• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

আজ সারাদিন সংখ্যালঘু ছিলাম........

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: শনি, ০৮/০৭/২০০৬ - ৯:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আমি আইরিশ সাগরের পাড়ে যে ছোট্র শহরে থাকি , তা উত্তরে ইংল্যান্ডের শেষ সীমানা। এর পরই শুরু হয়েছে স্কটল্যান্ড।
মানুষজন বেশীর ভাগই জাতে মুলত: স্কটিশ। স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত সৌন্দর্যের মতোই উদার,প্রানখোলা আর নিপাট ভদ্্র সব লোকজন । নির্মল বাতাসের মতো নির্ঝঞ্চাট দিনমান ।
পাঁচটা বাংলাদেশী পরিবার স হ মোট এশিয়ান 15-20 পরিবারে বেশী । এই পাঁচ বাংলাদেশী পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে কাউন্সিল থেকে একটা পরিত্যক্ত গীর্যাকে বিনামুল্যে দেয়া হয়েছে মসজিদ হিসেবে ব্যব হারের জন্য ।
মাত্র পাঁচটা পরিবার । তবু এরই ভেতর মসজিদ কমিটি ।কমিটিকে কেনদ্্র করে সুবিখ্যাত রাজনীতি, গ্রুপিং,দলাদলি ।

মাঝে মাঝে তাবলীগওয়ালাদের উৎপাত । হুজুররা আসেন নিউক্যাসেল,ওলড হাম, ম্যানচেষ্টার থেকে । প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝে ও তারা সময় বের করেন। আমাদেরকে আরো ভালো মুসলমান হবার , মুসলিম ভাতৃত্ববোধে উদ্্বুদ্্ব হবার, এই বেদ্্বীনের দেশে নিজের ইমান আকি্বদা সমুন্নত রাখার জরুরী সব নসিহত করেন।
হুজুররা অবশ্য আমাকে এখন বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়ে মাফ করে দিয়েছেন । আমি আমাদের একটা পারিবারিক রেস্টুরেন্ট চালাই । মদ বিক্রী করি। একদিন এক হুজুরকে বললাম আমি তো মদ বিক্রী করে সংসার চালাই । আমরা বেশীর ভাগ বাংলাদেশী এখানে রেষ্টুরেন্টে মদ বিক্রী করি । মদের টাকায় মসজিদ চালাই , আপনাদের মুসলিম ফান্ডগুলোতে পয়সা দেই । আমাদের মতো ভালো মুসলমান আপনারা আর পাবেন কোথায়?
........................................................................................
আজ জুলাই 7।

ঘুম থেকে উঠে সুপার ষ্টোর এ গেলাম।
পত্রিকায় চোখ পড়তেই কেঁপে উঠলাম ।
লন্ডন বোমবিং এর আজ বর্ষপুর্তি।
প্রতিটি পত্রিকার হেডলাইন মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই বর্বরতা । আহত নিহত মানুষের ছবি, বড় করে সেই বীর(ধিক)দের ছবি যারা যাদের মানুষ হত্যা করেছিল জিহাদের নামে! তারা মানুষ , তারা মুসলিম!
আমার আশে পাশে অনেকেই পেপার কিনছে। সব সাদা চামড়ার মানুষজন ।

আজকের দিনটা কি একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে? সুপারষ্টোরে আমি একমাত্র বাদামী চামড়া...এই শ হরে সবাই জানে আমি মুসলিম ।
আজ কি সবাই একটু অন্য চোখে দেখছে আমাকে? পাশ দিয়ে যেতে যেতে যে বৃদ্ধা চোখ তুলে তাকাল তার চোখে কি ঘৃনা আমার জন্য? ওই ঘাতকদের আর আমার গায়ের রং , ধর্মীয় পরিচয় যে এক!

আমি জানি আমার এসব আশংকা মিথ্যা । একবছর আগের ঠিক এইদিনে ও এরকম আতংক ছড়িয়ে পরেছিল আমাদের কয়েকটা মুসলিম পরিবারে । কিন্তু না! একজন সাদা চামড়ার লোক ও আমাদের আঘাত করেনি। নু্যনতম কোনো মন্তব্যের ও শিকার হইনি আমরা আমাদের এই প্রিয় ছোটো শ হরে যার নাম 'হোয়াইট হ্যাভেন' ।
মনে পড়ে লন্ডন বোমবিং এর সাথে সাথে পুলিশ অফিসাররা ছুটে এসেছিল আমাদের রেষ্টুরেন্টগুলোতে । জানতে চেয়েছিলো আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, কেউ আমাদের কিছু বলছে কিনা, পুলিশ একটা বিশেষ ফোন নং দিয়ে গিয়েছিল তাদেরকে যে কোনো সমস্যা সাথে সাথে জানানোর জন্য ।
না একবার ও পুলিশের ও ই বিশেষ নং এ আমাদের ফোন করতে হয়নি ।

তবু আজ আমি এত অস্বস্তি ভোগ করছিলাম কেনো? কেনো সব চেনাজানা মুখ গুলো আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছিল? এরই নাম বুঝি সংখ্যা লঘুর দূর্বলতা? minority complex ? । নরেনদ্্র মোদীর গুজরাটে এক মুসলিম তরুন অথবা আমাদের বাংলাদেশে হিন্দু যুবক একই complex এ ভোগে?

ঘরে ফিরি ।
আবার বের হই । মসজিদ এ যাবো । জুমার নামাজে । বের হয়ে এক অপূর্বদৃশ্য ।
ঠিক বারোটায় পুরো শহর স্তব্দ হয়ে গেছে দুমিনিটের জন্য । সব গাড়ী আটকে গেছে, স্কুল থেকে সব ছাত্র-ছাত্রী বের হয়ে এসেছে, মুল সড়কে সবাই হাতে হাতে ধরে স্মরন করছে একবছর আগের নিহতদের ।
আমার মাথায় টুপি। আমি নামাজে যাচ্ছি। যারা হত্যা করেছে তারা এবং আমি একই নবীর উম্মত। যারা হাতে হাত রেখে হত্যাকারীদের ঘৃনা জানাচ্ছে তারা বিধমর্ী। আমি কি তাদের হাত ধরবো? তারা কি আমাকে গ্রহন করবে? যদি আমাকে সেই ঘাতকদের ভাই মনে করে?

মুহুর্তের দ্্বিধা ।
তারপর সব ঝেড়ে ফেলে মানুষ আমি আর সব মানুষের হাত ধরি।
আমি আমার ভাষায় আমার স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা জানাই--- ধর্মের নামে, রাজনীতির নামে, আদর্শের নামে মানুষ হত্যা তুমি বন্ধ করো প্রভূ।

[ হায় ! মানুষ তার সব ব্যর্থতা কেনো প্রার্থনার নামে চাপিয়ে দেয় ইশ্বরের উপর?]

07।07।06


মন্তব্য

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

লেখাটা মনের মুকুরে-তে উঠে আসায় পড়ার সুযোগ হলো। এ বিষয়ে ব্লগ জীবনের প্রথম দিকে লিখেছিলাম। আমারও অনুভূতি অনেকটা এমনই ছিল। মাঝে মাঝে আমার ঈশ্বরকে খুব অসহায় মনে হয়। সে আছে কি নাই, তারই ঠিক নাই অথচ তার নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে সারা পৃথিবীতে কত নারকীয় কর্মকান্ড।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।