বিশ্ব এখন আকাশযুদ্ধে চতুর্থ প্রজন্ম পেরিয়ে পঞ্চম প্রজন্মে পা দিয়েছে। আর এজন্য অত্যাধুনিক ফাইটার জেট নির্মাণে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার প্লেন এফ-৩৫ এরই মধ্যে প্রাথমিক ঝুট-ঝামেলা পেরিয়ে পুরোদমে উৎপাদন-ব্যবস্থায় প্রবেশ করেছে। শুধু তাই নয়, তারা প্রয়োজনীয় সংখ্যক এয়ারক্র্যাফটের প্রস্তুতিমূলক অপারেশন সম্পন্ন করে এখন সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহার করার অপেক্ষায় আছে। তাহলে বাকি পরাশক্তিগুলো কি ঘাস কাটছে? ঠিক তা না। চীন বেশ তোড়জোড় করে তাদের নিজস্ব ফিফথ জেনারেশন ফাইটার প্লেন জে-২০ উন্মোচন করেছে, যেটা নিয়ে বাকি বিশ্বে বেশ হাসাহাসি চলছে। আড়ালে-আবডালে একে ‘গরিবের ফিফথ জেনারেশন ফাইটার'-ও বলছে আবার অনেকে। শুধু নিম্নমানের প্রযুক্তিই নয়, এখন পর্যন্ত মাত্র ১-২৪টি এয়ারক্র্যাফটের রণাঙ্গণে নামার অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টিও চীনকে এই সেক্টরে অনেকটাই পিছিয়ে দিচ্ছে। তাহলে কি এফ-৩৫-ই এখন থেকে আকাশপথে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করবে?
এই প্রশ্নের উত্তরটা দিচ্ছে আমেরিকার এক পুরনো শত্রু। রাশিয়া। সেই সোভিয়েত আমল থেকেই তারা এরকম ফাইটার জেটের পরিকল্পনা করে এসেছিল। মূলত রাডারের চোখে ‘অদৃশ্য' হওয়ার ক্ষমতা ছাড়াও ভূমিতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানার বিষয়টি মাথায় রেখেই এ কাজে হাত দেয় তারা। মাঝখানে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রকল্পটি অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে মুখ থুবড়ে পড়ে। বিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে প্রকল্পটি আবার চালু হলেও এত ব্যয়বহুল প্রকল্প একা চালানোর সামর্থ্য রাশিয়ার ছিলো না। তারা ভারতকে প্রকল্পে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানায়। পুরো প্রকল্পের অর্ধেক খরচের ভার ভারত নিজের ঘাড়ে তুলে নিয়ে উপরন্তু ২১৪টি এয়ারক্র্যাফট কেনার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় কাগজ-কলম আর দলিল-দস্তাবেজের রাজ্য থেকে বাস্তবতার আলোয় ওঠে আসে এ প্রজন্মের অন্যতম ভয়ংকর ফাইটার জেট সু-৫৭। কিন্তু পদে পদে বাধার সম্মুখীন হয় এর উন্নয়নকাজ। শেষমেশ ২০১৮ সালে শক্তিশালী ‘স্টেলথ' ফিচার না থাকার অভিযোগে ভারত তার বিলিয়ন ডলারের মূলধন নিয়ে প্রকল্প থেকে সটকে পড়ে। এতে করে রাশিয়া মহাফাঁপরে পড়ে। উপায়ান্তর না দেখে যুদ্ধমঞ্চে নিজেদের চামড়া বাঁচানোর জন্য বিমান-বিধ্বংসী এস-৫০০ ট্যাংকের উৎপাদনে মনোনিবেশ করে। তবে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে এক অনাকাঙ্ক্ষিত মিত্র- খোদ আমেরিকা। কূটনৈতিক ঝামেলায় এফ-৩৫ এর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বের করে দেয় তুরস্ককে। তুরস্কও তখন প্রতিশোধ নিতে রাশিয়ার ‘প্লেনে’ চেপে বসে। ইউরেশিয়ার দেশটির বিনিয়োগের ফলে আবারও গা ঝাড়া দিয়ে উঠে সু-৫৭। আরও বিদেশী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার স্বার্থে সিরিয়া যুদ্ধে তার সক্ষমতাও দেখিয়ে ছাড়ে।
ওদিকে এফ-৩৫ এর উন্নয়ন প্রকল্পের পিছনে ছিলো হরেক রকম এয়ারক্র্যাফটের ঝামেলায় না গিয়ে শুধু এক ধরনের ফাইটার জেট দিয়েই সব কাজ চালানোর এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। কিন্তু এই পরিকল্পনায় বাদ সাধে ইউএস এয়ার ফোর্স। তারা চেয়েছিল আরও ধ্বংসাত্মক ও অগ্রসর প্রযুক্তির এক ফাইটার প্লেন, যা জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে প্রতিপক্ষের নাম-নিশানা মুছে দিতে সক্ষম হবে। এই ভয়ংকর এয়ারক্র্যাফটটির নাম এফ-২২ র্যাপটর। কিন্তু প্রতিটি জেটের পিছনে ১৪০ থেকে ১৮০ মিলিয়ন ডলার খরচের ব্যাপারটি আমেরিকান কংগ্রেসের মোটেও ভালো লাগেনি। এতটা মারাত্মক মারণাস্ত্র বানানোর মত ওরকম হুমকি দেখা দেয়নি পৃথিবীতে এখনও- এলিয়েন-টেলিয়েন আসলে ভিন্ন কথা- এই যুক্তিতে তারা এফ-২২ এর কর্মযজ্ঞ সীমিত করে দেয়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও তখন এফ-৩৫ দিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হয় এয়ারফোর্সকে। এখন প্রশ্ন হলো- এই দুটি আকাশ-দানবের মধ্যে কে বেশি কার্যকর?
এফ-৩৫ এর সিংগেল এঞ্জিনের বিপরীতে সু-৫৭ এর ডাবল এঞ্জিন রাশিয়ান এয়ারক্র্যাফটটিকে তার আমেরিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় অধিক গতি ও বেশি উঁচুতে উড়বার ক্ষমতা প্রদান করে। F-35 এর প্রধান মারণাস্ত্র- যা ২৫ মিলিমিটারের একটি কামান- শত্রুর অবস্থানে পুরোপুরি অব্যর্থ আক্রমণে সক্ষম না হওয়ায় মাটিতে অবস্থানরত স্বপক্ষের সৈন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট হয়ে ওঠে। আকারে বড় হওয়ায় ৭২ ফিট লম্বা সু-৫৭ এ ‘শূন্য ওজন'ই রয়েছে ১৮৫০০ কেজি, ফলে এটি একবার জ্বালানি লোড করলে পাড়ি দিতে পারে ৫০০০ কিলোমিটার- যা এফ-৩৫ এর সক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। সু-৫৭ এর এই দানবীয় আকার শুধু যে হাজার কিলোমিটার অতিক্রমেই কাজে লাগে তা নয়, অধিক পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্রের জন্য পর্যাপ্ত জায়গাও দেয়। এফ-৩৫ এর ভিতরকার চারটি মারণাস্ত্র বহনকারী ‘ক্লজিট' এর বিপরীতে রুশ ফাইটার জেটটির রয়েছে আটটি ‘উইপন হার্ডপয়েন্ট'। যদিও রাডারে ধরা পড়ার ভয় না থাকলে জেটের পাখায় প্রয়োজনমত আরও অস্ত্রশস্ত্র দিব্যি ঝুলিয়ে নেয়া যায়।
মুখোমুখি পরিসংখ্যানে এফ-৩৫ এর এই হতশ্রী দশার কারণ বিশাল স্কেলে এর উৎপাদন। উৎপাদন খরচ সাধ্যের নাগালে রাখার প্রয়াসে ‘বাজেট-ফ্রেন্ডলি' জেট তৈরির আশায় এর ফিচারগুলোতে কিছুটা আপস করা হয়। রাশিয়ার এই ঝক্কি-ঝামেলা নেই। তারা কম ইউনিট তৈরি করার কারণে নিজেদের ইচ্ছামত উন্নত ফিচার বসিয়ে দিতে পারছে ফাইটার জেটগুলোতে।
সেক্ষেত্রে সম্মুখযুদ্ধে এফ-৩৫ এর বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা কমই বলা চলে। মুখোমুখি ‘স্ট্রিট-ফাইটে' মার খেয়ে পালিয়ে যে যাবে, তারও কোন উপায় নেই। ঘন্টায় ২৬০০ কিলোমিটারের মারাত্মক গতি নিয়ে সু-৫৭ তাড়া করে F-35 কে চোখের পলকেই ধরে ফেলবে। কিন্তু আধুনিক সমরযুদ্ধে এরকম মুখোমুখি ‘ডগফাইট' হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম-শেষ এ-ধরনের যুদ্ধ হয়েছিল সেই ১৯৮৮ সালে। বর্তমান অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেমকে ফাঁকি দিয়ে শত্রু-সীমানায় ঢোকাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখানে এসেই মার খেয়ে গেছে সু-৫৭। এফ-৩৫ এর তুলনায় রাশিয়ান ফাইটার জেটটির রাডারকে ফাঁকি দেয়ার ‘স্টেলথ' ফিচার একেবারেই নগণ্য মানের, অথচ এই বৈশিষ্ট্যটিই অভিজাত ফিফথ জেনারেশন এয়ারক্র্যাফট হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মূলত দু'টি কারণে সু-৫৭ স্টেলথ বিমান হিসেবে পিছিয়ে পড়েছে। প্রথমত, এর ‘রাডার ক্রস সেকশন'- খটখটে বাংলায় বললে ‘প্রস্থচ্ছেদ'- হলো ০.৫ বর্গমিটার, যা একটি ট্রাকের টায়ারের সমান। বিপরীতে তার আমেরিকান ‘বন্ধুটির' রয়েছে গলফ বল সাইজের (০.০০১ বর্গমিটার) রাডার ক্রস-সেকশন। এতে করে ৬৬০০০ ফিট উঁচুতে উঠতে সক্ষম হলেও ঢাউস সাইজের প্রস্থচ্ছেদের কারণে স্বাভাবিকভাবেই রাডার স্ক্যানারগুলো সু-৫৭ এর অবস্থান সহজেই জানিয়ে দিতে পারবে। দ্বিতীয়ত, সু-৫৭ এর এঞ্জিনে এখনও চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি ব্যবহার করায় সুপারসনিক গতি অর্জনে ‘আফটার-বার্নার' ব্যবহৃত হয়, যার ধোঁয়া আধুনিককালের সেন্সর সিস্টেমের পক্ষে শনাক্ত করাটা মোটেও কঠিন কিছু নয়। যদিও রাশিয়া এখন তাদের পঞ্চম প্রজন্মের ‘ইজদেলা-৩০' এঞ্জিন নিয়ে কাজ করছে, কিন্তু ২০২৫ সালের আগে ওটা কোনও ফাইটার জেটে ইন্সটল করার সম্ভাবনা নেই। অপরদিকে, এঞ্জিন-প্রযুক্তিতে অনেকখানিই এগিয়ে থাকা আমেরিকা তাদের এফ-৩৫-এ পঞ্চম প্রজন্মের এঞ্জিন ব্যবহার করায় এয়ারক্র্যাফটিকে ‘সুপারক্রুজ' (সুপারসনিক গতিসম্পন্ন এয়ারক্র্যাফট) লেভেলে নিতে আফটার-বার্নারের প্রয়োজন হয় না। সে হিসেবে শত্রু-সীমানায় ঢুকে রাডারের চোখ এড়িয়ে প্রয়োজনীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আবার নিরাপদেই নিজেদের আবাসে ফিরে যেতে পারবে এটি, যা সু-৫৭ এর ক্ষেত্রে অনেকটাই কঠিন।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার- আমেরিকা যেখানে তাদের প্রায় সকল ফাইটার জেটকে এফ-৩৫ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে, সেখানে রাশিয়ানরা সু-৫৭ কে মূলত প্রচলিত ফাইটারগুলোর ব্যাকআপ হিসেবেই ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। সে হিসেবে আকাশযুদ্ধে বৃহৎ পরিসরে এই ফাইটার জেটগুলো নামানোর ব্যর্থতা আধুনিক রণক্ষেত্রে রাশিয়াকে অনেকখানিই পিছিয়ে রাখবে। এক্ষেত্রেও একটি ‘কিন্তু’ আছে। যদি রাশিয়া তাদের দেশীয় আকাশযানে পঞ্চম প্রজন্মের এঞ্জিন ইন্সটল করতে পারে, এবং সেই সাথে তুরস্কের পাশাপাশি আরও কিছু ক্রেতা দেশ তাদের এই মেগা প্রজেক্টে বিনিয়োগ করে- যা Su-57 এর বিশাল স্কেলে উৎপাদনকে ত্বরান্বিত করবে- সেক্ষেত্রে পাশার দানটা পুরোপুরি না উল্টালেও কিছুটা হলেও রাশিয়ার দিকে হেলে থাকবে।
মন্তব্য
বিমান প্রসঙ্গে বাংলায় যারা লিখেন, তাদের মনের মধ্যে বাংলা নিয়ে গভীর হীনম্মন্যতা কাজ করতে দেখি। পাঠক হিসেবে এতে অপমানিত বোধ করি।
রাডার ক্রস-সেকশন বেশ কারিগরি শব্দ, খটখটে তো বটেই। তার বাংলা হিসেবে 'বেতার প্রস্থচ্ছেদ'ও প্রথমবার শুনলে খটখটে লাগবে। বিমানের শরীরের যে অংশ রাডারের চোখে দৃশ্যমান, অর্থাৎ যে অংশে রাডার থেকে আগুয়ান বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে আবার রাডারের দিকেই ফিরে যাবে, সে অংশটাকে খোলা শরীর এবং বিমানের বাকিটাকে ঢাকা শরীর হিসেবে কল্পনা করা যায়। তাহলে "বিমানের রাডার ক্রস-সেকশন কত?" প্রশ্নটিকে বাংলায় সহজে "বিমানের কতটুক বেতারনাঙ্গা" বলা যায়।
যতদিন আমরা বিষয়গুলোকে বাংলায় বর্ণনা করতে না শিখব, ততদিন আমরা পৃথিবীর তাবৎ প্রযুক্তিকে একটা 'ইংরেজি ব্যাপার' হিসেবে জেনে ইংরেজের আর্দালির হীনম্মন্য বংশধর হিসেবে বাঁচব।
'খটখটে বাংলা' কথাটা বাক্যের অলংকরণ সৃষ্টির জন্য লিখেছিলাম। আপনার প্রস্তাবনাটি সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে এ-ধরনের লেখা যারা পড়তে ইচ্ছুক, তারা প্রযুক্তিবিষয়ক বাংলা পরিভাষাগুলোর সাথে খুব বেশি পরিচিত নন- যতটুকু জানি আমি। সে হিসেবে ইংরেজি টার্মগুলোকে বাংলায় রূপান্তর করে ব্যবহার করলে লেখাটি সাহিত্যমানে উতরে গেলেও অনেক পাঠকের কাছেই হয়তো তার উপযোগিতা হারাত। (মন্তব্যকারী: কেফায়েত তামজীদ)
আপনি যদি বিমানপ্রযুক্তি বা উড্ডয়নকৌশল নিয়ে নিয়মিত লেখেন, তাহলে পাঠকও ক্রমশ নতুন বাংলা শব্দে অভ্যস্ত হবেন। একজন পাঠক যেচে পড়ে আপনাকে বিকল্প শব্দ যুগিয়ে দিচ্ছেন যখন, হয়তো আরও অনেকে আপনাকে সাহায্য করবেন।
তবে আপনি যদি মনে করেন আপনার পাঠক বাংলার চেয়ে ইংরেজিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাহলে পরবর্তী পুরো লেখাটাই কিন্তু ইংরেজিতে লিখতে পারেন। সচলায়তনে ইংরেজিতে লেখার জন্যে পৃথক শাখা আছে: en.sachalayatan.com ।
আরও লিখুন। ধন্যবাদ।
'স্বল্পসংখ্যক ইংরেজি পরিভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা' আর 'ইংরেজিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা'- এই দুটোর মধ্যে স্থূল পার্থক্য বিদ্যমান বলেই মনে করি। আর হ্যাঁ,'রাডার ক্রস-সেকশন' কিংবা 'প্রস্থচ্ছেদ'-এর তুলনায় 'বেতারনাঙ্গা' শব্দটি একেবারেই অপ্রচলিত এবং এই ধরনের শব্দের প্রচুর ব্যবহার বাক্যে লেখাটির মূল আবেদন ফুটিয়ে তুলতে কার্যকর হতো না বলেই আমার বিশ্বাস। যদি কিছুটা হলেও প্রচলন থাকত এটার-'থিওরি অভ রিলেটিভিটি'র বাংলা পরিভাষা 'আপেক্ষিক তত্ত্ব' এর মত- তবে এর ব্যবহারের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বৃদ্ধি পেত বলেই মনে হয়। কিছু ক্ষেত্রে এই 'শুদ্ধ বাংলা' ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মূল বিষয়টির সাথে যথাযথ যোগসূত্র স্থাপিত হয় না। সামরিক ক্ষেত্রে 'ব্রিগেড' কিংবা 'ডিভিশন'-এর বিপরীতে 'সেনাদল','সৈন্যসমাবেশ' কিংবা এই জাতীয় শব্দের ব্যবহার কার্যকরভাবে সেনাবাহিনীর বিভাগগুলোকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয় না।
আপনিই বিমান বিষয়ে বাংলা পরিভাষা তৈরিতে উদ্যোগ নিতে পারেন। তখন নতুন শব্দগুলো আপনার কলম ধরে নেমে পাঠকের কাছে ক্রমশ পরিচিত হয়ে উঠবে। যে পথটা নেই, সেটা আপনি তৈরি করে নিন? আপনি হয়তো অনভ্যস্ত বলে উৎসাহ পাচ্ছেন না, কিন্তু এটাকে চাইলে একটা খেলা হিসেবেও নিতে পারেন। ছুটিতে লোকে আরাম করার বদলে যেমন পাহাড় বাইতে বেরোয়, অনেকটা সেরকম।
Brigade বা Division এর বাংলা করা হয়নি, হঠাৎ নতুন করে কিছু লিখলে বুঝতে অসুবিধা হবে। আপনি শুরুতে আপনার প্রস্তাবিত শব্দগুলো লেখার নিচে নির্ঘণ্ট আকারে যোগ করে দিতে পারেন। প্রথম কয়েকটা লেখায় সে নির্ঘণ্ট পড়ে পাঠক বুঝে নেবেন, আপনি কী বোঝাতে চাইছেন।
আমার অনুরোধ, সামনে অন্তত তিনটা লেখায় আন্তরিকভাবে নতুন বাংলাকে সময় দিন। বাংলা ভাষার অপূর্ণতাকে ভ্যাঙানোর জন্যে নয়, উদ্যোগটাকে মাটি করার জন্যেও নয়, আপনার নিজের ভাষায় কিছু ফাঁক ভরাট করার জন্যে; আমরা যেভাবে সন্তানের দায়িত্ব নেই, সেই মমতা আর আগ্রহ নিয়ে। তারপরও যদি আপনার ভালো না লাগে, যেভাবে লিখছেন সেভাবে লিখে যাওয়ার দোর তো খোলাই রইলো।
Radar cross section এর বাংলা কি রাডার দৃশ্যমানতা করা যাবে?
যদিও এটা ঠিক cross section বুঝায় না, তবে ধারনা টা পাওয়া যায়।
ঋতব্রত
স্নাতক শ্রেণির পাঠ্যবইতে চিরায়ত বলবিদ্যা অথবা কেন্দ্রীণ পদার্থবিদ্যায় scattering cross section এর পরিভাষা হিসেবে "বিক্ষেপণ প্রস্থচ্ছেদ" ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমি যতদূর জানি জীববিজ্ঞানের পাঠ্যবইতেও cross sectionএর পরিভাষা হিসেবে "প্রস্থচ্ছেদ" শব্দটি বহুল প্রচলিত। নতুন করে চাকা আবিষ্কার না করে, প্রচলিত শব্দ ব্যাবহার করলেও চলে বোধহয়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখার শেষে লেখকের নাম উল্লেখ করলে লেখাটা পড়তে আরও ভাল্লাগতো।
অজ্ঞাতবাস
এটা একান্তই নীতিমালা ভালভাবে পড়ার ক্ষেত্রে লেখকের ব্যর্থতা।
এই বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই। যেটুকু জানতে পারলাম ভালো লাগল।
সচলে এখনও অজানা-অচেনা বাংলা শব্দ দেখতে পেলে আমার খুব ভালো লাগে। লেখাটি সম্পর্কে আরো উৎসাহ বোধ করি।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
খুনাখুনির যন্ত্র।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নতুন মন্তব্য করুন