে এরা মিলেনিয়াম সাহসির স্বীকৃতি পেয়েছেন। এখন সাহস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এখন আর কেউ উটপাখির মত মাথা গুঁজে না, পারলে সাহসিকতার সাথে শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করে দেখিয়ে দেয়। অপরাধীকে চেলিব্রেটিতে উন্নীত করছে জীবন্ত শহীদ মতিউরদের দলটি। নুর হুসেন সাহেবদের নিকট একটা সংবাদ ইভেন্ট।
আবদুর রহমান বিশ্বাসের রাজাকারি ইতিহাসের গু মতি ভাই বালু চাপা দিতেছেন কেন? বিশ্বাস রাজাকার কি ওনার বাপ না দুলাভাই?
এত সিপিবি এত মতি এত সোহরাব আলোপাড়ায়, সবতে মিল্লা শান্তি কমিটির চেরমেনের লেংটা পাছা গামছা দিয়ে ঢাকে কেন?
এখন আর কে রাজাকার আর কেইবা মুক্তিযুদ্দ? আর বিশ্বাস সাহেব মতি ভাইয়ের বাপ দুলাভাইয়ের চেয়েও বেশি হতে পারে।
ওই পাড়ার লোকেরা নিজেরাও গামছা পরে আলুখেতে বেগুন পাড়ছেন। আজও অই চেরমেন থাকলে উনারা তাঁর পাকনা চুল বাইচ্ছা দিতেন।
রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে কথিত সংবাদপত্র জগতটাই ভিত্তিহীন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এটি সাবান-শ্যাম্পু ঝালমুড়ি কোমল পানীয়র মত নিছক একটা প্রোডাক্ট। খেয়াল করলে দেখা যাবে, বেশিরভাগ পত্রিকা কোন না কোন গ্রুপ-কুম্পানির অধীনস্থ এবং কুম্পানিগুলু নিজেদের কুকর্ম আড়াল করতে মিডিয়া- প্রোডাক্ট উৎপাদন করছে; যেমন;-কালের কণ্ঠ। পত্রিকার বিশেষ সুযোগ ব্যবহার করছে। প্রথম আলো পত্রিকাও গ্রুপের একটি কাগুজে পণ্য। এখন, মতিউর রহমান তো হয়েছেনই, সংবাদ- মিডিয়ার সাথে জড়িত সকলেই একেকটি পণ্য।
সাহসি লেখাটির জন্য অতিথি লেখককে স্বাগত জানাই। আপনার সাথে একমত যে, দায়িত্বশীল পদে থেকেও কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা যেমন মানায় না তেমনি সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্রটির তথ্যবিভ্রান্তিও আশংকাজনক। প্রতি বছর হার্টথ্রবিং মাইন্ডব্লুয়িং শ্লোগান নিয়ে আসে প্রথম আলো। এবারের সাহস ১৯এর মর্মার্থ বুঝাও সহজ। মোটকথা, পত্রপণ্যটির বাজার সম্প্রসারনে একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসাবে প্রিয় মতিউর রহমান সাহেব সফল ব্যবসায়ীর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুন। শুধু উনি নন এই জগতের সকলেরই একই অবস্থা (দেশের কোথাও কেউ থেকে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থনা পূর্বক)। যেমনঃ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি করে পরেরদিন সাংবাদিকরা নিজেদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির আন্দোলনে অনশনের হুমকি দেন।
ফলে,স্পষ্ট যে, সরকার ও প্রশাসনে সংবাদ জগত এবং এসবের কর্মীদের কোন গুরুত্ত্ব নেই।
এক আরতিসান গুচ্ছ- বোমায় অনেক পাখি মরেছে। প্রথম আলো ডেইলি স্টার ট্রান্সকম পাখিগুলু অন্যতম। গুলশানের হলি আরতিসান আজ একটি কাহিনি
প্রথম আলো 'যুদ্ধাপরাধী'কে স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধী বলতে পারে না, 'রাজাকার'কে রাজাকার বলতে পারে না স্পষ্টভাবে, 'মৌলবাদকে মৌলবাদ বলতে পারে না স্পষ্টভাবে। শুধু ছাত্রলীগের কোনো একটা ক্ষুদ্রতম ইউনিটের কর্মীও যদি কোনো অপকর্ম করে ফেলে তবে তাকে নিয়ে এমনভাবে রিপোর্ট করতে পারে যেন মনে হয় সে ছাত্রলীগের বিরাট কোনো নেতা!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন