'বাংলাদেশ বড় লক্ষীমন্ত মেয়ে । ওকে
অন্ধকার জানালার ওপাশে দাঁড়িয়ে
ভূত সেজে ভয় দেখিয়ো না
ওর বুক ধড়ফড় করে ।
তোমাদের একটু ও কান্ডজ্ঞান নেই-
অকস্মাৎ একেকটা ঘটনা ঘটিয়ে বসো, আর
মেয়েটার চোখ,মুখ, সমস্ত শরীর
প্রস্ফুটিত লাবন্য হারায় ।
ও বড়ো আহ্লাদী মেয়ে
সবুজ ফিতেয় চুল বেঁধে প্রতিদিন
পা দোলায় বঙ্গোপসাগরে ।
জল,পলিমাটি নিয়ে খেলতে ভালবাসে ।
কার ও সঙ্গে বিরোধ করেনা ।
তোমরা ও বিরক্ত কোরো না ওকে । ওর
খেলার সংসার
তছনছ করে উধাও হয়োনা ।
ফের সব সিজিল-মিছিল করে উঠা
একরত্তি মেয়েটার পক্ষে খুব কষ্টকর কাজ ।
বাংলাদেশ বড়ো শান্ত মেয়ে
কারও সঙ্গে খুনসুটি করেনা কখনও
নির্ঝঞ্ঝাট থাকতে ভালবাসে ।
কেউ ওকে চুল টেনে ঢিল ছুড়ে বিরক্ত কোরো না ।
অন্ধকার জানালার ওপাশে দাঁড়িয়ে
ভূত সেজে ভয় দেখিয়োনা ।'
(বাংলাদেশ ।। আবু হাসান শাহরিয়ার)
-------------------------------------------------
-------------------------------------------------
আমার ল্যাপটপের স্ক্রীন জুড়ে একটুকরো বাংলাদেশ । আমার উপড়ে যাওয়া শেকড়,আমার নাভিমুলের ভস্মাধার ।
সারাদিনমান ক্লান্তিশেষে বিদেশবিভুঁয়ে আমার ফেলে আসা ঘরের চৌকাঠ- 'সচলায়তন'।
সেই চৌকাঠ মাড়িয়ে আমি ঘরে ফিরি-ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসা আমি ।
আমার আটপৌরে ঘরে এতো হল্লা, প্রতিবেশীর অতিমনোযোগ, কারো প্রশস্তি,কারো নিন্দা, কারো বাগ্মীতা,কারো বিপ্লব, কারো প্রতিযোগীতা, কারো অতিসতর্কতা ---- ভাল্লাগেনা !
আমার এইসব ভাল্লাগেনা । 'ইচ্ছেকরে মনুমেন্টের পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে বলি-আমার এসব ভাল্লাগেনা' ।
তোমাদের যেখানে খুশী গিয়ে সুরম্য প্রাসাদগড়ো, তোমরা খুনসুটি করো, সমালোচনার ঘানি টেনে টেনে জ্ঞানের নির্যাস বের করো, বন্দনাগীতি গেয়ে গেয়ে যুথবদ্ধতা রচনা করো,বিরাট কিছু ঘটিয়ে ফেলো -যা খুশী কর, আমার কিচ্ছু যায় আসেনা ।
'সচলায়তন' নিজের বাড়ীর ছোট্ট উঠোন হয়ে ছিল, তেমনই থাক । দিনমান ক্লান্তি শেষে একটু নিঃশ্বাস ।
এতো মনোযোগ, এতো সমৃদ্ধি দরকার নেই ওর ।
(ছবি কৃতজ্ঞতাঃ- মরিয়ম
মন্তব্য
আহ খুব সুন্দর লিখেছেন
আর মেয়েটা এত্ত সুইট :)
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
প্রাণ জুড়ানো লেখা। অসাধারণ
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
মনের কথা বলে ফেললেন হাসান ভাই।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আমরা কতো ভালো ছিলাম, যখন বাড়ির সবাই একে-অন্যকে খুব ভালো করে চিনতাম। আমাদের এসবের দরকার নেই।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
কবিতার প্রথম পঙক্তিটা পড়েই আমি বুঝে ফেলছি এটা শাহরিয়ার ভাইয়ের কবিতা।
শাহরিয়ার ভাইয়ের শ্রেষ্ঠকবিতাটা বেরুনোর সময় তার সঙ্গে আমাকেও খাটাখাটনি করতে হইছিলো যৎকিঞ্চিৎ। সেই সুবাদে আমি জানি এটা শাহরিয়ার ভাইয়ের কতোটা প্রিয় কবিতা। কবিতাটা আসলেই চমৎকার।
ফিরে একবার পড়তে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
থাকবে।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন