আমার কি কাদাঁ উচিত। বুঝতে পারছি না। ভাইয়াটা কাঁদছে। অঝোরে কাঁদছে। মায়ের চোখও ভারী। তনুর চোখে পানি। আশে পাশের সবাই শান্তনা দিচ্ছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। কেঁদেই চলছে। রেজাল্ট শীটে যে তার রোল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ফেল তো অনেকেই করে। কাঁদেও। তাই বলে এ রকম। কিছু কিছু কান্না আছে ভিতরের গভীরতা টের পাওয়া যায়। সে রকম কান্না। ভেতর থেকেই আসছে। তার নিয়ন্ত্রন ভাইর কাছে নেই। সবাই তাকে ঘিরে।
আমার কি করা উচিত বুঝতে পারছি না। ভাইয়ার পাশে যাই কিন্তু কিছু বলতে পারি না। তাকে কি বলে শান্তনা দেব। কোন ভাষা খুজেঁ পাই না।
আমার রুমে চলে আসি। রুম অন্ধকার করে বসে থাকি। ভাবি কেন এমন হয়। ২ ভাই একসাথে এইচ এস সি পরীা দেই। আমি পাশ করি। আজ তো আমার দুখের দিন নয়। বড় আনন্দের দিন। কারন আমি যে পাশ করেছি। তাও প্রথম বিভাগে। লোকাল পর্যায় খুব বড় ফলাফল। যে এরকম রেজাল্ট করে শহরে নাম হয়ে যায়। তার নাম থাকে মুখে মুখে। যে মেয়ে পাত্তা দিতে চায় না সেও সমীহ করে। বন্ধুরা পাজাকরে মাথায় তুলে। সকলে মিলে মিষ্টি খায়। হই হুল্লোড় করে। মা বাবার চোখ চিক চিক করে সাফল্যে। আত্মীয়রা কেউ জয় গাথাঁ গায়। জজ ব্যারিষ্টার বানিয়ে ফেলে। তার ৩৪ ইঞ্চি বুক ফুলে ৩৬ ইঞ্চি হয়।ছোট ভাই পাশ করেছে। বড় ভাই খুশি হয়। বাসায় মিষ্টি নিয়ে আসে। সবাইকে নিজ হাতে মিষ্টি বিলিয়ে বলে আমার ভাই পাশ করেছে। আনন্দে সে ভাইকে জড়িয়ে ধরে। বলে, তোর কিন্তু আরো বড় হওয়া চাই। তুই অনেক বড় হবি। অথচ। নিয়তি সম্ভবত একেই বলে। আমি অন্ধকার রুমে একা বসে আছি।
ভাইর দুঃখটা আমি বুঝি। প্রথমতঃ ফেল। তার পর ছোট ভাই বড় ভাইকে ডিঙিয়ে পাশ করেছে। লোকে বলবে ছোট ভাই পাশ করেছে আর বড়ভাই করেনি, ও একটা .......। আত্মসম্মানে লাগে।
আমার সকল বোধ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আমি রুমে একা বসে থাকি। ভিতর থেকে শুনি ভাইর কান্না!
- রেনেসা
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন