রাত্রকালে খাবারের পরে
পাতে দুই হাতা আইসক্রিম নিরখিয়া বুঝিনু বসন্ত
নজদিক।
মাঘের দুবলা জারে জারেজার হয়ে যবে সকালে খন্তার ঘায়ে প্রস্ফুটিত আঁবখানি 'পরে
কুসুমগরম এক পুল্টিশ ধরে
নকশী খেতার নিচে গুটিশুটি সান্ধায়েছি যেই
হোসনে আরা এক ঠ্যাং অধমের কোমরে তুলিয়া নাচাইয়া বলে, খেলা-জান
একখানি গল্প বল শুনি।
পেশাদার কবি আমি, পলকে তখনই
লইনু বুঝিয়া ঠিক কী চায় এই জাহেল রমণী
সকালে খন্তার পরে সন্ধায় আইসক্রিম আর নিশীথে গল্পের আবদার
ইজিকল্টু কি বা হবে আর?
অতএব পূর্বে যত রাগের হিস্টুরি আর পূর্বরাগ ত্যাজি
সটান চলিয়া যাই অকুস্থলে
আর তখনই হোসনে পানে আড়চোখে চাহি দেখি
মিটিমিটি কুটিল হাসিতে বিবি আহ্লাদে আটখানা
ধস্তাধস্তি কত করি
হাতে দাঁতে শাঁখের করাতে
কিছুতে খুলে না তার সেলোয়ারে আমলাতন্ত্রের মত জটিল গিটটু
একমাথা ধরিয়া টানিলে তাহা অন্য প্রান্তে আঁট হয়ে বসে
একখানি ফিতা লয়ে এরুপ জটিল পেঁচ কিরুপে সম্ভব?
যত চেষ্টা করি
যত ভাবি ক্লাস টেনে শ্রমের মর্যাদা আর অধ্যবসায় কত ঠাসিয়া মুখস্থ ছিল
কিন্তু
প্রিটেস্টে আসিল পাট, টেস্টে ছিল বর্ষণমুখর দিনের স্মৃতি।
অবশেষে হার মানি সেই কালান্তক ফস্কা আঁটুনি বজ্র গেরোর নিকটে।
অভিশপ্ত হোসনে আরা ডাকিনীর মত
অট্টহাস্যে বলে, ইহা গার্লস গাইডের গিট্টু
লেডি বাডেন-পাওয়েলের আপন ফরমুলা
লোকে বলে সে রহস্য নোটবুকে লয়ে লেডি গেছেন কব্বরে
বাডেন পাওয়েলও শত চেষ্টা করেছেন কিন্তু লাভ হয়নিকো।
গার্লস গাইড ছাড়া এই গিট্টু খুলিবার সাধ্য আছে নাকি কারও? উহু।
এই বলে চক্ষু রাঙাইয়া, বলে বিবি সকালের জের ধরে,
আর কোনদিন বলবা, যারা শুধু হুমায়ূন পড়ে তারা মগা?
যাও তবে আইন আপন হাতে লয়ে
পড় গিয়া তোমার ঐ হারকেজ মারকেজ।
যেই না আমি বিকল্পের চেষ্টা করি
অমনি হোসনে আরা
মহিলা মাসুদ রানা হয়ে তার বালিশের নিচ হতে
হোলস্টারে আবৃত খন্তাখানি হাতে লয়ে বলে, নড়েচ কি মরেচ
তারপর পাশ ফিরে বয়লারি শিসে নাক ডাকাইয়া দেয় ঘুম।
উন্নত সাহিত্যরুচি কানে কানে বলে মোরে
কবি খেলায়েত খান, আমারই কারণে আজ ইউ আর ডুমড।
===========================
নামঃ খেলায়েত
পেশাঃ কবি
মন্তব্য
কবিতার নাম দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম হোসনে বিবির লাত্থিগুতা খাইয়াও পেশাদার কবি খেলায়েত খাঁ মরে নাই! অয়েল্কাম্বেক!!
আচ্ছা, খেলায়েত খাঁর বাড়িতে কি ছুরি-কাঁচি কিছু নাই? এইসব গার্লস গাইড/রেঞ্জার/ব্লুবার্ড/হলদে পাখির নাম ভাঙিয়ে লাগানো গিট্টু এক ঝটকায় কুচ্ করে কেটে এক মহাকাব্য শুরু করা কি খুব কঠিন কাজ? আর খন্তার বাড়ি তো নির্বন্ধ, তার ভয়ে উন্নত সাহিত্যরুচিকে দোষ না দিয়ে উন্নত অন্য কিছুতে মনোযোগ দিলেই তো হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ পাণ্ডব মশায়।
আপনের প্রশ্নের উত্তর আলোচ্য কবিতাটির হাতে দাঁতে শাঁখের করাতে এবং যেই না আমি বিকল্পের চেষ্টা করি পঙ্কতি দুটিতে আংশিক আছে। তবে মনে রাখবেন, প্রানপ্রিয়া পত্নীর উক্তি, যুক্তি ও ফিতা, সর্বদা অকাট্য। এন্টিকাটার দিয়ে সোহাগ হয় না। কেচি দিয়ে প্রেম হয় না। ছুরি দিয়ে সংসার হয় না। আপনের দেশের বাড়ি হোসনে আরার অঞ্চলে নাকি?
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ। এখন অনেক কিছুই দিবালোকের মতো পরিষ্কার হলো।
একটা বিষয়ে কিঞ্চিত দ্বিমত করি - প্রাণপ্রিয়া পত্মীর সকল কিছু অকাট্য নয়। তার কিছু কিছু জিনিস আপনি কাটেন সেটা তিনিও চান। ঐ উপদেশটি শোনেননি যেখানে শেষে বলা হয়েছে, যদি সে 'হ্যাঁ' বলে তবে সে নারীই না! প্রেম-সোহাগ-সংসারে এন্টিকাটার-কাঁচি-ছুরি ইত্যাদির ব্যাপক ভূমিকা আছে। এগুলো কেবল যুদ্ধাস্ত্র নয়, এদের বহুবিধ ব্যবহার আছে।
আপনি শেষে এই বুঝলেন! আমার বাড়ি হোসনে আরার অঞ্চলে! জলদি হোসনে বিবির মোবাইল নাম্বার দেন, এর একটা হেস্তনেস্ত করি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইউ আর ডুমড!
facebook
ধন্যবাদ তারেক।
খেলায়েত খাঁ সাহেব, এক কাজ করেন। অতি দ্রুত একখানা পাতলা মোলায়েম শিফন কিংবা কাতান কিংবা জর্জেট শাড়ি কিনে এনে হোসনে আরা ম্যাডামকে উপহার স্বরূপ নিজ হাতে পড়ায়ে দেন। আশা করা যায় খোলার সমস্যা যদিও বা হয়, তোলার সমস্যা হইবে না নিশ্চয়।
ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ আম সাহেব। হোসনে বিবি প্রায়ই বলে আমার সিরিয়াস কবিতাগুলি পরা যায় কিন্তু পড়া যায় না। শাড়ি তাকে পড়াইতে গেলে সে কি বলে আর কি করে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। আপনার চিন্তার ধারা আমার ভাল লেগেছে। আপনিও কি পেশাদার কবি? আমার বই দুই কপি কিনবেন প্লিজ।
আপনার কবিতা যেহেতু পরেন, আপনার শাড়িও নিশ্চয়ই পড়বেন, প্রেমের উপহার বলে কথা। আমি আপনার কবিতার গুণ মুগ্ধ পাঠক, সুতরাং বই নিশ্চয় কিনবো।
অসাধারণ ভাই। মজা পেলাম।
ধন্যবাদ।
পাণ্ডবদা আপনি জুলুমের শিকার কবিকে খালি কুবুদ্ধি দেন। কাঁচি ছুরি ব্যবহার করিতে যাইয়া শেষে যদি কোনো অঘটন ঘটে তখন তো আপনাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।হোলস্টার ত্যাগী খন্তা আর কখনোই হোলস্টারে ঢুকিবে না।:(
নিহন, অঘটন তো একবার ঘটেছিলই। কবির তবিল-মবিল সব যেতে বসেছিল। আর খন্তাটা মনে হয় কেবল ঘুমানোর সময় হোলস্টারে ঢোকে, বাকি সময় বাইরেই থাকে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বলেন কি!!! কবিবর সম্পর্কে এতবড় অপবাদ দিলেন?!! চিত্রটা কল্পনা করেছেন একবার??? সারা দুনিয়ার মানুষের খন্তা যখন হোলস্টারবদ্ধ থাকে, উই তখন সেটা বাইরে ঝুলিয়ে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ান??? কন কি আপনি!!!
****************************************
আপনাকে পড়তে বসাতে হবে দেখছি। কবি'র আগের সব কবিতা আরেকবার পড়ে আসেন। তাহলে বুঝবেন 'খন্তা' বলতে আপনি যা বুঝছেন এটা তা নয়। এই খন্তার মালিক বিবি হোসনে আরা। এটা দিয়ে তিনি সকালে তেলছাড়া পরোটার নামে রুটি সেঁকেন, ডিম্পোচ রাঁধেন। পেশাদার কবি'র কোন চাল তার কাছে বেচাল মনে হলে খন্তাটি সজোরে, প্রবল বেগে কবি'র মাথার তালুতে নামিয়ে আনেন। এই জন্যই কবি বলেছেন,
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ওহহো, সরি, শেষের প্যারাটা মিস করে গেছিলাম!
****************************************
জোয়ানকালে বয়স্কাউটিং-রোভারস্কাউটিং করেন নি বুঝি?
ইউ আর ডুমড, ইনডিড! খেলায়েতের খেলা চলুক!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কবি খেলায়েতই কি ছদ্মবেশী মহামতি মৃগেল? প্রতি প্রত্যুষে খুন্ততাঘাতে মৃগেল হয়েই কি তার এই দশা?
পুনশ্চঃ খেলায়েত সাহেব বোধকরি সম্পাদনা করতে পারবেন না। কোন সহৃদয় মডু কি কবির অনুমতি ক্রমে ছবিটি মূল পোস্টে জুড়ে দিতে পারেন? বেশ হয়!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার মাথায় হঠাৎ একটা দুষ্ট সন্দেহ জেগেছে!!!
আচ্ছা, ছদ্মবেশী কবি খেলায়েত খান আসলে আমাদের দেশের অত্যন্ত রাশভারি, বজ্রনির্ঘোষ কণ্ঠ ও কঠোর-দূর্ভেদ্য ব্যক্তিত্ত্বের অধিকারী পরিচিত কোনো প্রৌঢ়/বৃদ্ধ ব্যক্তিত্ব না তো??? এমন কেউ, যার বাইরের দিকে প্রচণ্ড বেরসিক, বজ্রকঠিন, ভীতিপ্রদ ব্যক্তিত্ব অথচ ভিতরে আছড়ে পড়ছে রসের নায়াগ্রা-প্রপাত??!! আর এই রস বাইরে বেরিয়ে আসার জন্য প্রচণ্ড আঁকুপাঁকু করে অথচ কিছুতেই ঐ বুড়ো মিলিটারি-জমিদারি ব্যক্তিত্বের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে না - কারন তিনি কি পারিবারিক পরিমণ্ডলে, কি বৃহত্তর সমাজে একদম অন্যভাবে পরিচিত। শেষমেশ আর কোনো পথ না পেয়ে এই পরিচিত দূর্ভেদ্য-ব্যক্তিত্বের অধিকারী বুড়ো ব্যক্তিত্ত্ব পরিচয় ভাঁড়িয়ে ছদ্মনামে সচলায়তনে এসে এইসব আদি-ও-রম্যরসাত্নক কবিতা লেখা শুরু করেছেন এবং চুপেচাপে নিজের রসপূর্ণ সৃষ্টিশীল হৃদয়ের কুরকুরানি নিবারণ করার চেষ্টা করছেন??
একবার কল্পনা করুন, হঠাৎ আপনি আবিষ্কার করলেন আপনি দেখতে পাচ্ছেন -- ডাকসাঁইটে কট্টর ব্যক্তিত্ত্বের অধিকারী জমিদারবেশী চলচ্চিত্রাভিনেতা খলিলের মতো বা কোনো উত্তেজিত রাজনৈতিক টক-শোতে কমিউনিস্ট পার্টির মইনুদ্দিন খান বাদলের মতো মুখ ও কণ্ঠসম্পন্ন কেউ আসলে আমাদের এই ছদ্মবেশী কবি খেলায়েত খাঁ এবং তিনি স্বরচিত এই কবিতাগুলি সচলে পোস্ট করার আগে বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আবৃতি করে ঝালিয়ে নিচ্ছেন খলিল বা বাদলের মতো ভঙ্গিতেই। কি প্রতিক্রিয়া হবে আপনার?
****************************************
আয়নার সামনের যে ছবিটা দিলাম, সেটা একবার চোখ বুঁজে মনে মনে ঠিক্করে ভাবুন, তারপর বলুন এইরকম খেলায়েত খাঁ-কে কেমন লাগে আপনার।
****************************************
হা হা হা....
****************************************
সন্দেহটাকে আর বাড়তে না দিয়ে খেলায়েত খাঁকে 'বাস্তব' বলে মেনে নিন। ভূত যেমন বাস্তব, খেলায়েত খাঁও তেমন বাস্তব।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি ওনার বাস্তবতা অস্বীকার করিনি। আমি বলতে চাইছি উনি হয়তো ডুয়াল-পার্সোনালিটির লোক। অনেকটা ডক্টর জেকিল ও মিস্টার হাইডের মতো। অফলাইন বাস্তবতায় উনি হয়তো সমাজে প্রতিষ্ঠিত রাশভারি বুড়ো ডঃ জেকিল আর অনলাইন ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ছলাকলাময় জগতে দুষ্টুরসিক তরুন কবি মিঃ হাইড ওরফে আমাদের পরিচিত কবি খেলায়েৎ খাঁ!! কট্টর বূড়োদের মনেও অনেক রসের ফল্গুধারা লুকিয়ে থাকে, কিন্তু সামাজিক বাস্তবতার কারনে তা সবসময় প্রকাশের পথ খুঁজে পায় না - ম্মনের মধ্যেই থেকে যায়। কিন্তু এই সাইবার এননিমিটির যুগ তাদেরকেও মুক্তির পথ দেখিয়েছে। আমি তাই শুধু বসে বসে কল্পনা করছিলাম আর দারুন মজা পাচ্ছিলাম এবং গুড়গুড়িয়ে হাসছিলাম এই ভেবে যে, এখন যদি অনলাইনের মিস্টার হাইডের আসল পরিচয় যদি অফলাইনে ড: জেকিলের জগতে প্রকাশ পেয়ে যায়, তার কলিগ বা বিজনেস পার্টনাররা জেনে ফেলেন, বিশেষ করে কবিপত্নী বিবি হোসনে আরা আর শ্যালিকারা জেনে ফেলেন - তাহলে আমাদের প্রিয় কবি খেলায়েৎ খাঁর কি অবস্থা হবে?? সেই সম্ভাব্য দুর্যোগময় পরিস্থিতিটা নিয়েও কিন্তু একটা কবিতা লিখতে পারেন কবি খেলায়েত!
****************************************
আপনার কল্পনা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে জানবেন বাস্তবের হোসনে বিবি সচলায়তনে খেলায়েত খাঁর পদচারণার খবর ঠিকই রাখেন। এই সুবাদে দুয়েকটা খুন্তাঘাত বাড়ে নাকি আদরের পুরস্কার বাড়ে সেটা জানতে হলে খেলায়েত খাঁর 'কাব্যে-জবাব' -এর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সে তো হতেই পারে! কিন্তু সেটা হবে নেহাতই বেরসিক বাস্তবতা!! কিন্তু আমি সৃষ্টিশীল কবির সৃষ্টিশীল ফ্যান। আমি তাই নিরস বাস্তবের একটা সৃষ্টিশীল কল্পবাস্তব ইন্টারপ্রিটিশন দিয়েছি এখানে। এখন কবি খেলায়েত খাঁর 'কাব্যে-জবাব' -এর অপেক্ষায় থাকলাম।
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন