অনেকদিন পর গ্রামে ফিরল রতন। সেই বাবার মৃত্যুর পর এক পুতুল নাচিয়ে হয়ে এক যাত্রাদলের সাথে ভিড়েছিল তারপর অনেক গ্রাম ঘুরলেও নিজের গ্রামে আর ফেরা হয়নি।আর রতনের খোঁজ করবার মত গ্রামে কোন আত্মীয়স্বজনও ছিলনা। এবার অনেকদিন পর বর্ষার বিরতিতে কোন অজানা টানেই গ্রামে ফেরত আসলো। গ্রামে ঢোকার একটু পরেই একটি দোতালা বাড়ি দেখে রতনের কৌতুহল হলো। তার যতটুকু স্মৃতি তাতে দোতালা কেন পাকা বাড়ি করারই কোন সামর্থ্য কোন গ্রামবাসীর ছিলো না। ভাবতে ভাবতেই বাড়িটার উঠোনে চলে আসে রতন। আরে সামনের বারান্দায় বসা ওটা মইত্যা রাজাকার না? ৭১-এ পাকিস্তানি মিলিটারির সাথে হাত মিলিয়ে অনেক মানুষের সর্বনাশ করেছিল শয়তানটা। দেশ স্বাধীন হবার অনেকদিন পরে কোথাও থেকে আবার ফিরে এসেছিল।লোকরা ওকে প্রাণে না মারলেও একঘরে করে রেখেছিল, কিন্তু সেই থেকে তার আজ এই অবস্থা কিভাবে হয়!
রতন যখন রাগে চিড়বিড় করছে তখন বারান্দা থেকে কর্কশ স্বরে জানোয়ারটা হাঁক দিলো “অ্যাই কে রে তুই, আওয়াজ না দিয়া চেয়ারম্যানের বাসায় ঢুকস? তোগো জুতা মাইরা লম্বা কইরা দেওন দরকার!” রতনের মাথায় কি যেন চিন্তা খেলে যায়, মুচকি হেসে অত্যন্ত নরম ভাবে বলে ওঠে, “সালাম হুজুর! আমার নাম রুস্তম, জাদু দেখাই আপনাকে জাদু দেখাইতে আসছিলাম যদি খুশি হয়ে কিছু বকশিশ দ্যান।” মইত্যা বলে ‘কি যাদু দেখাবি তুই, ভালা যদি না হয় তাইলে আমারে ডিসটাব দেওনের মজা হাড়ে হাড়ে টের পাবি।’ রতন বলে, “হুজুর আমি পশুপাখিদের কথা কওয়াইতে পারি। এই যে দেখেন।” এই বলে রতন এগিয়ে যায় উঠোনের এক কোণায় শুয়ে থাকা বিড়ালটার দিকে, জিজ্ঞেস করে, কিরে “বিলাই তোর মালিক কে? বিড়ালটা উত্তর দেয় আমার মালিক অই হারামজাদা মইত্যা, আমারে ইন্দুর মারার জন্য রাখসে কিন্তু ইন্দুর না পাইলে আমারে কিছু খাইতে দেয়না তবে আমিও কম না অর দুধের বাটি, মাছের বাটি সব জায়গায় মুখ দেই যদি ব্যাটা ডিপথেরিয়ায় মরে।” রতন আড়চোখে চেয়ে দেখে মইত্যার চেহারা লাল হয়ে গেছে কিন্তু চোখগুলো যেন বিস্ময়ে ঠিকরে বেরিয়ে আসবে।
না থেমেই রতন এগিয়ে যায় বারান্দায় বাঁধা কুকুরটার দিকে, কুকুরটাকে জিজ্ঞেস করে, “কিরে কেমন আছিস?” অবিশ্বাসের সাথে মইত্যা দেখে তার কুকুরটা কথা বলে উঠলো, “আমি ভালো নাই, এই হারামজাদা আমারে প্রতিদিন পিটায়, গ্রামের লোকগো ঠকাইয়া এত টাকা পয়সা বানাইসে তাও আমারে ঠিকমত খাইতে দেয়না; কোনদিন যদি জলাতঙ্ক হয় তাইলে সবার আগে আমি আইসা ওইটারে কামড় দিবো। এই শুনে মইত্যা আর থাকতে না পেরে কুকুরটাকে কষে একটা লাথি দিল, আর রতনের দিকে তকিয়ে চিৎকার করে বললো, “তুই এক্ষুণি বাইর হ।” রতনের রাগ তখনো যায়নি সে এগিয়ে গেল উঠোনে বাঁধা ছাগলটার দিকে।
রতনকে ছাগলের দিকে আগাতে দেখে হঠাৎ করেই মইত্যা ফেকাসে হয়ে গেল। ফ্যাসফ্যাসে গলায় বললো, ছাগল মিছা কথা কয়! ছাগল মিছা কথা কয়!”
পাদটীকাঃ এই ধারণাটা দ্রোহীদার পুরনো ব্লগ পড়ে পাওয়া।
নিভৃত সহচর
মন্তব্য
বুঝি নাই।
বুঝো নাই? ভাইজান মনেহয় মইত্যারে দিয়া ছাগলের শ্লীলতাহানী ঘটানোর দিকে ইংগিত করতাছেন।
কিন্তু আমার টেনশন অন্য জায়গায়, মেম্বর কবে আবার এই উচ্চমার্গীয় শ্লীলতাহানীর কাহিনি লিখছিলো?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মুর্শেদ ভাই, ধুগোদা ঠিক ধরে ফেলছে ঘটনা কি।
আর ছাগলের শ্লীলতাহানির কাহিনী দ্রোহীদার না। উনি প্রচলিত একটি কৌতুককে অন্য পটভূমিতে লিখেছিলেন http://drohee.blogspot.com/2007/05/blog-post_10.html আমি ওই পোস্টটা পড়েই এই আইডিয়া পেয়েছি।
ধন্যবাদ অতীত! একদম ঠিক কথা বলেছেন। এইগুলা খালি দেখতেই মানুষের মত আর কোন কিছুতেই মিল নাই।
-নিভৃত সহচর
ভালো লিখেছেন।
তবে মইত্যাদের দ্বারা সবকিছুই করা সম্ভব মানুষ হওয়া ব্যতীত। জাদুর মাধ্যমে তা দেখানো হোক বা না হোক।
-অতীত
এইটা ক্যাঠা? মাহফুজ নাকি? সারারাত জাইগা জাইগা অবস্থা বেশ কাহিল মনে হয়?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
না ভাই আমি মাহফুজ না, ওই নামের কাউকে চিনিও না।
-নিভৃত সহচর
ঠিকাছে, মাহফুজ না হইলে নাই, চেনার দরকার কি?
নয়া হইলে স্বাগতম, আর প্যারার মাঝে ফাঁক দিয়েন আরেকটু, আর লেখার শুরুতে [justify*] ...লেখা ... [/justify*] দিয়েন, তাইলে দেখতে ভালু লাগে। আর বুঝতেই পারতেছেন তারাটা হইবো না। অবশ্য এখন তো টুলবারে লাইন এলাইনমেন্ট বাটন আছে। এত কষ্ট না করলেও চলবে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ । আমি কিন্তু বেশী নয়া না। অনেকদিন ধরেই পড়ি কিন্তু এই প্রথম লিখলাম।
বোতল মদ দু'টিই ভালো!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ! দেইখেন আবার নেশা না হয়
গল্পটা ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ!
-নিভৃত সহচর
নতুন মন্তব্য করুন