যুক্তি,তক্কো আর গপ্পেঃ আমরা দ্বিধান্বিত হই বারে বারে !!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৬/০৮/২০০৭ - ৪:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক.
আমি জানি না আমি অন্ধ কিনা ; আমার জানা নেই আমার মতো এমন বোধশূন্যতায় আর কেউ আছেন কিনা ! আমার চোখ বন্ধ নয় তারপরও নিজেকে অন্ধ মনে হয় কেন ? আমি বধিরও নই । তবে কেন আমি বলতে পারিনা; চিৎকার করে বলতে পারি না -

খামোশ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

অনেক হয়েছে ; আর নয় ।
ওই উদ্যত রাইফেলের নিশানা বদলাও ।
এই রাইফেল তোমাকে দিয়েছিলাম আমার অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে । আর আমার টাকায় কেনা রাইফেল তুমি তাক করো আমার দিকে ?? তুমি হয়ে উঠলে আবারো ফ্রাকেস্টাইন ?? আর কতোবার তুমি বিশ্বাসভংগ করবে ?

আমি পারিনা । আমার বোধ আমাকে কুড়ে কুড়ে খায় । আমার দিকে তর্জনী উঠিয়ে বলে ব্যাটা নপুংশুক ।!।

ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে । কিন্তু তারপরও আর আমাদের ভুল শোধরানো হয়না । আমরা একই ভুল করে যাই বারবার । ইতিহাস যেন সেই ভুল শুধরে নিতে আসে; বিশ্বাসঘাতকতার কালিমা মুক্ত করতে চায় অথচ আমরা পারিনা । আমাদের রক্তে মীরজাফর-মীরন জল্লাদের উল্লাস ধ্বনি শুনি ।একই পাপাচারে আবারো আমরা লিপ্ত হই । প্রতিবারই আমাদের মাথা নুইয়ে যায় আমাদের পূর্বপুরুষের কাছে । আমরা বাঙালিরা আর মানুষ হয়ে উঠতে পারিনা । অক্ষমতার কষ্ট আমাদের কুড়ে কুড়ে খায় । আমরা আরো নতজানু হই আর ওরা আমাদের পিঠে আরো জোড়ে চাবুক চালায় ।

দুই .
ইতিহাস সবসময় বিজয়ীর কথা বলে । আমরা বিজয়ীদের ইতিহাস আওরাই ; আর মনে ভাবি কি জানি , হতে ও পারে !! একটি দেশ । একটি স্বাধীন ভূ-খন্ড । অথচ এই দেশের অভূ্দ্যয়ের ইতিহাস কতবারই না বদলালো , কত ভাবে তা লেখা হলো !!কিন্তু তারপরও আমাদের অস্তিত্বের সংকট কাটে না । আমরা রয়ে যাই একই বেড়া জালে - বাঙালি না বাংলাদেশী !! আমাদের দ্বিধা কাটেনা ; আরা সব কিছু নিয়েই দ্বিধান্বিত রয়ে যাই ।

তিন.
আমরা সবজান্তা । আমার যুক্তিবাদী । আমরা জানি যুবরাজ কত হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আর দেখি মাত্র ১ কোটি টাকার চাদাবাজির মামলা !আমার শুনি সাবেক প্রধানমন্ত্রি ব্রিফকেসে করে ১ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন আর ওমনি হিসেব করতে থাকি এক ব্রিফকেসে কত টাকা আটেঁ । আমরা ভাবতে থাকি ব্রিফকেসের কি রঙ ছির সাদা না কালো ;তা নিয়ে তর্ক জুড়ে দেই শুরু করে দেই তার চিত্রনাট্য লিখতে । অথচ আমরা ভাবতে পারিনা কেউ আমাদের পরিকল্পিত ভাবে আহম্মক বানাচ্ছে ।

চার.
নিউ রিয়্যেলিজম, সুরিয়্যালিজম সহ নানা ইজম পার করে রিয়্যেলিজমের অতি আধুনিক সংস্করণ প্র্যাকটিক্যাল রিয়্যেলিজম আমাদের রাষ্ট্র জীবনের নতুন স্ক্রিপ্ট হয়ে যায় । কষ্ট কমাতে ফারুকীর মতন আমরা আগে পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করে ফ্রেমে দাড় করিয়ে দিয়ে বলি - অ্যাক্ট , হোয়াট ইউ রিয়েলি অ্যাক্ট ......কোয়াইট... ক্যামেরা রোলিং ....থ্রি...টু...ওয়ান .... অ্যাকশন । ক্যামরা বন্দি হয়ে যায় আমাদের জীবন নাট্য । কোথাও ভুল চুক হলে প্যানেল বসে এদিক সেদিক করে সেরে নেই । চিত্রিত হয়ে যায় আমাদের আধুনিক সংস্করণ প্র্যাকটিক্যাল রিয়্যেলিজম ।

পাঁচ.
ডঃ আনোয়ার হোসেন এবং অধ্যাপক হারুন অর রশীদ নাকি দুজন ছাত্রকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন খেলার মাঠে একটা ঝামেলা বাধাতে হবে তারপর সেই ঝামেলা ছড়িয়ে দিতে হবে সারা ক্যাম্পাস , ক্যাম্পাস থেকে দেশ জুড়ে..... আমার এখনি হিসেবে বসে যাব কিভাবে আগে থেকেই শিক্ষকরা জানলেন যে ওখানে তেনারা খেলা দেখতে আসবেন?? পুলিশের এমন আগ্রাসী ভূমিকা পালনে অধ্যাপকদ্বয় কিভাবে সার্থক হলেন ?? আমরা তখন এ বিষয়টির মাঝে সম্ভবনা খুজেঁ পাব ; প্রোবাবিলিটির অংক কষতে বসব । অথচ ঘটানাটা একটু উল্টিয়ে দিলেই আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের স্বরুপ দেখতে পেতাম । আমাদের আর উল্টিয়ে দেখা হয় না ।

পরিশেষে
যা কিছু ভালো তাতেই কালিমা লাগাতে দিনের শুরুতেই আসে প্রথম আলো । আমরা চোখ থাকতেও অন্ধরা তাই দেখি । আমাদের শেষ অর্জন গুলোতেও কালিমার লেপন লাগতে থাকে । রাজনীতিবিদদের শেষ করে এখন সে লেপন এলো দেশের কাণ্ডারী শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের উপর । স্বার্থন্বেষী ও ষড়যন্ত্রকারী মহল কি আমাদের শিক্ষকরা-শিক্ষার্থী ?? একটি স্বার্থন্বেষী ও ষড়যন্ত্রকারী মহল এবং অপশক্তি তাদের এই নতুন পরিচয়ে আমরা দ্বিধান্বিত হই ।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অসাধারন লিখেছেন অতিথি লেখক। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব মোর্শেদ ।অতিথি হিসেবে লেখার সুযোগ দেয়ার সচলায়তন কর্তৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অতিথি লেখক,
এডিট করলে করলে কিন্তু প্রথম পাতা থেকে মডারেশন প্যানেলে চলে যায়। এখন সমস্যা হল এক অতিথি লেখক লিখল আর আরেক অতিথি লেখক এডিট করল। তাহলে কিন্তু গ্যাঞ্জাম লেগে যাবে। মূল অতিথি লেখক সমস্যা হলে বা যোগাযোগ করুন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অতিথিরা লেখার শেষে নিজের নাম যোগ করলে পারেন। এই অতিথিকে সতিথি(?) করে ফেলা যায় না?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভাল লাগল।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুব ভাল। কিন্তু কার লেখার সাথে যেন মিল খায়...ভুলও হতে পারে।

অতিথি লেখক এর ছবি

হতে পারে ... কিন্তু কার সাথে ?? জানতে ইচ্ছে করছে ।

কেমিকেল আলী এর ছবি

ভাল লিখেছেন,
ধন্যবাদ

সৌরভ এর ছবি

আমার দেশ নামের একটি সুযোগসন্ধানী দৈনিক সর্বজ্ঞানীর মতো একটা রিপোর্টও করেছে।
পড়েছেন কি?
এরা এসব তথ্য কোথায় পায়?

এর থেকেই কি প্রমাণ হয় না, যৌথ বাহিনীর একটা খুব দক্ষ ম্যানিপুলেশন টিম আছে যারা খুব ভাল নাটক লিখতে পারে। নাটক লেখার পর, বাজারে ছেড়ে দেয়াটা এদের দায়িত্ব।

সুতীব্র ঘৃণা এইসব নপুংসকসম বাহিনীর জন্যে।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অতিথি এর ছবি

আমার রাহা নামটা সচল করে দিলেই তো হয় !!

নজমুল আলবাব এর ছবি
শামীম এর ছবি

লেখাটা সামহোয়ারের ফ্রন্টপেজে দেখেছিলাম ... সচলায়তনে পড়লাম। ভালো।

তবে গতকাল রাতে ঢা.বি. থেকে পাশ করা (বর্তমানে পোস্ট ডক্টরাল, চাকরী করছেন) একজনের মুখে গ্রেফতার হওয়া দুইজন প্রফেসরের একজনের ইতিহাস শুনলাম। বড়ই পঙ্কিল ... .... মনে হলো যা হচ্ছে সেটা সম্ভবত খুব বেশি ভুল হচ্ছে না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

শামীম আজকের আমার দেশ পড়লে আপনি এমনতর নানা তথ্য পাবেন যা সত্যের কাছাকাছি তবে তার কিছু অংশ । ডঃ আনোয়ার ' কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই এবং গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা । আগস্ট'৭৫ তিনি তার ভাইয়ের সাথে সক্রিয় ছিলেন এবং জিয়া সরকারের আমলে জেল খেটেছেন । তার রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন ছিল কিন্তু তার মানে এই নয় যে বর্তমান চিত্রনাট্যের নায়ক তিনি । আমার ধারনা এই চিত্রনাট্যের নায়ক আপামার ছাত্র-জনতা ।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ড. আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে আমার দেশ বেশ কিছু উল্টা-পাল্টা তথ্য দিয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন সাদা দল (বিএনপি ঘেঁষা) করেছেন। এখন কি করেন জানি না।
গণবাহিনীর সাথে সংযুক্ত ছিলেন। তারা তো তখন সশস্ত্র বিপ্লব করে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছেন।
তাহলে তো দাদাভাইকে (সিরাজুল আলম খান) আটকানো দরকার। কারণ তিনি তো অনেক অপকর্মের মূলে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অয়ন এর ছবি

শামীম লিখেছেন:
..তবে গতকাল রাতে ঢা.বি. থেকে পাশ করা (বর্তমানে পোস্ট ডক্টরাল, চাকরী করছেন) একজনের মুখে গ্রেফতার হওয়া দুইজন প্রফেসরের একজনের ইতিহাস শুনলাম। বড়ই পঙ্কিল ... .... মনে হলো যা হচ্ছে সেটা সম্ভবত খুব বেশি ভুল হচ্ছে না।

শামীম ভাই, আরেকটু বিস্তারিত বলেন। সবার ব্যাপারগুলো জানা দরকার।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

হুমম, এটা রাহার লেখা। গুছানো লেখা।
রাহা কি জিকোর বন্ধুস্থানীয়। নাকি পাঠশালার ছাত্র?
দুয়েকটা বাক্যে ও চিন্তাভঙ্গিতে জিকোকেও পাওয়া যায়।

চমত্কার লেখা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ শোহহাইল মতাহির চৌধুরী , আপনার মন্তব্যের জন্য ।না পাঠশালার ছাত্র নই কিংবা জিকোর বন্ধুস্থানীয়।
ছাত্রত্ব ছেড়েছি খুব বেশীদিন নয় । একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখন তার আশেপাশেই চলাচল ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।