বাঙালিত্বঃ-শুলুকের সাকিনে

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: সোম, ১৪/০৪/২০০৮ - ১১:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভাবনাগুলো মৌলিক কিছু নয়, নতুন করে ভাবার কিছু ও নয় । তবু দিনক্ষন মিলে গেলে মাঝে মাঝে ঝোঁক উঠে, সম-ভাবনার ক্ষেত্র পাওয়া গেলে উসকানী জাগে ।
পড়ছিলাম জুবায়ের ভাইয়ের বাংলা নববর্ষ ও বাঙালিত্ব, লেখা এবং মন্তব্য সকলই ।

তো বাঙালি বদলালো । বাদশাহ আকবরের সালতানাতে হয়তো রঙ্গপুরের আবাদী জমিতে ধানচাষ করছিল কোন বাঙাল । তার পোষাক কি ছিল? ভাষা কেমন ছিল? ভাবনা কেমন ছিল?- আরো পরে হয়তো সে গামছা পড়লো,ধুতি পড়লো,ধর্ম বদলানোর পর লুংগী ও পড়লো,কলকাতা শহরে গিয়ে পাজামা পড়া ও শিখলো ।

সুনামগঞ্জের এক গ্রামে লাউয়ের খোল দিয়ে বাজনা তৈরী করে গান গাইছিল সৈয়দ শাহনুর নদীর কুলে বইয়া । সেই নাম না জানা বাজনা পড়ে একতারা হয়ে গেলো,ফকির লালনের হাতে প্রান পেলো,বিজয় সরকার হারমোনিয়াম ধরলেন,শফিকুন্নুর বেহালা বাজালেন ,আজম খানের পেছনে দাঁড়িয়ে কেউ গীটারে ও টিউনিং শুরু করলো ।

পান্তাভাতে মরিচ ডলে খেতে খেতে বাঙালি বিরিয়ানী,মোরগ মাসাল্লাম ও খেলো, আলো আঁধারীতে বসে চাউমিন ও বেশ । হাতে খেতে খেতে অনেকেই কাঁটা চামচে ও বেশ অভ্যস্ত । মন্দ কি?

তো বাঙালি বদলালো । বদলানো দোষের কিছু নয় । দেবে আর নেবে মেলাবে মেলাবে । গুরুজী যেমন বলেন । জুবায়ের ভাই ও তেমন বলেন । প্রতুল ও গেয়ে উঠেন- ' মিশে তের নদী সাত সাগরের জল,গংগায় পদ্মায়'

মিশুক । আপত্তি নেই । কিন্তু অলস প্রহরের ভাবনায় মাঝে মাঝে হ্যামারিং হয় । আমাজানের সকল জল যদি এসে পদ্মার দখল নেয় তবে তাকে আর পদ্মা বলে মিছে ডাকাডাকি করি কেনো?

বদলই যদি নিয়তি হয় তাহলে এতো শেকড় ধরে টানাটানি কেনো? কেনো বাঙালিপণা নিয়ে এতো মাথাব্যথা,কেনো কেউ কেউ এই পরিচয় মুছে দিতে এতো মরীয়া, কেনো এই পরিচয় টিকিয়ে রাখতে এতো সংগ্রাম,এতো ক্ষরন?

অথবা আদতে এই বাঙালিত্ব/বাঙালিপণা বিষয়টা কি? শুধু কি ভাষা,শুধু কি পোষাক,শুধু কি জীবনাচারন,শুধু কি খাদ্যাভাস?
আজকের আমি যে পোশাক পড়ি ঘরে ও বাইরে , ইংল্যান্ডের পিটার ওয়াল্টার এর সাথে তেমন কোন পার্থক্য তো নেই? আমি যে খাবার খাই,তার অনেককিছুই মিলে যায় আমেরিকার একজনের সাথে,আমার গায়ের রঙ ও চেহারা ও মিলে হিস্পানিজদের সাথে, ব্রায়ান এডামসের যে গান শুনি সেই গান শুনে জার্মানের আরেক তরুন ।

এইসব তাহলে কোন স্থির নির্নায়ক নয় যেহেতু বদলাতে বদলাতে এক সময় এইসব খুব কাছাকাছি এসে যাচ্ছে প্রায় সকলের ।

তাহলে ঠিক এসব নয়, অন্য কিছু ।
কি সেই কিছু?
ঠিক কোন কোন প্রকরণে আমি বাঙালি পরিচয়ে টিকে আছে হাজার বছর থেকে? কোন কোন বৈশিষ্ট্যে আমি আলাদা হয়ে আছি একজন ইংলিশ, স্কটিশ, পাঞ্জাবী কিংবা জুলুর কাছ থেকে?


মন্তব্য

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমাজানের সকল জল যদি এসে পদ্মার দখল নেয় তবে তাকে আর পদ্মা বলে মিছে ডাকাডাকি করি কেনো?

ফাটাফাটি দাদা।

শেষে এসে আপনার ছুঁড়ে দেওয়া প্রশ্নটার জবাব কী হতে পারে ভেবে লিখতে যাচ্ছিলাম "মানসিকতা", কিন্তু তৎক্ষণাত আবার ওপরের কোটখানি চোখে পড়ে গেলো। উত্তরটা জানা নেই দাদা, কার জানা আছে, সেটাও জানা নেই।

দেখি বাকিরা কী বলেন!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মাসুদা ভাট্টি এর ছবি

আমাজনের জল পদ্মায় মিলবে না হাসান, সম্ভব নয়, কারণ আমাজনের জলে যে পিরানহা আছে, পদ্মার জলে নেই, এমনকি পদ্মার জলে কামটও নেই, দেখতে পারছেন না, বাংলাদেশে পিরানহা আসায় সমস্ত দেশি মাছ খেয়ে ফেলছে, ধ্বংস হচ্ছে জীব-বৈচিত্র, তেমনই আমাজনের জলকে যদি পদ্মায় এনে ফেলা হয় তাহলে থাকবে না কিছুই, আসলে সম্ভবই নয়, আমি বিশ্বাস করি না, করতে চাই না।

পোশাক বদলানো যায়, মুখের স্বাদ বদলানো যায়, এমনকি জাতীয়তাও ভাড়া করা যায় কিন্তু এই বদলের মাধ্যমে যেখানে যাচ্ছি বা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে সেই সংস্কৃতি বা জাতি আমাদের সম্পূর্ণ গছে নেবে তো? না নেবে না, নেয় না, যে কারণে ব্রিটেনের মতো এক বহুজাতি-বহুসংস্কৃতির দেশেও ব্রিটিশ-এশিয়ান, ব্রিটিশ-বাংলাদেশী ইত্যাদি অভিধা জোটে কপালে।
পানি কেটে দুই ভাগ করা যায় কি? সংস্কৃতি কিংবা জাতিত্বও মনে হয় তেমনই, মেলে এবং মেলায় কিন্তু ফাঁক ফোকড় পেলেই বেনো জলের মতো হুড়মুড় করে ঢুকে যে জল সেই পানিই হয়ে যায়।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ট্র্যাডিশন অনিবার্য কিছু নয়, এও আমরা সৃষ্টি করি। আমাদের নাগরিক ক্ষুধা বিরান শহরে একটা উতসব চাইছিল। ছায়ানট, চারুকলা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজে তাই এনে দিল। এইটুকু কালচারাল ক্যাপিটাল ব্যবহার করে বাজার তাকে জাতীয় উতসব বানেয়ে ছাড়ল। একে তারা বলল ট্র্যাডিশন_বাঙালি সংস্কৃতি উদযাপনের। তাতেই বা কি, আজ ঢাকা শহরে গরিব মানুষের ঢল নেমেছিল। শত কষ্টেও তারা একটু মাততে চেয়েছে। ঢাকার রাজপথের দখল আজ তারা নিয়েছিল দেশের বড়লোকদের বিচারে তারা গরিব। কিন্তু রং আর বর্ণাঢ্যতায় কোনো দীনতা ছিল না।
মধ্যবিত্ত শুধু আন্তর্জাতিক_ মানে পরদেশীয়।
...........................................................................................
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পহেলা বৈশাখ লোকায়ত উৎসব হিসেবে যে কাঠামোতে বিরাজ করতো তাতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সমঝদার মধ্যবিত্তের অস্তিত্ব ছিল না। তবে রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রের দ্বন্দ্বকে সংস্কৃতি থেকে আলাদা করতে গেলে মাঝে একটা প্রেত সম্ভাবনার আমদানী জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। পাকিস্তান রাষ্ট্রে পূর্ব-পশ্চিমে দ্বন্দ্ব ছিল ইহা সত্য। আহাম্মক পাঞ্জাবী ভুড়িওয়ালারা পূর্ববাঙলায় সাংস্কৃতিক আক্রমণ চালাতে গিয়ে বাঙালী জাতীয়তাবাদকে জনপ্রিয় হবার (অন্তত পাকিস্তানের ২৩ বছরে) পথ করে দিয়েছেন। মধ্যবিত্তের কাছে রবিবুড়োর আবেদন ছিল। জাতীয়তাবাদের জন্মের পেছনে তো হেজিমনিক দ্বন্দ্বই। রবিবুড়োর গানটানে গুড়াগাড়া মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত মজে গেল। কি করা যাবে? ব্যাপারটা অন্যরকম হতে পারতো। সবকিছুই কিছু না কিছু হতে পারতো। কিন্তু হলো অন্য কিছু। তো রুমাল কিভাবে বেড়াল হলো আর সে ম্যাও এবার কার ভাঁড়াড়ে হানা দেবে সেটাই মনে হয় বিবেচ্য। হোলেও হতে পারে ভাবতে গেলে দেখা যাবে ম্যাড়ম্যাড়ে দড়ি ছিড়ে বালতি পাতকূয়ায় হারিয়েছে।

পহেলা বৈশাখের একটা সামাজিক ভিত্তি ছিলোই। শুধু হিন্দু না দরিদ্র মুসলমানদের মধ্যেও ছিল। বিভাগ পরবর্তী পূর্ববঙ্গের মধ্যবিত্ত বলতে সেমিক্ষুদ্র-মাঝারি কৃষকদের আইএবিএএমএ পাশ দেওয়া পোলাপানরা। তারা পুঁজিবিকাশের জৈবিক নিয়মে তাদের আগে ইঞ্চি খানেক বেশী বিকশিত হিন্দুদের অনুসরণ করেছে। বিষয়টা এতসরল হতো না। হয়েছে বিশ্বের সমস্ত মুসলিম এক জাতি..তাহার এককোনায় চিমঠি দিলে আরেক কোনায় উ: কৈরা উঠে'র দাবীদার পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাগণ। তারা সাংস্কৃতিক আক্রমণ না করলে কিন্তু বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের জন্মও হৈতো না। খুব খিয়াল কৈরা.........

এখন ঘটনা হইলো নানারকম ঐতিহাসিক প্রভাবকের ঘন্ট হৈয়া এখন পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের বৃহত্তম সাংস্কৃতিক উৎসব। যারা ১৪০৮ সালের ১ বৈশাখ সকাল আটটা পাঁচে বটতলায় বোমা মারছিল তারা কিন্তু যে কোন বিচারেই কয়েকজন বিকৃতমস্তিস্ক ভাড়াটে। তারা সংখ্যাগরিষ্টও নয় পুঁজিবাদীসম্প্রসারণের অ্যান্টিথিসিসও নয়। (বোমা সেদিন ছিল খুব বেশী হলে দুজনের হাতে। বাকি যারা যারা প্রাণ দিলেন সবাই লুঙ্গী পড়া বা অল্পদামী সালোয়ার কামিজ পড়া সল্পআয়ের মানুষ। ঐ বোমার মূল বেনিফিশিয়ারী যারা তাদের দায়মুক্ত ভাবা কষ্টকর। একই কথা সিপিবির মিটিঙ বা সিনেমা হলের বোমা হামলার ক্ষেত্রেও প্রজোজ্য)। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ যে মানুষের ঢল নামে সেই ঢল যদি (স্বপ্নে পাওয়া) রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিচারে সাংস্কৃতিক দাসত্ব হৈয়াও থাকে তাতে এই মুহুর্তে বিপরীত প্রয়োগের কোন সম্ভাবনা নাই। (পাকিস্তানে থাকতে পারে)

এইখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। বৃটিশ উপনিবেশের মধ্যবিত্তগুলি তুলনায় বেশী মোসাহেব দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সুমন চৌধুরী, আরেকটু ঝেড়ে কাশেন তো, আমি নিশ্চিত আপনার আরো অনেক বলার আছে এ বিষয়ে ।
একটা সুত্র ধরিয়ে দিতে চাই সবিনয়ে, আমি আসলে জানতে ,বুঝতে চাইছি-বাংগালী হইলাম কিংবা বাংগালী থাকলাম কি প্রকারে?

যে সকল চালু এট্রিবিউটকে বাংগালীত্বের নির্নায়ক বলে প্রচার করা হয় দেখা যাচ্ছে সেইসব বড়ই বদলপ্রয়াসী । আমার পোষাক বদলে গেছে,খাদ্যাভাস বদলে গেছে, রুচি বদলে গেছে এমনকি ভাষাও অনেকটুকু ।বদলাতে বদলাতে এইসবের আর কোনো আলাদা বৈশিষ্ট্য দেখিনা ।
তাহলে কোন সে গোপন অনুচ্চারিত অথচ মৌল উপাদান যাকে আলাদাকরে জাতিস্বত্বার ভিত্তি বলে ভেবে নেয়া যায়?

মাসুদা ভাট্টি এবং ফারুক ওয়াসিফ-দুজনকেই ধন্যবাদ । আপনাদের ও আরো বলার আছে ।

xxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxx
...অথবা সময় ছিলো;আমারই অস্তিত্ব ছিলোনা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঐতিহ্য চালু হতে সময় একটা ফ্যাক্টার তো বটেই। তবে কত সময় আর কোন প্রেক্ষিতে চালু হলো সেটা জরুরি। সংগঠিত সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস, সমাজতত্ত্বে যাকে "উই ফিলিংস" বলে, তার আকর। সংগ্রাম মানেই তো আর ঢুশঢাশ না, প্রতিদিনের মাইক্রো-পাটাতনের দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষও সেই তালিকায় পড়ে। সমসত্ত্ব (হোমোজিনিয়াস) সংগ্রাম মানুষকে সবচাইতে কাছে আনে বলে আমার এখনো মনে হয়। ইংরেজ আগমণের পরে পহেলা বৈশাখ সামাজিক প্রথা হিসেবে প্রচলিত ছিল মূলত দরিদ্র হিন্দুমুসলমানের মধ্যে (এই বিষয়ে ধনী হিন্দুদের সাথে ধনী মুসলমানদের দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু সেটা দরিদ্র মুসলমানের অজ্ঞাত)। পাকিস্তান রাষ্ট্রের কর্ণধারদের সাংস্কৃতিক আক্রমণ পূর্ববাঙলার বাঙালী হিন্দুমুসলমানের উপর একসাথে পড়ায় সংস্কৃতির হোমোজিনিয়াস উপাদান সেখানে শক্তি জুগিয়েছে।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

মৌসুমী বাঙালি হয়েই থেকে যাবো অবশেষে !

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

জাতিগত বৈশিষ্ট্য বলি অথবা সাংস্কৃতিক পরিচয় নামে ডাকি - আমি এর দুটি মুখ দেখতে পাই। প্রথমটি শহরকেন্দ্রিক এবং অন্যটি অবশিষ্ট বৃহত্তর বাংলাদেশের।

আমরা শহরবাসীরা যতোদূর চোখ ফেলতে সক্ষম তার সীমানা পর্যন্ত গিয়ে ধরে নিই, এর বাইরে আর কিছু নেই, আমরা এরকমই। একটা ছোটো উদাহরণ পেশ করি। আমি মফস্বল শহরে বড়ো হয়েছি। আমাদের বাল্যকালে অনাত্মীয় বয়োজেষ্ঠ্যদের মামা-চাচা-কাকা-খালু এবং মহিলাদের খালা-মামী-চাচী-কাকী ডাকা হতো। ষাটের দশকে ঢাকা শহরের ধানমণ্ডি-গুলশান অঞ্চলে (অন্য এলাকাগুলিতে ততোটা নয়) আন্টি-আঙ্কল ডাকের প্রচলন হলো। আজ চার দশক পরেও এই আন্টি-আঙ্কল চর্চা কিন্তু বাংলাদেশের সমগ্র জনসংখ্যার শতকরা একভাগও দখল করতে পারেনি।

এরকম অসংখ্য উদাহরণ আশেপাশে তাকালেই পাওয়া যাবে। সুতরাং আমাজনের দুচার ফোঁটা পদ্মায় মিশলেও পদ্মার কিছুই এসে যাবে না, পদ্মা ওটুকু হজম করার ক্ষমতা রাখে এবং তারপরেও সে পদ্মাই থাকবে। চাই কি আমাজনের আরণ্যক বৈশিষ্ট্যের কিছু আত্মস্থ করে আরো সুন্দরীই হয়তো হয়ে উঠবে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

শেখ জলিল এর ছবি

বাঙালিত্বের উৎসের সন্ধানে সচলায়তনে একমাত্র পোস্ট। হাসান মোরশেদের জিজ্ঞাসা আমারও।
..আসলে আমরা পহেলা বৈশাখের একমাত্র অনুষ্ঠান দিয়ে কি বাঙালিত্ব ধারণ করি! আমাদের কৃষ্টি, আচার, লোকগান, শিল্পসাহিত্য সবকিছুতেই আমরা বাঙালিত্ব ধরে রাখি। সারাবছর ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিয়ে, পার্বন, জারি, সারি, পালা, যাত্রা, কবিগান কি বাঙালিত্বের পরিচয় বহন করে না?
..হাজার নদীর এই দেশে নদীর ভাঙাগড়া, প্রেমবিচ্ছেদ, ভালোবাসার উৎসারিত সত্ত্বাই তো যুগ যুগ ধরে টিকিয়ে রাখছে আমাদের বাঙালি করে।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হাসানের লেখায় মত দেবার জন্য হাত নিসপিস করছে কিন্তু সুমন আর ফারুক মন্তব্য পাঠ করে একখান কথাই বলা যায়-

আমার বলার কিছু ছিল না ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এই আলাপটা আরো বাড়তে পারে।
অপেক্ষায় -

দিগন্ত এর ছবি

এইসব তাহলে কোন স্থির নির্নায়ক নয় যেহেতু বদলাতে বদলাতে এক সময় এইসব খুব কাছাকাছি এসে যাচ্ছে প্রায় সকলের ।

এটাই হক কথা। বাঙালীত্ব স্থান-কালের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয় ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।