তারপর পেরিয়ে গেছে বছর অধিক কাল। কতো কিছু হয়ে গেলো এই কালের বৃত্তে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, হতেই হবে- প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলো মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়া দলটি( যদি ও রামের নামে নগর হলেও রামনগরে রাম থাকেনা সবসময়)। আমরা শুনছি, বিচারের প্রক্রিয়া চলছে, চলুক। শান্তিকামী নাগরিক আমরা ও চাই, খুনীদের বিচার হোক আইনসম্মত ভাবেই- যদি ও গনহত্যার কোন আইন ছিলোনা, আইন ছিলোনা জাতিশোধনের, আইন ছিলোনা ধর্ষন ও শিশু হত্যার।
তবু আমরা অপেক্ষায় আছি, শুভবোধ সম্পন্ন সকল মানুষেরা অপেক্ষায় আছেন- চোখের বদলে চোখ উপড়ে নিয়ে সর্বগ্রাসী অন্ধত্ব নয় বরং সময় নিয়ে আইনসম্মত ভাবেই প্রকাশ্য বিচার হোক যেনো আমদের আগামীর ইতিহাস হয় আলোক যাত্রার।
আমি এখন '৭১ এর গনহত্যার কথা বলছিনা, একটা জাতিকে উপুর্যপুরি ধর্ষনের বিচারের কথা ও বলছিনা- আমি তিন যুগ দুবছর আগের ইতিহাস ও খুঁড়ছিনা- আমি কেবল একটি বিস্মৃত মুখের কথা মনে করছি, একটি অপমানকে স্মরন করছি, মাত্র এক বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে স্বাক্ষী মানছি।
জুলাই '০৮ এ জামাতের চামুন্ডাদের হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আলী আমান। ক্ষোভে উত্তাল হয়েছিলেন বংগবাসী, যেমন হয়ে থাকে যে কোন ঘটনা-দূর্ঘটনায়। ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন সেক্টর কমান্ডার্স, নির্মুল কমিটি, আওয়ামী নেতৃত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব- অমুক তমুক। আহা- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় না থাকায় এতো বাড়াবাড়ি! কারা যেনো শহীদ মিনারে বেচারা আলী আমান রঙমিস্ত্রির গলায় মালা ও ঝুলিয়েছিলেন।
তারপর? পক্ষশক্তি তো এলো ক্ষমতায়!
যে রাষ্ট্র এক বছর আগের অপরাধের বিচার করতে পারেনা সেই রাষ্ট্র ৩৮ বছর আগের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেয় কোন সাহসে? একজন মানুষকে শারীরিক নিগৃহ ও মানসিক অপমানের শাস্তি দিতে পারেনা যে বিচার ব্যবস্থা, সে কি করে গনহত্যার বিচার আয়োজন করবে? যে নাগরিক দল সাম্প্রতিক ক্ষোভকে পরিনতির দিকে নিয়ে যেতে জানেনা তারা কি করে পূর্ব পুরুষের হত্যার বিচারে রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে পারবে?
একটা সামান্য জামাতী ইতর যে আলী আমানকে লাথি দিয়েছিল, তাকেই খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়া গেলোনা আর বড় বড় খুনীদের বিচারের স্বপ্নে বিভোর হয়েছি আমরা।
কেউ কি বলতে পারি, আলী আমান এখন কোথায় আছেন-কেমন আছেন?
আমাদের নিহত স্বজনদের হাড় ও জেনে গেছে, বিচারের নামে ফাঁপা বুলি আওড়ানোই বিনোদন আমাদের; ক্ষোভ, ক্ষোভ-বিক্ষোভ বুদ্বুদ খেলা শুধু, এর বেশী কিছু নয়।
মন্তব্য
_____________________________________________
কার জন্য লিখো তুমি জলবিবরণ : আমার পাতার নৌকা ঝড়জলে ভাসে...
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
এত অসহায় লাগে নিজেকে এই ভিডিওটা দেখলে।
আর শুধু অকথ্য সব গালি গালাজ বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে, সব শালা শুয়োরের বাচ্চা!
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
এত অসহায় লাগে নিজেকে এই ভিডিওটা দেখলে।
আর শুধু অকথ্য সব গালি গালাজ বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে, সব শালা শুয়োরের বাচ্চা!
খুব লজ্জা পেলাম হাসান ভাই। ক্ষোভে নিজের হাত কামড়াতে ইচ্ছা করে।
শুধু লজ্জা পাই।
কোথায় আজ সেক্টর কমান্ডার রা, কোথায় আজ নির্মূল কমিটি? কোথায় সব? ক্ষমতার মসনদে বসে সব ভুলে গেলে চলবে কি?
কিচ্ছু হয় না.... পূর্বের আন্দোলনকারীরাও নির্বিকার পড়ে আছে। সব কমিটি-ফমিটি যেন আওয়ামীলিগের কেনা? আওয়ামীলিগ ক্ষমতায় আসলেই যেন সব দায়িত্ব শেষ । আমরা ভুলে যাই শাসকের চরিত্র ।
"আমাদের সরকার" সব করবে বলে আমরা বসে বসে আঙ্গুল চুষি । “আমাদের সরকার” বলে কিছু নেই । “আমাদের সরকার” বললে কোন দাবি কার্যত আদায় হয় না। জনগনের কাছে সরকার সবসময়-ই একটি প্রতিপক্ষ প্রতিষ্ঠান । যার চরিত্র-ই হচ্ছে টালবাহানা করা , জনগনের কাজ তাকে বাধ্য করানো । আমারা তা করতে ভুলে যাই
এই মুক্তিযোদ্ধার অপমানের কিছুই হবে না । হয়ত আরো কোন মুক্তিযোদ্ধাকে আবার অপমান করবে - আমরা কদিন হৈ চৈ করবো , মানববন্ধন করবো । যেমন করে করেছিলাম লালন ভাস্কর্য নিয়ে । লালন ভাস্কর্য কোন খবর আর রাখা হয় নি
প্রগতিশীল সরকার তো ক্ষমতায় এলো - লালন ভাস্কর্যের খবর কেউ জানেন নাকি?
আশ্চর্য এতসব বাস্তবতা বোঝার পরেও ভোটের সময় আমিও আওয়ামীলিগ কে ভোট দিছি । শুধু মাত্র বিকল্পের অভাবে । কিন্তু বিকল্প আমরা তৈরী করি না কেন?
আমরা বাম রাজনীতি নানা সমালোচনা করি কিন্তু সেটা এদের চেয়ে এত খারাপ হয়ে যায় নি তো..
আমাদের সত্যি একটা বিকল্প দরকার । আওয়ামী মূলা ঝোলানো আর সহ্য করা ঠিক হবে না
কী মন্তব্য করবো বুঝতে পারছি না। আপনার লেখা বিস্ফোরণের মতো ভেতরটা জ্বালিয়ে দিলো। এই কুত্তার বাচ্চাদের শাস্তি কবে হবে!
খুবই হতাশ লাগে।
বিচারপতি হয়েও ইতিহাসের বিচার করতে ব্যর্থ এসব কথিত শিক্ষিতেরা। আমাদের দুর্ভাগ্য!
হতাশ। মাঝে মাঝে মনে হয় এই অন্ধকার সুরঙ্গ শেষ হবে না .............
এইটা একটা খেলা... বুঝতে হবে... বুঝে ইজি থাকতে হবে...
৯২ সালে গণআদালত বইছিলো... ঘাদানিক নিয়া সারাদেশে তোলপাড় হইছিলো... সেইটার একটা রাজনৈতিক প্রয়োজন ছিলো...
এবারও যুদ্ধাপরাধী ইসুটার একটা রাজনৈতিক প্রয়োজন ছিলো বলাই বাহুল্য।
এই মেয়াদটা গেলে পরের মেয়াদে যদি অন্যদল ক্ষমতায় আসে, তখন এই ইসুতে আবার মাঠ গরম করা হবে।
আমি ভাবতেছি জাহানারা ইমাম, সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের পরে নায়ক কাকে বানানো হবে।
অথবা হয়তো তখন আর এই ইসুটার প্রয়োজন হবে না। হয়তো দেশে তখন আর কোনো যুদ্ধাপরাধী থাকবে না। সব জোট বেঁধে যাবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
যা বলার নজরুল বলে দিয়েছে ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
সব জোট বেঁধে গেলে খুব ভাল হয় । সবগুলার মুখে একবারে মুততে পারতাম । বার বার ঘুরায় ঘুরায় মুতা কষ্ট ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
কাকতালীয় বললে কম বলা হবে। ঠিক ভোরবেলাতেই ভাবছিলাম বিষয়টা নিয়ে। শিমুল লিখে ফেললেন
সেই অপমান সেই ধৃষ্ঠতার কোনো বিচার হয়নি, খুজে বের করা হয়নি সেই ঘৃণ্য বেয়াদবকে
তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই
তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই
সরকারের আন্তরিকতা আছে এই বিশ্বাসটা রাখতে চাই।
কেন জানি মনে হয়, ঈশ্বরও রাজাকারগুলারে কিছুদিন বেশী বাঁচিয়ে রাখতে চান। কোন উদ্দেশ্য আছে হয়ত, জানি না। এটা মনে করার কারণ, বিগত তত্ত্বাবধায়ক আমলে যখন রাজাকারগুলারে বিচারের প্রবল দাবী উঠল, মনে হল এইবার শয়তাগুলার আর উপায় নাই। ঠিক তখন সিডর এসে সব ভেংগে চুরমার করে দিল। শয়তানগুলাও হাফ ছেড়ে বাঁচল। মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ল সিডর নিয়ে।
আর বর্তমান সরকার যদি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়; তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কখনোই করতে পারবে না। পাঁচ বছরের সরকারে যদি ২/৩ টা সাইক্লোন আসে (ঈশ্বর না করুন), তাহলে আর বিচার করতে হবে না। দেশের মানুষ বাঁচাতে গিয়ে মানুষ "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার " ইস্যুটাই ভুলে যাবে। আর রিয়াল-ডলারের আব্বাদের চাপ কতটা সরকার সহ্য করতে পারে সেটাও দেখার বিষয়।
তবে, কেন জানি মনে হয়, পঞ্চম বছরে সরকার বিচার শুরু করবে কিন্তু শেষ করবে না (দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে)। যেহেতু বিচার শুরু হয়ে যাবে, সেটাকে শেষ করানোকেই ইস্যু করে পরবর্তী নির্বাচনে যাবে আওয়ামী লীগ।
তারপরও আশাবাদী থাকতে চাই। এ ছাড়া উপায় নাই যে।
নদী
মোরশেদ ভাই,
জুলাই’০৮ এর ঠিক কত তারিখে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে ছিল একটু বলবেন ?
যদি আমার ভুল না হয়, জুলাই ১১, সাল ২০০৮, বার শুক্র।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমরা খুব সহজেই পূর্ব প্রজন্মকে নানা কারনে অভিযুক্ত করি।
ভাবি, আমরা কি করে ক্ষমা পাবো পরের প্রজন্মেরা থাকে কাছে। স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারলে ও পতিত স্বৈরাচারের বিচারের ব্যবস্থা করতে পারিনি আমরা, সামরিক বুটের নীচে যাদের কৈশোর, তারুন্য কেটেছে তাদের পরিনত সময়েই কি করে সে আবারে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠলো?
না, আমি সরকারকে এককভাবে দায়ী করিনা। প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার অনেক দৃশ্য-অদৃশ্য সীমাবদ্ধতা থাকে। সুনাগরিকেরা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে সরকারকে বাধ্য করে।
আমাদের নাগরিক জোটবদ্ধতা কোন ফলাফল বয়ে আনতে পারেনা অথবা হয়তো আমাদের প্রত্যয়ে ততোটা দৃঢ়তাই থাকেনা।
কৃতজ্ঞতা সবাইকে। কিছু করতে পারি বা না পারি অন্ততঃ এইসব দৃশ্যাবলী যেনো ভুলে না যাই।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এখনো নিরাশ মনে আশাবাদী।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
যদি ও রামের নামে নগর হলেও রামনগরে রাম থাকেনা সবসময়
-
খুবই বেদনাবহ উপলব্ধি, কিন্তু এটাই বাস্তবতা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়তো হবেনা।
নতুন মন্তব্য করুন