এবার দেশে আসার পর অনেকগুলো আনন্দময় ঘটনার একটি হলো অতিদ্রুত নেটসংযোগ পাওয়া ।
ঘরের পাশে গ্রামীন ফোনের নতুন কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার । আসার পরদিন কাঁধে ল্যাপ্টপ ঝুলিয়ে বিস্মিল্লাহ বলে ঢুকে গেলাম সেই সুশোভন অফিসে ।
চমৎকার স্মার্ট যে তরুন এগিয়ে এলো হাসিমুখে,অবাক করে দিয়ে সে সালাম জানালো । ছেলেটা আমার ছাত্র ছিলো!
সো কাজ ঝটপট । কফি খেতে খেতে সে আমার মোবাইলে সেটকে মডেম বানিয়ে নেট সংযৈগ করে দিলো । ১১৫০ টাকায় সারামাস আনলিমিটেড ইন্টারনেট!
আমাকে আর পায় কে? প্ল্যান করে ফেললাম যতোদিন দেশে আছি,যেখানেই যাই একটা সিরিজ ব্লগিং করে যাবো ।
দুদিন কাটলো ও ভালো ।
তারপর?
হা হতোস্মি! যা স্পীড...
সাইটওপেন করে এক পাতা থেকে আরেক পাতায় যেতে যেতে চা ঠান্ডা হয়ে যায় । ওখানে ৭ এম বি পি এসের নেত কানেকশন ইউজ করি তবু মাঝে মাঝে মনে হয় আরো দ্রুত হোক সব । আরো দ্রুত...
কোন এজেন্ডা নেই এই সময়টাতে । বই প্রকাশ হলোনা শেষ পর্যন্ত । তাই এ নিয়ে ব্যস্ততা ও নেই । শহর সিলেট এখন স্মৃতির ছাইদানীমাত্র । বন্ধুদের প্রায় সবাই দেশএর বাইরে । তাই সেরকম তুমুল আড্ডা ও দিচ্ছিনা । একেবারে নিতান্ত ঘরগেরস্থালী । তবু সময়,সময় খুঁজে পাচ্ছিনা । ঘর থেকে বেরুলে রিক্সা খোঁজা,ট্রাফিক জ্যাম এইসবে কেটে যাচ্ছে দীর্ঘ অংশ ।
অর্থনৈতিক অবস্থা আগের যে কোন সম্যের চেয়ে খারাপ । একজন রিক্সাওয়ালার সাথে কথা হলো । লোকটা হাস্পাতাল গেটে প্রায় ২৫ বছর ধরে দোকানদারী করতো । অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় তার দোকান ভেংগে দেয়া হয়েছে । জমানো টাকা দিয়ে রিক্সা কিনেছে । প্রতিদিন রোজগার করে প্রায় আড়াইশো । ৩৫ টাকা কিনতে হয় চার কেজি চাল । রোজগারের বেশি অর্ধেক শুধু চাল কিনতেই ফুরায় ।
পাড়ার মুদি দোকানের সাথে আমাদের বহুবছরের লেনদেন ছিলো । সারা মাসের বাজার তারা বাকীতে দিয়ে দিতো । পরের মাসের শুরুতে আগের মাসের সব টাকা দেয়া হতো । পাড়ার কোন দোকানই এখন আর বাকী দিতে পারছেনা ।
মানুষ আগের চেয়ে আরো বেশী ভেংগে গেছে । কোথাও কোনো সংগঠন নেই । ঘুরে দাঁড়ানো নেই । মানুষ বড় বেশী একা হয়ে গেছে । একাকী নিঃসংগ মানুষেরা ব্যক্তিগত শোকভোগে দিন কাটাচ্ছে । বাইরে থেকে যতো সহজে সবকিছু নিয়ে কথা বলা যাচ্ছে,দেশের ভেতর থেকে একেবারেই না । ভয়ংকর নীরবতা,সুনশান চারদিন ।
মানুষ হিসেবে আমি খুব প্রত্যয়ী না । আমি লেগে থাকিনা । আমি সহজে বিরক্ত হই,বিরক্ত হয়ে ছেড়ে দেই । এতোসব বিরক্তি মাথায় নিয়ে কি আমি ব্লগিং করতাম?
সম্ভবতঃ না ।
দেশে থেকে এতো বিরক্তি,এতো চাপ,এতো ধীরগতির মাঝে ও যারা লেখালেখি করেন,ব্লগিং করেন-নিজেদের কথা বলেন,দেশের কথা ভাবেন- তারা সময়ের সাহসী সন্তান ।
তারা আমার অভিবাদন গ্রহন করুন ।
মন্তব্য
কথা ঠিক।
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
তাও ভাল টেলিটক সাহেবেরে ব্যবহার করে দেখেননি। তাইলে তো আমার মত প্রতিদিন ১৮ বার পাচঁ তালা থেকে লাফ দিতে ইচ্ছা করতো। সেদিন সচলায়তন এর প্রথম পাতা আসতে ১১ মিনিট লাগছে। আর একদিন ২৩ মিনিট ধরে বসে ছিলাম। কিন্তু সে আসে নাই।
রায়হান আবীর
শোক সামলে উঠবো ভেবেছিলাম। আপনার লেখা দেখে আবার জেগে উঠলো। প্রতিদিন পথে যে কত কর্মঘন্টা নষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছি ... ভাবতেই নিজের দেশের উপর ঘৃনা হয় :( (কিছু করার নাই)। শুধু কি রাস্তায় কর্মঘন্টা? ... ধুলি ধুসরিত রাস্তা পেরিয়ে কর্মক্ষত্রে বা বাসায় যাওয়ার পর ক্লান্তি দুর করতে নষ্ট হয় আরো কিছু সময়।
নেট স্পীডের ব্যাপার তো আছেই। বাইরে থাকতে যে সময়ে ১০ টি মেইলের জবাব দিয়ে দিতাম .. এখানে একটা মেইল খুলতেই সেই সময় লাগে.. জবাব দেয়া তো পরের ব্যাপার।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
- সৃষ্টিকর্তা আপনাদের সবাইকে স্পীড দান করুন, আমীন।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হায় হায়! ...বইটা বেরোবেনা? ...
যাক ভালোই হলো, ব্যস্ততা যত কম, মোরশেদ ভাইর বিয়ে করার চান্সটা তত বেশী .... শুভকাজটা এবার সেরে ফেলুন,বস্ ;)
ভালো সময় কাটুক দেশে ....
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
নতুন বিয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলছে বাদশা ভাই আপনাকে, কাজেই কথা সত্য :)
বেশি শালী দেশে বিয়ে করে ফেলুন
কয় কী??
মোরশেদ ভাইয়ের সংসারে আগুন লাগানোর চেষ্টা !
বিয়ে? আবার?!! :o
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
সর্বনাশ!! আমার তো ধারনা ছিল মোরশেদ ভাই এখনও বিয়ে করেনি ...তওবা তওবা... ;)
মিস করলাম নাকি কোন সুখবর?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
এই নিয়ে আমরা আছি।
আপনার সাথে কবে দেখা হচ্ছে?
..................................................................................
আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
জাতির প্রশ্ন - আপনার সাথে কবে দেখা হচ্ছে?
এই অধমরেও প্রশ্ন ।
নুরুজ্জমান মানিক
এখন একটা সময় ছিল। যখন নেট মানে ছিল 'জাল' ( মশারী, ঘরে মশা না ঢোকার বিশেষ ব্যবস্থা)। তাই ইন্টার 'নেট' পেয়েই আমি খুশি। স্পীড কম। এই যাঃ
- পরিবর্তনশীল
আমারও কিন্তু এমন মনে হত দেশে থাকতে। স্পিড ভালো-মন্দ তুলনা করার সুযোগই পাই নি তখন। ইন্টারনেট পেয়েই মহাখুশি ছিলাম। বাসায় ব্রডব্যান্ড কানেকশান ছিলো, তখনও মোবাইল কোম্পানীগুলো এরকম ব্যবস্থা করে নি। তাই আমার বন্ধুদের মধ্যে যে অল্পকজনের বাসায় ইন্টারনেট ছিলো, অধিকাংশরই ছিলো ডায়াল-আপ, আমার ব্রডব্যান্ড নিয়েই আমি মহা ভাবে ছিলাম। :)
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
অন্তর্জালের অন্তর্জ্বালা! :D
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনার পর্যবেক্ষণ ভালো লাগলো @ হাসান মোরশেদ।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
এইটা আমিও ভেবেছি। সময় যে কোন দিক দিয়ে চলে যায়। নেটের স্পিড তো এক ব্যাপার, অধিকাংশ দিন সন্ধ্যার পরে দেখা যেত নেটই নাই!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমার বাসা থেকে আমাকে যে ফোনটা ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিলো সেটা ছিল, সদ্য শেষ হওয়া প্রস্তরযুগের। ওটাতে ইন্টারনেট নেওয়া যাচ্ছিলো না।
বাংলাদেশে বসে যারা ব্লগিং করে তাদের লাল সালাম।
ঢাকায় আমার বাসা কল্যানপুরে। বাসায় জিপের ব্রডব্যান্ড কানেকশন নেয়া আছে (১২৮ কেবিপিস ব্যন্ডউইডথ মনে হয়)। আমিতো মাঝে মধ্যে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ভিডিও চ্যাট করে ফেলি!
ক্যামনে কি?
কি মাঝি? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন