বিজাপুরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের আক্রমনে ৫৫জন পুলিশ নিহত । বিদ্রোহীরা কি রাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে?
বিদ্রোহীরা রাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হতে যাবে কেনো?
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছিলেন, অনেক ক্ষেত্রে তাদের আন্দোলন সশস্ত্র ও নৃশংস ছিলো- তাদেরকে কি রাষ্ট্রবিরোধী বলা হয়েছিল?
যারা আলজেরিয়ায় ফ্রান্সের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল অথবা নাৎসীদের বিরুদ্ধে ? উপনিবেশের বিরুদ্ধে যারা সশস্ত্র হয়েছিল? অথবা যারা ইরাকে আমেরিকান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়ছে? তারা কি রাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ?
এইসব মেকি মানবাধিকার চর্চা, অর্থহীন দোষারোপের খেলা আমাদের সকলকেই রাজনীতিবিদ বানিয়ে ফেলছে অথচ প্রকৃত রাজনীতি ধুয়েমুছে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে সবকিছু থেকে ।
আমরা যতোই নিরপেক্ষ সাজতে চাইনা কেনো,নিজেদের পক্ষপাত যতোই ঢাকতে চাইনা কেনো , নির্মম বাস্তবতা হলো এই- অবস্থান নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ আজ আর আমাদের নেই ।
ছত্তিশগড়ে সরকারের পরিকল্পনায় ও প্ররোচনায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে । সরকার সেখানে বুশের নীতি কার্যকর করেছে-হয় আমাদের পক্ষে, না হয় সন্ত্রাসীদের পক্ষে
। নিয়মিত সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের দিয়ে তৈরী করা হয়েছে ‘সালভা যুদ্ধম’ নামে মিলিশিয়া বাহিনী-সাধারন মানুষের হাতে জোর করে অস্ত্র তুলে দেয়া হচ্ছে ।
ভারত রাষ্ট্র এর আগে কাশ্মীর,মনিপুর,নাগাল্যান্ডে একই কৌশল অনুসরন করেছে । হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, আরো বেশী আহত হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছে অনেক অনেক । এই ব্যর্থ কৌশলটিই সরকার আবার প্রয়োগ করতে যাচ্ছে মুলভূমি ভারতে । খনিজসমৃদ্ধ এলাকা থেকে হাজার হাজার আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ ক্যাম্প । এইসব এলাকায় চোখ পড়েছে টাটা ও ইসার(Essar) এর মতো কর্পোরেটদের ।
চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে কিন্তু কেউ জানেনা সেইসব চুক্তিতে আসলে কি আছে ।ভূমি অধিগ্রহন শুরু হয়ে গেছে।
অতীতে কলম্বিয়ার মতো প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধদেশে একই ঘটনাগুলো ঘটেছে ।
সরকারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী ও গেরিলাদের মধ্যেকার সশস্ত্র সংঘাতে যখন সবার দৃষ্টি নিবন্ধিত, তখন চুপিসারে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো খনিজ সম্পদ লুটে নিয়ে যায় ।
ছত্তিশগড়ে এই নাটকটাই চলছে এখন ।
গেরিলাদের আক্রমনে ৫৫জন পুলিশের মৃত্যু অবশ্যই বেদনাদায়ক কিন্তু এ জন্য যদি কেউ দায়ী থাকে তো সরকারী নীতি ।
সরকার ও কর্পোরেট অক্ষশক্তির কাছে এই পুলিশরা কেবল যুদ্ধের যোগান মাত্র,ছাউনিতে আরো অসংখ্য মজুদ আছে । এদের মৃত্যুতে অনেক মায়াকান্না হবে,কর্পোরেট টিভির ক্যামেরা আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সেই কান্না দেখাবে, তারপর নিয়ম মতো মজুদ থেকে আরো যোগান সরবরাহ হবে ।
মাওবাদী গেরিলাদের কাছে এই পুলিশ ও তাদের সহযোগীরা নিস্পাপ কেউ নয় বরং ভারত রাষ্ট্রের প্রতিনিধি - যারা সরাসরি তাদের ভূমি দখল করেছে,হত্যা-নির্যাতন,নিস্পেশন চালিয়েছে ।
আমার মেনে নিতে কোন আপত্তি নেই যে, এই মাওবাদী গেরিলারা ও অনেক নৃশংস,নিষ্ঠুর ।তাদের নৃশংসতায় সাধারন মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন আছে,সেটা ও কেউ দাবী করছেনা । কিন্তু তারা যে টিকে আছে,এটাই কি তাদের জনসম্পৃক্ততার প্রমান নয়? জনভিত্তি ছাড়া তো কোন গোপন গেরিলা দল টিকে থাকতে পারেনা । আর মাওবাদীদের প্রতি সমর্থন কিন্তু দিনদিন বাড়ছে । এটা কিসের ইংগিত দেয়? সাধারন মানুষ এমন এক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে যখন ধ্বংসাত্বক দু পক্ষের মধ্যে কম ক্ষতিকরটির পক্ষে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোন সুযোগ নেই ।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের অব্যাহত অবিচারের প্রেক্ষিতে যে প্রতিরোধ আন্দোলনের সুচনা, সহিংসতার অভিযোগে তার সমালোচনা করা মানে রাষ্ট্রীয় অবিচারের প্রতি পক্ষপাত ।এর আগের এতো এতো অহিংস আন্দোলনকে ক্ষমতাসীনরা কখনোই পাত্তা দেয়ার দরকার মনে করেনি ।
নিরুপায় হয়ে হয়ে মানুষ যখন অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে তখন তার ফলাফল যে কোন কিছুই হতে পারে- সফল বিপ্লব, অরাজকতা, দুবৃত্তপনা যে কোন কিছু ।
ফলাফল যাই হোক-এই পরিস্থিতি তৈরীর দায় কিন্তু শেষপর্যন্ত সরকারকেই বহন করতে হবে ।
নকশালাইট,মাওবাদী,অনুপ্রবেশকারী-এইসব শব্দ ইদানিং ব্যাপক ব্যবহৃত হচ্ছে
রাষ্ট্রীয় শোষনের প্রথমযুগ থেকেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দের ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিলো । শোষন নীতির বিরুদ্ধে যাদেরই অবস্থান চিহ্নিত হতো,তাদেরকে এই ‘তকমা’ এঁটে দেয়া হতো । কিন্তু ক্রমশঃ শোষন বিরোধী অবস্থানে জনগনের অধিক হারে অংশ গ্রহনের ফলে এই শব্দ ও কার্যকারীতা হারায় । রাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষকেই তো আর ‘অনুপ্রবেশকারী’ বানিয়ে দেয়া যায়না ।
এই ভারত ক্রমশ একটা পুলিশী রাষ্ট্রে পরিনত হতে যাচ্ছে । সরকার যা করছে,তার বিরোধীতা যারা করবে তারাই চিহ্ণিত হবে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে । এবার ‘মুসলিম সন্ত্রাসী’ বলে তো কেবল মুসলমানদের ধরা যাবে সে জন্য দরকার আরো বড় কোন তকমার যাতে মুসলিম-অমুসলিম সকলকেই ধরে ফেলা যায় ।
সেই কৌশল হিসেবেই নক্সালিষ্ট,মাওবাদী এইসবের আমদানী ।আদিবাসী গ্রামগুলোতে দেখো, নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষার জন্য যারা সরকারী নীতির প্রতিবাদ করছে তাদেরকে মাওবাদী আখ্যা দিয়ে কারাগারে ঠেলে দেয়া হচ্ছে অথচ এই মানুষগুলো জানেই না মাওবাদ কি?গেরিলা যুদ্ধ কাকে বলে?
অথচ সত্যিকারের নকশালাইট বা মাওবাদী কারা?
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়-ভারতীয় কমিউনিষ্ট পার্টি(সিপিআই) গঠিত হয় ১৯২৫ সালে ।
১৯৬৪ সালে সিপিআই থেকে বেরিয়ে এসে আলাদা দল হয় সিপিএম-কমিউনিষ্ট পার্টি অফ মার্ক্স। সিপিআই, সিপিএম উভয়েই কিন্তু তখনো নির্বাচনমুখী কমিউনিষ্ট পার্টি । ১৯৬৭ সালে সিপিএম, কংগ্রেসের একটা বিচ্ছিন্ন অংশের সাথে কোয়ালিশন করে পশ্চিমবংগের ক্ষমতায় আসে ।
এসময় সারা রাজ্যে বিশেষতঃ গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্ট হয় । রাজ্যের নকশালবাড়ী জেলায় স্থানীয় সিপিএম নেতা কানু সান্যাল ও চারুমজুমদারের নেতৃত্বে এই অসন্তোষ ক্রমশঃ সশস্ত্র বিদ্রোহের রূপ নেয় । মুলতঃ এই নকশালবাড়ী থেকেই ‘নক্সালাইট’ শব্দের উৎপত্তি । ১৯৬৯ সালে রাজ্য সরকারের পতন হয় এবং সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরে আসে । কংগ্রেস সরকার অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে নকশাল আন্দোলন দমন করে । মহাশ্বেতা দেবী’র গুরুত্বপূর্ন লেখা আছে সেই সময়কে ঘিরে ।
১৯৬৯ এ আবার সিপিএম থেকে একটা অংশ বেরিয়ে এসে গঠন করে সিপিআই(এমএল) মার্কিষ্ট লেনিনিষ্ট । আরো পরে ১৯৭১ সালের দিকে সিপিআই(এম এল)ভেংগে আরো কয়েকটা উপদল তৈরী হয়-বিহার কেন্দ্রিক সিপিএম-এমএল(মুক্তিসংগ্রাম), অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহারের কিছু অংশজুড়ে সিপিএম-এমএল(নয়া গনতন্ত্র) এবং মুলতঃ পশ্চিমবংগ ঘিরে সিপিএম-এমএল(জনযুদ্ধ)।
এইসব উপদলগুলোকেই ‘নকশালপন্থী’ বলে চিহ্ণিত করা হয় । অথচ এরা প্রত্যেকেই নিজেদেরকে মুলতঃ মার্ক্সিষ্ট লেনিনিষ্ট বলে দাবী করে, মাওবাদ বলে এদের আলাদা কোন দর্শন নেই । তারা নির্বাচন ও গনআন্দোলনে বিশ্বাস করে কিন্তু আক্রান্ত হলে কিংবা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সশস্ত্র প্রতিরোধে বাধ্য হয় ।
বর্তমানে বিহারে সবথেকে সক্রিয় এমসিসি-মাওবাদী কমিউনিষ্ট সেন্টার, এটি গঠিত হয় ১৯৬৮ সালে । অন্ধ্রপ্রদেশে সক্রিয় ‘জনযুদ্ধ’ গঠিত হয়েছিল ১৯৮০ সালে ।
২০০৪ এ এমসিসি ও জনযুদ্ধ একীভূত হয়ে গঠন করেছে সিপিআই(মাওবাদী) । এরা প্রথম থেকেই সশস্ত্র প্রতিরোধে বিশ্বাসী । নির্বাচন নয় বরং সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চায় ।
মুলতঃ এই দলটিই বর্তমানে বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও ঝাড়খন্ডে গেরিলাযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ।
সরকার ও গনমাধ্যমগুলো মাওবাদীদের ভারতের ‘আভ্যন্তরীন নিরাপত্তার’ জন্য অন্যতম হুমকী বলে প্রচার করে । এটা কতোটুকু সত্য?
আমার তো মনে হয়, এই প্রচারনাকে নিজেদের সাফল্য ভেবে মাওবাদীরা বরং খুশীই হবে ।
মাওবাদীরা শোষনকামী রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তন ঘটাতে চায় । কিন্তু সশস্ত্র বিপ্লবের ইতিহাস মনে রেখে, এদের কাছে কি কোন সত্যিকারের বিকল্প আশা করা যায়? ক্ষমতা পেলে তারা ও কি একই রকম স্বৈরতান্ত্রিক ও সহিংস হয়ে উঠবেনা?এখনই তাদের কোন কোন কাজে কি সাধারন মানুষ নিগৃহীত হচ্ছেনা? মাওবাদীদের কি আসলেই তেমন জনসমর্থন আছে?
দেখো, আমাদেরকোনভাবেই ভুলে যাওয়া ঠিক হবেনা যে - মাও সেতুং এবং স্ট্যালিন দুজনেই একাধারে সফল বিপ্লব ও নৃশংস গনহত্যার নায়ক ছিলেন । তাদের শাসনামলে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছেন ।
শুধু চীন কিংবা সোভিয়েত ইউনিয়নেই নয়- চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির সমর্থনে কম্বোডিয়ায় পলপট দুই মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে,ক্ষুধা ও রোগেভোগে মারা গেছে আরো কয়েক মিলিয়ন( পশ্চিমা গনতান্ত্রিক বিশ্ব অবশ্য তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করেনি) ।
আমরা কি চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় কি ঘটেছে তা ভুলে থাকবো? নাকি ভুলে থাকবো সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পুর্ব ইউরোপের দেশগুলোর সমাজতান্ত্রিক শ্রম শিবির, নির্যাতন ক্যাম্প,গুপ্ত পুলিশ, গোয়েন্দা ও গুপ্তচর নেটওয়ার্কের কথা?
পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ মানব ইতিহাসের যতোটুকু কলংক ঠিক ততোটুকুই এইসব সমাজতান্ত্রিক শোষন-পার্থক্য কেবল টিকে থাকার সময়টুকুতে । তিব্বত কিংবা চেচনিয়া প্রসংগে যদি আমি চুপ থাকি তাহলে কোন অধিকারে আমি সোচ্চার হবো ইরাক,প্যালেষ্টাইন কিংবা কাশ্মীর নিয়ে?
আমার মনে হয় মাওবাদী,নকশালাইট এমনকি মুলধারার বামপন্থীদের জন্য অতীতকে ধামাচাপা না দিয়ে বরং স্বীকার করে নেয়া ভালো, এতে ভবিষ্যতে তারা দায়মুক্ত থাকবেন ।
নেপালে মাওবাদীরা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জোরালো সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন । ভারতে অব্যাহত রাষ্ট্রীয় শোষন ও অনাচারের বিরুদ্ধে মাওবাদী এবং মার্ক্সিষ্ট লেনিনিষ্ট দলগুলোই লড়ে যাচ্ছে । কেবল রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীই নয় তাদেরকে লড়তে হচ্ছে স্থানীয় জোতদারদের ভাড়া করা সশস্ত্রদল গুলোর সাথে ।
একমাত্র এই মাওবাদীরাই একটা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে ।
এই প্রতিরোধকে আমি সম্মান জানাই,সমর্থন করি ।
হতে পারে যখন তারা ক্ষমতায় আসবে তারা ও এরকম শোষন করবে, স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে-যেমন তুমি বললে । হয়তো পরিস্থিতি তখন আরো খারাপ হবে ।
কিন্তু আমি আগ বাড়িয়েই সেটা ভাবতে যাচ্ছিনা । আজকে তারা শোষন মুক্তির জন্য লড়বো , সুতরাং আজ আমি তাদের পক্ষে । কাল যদি তারা ও শোষক হয়ে উঠে তবে কাল আবার তাদের বিরুদ্ধে লড়বো ।
এটাতো অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ক্ষমতার স্বাদ পেলে অনেকেই রাতারাতি বদলে যায় যেমন ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস । দুর্নীতি, পুঁজিবাদ,আইএমএফের কাছে আত্নসমর্পন,দরিদ্রদের উচ্ছেদ করা, সুহার্তোকে দক্ষিন আফ্রিকার সর্ব্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করা-যে সুহার্তো হাজার হাজার কমিউনিষ্টকে হত্যা করেছে ।
কে ভেবেছিলো যে ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এইভাবে বদলে যাবে? অথচ বদলে গেছে এটাই বাস্তবতা । কিন্তু তাদের বদলে যাওয়া মানেই কি বর্নবাদ বিরোধী দীর্ঘ সংগ্রাম, এতো এতো আত্নত্যাগ অর্থহীন হয়ে গেলো?
তার মানে কি আলজেরিয়ার ফ্রেঞ্চ কলোনী হয়ে থাকাই ভালো ছিলো অথবা ভবিষ্যত আরো দুঃসহ হতে পারে এই আশংকায় কাশ্মীর,ইরাক,প্যালেষ্টাইনে দখলদারীত্ব মেনে নিতে হবে?
ভবিষ্যতে কোন সৎ নেতৃত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা সেই আশংকায় তাহলে আজকের শোষন নির্যাতন মেনে নিতে হবে? ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে প্রতিরোধের হাতিয়ার?
আমাদের সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রগুলো তাহলে ভেংগে পড়েছে?
হ্যাঁ ।
মন্তব্য
এই দীর্ঘ এবং আনন্দহীন লেখাগুলো যদি কেউ কষ্ট করে পড়েন, তাহলে আরেকটু কষ্ট করার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলোঃ-
ব্যবহৃত কোন শব্দ কিংবা বাক্য পঠনের জন্য সাবলীল মনে না হলে দয়া করে জানাবেন । আমি সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করছি লেখাগুলোকে সহজাত আলাপচারীতার ভংগিতে অনুবাদ করার জন্য ।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
খুবই চমত্কার অনুবাদ হয়েছে। ঝরঝরে ভাষা, কিন্তু ভেতরকার উষ্মাটা ঠিকই ধরা গেছে। আর অরুন্ধতীর তীব্র তেজোদীপ্ত যুক্তির কথা আর কী বলব?
.......................................................................................
Simply joking around...
লেখাটা ভাল্লাগতেছিলো। কিন্তু সময় খতম। পরে পড়ব। চালু রাইখেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
যারা ভিস্যুয়াল মিডিয়া ভালবাসেন আর ইউটিউব দেখার মতা ব্যান্ডউইথ আছে যাদের তারা এখানে একটা সুন্দর ভিডিও দেখতে পারেন। এটাও মাওবাদীদের নিয়েই তৈরী একইরকম ভাবধারায় ...
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
অনেক ধন্যবাদ দিগন্ত ।
-------------------------------------
সমুহ শোকেরা এলো ঝাঁক বেঁধে;
বিদায় জুবায়ের ভাই...
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
খুব ভালো হচ্ছে সিরিজটা। আপনি চালিয়ে যান।
অরুন্ধতী রয় বরাবরই সাহসী এবং অবশ্যই যুক্তিনির্ভর।
খানকতক খন্ডখন্ড লেখা তেহেলকা ডট কম, প্রথম আলোতে পড়েছি।
সিরিজ এই প্রথম।
পরিশ্রমি এবং ফলপ্রসু এই কাজের জন্য একটা ধন্যবাদ আপনার অবশ্যই প্রাপ্য।
আপনাকে ও ধন্যবাদ শিমুল, সময় করে পাঠের জন্য ।
শোকগ্রস্ত সময় সামলিয়ে আবার শুরু করার ভরসা রাখছি
-------------------------------------
সমুহ শোকেরা এলো ঝাঁক বেঁধে;
বিদায় জুবায়ের ভাই...
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভালো হচ্ছে। এমন ধরনের লেখা বরাবরই আমার পছন্দ।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
মোরশেদ ভাই,
আপনাকে অভিনন্দন জানাই এত ভালো একটা অনুবাদ আমাদের উপহার দেবার জন্য।
অফটপিক ঃ
আপনি শিলংয়ের কোথায় ছিলেন, জেল রোড আর রিলবং আমার পিসী আর মাসীর বাড়ী, কত যে গেছি, ভূলবো না সেই দিনগুলোর কথা।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
আমি '৯৯,২০০০ এই দুবছর ছিলাম শিলং । প্রথমে উম্পলিং,রিনজাহ' এর বাংগালী পাড়ায় কিছুদিন- তারপর লম্বা সময় ধানখেতি এলাকায়- সেন্ট পিটার্স স্কুলের পেছনের পাহাড়ে ।
লাবান, রিলবং,জেলরোড প্রায়ই তো চক্কর দিতাম । কি জানি হয়তো আপনার সাথে কোনদিন দেখা ও হয়েছে
-------------------------------------
সমুহ শোকেরা এলো ঝাঁক বেঁধে;
বিদায় জুবায়ের ভাই...
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
"আমরা যতোই নিরপেক্ষ সাজতে চাইনা কেনো,নিজেদের পক্ষপাত যতোই ঢাকতে চাইনা কেনো , নির্মম বাস্তবতা হলো এই- অবস্থান নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ আজ আর আমাদের নেই ।" -একদম খাঁটি কথা
____________________________
যেতে চাও যাবে
আকাশও দিগন্তে বাঁধা; কোথায় পালাবে?
.....আবু হাসান শাহরিয়ার
____________________________
বন্ধুত্ব মানেই তুমি বিচ্ছেদের চুক্তি মেনে নিলে
[আবু হাসান শাহরিয়ার]
নতুন মন্তব্য করুন