লোডেশেডিং এবং বিটিভি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৭/০৯/২০০৭ - ৩:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেদিন খেলা দেখছিলাম ঘরে বসে--বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। বহুদিন পর ঘরে বসে নিজ দেশের খেলা দেখার সুযোগ এসেছে, তাও আবার ভরপেট ইফতারী খাওয়ার পর! এই সুযোগ কি আর হেলায় হারানো যায়?

শুরুতে আফতাব, আশরাফুল প্রমুখের বেধড়ক পিটুনী দেখে যতটা আনন্দিত হয়েছিলাম, ততটাই ব্যথিত হলাম পরের দিকের কম রান ও নিয়মিত বিরতীতে উইকেটের পতন দেখে। ইনিংস এর তখন ৫-৬ ওভার বাকি--বিদ্যুত মহোদয় ঠিক করলেন ভেলকিবাজী দেখাবেন। ঢাকা শহরের অনেক বাড়ীর মত আমাদের বাড়ীতে আইপিএস নামক সুবিধাটি বিদ্যমান না থাকায় পাশের ফ্ল্যাটে (চাচা থাকেন ওখানে--সপরিবারে) গেলাম। কিন্তু বিধিবাম; ওখানে টিভি আছে ঠিকই, এবং টিভিতে আইপিএস সংযোগও আছে--কিন্তু বিটিভি(!) ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না।

শুরু করলাম খেলা দেখা; মনে আশা শেষ কয়েক ওভারে হয়েতো আবার কিছু পিটুনি দেখা যাবে। এভাবে সময় গড়িয়ে গিয়ে ঘড়ির কাটা ১১:৩০ ছুলো--খেলার বাকি ৩ ওভার; পুরা ক্লাইম্যাক্স অবস্থা। হঠাৎ তেলতেল চেহারার এক বিরক্তিকর ব্যক্তির আবির্ভাব। উনি গভীর আনন্দের সাথে জানালেন যে উনি আমাদেরকে এখন সংবাদ প্রদর্শন উপলক্ষ্যে স্টুডিওতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। তাও আবার একটি নয়, দু'দুটি সংবাদ--মাতৃভাষা বাংলা ও সাবেক প্রভু ভাষা ইংরেজীতে।

রুম এ তিন চাচা ও আমার আব্বা (জ্বী আমরা জয়েন্ট ফ্যামিলি)উপস্থিত থাকায় গালি দিতে পারিনি, কিন্তু উনারা ভাতিজা/পুত্রের উপস্থিতিকে বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে কুকুর শাবক, হারামজাদা ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে থাকলেন।

আমি শপথ করে বলতে পারি, পুরো বাংলাদেশে বিটিভির একজন (কিছু অপ্রকৃতস্থ ব্যক্তি ব্যতিরেকে) গ্রাহকও সংবাদ দেখার ব্যাপারে উৎসাহিত ছিল না সে মুহূর্তে।

ব্যাপারটিকে আরো হাস্যকর করে তোলার জন্য বাংলা খবরের পাঠক বলতে শুরু করলেন "সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, আপনারা যাতে কেপটাউন থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত খেলাটি সুচারুভাবে দেখতে পারেন, সেহেতু আজকের সংবাদ সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে.."

আরে বেটা বেকুব! বক বক না কইরা খবরটা তাড়াতাড়ি শেষ করলেই তো হয়।

শেষকালে অত্যাচার যখন শেষ হল, তখন খেলার বাকি দুইটি বল।

কি আজব একটি দেশে থাকি আমরা!!!!!

-ইশতিয়াক (ডেড ম্যান রোলিং)


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বোকা×দারা খবর পরে দেখাইলেওতো পারত। রামছাগল দ্বারা পরিচালিত হয় মনে হয় টিভি স্টেশনগুলি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

দ্রোহী এর ছবি

বিটিভি আগের মতই আছে, থাকবে চিরদিন।


কি মাঝি? ডরাইলা?

হিমু এর ছবি

বিটিভির ধারণা তাদের খবরগুলি ডায়াবেটিসের ওষুধের মতো, এবং সারাটা দেশ রোগী, সময়মতো সেই ওষুধ না খাইলে চোখ উল্টাইয়া মরবে। ছাগলের দল।


হাঁটুপানির জলদস্যু

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অ মোর বিটিভি, বড়ই মিস করতাছি!
...............................
আমার লেখাগুলো আসে স্বপ্নের মাঝে; স্বপ্ন শেষে সেগুলো হারিয়ে যায়।

নিশাত এর ছবি

হায়রে বিটিভি,সেই ছোবেলা থেকে একইরকম দেখে আসছি!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বিটিভিকে গাইল দিয়েন না।এই একটা জিনিষই কিন্তু এই দেশে এখনও অপরিবর্তিত আছে।
কান্ডজ্ঞানহীন মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য একটা জায়গা তো থাকা দরকার রে ভাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।