ঢাবি'র নতুন কর্মসুচী ।। প্রত্যাহারের জন্য ডিজিএফ আই এর চাপ ও শিক্ষকদেরকে হুমকী

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ০৯/১২/২০০৭ - ৮:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..

ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কারারুদ্ধ শিক্ষক ও ছাত্রদের মুক্তির দাবীতে নতুন কর্মসুচী ঘোষনা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ।
কর্মসুচীর অংশ হিসেবে আজ রোববার ঢাবি শিক্ষকেরা প্রতিবাদী কালো ব্যাজ ধারন করে ক্লাশ নেবেন এবং আগামীকাল সোমবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হবেন ।
এই কর্মসুচী বাতিল করানোর জন্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা সমুহ বিশেষ করে ডিজিএফআই শিক্ষকদের উপর বিভিন্নমুখী চাপ ও হুমকী প্রদান করছে বলে জানা যায় ।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে গতকাল শনিবার ডিজি এফ আই এর তিন শীর্ষ কর্মকর্তা -ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এটিএম আমিন,কর্নেল আবু সালেহ,কর্নেল আলমাস রাইসুল গনি -বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন । সিনেট বিল্ডিং এ অনুষ্ঠিত এ সভায় উপাচার্য এসএমএ ফায়েজ,শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাজমেরী এসএ আলম, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মামুন আহমেদ,অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিকী,অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান সহ আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন । উপস্থিত একজন শিক্ষকের সুত্রে জানা যায়-ডিজি এফ আই অফিসাররা শিক্ষকদের কর্মসুচী প্রত্যাহারের জন্য প্রথমে অনুরোধ জানান । এই অনুরোধ প্রত্যাখান করে ,শিক্ষক ও ছাত্রদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করা হলে পরে প্রচ্ছন্ন হুমকী দেয়া হয় ।

সন্ধার দিকে আবার শিক্ষা উপদেষ্টা আইয়ুব কাদরীর সাথে উপাচার্য্য ও শিক্ষক নেতাদের বৈঠক হয় । বৈঠক শেষে তাজমেরী আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেনঃ- ' শিক্ষা উপদেষ্টা ও সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর আশা করছি সরকার আমাদের দাবীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করবেন এবং দ্রুত কারাবন্দী শিক্ষক ও ছাত্রদের মুক্তি দেবেন । শুক্রবারের সাধারন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি কর্মসুচী গৃহীত হয়েছে । পরবর্তী সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া এই কর্মসুচী বদলানো যাবেনা । রোববার সন্ধায় আরেকটি জরুরী সাধারন সভা ডাকা হয়েছে । সেখানে আমরা সরকারের মনোভাব ও পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী কর্মসুচী গ্রহন করবো '

এদিকে নম্বর গোপন রেখে কল করে ও মেসেজের মাধ্যমে শিক্ষকদের হুমকী দেবার অভিযোগ পাওয়া গেছে । কালোব্যাজ ধারন ও ঘোষিত সমাবেশ বন্ধ করার জন্যই এইসব হুমকী দেয়া হচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তার মোবাইল ফোনে আসা মেসেজ দেখান, যেখানে লেখা হয়েছেঃ
ক্যাম্পাস রাজনীতি বন্ধ করো,শিক্ষক সমিতির কর্মসুচী প্রত্যাহার করো ।

সংবাদ সুত্রঃ
ই-বাংলাদেশ


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দুঃসাহস দেখে অবাক হয়ে যাই। দুধ-কলা দিয়ে কী কালসাপ পুষছি আমরা।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়র শিক্ষকদের কারাদণ্ড দিয়ে এক ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছিলো। কৌশলটা সম্ভবত এরকম ছিলো যে এবার শিক্ষকরা ক্ষমা-টমা চেয়ে ফেলবেন এবং সরকার তাঁদের মুক্ত করে দিয়ে বাহবা কুড়াবে। কিন্তু শিক্ষকরা সে সুযোগ সরকারকে দিতে চান না বলে মনে হয়। এখন ক্ষ্যাপা ষাঁড় মরীয়া হয়ে গুঁতো মারতে আসবে, তাতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। এই ষাঁড়ামি আর কতোকাল দেখতে হবে, কে জানে!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ঘটনা প্রবাহে মনে হচ্ছে ঢাবি'কে কেন্দ্র করেই শেষ পর্যন্ত ঘটনা এগুবে । অতীতে ও যেমন হয়েছে । ঢাবি'র শিক্ষক সমিতি ও ছাত্ররাজনীতিকে জামাতীদের আয়ত্তে না আনা পর্যন্ত জল্পাইদের জন্য হুমকী থেকেই যাবে ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নিঘাত তিথি এর ছবি

জুবায়ের ভাইয়ের কথাটাই আমারও মনে হয়ছে যে, এই সরকারের এক উপদেষ্টা যখন বলে যে, এখনও শিক্ষকদের প্রতি সহানূভুতিশীল হবার সুযোগ সরকারের রয়েছে যদি তারা ক্ষমা চান, বা আবেদন করেন।
এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার আন্দোলন হচ্ছে, এটা কতদূর হতে পারে, কি ফল হতে পারে--এইসব আশংকা করেই এখন জলপাইয়ালা ভয় পেয়ে যাচ্ছে বোধ করি। তাই আগেভাগেই হুমকি।
ইতিহাস বলে ঢাবি'র এই আন্দোলন, প্রতিবাদ ব্যর্থ হবে না, সেই আশায় আছি।

বাই দ্য ওয়ে, তাজমেরীর এই রূপ তো জীবনে দেখি নাই! মানুষ হয়ে গেলো নাকি?!!! যদিও বক্তব্যের শেষ লাইনে "কিন্তু" লাগিয়ে রেখেছে। দেখা যাক।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

বিপ্লব রহমান এর ছবি

আপনাদের সঙ্গে একমত।। আর জলপাইয়ের ক্ষমা চাওয়ার আব্দারটিকে আমি উদ্ধত্ব হিসেবে দেখছি।...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

FZ এর ছবি

There will be attempts to divide the teachers by pressure and intimidation. I hope the teachers can stand united, irrespecitive of their political bias, against the injustice done to their fellow colleagues.

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

একটা আন্দোলনের রুপরেখা এবারে ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে।
আরেফীন

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শিক্ষকদের মুক্তি চাই।
সেনাশাসন নিপাত যাক।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ঝরাপাতা এর ছবি

এই দিন দিন না আরো দিন আছে,
বুঝবো কখন ফকা-মঈনু বাহে?


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

মাহবুবুল হক এর ছবি

যাদের পায়ে হাত দেয়ার যোগ্য তারা নয়, তাদের গায়ে হাত দেয়ার
পশুত্ব তারা দেখিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্রতিনিধিস্থানীয়দেরকে শাস্তি দিয়ে জামাতীকরণের চূড়ান্ত রূপ সেখানে দিয়েছে এ সরকার । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও এমন বিভাজন ও শাসন পদ্ধতি চালানো হতে পারে। দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে এ সরকারের রূপ যে জামাতীদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ তা পাগলেও বোঝে। সময় আসছে আরেকটি গণ আন্দোলন গড়ে তোলার। এবারের আন্দোলন হবে স্বাধীনতাযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা । স্বাধীনতা বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করা।

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

শিক্ষকরা মুক্তি পাক!
জল্পাইতন্ত্র নিপাত যাক!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঢাবির আন্দোলনের হুমকিতেই কাজ হয়েছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।