বয়স বাড়ছে । টের পাই । আজকাল স্মৃতিকাতর হই বড়বেশী । কৈশোরের নীলাভ দিনগুলোর মতো ছোপছোপ অনুভূতিগুলো ফিরে আসে বারবার । পার্থক্য এই , সেই বয়সে রাগ হতো খুব । খুব একটা ভাংচুর টের পেতাম, বিশ্বাস করতাম-বদলাবে এইসব ।
বদলায়নি । দিনবদলের কোন তুচ্ছ রেখা ও দিগন্তে নেই বলে বয়স আরো বেড়ে যায় প্রতিরোজ, প্রতিরোজ আক্রান্ত হই । টের পাই-কিছুই হলোনা শেষ পর্যন্ত ।
ফয়সল ছেলেটা চলে গেলো ।
সকাল বেলা খবরটা পেয়েই সারাদিন স্তব্দ হয়েছিলাম । এক একটা মৃত্যু, এক একটা মানুষের চলে যাওয়া ... এক একটা মানুষের পেছনে কতো প্রস্তুতি, কতো স্বপ্ন, কতো আয়োজন, প্রেম, স্নেহ, ভালোবাসা, বন্ধুতা ।
এতোই তুচ্ছ সব, এতো মুল্যহীন ?
একি মৃত্যু, নাকি হত্যা? ফয়সলকে কি হত্যা করা হয়নি?
এতো সন্ত্রাস, এতো অরাজকতা, এতো স্বেচ্ছাচার, এতো যাচ্ছেতাই- কে জবাব দেবে? কারো জবাবদিহীতার কোন নিয়মই নেই ।
কতো আয়োজ়ন, কতো সংলাপ, কতো রংঢং- রাজদরবারে নতুন সজ্জার প্রস্তুতি, জাতীয় বিনোদন ।
জীবনের এতো অসহ্য অপচয়ে- কারোরই কিছুই আসে যায়না এই মৃত্যু উপত্যকায় ।
এ শহর ছেড়ে তুমি পালালে কোথায়?
-----------------------------------------------
গতকাল ছিলো মউজদীনের মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকী । এও কি মৃত্যু? এ ও কি হত্যা নয়?
কবি মমিনুল মউজদীন লিখেছিলেন:
এ শহর ছেড়ে আমি পালাবো কোথায়
যেদিকে তাকাই দেখি সারাটি ভুবনময়
আলো আর মৃত্তিকার বুকের ভিতর
তোমার দু’চোখ
সুরভিত শস্যময় সজল দু’চোখ।
বোকা কবি জানতেন না- পালিয়ে না বাঁচলে বড় ক্রুরতায় হত্যা করে এই শহর, এই দেশ, এই মৃত্যু উপত্যকা ।
মন্তব্য
রেমার্কের "রোডব্যাক"-এর কথা কী আপনার মনে আছে? যেখানে যুদ্ধ থেকে পুত্র ঘরে ফিরে বাবা-মায়ের কাছ থেকে পুরোনো প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের মৃত্যু সংবাদ শুনে জিজ্ঞেস করে তারা কী গুলি খেয়ে মরেছে, নাকি বোমার আঘাতে মরেছে। মাথাভর্তি যুদ্ধের স্মৃতি বয়ে নিয়ে বেড়ানো পুত্রের পক্ষে রোগে ভুগে বা বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুর কথা আর মনে হয় না। প্রতিদিনের দেখা-শোনা নঞর্থাক ঘটনা আমাদের মননকে অমন জায়গাতেই নিয়ে গেছে।
একবার এক কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে "ডাকাতদের গ্রাম" বলেছিলেন। তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল তখন। আমার কাছেও সেই প্রতিবাদকে যৌক্তিক বলে মনে হয়েছিল। তার মাত্র কয়েক বৎসরের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাধিক বার ছিনতাই-এর শিকার আর চিবুকের নীচে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আমার সেই বোধ বিপরীত দিকে হাঁটা দিয়েছিল। আমাদের আস্থার জায়গাগুলো এভাবেই নিঃশেষিত হয়েছে।
শত লাঞ্ছনা, অবমাননা, অভাব-অভিযোগের পরও এই পোড়ার দেশটাকে ভালোবাসা ত্যাগ করতে পারবোনা। তারপরও সন্তানের মুখের দিকে তাকালে বুকটা ভয়ে বার বার কেঁপে ওঠে। দেশটাতো আসলেই মৃত্যু উপত্যকা। এই ঈশ্বর-পরিত্যক্ত দেশে ওকে একা রেখে কোন ভরসায় পরপারে যাত্রা করবো?
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গতকালই শুদ্ধস্বরে টুটুল ভাই বলতেছিলেন কবি মমিনুল মউজদীন-এর কথা। তার কবিতার কথা, তার মারা যাওয়া দিনের কথা। তার কথায় কথায় উঠলো সঞ্জীবদার কথাও। গতকাল সঞ্জীব দা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দুজনই কী মরে বেঁচেছেন এই মৃত্যু উপত্যকার দেশের অশান্তি থেকে?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ভাল্লাগে না, জীবনের গান শুনতে ইচ্ছা করে
anthem - kamelot
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
বড় সত্য কথা বলে ফেলেছেন হাসান ভাই। আমরা হয়ত চিরকাল উলুখাগড়া হয়েই বেঁচে থাকব আর প্রান দিতে থাকব অকাতরে... কে জানে...!!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
বেঁচে থাকাটাই বিস্ময়কর -------- আরও বিস্ময়কর এটুকু সময়ের জন্য এত স্ট্রেস নেয়া!
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
- একটা মৃত্যু, কাঁপিয়ে দেয় রাস্ট্রের সর্বোচ্চ ভীত পর্যন্ত। অথচ আমাদের দেশে...!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন