আধ্যাত্মিক প্রশ্ন: আমি কে? এবং নিজেকে খুজেঁ না পওয়া

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/০৯/২০০৭ - ১:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকাল বেলা ঘুম থেকে ছান্নুর রুমের সামনে একটি সাইনবোর্ড:

রমজানে খোদার কসম দিয়ে বলছি আমাকে খুজে^ঁ পাচ্ছি না। দয়া করে যদি কেউ পারেন তো আমার সন্ধান দিন।

রুমে ঢুকে দেখি ছান্নু দিব্বি বসে আছে। নীহার চন্দ্রের বই পড়ছে।

কিরে ছান্নু তুই নাকি নিজেকে খুজে পাচ্ছিস না। মন উড়– উড়–? নাকি অন্য কেউ নিয়ে গেছে। প্রেম ট্রেম হলে বলিস। রোজায় চায়নিজের দাম অনেক কম।

ভাই এটা রসিকতার বিষয় নয়। সিরিয়াস বিষয়। পারলে বল। না পারলে বিদায়। ডিস্টার্ব করেন না।

আমি ছান্নুকে চিনি। তাই সত্যি সিরিয়াস হই। বলি সমস্যাটা কি, এবার বল।

সমস্যা লেখা আছে। সমাধান থাকলে বল।

কেন এই যে, তুই দিব্যি বসে আছিস বই পড়ছিস। এই তো তুই। তোকে না পাওয়ার কোন কারণ নেই।

ছান্নু বলে। আমি যে এই তার প্রমান কি? তোমার কাছে কোন প্রমান আছে?

ছান্নু নিজেই শুরু করে। তার হাতটা দেখিয়ে। এই হাতটা কার?

আমি উত্তর দেই, ছান্নুর।
গুড। তা হলে ছান্নুর হাত। মানে এই হাতটার মালিক ছান্নু। যেমন সম্পদের মালিক। মালিক এক সম্পদ আর এক। তা হলে ছান্নুর মালিকানায় তার হাত।

তেমনি, ছান্নুর পা। মাথা। নাক। চোখ। মন। হৃদয়। সব কিছু। সব কিছুই ছান্নুর অধিকারে। ছান্নু মালিক। তা হলে ছান্নুটা কে?

আমি উত্তর দেই। এই সব কিছু মিলিয়ে ছান্নু। তোমার এই দেহটাই হলো ছান্নু।

না। আসলে চিন্তুা ভাবনা না করে এরকম উত্তর বোকারাই দেয়। ছান্নুর উত্তর।

আমি একটু অপ্রস্তুত হই। বলি তা হলে তোর এই সমস্ত শরিরটা কী।

আমি যখন মারা যাব তখন খাটিয়ায় শোয়ানো লাশ দেখে তুমিই বলবে এটা ছান্নুর লাশ। কি বলবে না? আমি জানি বলবে। তা হলে দেহটা ছান্নুর না। আবার যে প্রাণ/জীবনটা বের হয়ে গেল তাও বলবে ছান্নুর প্রাণ বের হয়ে গেছে। ছান্নুর জীবনাবসান হয়েছে।

আমার প্রশ্ন তা হলে ছান্নুটা কে?

এবার আমি সত্যিই চিন্তিত হই। সত্যি কথা। এভাবে তো চিন্তা করিনি কখনো। আসলেই তা হলে এই যে আমি, রেনেসা, এই রেনেসাটা কে। না হাত, পা, মাথা না আমার দেহ না আমার জীবন। তা হলে? তোর কি মত? আমি প্রশ্ন করি।

জানি না। জানি না দেখেই তো জানতে চেয়েছি। পারলে দাও না পারলে অফিসে যাও। কুলুর বলদ হয়ে পরের গোলামী কর।

আমি দেখলাম ও খুব সিরিয়াস। তাই কথা না বলেই বের হয়ে আসছিলাম। ও আবার বলে দাড়াও আরও কিছু জেনে যাও।

ও বলে, নাস্তিকরা বলে, দেহর মধ্যে থাকে এক ‘সুপার পাওয়ার’। ওটা চলে গেলেই শরীর মৃত হয়।

আস্তিকরা বলে, এটা সৃষ্টিকর্তার কুদরত। (এই কুদরত কি জিনিস আমি বুঝি নাই)।

আর ফকির লালন শাহ বলেছে ‘‘বাড়ির কাছে আরশি নগর এক ‘পড়শি’ বসত করে’’।

যদি সুপার পাওয়ার হয়, যদি কুদরত হয়, যদি সে পড়শি হয় তা হলে আমি টা কে?

- রেনেসা


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

জোশ হইছে লেখাটা!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দেঁতো হাসি
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

জটিল হইছে।
আসলেই তো,আরিফ জেবতিক কে?সবই যদি তার হয়,সে তবে কোথায় গেল?

দ্রোহী এর ছবি

ছান্নু হইলো ছান্নুর পোলার বাপ হাসি


কি মাঝি? ডরাইলা?

সুখ পাখি এর ছবি

সুধুমানুষই নয় বরং একাধিক উপাদানে গঠিত যে কোন কিছুর ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য। যেমন আমার চশমার কথাই ধরুন। এটি মুলত গ্লাস এবং ফ্রেমের সমন্ময়ে তৈরী। আমরা বলি চশমার ফ্রেম, চশমার গ্লাস,চশমার পাওয়ার, চশমার রং, চশমার ডিজাইন ইত্যাদি। তাহলে চশমাটা কি? চশমাটা হচ্ছে এই সবকিছুর সমন্মিত অবস্থা।
মানুশও তার দেহ, মন, বিবেক ইত্যাদির সমন্ময়ে তৈরী। দেহ থেকে প্রান বেরিয়ে গেল তা হয় লাশ, আবার বিবেক বিশর্জিত ব্যাক্তিকে আমরা অমানুশ বলি। কাজেই আলাদাভাবে সবকিছু যেমন ছান্নুর তেমনি সবকিছুর সমন্মই হচ্ছে ছান্নু।

আতিক এর ছবি

সে ছান্নু কে চিনতে গেলে আদম বাজারে ঢুকতে হবে..... এর জন্য অবশ্যই আরেক মহা ছান্নুর তালাশ করতে হবে।।।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।