তাঁর চলে যাওয়া জুড়ে থেকে যায় থোকা থোকা বিষন্নতা, ট্রিপল ফাইভের ভুলে যাওয়া ধোঁয়ার ফিরে আসা আর দীর্ঘতম ঘুমের শেষে জেগে উঠা ব্যক্তিগত স্মৃতিময়তা।
তালতলার রাসেলকে আমরা রাধা-রাসেল ডাকতাম কেনো? সৈয়দ সাহেবের ছেলে হিন্দুবাবুর পিচ্চিমেয়েটির প্রেমে দুনিয়া ভুলে গিয়েছিলো বলে? রাসেলের কালো ঝোলায় গাঁজার সমারোহ আর গলায় গুরুর গান। হাওয়ার নাবিক হয়ে কতো সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামের মাঝখানে কিংবা কলেজের মাঠে চিৎ হয়ে আমরা রাসেলের দোহার হয়েছি--'চুপ চুপ চুপ অনামিকা চুপ...'
রাসেল বেঁচে থেকেই চুপ হয়ে গেছে-মিশিগান কিংবা শিকাগো শহরে। তিনি ও গেছেন, চলে গেছেন এবং চুপ।
যাবার আগে বলে গেছেন-' যুদ্ধ শেষ হয়নাই, যারা মনে করে যুদ্ধ শেষ-আমার গান তাদের শুনার দরকার নাই'
অতএব তার গান আর শুনা হবেনা।
যে পরিহাসকালে সংস্কৃতিচর্চার মানে দাঁড়ায় রাজনৈতিক বোধহীন কেবলই বিনোদন, সেখানে বোম্বের শেরখানই অমোঘ। তিনি বলেছেন- 'আমি এন্টারটেইনার, পয়সা পেলে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ও গাইবো, নাচবো'।
তাই সম্মিলিত নাট্য পরিষদের স্থানীয় শাখার নেতারা জেলা প্রশাসকের গাড়ীর দরজা খুলে দেয়। ডিজিটাল ব্যানার টাংগানো কাজী নজরুল চিত্রার্পিত।
মনামী্র কাঁচা আম পুঁড়িয়ে বানানো সুধায় অনিন্দ্য ট্যাঙ্গো মিশিয়ে দিলে হয়ে উঠে সঞ্জীবনী। প্রধান পত্রিকাটি লিমন হোসেনকে নিয়ে ধারাবাহিক করে, মানবতা মানবতা! মোফাখখর চৌধুরী কিংবা ডাঃ কল্লোল অমানবিক ছিলো। অতএব অনামিকা চুপ।
ভূমিখেকো পত্রিকার রাজনীতির সাময়িকীটি সিরাজ শিকদারকে নিয়ে প্রধান ফিচার করে। শিকদার সাহেব বাংলাদেশের প্রথম বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার বলে স্বীকৃত হন। এই স্বীকৃতি সতায়িত করে এর আগের দুবছরে সরকার কর্তৃক সংগঠিত হত্যাকান্ডগুলো বিচারের অন্তর্গত। শিকদার সাহেবের হাতে নিহত ম্যাঙ্গো পাব্লিক উহ্য থাক। বিপ্লবের কাফফরা।
রক্ষীবাহিনী নিয়ে কথাবার্তা হয়, জাসদের খলিফা দাবী করেন মুক্তিযোদ্ধা খতম করা ছিলো কর্মসূচী। গুরু হাসেন, রক্ষীবাহিনীতে যারা গিয়েছিলো তারা ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলো- ভুলি কেমনে? বিষয় হলো পাওয়ার প্র্যাকটিস। ক্ষমতার চর্চা।
রক্ষীবাহিনী-জাসদ-সর্বহারা-র্যাব-চরম্পন্থী-সন্ত্রাসী-জেহাদী সবই ডারউইন দাদুর তত্ব। মাঝখানে হুদাহুদি বাটে পড়ে লিমন হোসেনের পা। ক্রাচে হেঁটে বাংলাদেশ কতদূর যাবে সেটা নির্ধারন করতে এবার আসছে সোয়াট।
এলাট এলাট!
মন্তব্য
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইতিহাস পুরোটা ঠিক ভাবে জানা নেই বলে, কিছু কিছু অংশ বুঝতে পারি নাই।
ভাল লাগলো লেখা।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
১. সত্তরের দশকে পাড়ায় মহল্লায় সব বাচ্চা-কাচ্চাদের নিয়ে একদল তরুণ-যুবা একুশে ফেব্রুয়ারী, ছাব্বিশে মার্চ, ষোলই ডিসেম্বর, পঁচিশে বৈশাখ, এগারোই জৈষ্ঠ্য পালন করতো। ডেকোরেটরের সস্তা আয়োজন দিয়ে সেই অনুষ্ঠানগুলো সাজানো ছিলো। কখনো পয়সায় না কুলালে ধোপাবাড়ি থেকে সাদা থান কাপড় এনে স্টেজ সাজানো হতো। স্পন্সরদের কালো হাত তখনো থাবা বসানো শুরু করেনি। ঐ তরুণ-যুবাগুলো তার কয়েক বছর আগে একটা যুদ্ধ করেছিলো। তারা মনে করেছিলো যুদ্ধটা শেষ হয়নি, তাই সামাজিক-সাংস্কৃতিক ফ্রন্টে যুদ্ধটা জারী রেখেছিলো। তার পরের ইতিহাস সবার জানা। যুদ্ধটা আমরাই শেষ করে দিয়েছি। কোন কৈফিয়তে এই দোষ স্খালন করা যাবে না।
২. জাসদের দাবী রক্ষীবাহিনী তাদের সাড়ে দশ নাকি সাড়ে সাঁইত্রিশ হাজার কর্মী মেরেছে। জাসদ সেই সময় কতো জন আওয়ামী লীগের কর্মী মেরেছে? ছয় জন সংসদ সদস্য হত্যার কথা তো জানাই আছে। আশির দশকের সামরিক স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ, জাসদ আর ওয়ার্কার্স পার্টির কতো জন নেতা কর্মীকে মেরেছে? দিন দুপুরে ময়েজ উদ্দিন কে ছুরি মেরে খুন করা অথবা চট্টগ্রামের লাল দিঘীতে গুলি করে ডজন খানেক আওয়ামী লীগ কর্মীকে হত্যা করে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেবার পর নির্লজ্জ উক্তি, "ওরা হিন্দু ছিলো, তাই মরার পর দাহ করা হয়েছে" - এর সবই আমরা দেখেছি শুনেছি। আজ এরা সবাই এক ছাতার নিচে চলে এসেছে। সময়টা বোধ হয় forget, forgive আর reconciliation-এর। আমার মতো বোকার হদ্দরা কেবল এসব বুঝতে পারে না।
৩. এবার পহেলা বৈশাখে রমনার গিয়ে প্রথম "সোয়াট"-এর দেখা পাই। র্যাবের দেখাও প্রথম পেয়েছিলাম এই রমনাতেই, পহেলা বৈশাখেই। এসব দেখে আমার কেবল মনে হয়, এতো ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে খাবার কি দরকার রে বাবা! এরচেয়ে উত্তর পাড়ার মামুকে সরাসরি মাঠে নামিয়ে দে না!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এরকম লিখতে পারলে কাগজের অনেক অপচয় কমে যেত। আসলে বলা উচিত কী-বোর্ডের লাইফটাইম বেড়ে যেত।
সব মিলেয়ে ভালো, টানটান।
অসাধারণ!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দূর্দান্ত!!!
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আগেই পড়েছি, শেয়ারও দিয়েছি, কিন্তু মন্তব্য করতে ভুলে গেছিলাম।
আর কিছু বলারও নাই... বলে দিয়েছেন সব
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন