বোকা বুড়ো ও সেয়ানা বেবুনদের গল্প

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০৩/২০১১ - ২:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১।
প্রায় চার দশকের কুটনৈতিক জীবনের শেষপ্রান্তে এসে কীরকম এক অদ্ভূত বোকামী করে বসলেন সুবিমল বাবু, শ্রী সুবিমল দত্ত।
চট্টগ্রামে আদি নিবাস সুবিমল ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন সেই ১৯৩৭ সালে। রাঙ্গামাটির জেলা অফিসার হিসেবে চাকরী শুরু করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব, জাতিসংঘে ভারতীয় স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন শেষে চিন্তাভাবনা করছিলেন অবসরে যাবার।
কিন্তু ১৯৭২ এর জানুয়ারী মাসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিসেস গান্ধী ব্যক্তিগত অনুরোধে সুবিমলকে রাজী করালেন সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশে প্রথম ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেয়ার, যদিও ডিসেম্বর ১৬, ১৯৭১ থেকেই ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছিলেন জ়ে এন দীক্ষিত। দীক্ষিত কুটনৈতিক পেশায় প্রায় নতুন, আর দত্ত চারদশকের অভিজ্ঞতা শেষে অবসরের পরিকল্পনায়। এ ছাড়া তার মতো হাইপ্রোফাইল কুটনীতিকের হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেয়া ঠিক মানানসই নয় আর, যেখানে বহু আগেই এসব পেরিয়ে এসেছেন তিনি।
তবু গুরুত্ব বিবেচনায় ইন্দিরা গান্ধীর একমাত্র পছন্দ সুবিমল দত্ত এবং সুবিমল রাজী হলেন। শুরু করলেন তার কুটনৈতিক জীবনের শেষ অধ্যায়।

মধ্যজুনে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ভিভিগিরি এলেন বাংলাদেশ সফরে। তেমন কোন কুটনৈতিক সফর নয়, আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সুবিমল দত্ত তার রাষ্ট্রপতিকে বেড়াতে নিয়ে গেলেন প্রথম কর্মস্থল রাঙ্গামাটিতে। রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানানোর দায়িত্ব শেষ করেই তিনি পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে। হতবাক মিসেস গান্ধী কারন জানতে চাইলেন, সুবিমল কেবল ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা জানালেন এবং নিশ্চিত করলেন পরবর্তী সপ্তাহ থেকেই এই দায়িত্ব পালন তার পক্ষে সম্ভব নয়, অথচ পরবর্তী সপ্তাহেই ঢাকাতে রয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক কুটনৈতিক আয়োজন!

অনুরোধ জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব, জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার অসামান্য কুটনৈতিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করতে চাইলেন।

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই অসন্তুষ্ট করে সুবিমল দত্ত বাংলাদেশকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন। যাবার আগে শুধু সহকারী কুটনৈতিক দীক্ষিতকে বললেন-' যে দায়িত্বে থাকলে খুনী ভুট্টোর সাথে আমাকে করমর্দন করতে হবে, মানুষ হিসেবে সেই দায়িত্ব পালন আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ভুট্টোর হাতে অগনিত মানুষের রক্ত লাগানো আছে'

২।
শ্রী সুবিমল দত্ত চলে গেলেন। এলো খুনী জুলফি ভুট্টো পরের সপ্তাহে। এর আগে সে এসেছিলো ঠিক দুবছর তিনমাস আগে। ২৬ মার্চ ভোরে কফির কাপ হাতে ইন্টারকন্টিনেন্টালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সে একটা খুন হয়ে যাওয়া নগরীর পোড়া লাশের গন্ধ নিচ্ছিল। কফির ঘ্রানের চেয়ে পোড়া লাশের গন্ধ তার প্রিয় ছিলো, সারি সারি লাশে ঢেকে যাওয়া মৃত এই নগরীর দাফনের বিনিময়ে সে পেয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র পাকিস্তানের ক্ষমতার চাবিকাঠি।
এবং সে পেলো।

জুনের তৃতীয় সপ্তাহ, ১৯৭৪। ঢাকা বিমানবন্দরে ল্যান্ড করা পিআইএর বিশেষ বিমানে করে নামলো পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান। লালগালিচা সম্বর্ধনা দিয়ে তাকে স্বাগত জানাতে গেলেন দুবছর বয়সী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান শেখ মুজিব। ৭২ এর সেই উদ্যম স্তিমিত হয়ে আসছে তার, জেনে গেছেন বন্ধু সোভিয়েত আর ভারত অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে পারে কিন্তু তার অস্ত্রের প্রয়োজন ফুরিয়েছে, এখন প্রয়োজ়ন খাদ্য। সাতকোটি ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্য জোগাতে তাকে ভিক্ষা মাগতে যেতে হবে পশ্চিমে আর মধ্যে, কিন্তু ভিক্ষা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হলে আগে খুশী করতে হবে এই দানবটিকে যে চরম নৃশংসতায় মুছে দিতে চেয়েছিলো সমস্ত মানুষ সহ একটা মানচিত্রকে।

বিমান বন্দর থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে ফিরে আসার পথে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো মানুষদের দেখলেন মুজিব, তার দেশের মানুষকে। তাদের চোখেমুখে চাপা নয় প্রকাশ্য উল্লাস, জুলফি ভুট্টোর নামে জয়ধ্বনি, অনেকের হাতে উড্ডীন পাকিস্তানের পতাকা, শেখ মুজিবের নামে নিন্দাধ্বনি, তার গাড়িতে ছুঁড়ে দেয়া জুতো!
মুজিব কি বিমর্ষ হয়েছিলেন, ক্ষুব্দ? তার কি মনে পড়ছিলো মাত্র দুবছর তিনমাস আগে এই নগরের মানুষরা জুলফিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো প্রবল ঘৃনায়?

ইতিহাস মুজিবের মনের খবর দেয়নি তবে জানা গেছে জুলফি ভুট্টো কী প্রবল অহমিকায় অপমান করেছিলো বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের তখন প্রয়োজ়ন ভুট্টোকে খুশী করে তার মনিব মধ্যপ্রাচ্যের শেখ ও আমেরিকার আর্থক অনুগ্রহ লাভ। এই সুযোগে ভুট্টো অস্বীকৃতি জানালো যৌথ পাকিস্তানের ট্রেজারিতে জমা থাকা পূর্ব পাকিস্তানের পাওনা মেটাতে, আটকে পড়া পাকিস্তানীদের ফিরিয়ে নিতে। কুটনৈতিক শিষ্টাচারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সে অস্বীকৃতি জানালো শহীদ মিনার এবং স্মৃতিসৌধে যেতে।
বারবার অনুরোধের পর শেষপর্যন্ত গেলো স্মৃতিসৌধে, নির্ধারিত সময়ের দুঘন্টা পর। টি-শার্ট পড়ে। পুস্তস্তবক অর্পণ জাতীয় কোন আনুষ্ঠানিকতার ধার না ধেরেই দ্রুত ফিরে এলো সে।
বাংলাদেশ পরাজিত হলো।

একবছর দুমাস পর আগষ্ট পনেরোর সকালে পিআইএর আর একটি বিশেষ বিমান অবতরন করলো ঢাকায়। সেই ভোরে ইসলামিক রিপাবলিক হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের কর্ণধার জুলফি ভুট্টোর উপহার নিয়ে- বাসমতি চাল আর ক্ষুদ্রঅস্ত্রের চালান।

৩।
জঙ্গলে খাদ্যাভাব দেখা দিলে বেবুনেরা দল বেঁধে খরস্রোতা নদী পেরোয় । স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকলে একসময় বাধ্য হয়ে শিশু ও বৃদ্ধ বেবুনদের তারা চেপে ধরে পানির নীচে। পানিতে ডুবতে থাকা শিশু ও বৃদ্ধদের শরীরের উপর ভর দিয়ে সমর্থরা বিপদ পেরোয়।

সকলেই মানুষ নয়, কেউ কেউ মানুষ হয়-সুবিমল দত্ত'র মতো। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল মানচিত্রের ভেতর বেবুনের বংশবৃদ্ধি ঘটে দ্রুত । গনহত্যার স্মৃতি, স্বজনের আত্মদান, নিজেদের মর্যাদা অতলে তলিয়ে দিয়ে তারা এগিয়ে যায়।

কোথায় যায়?


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই লেখাটার মূল বক্তব্য প্রসঙ্গে নয়, লেখায় আলোচিত কয়েকটা বিষয় প্রসঙ্গে আমার জিজ্ঞাস্যঃ

১। মধ্যপ্রাচ্য আমাদের আসলে কী পরিমাণ অর্থ ও সামগ্রী সাহায্য দিয়ে থাকে? ঋণ দিয়ে থাকে? এগুলোর পরিমাণ আমাদের জাতীয় বাজেটের কত শতাংশ?

২। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রমিক ভাইদের চাকুরী পাবার জন্য বাংলাদেশকে খৎনা করাতে হয়, পাকিদের তোষামোদ করতে হয়। অথচ হিন্দুপ্রধান দেশ ভারত, নেপাল, বৌদ্ধপ্রধান দেশ নেপাল বা খ্রীষ্টানপ্রধান দেশ ফিলিপাইনের শ্রমিকেরা দেশকে খৎনা না করিয়ে বা পাকিদের পদলেহন না করেও আমাদের চেয়ে বেশি চাকুরীর-ব্যবসায়ের সুযোগ পায়, বেতনও বেশি পায় - কীকরে?

৩। মধ্যপ্রাচ্যের সাথে পাকিস্তানের কী বিশেষ সম্পর্ক আছে? তাতে পাকিস্তানের কী লাভ হয়েছে?

৪। বরাহছানা ভুট্টোকে বাংলাদেশে আসতে দিয়ে, পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায় করে, পাকিস্তানে ওআইইসি'র সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের কী কী লাভ হয়েছিল? তখনকার সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রে থাকা কোন দরদী বন্ধুরা এই পরামর্শগুলো দিয়েছিলেন?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

ঠিক এই প্রশ্নগুলো আমারো।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

৩, ৪ আমারও প্রশ্ন। ৩ প্রসঙ্গে আমি মধ্যপ্রাচ্যের লাভ সম্পর্কে জানতে বেশি আগ্রহী। -রু

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

শুনেছিলাম মুজিবও ভুট্টোকে জড়িয়ে ধরে ছবি-টবি তুলেছিলেন, কূটনৈতিক সুবিধেবাদ? ভুল হলে অগ্রিম ক্ষমাপ্রার্থী!

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

জাহার এর ছবি

স্বাধীনতার এত বছর পরেও যখন বাংলাদেশের প্রধানেরা অন্যের অনুগ্রহ ভিক্ষে করে বেরায় তখন প্রশ্ন জাগে আসলেই কি আমরা স্বাধীন হয়েছি? ইয়ে, মানে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গনহত্যার স্মৃতি, স্বজনের আত্মদান, নিজেদের মর্যাদা অতলে তলিয়ে দিয়ে তারা এগিয়ে যায়।

কোথায় যায়?

জাহান্নামে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

গনহত্যার স্মৃতি, স্বজনের আত্মদান, নিজেদের মর্যাদা অতলে তলিয়ে দিয়ে তারা এগিয়ে যায়।

কোথায় যায়?

উৎসবে যায়!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তিথীডোর এর ছবি

সকলেই মানুষ নয়, কেউ কেউ মানুষ হয়-সুবিমল দত্ত'র মতো। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল মানচিত্রের ভেতর বেবুনের বংশবৃদ্ধি ঘটে দ্রুত । গনহত্যার স্মৃতি, স্বজনের আত্মদান, নিজেদের মর্যাদা অতলে তলিয়ে দিয়ে তারা এগিয়ে যায়।
কোথায় যায়?

স্টেডিয়ামে যায়, হাতে থাকে পোস্টার-- 'ম্যারি মি আফ্রিদি'! অফ যা

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শিশিরকণা এর ছবি

বাংলাদেশের মানুষগুলার জীবন দর্শনের সমীকরণ খুব সোজা সাপ্টা, খুব মৌলিক চাওয়া পাওয়া কেন্দ্রিক। পেটে ভাত আসে কি নাই, দুই ঢিপ নামাজ পড়লে বেহেশ্‌ত যাওয়া যাবে নাকি এর সাথে মুসলমান ভাইদের ও তাল দেয়া লাগবো, হেয় ভালো তার উল্টাটা খারাপ নিশ্চয়ই। ওকে চিনি, খুন করলেও ভালো মানুষ, তারে চিনি না, সে কেমন বুঝি না, বুঝার কাম নাই।
এইজন্য দীর্ঘমেয়াদী ঘৃণা বুকে পুষে রাখতে হবে কেন এটা নিয়ে তাদের মাথা ঘামাতে ইচ্ছা করে না। যা হইছিল সেটা খুব খারাপ হইছিল। এখন কার সময় এখন আমি আনন্দ ফুর্তিতে থাকি, বিচার হইল কি না হইলি তাতে আমার ভাত কাপড়ের কোন হের ফের হবে না। এইসব ভাবতে গেলে কেবলি মাথা নষ্ট।

ঐ বেবুনের মতই, বেঁচে থাকাতেই সুখ। মান মর্যাদা লজ্জা, ঘৃণা কেবল জটিলতা বাড়ায়। বাংলাদেশের মানুষ যে কোন মূল্যে ঝামেলা বাদ দিয়ে কেবল সুখে থাকতে চায়।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তানভীর এর ছবি

কিন্তু ভিক্ষা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হলে আগে খুশী করতে হবে এই দানবটিকে যে চরম নৃশংসতায় মুছে দিতে চেয়েছিলো সমস্ত মানুষ সহ একটা মানচিত্রকে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভুট্টো মুজিবকে পাকিস্তানের জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছিলো। মুজিব সেজন্য ভুট্টোর কাছে কৃতজ্ঞও ছিলেন। তাদের মধ্যে তখন কী কথোপকথন হয়েছিলো তা ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ারের বইতে এবং ফোরামে তার অংশবিশেষ পাওয়া যাবে। পাক-বাংলাদেশ সম্পর্ক পুনঃস্থাপন ছিলো ভুট্টোর প্রধান দাবী। ভুট্টোর ঢাকা সফরকে তাই বলা যায় সময়ের ব্যাপার ছিলো মাত্র। শুধু ভিক্ষা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য ভুট্টোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো, এছাড়া বঙ্গবন্ধুর কোনো উপায় ছিলো না- এ ধরনের যুক্তি তাই দুর্বল। কুলদীপ নায়ারের লেখা থেকেই কিছু লাইন উদ্ধৃত করা যাক-

Bhutto wanted some links between Pakistan and Bangladesh. But the Sheikh said he could not commit to any- thing until he visited Bangladesh and talked to his colleagues.

Bhutto said: "On December 23 when we (he and Sheikh Mujib-ur-Rahman) met for the first time, Mujib took out the Quran and said: 'I am a good Muslim. I still want defence, foreign affairs, and communication to be central subjects between the two regions.' On December 27, when we met for the second time, he was very vague.

"He (the Sheikh) was positive. 'No, No,' he said, 'I am the leader -- main leader hoon, main theek kar donga (I am the leader, I shall set things right)' and that sort of thing.

Mujib said "He wanted me to agree that the three subjects -- foreign affairs, defence, and communication -- would be managed jointly by Pakistan and Bangladesh. I told him it was not possible, but when he went on pressing I said that it was difficult for me to decide anything without consulting my people. There was yet another meeting, the last one between us. That time also he pressed for the same thing and asked me to try my best. I replied: 'Let me see.'

When I told Mujib what Bhutto had said, particularly his assertion that Mujib had sworn by the Quran to allow joint control of some subjects, Mujib said: "Bhutto is a liar. I am grateful to him for saving my life, but that gives him no right to spread lies."

After the meeting between Mujib and Bhutto, the follow-up dialogue was reported to have been carried on between Bhutto and Dr Kamal Hossain, later the Bangladesh foreign minister.

টাইমের এ আর্টিকেলেও একই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়- Mujib spoke well of Bhutto, however, but emphasized that he had made no promise that Bangladesh and Pakistan would maintain a link that Bhutto anxiously wants to have. "I told him I could only answer that after I returned to my people," said the sheik

তানভীর এর ছবি

বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে ভুট্টোর আগ্রহের ব্যাপারটা নিচের ভিডিও থেকেও বোঝা যায়। পাকিদের কাছে ইনিয়ে বিনিয়ে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের কথা বলার পর যখন পাকিরা সমস্বরে 'না' বললো তখন সে পাবলিককে খুশি করতে বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে বললো 'শুয়োরের বাচ্চারা জাহান্নামে যাক'! আর আজ সেই পাকিস্তানের খেলায় বাংপাকিরা উল্লাস করে, ভুট্টো পায় লাল-গালিচা সংবর্ধনা!

একজন পাঠক এর ছবি

স্বাধীনতা যুদ্ধে যে যে দেশ আমাদেরকে সহায়তা দিয়েছে, সরাসরি সাহায্য করেছে তাদের কাছে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞ....কিন্তু যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে, পাকিস্তান কে সক্রিয় সর্মথন করেছে তাদের ব্যাপারে আমাকের কি অবস্থান হওয়া উচিত তা একটু দয়া করে বলবেন কি?

পৃথ্বী এর ছবি

তাদের চোখেমুখে চাপা নয় প্রকাশ্য উল্লাস, জুলফি ভুট্টোর নামে জয়ধ্বনি, অনেকের হাতে উড্ডীন পাকিস্তানের পতাকা, শেখ মুজিবের নামে নিন্দাধ্বনি, তার গাড়িতে ছুঁড়ে দেয়া জুতো!

এই রোগের প্রতিকার কি?

দিগন্ত এর ছবি

বাংলাদেশের মানসিকতায় কি ১৯৭১ এর আগে ১৯৪৭ এসে গেছে? আপনার লেখাটা যদি সত‌্য হয়, তাহলে এটাই তার অনুসিদ্ধান্ত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক নতুন তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ।

সজল এর ছবি

অসাধারণ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রণদীপম বসু এর ছবি

ক্ষুধার কাছে নীতি পরাজিত, রাজনীতির কাছে দেশপ্রেম পরাজিত, এবং সাম্প্রদায়িক মনোদুষণের কাছে মানবিক শ্লীলতা পরাজিত।
এই আর কী ! জবাব নেই...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

বিমান বন্দর থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে ফিরে আসার পথে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো মানুষদের দেখলেন মুজিব, তার দেশের মানুষকে। তাদের চোখেমুখে চাপা নয় প্রকাশ্য উল্লাস, জুলফি ভুট্টোর নামে জয়ধ্বনি, অনেকের হাতে উড্ডীন পাকিস্তানের পতাকা, শেখ মুজিবের নামে নিন্দাধ্বনি, তার গাড়িতে ছুঁড়ে দেয়া জুতো!

এরা/আমরাই প্রকৃত বংগ সন্তান।
নিজের রক্তের উপরই প্রচন্ড ঘেন্না আসে মাঝে মাঝে!

মনির হাসান

হিমু এর ছবি

প্রায় ৫ হাজার কুলাঙ্গার ভূট্টো মাদারচোদকে জামাই আদরে বরণ করে নিয়েছিলো ঠিকই, কিন্তু একই সাথে KILLER BHUTTO GO BACK আর WE CONDEMN GENOCIDE লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে ভূট্টোকে স্মৃতিসৌধে দুয়ো জানিয়েছিলো ২ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা। এই কথা কেন যেন কনভেনিয়েন্টলি ভুলে যায় সবাই। গুগল ভোলে না।

পড়ুন সারাসোটা হেরাল্ড ট্রিবিউনের জুন ১৯, ১৯৭৪ এর খবর

ভূট্টো মাদারচোদের মিথ্যাচারের কিছু নমুনা আছে টোলেডো ব্লেড, জুন ১৯, ১৯৭৪ এর খবরে

ইয়ংসটাউন ভিণ্ডিকেটরের ১৭ অগাস্ট, ১৯৭৫ এর খবর থেকে জানতে পাই, ভূট্টো মাদারচোদ ১ দিন বয়সী খোন্দকার মুশতাক সরকারকে সমর্থন জানায় এবং as a first and spontaneous gesture কাপড় আর ৫০ হাজার টন চাল পাঠানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। বাংলাদেশ বেতারে সারাদিন ভূট্টো মাদারচোদের এই অমিয়বাণী সম্প্রচার করা হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।