‘নগর ব্যবস্থাপনা’ যদি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয় এই নির্বাচনে- তাহলে গত পনেরো বছর ধরে এই নগরীর নির্বাচিত প্রধান বদরুদ্দীন কামরানের প্রতি নগরবাসীর সন্তুষ্টি হার শূন্যের কোঠায়। জলাবদ্ধতা দূরকরন, বর্জ্যব্যবস্থাপনার মতো জরুরী বিষয়গুলোর সমাধান হয়নি এতোদিনেও। সিলেট নগরীতে কোন গনপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। বদরুদ্দীন কামরানের প্রতি সবচেয়ে বড় অভিযোগ- জোট সরকারের আমলে তৈরী হওয়া নগরীর সমস্ত ফুটপাত তিনি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন হকারদের কাছে, এমনকি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের চত্বর, রেজিস্ট্রারী মাঠ পর্যন্ত। সিলেট নগরীতে গত কয়েকবছর ধরেই এটি আলোচিত বিষয়। স্থায়ী দোকানদার ও মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এ নিয়ে চরম বিরক্ত। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ মেয়রের সাথে দেনদরবারে না পেরে অর্থমন্ত্রীর শরনাপন্ন হন। অর্থমন্ত্রী ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের আল্টিমেটাম দিয়ে ও সফল হতে পারেননি মেয়রের হকারপ্রীতির কারনে।
অপরদিকে ‘নগর ব্যবস্থাপনা’ ইস্যু আরিফুল হক চৌধুরীর জন্য প্রধান উপযোগ। নগরীর রাস্তাঘাট প্রশস্তকরন, সুরমা নদীর তীরের সৌন্দর্য্যবর্ধন, ফুটপাত নির্মান ও জলাবদ্ধতা দূরকরনের মতো কাজগুলো হয়েছে অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের উদ্যোগে এবং আরিফুল হক চৌধুরীর তত্ববধানে।
কিন্তু বাংলাদেশের আর সব নির্বাচনের মতো সিলেট নগরীর মেয়র নির্বাচন ও যদি ‘সিটি ম্যানেজমেন্ট’র চেয়ে ‘ পিপল’স ম্যানেজমেন্ট’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে তাহলে আরিফুল হকের চেয়ে কামরান এগিয়ে থাকবেন অনেক। আরিফুল হকের তুলনায় কামরান অনেক বেশী ‘ইজি গোয়িং’। চেনা অচেনা যে কারো পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কামরানের কোন আপত্তি নেই। যে কোন কাগজপত্রে মেয়রের দস্তখতের জন্য ঘুরতে হয়না। সিলেটে এমন কথা ও প্রচলিত আছে মেয়র কামরানের মৃত্যুসনদ ও কেউ নিয়ে গেলে তিনি হাসিমুখে স্বাক্ষর করে কুশল জিজ্ঞেস করবেন। অপরদিকে জাতীয়তাবাদী দলের ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতি থেকে উঠে আসা আরিফুল হক, সাম্প্রতিক সময়ে অনেক চেষ্টা করে ও তার জনঘনিষ্ঠ ইমেজ তৈরী করতে পিছিয়ে থাকছেন।
এবার দেখা যাক, দুই প্রার্থীর রাজনৈতিক অবস্থা। সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একেবারে সাধারন কর্মী থেকে বদরুদ্দীন কামরানের উত্থান। ঐতিহাসিকভাবে সিলেট আওয়ামী লীগে অভিজাত শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ব করতেন জমিদার পরিবারের সন্তান দেওয়ান ফরিদ গাজী আর সাধারন শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ব করতেন হাওর পাড় থেকে উঠে আসা আব্দুস সামাদ আজাদ। এই দুজনের শ্রেনী দ্বন্ধ ও ঐতিহাসিক । দেওয়ান গাজী কোনদিন আব্দুস সামাদ আজাদকে ‘সমেদ’ ছাড়া কিছু ডাকেননি। কিন্তু দলীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে এই ‘সমেদ’ গাজী সাহেবকে অনেক পেছনে ফেলে গিয়েছিলেন। সে যাক, বদরুদ্দীন কামরান মুলতঃ আব্দুস সামাদ আজাদ গ্রুপের কর্মী হিসাবেই জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি অভিষিক্ত হয়েছেন, ক্রমান্বয়ে তার নিজস্ব জনসংযোগ এবং সবদিকে সমম্বয় করে চলার জাদুকরী ক্ষমতা দেখিয়ে একবার পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং দু দুবার নির্বাচিত হয়েছেন, দলের ভেতরে তার নিজস্ব বলয় তৈরী করেছেন। নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, দলের ভেতর কামরানের অবস্থান বোঝানোর জন্য অতোটুকু যথেষ্ট নয়। সিলেট সদর আসনে সংসদ নির্বাচিত হতে হলে কামরানকে হাতে রাখতে হবেই- এটা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও জানে। ক্ষমতার এই তীব্রতা কী বদরুদ্দীন কামরানকে মোহগ্রস্ত করেছে দলকে চ্যালেঞ্জ করার? কিংবা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি চিন্তা করছেন- এই মনস্টার কে এইবার থামানো দরকার?
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এইরকম কানাঘুঁষা চলছে এখন।
বদরুদ্দীন কামরানের বিগত নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসার বড় জাদু তার সমন্বয় শক্তি। তিনি একদিকে নাটকের দলের মহড়ায় গিয়ে ঢোল বাজিয়ে গান অপরদিকে মাদ্রাসায় গিয়ে ওয়াজ মাহফিলে ও শরীক হন। তার নির্বাচনের জন্য সিলেটের সংস্কৃতি কর্মীরা মাঠে নামেন অপরদিকে আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে তিনি বিপুল ভোটে পাশ করে আসেন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী’র ভোট যেমন তিনি পান তেমনি আবার কাজীরবাজার মাদ্রাসা ও তার পাশে এসে দাঁড়ায়। সিলেটের জামাতে ইসলামের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা ও সবার জানা। এমনকি জামাতের সাথে ব্যবসা বানিজ্যের কথা ও বাতাসে উড়ে।
এতোবছর ধরে এরকমই চলে আসছিলো, তেমন কোন অসুবিধা হয়নি। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে এ বছরের শুরু থেকে চলমান আন্দোলনের তীব্রতা ও পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ জাতীয় রাজনীতিতে যে অলংঘনিয় মেরুকরন তৈরী করে দিয়েছে তা বদরুদ্দীন কামরানের মতো ‘সমঝোতা’র রাজনীতিকের ভোটের রাজনীতিতে সমস্যা তৈরী করেছে। কামরান ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে সিলেট গনজাগরন মঞ্চে এসে তার সমর্থন জানিয়ে গেছেন, অপরদিকে কয়েক সপ্তাহ পর হেফাজতের সভায় তিনি কর্পোরেশন থেকে পানি সরবরাহ ও করেছেন। গনজাগরন মঞ্চের কর্মী জগতজ্যোতি তালুকদার জামাত শিবিরের আক্রমনে শহীদ হলে, ছাত্রলীগের ক্ষুব্দ কর্মীদের হাত থেকে জামাতী প্রতিষ্ঠান রক্ষায় কামরান খাঁটি ‘নগরপিতা’র ভূমিকা পালন করেছেন। জগতজ্যোতি মহানগরের কর্মী হলে ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন মামলা হয়নি, কয়েক সপ্তাহ পরে জগতের একজন ব্যক্তিগত বন্ধু মামলা করলে ও গ্রেপ্তার তো দূরের কথা , মামলার আসামীরা নির্বাচনী কার্যক্রম চালায় প্রকাশ্যে। ক্ষুব্দ অনেকেই এসবের জন্য ও বদরুদ্দীন কামরানের জামাত সহনশীলতাকে দায়ী করেন। জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র মেরুকরনের কারনেই এবার যেমন কামরানের পক্ষে আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে পাশ করে আসা সহজ না, তেমনি তার পাশে কাজীর বাজার মাদ্রাসার হুজুরেরা ও নেই। আবার আওয়ামী লীগের অনেক খাঁটি কর্মী সমর্থক জামাত ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে এবার কামরান বিমুখ। ব্যক্তিগত আলাপচারীতায় অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন- কাউন্সিলর ভোট দেবেন কিন্তু মেয়র ভোট দেবেন না।
অপরদিকে আঠারদলীয় জোট প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর এইসব রাজনৈতিক/ আদর্শিক সংকট নেই। প্রথমতঃ যা ছিলো, দলীয় কোন্দল। বিএনপি থেকে চারজন মেয়র প্রার্থী। দলীয় সভানেত্রী খালেদা জিয়া চারজনকেই ডেকে আরিফের মনোয়ন নিশ্চিত করার পর এখন সবাই ই তার পক্ষে কাজ করছেন। কিন্তু সাইফুর রহমানের পোষ্যপুত্র হিসাবে আরিফুল হক জোট সরকারের আমলে যে ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন, তার ভুক্তভোগী বিরোধী দলের তুলনায় তার নিজ দলের নেতা কর্মীরাই। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে কাজ করতে বাধ্য হলে ও ‘আরিফ ঠেকাও’ একটা গোপন সুর বিএনপির মধ্যে আছেই বিশেষ করে ইলিয়াস আলী পন্থী বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে। এদের অনেকেই প্রকাশ্যে কাজ করলে ও ভোট প্রদানে কতোটুকু অনুগত থাকবেন সেটা দেখার বিষয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আরেক ফ্যাক্টর নন সিলেটী ভোটার। সিলেটীরা যতোই সংরক্ষনশীল হোন , তথ্য বলছে সিলেট নগরী এখন আর শুধু সিলেটীদের নেই। ২ লাখ ৯১ হাজার ভোটারের মধ্যে নন সিলেটী ভোটার প্রায় এক লাখ। এই এক লাখের মধ্যে শুধু বৃহত্তর ময়মনসিংহের ভোটার প্রায় ৬০ হাজার। বদরুদ্দীন কামরানের স্ত্রী’র আদিবাড়ী টাঙ্গাইল হিসেবে কামরান এই ভোট পেতেন কিন্তু এবার তার প্রতিদ্বন্ধি আরিফের স্ত্রী’র বাড়ী ময়মনসিংহ শহরে। সুতরাং ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনা প্রবল। তবে নিম্নবিত্ত, হকার ও শ্রমিকদের ৭০ হাজার ভোট কামরানের নিজস্ব বলেই প্রচারিত। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৬০ হাজার আর আদিবাসীদের প্রায় ৫ হাজার ভোট কি কামরান নিশ্চিত করতে পারবেন এবারো?
অপরদিকে মাদ্রাসাভিত্তিক ভোটগুলো কিন্তু আরিফুল হক পাচ্ছেন নিশ্চিত। হেফাজতে ইসলাম তো অবশ্যই, জামাত ও এবার তাদের ব্যক্তি পছন্দের ‘কামরান কে কোরবানী দিয়ে আওয়ামী লীগ ঠেকানোর জন্য সর্বশক্তি ও অর্থ নিয়ে মাঠে নেমেছে।
শেষপর্যন্ত ফলাফল যাই হোক, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি বিএনপি-হেফাজত-জামাত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর জন্য জটিল কিচ্ছু না কিন্তু বদরুদ্দীন কামরানকে অনেক জটিলতার মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
বদরুদ্দীন কামরান যদি হারেন সেটা তার অকর্মণ্যতা, সুযোগ থাকা স্বত্বে ও ‘নগর ব্যবস্থাপণা’য় অদক্ষতা যেমন দায়ী হবে তেমনি দায়ী থাকবে তার রাজনৈতিক অসততা ও সুবিধাবাদী অবস্থান। এই রাজনৈতিক অবস্থান দুর্যোগ মুহুর্তে তার জন্য কোন সমাধান বয়ে আনছেনা, তার পাশে এতোদিনের জামাতী সখ্যতা যেমন নাই তেমনি নেই দলের খাঁটি নেতা কর্মীদের স্বতস্ফুর্ততা। সমস্যা হলো, হারলে ‘সুবিধাবাদী কামরান’ হারবেন তা না- বরং জিতে যাবে জামাত ও হেফাজত। আরিফুল হোক চৌধুরী জিতলে সবটুকু ক্রেডিট নেবে জামাত হেফাজত। আর আরিফুল হকের ও জামাত ফেফাজতকে সেবাদানে কামরানের মতো লুকোচুরি করতে হবেনা। কামরানের মতো তাকে গনজাগরনের মঞ্চে এসে , লুকিয়ে হেফাজতের সভায় পানি সরবরাহ করতে হবেনা। তিনি গনজাগরনকে নাস্তিক ঘোষনা দিয়ে আরামসে হেফাজতের মঞ্চে অতিথি হবেন, যেমন হয়েছেন কদিন আগে।
সুবিধাবাদী রাজনীতি ও অকর্মণ্যতার সুবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রার্থী সিলেট নগরীর ভোটারদেরকে পতিত করেছেন সিদ্ধান্তের সংকটে।
আরো কিছুদিন পরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে ও বোধ করি একই সংকট বিদ্যমান থাকবে।
মন্তব্য
সিলেটের কথা বলতে পারবো না, তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে (সেটা যদি আদৌ হয়) সম্ভাব্য সংকট নিয়ে আপনার আশঙ্কা সঠিক।
ব্যক্তি, দল আর দেশের মধ্যে কে বেশি গুরুত্ব পাবে সেটা নিয়ে কেতাবে যা-ই বলা থাক বাস্তবে এগুলোর মধ্যে গুরুত্ব পাবার ক্রম নিয়ে প্রবল দ্বন্দ্ব আছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যক্তির গুরুত্ব সর্বাধিক। দলের কেন্দ্রীয় নীতি যা-ই হোক, স্থানীয় পর্যায়ে তার কার্যক্রম ভিন্ন হতে পারে। বদরউদ্দিন কামরানের ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে বোধ করছি। এজন্য জামায়াত-হেফাজতের সাথে মাখামাখির পরও তিনি দলের মনোনয়ন পান। আরিফুল হককে মনোনয়ন দেবার ক্ষেত্রে দলের মত গুরুত্ব পেয়েছে। দল (ফ্যাকশন অর্থে) যাকে তৈরি করে তুলেছে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আর উভয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবার ক্ষেত্রে দেশ কোন গুরুত্ব পায়নি। এভাবে আজকের যুদ্ধ জয়ের ভ্রান্ত কৌশল, ভুল লোকের উপর সওয়ার হওয়ার মূল্য আগামীকাল অনেক বড় দাম দিয়ে মেটাতে হয়। এভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় প্রধান তিন ব্যক্তিত্বের মহানগর শিবির/ হেফাজত/ সীরাতে সাহাবা'র অবাধ লীলাভূমিতে পরিণত হয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জিতবে কিনা জানি না তবে আওয়ামী লীগ হারার একটা সম্ভাবনা আছে। গত পাঁচ বছরে বিএনপি-জামায়াত যা করেছে তাতে তাদেরকে ভোট দেয়া যাবে কিনা সেটা নিয়ে লোকে দশ বার ভাববে। গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ যা করেছে তাতে তাদেরকে আবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা যাবে কিনা সেটা নিয়েও লোকে দশ বার ভাববে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই সুবিধাবাদি রাজনীতির খেসারত আমাদের আরো অনেককাল দিতে হবে বলেই মনে হচ্ছে ।
লেখা ভালো লেগেছে। এরকম লেখা পড়তে চাই।
নৈর্ব্যক্তিক বিশ্লেষণের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, দলাদলির বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারে আজকাল নির্মোহ লেখার চেষ্টাই অনুপস্থিত প্রায় , বিশেষত রাজনৈতিক কিংবা নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে।
মুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম। এত ভারসাম্যপূর্ণ আর বস্তুনিষ্ঠ রাজনৈতিক কলাম শেষ কবে পড়েছিলাম, মনে করতে পারছি না।
আপনি যখন ফুটপাত ভাড়া দেয়াকে নগরবাসীর অসন্তুষ্টির একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করছিলেন, তখন আমার মাথায় প্রশ্ন এসেছিল: যারা এই ভাড়া পেয়েছে, তাদের সন্তুষ্টি কি কামরান অর্জন করেননি? কিন্তু আপনার লেখাতেই এর উত্তর আছে। আপনি বলছেন, নিম্নবিত্ত, হকার আর শ্রমিকদের ৭০ হাজার ভোট কামরানের নিজস্ব বলেই প্রচারিত।
কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বীর ৬০ হাজার এবং আদিবাসীর ৫ হাজার পাবেন কি কামরান? আমার মনে হয়, পাবেন। দেখুন, মোর্শেদ ভাই, কামরানের বন্ধু জামাত বা কাজির বাজার মাদ্রাসার হুজুররা তার পাশে নেই, এই কারণটাই হয়ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভোট নিশ্চিত করতে পারে কামরানের জন্য। হয়ত জগত-জ্যোতির খুনিদের ধরায় অবহেলার কথা তোলা হবে, কিন্তু আদিবাসীরা নিশ্চয়ই জামাতের কড়াইয়ে ভাজি হতে চাইবে না ? এই ব্যাপারটি বরাবরই এমনকি আওয়ামীলীগের জন্যও সুবিধা করে দিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অসন্তুষ্ট হলেও মন্দের ভাল হিসেবেই তাদের বেছে নিয়েছে অনেক সময়।
দারুণ ইন্টারেস্টিং একটা প্রশ্ন তুলেছেন, মোর্শেদ ভাই! একই ঘটনা ঘটেছিল চিটাগংয়ের মহিউদ্দিনের বেলাতেও। মহিউদ্দিনের রাজনীতির সঙ্গে কামরানের রাজনীতির কি আশ্চর্য মিল, খেয়াল করেছেন, মোর্শেদ ভাই? মহিউদ্দিন ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ করে যাচ্ছিল কেন্দ্রকে, তার পরাজয় ঠেকানোতে কোন ভূমিকা না রেখে আওয়ামী লিগ কি একই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছিল?
অসততা, সমঝোতা আর সুবিধাবাদিতা যে সমস্যা তৈরি করেছে কামরানের জন্য, তা একটা ক্লাসিক উদাহরণ হতে পারে রাজনৈতিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের জন্য, এমনকি খোদ মান্যবর রাজনীতিবিদগণের জন্য।
একজন কমিশনার আরিফের সন্ত্রাস সিলেটবাসী আজীবন মনে রাখবে। মেয়র হলে যে কি করবে সেটা ভেবেই ভয় লাগে।
সেই হিসেবে কামরান অনেক ভালো।
কিন্তু সিলেটবাসীর সমস্যা সমাধানে উনার আন্তরিকতার ঘাটতি উনাকে ভুগাবে।
হাসান ভাইয়ের অসাধারণ বিশ্লেষণ পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকি। তবে কিনা দিন দিন আপনি বড় কৃপণ হয়ে উঠছেন! এতে পাঠক হিসেবে আমাদের ক্ষতি বই লাভ কিছু হচ্ছেনা। আরেকটু নিয়মিত হন হাসান ভাই।
জামাতের সাথে আতাতকারীদের কথা আর কি কমু
প্রার্থী কি ২জনই, ভাই?
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
একদম ঠিক
বদরউদ্দিন কামরান সাহেবের গণমানুষের কাছে পৌছতে পারার যে অসীম ক্ষমতা, সেটা অনস্বীকার্য! কিন্তু ওনার ব্যালান্সিং রাজনীতির জামায়াত তোষণ এবার ওনার বিপরীতে যাবে! এ ধরনের সুবিধাবাদীর রাজনীতি করার ফল যেন উনি না পান এবারের নির্বাচনে। কারণ আরিফুল হক আসলে ভালো কিছু করতে পারবে না। কারণ, ওনার প্যাট্রন সেই সাইফুর রহমান'ও নাই যে ওনাকে প্যাট্রনাইজ করবে। দেখা যাক কি হয়!
বটতলার উকিল।
আপনারা পন্ডিতরা "কি, কেনো?" নিয়ে আতেলপনা করতে থাকুন; আমি ভয়ে মরি, মাজা ভাঙ্গার আগমন তো নজদিক, চদর বদর জাতি যেনো আর অপেক্ষা করতে পারছে না।। আবুল গং পুরোটা গেলার সময় পেলো না, এতো এবার পুরো দেশটাই গিলে খাবে ।।
নতুন মন্তব্য করুন