আমাদের ক্রিকেটীয় ক্রীড়াকলাপ চলিতেই লাগিল। বাঁশের কঞ্চির মাথা কয়েক ফালা করিয়া স্ট্যাম্প বানানো হইত। উনানের তল হাতড়াইয়া আনা গদাকৃতি লাকড়ির আগা দা-কুঠারের শৈল্পিক প্রহারে ব্যাটের হাতলের রুপ পাইত, আর গ্রাম জুড়িয়া তো ডুমুর কিম্বা কদবেল গাছের অভাব ছিলনা। তবে সামান্য বড় হইতেই এইসমস্ত গ্রামীন দ্রব্যাদি উপযুক্ত ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম দ্বারা প্রতিস্থাপিত হইয়া গেল। সূক্ষাগ্র বেলনাকৃতির শক্ত স্ট্যাম্পের সামনে ব্রাত্য হইয়া পড়িল শীর্ণকায় বাঁশের কঞ্চি। রংদার কাষ্ঠল ব্যাট আসিয়া রসুইঘরের লাকড়ির কিছুটা সাশ্রয় ঘটাইল আর নিরীহ অবলা ফলগুলিরে বেদম প্রহার হইতে বাঁচাইয়া দিল নির্ভুলভাবে বর্তুলাকার সবুজ ছাল যুক্ত টেনিসবল।
আসল গল্পে আসি। আমাদের খেলার মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বেই আম কাঁঠালের ছায়ার নিচে বাঁধানো ছোট্ট পুকুরঘাট। বৈকালিক অবসর যাপনে সেইখানে আসিয়া গল্পে বসিতেন পাড়াতো বোন ফারিয়াদি, সোনিয়াদি আফরিন, আইরিনসহ আরো অনেক উঠতি রোমহর্ষক, চিত্তকানন-কর্ষক সুন্দরীগণ। তখন কিছুটা মাথাতোলা হইয়াছি বটে। হাফপ্যান্ট ছাড়িয়া ফুলপ্যান্ট পরার চল রপ্ত করিয়াছি। নাকের ঠিক নিচে অপরিপুষ্ট গোঁফশিশু উঁকিঝুঁকি মারা শুরু করিয়াছে। সরল জীববৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী নারীদের প্রতি মানসিক আর শারীরিক আকর্ষন জন্মাইবার ঊষালগ্নে আসিয়া পড়িয়াছি বলা চলে। রুপশোভায় পুকুরঘাট অলংকৃত করিয়া অপ্সরীদলের প্রত্যেকে হইয়া যাইত যেন একেকজন প্রেরণাদায়িনী (চিয়ারলিডার বলিবনা)। তাহারা ওই জায়গায় আসিয়া বসিলে মনের অজান্তেই ভাল পারফর্ম করিবার একটা উদগ্র বাসনা চাপিয়া বসিত। মনে হইত, বোল্ড করিয়া স্টাম্প উপড়াইয়া ছত্রখান করিয়া দেই, কিম্বা বিশাল ছক্কায় চাঁদায় কিনা বলটারে পগার পার করিয়া সরিষাক্ষেতে ফেলাই।
মাঠের পাশে ওইরকম সুন্দরী-সপ্তক সংস্থিত পুকুরঘাট যেমনটা ছিল তেমনি অনাকাঙ্খিত উপদ্রবের অভাবও ছিলনা বৈকি। এমনই একদিন ক্রিকেট-চর্চা করিতেছিলাম। দুইদিন পরই পাশের গ্রামের বিরুদ্ধে স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ। পাশাপাশি দুই গ্রামের দীর্ঘ বৈরীতার অম্লমধুর ইতিহাস, তাই মর্যাদার লড়াই বলিয়া কথা। গাত্রঘর্ম বিসর্জন দিয়া, অপরপ্রান্তে অরুপরে ব্যাটসম্যান বানাইয়া, বোলিং প্রাকটিস করিয়া যাইতেছিলাম। ব্যাটিং করিবার সময় চোখে সরিষাফুল আর চন্দ্রমল্লিকা দেখিলেও বলটা নেহাত খারাপ ছুঁড়িতাম না।
সেই মুহুর্তেই চিরায়ত নিয়মে আমাদের খেলায় বিঘ্ন ঘটাইতে উপস্থিত হইলেন রুবেল ভাই। রুবেল ভাই আমাদের চাইতে ঢের সিনিয়র। পাড়াময় তিনি বিশেষ হম্বিতম্বি আর অদরকারি ঠাঁটবাট আশ্রয় করিয়া চলেন। তিনি ভাল খেলিতেন, অস্বীকার করার কোনপ্রকার জো নাই। উপরন্তু, তাহার ভাষ্যমতে আমাদের মতন ‘নাবালেগ’দিগের বোলিং তাহার জন্য বড়ই নীরিহ আর নখদন্তহীন। তিনি প্রায়সই সেই বোলিং গরুপেটা করিয়া মাঠের এইপার-ঐপারে ছুঁড়িয়া ফেলিতেন, কিন্তু তাহার পর যেই ভাবখানা লইতেন আর আমাদের উদ্দেশ্যে যেইসব অপমানকর কথামালা ছুঁড়িয়া দিতেন তাহাতেই মস্তক ফুঁড়িয়া অগ্ন্যুতপাত হইবার উপক্রম হইত। আমাদের বল পিটাইয়া, জোর কন্ঠে নিজের সুনাম গাহিয়া তিনি যে সুন্দরীকুলে একটা অবস্থান তৈরী করার চেষ্টা চালাইতেন তাহা সহজবোধ্য ছিল।
রুবেল ভাই আসিয়া কহিলেন, “ওরে নবজাত শিশুর দল, কয়েকটা বল ছুঁড়তো দেখি”
জবাবে রোমেল বলিল, “এখন অতশত পারিব না, পরশু ম্যাচ আছে”
“ওরে ভয় পাস কেনরে? যা যা, আজ না হয় একটু কমই পেঁদাইলাম। তাছাড়া আমাকে আউট করিতে পারিলে বুঝা যাইবে তোদের কার কদ্দুর খেমতা হইয়াছে, বাইরে যাইয়া ম্যাচ খেলিবার মত মরদ হইয়াছিস কিনা।”
শুনিয়া আমার গায়ে কাঁটা দিয়া গেল। জামিল তৎক্ষনাত বল হাতে লইল। আমাদের মধ্যে সেই সবচাইতে লম্বা আর শক্তপুষ্ট বলিয়া বয়সের তুলনায় ভাল গতিতেই গোলক নিক্ষেপ করিতে পারে সে। কিন্তু রুবেল ভাইরে কাবু করিবার মত সেইটা তেমন যথেষ্ট নহে তা পরক্ষনেই বুঝিতে পারিলাম। আমরা একের পর এক বল করি, আর তিনি সেইটা একবার সোজাসুজি উড়াইয়া সেলিমদের সব্জিক্ষেতে ফেলান, আরেকবার অফসাইডে জোরদার কাভার ড্রাইভ মারিয়া মাঝপুকুরে চুবান। সামান্য বাউন্সার দিবার চেষ্টা করিলে পুল করিয়া বলসমেত পাশের নলখাগড়ার ঝোঁপে অদৃশ্য করিয়া দেন। সেই বলের পিছু ধাওয়া করিতে করিতে আমাদের সকলের প্রানান্ত।
রুবেল ভাইয়ের অমন মারকাটারি ব্যাটিং দেখিয়া পাশের ঘাট থেকে ফারিয়াদি বলিয়া উঠিলেন- “রুবেল ভাই, আপনার হাতে তো প্রচুর মার। আপনি কি মারিয়া এই পুকুর পার করিতে পারিবেন?”
রুবেল ভাই, সুন্দরি ফারিয়ার দৃষ্টি আকৃষ্ট করিতে পারিয়া লাট বনিয়া গেলেন যেন। তারপর জাফ্রুল্লা শরবতের ঢঙ্গে সোল্লাশে কহিলেন, “আরে সেইটা এমন কি আর ব্যাপার। শুধুমাত্র ব্যাটে বলে দস্তুরমতো হইলে পুকুর কেন, পুকুর ছাপাইয়া সরিষাখেত ভাঙ্গাইতে পারি। আর এইসব ছেলে-ছ্যাঁচড়ের দল, রাষ্ট্রময় ভিক মাঙ্গিয়া বল ক্রয় করিয়াছে। ইহাদের বল হারাইয়া কি এমন উপকার হইবে বল?”
খানিকটা দম লইয়া পরক্ষনেই তাহাদের পুনরায় কহিলেন, “কিন্তু তোমরা কী জান, সেইদিন কি কান্ড করিয়াছিলাম?”
মেয়ে দুইতিনজন সাগ্রহে ব্যাপারখানি জানিতে চাহিলে তিনি বলিলেন, “সেইদিন শামসু-কলোনীর পোলাপান আমারে হায়ার করিয়া লইয়া গেল ওদের হইয়া খেপ খেলিবার জন্য। সেইখানে বিপক্ষের বোলার সবগুলারে এমন মর্মন্তুদ মার মারিলাম যে বল সারাটা সময় আসমানেই চড়িয়া বেড়াইল, একরত্তি ঘাসের দেখাও পায় নাই।”
শুনিয়া আমি একটু বিষম খাইলাম। আমি ইশকুল হইতে ফিরিবার পথে সেই ম্যাচের খানিকটা দেখিয়াছিলাম, সেইখানে উনারে গোটা দশেক বল অপচয় করিয়া ডাক মারিতেও দেখিয়াছি। কিন্তু এইখানে সে ললনাসপ্তকের সম্মুখে একের পর এক যেইভাবে গুল মারিতেছিল, দেখিয়া মেজাজ চড়িয়া গেল।
দক্ষিন দিক হইতে মুখ সরাইয়াই রুবেল ভাই আমাদের বলিলেন, “ওই ছোকরার দল, আরো কয়টা বল করত দেখি, পিটাইয়া বিলেতে ব্লেয়ারের কাছে পাঠাই”
বল আরো বার দশেক ছুঁড়িলাম আমি আর আমার দোস্তেরা। ফলাফল একই। বলের উপর জড়ানো টেপ ফাটিয়া চৌচির, আর রুবেল ভাইয়ের আরও খানিকটা নায়কত্ব-প্রাপ্তি।
এরপর ঘটিল সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আমি বল হাতে লইবার আগে পকেট বিচড়াইয়া টেপ বার করিলাম। বলের উপর আরো কয়েক পরত টেপ পেঁচাইলে বলটা আরো অধিক মোটা আর ওজনদার হইয়া উঠিল। তারপর লম্বালম্বি একপ্রস্থ টেপ আঁটিয়া খাঁটি ক্রিকেট বলের মত ‘সিম’ বানাইয়া লইলাম।
অরুপ জিজ্ঞাস করিল, “কিরে, এইভাবে টেপের শ্রাদ্ধ করিতেছিস কেন? এই জঞ্জালটাতো পিটাইয়া টেপে চীড় ধরাইবে”
-“আরে, বলটা যদি খানিকটা ভারি হয়, তবে ভাল পেস পাইবে। শালায়, বলে পলক দেওয়ার আগে ঝলক মারিয়া উইকেট ভাঙ্গিয়া লইবে।”, জবাব দিলাম আমি
“আরে ধুর, ছাড়িয়া দে। ব্যাটারে কয়েকটা লুলা স্পিন করিয়া দে। মারিয়া বিদায় হউক”
কিন্তু আমি টেপ পেঁচাইলাম। এইবার স্বাভাবিকের চাইতে কয়েক কদম বেশি স্টেপ লইয়া বল মারিতে প্রস্তুত হইলাম। মাথায় একটা আইডিয়া জাঁকিয়া বসিল। যেকোন মূল্যে পিছনের একটা উইকেট উপড়াইতে হইবেই, কিন্তু কিভাবে জানিনা। এইবার পাকিদস্যু শোহেব আকতারের মত গা ঝাড়া দৌড় লাগাইয়া, সমস্ত শক্তি ঝাড়িয়া বল মারিলাম। মুখ হইতে আওয়াজ বাহির হইল “আঁ”।
দেখিলাম বলটা কেমন জানি বিষদ একটা বাঁক খাইল। মুহুর্তে ভাবিয়াছিলাম আমার মধ্যে ডেমিয়েন ফ্লেমিংএর আত্মা আসিয়া ভর করিয়াছে হয়তো। পরে অবশ্য জানিয়াছি, তাহা পিচের উপর পড়িয়া থাকা ছোটট একখানি কংক্রিটের টুকরার ইন্দ্রজাল। যাহাই হউক, যাত্রা পথে বলটা ছোট্ট লজ্জারাঙ্গা আরক্তিম কংক্রিটের টুকরায় চুমু দিয়া কেমন একটা পৌরুষপ্রাপ্ত হইলে যেন। দৃষ্টিগ্রাহ্য বাঁক এবং ততোধিক দৃষ্টিভ্রমকর বেগ লইয়া সটান করিয়া রুবেল ভাইয়ের ব্যাটের ফাঁক গলিয়া গেল সেটা। আমি প্রায় হাঁকিয়া উঠিলাম – “বোওওওল্ড”
নাহ! যাহা হইল, বোল্ড হইলে তাহার চাইতে ঢের বেশি ভালই হইত। বৃষভ শক্তি লইয়া, ব্যাটরে ফাঁকি দিয়া সেই বল সোজা গিয়া সদর্পে আঘাত করিল ভাইয়ের উরুসন্ধির জায়গাটা বরাবর। সঙ্গে সঙ্গে রিফ্লাকসিভ একশনে রুবেল ভাই হাঁটুরে ‘দ’ এর মত বাঁকাইয়া সম্মুখে ঝুঁকিয়া গেলেন। ফলে যাহা হইবার তাহাই হইল, বল বেরসিকের মত দৃষ্টিকটু ভাবে ঠিক ওই জায়গায় সাঁটিয়া বসিয়া রইল। বল অনেক মোমেন্টাম লইয়া বড়ই স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্ধিত আঘাত হানিয়াছে, তাই রুবেল ভাই ঠিক ওই অবস্থাতেই নাকে হাত, দিয়া চোখ উল্টাইয়া, সামান্য কাত হইয়া, জায়গাতেই শুইয়া পড়িলেন। বেয়াদপ বল; এখনো বিশ্রীভাবে রুবেল ভাইয়ের গুটানো উরুযুগলের প্রশ্রয়ে পূর্বের জায়গাতেই বহাল রহিয়াছে। আমরা ঠিক এই প্রান্ত থেকে রুবেল ভাই আর সেই বলকে ঠিকঠাক দেখিতেছি, সন্দেহ নাই উপস্থিত বাদবাকি সকল দর্শকও দেখিতেছেন। তিনি পড়িয়া কাতরাইতেছেন। ভাইসাহেবের নীল ট্রাউজারের পটভূমিতে রক্তাভ টেপ আস্তীর্ন বলটা যেন ফুটিয়া রহিয়াছে। ঠিক যেন বৃটিশ রাজের নীলক্ষেতে, আকাশ হইতে আচানক উল্কাপাতে লোহিত তপ্ত দাবাগ্নি ভর করিয়াছে। দাবাগ্নির দহনে- নীলক্ষেত পুরাই ভস্মভূমি...
ছেলেরা ধরাধরি করিয়া রুবেল ভাইরে বাসায় পৌছাইয়া দিল। আমিও একটু বিব্রত হইয়া মানে মানে কাটিয়া পড়িলাম। নারীদের প্রতিক্রিয়া আর দেখা হয়নাই। তবে যতদূর জানি, রুবেল ভাই পরে অনেক মাস আর খেলায় বাঁধ সাধিতে আসেন নাই, এই ব্যাপারে উনার মনস্তত্ব উনিই ভাল বলিতে পারিবেন। আমিও অনেকদিন মাঠের ঘাস মাড়াই নাই, পাছে না আবার রুবেল ভাইয়ের সামনে পড়ি আর উনি না আবার রাগে ফুঁসিয়া আমারে ঘাঁ কয়েক বসাইয়া দেন।
ধৈবত
মন্তব্য
আপনি লেখেন ভালো। ঘটনাটাও করেছিলেন বেশ। একটাই বক্তব্য, সাধুভাষাটা লিখছেনই যদি তো আরেকটু জবরদস্ত করেই লেখেন।
ব্যাপারটা একটু খোলসা করলে ভাল হয়। আপনি কী গুরুচন্ডালী দোষ আরেকটু মনোযোগ দিয়ে এড়ানোর কথা বলছেন ??
ধৈবত
দেরি করে উত্তর দেওয়ার জন্য ক্ষমা করবেন।
উম, সেটাও খানিকটা ধরতে পারেন। সাধু ভাষায় লেখা হল গম্ভীরভাবে রসিকতা করার মতন। আপনার লেখার ধরনে আমার মনে হয়েছে গাম্ভীর্যটা লঘু হয়ে যাচ্ছে জায়গায় জায়গায়। তা আপনার লেখার হাত ভাল, নিশ্চয়ই পরেরটায় ঠিক করে নেবেন। বিশেষ করে, যখন সাধুভাষাটাই আপনার ট্রেডমার্ক করে নিতে চাইছেন (আমার মনে হল, এরকম পরপরই লিখছেন দেখে)।
আর আমার আধা-সাধু ভাষায় লেখা এই পোস্টটি দেখে ভাষা বা অন্য বিষয়ে সমালোচনা করলে আনন্দিত হব।
পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
অজ্ঞাতে কিছুটা ভুল হয়ে থাকলে সেটা আমারই দায়।তবে, লেখা পুরোটা শেষ করার পর, আবার পড়া হলে অতিরিক্ত সাধুভষাগত গাম্ভীর্যের কারণে নিজের কাছেই লেখাটাকে খানিকটা রাশভারি মনে হয়, তাই ফাঁকে ফাঁকে চলিত আর সরল প্রাকৃত ভাষা ঢুকিয়ে দেবার একটা প্রয়াস আমি সজ্ঞানেই করছি।এক্ষেত্রে সাহিত্যের মান কতটা ক্ষতি হয় জানিনা, তবে আমার মনে হয় এধরনের গুরুত্ব-লঘুত্বের গ্রহনযোগ্যতা পাঠকের অভ্যাস সাপেক্ষ।
আপনাকে আবারো সংখ্যাহীন ধন্যবাদ
ধৈবত
পরিসংখ্যানের মানুষকে সংখ্যাহীন কিছু দিলে মুশকিল, কী বলেন?
আমি একন আর সচলে অতিথি লেখক হিসেবে কমেন্ট করতে পারি না
লেখা জুস হইসে। তয় প্রব্লেম হহইলো, তোর লেখা পড়লে নিজের লেখালেখির উপর আস্থা হারিয়ে ফেলি
মজা লউ??
মজা না লইয়া লেখ একটা কিছু, পরীক্ষার জন্য পইড়া কিতা হইব ??
ধৈবত
লেখাটা দিব্যি হয়েছে, তার একটা নমুনা তো দিলামই, তবে আমার ধারণা বেশ কিছু স্থানে লেখক তার মস্করার লাগামটা একটু টেনেই ধরেছেন। তা বাবা লিখেচই যখন, তখন এত রয়েসয়ে না লিখে আরেকটু খোলাখুলি বললেও তো পার, নাকি?
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
মেহমান মানুষ, বেশী মস্করা করলে আবার যদি ওস্তাদেরা লাইত্থাইয়া বাইর কইরা দেয়..
তোরে ধইন্যা পড়নের লাইগা
ধৈবত
তুমি হালায় মরিনহো একটা
ভালো হইসে।
ধৈবত
ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলার সময় এমন ঘটনা অহরহ অনেক ঘটত। তবে আমার বরাত শুধু পোয়াবারো না মনে হয় একেবারে মণ-বারো ছিল যে কখনও এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়িনি। কিন্তু যার এমন অবস্থা হত তাকে নিয়ে পড়তাম বেকায়দায়। না পারি হাসতে, না পারি তার জন্যে কিছু করতে। এদিকে ইজ্জতসহ বংশের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি!!!
সেসময় আমাদের কিছু মারদাংগা খেলোয়াড় ছিল যারা বোলারকে কোনো মানুষের জাত বলে গণ্য করত না। তাদের মুহুর্মুহু ছক্কা হাকানো দেখে আমার মনে হত এটা মনে হয় নিতান্ত ঢোক গেলার মতই সহজ। হায়!!! আমি আমার ক্লাসের হয়ে স্কুলে থাকতে কখনো সেই ঢোক গিলতে পারিনি।
লেখা নিয়ে কিছু বলার ভাষা নেই আমার। অতি সাধারণ এসব রোমাঞ্চকর শৈশবস্মৃতিকে এমন অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তোলা তোমার পক্ষেই সম্ভব।
-অতীত
প্রথমেই অতীত ভাইকে ধন্যবাদ
বসে না থেকে তাড়াতাড়ি হাত পা ঝেড়ে একটা "অন্ডকোষ পন্ড" হওয়া জাতীয় স্মৃতিচারণ লিখে ফেলেন না। পড়েটড়ে পরীক্ষা দিতে যাই
ধৈবত
লেখা ভালো লাগলো
ধন্যবাদ
ধৈবত
মারাত্মক হইছে। একটানে পড়ার মতো। টেপ টেনিস যায়গামতো লাগা সেইরকম অভিজ্ঞতা। আমি একবার এই নিদারুণ অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছিলাম।
পুরা ঘটনার একটা জিনিস বুঝলাম না। রুবেল মিয়া এত তুখোড় ব্যাটসম্যান হয়েও হায়ারে খেলতে গিয়ে ১০ বল নষ্ট করে ডাক মারা খাপে খাপ মেলে না। বরং আম বাগানের প্লেয়ার বড়ো বাউন্ডারির মাঠে প্রথম বলেই ছক্কা হাকাঁইতে গিয়া কট হইলে ঘটনা কম প্যাঁচ খায়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
স্লামালিকুম বলাই দা
ধইরা লন, আমরা তখন সেভেন-এইটে আর রুবেল মিয়া তখন আইলে-বিলে সব পাশ কইরা লাইসে। তাইলে বয়সের পার্থক্যের এই কারনে কিন্তু একেকজন ক্ষেত্রবিশেষে জইসুরিয়া, শেবাক- ইত্যাদি বস্তু বইনা যাইতে পারে..
আর আপনে এই অভিজ্ঞতার শিকার আর আমি 'রুবেল মিয়া'র ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার শিকারি
আপনেরে অনেক থ্যাঙ্কু
ধৈবত
ধৈবত, এইসব গান আবাল বয়স থেকে চিন-পরিচিতদের সামনে গাইলে আরো ভাল শুনাইত না !?
গল্পের কাহিনী যতই অতি-রঞ্জিত হোক না কেন; লেখা ভাল হইছে।
দৃপ্র
তুই কি মনে করিস আমি গুল মারিতেছি রে পামর?
তবে শুন, ঐ বেলায় তুই সর্বদা আদিরসাত্মক কথামালায় মশগুল থাকিতি ফলে ক্রিকেটকলাপ তেমন বুঝিতি না বলিয়াই সবিস্তারে উহা তোরে বলা হয় নাই।
ধৈবত
শুন, তুই যেই বয়সে জাম্বুরা-কদবেল লইয়া সাধনা করিতি, সেই বয়সে থাকিতেই পায়ে প্যাড, মাথায় হেলমেট আর অ্যাবডোমিনাল গার্ড জায়গা মত আঁটিয়া ডিউস বলে প্র্যাক্টিস করিবার সুযোগ আমার আসিয়াছিল। কেবল ইচ্ছা ছিল না বলিয়াই কিছু করা হয় নাই।
আর তোর রুবেল মাস্তানের মত ঢের গল্প আমিও "আনিচ-মুরাদ" কে নিয়া ফাঁদিয়া দিতে পারি।।
দৃপ্র
ধৈবত
নতুন মন্তব্য করুন