অরুন্ধতী পাঠ-০৬।।'ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডে স্পেশাল' [পর্ব-১]

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/১০/২০০৮ - ৯:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.
অরুন্ধতী রায়ের এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহন করেছিলেন ভারতীয় সাংবাদিক এস.আনন্দ , আগষ্ট ২০০৫ এ , আউটলুক পত্রিকার জন্য ।
বেশ দীর্ঘ এই আলাপচারীতা পর্ব করে দিতে হবে

..

এই সাক্ষাৎকারের জন্য আমি টেপরেকর্ডারের ব্যাটারী কিনতে গিয়েছিলাম । সচেতন ভাবেই একটি নির্দিষ্ট কোম্পানীর ব্যাটারী এড়িয়ে গেছি , যারা ভূপাল দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিলো । কিন্তু আজকের পৃথিবীতে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দ্রুত কমে আসছে । এ বিষয়ে তুমি কি ভাবছো?

আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যখন বেছে নেয়ার- ‘স্বাধীনতা’ ধারনটাই একটা প্রতারনা মাত্র । কিসের স্বাধীনতা? কোক না পেপসী? নাইকি নাকি রিবক? দুর্নীতি পরায়ন ‘পাবলিক সেক্টর’ নাকি তথাকথিত দক্ষ ‘প্রাইভেট সেক্টর’ ? এই কেটে দেয়া দাগের বাইরে তো অন্য কিছু বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই ।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে-কথিত গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিকগন কি আসলেই তাদের নিজেদের মতো কোন কিছু বেছে নিতে পারছে? উত্তর টা হলো- না!
সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে পছন্দ কি ছিলো? হয় বুশ নয় কেরী- যুক্তরাজ্যে হয় ব্লেয়ার নয় কনজার্ভেটিভ, ভারতের দরিদ্র মানুষের জন্য হয় বিজেপি নয় কংগ্রেস ।
এরা কি আসলেই বিকল্প কিছু? কিছু সাজানো নাটক ছাড়া প্রত্যেকের এজেন্ডা তো সেই একই । ক্ষমতায় থাকা বা না থাকার ভিত্তিতে কেবল তাদের কিছু শ্লোগান বদলে যায় । এর বেশী তো কিছু নয় ।


তাহলে গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে ও বেছ নেয়ার সুযোগ সীমিত?

দেখো, গত লোকসভা নির্বাচনে মুল এজেন্ডা ছিলো দুটো । এক অর্থনীতি , দুই ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদ ।
আমি দেখেছি, গ্রামাঞ্চলের ভোটারদের কাছে অর্থনৈতিক বিষয়টাই মুখ্য ছিলো । কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী প্রচারনায় অবাধ প্রাইভেটাইজেশন, কর্পোরেট গ্লোবালাইজেশন এসব নিয়ে নতুন করে ভাবার কথা বলেছিল, গ্রামীন অর্থনীতিতে রক্ত সঞ্চালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল । কিন্তু নির্বাচনে জেতার সাথে সাথে তারা ভোল পাল্টায় , ক্ষমতা গ্রহনের আগেই পুঁজিপতিদের নিশ্চিত করে যে তারা অর্থনীতির প্রশ্নে কোন বড় পরিবর্তন আনবেনা ।

এখন কি ঘটছে ? প্রাইভেটাইজেশন এবং কর্পোরেটাইজেশন একই গতিতে চলছে আগের মতোই । তারা দারিদ্রের নতুন সংজ্ঞা তৈরী করেছে, ইচ্ছেমতো দারিদ্ররেখা বানিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে । মাত্র ২৭% । অথচ ভারতের গ্রামাঞ্চলের অর্ধেক মানুষের নিশ্চিত খাবারের গড় পরিমান পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র বলে প্রচারিত আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের চেয়ে ও কম ।
এরপর ও অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম গ্রাম উন্নয়নের জন্য বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে এনেছেন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে । তবে একটা ভালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে-গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চিত আইন । যদি ও আমি নিশ্চিত নই এই আইন কতোটুকু কার্যকর হবে ।
কে জানে হয়তো এটা ও একটা সাজানো খেলা মাত্র- সোনিয়া গান্ধীর সাধ্বী ইমেজকে আরো ফেনিয়ে তোলার জন্য , জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের গ্রহনযোগ্যতা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য,সর্বোপরি কংগ্রেসের ক্ষতগুলো ঢাকার জন্য ।


প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যিনি ‘৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লীর অভিজাত আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরেছিলেন- তার একটা দুর্নীতিমুক্ত শোভন ইমেজ আছে । এই ইমেজকে পুঁজি করে তিনি কি নিওলিবারেল এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবেন?

আমি ঠিক বুঝতে পারিনা প্রেসিডেন্ট কালামের মতো টেকনোক্রেট কিংবা মনমোহন সিংহের মতো আমলা-রাজনীতিকরা কি কারনে মধ্যবিত্ত শ্রেনী এবং গনমাধ্যমের অকুন্ঠ সমর্থন পায়?
হতে পারে, সাধারন রাজনীতিবিদদের মতো তাদেরকে মাঠে গিয়ে নামতে হয়না বলে নিজেকে ‘ক্লিনম্যান’ দেখানোর সুযোগ তাদের থাকে । হতে পারে, অর্থনীতিকে রাজনীতি থেকে আলাদা করে ফেলার তারাই মুল কারিগর বলে, এলিট শ্রেনী ও সুযোগসন্ধানী মধ্যবিত্তরা তাদেরকে নিজেদের লোক মনে করে ।

মনমোহন সিং,মনটেক সিং আহ্লুওয়ালিয়া, পি.চিদাম্বরম এই তিনজন হলেন নিও লিবারেলিজমের ‘হলি ট্রিনিটি’ । তাদের স্বপনের ‘নয়া ভারত’ এর নকশা প্রনীত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির ক্যাথেড্রালঃ অক্সফোর্ড, হাভার্ড বিজনেস স্কুল , বিশ্ব ব্যাংক এবং আই এম এফে । তারা হলেন ওয়াশিংটন কোম্পানীর আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক ।
এরা মুলতঃ একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্কের অংশ যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে রাজনীতিবিদ,সামরিক বেসামরিক আমলা, কুটনীতিক, কনসাল্টেন্ট,ব্যাংকার এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের নিয়ে । এই নেটওয়ার্ক -চাকরী,চুক্তি,কন্সালটেন্সী,যোগাযোগ এইসবের কেনাবেচা করে ।
যেমন দেখো, কুখ্যাত ‘এনরন’ এর সাথে তৃতীয় বারের মতো চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে, এর ফলে মহারাষ্ট্র রাজ্য বিদ্যুৎ বোর্ড এনরনকে মিলিয়ন ডলার দিতে বাধ্য হবে । প্রাথমিক চুক্তি সম্পাদনের মতো পরবর্তী সব নবায়নগুলো ও হয়েছে খুব গোপনে । এই চুক্তি নবায়নকে অনুমোদন করেছে পি.চিদাম্বরম এর অর্থমন্ত্রনালয় যে চিদাম্বরম মন্ত্রী হবার আগের দিন পর্যন্ত ‘এনরন’ এর আইনজীবি ছিলেন । নবায়নের সাথে জড়িত ছিলেন মনটেক আহলিওয়ালা এবং শারদ পাওয়ার-যে দুজন শুরু থেকেই “এনরন’ এর স্বার্থ রক্ষা করছেন ।
এটা যেনো একদল দাগী অপরাধীকেই তাদের অপরাধের তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা ।


গ্রামীন মানুষেরা কি এইসব টেকনোক্রেট ও আমলা রাজনীতিকদের একটু ভিন্ন চোখে দেখে?

বছর কয়েক আগে (মনমোহন সিং তখনো চাকরীতে) আমি রায়পুর গিয়েছিলাম ইস্পাত শ্রমিকদের এক প্রতিবাদ সভায় । সেই সভায় এক তরুন কবি তার কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন । কবিতার এক লাইন ছিলো- ‘মনমোহন সিং কিয়া কর রাহা হায় আজ কাল? ‘ ।
এতো দৃপ্ত, এতো তেজী ছিলো তার উচ্চারন-আমি এখনো ভুলতে পারিনি । পরের লাইন ছিলো ‘ বিষ কিয়া করতা হায় খুন মে উতরান কি বাদ?’ - বিষ একবার রক্তে মিশে গেলে যা করে মনমোহন সিং তাই করেছেন গ্রামীন ভারতের!
সেই সভা থেকে আমি খুব বিধ্বস্ত হয়ে ফিরে এসেছিলাম । গ্রামীন ভারতকে আমি খুব বিপর্যস্ত দেখেছি । কিন্তু পরবর্তী বছরগুলো জুড়ে এই বিপর্যস্ততা বাড়তে বাড়তে এখন তা ধ্বংসের কাছাকাছি । এর জন্য অনেকেই মনমোহন সিং এর অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন গৃহীত পদক্ষেপকে দায়ী করেন ।

প্রধানমন্ত্রীর অক্সফোর্ড ভাষন বিষয়ে তোমার প্রতিক্রিয়া কি?

এটা একটা অর্থহীন রাজনৈতিক বিবৃতি ।
পশ্চিমা শক্তি এবং নিয়াল ফার্গুসনের মতো ডানপন্থী বুদ্ধিজীবিরা মিলে সাম্রাজ্যবাদকে যুক্তিযুক্ত করে তোলার নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে । এর মাধ্যমে তারা ইরাক, আফগানিস্তান আগ্রাসন এবং ভবিষ্যতের অন্য সকল দখলদারিত্বের সপক্ষে নতুন নতুন যুক্তি উপস্থাপন করবে । একই কারনে তারা তাদের পুরনো সাম্রাজ্যবাদী দখলদারীত্বকে ও সময়ের প্রয়োজন বলে প্রচার করতে চাইছে ।

এরকম একটা সময়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জনসম্মুখে সাম্রাজ্যবাদের সপক্ষে তার অবস্থান ঘোষনা করলেন- খুবই ভয়ংকর এই অবস্থান ।
তিনি বৃটিশ উপনিবেশকে ধন্যবাদ জানালেন আজকের ভারতের সকল অর্জনের জন্য । পরিহাস এই, তার দেয়া ভারতের অর্জন তালিকার প্রথম সারির সবকিছুই উপনিবেশ যুগের শোষনের হাতিয়ার- আমলাতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, আইনের শাসন!
তিনি বৃটিশ সাম্রাজ্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন- বৃটিশরা ভারতীয়দের ইংরেজী ভাষা জ্ঞান দান করে ধন্য করেছে । এই সেই ভাষা যে ভাষা ভারতীয় এলিট শ্রেনীকে দেশের আর সব মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে, তাদের কল্পনাকে রাংগিয়েছে পশ্চিমের রংয়ে ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মতো এত বশংবদ প্রজা বোধ করি বৃটিশ প্রভূরা আর কোনদিন পায়নি ।

ভারতীয়দের মধ্যে একমাত্র দলিতদের ইংরেজদের প্রতি ক্ষোভ কিছুটা কম থাকতে পারে কারন ইংরেজরা তাদেরকে আলাদা করে অস্পৃশ্য ভাবেনি । সাদা চামড়ার ইংরেজের কাছে সকল ভারতীয়ই ছিলো অস্পৃশ্য ।
কিন্তু আমি ভাবতে পারিনা, মনমোহন সিং অক্সফোর্ড থেকে সম্মানসুচক পিএইচডি আনতে গিয়ে কি করে উপনিবেশের গুনগান গেয়ে আসলেন ।


তুমি একবার বলেছিলে- বাবরী,পারমানবিক বোমা,উঁচু বাঁধ, প্রাইভেটাইজেশন- এরকম সকল ইস্যুর বীজ বুনে কংগ্রেস আর সময় মতো পাকা ফসল ঘরে তোলে বিজেপি ।
এখন যখন কংগ্রেস ক্ষমতায়-কোন মৌলিক পরিবর্তনের সুযোগ কি আছে?

বিজেপি হেরে যাওয়ায় ভারতের অর্থনৈতিক পলিসিতে কোন পরিবর্তনই আসবেনা কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি একটু কম ঝুঁকিতে থাকবো । জানি কথাটা স্বার্থপরের মতো হয়ে গেলো । কিন্তু সত্যটাই বললাম ।
এ ছাড়া আমার ধারনা সাম্প্রদায়িক সংঘাত স্থগিত থাকবে এ সময়ে । বিজেপি -কংগ্রেস নীতিগত পার্থক্য তো তেমন নেই । কিন্তু একই নীতি বাস্তবায়নে বিজেপি অনেক সহিংস, আক্রোশপরায়ন ।
এই সত্যটা তুমি অস্বীকার করতে পারবেনা ।


বিজেপি’র ভবিষ্যত কি?

কেন্দ্র এবং বাইরের রাজ্যগুলোতে( রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ) চিত্রটা ভিন্ন ।
তুমি যদি তাদের আসন এবং প্রাপ্ত ভোট বিবেচনা করো তাহলে কিন্তু বিজেপি জোটের এভাবে ভেংগে পড়ার কথা নয় । ক্ষমতার স্বার্থেই তাদের পরস্পরকে টিকিয়ে রাখার কথা কিন্তু তাদের পতন ঘটেছে । । ফলাফল দেখে মনে হচ্ছে রামজন্মভূমি ইস্যুকে পুঁজি করে তারা আর হালে পানি পাচ্ছেনা ।
বিজেপি হেরে গেছে, আমি অবশ্যই দুঃখিত নই কিন্তু আমাদের শক্তিশালী বিরোধীদল থাকা জরুরী ।


এই মুহুর্তে বিজেপি সেরকম অবস্থায় নেই, বামপন্থীরা নিজেদের বিরোধীদলের বলে দাবী করছেন ।

বামপন্থীদের একটা বাজে সমস্যা আছে ।
তারা যে কোন কিছুর শুরুতেই বিরোধীতা করে বসেন, তারপর বিরোধীতার আসল সময়ে গিয়ে ছাতার নিচে আশ্রয় নেন । এভাবে নিজেদের অবস্থানকে খেলো করেন ।
এখন তাদের ভূমিকা হলো ‘ভার্চুয়াল বিরোধী’দলের । এই বাম-কংগ্রেস সখ্য হয়ে উঠছে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় পরিবারের আদর্শ মডেল । পারিবারিক ঝগড়া ফ্যাসাদের আশংকায় যুক্তি-তর্ক ও শিকেয় উঠছে ।


আজকের বাস্তবতায় ‘স্বাধীনতা’ ‘র ধারনা কতোটুকু অর্থবহন করে? স্বাধীনতা দিবস কি কেবলই এক বার্ষিক উদযাপন হয়ে উঠেনি?

কর্পোরাইজেশন ও প্রাইভেটাইজেশনের করাল থাবা ক্রমশঃ সবকিছুকে গ্রাস করছে । মানুষ প্রতিদিন আরো বেশী করে কর্মহীন, ভূমিহীন হচ্ছে,প্রাকৃতিক সম্পদে অধিকার হারাচ্ছে- ফলে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বাড়ছে ।
কর্পোরেটদের প্রতিনিধিত্বকারী রাষ্ট্রশক্তি এই ফুঁসে উঠা অসন্তোষ,নাগরিক ক্ষোভকে গ্রাহ্য করছেনা । গনতন্ত্রে নামাবলী গায়ে রাষ্ট্র নিজেই এক সর্বগ্রাসী দুঃশাসনকে প্রমোট করছে ।

দেখো ওড়িষ্যায় কি ধ্বংসযজ্ঞ চলছে কর্পোরেট গ্লোবালাইজেশনের নামে । বহুজাতিক কোম্পানী স্ট্রেরলাইট, ভেদান্ত, আলকান -বক্সাইটের লোভে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে সেখানকার পাহাড় ও বনভূমি । কাশ্মিরকে বলা হয় ভারতের প্যালেষ্টাইন । ওড়িষ্যার অবস্থা ও তো তেমন । ওড়ীষ্যা এখন এক পুলিশী রাজ্য ।
কয়েকবছর থেকে কাশীপুরে খনি-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে । সাধারন ভারতীয়দের কাছে স্বাধীনতার মানে কি যদি জানতে চাও তাহলে কুচাইপাড়ার ঘুরে এসো । কাশীপুর বিক্ষোভের মুল আগুন জ্বলেছে এই ছোট্ট আদিবাসী গ্রামে । পুরো গ্রাম চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ । গ্রামের মানুষের স্বাধিনতা নেই পাশের গ্রামে যাবার । তাদের অধিকার নেই মিছিল,মিটিং, সমাবেশের । গত দু বছর ধরেই চলছে ধারাবাহিক পুলিশী নির্যাতন- লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার,গুলী । কয়েকজন নিহত ও হয়েছে ।
গত বছর স্বাধীনতা দিবসে গ্রামের মানুষ কালো পতাকা উত্তোলন করেছে । এই হলো তাদের কাছে স্বাধীনতার মানে ।

আর ওড়িষ্যাকে ধর্ষন করছে যে কোম্পানীগুলো তাদের একটি ভেদান্ত-এর পরিচালক কারা জানো?
পি. চিদাম্বরম, অর্থমন্ত্রী হবার দিন পরিচালক পদ ত্যাগ করেছেন; ডেভিড গোরে-বুথ, ভারতে নিযুক্ত সাবেক বৃটিশ হাই কমিশনার; নরেশ চন্দ্র, সাবেক কেবিনেট সেক্রেটারী-যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং বিনিয়োগ বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ।
রক্তমাখা হাতে সেই একই খুনীর দল এবার আমাদের ঘরের ভেতর ।


মন্তব্য

কীর্তিনাশা এর ছবি

পড়ছি মোরশেদ ভাই।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তীরন্দাজ এর ছবি

খুব মুল্যবান কাজটি করে যাচ্ছেন আপনি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

শ্রেণী। প্রতারণা। ধারণা। কারণ।

- এমন কিছু কিছু "ন" আর "ণ" এর প্রায়েগিক দিকগুলোতে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে। এখনই ঠিক করে ফেললে পরে আর সময় নষ্ট হবে না।
যেমন- হবে না। যাবে না। বলবে না।
এখানে "না" একটি পূর্ণ শব্দ।
- যদিও আমারই অসাবধানতায় অনেক বানান ভুল হয়ে যায়, যে কারণে অন্যের রচনায় বানান নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। কিন্তু আপনার এই কাজটির পরিধি ব্যাপক বলে এখন থেকেই বানান-এর প্রতি মনোযোগ দিলে প্রুফ দেখার শ্রম অনেকাংশে কমে যেতো।
ধন্যবাদ।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আরো কিছু থাকলে ধরিয়ে দিনতো বড় ভাই ।
ঝটপট ঠিক করে নেই ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জুলিয়ান সিদ্দিকী [অতিথি] এর ছবি

স্বাধীনতা’ ধারনটাই একটা প্রতারনা মাত্র (প্রতারণা),

গণতন্ত্র, গ্রামীণ, তরুণ, উচ্চারণ, ভাষণ, পরায়ণ,

একই কারনে তারা তাদের পুরনো সাম্রাজ্যবাদী দখলদারীত্বকে ও সময়ের প্রয়োজন বলে প্রচার করতে চাইছে । (কারণে)

-রাতে আরো দেখবো।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ধন্যবাদ আবারো বড়ভাই । মুল লেখা এবং এই পোষ্ট দুটোতেই সংশোধন করে নেবো । আর কোন ভুল চোখে পড়লে জানাবেন ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

Cacofonix এর ছবি

খুব মুল্যবান কাজটি করে যাচ্ছেন আপনি।
Many Thanks

সুমন সুপান্থ এর ছবি

চোখ বুলিয়ে যাচ্ছি শুধু ।
এখন যদি পড়েই ফেলি, মলাটসহ পড়বো কি তাহলে ! মলাটের একটা মর্যাদা আছে না ! মর্যাদা আছে না আমার প্রিয় বন্ধুটির সব চেয়ে মূল্যবান ( লেখালেখি র ভুবনে । অন্য ভুবনে যে তিনি আরো আরো মূল্যবান কাজের কাজী, সে আর আমার চেয়ে বেশি কে জানে ! ) আর পরিশ্রমী কাজটির !!
তাই আগাম কয়েক কপি 'বুক' করে রাখলাম
প্রিয় লেখক
প্রিয় প্রকাশক , শুনছেন তো ?

---------------------------------------------------------

'...এইসব লিখি আর নাই লিখি অধিক
পাতার তবু তো প্রবাহেরই প্রতিক...'

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আর আমি ভাবি-কেউ কেউ ফাঁকিবাজি কে ও কি চমৎকার শিল্প বানিয়ে ফেলে হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।