সাহস

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৫/০১/২০২০ - ১২:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দুবাই এয়ারপোর্টে সময় কাটানো তেমন কোন কঠিন ব্যাপার না, কিন্তু রফিকের ব্যাপার আলাদা। সুদৃশ্য দোকান গুলোয় ঢুঁ মারার ইচ্ছে তার কখনোই হয়না। চারপাশে দেশবিদেশের নানা রকম মানুষের শশব্যস্ত দৌড়াদৌড়ি দেখেও অনেকের বেশ সময় কেটে যায়, রফিকের সেটাও ভাল লাগেনা। কোন লাউঞ্জে বসে রাজকীয় ডিনার কিংবা স্টারবাকসে বসে কফি খাওয়াতেও কোন আগ্রহ পায়না, একটা সময়ে বুকশপে বই হাতাতে মন্দ লাগত না, আজকাল সেটাও ভাল লাগেনা। বুড়ো হয়ে যাচ্ছে মনে হয়!

এ কারনেই রফিক যেকোনভাবেই ট্রানজিট টাইম কম রাখার চেষ্টা করে। উদ্ভট টাইমে ছাড়া বা পৌঁছুনোতে আপত্তি নেই, দরকার হলে টাকা বেশি খরচ করে অন্য এয়ারলাইন্স নেবে, কিন্ত এয়ারপোর্টে যেন বেশিক্ষন বসতে না হয়। কিন্তু এবার আর কোনভাবেই ছয় ঘন্টার ট্রানজিট এড়ানো গেলনা। শেষের এক ঘন্টা নাহয় কিছু খেয়ে আর সিকিউরিটি চেক দিয়ে পার করা যাবে কিন্ত বাকি পাঁচ ঘন্টা কিভাবে যাবে সেটা চিন্তা করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল রফিক।

টার্মিনালের মাঝামাঝি ওয়েটিং চেয়ারগুলোর একটাতে বসে দুপাশে তাকিয়ে যখন দেখল প্রায় সব চেয়ারই খালি, ভাবল যে সটান শুয়েই পড়বে নাকি। কিন্তু কেমন যেন লজ্জা লাগল, সে প্রচুর বিদেশিকে দেখেছে এয়ারপোর্টে ব্যাগকে বালিশ বানিয়ে দিব্যি ঘুম দিতে,কিন্তু এ জিনিস তার কম্মো নয়। তাহলে উপায়? চট করে মনে পড়ল যে একেবারে কিছু না করে সময় কাটানোর চেষ্টা করলে কেমন হয়? কোথায় যেন পড়েছিল যে মানুষের মাঝে মাঝে একেবারে কিছু না করে কিছু সময় কাটানো উচিত, এতে নাকি বিরাট ফায়দা। এম্নিতে সেটা করার সুযোগ তো আসেনা, আজকেই ব্যাপারটা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। ওকে, তাহলে শুরু হোক...ওয়ান, টু, থ্রি, স্টার্ট!

ব্যাপারটা যত সহজ মনে হয়েছিল, তত সহজ নয়। খানিক পরেই চুলবুল করতে থাকে কিছু একটা করার জন্যে। সারা জীবন ভাবত যে কিছু না করে স্রেফ বসে বসে কাটিয়ে দিতে পারলে দারুন হত, এখন তো দেখি দশ মিনিট কাটানোই দায়। কি একটা বিপদ!

"এই রফিক না, তুমি এখানে, কি আজব, আছ কেমন?"

এই দূরদেশে নারীকন্ঠে নিজের নাম শুনে আঁতকে ওঠে রফিক, ভুল শুনছে না তো? চোখ মেলে যাকে দেখল, সেকেন্ড পাঁচেক লেগে গেলেও চিনতে সমস্যা হল না। না চিনতে পারার প্রশ্নই আসেনা আসলে।

" কি মুশকিল, চিনতে পারলে না নাকি? আরে আমি শিপ্রা "।

" কি যে বল, চিনব না কেন? হঠাৎ এখানে তোমাকে দেখব সেটা তো আর আশা করিনি, তাই একটু হকচকিয়ে গিয়েছিলাম আর কি। আমার চলে যাচ্ছে কোন রকম। তোমার কি খবর তাই বল।"- নিজেকে সামলে নিয়ে রফিক বলে।

" এইতো পি এইচ ডি শেষ হল ছ'মাস আগে। এখন একটা বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে জব করছি চার মাস হল। আমি সাউথ ক্যারোলিনায়, আমাদের প্রচুর পোলাপান ওদিকে। তুমি কোথায়? তোমার সাথে তো কারোরই যোগাযোগ নেই মনে হয়, অনেক কে জিজ্ঞেস করেছি তোমার কথা কেউই ভাল মত বলতে পারেনি। আমাদের সবাই তো ইউ এস এ, নাহলে কানাডায় আছে। তুমিই খালি কোন এক আজিব দেশে গেছ। কোথায় জানি? কনক একবার বোধহয় বলেছিল, এখন মনে পড়ছে না।"- একটানে বলে যায় শিপ্রা।

প্রায় এক দশক আগে ডিসেম্বরের এক শীতের সকালে বুয়েট অডিটোরিয়ামের পাশের দেয়ালে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেখার দিনটা মনে পড়ে যায়। ওর মেরিট পজিশন আগের দিন রাতেই ওর কলেজের বন্ধু মুনিরের কাছে শুনেছিল, তবু নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিল না, তাছাড়া রেজাল্ট ভাল হয়েছে, তাই বারবার দেখতেই ইচ্ছে করে! বাবা বেজায় খুশি, কাল রাত থেকে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় ফোন করে খবর দিয়েই চলেছে।

নিজের পজিশনটা চোদ্দতম বারের মত দেখা শেষ করে ভাবল যে আশেপাশের পজিশনে কোন মেয়ে আছে কিনা সেটা দেখা যাক। তাহলে এক সাথে প্র‍্যাক্টিকাল বা বিভিন্ন গ্রুপ এক্টিভিটি তে এক সাথে পড়ার চান্স থাকে বলে বড় ভাইদের কাছে শুনেছে। সারা জীবন ছেলেদের সাথে পড়াশোনা করে এসেছে, এই প্রথম মেয়েদের সাথে মেশার সুযোগ হবে ভেবে সে সেই টেস্টের সময় থেকেই রোমাঞ্চিত। নাটক বা উপন্যাসে যেমন মনে হয় যে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে প্রেমের আখড়া, অতটা রঙিন না হলেও সেটা নটরডেম কলেজের মত একেবারে সাদাকালো হবেনা!

তার ঠিক পরের পজিশনেই একটা মেয়ের নাম দেখে সে খুশি হয়েও পুরোপুরি হতে পারল না। শিপ্রা চক্রবর্তীর সাথে বড়জোর বন্ধুত্ব হতে পারে, এর বেশি কিছুর আশা নেই। যাক গে, ক্যাম্পাসে আরো তো মেয়ে থাকবে, সেখানে লাইন মারতে হবে।

কিন্তু ক্লাস যখন শুরু হল আর শিপ্রার সাথে সামনাসামনি কথা হল, সব গোলমাল হয়ে গেল। নাহ, মেয়েটা যাকে বলে ডানাকাটা পরী তা না, কিন্তু অদ্ভুত রকমের একটা মুগ্ধতা ছড়াতে পারে। রিনরিনে গলার স্বর, মুক্তোর মত হাসি, সেই হাসির সাথে গালে পড়া টোল, সব মিলিয়ে রফিক মোটামুটি আউলে গেল। এরপর আর ক্যাম্পাসের কোন মেয়েকে ভাল লাগবে বলে মনে হল না। সে বুঝতে পারছিল যে কপালে নিশ্চিত খারাবি আছে, কিন্তু তাও সে শিপ্রার ভুত মাথা থেকে নামাতে পারছিল না। এর কোন ভবিষ্যৎ নেই, সবচেয়ে বড় কথা পুরো ব্যাপারটাই একতরফা। শিপ্রাকে দেখে মনে হয়না যে পড়াশোনার বাইরে জগতে আর কিছু নিয়ে তার আগ্রহ আছে। ধর্মের দেয়ালের কারনে তার পেছনে ছেলেদের লাইন তেমন দীর্ঘ নয়, অন্যান্য ইয়ারের দু-চারজন হিন্দু ছেলে হালকা চেষ্টা চালিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছে। শিপ্রার ওঠাবসা বাকি মেয়েদের সাথেই, ছেলেদের সাথে সে এমনিতেও তেমন একটা মেশে না।

একমাত্র ব্যাতিক্রম রফিক, অনেকগুলো প্র‍্যাক্টিকাল আর ভাইভায় ওদের একসাথে কাজ করতে হয়েছে। ব্যাপারটা তার সৌভাগ্য না দূর্ভাগ্য সেটা ঠিক নিশ্চিত না। যতক্ষন শিপ্রার সাথে কথা বলে, সেটা যত খটোমটো বিষয়েই হোক না, কেমন যেন একটা আবেশের মধ্যে সময় পার হয়ে যায়। যত দিন যাচ্ছে, মুগ্ধতা বেড়ে বেড়ে একটা বিপদজনক জায়গায় চলে যাচ্ছে। সেজন্যই মাঝে মাঝে মনে হয়, এই সুযোগটা না থাকলেই ভাল হত। যেচে পড়ে খাতির করার মত স্মার্ট ছেলে রফিক নয়, তাহলে এই ভাল লাগার ব্যাপারটা শুরুতেই খতম হয়ে যেত। এই কুসুম কুসুম প্রেম জাতীয় যন্ত্রনাদায়ক ঝামেলায় পড়া লাগত না।

ফোর্থ ইয়ারের শেষের দিকে কুসুম গরম প্রেম একেবারে ফুটন্ত প্রেমে পরিনত হয়ে গেল, অবশ্য শুধু রফিকের দিক থেকে। শিপ্রাকে কিছু বলার সাহস হয় নি। অনেকবার ভেবেছে যে যা হয় হোক, সে এগোবে। সে নিজে তেমন একটা ধর্মকর্ম করে না, শুক্রবারের জুম্মার নামাজ বাদে। সমস্যা হচ্ছে ওদের পরিবার, বিশেষ করে বাবাকে নিয়ে। উনি বছর দশেক আগে হুট করেই বেশ রক্ষনশীল হয়ে ওঠেন , ঘরের টিভি পর্যন্ত বেচে দিয়েছেন, এ নাকি শয়তানের বাক্স। মাকে বোরখা ধরিয়েছেন, মা আগে পড়তেন না। বোন রাবেয়া অবশ্য বোরখা পড়ত না, কিন্তু দুবছর আগে কোচিং সেন্টারে এক ছেলের সাথে চিরকুট চালাচালির ব্যাপার জানাজানি হবার পর ওর পড়াশোনাই বন্ধ হবার যোগাড় হয়েছিল, পরে মার অনেক অনুরোধে সেটা ঠেকান গেছে।

এরকম একটা পরিবারের কাছে গিয়ে যদি সে বলে যে একটা হিন্দু মেয়েকে পছন্দ করে, বাবা নিশ্চিত ওকে ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বের করে দেবে। একটা পর্যায়ে যেয়ে রফিক সেটাও মেনে নিতে রাজি ছিল। বাপের সাথে তার তেমন বনত না কোনকালেই, বাড়ি থেকে বের করে দিলে মা আর বোনটাকেই যা মিস করতে হবে। দেশের বাইরে গেলে বা নিজের সংসার শুরু করলে সেটা এমনিতেও হয়ত করতে হবে। পাড়ার লোকের কথায় কান ঝালাপালা হবে, বোনটার বিয়েতেও ঝামেলা বাধবে, কিন্তু এত কিছু চিন্তা করলে তো নিজের জীবনটাই বরবাদ হয়ে যাবে। সুতরাং সব সম্পর্ক চুকেবুকে গেলেও ক্ষতি নেই, যদি শিপ্রাকে পাওয়া যায়।

কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে শিপ্রাকে নিয়ে। ও যে রফিককে নিয়ে কি ভাবে সেটা বোঝা মুশকিল। শিপ্রার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী মিলিকে আকারে ইংগিতে রফিক জিজ্ঞেস করেছিল, মিলি বলেছিল যে রফিক কিংবা কোন ছেলেকে নিয়েই শিপ্রার কোন মাথা ব্যাথা নেই, সে নাকি পরিবারের বাধ্য মেয়ে। তাছাড়া শিপ্রার পরিবারও নাকি ভীষণ রক্ষণশীল, ছোঁয়া -ছুঁয়ি, জাত-পাত বেশ কড়া ভাবে মানে। বামুনের ছেলে বাদে অনেক হিন্দু ছেলেই এ মেয়ের পাণিপ্রার্থী হতে পারবে না, রফিক তো দূর অস্ত! তেমন কিছু করলে শিপ্রার মা নাকি ওকে কেটে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে! সব মিলিয়ে সাড়ে চার বছরেও তাই রফিক সোজাসুজি কথাটা শিপ্রাকে বলতে পারেনি। কিছু তো হবেই না, শেষে বন্ধুত্বটুকুও যাবে।

পাস করে বেরুনোর পর অবশ্য বন্ধুত্ব জিনিসটা আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে হল না। শিপ্রা দূরে থাক ওর খুব ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু কনক আর জামিলের সাথেও আর কোন যোগাযোগ রাখেনি সে।অনেকটা স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাওয়ার মত, সবাই যখন আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা জার্মানিতে পড়তে গেছে, সে বেছে নিয়েছে ইটালি যাতে বন্ধুদের সাথে দেখা না হয়। ফেসবুকে নেই, ক্লাসের গ্রুপ মেইলেও সে নেই। ইউনিভার্সিটির সাড়ে চার বছর যেকোন মূল্যে ভুলতে যায় সে, তাও যদি শিপ্রাকে ভোলা যায়।

পি এইচ ডির সোয়া চার বছরে সে একবারও দেশে আসেনি। চাকরিতে ঢোকার পর এইবার শুধু দু সপ্তাহের জন্যে দেশে এসেছে। ঢাকায় বাব-মার সাথে ছিল মাত্র তিনদিন। ক্রমাগত বিয়ে নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করায় এরপর সে পাকশীতে দাদাবাড়ীর গ্রামে চলে গিয়েছিল ।সেখানেই বাকি সময় কাটিয়ে শুধু একদিনের জন্য ঢাকা ফিরে আবার সোজা ফিরে চলেছে মিলানের পথে। বোন বরিশাল মেডিকেলে ইন্টার্নি করছে, ওর সাথে শুধু পাকশী থেকে একবার যেয়ে ঘন্টাখানেকের সংগে দেখা করেছে, সেকারনে বোনেরও তার উপর খুব রাগ। পৃথিবীতে সবারই তার কাছ থেকে এত আশা কেন, কই সে তো কারো কাছে কিছু আর আজকাল আশা করে না?

"হল কি তোমার? কোথায় থাক বললে না তো!" - শিপ্রা ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে।

আবারো সম্বিত ফেরে রফিকের, এই দশ সেকেন্ডে গত দশ বছরের কত স্মৃতিই না হাতড়ে ফেলল।

-"উম, হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি ইটালিতে আছি"
-" এত জায়গা থাকতে ইটালি কেন?"

এর কোন জুতসই উত্তর হয় না, রফিক তাই বোকার মত হাসলো। এরপর অস্বস্তিকর নীরবতা, কিছু একটা বলা দরকার, পাল্টা প্রশ্ন করা দরকার, কিছুই রফিকের মাথায় আসছে না।

হঠাত শিপ্রার পেছন থেকে এক বিশালবপু লোক এসে শিপ্রার কাঁধে হাত রাখল।

শিপ্রা একগাল হেসে পরিচয় করিয়ে দিল -" এ হচ্ছে নাসের, আমার হাসবেন্ড, ইজিপ্টের ছেলে। নাসের, এ হচ্ছে রফিক, আমার ইউনিভার্সিটির বন্ধু"

-" হাল্লো রফিক, আই হার্দ আবাউত য়ু ফ্রম শিব-রা, নাইস টু মিত য়ু"!

মধ্যপ্রাচ্যের অনেকেই প উচ্চারণ করতে পারে না, তাই শিপ্রা হয়ে গেছে শিব-রা। নাসের নামক এই মিশরীয় ভদ্রলোক নিশ্চয়ই বামুনের ছেলে নয়। তার মানে কয়েক বছর আগে আপাত অসম্ভব মনে হওয়া ব্যাপারটা কোন না কোন ভাবে সম্ভব হয়েছে। কিভাবে, কোথায়, কখন সেটা নিশ্চয়ই ইন্টারেস্টিং অথবা ট্র‍্যাজিক একটা কাহিনী, কিন্তু রফিক সেসব শোনার অবস্থায় নেই।

-"তোমার হাতে সময় আছে? চল স্টারবাকসে কফি খাই আর আধা ঘন্টা আড্ডা দেই, কতদিন পর তোমার সাথে দেখা!"- শিপ্রা বলে।

ঘড়ি দেখল রফিক, এখনো পাক্কা সাড়ে পাঁচ ঘন্টা বাকি।

-" আয় হায়, আমার তো ফ্লাইটের সময় হয়ে গেছে, আমি বরং দৌড়াই, পরে কোনদিন হবে নাহয়! "- হড়বড় করে কথাগুলো বলে বিহবল নাসের আর শিপ্রাকে পেছনে রেখে উল্টো দিকে জোরে হাটা দেয় সে।

-" আরে তোমার ফোন নাম্বার বা ইমেইল টা দিয়ে যাও, পরে নক করব"- পেছন থেকে হাঁক দেয় শিপ্রা।

না শোনার ভান করে হাটার গতি আরও বাড়িয়ে প্রায় দৌড়াতে শুরু করে রফিক। দুরে ইলেকট্রনিক ডিসপ্লেতে 'রেড বুল' এর এড দেখা যাচ্ছে। "Red bull gives you wings"! এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে দুটো ডানা হলে মন্দ হতনা, এখান থেকে উড়ে যেতে পারলেই ভাল হত।

-" এই রফিক,শুনছ ,ফোন নাম্বার দিয়ে যাও" - শিপ্রার রিনরিনে কন্ঠ আবার শোনা যায়।

রফিক পেছন ফিরে না তাকিয়ে কেবল এগুতেই থাকে। শিপ্রা কি বুঝতে পারছে যে সে ভাণ করছে? কিছু মনে করবে না তো আবার? পরক্ষণেই মনে হল, করলই বা। রবীন্দ্রনাথ তো বলেছেনই - " এ জগতে কে কাহার?"

"Why should I care"- দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় করে রফিক।

" হোয়াই শুদ আই কেয়ার" - নিজের রসিকতায় নিজেরই ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটে ওঠে রফিকের।

-গগন শিরীষ


মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

ঠিক; সাহস থাকা জরুরি‌। হাসি

গল্প ভালো লেগেছে। পরের গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

গগন শিরীষ এর ছবি

পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এক লহমা! গল্প লেখাটা ব্লগরব্লগরলেখার চেয়ে অনেক কঠিন মনে হয়, সুতরাং পরের গল্প কবে লিখতে পারব আল্লাহ মালুম। দেখা যাক!

শেলক্স এর ছবি

লেখাটা পড়ে আরেকবার নিক-টা দেখলাম, আমার নিজের জীবন থেকে নেওয়া মনে হল দেঁতো হাসি
খুবি সুন্দর লেখা ।

গগন শিরীষ এর ছবি

তাই নাকি? তাহলে তো বেশ একটা মহান সাহিত্য হয়েছে বলা যায়

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনার লেখাগুলো ভালোই লাগে। কালে ভদ্রে আসে যদিও। মাঝে সাঝে লিখুন এরকম আরও কিছু।

শুভেচ্ছা হাসি

গগন শিরীষ এর ছবি

ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ! কি করব বলেন, লেখার খ্যামতা নেই তো, কালেভদ্রেই জোর করে লিখি।

অবনীল এর ছবি

"ভেরি গুদ রাইতিং, কি ইত আপ।" - নাসের

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

গগন শিরীষ এর ছবি

হা হা হা, ধন্যবাদ অবনীল!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।