১।
কবরস্থান একটু বেশী ছায়াময় হয়?
জরুরী নয়, তবু এরকম একটা জিজ্ঞাসায় আক্রান্ত হলো রাশেদ আনোয়ার, অক্টোবরের এক প্রায় শেষ হয়ে আসা বিকেলবেলা। মুলফটক দিয়ে বেশ ভিতরে এসে সে ঘুরে তাকাল। দেয়াল তখন অনেক দূরে, দেয়ালের বাইরের সড়ক তবু দৃশ্যমান। দৃশ্যমান সড়কের উপর নরোম রোদ, অথচ কবরস্থানে ছায়া ছায়া প্রায় অন্ধকার। সামিনার বলে দেয়া অনুযায়ী কবরটা এখানেই থাকার কথা। এইতো বড় একটা গাছ, গাছের পেছনে পাকা কবর, তার পাশেই। কিন্তু পাশের কবরটা তো বড় মানুষের, বছর চারেকের পুরনো ও মনে হচ্ছেনা।
ঠিক এখানেই তো?
অবশ্য সামিনা নিজেও কবরটা দেখেনি।কবরস্থানে নিষিদ্ধ মেয়েরা,মা যদিও । সড়কের ওপাশে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল উঁচু করে সামিনাকে একবারই দেখিয়েছিলো সামিনা’র স্বামী।
স্বামী? রাশেদ আনোয়ারের অস্বস্তি জাগলো।
ছায়া মাড়িয়ে সে এসে দাঁড়ালো কবরটার পাশে।হয়তো এখানেই কবর হয়েছিলো, তার উপর আবার নতুন কবর হয়েছে। কতোদিন পর কবরের উপর নতুন কবর দেয়া হয়? কবর হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর ঠিকানা কি কেউ লিখে রাখে এখানে? চারপাশে তাকালো সে অপ্রয়োজনে। উত্তর দেবার মতো কেউ নেই কোথাও। মুল ফটকের পাশে একটা অফিসের মতো দালান আছে কিন্তু তালাবদ্ধ। হয়তো আরো আগে আসতে পারলে কাউকে পাওয়া যেতো কবরটার খোঁজ করার জন্য। কিন্তু ঢাকা থেকে এই জেলাসদরের এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেলো। বাংলোটা শহরের বাইরে। সেখানে গাড়ি রেখে, কাপড়বদলে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা।
সামিনাকে কি বলবে সে? কবরটা চিনতে পারেনি?
অথচ সামিনা আসতেই চায়নি।প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপনে কেউ এমন জায়গায় বেড়াতে আসেনা যেখানে মৃত সন্তান শুয়ে আছে, বিশেষতঃ সেই বিবাহ যখন আর মৃত সন্তানের জনকের সাথে টিকে নেই।
তবু সে জোর করে রাজী করিয়েছে সামিনাকে। স্বপ্ন দেখিয়েছে এই শহরে আমরা একটা বাড়ি কিনবো।বুড়ো হয়ে গেলে আর ঢাকার ধুলোময়লায় নয় বরং এইশহরের চায়ের ঘ্রান আর মায়াবী সবুজে আমরা দুজন কাটিয়ে দেবো শেষদিনগুলো।
সামিনা দূরের দেয়ালের বাইরে মুল সড়কের পাশে দাঁড় করানো গাড়ীর ভিতর। এখানে তার গর্ভের সন্তান শুয়ে আছে, তবু সামিনার অধিকার নেই প্রবেশের।সামিনার হয়ে এই মাটি ছুঁতে এসেছে যেজন তার সাথে মাটিস্থ শিশুটির কোন সম্পর্ক নেই।
কোন প্রার্থনা নয়,কবরের মাটি কেবল নীচু হয়ে স্পর্শ করলো রাশেদ আনোয়ার।এক অযৌক্তিক, অবর্ননীয় পিতৃস্নেহর মতো অব্যাখ্য অনুভূতি তাকে আঁকড়ে ধরলো। তার তৃষ্ণা পেল প্রবল।ঐ তো দেয়ালের ওপাশেই সামিনা। তবু মনে হলো যেনো অনতিক্রম্য দূরত্বে। তৃষ্ণা নিবারনে জন্য এই দূরত্বটুকু অতিক্রম করা জরুরী।সামিনা কি তৃষ্ণার জল? অথচ একবছর কয়েক মাসে আগে ও তার এবং সামিনার পৃথিবী ছিলো পরস্পর থেকে অনেক দূরে, অনেক অচেনা, অনেক বিপরীত।
সামিনাকে নিয়ে অদ্ভূত,ব্যাখ্যাতীত কিছু ঘটে যা কিছু সে কাউকে বলতে পারেনা, সামিনাকে ও না।
সেদিন এক রেঁস্তোরায় বসে কফি খাচ্ছিলো তারা।আলবেয়ার কাম্যু কি করে তার লেখা সহ বদলে গেলেন এক্সিস্টিনিয়ালিজম থেকে এবসার্ডিজমে, বলছিলো সে। সামিনা কিছু বুঝছিলো, অনেকটুকুই বুঝছিলোনা।রাশেদ আগুন গরম কফিতে চুমুক দেয়,সামিনা ফুঁ দিতে দিতে কফি ঠান্ডা করে। ফুঁ দিতে দিতে সামিনা ঠোঁট টিপে হাসছিলো। তার হাসিতে শব্দ হয়না। তবু রাশেদ শব্দ শুনছিলো হাসির অথচ সামিনা নেই। সামিনা আছে, তার অস্তিত্ব টের পাচ্ছে সে, তার হাসির শব্দ শুনছে সে অথচ মুখোমুখি বসা ছিলো সামিনা। তবু সামিনাকে দেখছেনা সে। দৃষ্টিতে, দর্শনে সামিনা নেই!চারদিকে সব ছিলো, সবাই ছিলো। রেঁস্তোরার রঙ্গীন পর্দা, পাশের টেবিলে মুখোমুখি নির্বাক দম্পতি,মোবাইলের রিংটোন, সামিনার নিঃশব্দ হাসির শব্দ শুধু সামিনা ছাড়া।
হয়তো মুহুর্ত কয়েক।সামিনা হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করেছিলো তার হাত।জিজ্ঞেস করেছিলো-হঠাৎ বিষন্ন কেনো?
দেয়া উত্তর মনে নেই এখন আর রাশেদ আনোয়ারের। মনে না হওয়ার অস্বস্তি নিয়ে সে উঠে দাঁড়ায়।সামিনার দিকে ফিরে যেতে যেতে হঠাৎ করেই যেনো মনে পড়ে যায় তার - এই শিশুটার মৃত্যু দরকারী ছিলো। সামিনার বেঁচে উঠার জন্য। সামিনাকে জড়িয়ে ধরে তার আরেকবার নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য।
২।
পায়ের কাছে জোছনা এসে লুটোপুটি খেললে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
জানালা খোলা ছিলো। অক্টোবরের রাতে এই পাহাড়ী শহরে আলতো করে শীত পড়তে শুরু করে। দরজার ওপাশে টানা বারান্দা। সামিনা উঠে তার নিরাভরন শরীরে আলগা করে শাড়ী জড়ায়।রাশেদ ঘুমিয়ে আছে, ঘুমিয়ে পড়া মুখে তার এক চিলতে হাসি, তৃপ্তি ও সারল্যের। রাশেদের নগ্ন শরীরে চাদর টেনে দিয়ে সামিনা এসে দাঁড়ায় বারান্দায়।
বাংলোটা শহর থেকে বেশ বাইরে একটা পাহাড়ের চুড়ায়।রাত হয়তো প্রায় শেষ।হালকা কুয়াশা পড়েছে, আশেপাশের পাহাড়গুলো জমাটবাধা গাঢ় সবুজের মতো।অনেক দূরের উঁচু পাহাড়ে ছেড়া ছেড়া আলো। রাশেদ বলছিলো ওটা মেঘালয়ের পাহাড়,আলোগুলো খাসিয়া পুঞ্জি। রাশেদ বলছিলো- মেঘালয়ে যেতেই হবে একবার। ওখানে মাথার উপর দিয়ে থোকা থোকা মেঘ ভেসে যায়,হাত দিয়ে সেই মেঘ ছুঁয়ে যায়।
এই লোকটার সাথে দেখা না হলে, এই লোকটার সাথে জীবন নতুন করে শুরু না করলে কতোকিছু অজানা থেকে যেতো সামিনার। কিন্নর বলে অনেক উঁচুতে নাকি একটা জায়গা আছে, সে জায়গার মেয়েরা স্বর্গের অপ্সরাদের চেয়েও সুন্দরী,কোন কোন আদিবাসী গ্রামে ফসল বুনতে যাওয়ার আগে পুরুষেরা নিজ নিজ নারীদের পুজো করে কেননা নারীরাই তো শস্যমতী, উৎপন্নের আঁধার।এতো কিছু জানা হতোনা সামিনার, এমনকি নিজের শরীর। শরীরের চরম তৃপ্তি, অর্গাজম,মাল্টি অর্গাজম, বিছানায় আধিপত্য নেয়া!
অথচ বিবাহিত জীবনের চারটা বছর কি দুর্বিষহ সমর্পণ ছিলো সামিনার। লোকটা এই শহরে চাকরী করতো, বিয়ে করে তাকে নিয়ে এসেছিলো।লোকটা ভালো ছিলোনা, লোকটা মন্দ ছিলোনা। তার কোন অভিব্যক্তি ছিলোনা, তার কোন প্রতিক্রিয়া ছিলোনা। অফিস শেষে সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে টিভি দেখতো, সাথে থাকা মা-বোনের সাথে কথা বলতো, খাওয়া দাওয়া শেষ হলে পর দরজা লাগিয়ে মৃয়মান সামিনাকে টেনে নিতো।ক্লান্তিকর রমণ শেষে সিগারেট টেনে ঘুমিয়ে পড়তো।
দুবছরের বাচ্চাটা শেষপর্যন্ত মারা যাওয়ার পর সরকারী কবরস্থানে দাফন শেষে ঘরে ফিরে ও সে সিগারেট টেনেছিলো। তিনদিন পর সামিনাকে টেনেছিলো, সামিনা ঊরুর ভাজ খুলে দিয়েছিলো নিরবে।কয়েক মিনিট পরে আবার সিগারেট টানতে টানতে বলেছিলো- মরা বাচ্চাকে ভুলতে তোমার আরেকটা বাচ্চা দরকার।
সামিনা ভুলতে চায়নি তো! দুবছরের বাচ্চা, জন্ম থেকেই যার হৃদপিন্ডে ছিদ্র,শ্বাস নেয়ার সময় গড়গড় আওয়াজ উঠতো, নীল হয়ে যেতো ফর্সা তুলতুলে দেবশিশু সামিনা তাকে ভুলতে চায়নি কখনো। তবু লোকটার কি বিভৎস রমণ! সামিনা তখন কাঁপতো, পানিতে হাত ডুবিয়ে কাঁদতো, ক্ষিধে লাগতে লাগতে শরীর অবসন্ন হয়ে পড়তো কিন্তু কিছু খেতে পারতোনা।তবু লোকটার যেনো মরনপণ জেদ আরেকটা সন্তান জন্ম দিয়ে মৃত সন্তানকে ভুলে যাবে,ভুলিয়ে দেবে! পরপর দুবার গর্ভপাতের পর সামিনার আর ঊরুর ভাজ খুলে দেবার শক্তিটুকু ও অবশেষ নেই।
সামিনা হয়তো মরেই যেতো। তার ফিরে যাবার কোন জায়গা ছিলোনা। বাবা ছিলেননা, শয্যাশায়ী মা বড়বোনের সংসারে , ছোটভাই দুবাই। তবু সামিনা বেঁচে উঠলো শামীম ভাই ইংল্যান্ড থেকে ফিরে আসার পর।খালাতো এই ভাইটির স্নেহ ছিলো তার জন্য সবসময়। সামিনাকে জোর করে নিয়ে আসলেন তিনি।
একবছর পর রাশেদের সাথে সামিনার বিয়ের আয়োজন ও তার করা। বলেছিলেন সামিনাকে- জীবন ফুরিয়ে যায়না কখনোই।আরেকবার সাহস করে শুরু কর। রাশেদ অন্য রকম ছেলে।ইংল্যান্ডে ফিরে যাবেনা বলে ওর স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে ফিরে গেছে, ওরা ফিরবেনা আর। ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায়,তুই ও তোর পড়াশুনোটা শেষ কর।
শামীম ভাই তাকে এই উপলব্দি দিয়েছিলেন জীবন হলো ষাঁড়ের লড়াই। সাহসী ম্যাটাডোরের মতো লড়তে না জানলে প্রথম রাউন্ডেই ফুরিয়ে যেতে হবে, রক্তাক্ত, ছিন্নভিন্ন হয়ে ছিটকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর লড়তে জানলে হারতে হারতে ও শেষ মুহুর্তে জিতে যেতে পারে রক্তাক্ত মানুষ।
সামিনা জানে সে জিতে গেছে শেষপর্যন্ত। রাশেদ তাকে প্রথম জানিয়েছি কেবল ঊরুর ভাঁজ খোলে দেয়াই জীবন নয়। জীবন অন্যত্র, জীবন আরো কিছু।চলে যাওয়া সন্তানের জন্য রাশেদের গভীর বেদনাবোধ আছে, কিন্তু নতুন সন্তান জন্ম দিয়ে সেই বেদনা মুছে দেবার কোন তাড়া নেই তার। সামিনার হাতের আঙ্গুল নিয়ে খেলতে খেলতে বলছিলো সে- আমাদের মাঝখানে তৃতীয় কারো কী দরকার? এমনকি সন্তান! দুজন দুজনকে জড়িয়ে থেকে জীবন ফুরিয়ে দেবো। শুন্য করে চলে যাবো ভাণ্ডার!
এই শহরে এসে স্থায়ীভাবে থাকার স্বপ্ন দেখে রাশেদ। সামিনা জানে,এটা তার মৃত সন্তানের প্রতি রাশেদের সৌজন্যপ্রকাশ। রাশেদ তার মাতৃত্বকে শ্রদ্ধা করে, রাশেদ চায় সামিনা ভালো থাকুক তার সন্তানের কাছাকাছি। মৃত সন্তান।
অথচ সামিনার বড় অস্বস্তি হয়।গোপন পাপের মতো এক তীব্র অস্বস্তি তাকে আক্রান্ত করে। রাশেদ তার জীবনের আসার পর এই অস্বস্তি সে আবিস্কার করে। বড় সিদ্ধান্তহীন,পরিনতিহীন এই আবিস্কার, যেনো না হলেই সে বেঁচে যেতো। অথচ জানে সে- আদতে এই আবিস্কারই বাঁচিয়ে তুলেছে তাকে।
মৃত সন্তানের কথা মনে হলে এখন আর সামিনার কোন কষ্ট হয়না। আজ বিকেলে যখন সে একা বসেছিলো গাড়িতে আর রাশেদ গিয়েছে কবরস্থানের ভেতরে তখনো মৃত সন্তানের মুখ ভাসছে তার চোখের সামনে। ঐ ছোট ছোট হাত পা, তুলতুলে শরীরের ঘ্রান,শ্বাসকষ্ট সব স্পষ্ট মনে পড়ে তার কিন্তু এই মনে পড়ায় এখন আর কোন কষ্ট পায়না সে, যে কষ্ট নিয়মতান্ত্রিক, বাঞ্চিত। বরং একটা তীব্র সুখের মতো অনুভূতি জাগে খুব গোপনে।
সুখ? সুখের মতো?
মৃত সন্তানের স্মৃতিচারনে সুখের মতো অনুভূতি? সামিনার ভয় ভয় জাগে। নিজেকে পিশাচিনীর মতো মনে হয় তবু এই সুখের মতো অস্বস্তি সে অস্বীকার করতে পারেনা।এই সন্তান বেঁচে থাকলে সে নিজে আজকের এই বেঁচে থাকা জীবনটা যাপন করতে পারতোনা।
কবরস্থান থেকে বাংলোয় ফিরে আসার পথে রাস্তার পাশে একটা পাহাড়ে তারা থেমেছিলো। সূর্য তখন ডূবছে। রাশেদ বলছিলো চলো পাহাড়ের চুড়োয় বসে সূর্যাস্ত দেখি।পাহাড়ের ঢালে একটা গলফ কোর্স। অবশ্য ছেলেরা গলফ নয় ক্রিকেট খেলছিলো। পাশ দিয়ে হেঁটে যাবার সময় ওরা তাকিয়ে ছিলো। কেউ একজন বোধহয় কিছু বলছিলোও। সামিনার ভালো লাগছিলোনা। রাশেদ হাসছিলো- শরীর নিয়ে তোমার অস্বস্তি এখনো গেলোনা।ছেলেরা তোমার প্রশংসা করছে।
বাংলোয় ফিরে আসার পর রাশেদ বশংবদ দাসের মতো প্রশংসা করছিলো তার শরীরের। সামিনা ওর কৌশল জানে। সামিনাকে জাগিয়ে তোলার জন্য এইসব বদমায়েশী সে খুব ভালো জানে। সামিনাকে নিরাভরন করতে করতে বলছিলো এই পাহাড় চুড়োর রাতে তুমি কাউগার্ল হও। মাই ডিয়ারেস্ট হর্নি গার্ল!
ঘন্টা কয়েক আগের খুনসুটি মনে পড়তে পড়তে সামিনা টের পায় তার শরীর জাগছে আবার। যে শরীর মরে গিয়েছিলো, ঊরুর ভাঁজ খুলে দেয়া ছাড়া যে শরীরের আর কোন ভূমিকা ছিলোনা সে শরীরের এই তীব্র প্রানময়তা সামিনাকে এখন তুমুল দোলায়।
বারান্দায় থেকে জানলা দিয়ে সে ঘরের ভিতর দেখে। রাশেদ ঘুমিয়ে আছে। এই ঘুমন্ত রাশেদকে তেমন পুরুষ মনে হয়না তার এই মুহুর্তে। বরং সারল্য আর তৃপ্তি নিয়ে সে শিশুর মতো,যেনো তার গর্ভজাত শিশু।
সামিনা মুখ ফিরিয়ে নেয়। শরীরের জেগে উঠা আরো তীব্র হচ্ছে। চাঁদ চলে গেছে মেঘের আড়ালে। অন্ধকারে আরো অধিকতর জমাট বেঁধে আছে চারপাশের জঙ্গল, প্রকৃতি। সামিনা আলগা হয়ে থাকা শাড়ী সরিয়ে ফেলে তার শরীর থেকে।
প্রকৃতি এক প্রবল পুরুষ হয়ে জেগে উঠছে। শেষরাতের ঠান্ডাবাতাস, অন্ধকার আকাশে জেগে থাকা তারা, দূরের পাহাড়ের আলো, বনের জমাট সবুজ সব এক কাঠামোতে মিশে গিয়ে তৈরী হচ্ছে প্রবল পুরুষের আকার। সামিনা কেঁপে কেঁপে উঠে। টের পায় তার ঊরুর ফাঁকে প্রস্তুতি।
যে পুরুষ আসলে নেই, প্রকৃত সেই প্রবল পুরুষের উত্থিত প্রবেশের জন্য টানটান প্রতীক্ষারত শরীর। সামিনার।
মন্তব্য
ভালো লাগলো।
-শিশিরকণা-
(amihimi@gmail.com)
ধন্যবাদ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
পড়লাম। ভালো লাগলো ।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
হোক্কে
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভাবাচ্ছে...
আরেকবার পড়ি বরং।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ঠিকাছে
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভালো লাগলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কিছু কিছু জায়গায়, যেমন-
এখানে মাটিস্থ শব্দটি কেমন যেন চোখ টাটাচ্ছে। পুরো গল্পটা পড়লাম, রাশেদ আনোয়ারের চরিত্রটা নিয়ে লেখক দ্বিধায় ভুগছিলেন ? তার সাথে কিছু কিছু ব্যাপার রিলেট করতে বারবার খেই হারিয়ে ফেলতে হচ্ছিল। কে জানে , হয়তো এটা পাঠকের বোঝার ভুলও হতে পারে।
-----------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। কৃতজ্ঞতা।
হ্যাঁ। রিলেট না করানোর একটা সজ্ঞান চেষ্টা ছিলো :)। না, পাঠকের বুঝার ভুল নয় একেবারেই।
ক্যাটাগরিতে এমন ঈঙ্গিত ছিলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ভাল লাগল হাসান।
ধন্যবাদ আপা। ভালো লাগাটুকু জানানোর জন্য।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অনেকদিন পর আপনার একটা গল্প পড়লাম। বরাবরের মতো মুগ্ধ। অনেক ভালো লেগেছে।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
হুম। অনেকদিন থেকেই লেখা হচ্ছিলোনা। ধন্যবাদ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
খুবই সুন্দর লাগল।
সুন্দর?
কৃতজ্ঞতা পাঠের সময় দেবার জন্য।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কাম্যু পড়তেছিলেন জানি। কিন্তু এই গল্প দেখি আবসাডিজম থেকে পুরা এগজিস্টেনশালিজমের গল্প।
গল্প ভাল্লাগছে।
----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
হাহাহা । জ্ঞানী লোকজনরে নিয়া এই হলো বিপদ, এরা সবকিছু ধরে ফেলে।
হ্যাঁ এই লেখাটায় সজ্ঞানে কাজ করেছি। হয়েছে কিনা জানিনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বাহ্ ! জীবনের আশ্চর্য গভীর থেকে ওঠে আসা এমন অভূতপূর্ব উপলব্ধি ! অদ্ভুত বাস্তবতা ! বিশ্বাস করতে মন চায় না, তবু তা-ই সত্য ! যদি বুঝতে ভুল না করি, এটাই গল্পটার দার্শনিক বোধ, অন্তত আমার কাছে।
চমৎকৃত হলাম। অভিনন্দন!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
রণদা মনোযোগী পাঠের জন্য কৃতজ্ঞতা। না বুঝতে ভুল নয় অবশ্যই। গল্পের যদি কোন দার্শনিক বোধ থেকে থাকে তাহলে আপনার উদ্ধৃত অংশটুকু তার অন্যতম।
তবে আমি পাঠক হলে এবং এই গল্প অন্য কারো লেখা হলে শেষের অংশটুকুকে গুরুত্ব দিতাম।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এখন পড়ে গেলাম।
মন্তব্য করতে গিয়েও করলাম না।
আরেকবার পড়ে বিশদে মন্তব্য করব।
ঠিকাছে।অপেক্ষায় থাকলাম বিশদের।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আপনার অন্য গল্পে ও দেখেছি পাঠককে অসস্তিতে ফেলার চেষ্টা থাকে। ইচ্ছে করে করেন নাকি?
গল্প ভালো লেগেছে,প্রচলিত ধারার নয়।কিন্তু পাঠককে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে গেলে ঝুকিপুর্ন হতে পারে।
হুম। তাহলে অন্য গল্প ও পড়েছেন আপনি। কৃতজ্ঞতা। কিন্তু নির্দিষ্ট করে অন্য কোন গল্পের কথা বলবেন যেখানে আমি পাঠককে 'অসস্তি'তে ফেলার চেষ্টা করেছি?
এই গল্পের ট্যাগিং এ 'অস্বস্তি' আছে। খেয়াল করুন। সুতরাং এতো ইচ্ছেকৃত বটেই। দায় এড়াই কি করে?
বুঝিনি। 'ঝুঁকি'র কথা বলছেন। নিজের লেখা নিয়ে নিজে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারি, পাঠককে নিয়ে করবো কেনো? আর করলে ঝুঁকিটা কিসের? পাঠক ধরে পিটুনী দেবে?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এইডা কি কইলেন ভাই ?
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
কত দিন পর আপনার গল্প পড়লাম!
ভালো লাগলো।
-শায়ের আমান,
নতুন মন্তব্য করুন