যে শহরে ফিরিনি আমি-৪

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২১/০২/২০০৮ - ১২:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘূনধরা শেলফের ধুলিমাখা বইগুলোঃ

মনে আছে,এই শেলফটা বানিয়েছিলাম আমার প্রথম এবং একমাত্র টিউশনির টাকা জমিয়ে । এইচএসসি পাশের পরপরই এইচএসসির একজনকে পড়ানো শুরু করেছিলাম । পড়িয়েছিলাম পুরো দুবছর । সেই উর্মি এখন ডাক্তার ।

দেশে ফিরেছি প্রায় চার সপ্তাহ ।
আজ একটু অবসর পেলাম শেলফ এবং শেলফের বইগুলোকে স্পর্শ করার । এই বইগুলো আমার চেতন,অবচেতন,ভাবনা,স্বপ্ন,বিষাদ,বিষন্নতা,ভেংগে পড়া ও উঠে দাঁড়ানোর জোরালো সংগী ।

এইযে ছাইরংগা চামড়ায় বাঁধানো শঙ্খ ঘোষের কবিতা সংগ্রহ-মেজোমামার বিয়েতে কেউ উপহার দিয়েছিলেন । উপহার সামলানোর দায়িত্বে ছিলাম আমি এবং নির্দ্বিধায় এটা সরিয়ে ফেলেছিলাম নিজের জন্য । তারপর কতো দীর্ঘ সময় আমি বুঁদ হয়েছিলাম শঙ্খের এক একটা কবিতায়ঃ


হাতের উপর হাত রাখা খুব সহজ নয়
সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়
এ কথা খুব সহজ,কিন্তু কে না জানে
সহজ কথা ঠিক ততোটা সহজ নয় ।

পায়ের ভিতর মাতাল,আমার পায়ের নিচে
মাতাল,এই মদের কাছে সবাই ঋনী-
ঝলমলে ঘোর দুপুরবেলাও সঙ্গে থাকে
হাঁ-করা ওই গঙ্গাতীরের চন্ডালিনী ।

সেই সনাতন ভরসাহীনা অশ্রুহীনা
তুমিই আমার সবসময়ের সঙ্গিনী না?
তুমি আমায় সুখ দেবে তা সহজ নয়
তুমি আমায় দুঃখ দেবে সহজ নয়


বইয়ের প্রথম দিকের এক পৃষ্ঠায় নিজের হাতে লেখা তারিখ দেখছি ১২/০৫/৯৫ ,আর দুটো লাইনঃ-
'ভালবাসা মরে যায় শুধু স্বার্থের পাপ বেঁচে রয়
তবু মাঝে মাঝে 'বন্ধু' ভাবতে ভীষন ইচ্ছে হয়

মুন্নীর সাথে পরিচয়ের প্রথমদিকের গল্প এসব । ওর বাসায় প্রথম গিয়েছিলাম এই তারিখে । পকেটে পয়সা ছিলোনা । শেলফ থেকে প্রিয় এই বই তুলে নিয়ে গিয়েছিলাম ওর জন্য । নিজের হাতে লিখে দিয়েছিলাম ঐ দুই লাইন । ঐ মেয়ে আমার বন্ধু হয়েছিল । প্রায় ৮ বছর পর উপহার দেয়া ঐ বই আবার ফিরে এসেছিলো আমার শেলফে ,সেই সাথে বইয়ের মালকিন ও !

রুদ্রের কবিতার বই 'দিয়েছিলে সকল আকাশ' ,মলাট ছিড়ে গেছে অনেকখানি । ভেতরে রুদ্র ঝলমলিয়ে উঠে এখনোঃ

স্পর্শ করো আমি ভেঙ্গে যাই,ঝরে পড়ি ঘাসে,
নীলিমায় পাখা মেলি
বৈশাখের স্বপ্নার্দ্রকার্পাশ ।
নদী হোই ।
স্পর্শ করো,একবিন্দু জল হোই-অশ্রুজল ।।

বইয়ের প্রথম পাতায় হাতে লেখা তারিখ ২১/৩/৯২ । দেড়যুগ বড় দীর্ঘ সময় । সদ্য এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হওয়া এক কিশোরের কলেজ ব্যাগে তখন রুদ্র । দেড়যুগ সময়ে,সময় আসলে কতোটুকু বদলালো? সেই সময়ে এক উঠতি ক্যাডার বন্ধুর কালো ঝোলায় কাটা রাইফেলের পাশে দেখেছিলাম আল মাহমুদের সোনালী কাবিন ।

২৯/১/৯২ তারিখে এমসি কলেজের সাহিত্য সম্পাদকের সীল স্বাক্ষর দেয়া বই সুনীলের শ্রেষ্ঠ কবিতা । সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগীতার প্রথম পুরস্কার । মাত্র মাস খানেক আগে কলেজে ভর্তি হওয়া মফস্বল থেকে আসা কিশোর সাতটা ইভেন্টে প্রথম হয়ে সেবার কলেজ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ।
বইটার পৃষ্ঠা উলটাই । খুব প্রিয় কবিতাগুলোর নীচে কালো কালির আঁচড় টানাঃ

মুহুমুর্হু স্বপ্ন ভাঙ্গে,স্বপ্নে আমার ফিরে যাওয়ার
কথা ছিল,স্বপ্নে আমার স্নান হলোনা

--------

পৃথিবীতে এতো দুঃখ
মানুষের দুঃখই শুধু তার জন্মকাল ও ছাড়িয়ে যায়

---------
গহণ অরণ্যে আর বারবার একা যেতে সাধ হয়না-
তবু যেতে হয়
বারবার ফিরে যেতে হয় ।।

-----

এই তো হাতের কাছে আমাদের নিজেদের সৃষ্টি 'সহবাস' এর প্রথম ও তৃতীয় সংখ্যা । বাকী সংখ্যাগুলো হারিয়ে গেলো?
প্রথম সংখ্যার প্রথম গল্পই ছিলো লীলেন ভাইয়ের । দুর্দান্ত এক গল্প 'দাগ' । সুমন সুপান্ত,সুমন্ত আসলাম,পাঁপড়ি রহমানের গল্প ছিলো । সারওয়ার সরফরাজ বাবু ভাই কি চমৎকার ঝরঝরে গল্প লিখেছিলো । এই মানুষটার সাথে যোগাযোগ নেই কতো বছর? আফরিন আহমেদ-প্রিয় বন্ধু আমার চট্রগ্রামে শেষ দেখা সম্ভবতঃ '৯৯ এ । নিঃশ্বাসের মতো বন্ধুরাও চুরি হয়ে যায়!

তৃতীয় সংখ্যা শুরু হয়েছিলো মইনুল চৌধুরীর গল্প দিয়ে । মইনুল আমার শৈশবের বন্ধু, আরো মফস্বলতর ছাতকের ছেলে । অসম্ভব প্রতিভাবান এই ছেলেটা শেষ পর্যন্ত কিছুই হলোনা!
আকমল হোসেন নিপু, নিপু ভাইয়ের সাথে কথা বলা জরুরী ছিলো সময় করতে পারছিনা । মাসুদ রহমান-সুদর্শন এই বন্ধুটা ও হারিয়ে গেছে । এই সংখ্যা আরিফের একটা ভালো গল্প ছিলো 'মোহাম্মদ আলী একটু আগুন চেয়েছিলো' । অর্ণা অনুবাদ করেছিলো MARQUEZ এর Sleeping Beauty and the Airplane। এই মেয়েটা কেনো আর অনুবাদ করেনা,সে প্রশ্ন করার সাহস জাগেনা আমার ।

সত্তুর দশকে আসামের শিলচর থেকে প্রকাশিত লিটলম্যাগ 'শতক্রতু'র অনেকগুলোর সংখ্যা সংগ্রহে ছিলো । জীর্নদশা তবু ভালোবাসতাম । পুরনো বাতাসের ঘ্রান পেতাম ।
আজ শেলফ হাতড়িয়ে সেই শতক্রতুগুলো খুঁজে পাইনা আর । কেউ নিয়ে গেছে অথবা ঘরের লোকজন অপ্রয়োজনীয়,ছেড়াখোঁড়া ভেবে ফেলে দিয়েছে ।

কাউকে জিজ্ঞেস করতে ইচছে করেনা ।
এতোবছর ধরে জমিয়ে রাখা অনেক বই হারিয়ে গেছে,কষ্ট পেতে ও আর ইচ্ছে করেনা ।

এইভাবে কতোকিছুই তো গেলো ।
কষ্ট-টষ্ট ও তো আর আনলিমিটেড নয়!


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

ভালো লাগলো পড়ে। পুরনো বইয়েরা প্রত্যেকে এক একটা দিনের সাক্ষী।

আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা মনে পড়লো, এহমাদ ফারাজের,

আব কে হাম বিছরে, তো শায়দ কাভি খাবোঁ মে মিলেঁ,
জিস তারা সুখে হুয়ে ফুল কিতাবোঁমে মিলেঁ ...।

শুকনো ফুলের মতোই বইয়ের ভাঁজ থেকে এক একটা দিন লাফিয়ে ফিরে আসে। বইয়ের মলাট পাল্টায়, রোগা শেলফের সামনের সারি থেকে ঝকঝকে বিশাল শেলফের পেছনের সারিতে চলে যায় এক একটা বই, তাদের ভেতরে সেই স্মৃতিটুকু পাল্টায় না।

এই বিষন্নতাও গভীর আনন্দের আভাস নিয়ে আসে সাথে করে।

ভালো থাকুন হাসান মোরশেদ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরিফ জেবতিক এর ছবি

মনে পড়ে নাজিম হিকমত- আমি জেলে যাবার পর ...?
কবিতাটা কি আছে তোর কাছে এখনও ...সেই কুড়ি বছর আগের বইটা ?

রাজবাবুর সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছি গত পরশু দিন । হু , বাবু ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ হলো প্রায় ১২/১৩ বছর পর । স্টলে বই কিনতে এসেছিল এক ছেলে , সে-ই দিল নাম্বার । ধন্যবাদ মুঠোফোন ।

সজারু এর ছবি

চমত্কৃত হইলাম।
আপনার গদ্য লিখিবার ধরণটি খাসা।

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এই ধরনের গদ্যে আপনার কবি পরিচয়টি ফুটে ওঠে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অসাধারণ!!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- 'বিস্মৃত এই স্মৃতি আমার,
মৌনতার পাতায় বুনা
একটি পুরোন বই।
সেই বইয়েরই ভাজে আছে
পুরনোতার ছোঁয়া, আছে ভালোবাসার পরশ!'
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

স্নিগ্ধা এর ছবি

এইভাবে কতোকিছুই তো গেলো ।
কষ্ট-টষ্ট ও তো আর আনলিমিটেড নয়!

ভাগ্যিস নয় ! "সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়" - এমনকি সুখও নয়। অতএব কিছু কষ্ট থাকুক নাহয়। আপনার দেশ থেকে লেখা পোস্টগুলো খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি আর পড়তে পড়তে হঠাৎ খেয়াল করি কেন যেন হাসি'র মত করে ঠোট বেঁকে গেছে। হায়রে, সময়ের সাথে লড়াই করে কে কবে জিততে পেরেছে ?

হাসিব এর ছবি

- পুরনো বই সব ফেলে আসতে হয়েছে ।
- নানা সমস্যায় নতুন বইও কেনা হয়ে ওঠে না । বাকেট লিস্টে একটার পর একটা বই জমে পাহাড় হচ্ছে ।

থার্ড আই এর ছবি

ঝরঝরে লেখা। স্মৃতি কারত করে তুলেছে আমায়।
সবারই কম বেশী স্মৃতি বই নিয়ে....
বই পড়ার নেশাটা হয়েছিলো বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে, আর শেলফ গড়ার শখটাও ওখান থেকেই শুরু। বছর শেষে এববস্তা বই পুরস্কার... আর শেষ বই টা জমা না দিয়ে রেখে দেয়া !!
বিলেত আসবার সময় যে বিষয়টা খুব মিস করেছি আমার বই গুলো আনতে পারিনি... নিশ্চই আমার সোকেসে ধূলো জমেছে...
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কষ্ট কষ্ট! বইগুলোর জন্য প্রায়ই কষ্ট লাগে। কৈশোর, যৌবন মাখানো বইগুলো ধুলোর মাঝে হাঁসফাঁস করে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ধ্রুব হাসান এর ছবি

অনেক অনেক কিছু মনে পড়ে গেল শৈশবের, অনেক কিছুই বলতে ইচ্ছে হলো লেখাটা পড়ে কিন্তু বলা হলো না...... কারণ আমার অবস্থাও এই,
"পায়ের ভিতর মাতাল,আমার পায়ের নিচে
মাতাল,এই মদের কাছে সবাই ঋনী-
ঝলমলে ঘোর দুপুরবেলাও সঙ্গে থাকে
হাঁ-করা ওই গঙ্গাতীরের চন্ডালিনী ।"

...একেকটা দিন আসে একেক দিনকে খুন করে, আমরা প্রতিটি সকাল জাগি একেকটা স্বপ্নকে হত্যা করতে করতে!!

(আপনার লেখার সাথে আমার এক বন্ধু পিপলুর লেখার ও ভাব প্রকাশের দারূন মিল! আমরাও ৯২ তে এসএসসি পাশ করে শুরু করেছিলাম বুনতে আমাদের নতুন নতুন স্বপ্নগুলো এক এক করে...আহারে সময়! নাথিং কেন এক্সিষ্ট ইন দিস ফ'কিং লাইফ......!!)

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ছোট্টবেলায় অনেকেই নানা দুষ্টুমি করে বকা খেত।
আর আমি বেশিরভাগ বকা খেতাম অতিরিক্ত বই পড়ার জন্য।
আহা... ভাবতে খারাপ লাগে---
আরো হয়ত অনেক বই পড়ব-কিন্তু
জীবনে প্রথম 'পথের পাঁচালী' পড়ে যে আনন্দটা পেয়েছিলাম কোটি টাকার বিনিময়েও সেটা কেউ আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না।
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

বই নিয়ে স্মৃতিকাতরতার দিন কি শেষ হয়ে আসছে?
এটাই কি শেষ প্রজন্ম, যারা পুরোনো বইয়ের গন্ধ শুঁকে হয়ে পড়ে নস্টালজিক?
কয়েকদিন আগে ক্লাসে কি একটা টার্ম বোঝাতে গিয়ে আমি ওয়েস্টার্ণ সিরিজের কথা উল্লেখ করি। আমি এত কষ্ট পেলাম এটা জেনে যে ওরা বুঝতেই পারছে না আমি কিসের কথা বলছি। ক্লাস নাইনে পড়ে এরা। ৪৫ জন ছেলেমেয়ের মধ্যে মাত্র দুইজন পেলাম, যারা বেশ কয়েকটা ওয়েস্টার্ণ পড়েছে। অথচ ওই বয়সে কুয়াশা, তিন গোয়েন্দা, ওয়েস্টার্ণ, মাসুদ রানা, অনুবাদ আরো সব হাবিজাবি মিলিয়ে আমার পড়া বইয়ের সংখ্যা একেবারে কম ছিলো না। বই পড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে গিয়ে টের পাই, ওদের আসলে আগ্রহই নেই। পাঠ্য বইয়ের বাইরে অন্য কোন কিছু পড়ার মত সময়ই নাকি তাদের নেই। অন্যান্য ক্লাসগুলোর চিত্্রও কমবেশি একইরকম।
???

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

চলুক


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

বিপ্লব রহমান এর ছবি

মুহুমুর্হু স্বপ্ন ভাঙ্গে,স্বপ্নে আমার ফিরে যাওয়ার
কথা ছিল,স্বপ্নে আমার স্নান হলোনা

আপনার লেখাটি ভালো লাগলো।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

অপূর্ব সিরিজ! বড় আবেগময়।

একেবারে টেনে নিয়ে গেলেন ... ... শুরু তো মনে নেই, একটা বই ছিল কোলের মধ্যে ভরে রাখতাম, মহাকাশ নিয়ে। কার লেখা মনে পড়ছে না।
এরপর সুজন হরবোলা, সমসাময়িক ঠাকুরমার ঝুলি ... ... আরোও পরে তিন গোয়েন্দা.....মাসুদ রানা...উফ্ফ্ ম্বাসরুদ্ধকর একেকটা বই নিমিষে পড়ে ফেলতাম!

এরপরে পড়ার ক্ষেত্র চওড়া হলো - শীর্ষেন্দু, সমরেশ, .... সব চে বেশী হতো শংকর আর হুমায়ূন আহমেদ। অনেকদিন ওদের জাদূটোনায় আটকা পরেই থাকতে হলো।

এখন...সেসব হয় না। বিদেশ আসা অবধি সলিড স্টেট ফিজিক্স আর ফিজিক্যাল কেমিষ্ট্রি জীবন নাশ করে ছাড়ছে!
অন্যসব কখন পড়বো? পাবোই বা কৈ?

... ... আরোও লিখতাম....মন্তব্যের ভব্যতার খাতিরে থামলাম হাসি

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কী দরকার খুঁড়ে খুঁড়ে এসব দুঃখ বের করার?
কী দরকার আবারো মনে করার যে একসময় আমরা সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার মানুষ ছিলাম

ঝরাপাতা এর ছবি

শুধু স্মৃতিরাই রয়ে যায় ঘুরে ফিরে, আর ভীষণ গোপন গহীনে কড়া নাড়ে মনের দরোজায়। অসাধারণ।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

মৃন্ময় আহমেদ এর ছবি

Happy Birthday

শুভ জন্মদিন

'

=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা

শেখ জলিল এর ছবি

এই সিরিজে সবচেয়ে পছন্দের পোস্ট।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

অমিত আহমেদ এর ছবি

অসাধারণ!

আমি আমার ছোটভাই দু'জনের দু'টো আলাদা লাইব্রেরি ছিলো আমাদের। দু'জনের দু'টো রাবারস্ট্যাম্প "অমিতের লাইব্রেরি", "সমিতের লাইব্রেরি"। সেই নিয়ে দু'জনে কত প্রতিযোগিতা, কত ঝগড়া। শেষে দু'জন দু'টো লাইব্রেরি রেখে কানাডা-অস্ট্রেলিয়া। পরে দু'জনে দুই লাইব্রেরি এক করে ফেললাম।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।